পরিশিষ্ট:বাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকা
অবয়ব
টেমপ্লেট:উৎসহীন প্রবাদ প্রবচন প্রতিটি ভাষার অমূল্য সম্পদ। বাঙালীর হাজার বছরের সংস্কৃতি তথা সামগ্রিক জীবনাচরণে প্রবাদ প্রবচন সমৃদ্ধ একটি ধারা হিসেবে বিবেচিত। প্রবাদ প্রবচনের মাধ্যমে বাঙালির জীবন, ধর্ম, সংস্কৃতি, আচার, বিশ্বাস ও রসবোধের পরিচয় পাওয়া যায়।
টেমপ্লেট:সদা-পরিবর্তনশীল তালিকা
অ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
অকণ্টকবিদ্ধ কি জানে কাঁটাফুটা কী? | সুখী মানুষ জীবনযন্ত্রণা কাকে বলে জানে না; অধিক আড়ম্বরে কাজ হয় না; সমতুল্য- কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে কভু আশীবিষে দংশেনি যারে? |
অকর্মারা বেশি কথা বলে | অকর্মারা কাজের থেকে কথায় বেশি দড়। |
অকর্মারা সর্বদাই ক্ষুধার্ত | অকর্মারা একটি কাজই জানে শুধু বসে বসে খাওয়া। |
অকস্মাৎ বজ্রাঘাত | অপ্রত্যাশিতভাবে কোন বিপদের সংঘটন। |
অকাজে বউড়ী দড়, লাউ কুটতে খরতর // অকেজো বউ লাউ কুটতে দড় | গৃহকর্মে অপটু বউ সহজ কাজটা আগে বেছে নেয়; কারণ অন্য আনাজ কাটা থেকে লাউ কোটা অনেক সহজ। |
অকারণে কিছু হয় না | বিনাকারণে গাছের একটি পাতাও নড়ে ন; সমতুল্য- ধোঁয়া থাকলে আগুন আছে;পর্বতো বহ্নিমান ধুমাৎ; সবকার্যের পিছনে কারণ থাকে; বিরুদ্ধ উক্তি- অকারণে হৈ চৈ। |
অকারণে হৈ চৈ | অহেতুক চিন্তা; সমতুল্য-'মাথা নেই তার মাথাব্যাথা'। |
অকালকুস্মাণ্ড | অকালে জাত চালকুমড়ার বলি হয় না এই ভাবার্থে- অকেজো, অপদার্থ কোন কাজের নয় ইত্যাদি। |
অকাল গেল সুকাল এল, পাকল কাঁটাল কোষ, আজ বন্ধু ছেড়ে যাও, দিয়ে আমার দোষ // অকাল গেল সুকাল এল, খেয়ে কাঁটালের কোষ, এখন কি বলে পালাবে বোনপো দিয়ে মাসীর দোষ | অসময়ে উপকৃত হয়ে নানা অজুহাত দেখিয়ে সুসময়ে উপকৃত উপকারীর ঋণ অস্বীকার করে; সমতুল্য- ভ্রামরী মিত্র। |
অকালমেঘবদ্বিত্তমকম্মাদেতি যাতি চ | সম্পদ অকালোদিত মেঘের মতই হঠাৎ আসে হঠাৎ চলে যায়। |
অকালে/আকালে কি না খায় | অসময় বা দুর্ভিক্ষের সময়ে খাবারের বাচবিচার করা সম্ভব হয় না, যা হাতের কাছে পায় তাই খেতে বাধ্য হয়; সমতুল্য- 'প্রয়োজনীয়তা কোন নিয়ম মানে না'। |
অকালে খেয়েছ কচু, মনে রেখ কিছু কিছু | সুখদুঃখমিশ্রিত জীবনের সুখের দিনগুলিতে দুঃখের দিনগুলি ভুলে যাওয়া ঠিক নয়। |
অকালে বাড়ে সকালে মরতে | দ্রুত বৃদ্ধি দ্রুত মৃত্যু ডেকে আনে। |
অকালের তাল বড়ই মিষ্টি | অকালে দুস্প্রাপ্য জিনিষ পেলে তৃপ্তিবোধ মাত্রাতিরিক্ত হয়। |
অকালে না নোয় বাঁশ, বাঁশ করে ট্যাঁশট্যাঁশ | সময়ের কাজ সময়ে না করলে পরে আর পারা যায় না; শিশুকালে নীতিশিক্ষা না দিলে উত্তরকালে উপদেশ বৃথা যায়। |
অকৃতজ্ঞের নরকবাস | অকৃতজ্ঞের কঠোর শাস্তি প্রাপ্য; সমতুল্য- 'আত্মপ্রচার করো না এবং অকৃতজ্ঞ হয়ো না'। |
অকেজোর তিন কাজ বড়, ভোজন,ক্রোধ, নিদ্রা দড় | অকর্মণ্যরাও শুধু খায়, হম্বিতম্বি করে, আর ঘুমায়। |
অকেজো নাপিতের থলিভরা ক্ষুর // অকেজো মিস্ত্রির থলিভরা যন্ত্র | অক্ষমতার দুর্বলতা ঢাকতে ভড়ং বেশী দেখায়। |
অকেজো বউ লাউ কুটতে দড় | যে কোন কাজ জানে না সে সহজ কাজটা আগে বেছে নেয়। |
অকেজো মিস্ত্রি যন্ত্রের দোষ ধরে | অকর্মণ্যের অজুহাতের অভাব হয় না; সমতুল্য- নাচতে না জানলে উঠোনের দোষ; নাচ না জানে অঙ্গন টেরা। |
অকেজো মানুষের কথা বেশি কাজ কম | কাজে ফাঁকি দিতে বা অক্ষমতা ঢাকতে বেশি কথা বলার প্রয়োজন হয়। |
অকেজোর তিন কাজ বড়, ভোজন ক্রোধ নিদ্রা দড় | অকম্মারা তিনটি বিষয়ে বড় গুণধর- খায় বেশি, রাগ দেখায় বেশি আর ঘুমায় বেশি। |
অক্রোধস্তপসঃ ক্ষমা বলবতাং ধর্মস্য নিব্যজিতা। সর্বেষামপি সর্বকারণমিদং শীলং পরং ভূষনম্॥ (চাণক্য) | তাপসের ক্রোধহীনতা, বলবানের ক্ষমা, ধর্মের ছলহীনতা- এগুলি স্বভাবের সর্বশ্রেষ্ঠভূষণ। |
অক্ষমের অজুহাত খাড়া | অক্ষমের অজুহাতের অভাব হয় না। |
অখণ্ডিত রত্ন মেলে না | রত্ন একটি সম্পূর্ণ ধারণা। |
অগভীর জলে সফরি ফরফরায় // অল্পজলে সফরি সরফরায়তে | অল্পবিদ্যানেরা সর্বদা বেশি বিদ্যার জাহির করে। |
অগরমগর করনা- হিন্দি প্রবাদ | কিছু করা বা না করার পক্ষে নানা উক্তি দেখানো। |
অগস্ত্যযাত্রা | চিরদিনের জন্য প্রস্থান, জন্মের নত যাওয়া, শেষযাত্রা; শেষ বিদায়; যে-যাত্রায় বিদেশযাত্রী আর ফিরে আসে না; উৎসকাহিনী- অগস্ত্যমুনি ভাদ্রমাসের প্রথমদিনে বিন্ধ্যপর্বত লঙ্ঘন করে দাক্ষিণাত্যে যাত্রা করেন, আর ফেরেন নি; এই ভাবার্থে- ভাদ্রমাস বা প্রতিমাসের প্রথমদিনে যাত্রা নিষিদ্ধ বলে কল্পিত |
অগা লোকের কাজ ঝকমারি | অকাজের লোকেরা কাজের ক্ষেত্রে বিভ্রাট সৃষ্টি করে। |
অগাধজলসঞ্চারী বিকারী ন চ রোহিতঃ। গণ্ডূষজলমাত্রেণ সফরী ফর্ফরায়তে॥ (চাণক্য) | অগাধজলের রুইমাছের বিকার নেই অর্থাৎ অহঙ্কারী হয় না; অল্পজলের পুঁটিমাছ গর্বে লাফায়। |
অগুণ মানুষ গুণ না চিনে, মূষা না চিনে বিড়ালী; অপ্রেমী যে প্রেম না চিনে, কাঠ না চিনে কুড়ালী। | মানুষের চেতনার বড় অভাব। |
অগুণস্য হতং রূপম | নির্গুণব্যক্তি রূপবান হলেও সেই রূপ বৃথা। |
অগুরু চন্দন ফেলে চায় শেওড়া কাঠ, কোকিলের ধ্বনি ফেলে বানরের নাট | ভালো ছেড়ে মন্দের প্রতি মানুষের অযৌক্তিক আকর্ষণ থাকে। |
অগ্নি, ব্যাধি ও ঋণ, রেখোনা তিনের চিন (চিহ্ন) | আগুন, ব্যাধি ও ঋণের শেষ রাখতে নেই; থাকলে এগুলি ক্রমশঃ বাড়তে থাকে; আগুন নিবিয়ে ফেলা, রোগ সারিয়ে ফেলা ও ঋণ শোধ করে ফেলা আশু কর্তব্য। |
অগ্নির্দহতি তাপেন সূর্যো দহতি রশ্মিভিঃ। রাজা দহতি দণ্ডেন তপসা ব্রাহ্মণো দহেৎ।। (চাণক্য) | নিজের তাপেই অগ্নি প্রজ্বলিত হয়; সূর্য প্রদীপ্ত হয় রশ্মির মাধ্যমে; রাজা দণ্ডদ্বারা সমুজ্জ্বল হয় এবং ব্রাহ্মণ তপস্যাঢ় দরুণ দীপ্যমান থাকেন। |
অগ্নিরাপস্ত্রিয়ো মুর্খা, সর্পা, রাজকুলানি চ। নিত্যসেব্যোপচারেণ সদ্য প্রাণহরাণি ষট্।। (চাণক্য) | অগ্নি, জল, স্ত্রী, মূর্খ, সর্প ও রাজকুল- এই ছয় বিষয়কে সর্বদা উপচারের সাথে সেবা করা হলেও ক্ষণিকের মধ্যে এগুলি প্রাণ হরণ করতে পারে। |
অগ্রানে পউটি পৌষে ছেউটি, মাঘে নাড়া ফাগুনে ফাঁড়া- খনা | অগ্রানে মাসে ধান কাটলে শোল এনা ধান পাওয়া যায়; পৌষে কাটলে মাত্র ছ'আনা পাওয়া যায়; মাঘে কাটলে মাত্র খড় অবশিষ্ট থাকে; আর ফাগুনে কাটলে কিছুই থাকে না। (ধান চাষের পদ্ধতি) |
অঘটন ঘটায় বিধি | বিধি সব ঘটনার কারিগর। |
অঘটনে স্বজন চেনা যায় | দুর্বিপাকে পড়লে প্রকৃত বন্ধু পাশে এসে দাঁড়ায়; ('আজি রজনীতে হয়েছে সময় এসেছি বাসবদত্তা'-রবীন্দ্রনাথ)। |
অঘটির (আদেখলা) ঘটি হল, জল খেতে খেতে প্রাণটা গেল | কোন জিনিষের প্রথম প্রাপক আনন্দের আতিশয্যে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলে; সমতুল্য-অদন্তের দাঁত হ'ল, কামড় খেতে খেতে প্রাণটা গেল |
অঙ্কমারুহ্য সুপ্তং হি হত্বা কিং নাম পৌরুষম | কোলে শুয়ে যে নিদ্রিত আছে তাকে হত্যা করায় পৌরুষত্ব নেই। |
অঙ্গারঃ শতধৌতেন মলিনত্বং ন মুঞ্চতি // অঙ্গার হাজার ধুলেও ময়লা ছাড়ে না | কয়লা হাজার ধুলেও যেমন রঙ বদলায় না তেমনিই কুলোক কখনো কুপ্রবৃত্তি ছাড়ে না; সমতুল্য- 'ইল্লৎ যায় না ধুলে'; 'কয়লা ছাড়ে না ময়লা';'যার যা রীত ছাড়ে কদাচিত'; 'স্বভাব যায় না মলে',স্বভাবো যাদৃশো যঃ ন জহাতি ইত্যাদি। |
অচিন্ত্যং হি ফলং সূতে সদ্যঃ সুকৃতপাদপঃ | পূণ্যরূপ বৃক্ষ সদ্যই অভাবনীয় ফলদান করে। |
অচেনা/অজানা বন্ধু থেকে চেনা/জানা শত্রু ভাল | অজানা বিষয় থেকে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকে। |
অচেনা পথ আর জঙ্গল সমান, অজানা জল আর জানা শ্মশান | এই চারটি বিষয় জীবনে চলার পথে বিপদের কারণ হতে পারে। |
অচেনা হাতকে কখনো বিশ্বাস করো না; তুমি জানো না, সে কিভাবে তোমার পাশে দাঁড়াবে এবং পিছন থেকে ছুরি মারবে- আরবী প্রবাদ | অজানার আশঙ্কা সবসময় থাকে। |
অজগরের দাতা রাম // অজগরকা দাতা রাম (হিন্দী) | অলসের খাবারের অভাব হয় না; যেকোনভাবেই তার তা জুটে যায়; ভগবানই জীবের রক্ষাকর্তা; সমতুল্য- জিভ দিয়েছেন যিনি আহার যোগান তিনি। |
অজাযুদ্ধে, ঋষিশ্রাদ্ধে, প্রভাতে মেঘডম্বরে, দাম্পত্যকলহে চৈব বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া। (চাণক্য) | অজার লড়াই, ঋষির শ্রাদ্ধ, সকালের মেঘগর্জন ও দাম্পত্য কলহে প্রথমে একটু বাড়াবাড়ি হয় তবে শেষে ফল সামান্যই হয়। |
অজার যুদ্ধে আঁটুনি সার | ছাগল দূর থেকে লাফিয়ে আসে, কিন্তু সামনে এলেই আর মনে থাকে না; ত্রুটিহীন আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে ফললাভের সম্ভাবনা সামান্য হলে প্রবাদটি বলা হয়; সমতুল্য- পর্বতের মূষিক প্রসব। |
অজীর্ণে ভোজনং বিষমং | হজমের আগে পুনরায় ভোজন বিষতুল্য; (মূলশ্লোক- 'অনভ্যস্তা বিষং বিদ্যা...') |
অজীর্ণে ভেষজং বারি; জীর্ণে বারি বলপ্রদম্ | বদহজমের একমাত্র ওষুধ জল; দুর্বলকে জল শক্তি যোগায়। |
অজ্ঞতাই ভক্তি করে, ভক্তি হলো অজ্ঞতার কন্যা | অজ্ঞান ও ভয় থেকে মানুষের মনে ভক্তির সৃষ্টি হয়। |
অজ্ঞাতকুলশীলস্য বাসো দেয়ো ন কস্যচিৎ | কখনো অচেনা লোককে গৃহে স্থান দিতে নেই। |
অজ্ঞানতা শ্রেষ্ট দারিদ্র- আরবী প্রবাদ | অজ্ঞানের সমস্ত জীবনটা বৃথা যায়; অজ্ঞান জীবনের স্বাদ পায় না। |
অজ্ঞানবন্ধু থেকে জ্ঞানীশত্রু অনেক ভালো | বন্ধু হলেও অবোধের কাছ থেকে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকে। |
অজ্ঞানে আকস্মিক ও দৈব ঘটনার যুক্তি খাড়া করে | কিছুই আকস্মিক নয়; অকারণে কিছু হয় না; ব্যাখ্যায় অক্ষম হলে লোকে দৈবের দোহাই দেয়; সমতুল্য- পরুষ্কারেণ বিনা দৈব ন সিদ্ধতি; বিরুদ্ধ উক্তি- ভাগ্যং ফলতি সর্বত্র, ন চ বিদ্যা ন পৌরুষম্। |
অজ্ঞানে করে পাপ, জ্ঞান হলে সরে/হরে, সজ্ঞানে করে পাপ, সঙ্গে সঙ্গে ফেরে // অজ্ঞানে করে পাপ, জ্ঞান হলে মনস্তাপ | শিশুবয়সে নানা দোষত্রুটি হয়; বড় হলে সেগুলি শুধরে নেয়, কিন্তু জ্ঞানকৃত পাপ কখনো খণ্ডায় না। |
অজ্ঞানে বাপান্ত করে, জ্ঞানবানে তাই কি ধরে? | অজ্ঞরা কিছু দোষ করেই ফেলতে পারে; জ্ঞানীরা সেই অপরাধ ধরে না। |
অজ্ঞানের কান দুটো ছোট ও জিভটা বড় হয় | অজ্ঞানেরা শোনে খুব কম কিন্তু কথা বলে বড় বেশি। |
অজ্ঞানের কালে জানে না, অমানুষের কালে মানে না | শিশু বুঝতে পারে না বলেই দোষ করে; বয়স্কলোকেরা কিন্তু দোষকে অগ্রাহ্য করে। |
অতলজলদলতলন্যস্তরত্নরাজিবনমহামুল্যপুরুষরত্ন- বঙ্কিমচন্দ্র | সাগরতলস্থিত রত্নরাজির সমান মহামুল্য পুরুষরত্ন (বহুবর্ণ সম্বলিত একটি শব্দের উগাহরণ) |
অতি অস্পষ্ট কালির লেখাও উৎকৃষ্ট স্মরণশক্তি থেকে বেশি উজ্জ্বল- চীনা প্রবাদ | স্মৃতিশক্তি বড়ই দুর্বল; লেখা কিন্তু চিরস্থায়ী। |
অতি আশ সর্বনাশ // অতি আশায় মরে চাষা // অতি আশা প্রবঞ্চনা করে- ইংরাজী প্রবাদ | বেশি লোভ করলে বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে; সমতুল্য- 'অতি লোভে তাঁতি নষ্ট', 'খাচ্ছিল তাঁতী তাঁত বুনে, কাল হল তার এঁড়ে/হেলে গরু কিনে', 'ছায়ার পিছনে ছোট আর আসল হারাও' ইত্যাদি। |
অতিকথায় বার্তা নষ্ট | বাকচাতুর্যে মূলবক্তব্য হারিয়ে যায়। |
অতি ক্ষুধা যার হাড় কাটা তার | বেশি খেলে শরীর নষ্ট হয়। |
অতিগর্জনে ফোঁটা বৃষ্টি | হাঁকডাকওয়ালারা কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা; যে বেশি বকে সে কাজের হয় না; সমতুল্য- অতি মেঘে অনাবৃষ্টি/ফোঁটাবৃষ্টি। |
অতিঘরন্তী না পায় ঘর | ভাগ্যদোষে অতি নিপুণা ঘরণীও সংসার পাততে পারে না। |
অতি চতুরের ভাত নেই, অতি সুন্দরীর ভাতার নেই | বেশি চালাকের অন্ন জোটে না, বেশি সুন্দরীর বর জোটে না; ভাল নয় অতিশয়। |
অতি চালাকের গলায় দড়ি | বেশি চালাকি করে অপরকে ঠকালে নিজেকেও বিপদগ্রস্ত হ'তে হয়। |
অতি চালাকের গলায় দড়ি, অতি বোকার পায়ে বেড়ি | বেশি চালাক ও বেশি বোকা, উভয়ই বিপদে পড়ে; অতি ভাল ভাল নয়। |
অতি চেনার কদর নেই | সহজলভ্য জিনিষের মূল্য নাই; সমতুল্য- গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না। |
অতি জ্বালে ব্যঞ্জন নষ্ট | বেশি জ্বাল দিলে দ্রব্যগুণ নষ্ট হয়; কোন কিছুতেই বাড়াবাড়ি ভালো নয়। |
অতিথির্বালকশ্চৈব রাজা ভার্যা তথৈবচ। অস্তি নাস্তি নয়া জানন্তি দেহি দেহি পুনঃপুনঃ।। (চাণক্য) | অতিথি, বালক রাজা ও পত্নী- এরা আছে কি নেই বিবেচনা করে ন, কেবল বলে দাও দাও। |
অতিথি সর্বময় গুরুঃ/পূজ্যঃ | অতিথি গুরুর মতই পূজনীয়; সর্বদেবময়োহতিথি। |
অতি দর্পে হতা লঙ্কা | অহংকার করলে পতন অনিবার্য; সমতুল্য- সর্বমত্যন্তমগর্হিতম। |
অতি দর্পে হতা লঙ্কা, অতিমানে চ কৌরবাঃ। অতিদানে বলির্বদ্ধঃ সর্বমত্যন্তম গর্হিতম্॥ (চাণক্য) | অতিরিক্ত অহঙ্কারে লঙ্কা বিনষ্ট হয়; অতিরিক্ত অভিমানে কৌরবেরা বিনষ্ট হয়; অতিরিক্ত দানে বলি বামনের কাছে বন্দী হয়; কোনকিছুতে বাড়াবাড়ি ভালো না। (মাত্রাতিরিক্তের পরিণাম) |
অতি দানে বলির পাতালে হল ঠাঁই | অতিরিক্ত দান করতে গিয়ে বলি বামনের কাছে বন্দী হয়; সৎকাজে নিয়োজিত ব্যাক্তি অন্যের কৌশলে ভোগান্তির শিকার হয়; সুতরাং অতিশয় কিছু ভালো নয়। |
অতি পীরিত যেখানে অতি বিচ্ছেদ সেখান | পীরিত বেশি হলে তাড়াতাড়ি বিচ্ছেদের আশঙ্কা থাকে। |
অতি পীরিত যেখানে নিত্য যাবে না ষেখানে; যদি যাবে নিত্যি ঘটবে একটা কীর্তি | যেখানে ভালোবাসা গভীর শেখানে প্রতিদিন না যাওয়াই ভালো; তা না হলে কলঙ্ক বা বিরোধ ঘটতে পারে। |
অতি প্রেমে অমিত বিচ্ছেদ | যেখানে ভালোবাসার বাড়াবাড়ি সেখানে বিচ্ছেদবেদনাও তীব্র হয়। |
অতি বড় ঘরণী না পায় ঘর; অতি বড় সুন্দরী না পায় বর | বেশি বাছাবাছি করতে গিয়ে প্রায়শঃ ঘরকন্নার কাজে অতিশয় নিপুণা নারীর ঘরকন্নার সুযোগ জোটে না এবং অতি সুন্দরীর বর জোটে না। কোন বিষয়ে অনন্যসাধারণ হলে সবসময় তার জুড়ি পাওয়া যায় না। |
অতি বড় সোদর (সহোদর ও সহোদরা) তিনদিন করবে আদর | যত প্রীতিরই হোক না কেন অতি পাওয়ায় আদর ক্রমশঃ কমতে থাকে। |
অতি বাড় বেড়ো না ঝড়েতে উড়াবে, অতিছোট হয়ো না ছাগলে মুড়োবে | অহঙ্কার বেশি বেড়ে গেলে পতন হবেই; আবার বেশি বিনীত হলেও উপেক্ষিত হবেই; সুতরাং অতি বাড় ভাল নয়, মধ্যপন্থাই শ্রেষ্ঠপন্থা। |
অতি পরিচয়ে দোষ ব্যক্ত | অন্তরঙ্গতায় লুকানো দোষ প্রকাশ হয়ে পড়ে। |
অতি পরিচিতি উপেক্ষার জন্ম দেয় | কোন বিষয় বেশি পেলে তার প্রতি আকর্ষণ, আগ্রহ কমে (ক্রমহ্রাসমান উপযোগ বিধি)। |
অতি বুদ্ধির কোমরে/গলায়/হাতে দড়ি, অতি বোকার পায়ে বেড়ি | অতিচালাকি করতে গিয়ে মানুষ মরে; অতিবোকামির জন্য একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়; বেশি বাড় ভালো নয়। |
অতি বুদ্ধির হা-ভাত | চালাকি করতে গিয়ে অস্থিরতার কারণে ভাত যোগাড় করতে ব্যর্থ হয়; ভাল নয় অতিশয়। |
অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ | ভক্তির আতিশয্যে গোপন উদ্দেশ্য প্রচ্ছন্ন থাকে; অসঙ্গতমাত্রায় কিছু করলে স্বাভাবিকভাবেই মনে সন্দেহ জাগে; সমতুল্য- 'কেশব, গোপাল, হরিহরি, হরহর'। |
অতি ভালো, ভালো নয় | সব বাড়াবাড়িই শেষপর্যন্ত বিপদ ডেকে আনে; সমতুল্য- 'অল্প আগুনে গা গরম হয়; বেশি আগুনে ঘর পোড়ে'; 'সর্বম্ অত্যন্তম্ গর্হিতম্' ইত্যাদি। |
অতি মন্থনে বাসুকীর বিষ/বিষ ওঠে | বেশি ঘাটাঘাটি করলে দ্রব্যগুণ নষ্ট; অনেক সময় বারবার শোনা ভালকথাও মন্দ মনে হয়। |
অতি মন্থনে বিষ ঊঠে // অতি মন্থনে মিঠা তিতা | বেশি কচলালে লেবু তেতো হয়। |
অতি মেঘে অনাবৃষ্টি/ফোঁটাবৃষ্টি | বেশি মেঘ হ’লে বৃষ্টি না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে; আড়ম্বর বেশি হলে কাজ ভাল হয় না; সমতুল্য- 'অতি গর্জনে অনাবৃষ্টি/ফোঁটাবৃষ্টি', 'অতি মেঘে অনা/ফোঁটা বৃষ্টি', 'অধিক গর্জনে অল্প বর্ষণ', 'অনেক গর্জনে ফোঁটা বৃষ্টি', 'ঘেউ ঘেউ করা কুত্তা কদাচিৎ কামড়ায়', 'যে কুকুর ঘেউ ঘেউ করে সে কামড়ায় না', 'বর্ষণ নেই গর্জন সার; বহ্বারম্ভে লঘু ক্রিয়া 'যত গর্জে তত বর্ষে না ইত্যাদি। |
অতি যত্নে মরণফাঁদ | বেশি যত্ন নিলে শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। |
অতি লোভে তাঁতি নষ্ট | বেশি লোভ করলে সর্বস্ব খোয়ানোর আশঙ্কা থাকে; বেশি বাড়াবাড়ি ভাল নয়; সমতুল্য- 'অতি আশ সর্বনাশ', 'অতি আশায় মরে চাষা','খাচ্ছিল তাঁতী তাঁত বুনে কাল হল তার এঁড়ে গরু কিনে' ইত্যাদি। |
অতি লোভো ন কর্তব্যঃ। লব্ধং নৈব পরিত্যজেৎ॥ (চাণক্য) | বেশী লোভ করতে নেই, আবার পাওয়া জিনিসও ত্যাগ করতে নেই। |
অতির কিছুই ভাল নয় | দান, দয়া, প্রেম, মান ইত্যাদি কোন গুণাবলীও মাত্রাতিরিক্ত হলে সেটা ভাল হয় না। |
অতিশয় ভালো নয় বুদ্ধি হলেই পড়তে হয় | বেশি বুদ্ধি হলে পতন অনিবার্য; সমতুল্য- 'অতি চালাকের গলায় দড়ি'। |
অতি সাধ অতি বিষাদ | বেশি আশা পূর্ণ না হলে মনে বিষাদে ভরে যায়। |
অতি সোদর হয় গালে তুলে দেয়, টিকলেতো/গিললেতো হয় | ভাই বলে কেউ যদি তোমার মুখে মিষ্টি তুলে দেয়, সেটা গিলতে না পারলে কোন লাভ নেই; ব্যবহার করতে না জানলে কোন বস্তু নিয়ে লাভ নেই। |
অতীত থেকে শিক্ষা নাও, ভবিষ্যতে ভুল হবে না | অতীতকে জানলেই ভবিষ্যৎ জানা যায়। |
অতীতকে শুধরানো যায় না | অতীতকালে ফিরে যাওয়া যায় না; সমতুল্য- 'গতস্য শোচনা নাস্তি', 'যা গেছে তা গেছে' ইত্যাদি। |
অতুভুক্তিরতীবোক্তি সদ্যঃ তীব্র প্রাণাপহারিণী | অপরিমিত আহারে স্বাস্থ্যনাশ হয়। |
অতৃণে পতিত বহ্নিঃ স্বয়ামেবোপশাম্যতি | আগুন তৃণশূন্যস্থলে পড়লে আপনাতেই নিভে যায়। |
অত্তাস কুত্তা বত্তাস ভূঁকৈ- হিন্দি প্রবাদ | ভীতু কুকুর বাতাসের শব্দে ভয় পেয়ে ঘেউ ঘেউ করে; ভীতু লোকেরা অনাবশ্যক ভয় পেয়ে চিৎকার জুড়ে দেয়; সমতুল্য- 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়'। |
অত্যুচ্ছ্রায় পতনায় // অত্যুচ্ছ্রায়ো পতনহেতুঃ | বেশি বাড়লে পতন হবেই; অতিবাড় পতনের কারণ। |
অদন্তের দাঁত হ'ল, কামড় খেতে খেতে প্রাণটা গেল | কোন নতুন দ্রব্য পেয়ে অত্যধিক ব্যবহার করলে এই প্রবাদটি ব্যবহৃত হয়; সমতূল্য- অঘটির ঘটি হল, জল খেতে খেতে প্রাণটা গেল |
অদন্তের হাসি দেখতে ভালোবাসি | দন্তহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের হাসি দেখে কৌতুকে এই প্রবাদটি বলা হয়। |
অদাতা বংশদোষেণ কর্মদোষাদ্ দরিদ্রতা। উন্মাদো মাতৃদোষেণ পিতৃদোষেণ মূর্খতা॥ (চাণক্য) | বংশদোষে কৃপণ, কর্মদোষে দরিদ্র, মাতৃদোষে পাগল এবং পিতৃদোষে মূর্খ হয়। |
অদৃষ্টে করলা ভাতে, বীচি কচকচ করে তাতে; পড়ল বীচি বুড়োর পাতে | ভাগ্যে লেখা থাকলে দুর্ভোগ পোহাতে হবেই; দুখীর ভাগ্যে সুখ লেখা নেই। |
অদৃষ্টের কিল ভূতেও কিলোয় // অদৃষ্টের কিল পুতেও (ছেলে) কিলোয় | অদৃষ্ট খারাপ হ'লে নির্বিচারে সবাই ভোগায়। |
অদৃষ্টের ফল কে খণ্ডাবে বল // অদৃষ্টের লিখন না যায় খণ্ডন | কপালের লিখন কেউ খণ্ডাতে পারে না; কপালে যা লেখা আছে তা ঘটবেই; সমতুল্য- 'নিয়তিঃ কেন বাধ্যতে'; বিরুদ্ধ উক্তি- অদৃষ্টের ফের কাপুরুষের উক্তি। |
অদ্য ভক্ষ্য ধনুর্গুণ১ | গল্পের শিয়ালের মত না ভেবে কাজ করা; অদূরদর্শিতার লক্ষণ |
অদ্য ভক্ষ্য ধনুর্গুণ২ | ঘরে অন্নাভাব; দুর্ভিক্ষের করাল ছায়া; সমতুল্য- 'আজকের খেয়ে নেড়া নাচে'। |
অধনশ্চ/অধনেন ধনং প্রাপ্য তৃণবন্মন্যতে জগৎ | নির্ধনের ধন হলে সে সকলকে তৃণজ্ঞানে তুচ্ছ করে; অর্থের সামর্থ হ'লে অহঙ্কারে অধমের মাটিতে পা পড়ে না। |
অধমা ধনমিচ্ছতি ধনং, মানং চ মধ্যমা। উত্তমা মানোমিচ্ছন্তি মানং মানো হি মহতাং ধনম॥ (চাণক্য) | অধম ধন চায়, মধ্যম ধন ও মান চায়; উত্তম শুধু মান চায়। |
অধরে স্ব মৃতং হি যোষিতাং হৃদি হলাহলমেব কেবলম | রমণীদের অধরে অমৃত কিন্তু হৃদয়ে বিষ থাকে। |
অধর্মবিষবৃক্ষস্য পচ্যতে স্বাদু কিং ফলম? | অধর্মরূপ বিষবৃক্ষে কী স্বাদু ফল ফলে? |
অধর্মের পথ বড়ই সরল | অধর্মের পথে চলতে কোন অনুশাসন, নিয়মশৃঙ্খলা মানার প্রশ্ন থাকে না; তাই মানুষ মনোরম অধর্মপথেই চলতে পছন্দ করে; সমতুল্য- 'নরকের দ্বার খোলা' |
অধরেস্বমৃতং হি ঘোষিতাং হৃদি হলহলমেব কেবলম | রমণীদের অধরে অমৃত এবং হৃদয়ে বিষ থাকে। |
অধিক খেতে করে আশা, তার নাম বুদ্ধিনাশা | বেশি খাওয়া স্বাস্থের পক্ষে ক্ষতিকর; পেটুক না হলে কেউ বেশি খায় না। |
অধিক দিন থাকলে গাজন, কে করত শিবের ভজন? | আধিক্যে সোনার মূল্যও হ্রাস পায়। |
অধিক গর্জনে অল্প বর্ষণ | আড়ম্বর অনুসারে কার্য হয় না; যে বেশি বকে, সে কাজে বেশিদূর এগোয় না; সমতুল্য- 'অতি মেঘে অনা/ফোঁটা বৃষ্টি', 'অনেক গর্জনে ফোঁটা বৃষ্টি', 'ঘেউ ঘেউ করা কুত্তা কদাচিৎ কামড়ায়', 'যে কুকুর ঘেউ ঘেউ করে সে কামড়ায় না', 'বর্ষণ নেই গর্জন সার; বহ্বারম্ভে লঘু ক্রিয়া 'যত গর্জে তত বর্ষে না ইত্যাদি। |
অধিক/অনেক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট | এক কাজে অনেক লোক জুটে গেলে মতভেদের কারণে কাজ পণ্ড হয় সমতুল্য-'অনেক রাঁধুনীতে ব্যঞ্জণ নষ্ট', 'ঘরের মধ্যে ঘর, সবাই মাতব্বর','ঠেলাঠেলির ঘর, খোদায় রক্ষা কর', 'দশ পাগলের ঘর, খোদায় রক্ষা কর','সাত সতীনের ঘর খোদায় রক্ষা কর ইত্যাদি। বিরুদ্ধ উক্তি- 'দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ'। |
অধিকন্তু ন দোষায় | প্রয়োজনের অতিরিক্ত হলে ক্ষতি নেই, তবে যদি সেটা সৎকার্য হয়; বিরুদ্ধ উক্তি- 'অতি ভাল ভাল নয়', 'সর্বম্ অত্যন্তম্ গর্হিতম্' ইত্যাদি। |
অধ্যয়নং তপঃ | অধ্যয়ন তপস্যার সমান। |
অনটনের দুনো ব্যয় // অনটনের তিনগুণ ব্য়য | একসাথে বেশি পরিমাণ কিনলে দামে সস্তা হয়; অর্থের টানাটানিতে একটু একটু করে একাধিকবার কিনলে অর্থ দ্বিগুণ বা তিনগুণ ব্যয় হয়। |
অনন্ত শাস্ত্রং বহুবেদিতব্যম | শাস্ত্রের শেষ নেই; বহু বিষয় জানার আছে। |
অনন্যগামিনী পুংসাং কীর্তিরেকা পতিব্রতা | পুরুষের একমাত্র কীর্তিই পতিব্রতা নারীর মত জীবনে মরণে অনুগমন করে। |
অনবসরে যাচিতমিতি সৎপাত্রমপি কুপ্যতে দাতা | সৎপাত্রও অসময়ে যাচ্ঞা করলে দাতা কুপিত হন। |
অনভ্যস্তা বিষং বিদ্যা বৃদ্ধস্য তরুণী বিষম। আরোগে তু বিষং বৈদ্যা অজীর্ণে ভোজনং বিষম॥ (চাণক্য) | অনভ্যস্ত বিদ্যা বিষের সমান; যুবতীনারী বৃদ্ধের কাছে বিষের সমান; নীরোগব্যক্তির পক্ষে বৈদ্য বিষের সমান;হজমের আগে পুনরায় ভোজন বিষের সমান। |
অনভ্যাসের ফোঁটা কপাল চড়চড় করে | অনভ্যস্ত কাজে হাত দিলে প্রথমে একটু কষ্ট হয় বা একটু অস্বস্তিবোধ হয় ; অনভ্যস্ত কাজ কাউকে দিলে তার কষ্ট হয়। |
অনাথো দৈবরক্ষক // অনাথের দৈব সখা | অনাথের রক্ষক স্বয়ং ভগবান; ভগবানে বিশ্বাস করেই সে বেঁচে থাকে; একমাত্র বিশ্বাসই তার বেঁচে থাকার রসদ; হরি হে দীনবন্ধু; বিরুদ্ধ উক্তি- ' অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকায়ে যায়;'অভাগার যমও নাই'। |
অনাগত বিধাতা চ প্রত্যুন্মতিসস্তথা। দ্বাধেতি সুখমেষেতে যদ্ভবিষ্যো বিনাশ্যতি॥ (চাণক্য) | যে অনাগত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়ে প্রত্যুৎপন্নন্মতিত্বের পরিচয় দেয় সে সুখী হয়;যে ভাগ্যের দোহাই দিয়ে নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকে সে বিনাশপ্রাপ্ত হয়। |
অনাবৃষ্টে রাজ্য মজে, পাপে মজে ধর্ম; কোটালে গৃহস্থ মজে, আলস্যে মজে কর্ম। | বৃষ্টি না হলে দেশের ক্ষতি; পাপে ধর্ম বিপদগ্রস্ত; নদীর বাড়ে লোকালয় বিপদগ্রস্ত; অলসতায় কর্ম নষ্ট। |
অনায়কা বিনশ্যন্তি, নশ্যন্তি শিশুনায়কা। স্ত্রীনায়কা বিনশ্যন্তি, নশ্যন্তি বহুনায়কা।। (চাণক্য) | শিশু, স্ত্রী, বহুনায়ক ও পরিচালকহীন জন বিনাশপ্রাপ্ত হয়। |
অনাহ্বানের নিমন্ত্রণ, না আঁচালে বিশ্বাস নেই | উপযাচকের ইচ্ছা অনেকসময় পূর্ণ হয় না; যেকোন কাজেই সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অনিশ্চয়তার আশঙ্কা থাকে। |
অনিচ্ছুক ঘোড়াকে জল খাওয়ানো যায় না | অনিচ্ছুক হলে কারো কাছ থেকে কাজ আদায় করা অসম্ভব। |
অনিশ্চিতের আশায় নিশ্চিত ত্যাগ করো না | সম্ভব ছেড়ে অসম্ভবের পিছনে ছূটো না। |
অনিষ্ট হ'তে ইষ্ট লাভ | মন্দঘটনা থেকে ভাল ঘটনার উৎপত্তি; সমতুল্য- 'অহিতে বিপরীত', 'শাপে বর'; বিরুদ্ধ উক্তি- হিতে বিপরীত'। |
অনুরাগ বিনে গৌর আসবে কেনে? | প্রীতি ও প্রেমের পূণ্যবাঁধনে স্বর্গ রচিত হয়। |
অনুরোধে ঢেঁকি গেলা | অনুরুদ্ধ হয়ে নিতান্ত বাধ্য হয়ে কোন কাজ সম্পাদন করা। |
অনুশীলনে পাথর ক্ষয় হয় | পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই; সমতুল্য- পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। |
অনুশীলনে মানুষ নিঁখুত/সম্পূর্ণ হয় | দক্ষতা অর্জনে ধারাবাহিক অনুশীলন একান্ত জরুরি; সমতুল্য- 'পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'কোন মানুষ নিখুঁত/সম্পূর্ণ নয়'। |
অনেক কালের ছিল পাপ ছেলে হল সতীনের বাপ // অনেক কালের ছিল পাপ বড় ছেলে সতীনের বাপ | সবই কর্মফল; পাপ করলে শাস্তি আছেই; পাপ বাপকেও ছাড়ে না; পাপের ফলভোগ কোন না কোন করতেই হয়। |
অনেক খেলে অল্প খাবে; অল্প খেলে অনেক খাবে // অনেক খাবে তো অল্প খাও, অল্প খাবে তো অনেক খাও | সারাজীবনের আহার নির্দিষ্ট; প্রতিদিন বেশিবেশি খেলে অল্পদিনে তা ফুরিয়ে যাবে (সল্পায়ু হবে); অপরপক্ষে অল্পঅল্প খেলে তা বেশিদিন ধরে খাবে (দীর্ঘায়ু হবে); মিতাহারী হওয়ার পক্ষে সওয়াল। |
অনেক গর্জনে ফোঁটা বৃষ্টি | অকর্মারা বেশি হাঁকাহাঁকি করে; সমতুল্য- অতি মেঘে অনাবৃষ্টি/ফোঁটাবৃষ্টি; যত গর্জে তত বর্ষে না; বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া ইত্যাদি। |
অনেক/অগাধ/গভীর জলের মাছ | সহজে ধরা দেয় না এমন সুচতুর ব্যক্তি; অবিচলিত চিত্ত গম্ভীর-স্বভাবযুক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে প্রযোজ্য উক্তি |
অনেক দক্ষতা কোন দক্ষতা নয়- জাপানী প্রবাদ | বেশি কাজের লোক হলে কাজ হয় না; বেশই জানলে কিছুই জানা হওয় না; সবজান্তারা সম্যক কিছু জানে না; সমতুল্য- 'অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট'। |
অনেক যদি মাছ পায়, বেড়ালে কাঁটা বেছে খায় | প্রয়োজনের বেশি হলে নির্বাচনের প্রশ্ন আসে। |
অনেক রাঁধুনিতে ব্যঞ্জন নষ্ট // অনেক ফকিরে দরগা নষ্ট // অনেক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট // অনেক মাতব্বরে বিচার নষ্ট | এক কাজে অনেক লোক জুটে গেলে মতভেদের কারণে কাজ পণ্ড হয়। |
অনেক সুখ কপালে, ছেঁড়া কাঁথা বগলে | কপাল বলে কিছু নেই; মানুষ কর্মদোষে দুঃখ ভোগ করে। |
অনেক হল পাপ, এবার ছাড়ো বাপ | ভোগবিলাস অনেক হয়েছে, এবার দিনান্তে আসে ওসব ছেড়ে ধর্মেকর্মে মন দাও। |
অন্তঃসারবিহিনানামুপদেশ ন বিদ্যতে | অন্তঃসারশূন্য ব্যক্তিদের নানা উপদেশ দিলেও কোন ফললাভ হয় না; সমতুল্য- চন্দনগাছের সংসর্গে এলেও বাঁশ চন্দন হয় না; বিরুদ্ধ উক্তি- চন্দনের সংস্পর্শে এলে শেওড়াগাছও চন্দন গন্ধ পায়। |
অন্তরে এত খলতা, মুখে তোর অতি শীলতা | অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ |
অন্ধ কয়বার নড়ি (লাঠি) হারায় | একবারও না; যার যেটা একমাত্র অবলম্বন সেই বিষয়ে সে খুব সতর্ক থাকে। |
অন্ধ জাগো না কিবা রাত্রি কিবা দিন // অন্ধের কিবা রাত্রি কিবা দিন | যার কষ্টের সীমা-পরিসীমা নেই সে সব বিষয়েই নিস্পৃহ। |
অন্ধ হলেই কি প্রলয় বন্ধ থাকে | জগৎ জলে তার নিজের নিয়ম, ব্যক্তি নিমিত্তমাত্র। |
অন্ধকার আছে বলেই আলোর কদর | বদগুণ ভালো নয় বলেই সদগুণের কদর; সমতুল্য- মেঘ আছে বলেই সুর্যের কদর। |
অন্ধকার আলো দূর করে না, আলো অন্ধকার দূর করে | জ্ঞানের আলোতে মনের অন্ধকার দূর হয়। |
অন্ধকার ঘরে কালো বেড়াল খোঁজা // অন্ধকারে উকুন বাছা | নিস্ফল প্রচেষ্টা, যা হবার নয়; সমতুল্য- খড়ের গাদায় সূচ খোঁজা |
অন্ধকার রাত্রির পরেই ঊষার আগমন | কখনো নিরাশ হ’তে নেই; সুসময়ের অপেক্ষায় থাকতে হয়। |
অন্ধকারকে অভিশাপ দেওয়া থেকে একটি প্রদীপ জ্বালানো ভাল- চীনা প্রবাদ | কোন সমস্যা সম্পর্রকে অভিযোগ না জানিয়ে সমস্যাটির সমাধানে সচেষ্ট হওয়া উচিত। |
অন্ধকারে ঢিল/ঢেলা ছোঁড়া/মারা // অন্ধকারে লাউ কোটা | নিস্ফল বা বৃথা প্রচেষ্টা; ফল কি হবে না জেনে আন্দাজে কাজ করা' সমতুল্য- এ কেবল দিনে রাত্রে জল ঢেলে ফুটা পাত্রে. বৃথা চেষ্টা তৃষ্ণা মিটাবারে। |
অন্ধকারে সব বিড়ালকে ধূসর দেখায় | অস্পষ্ট বিষয়ে অনুমান করতে ভুল হয়। |
অন্ধকে দর্পণ দেখানো | নির্বোধকে নীতিজ্ঞান দেওয়া; নিস্ফল প্রচেষ্টা |
অন্ধ জাগো না কিবা রাত্রি কিবা দিন | সকল অবস্থাই যার কাছে সমান তার ক্ষেত্রে এই প্রবাদ প্রযোজ্য। |
অন্ধজনে দেহ আলো, মৃতজনে দেহ প্রাণ- রবীন্দ্রনাথ | মনের অন্ধকার দূর কর; অজ্ঞানকে জ্ঞানী কর; সমতুল্য- তমোসা মা জ্যোতির্গময়। |
অন্ধস্য দীপো, বধিরস্য গীতং। মুর্খস্য শাস্ত্রং কিমু সানুরাগং।। (চাণক্য) | যার যে ইন্দ্রীয় নেই তার সেই ইন্দ্রীয়গ্রাহ্য বিষয় লাভের চেষ্টা বৃথা। |
অন্ধের কিবা রাত্রি কিবা দিন | অন্ধের কাছে দিনরাত্রি কোন প্রভেদ নেই- দুই সমান; অভাগার বাছবিচার করা বাতুলতা। |
অন্ধের দেশে কানা রাজা | অজ্ঞানদের মধ্যে একজন স্বল্পজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি বিরাট জ্ঞানী। |
অন্ধের দোকানে কালা খরিদ্দার | দুজনেই সমান অপদার্থ; সমতুল্য- 'গুরু বোবা, শিষ্য কালা', 'দাদা কানা, আমি দেখিনে', 'হব/হবুচন্দ্র রাজা, গব/গবুচন্দ্র মন্ত্রী' ইত্যাদি। |
অন্ধের নড়ি/যষ্ঠি | অন্ধ চোখে দেখে না তাই সে লাঠির ওপর-ই ভরসা করে চলে; লাঠিই তার একমাত্র অবলম্বন। |
অন্ধের নড়ি, কৃপণের কড়ি | কৃপণের কাছে কড়ি যেমন অন্ধের কাছেও লাঠি হল যখের ধনের সমান। |
অন্ধের মত চলো | পা ফেলার যায়গা পরীক্ষা না করে অন্ধ পা ফেলে না; বিরুদ্ধ উক্তি- 'অন্ধের মত চলো না'। |
অন্ধের মত চলো না | চোখ বুজে পথ চলো না; কিছু-না-বুঝে কোন কাজ করো না। |
অন্ধের হস্তীদর্শন | পরিষ্কার ধারণা না নিয়ে শুধু অংশবিশেষ পর্যালোচনা করে কোন বিষয় সম্পর্কে সম্পুর্ণ মতামত ব্যক্ত করা ভুল। |
অন্ন আর অর্থবিনা কোন কাজ সঠিক হয় না | পেটে ভাত আর পকেটে টাকা না থাকলে কোন কাজ ঠিকমত হয় না। |
অন্নচিন্তা চমৎকারা কাতরে কবিতা কুতঃ // অন্নচিন্তা চমৎকারা, কালিদাস বুদ্ধিহারা // অন্নচিন্তা চমৎকারা, ঘরে ভাত নাই জীয়ন্তে মরা // অন্নবিনা ছন্নছাড়া //অন্নের জ্বালা বড় জ্বালা এক দিনে লাগে তালা // অন্নের বড় জ্বালারে ভাই অন্নের বড় জ্বালা, দুই হাঁটু ঠকঠক করে কর্ণে লাগে তালা | খিদের জ্বালায় মাথা ঠিক থাকে না; অন্ন জোটানোর চিন্তা কঠিন ব্যাপার অথচ খুব প্রয়োজন, না খেয়ে থাকা যায় না; যার অন্নের সংস্থান নেই ষে জীবন্মৃত; পেটে ভাত না পড়লে সব গোলমাল হয়ে যায়; (মূলশোক- 'দরিদ্রস্য গুণা সর্বে...') |
অন্নজলের বরাত ওঠা | পরমায়ু শেষ। |
অন্নজলের নাড়ী কোটা | শিশুর ভাতজল খাওয়ার তথা অন্নপ্রাসনের বয়স হওয়া। |
অন্নজলের বরাত ওঠা | জীবনান্ত, পরমায়ু শেষ, জীবিকা অর্জনের উপায় শেষ। |
অন্নাদষ্টগুণং পিষ্ট পিষ্টাদষ্টগুণং পয়ঃ। পয়সোহষ্টগুণং মাংসং মাংসাদষ্টগুণং ঘৃতম্।। (চাণক্য) | অন্নের তুলনায় পিষ্টক আটগুণ পুষ্টি দান করে; পিষ্টকের তুলনায় দুগ্ধ আটগুণ পুষ্টি দান করে; দুগ্ধের তুলনায় মাংস আটগুণ পুষ্টি দান করে; এবং মাংসের তুলনায় ঘৃত আটগুণ পুষ্টি দান করে। |
অন্নদাতা ভয়ত্রাতা যস্য কন্যা বিবাহিতা। জনয়িতোপনতা চ পঞ্চৈতে পিতরঃস্মৃতা।। (চাণক্য) | যিনি অন্ন দান করেন, যিনি ভয় থেকে রক্ষা করেন, যিনি কন্যা দান করেন (শ্বশুর), যিনি জন্মদান করেন, যিনি উপনয়ন দান করেন- এই পাঁচজন পিতার স্বীকৃতি পান। (পঞ্চপিতা কারা?) |
অন্নদানাৎ পরং দানং, ন ভূতং ন ভবিষ্যতি। অন্নেন ধার্যতে সর্বং জগদেতচ্চরাচরং।। | অন্নদানের পর আর দান নেই; পূর্বেও ছিল না, ভবিষ্যতেও হবে না, কারণ সমগ্র চরাচর একমাত্র অন্নদ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। |
অন্ন দেখে দেবে ঘি, পাত্র দেখে দেবে ঝি | ভালো ভাতে ঘি দিলে সুস্বাদু হয়; সুপাত্রে কন্যাদান করলে ষে সুখী হয়; সব বিষয়ে ভেবেচিন্তেই নির্বাচন করা উচিত; মহার্ঘ বিষয়ের অপব্যবহার অনুচিত। |
অন্ন নাই যার ঘরে, তার মানে কি বা করে | হাভাতের কোন মানসম্মান নেই। |
অন্নপূর্ণা যার ঘরে, সে কাঁদে অন্নের তরে | এমনই দুরদৃষ্ট যে চাষীর মুখে অন্ন জোটে না। |
অন্নপ্রাশনের ভাত উগরে ওঠা | বৃদ্ধবয়সে ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করা। |
অন্নবল নেই, অগ্নিবল আছে | অভাগার অন্ন যোগাড় করার অর্থ নেই, কিন্তু ক্ষুধার জ্বালা আছে। |
অন্নবিনা চর্ম গড়ি, তৈলবিনা গায়ে খড়ি // অন্নবিনা ছন্নছাড়া | পেটে অন্ন না পড়লে শরীরে চাকচিক্য আসে না; অন্নাভাবে দূরবস্থা। |
অন্নের জ্বালা বড় জ্বালা একদিনে লাগে তালা | পেটে ভাত না পড়লে জীবন ওষ্ঠাগত। |
অন্যলোকে ভুরা (গুড়ের নিকৃষ্ট অংশ) দেয় ভাগ্যে আমি চিনি | সেয়ানা লোক ঠকে না। (ভারতচন্দ্রের বিদ্যাসুন্দর কাব্যের হীরা মালিনীর ইক্ত) |
অন্যায় করাটা কিছুই না যদি না তুমি সেটা সর্বক্ষণ মনে রাখো- কনফুসিয়াস | অজ্ঞানে অন্যায় করলে সেটা ভুল; জ্ঞানতঃ অন্যায় করলে সেটা পাপ; পাপীই অন্যায় করার ইচ্ছা মনে পুষে রাখে। |
অন্যে পরে কা কথা | বিধাতার বিড়ম্বনায়- রামের বনবাস হয়েছিল, সীতা আগুনে পুড়েছিলেন, কৃষ্ণ অপঘাতে মরেছিলেন, অন্যেরও তাই হবে- এর আর বেশি কথা কি; (মূলশ্লোক- রামো যেন বিড়ম্বিতোহপি...') |
অন্যে যার গুণ গায় সে নির্গুণ হলেও গুণী; নিজের গুণগানে ইন্দ্রও ছোট হয় | গুণীলোক পরের গুণ গায়; নির্গুণ শুধু নিজের ঢাক পিটিয়ে ছোট হয়। |
অন্যের যা খারাপ মনে কর নিজের মধ্যেও তা খারাপ মনে করতে শেখো | স্বভাবদোষে মানুষ নিজের দোষ দেখে না; এটা করতে পারলে সবার মঙ্গল হত। |
অন্যের মধ্যে কি দোষ আছে অন্বেষণ করো না বরং নিজের মধ্যে কি দোষ অন্বেষণ কর- কনফুসিয়াস | আগে নিজেকে সংশোধন করা উচিত। |
অপচয়ে লক্ষ্মীনাশ/লক্ষ্মী ছাড়ে | অপচয়ে অর্থসঙ্কট দেখা দেয়। |
অপদার্থ যেখান থেকে শুরু করে সেখানেই ফিরে আসে | অপদার্থের কাজের নীটফল শূন্য। |
অপমানের পরাণ, সম্মানকে ডরান | অতি বিনযী ও নম্রপ্রকৃতির মানুষ সম্মানকে অতি তুচ্ছ মনে করেন। |
অপব্যয় করো না, অভাবে পড়ো না | আয় বুঝে ব্যয় করলে কোনদিন অভাব হবে না। |
অপব্যয়ে লক্ষ্মী ছাড়ে | অকারণে ব্যয় করলে কুবেরের সম্পত্তিও একদিন শেষ হয়; সমতুল্য- 'যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি আশু গৃহে তার দেখিবে না আর নিশিতে প্রদীপ ভাতি'। |
অপরং বা কিং ভবিষ্যতি | যা যা ঘটার নয় তার সবই ঘটল; না জানি আর কি বা কপালে আছে; সমতুল্য- 'অদৃষ্টের লখন না যায় খণ্ডন'; (মূলশ্লোক- 'ভোজনং যত্রতত্র শয়নং হট্টমন্দিরে...') |
অপরাধবোধের ফরিয়াদীর প্রয়োজন হয় না | অপরাধী অপরাধ স্বীকার করলে অভিযোগ জানানোর প্রয়োজন হয় না। |
অপরের মন্দ নিজের হিত, না করিও কদাচিৎ | এইপ্রকার চিন্তাভাবনা পাপবোধের জন্ম দেয়। |
অপাত্রঃ পাত্রতাং যাতি যত্রো পাত্রো ন বিদ্যতে। নিরস্ত পাদপদেশে এণ্ডোহপি দ্রূমায়তে।। (চাণক্য) | যেখানে গুণীব্যক্তি নাই সেখানে নির্গুণব্যক্তি পূজিত হয়; যেদেশে বৃক্ষ নাই সেদেশে এরণ্ডবৃক্ষও বৃক্ষের স্বীকৃতি পায়। |
অপেক্ষার সময় শেষ হয় না- ইংরাজী প্রবাদ | কিছু পাবার আশায় বসে থাকলে অনন্তকাল বসে থাকতে হবে; অপেক্ষায় কার্যসিদ্ধি হয় না; অপেক্ষা করায় রাবণও স্বর্গের সিঁড়ি বানাতে পারেন নি। |
অপাত্রঃ পাত্রতাং যাতি, যত্র পাত্রো ন বিদ্যতে। নিরস্তপাদপে দেশে এরণ্ডোহপি দ্রুমায়তে।। (চাণক্য) | যে দেশে গুণী নাই, সেই দেশ নির্গুণব্যক্তি গুণী বলে পুজিত হয়; যে দেশে বৃক্ষ নাই সে দেশে এরণ্ড গাছও বৃক্ষ বলে বিবেচিত হয়। |
অপ্রিয় সত্য কথা বলিও না | অপ্রিয় সত্য কথা শুনতে কেউ চায় না। |
অপ্রিয়স্য চ পথ্যস্য বক্তা শ্রোতা চ দুর্লভঃ | হিতকর বাক্যের বক্তা ও শ্রোতা দুই দুর্লভ; এইরূপ বাক্য কেউ বলতে বা শুনতে চায় না। |
অবরকে/অবুঝকে বুঝাব কত বুঝ নাহি মানে, ঢেঁকিকে বুঝাব কত নিত্য ধান ভানে-প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় | মুর্খকে সদুপদেশ দিতে নাই। |
অবংশো পতিতো রাজা, মুর্খপুত্রশ্চ পণ্ডিতঃ। অধনস্য ধনং প্রাপ্য তৃণবন্মন্যতে জগৎ।। (চাণক্য) | অযোগ্য হীনব্যক্তি যদি রাজপদ পায়, মূর্খের পুত্র যদি পণ্ডিত হয় এবং দরিদ্র যদি হঠাৎ বড়লোক হয় তবে তারা জগতকে তৃণের মত জ্ঞান করে। |
অবলা বোলে দড়, অফলা ফলে দড় // অবলার মুখই বল | শারিরিক বল কম থাকায় অবলা মুখের বোল বেশি হয়; অবলার মুখ ছোটে বেশি; একবার বকতে শুরু করলে তাকে থামানো মুশকিল; যে গাছে ফল ধরে না ষে গাছে একবার ধরলে প্রচুর পরিমাণে ফলে। |
অবশ্যমেব ভোক্তব্যং কৃতং কর্ম শুভাশুভম | শুভই হোক আর অশুভই হোক, কৃতকর্মের ফল ভুগতেই হয়। |
অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা | সামর্থের বাইরে কখনো যেও না; সমতুল্য়- 'আয় বুঝে ব্যয় ক্ররা, 'ওজন বুঝে চলা;, 'কাপড় বুঝে জামা কাটা, 'যখন যেমন তখন তেমন' ইত্যাদি। |
অবাক করলি রাধা, অম্বলে দিলি আদা! | গৃহকর্মে অনিপুণ বউ কাজ থেকে অকাজ বেশি করে; যা করার নয় তাই করলে এই প্রবাদ উক্ত হয়। |
অবাক্ কল্লে নাকের নথে,কাজ কি আমার কানবালাতে | নাকের নথেই রূপ খুলেছে, কানপাশার আর প্রয়োজন নেই। |
অবাক কলির অবতার, ছুঁচোর গলায় চন্দ্রহার | অযোগ্যের হাতে উৎকৃষ্ট দ্রব্য দেখে খেদ। |
অবিদ্যং জীবনং শূন্যং দিক্ শূন্যা চেদবান্ধবা। পুত্রহীনং গৃহং শূন্যং সর্বশূন্যা দরিদ্রতা॥ (চাণক্য) | বিদ্যাহীনের জীবন শূন্য, বন্ধুহীনের সকলদিক শূন্য, পুত্রহীনের গৃহ শূন্য আর দরিদ্রের সকলই শূন্য। |
অবিদ্যঃ পুরুষঃ শোচ্যঃ শোচং মৈথুনমপ্রজম। নিরাহারাঃ প্রজাঃ শোচ্যাঃ শোচ্যং রাজ্যমরাজকম।। (চাণক্য) | বিধ্যাহীন পুরুষ শোচনীয়, সন্তান উৎপাদনে অক্ষম মৈথুন শোচনীয়, অন্নহীন প্রজা শোচনীয়, অরাজক দেশ শোচনীয়। |
অবিবেকঃ পরমাস্পদম | বিবেকশূন্যতাই সব আপদের মূল। |
অবিমিশ্র সুখ হয় না | শুধু ভাল হয় না; ভালমন্দ মিশিয়ে থাকে; সমতুল্য- 'আলার পিছে কালা আছে', 'কলঙ্কবিনা চাঁদ নাই', 'কাঁটাবিনা গোলাপ/পদ্ম হয় না, 'প্রদীপের নীচে অন্ধকার' ইত্যাদি। |
অবিয়ন্তির ঠুনকোর (স্তন) ব্যথা | যে নারীর সন্তান হয় নি তার স্তনে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা নেই; যা হবার নয় তা হ'লেই লোকে এই প্রবাদ বলে; সমতুল্য- 'না বিইয়ে কানাইয়ের মা'। |
অবিশ্বস্তকে বিশ্বাস করবে না; বিশ্বস্ত বন্ধুকেও অতিরিক্ত বিশ্বাস করবে না | বিচার বিবেচনা না করে বিশ্বাস করা ভাল নয়; বিরুদ্ধ উক্তি- অবিশ্বাস করে ঠকা থেকে বিশ্বাস করে ঠকা ভাল', 'মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো মহাপাপ'। |
অবিশ্বাস করে ঠকা থেকে বিশ্বাস করে ঠকা অনেক ভাল | তাতে লাভ বেশি, ক্ষতি কম; কোনভাবেই অবিশ্বাসকে মনে বাসা বাঁধতে দেওয়া নেই। |
অবুঝে বুঝাব কত,বুঝ নাহি মানে; ঢেঁকিরে বুঝাব কত, নিত্য ধান ভানে | অজ্ঞানে সদু উপদেশ নিস্ফলা; ঢেঁকিকে যতই বোঝাও সে ধান ভানবেই। |
অবোধারে বুঝাব কত, বোধ নাহি মানে; ঢেঁকিরে বুঝাব কত, নিত্য ধান ভানে | যে কিছু বোঝে না তাকে অতিরিক্ত কিছু বোঝানো চেষ্টা বৃথা; ঢেঁকি ধানভানা ছাড়া অন্য কাজ জানে না; সমতুল্য- ভৈঁসকে আগে বীণ বাজাওয়ে ভৈঁশ ঠাঢ় পগুরায়। |
অবোধারে মারে বোধায়, বোধারে মারে খোদায় | বোকাকে চালাকলোকে ঠকায়; চালাকলোক ভগবানের কাছে শাস্তি পায়। |
অবোধের খাটনি ভারি | বোকাকে বেশি খাটানো যায়; সমতুল্য-'গাধার পিঠে ভারী বোঝা'। |
অবোধের গোবধে আনন্দ | বোকারা দুস্কর্ম করে বেশি আনন্দ পায়; নির্বোধের পাপপূণ্য বোধ নেই। |
অবোধের সাত খুন মাপ | অজ্ঞানকৃত গুরুতর অপরাধো মার্জনীয়; পাগলের কোন শাস্তি হয় না। |
অবোলা চলে বড়, অফলা ফলে বড় | পথ চলতে চলতে যে কথা বলে না সে অনেকটা পথ যায়; যে গাছে ফল ধরে না সে গাছে একবার ফল ধরলে প্রচুর পরিমাণে হয়। |
অব্রাহ্মণের দীর্ঘ ফোঁটা | অক্ষম বেশি ভান করে; সমতুল্য- 'ভণ্ড ব্রাহ্মণের ভড়ং বেশি'। |
অভদ্রা বর্ষাকাল হরিণী চাটে বাঘের গাল; শোনরে হরিণী তোরে কই সময়গুণে সবই সই | মন্দ সময়ে প্রবলব্যক্তি অসহায় হয়ে পড়লে দুর্বলব্যক্তিও তাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে; সমতূল্য- হাতি কাদায় পড়লে চামচিকেতেও লাথি মারে'। |
অভাগা চোর যে বাড়ী যায়, হয় কুকুর ডাকে নয় রাত পোহায় // অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকায়ে যায় | ভাগ্য অভাগাকে সবদিক থেকেই মারে। |
অভাগা যায় বঙ্গে, কপাল যায় সঙ্গে | যেখানেই যাও না কেন অদৃষ্টও তোমার সঙ্গে সঙ্গে যাবে; সমতুল্য- 'পোড়া কপাল জোড়া লাগে না'। |
অভাগা যেদিকে চায়, সাগর শুকিয়ে যায় | ভাগ্য মন্দ হলে অভাগা কোনোদিক থেকেই সাহায্য পায় না; সৌভাগ্যশালীও তাকে দূরদূর করে তাড়ায়। |
অভাগার গরু মরে, শকুনের ভাগ্য বাড়ে | একজনের ক্ষতি হলে অবশ্যই অন্য একজনের লাভ হয়; সমতুল্য- কারও পৌষমাস কারও সর্বনাশ'। |
অভাগার গরু মরে, ভাগ্যবানের বউ মরে | গরু মরলে মূলধনের ক্ষতি, সেই অর্থে মালিক অভাগা; বউ মরলে দ্বিতীয়বার বিয়ে করে অর্থলাভ, সেই অর্থে সেই পুরুষ সৌভাগ্যবান। |
অভাগার যমও নেই | এমনই দুর্ভাগ্য যে মরে যে শান্তি পাবে তারও উপায় নেই। |
অভাগার হারাবার কিছু নাই | যার কিছু নাই তার কিছু হারাবার ভয় নাই |
অভাগীর লগনে চাঁদ নাই গগনে | অভাগীর ভাগ্যাকাশে পূর্ণিমার চাঁদ থাকে না থাকে অমাবস্যার অন্ধকার। |
অভাগিনী দুয়ো নেটি পেটি সুয়ো | কোন লোকের দুই স্ত্রী থাকলে সুয়ো স্বামী সোহাগিনী হয় এবং দুয়ো অভিমানী হয়ে পড়ে। |
অভাগিনীর দুটি পুত, একটি দানা একটি ভূত | সৌভাগ্যবতীর সুপুত্র হয়; কিন্তু দুটো পুত্রই যদি বদ হয় তবে সে নারী অভাগিনী ছাড়া আর কিছু নয়। |
অভাব যখন দুয়ারে এসে দাঁড়ায় ভালবাসা তখন জানলা দিয়ে পালায়- সেক্সপিয়র | অভাব মনের সব অনুভূতি নষ্ট করে। |
অভাবে স্বভাব নষ্ট | অভাব হলে অবস্থার চাপে ভালো মানুষও অসৎ হয়; সৎ থাকা খুবই কষ্টকর; সমতুল্য- 'স্বভাবে করে না অভাবে করে'। |
অভাবের সময়ের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু | কঠিন সময়ে প্রকৃতবন্ধুর কাছ থেকে সৎ পরামর্শ পাওয়া যায়। |
অভাবে স্বভাব নষ্ট, মুখ নষ্ট বরণে, ঝর্যয় ক্ষেত নষ্ট, স্ত্রী নষ্ট মারণে | অভাব মানুষকে নষ্ট করে; ব্রণ মুখের শ্রী নষ্ট করে; ঝড় চাষ নষ্ট করে এবং মারধোর করলে স্ত্রী নষ্ট হয়। |
অভিজ্ঞতা হল চিরুনীর মত, সব চুল পড়ে গেলে প্রকৃতি যা আমাদের দেয়- চীনা প্রবাদ | জীবন যন্ত্রণায় পোড় খেতে খেতে মানুষ অভিজ্ঞ হয়। |
অভিজ্ঞতায় মানুষ বিজ্ঞ হয় | অভিজ্ঞতায় পোড় খাওয়া লোক সহজে বোকা হয় না। |
অভেদাত্মা হরিহর | অভিন্ন হৃদয়ের দুই বন্ধু; পুরাণে হরি এবং হর অভেদাত্মা বলে বর্ণিত। |
অভ্যাস দোষ না ছাড়ে চোরে, শূন্য ভিটায় মাটি খোঁড়ে // অভ্যাস দ্বিতীয় প্রকৃতি | মানুষ অভ্যাসের দাস; অভ্যাস স্বভাবে দাঁড়ায়; কোন মানুষ অভ্যাসের বশবর্তী হয়ে কোন কাজ করলে ব্যাঙ্গ করে এই উক্তি করা হয়; সমতুল্য- 'কুকুরের আড়াই পাক', 'বিড়ালের তিন পা' ইত্যাদি। |
অভ্যাস প্রথমে মাকড়সার জাল শেষে মোটা রশি- চীনা প্রবাদ | অভ্যাস শেষে প্রকৃতিতে পরিণত হয়। |
অভ্যাসহীন বিদ্যা বিষতুল্য | অধিতবিদ্যার চর্চা না হলে তার ফল নেই। |
অভ্যাসে সয় অনভ্যাসে নয় | অনায়াসে কিছু হয় না; অভ্যাসেও আয়াস লাগে। |
অভ্যুথানাং হি পতনায় | বৃদ্ধি হলে পতন হবে; বৃদ্ধি পতনের মূল কারণ। |
'অমানিশার অন্ধকারে অনুপস্থিত অসিত অশ্বডিম্বের অন্বেষণ' (অনুপ্রাস)- সৈয়দ মুজতবা আলী | নিস্ফল প্রচেষ্টা, যা হবার নয়।; সমতুল্য- 'অন্ধকার ঘরে অনুপস্থিত কালো বেড়াল খোঁজা'। |
অমাবস্যায় আর পূর্ণিমায় যেবা ধরে হাল তার দুঃখ থাকে চিরকাল; তার বলদের হয় বাত, ঘরেতে না থাকে ভাত- খনা | অমাবস্যায় আর পূর্ণিমায় হাল ধরতে নেই; যে ধরে তার ঘরে চিরকাল দুঃখ বাঁধা থাকে; বাতে বলদ কাবু হয়; নানা কারণে তার চাষ নিস্ফল হয়; ঘরে অন্নাভাব দেখা দেয়। |
অমাবস্যার চাঁদ | অদৃশ্য বস্তু; অসম্ভব ঘটনা |
অমাবস্যার প্রদীপ টিপটিপ করে | ঘোর অন্ধকারে প্রদীপের টিমটিমে আলো যেমন যথেষ্ট নয়, তেমনি ঘোর বিপদে মৌখিক সান্ত্বনাও যথেষ্ট নয়। |
অমৃত ও বিষ উভয়েরই আকর জিভ | জিভ থেকেই অমৃত উৎপন্ন হয়; বিষও উৎপন্ন। |
অমৃত না জানি কি পদার্থ, খেয়ে দেখি না জল | না-ব্যবহার-করা দ্রব্য নিয়ে কতই-না ভ্রান্তধারণা থাকে; ব্যবহারে ধরা পড়ে যে এদের অনেকগুলিই অতি সাধারণ বস্তু; সমতুল্য- 'গঙ্গা গঙ্গা না জানি কত রঙ্গা চঙ্গা'। |
অমৃতং বালভাষিতম | শিশুর কথা বড়ই শ্রুতিমধুর; তাদের অসংযত কথাবার্তাও কারও বিরক্তি উদ্রেগ করে না। |
অমৃতং সুভাষিতম | সুবচন/সুভাষিত অমৃতসমান। |
অমোঘাঃ পশ্চিমা মেঘাঃ | পশ্চিমদিকে মেঘ হলে বৃষ্টি হবেই। |
অম্বল, কম্বল, ডম্বল তিন শীতের সম্বল | টক, কম্বল ও ব্য়াযাম তিন থাকলে শীত কাবু থাকে। |
অযথা বিপদের মধ্যে যাওয়া যুক্তিযুক্ত নয় | বিপদ এড়িয়ে চলা বুদ্ধিমানের কাজ। |
অয়ং নিজঃ পরো বেতি গণনা লঘু চেতসাম। উদারচরিতানাং ত বসুধৈব কুটুম্বম॥ (চাণক্য) | ইনি নিজের, উনি পরের এই জাতীয় বিচার নীচুপ্রকৃতির; উদারচরিত্রের কাছে সমগ্র বিশ্ব আত্মীয়স্বরূপ। |
অরগুণ নাই বরগুণ আছে (২৪ পরগণা) | অন্তর্গুণ নেই বহির্গুণ আছে; কোন ভালগুণ নেই, শুধু মন্দগুণ আছে; দুঃখনাশের গুণ নেই, শুধু দুঃখবৃদ্ধির গুণ আছে; সমতুল্য- আরগুণ নাই ছারগুণ আছে (ঢাকা)। |
অরণ্যে রোদন করা | নিস্ফল প্রার্থনা করা; বৃথা কান্নাকাটি করা; সমতুল্য- 'পাথরে মাথা ঠোকা'। |
অরণ্যে শৃগালঃ ধূর্তং, পক্ষী ধূর্তং বায়সাঃ। নরানাং নাপিত ধূর্তং, দেব ধূর্তং নারদা। (চাণক্য) | বনে শিয়াল ধূর্ত; পাখীদের মধ্যে কাক ধূর্ত; মানুষের মধ্যে নাপিত ধূর্ত এবং দেবতাদের মধ্যে নারদ ধূর্ত। |
অরসিকেষু রসস্য নিবেদনম | রসের কথা শুধু রসিককেই বলা যায়; অরসিককে বলা অর্থহীন; নির্গুণের কাছে গুণের কোন কদর নেই ; সমতুল্য- 'উলুবনে/বেনাবনে মুক্তা ছড়ানো'; 'ভৈঁসকে আগে বীণ বাজাওয়ে'। |
অরসিকেষু রসস্য নিবেদনম শিরসি মা লিখ মা লিখ মা লিখ | কবি দুঃখ করে বলেছেন- হে বিধাতা তুমি আমার অদৃষ্টে অন্য যতপ্রকার দুঃখ আছে দাও কিন্তু অরসিক লোকের কাছে রসের নিবেদনরূপ দুঃখ আমার অদৃষ্টে লিখিও না, লিখিও না, লিখিও না। |
অরাঁধুনির হাতে পড়ে কই/রুই মাছ কাঁদে; না জানি রাঁধুনি আমার কে্মন করে রাঁধে | রাঁধুনী ভাল না হলে কইমাছের ঝাল বা রুইমাছে কালিয়া বিস্বাদ হয়ে যায়; উত্তম বস্তু পেতে গেলে উপযুক্ত লোককে দায়িত্ব দিতে হবে। |
অরুচির অম্বল, শীতের কম্বল; বর্ষার ছাতি, ভটচায্যির পাঁতি (পুথি) | অরুচিতে অম্বল খুব কার্যকরী; শীতকালে কম্বল খুব প্রিয়; বর্ষাকালে ছাতা অবশ্য প্রয়োজনীয়; ব্রাহ্মণ বা পণ্ডিতের ক্রিয়াকর্মে পুথি অপরিহার্য। |
অর্থং অনর্থং ভাবয় নিত্যং | সবসময় ভাব অর্থই অনর্থের কারণ/মূল। |
অর্থ, অর্থ আনে/টানে | অর্থই সবকিছুর উৎস; সমতুল্য- 'টাকা টাকা বল ভাই টাকার মত জিনিষ নাই, টাকাবিনে সংসারেতে সব যন্ত্রণা'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'অর্থই অনর্থের মূল'। |
অর্থ তোমার নয় আমার নয়, অর্থ প্রয়োজনের | কাজে না লাগলে সে অর্থ থাকা মূল্যহীন |
অর্থ থাকলে অভাবের অভাব হয় | অর্থশালীরা জানে না অভাবের জ্বালা কি। |
অর্থ নষ্ট, কিছুই নষ্ট নয়; স্বাস্থা নষ্ট, সামান্য নষ্ট; চরিত্র নষ্ট তো সব নষ্ট | চরিত্র হল মানুষের শ্রেষ্ঠ পরিচয়; চরিত্রের জোরে মানুষ সোজা দাঁড়ায়। |
অর্থ নিজেই শয়তানকে কিনতে পারে | অর্থের অপরিসীম শক্তি। |
অর্থবিনা জীবন যেমন বৃথা, অর্থসহ জীবন তেমনি সুখের নয়- ইহুদী প্রবাদ | অর্থ থাকা বা না-থাকা উভয়ই সমান, উভয়ই দুঃখের কারণ হয়। |
অর্থ যার মামলা/শক্তি তার | অর্থ সব যায়গায় আধিপত্য করে। |
অর্থই অনর্থের মূল | অর্থদ্বারাই যত রকমের হাঙ্গামার সৃষ্টি হয়; |
অর্থতুরাণাং ন গুরুঃ ন বন্ধুঃ | অর্থলোলুপ ব্যক্তির গুরু বা বন্ধু কেউ নাই। |
অর্থনাশং মনস্তাপং গৃহে দুশ্চরিতানি চ। বঞ্চ নঞ্চাপমানঞ্চ মতিমান্ ন প্রকাশয়েৎ॥ (চাণক্য) | ধনক্ষয়, মনঃকষ্ট, ঘরের দুরাচার, বঞ্চনা ও অপমানের কথা প্রাজ্ঞ অন্যের কাছে ব্যক্ত করে না। |
অর্থস্য পুরুষো দাসঃ, দাসস্ত্বর্থো ন কস্যচিৎ | অর্থ কারো দাস নয় বরং পুরুষই অর্থের দাস। |
অর্থে যে সমস্যার সমাধান হয় সেটা সমস্যা নয়, সেটা পণ্যমুল্য- ইহুদী প্রবাদ | সমস্যার কেনাবেচা হয় না। |
অর্থেন পুরুষঃ দাসঃ | অর্থে সবাই বশীভূত; সমতুল্য- 'জাত তো বাক্সের ভিতর'। |
অর্থেন সর্বৈ বশাঃ | অর্থদ্বারা সকলকেই বশ করা যায়। |
অর্থের অপ্রতুলতার জন্য সবাই অভিযোগ করে, বুদ্ধির অপ্রতুলতার জন্য কেউ অভিযোগ করে না- ইহুদী প্রবাদ | সবাই ভাবে সে বেশি বুদ্ধি ধরে, সুতরাং অভিযোগ জানানোর কোন প্রশ্নই নেই। |
অর্ধসত্য মিথ্যা অপেক্ষা ভয়ঙ্কর | আলো-আঁধারে ধাঁধা বেশি হয়। |
অর্ধেক বললে গাধাও বোঝে, সব বললে কে না বোঝে? | সবাই বুঝনদার; কিছু বোঝে না- এমন কেউ নেই। |
অর্ধো ঘটো ঘোষোমুপৈতি নুনম | কলস আধা পূর্ণ হলেই শব্দ করে; অল্পবিদ্যানেরা বেশি বিদ্যার জাহির করে; সমতুল্য- উনা কলসীর দুনা শব্দ। |
অলকার তিলক সার | অলকা-তিলকা বৃথাই গেল কাজে এলো না। |
অলক্ষ্মীর দ্বিগুণ ক্ষুধা | অলক্ষ্মীর একটাই কাজ- পড়ে পড়ে শুধু খাওয়া; অন্নহীনের খিদে প্রবল হয়। |
অলক্ষ্মীর নিদ্রা বেশি, কাঙালের ক্ষুধা বেশি | অলক্ষ্মীরা শুধু পড়ে পড়ে ঘুমায়; কাঙাল শুধু খাওয়ার চিন্তা করে। |
অলভ্যের বাণিজ্যে কচকচিই সার | যে কাজে লাভ নেই সেখানে ঝগড়া বিবাদ ছাড়া আর কিছু হয় না। |
অলমতিবিস্তরেণ // অলমতি বিস্তরেণ | আর বেশি লেখার কিছু নেই; বাহুল্যে প্রয়োজন নেই। |
অলমিতিবিস্তরেণ // অলম ইতি বিস্তরেণ | অধিক কি লিখিব; এখানেই লেখা শেষ করছি। |
অলস ভেড়া ভাবে তার পশম বড় ভারী | অলস একটু ভারও বইতে নারাজ। |
অলস মস্তিষ্ক শয়তানের বাসা | কিছু করার না থাকলে অকাজ করার চিন্তা সবসময় মাথায় ঘুরঘুর করে, যত উদ্ভট চিন্তা মাথায় পাক খায়; বিরুদ্ধ উক্তি- 'অলসতা মনে জং ধরায়'। |
অলসতা দারিদ্র ডেকে আনে | কাজ না করায় অন্ন জোটে না। |
অলসতা মনে জং ধরায় | চিন্তাভাবনা করার ইচ্ছা মনে জাগে না। |
অলসস্য কুতো বিদ্যা, অবিদ্যাস্য কুতো ধনম্। অধনস্য কুতো মিত্রম্, অমিত্রস্য কুতো সুখম্॥ (চাণক্য) | অলসের বিদ্যা কোথায়; অবিদ্যার ধন কোথায়; নির্ধনের বান্ধব কোথায় এবং নির্বান্ধবের সুখ কোথায়? |
অলসব্যক্তি বাকপটুতায় নিরলস | অলস ব্যক্তি বকে বেশি। |
অলসের অন্ন জোটে না | অলসের ভাগ্য অলসের মতই শুয়ে থাকে। |
অলসের অলব্ধ-লাভ হয় না | অলসের প্রাপ্তি শূন্য |
অল্প আগুনে গা গরম হয়; বেশি আগুনে ঘর পোড়ে // অল্প আগুনে শীত হরে, বেশি আগুন পুড়িয়ে মারে | সব বিষয়ে মাত্রাজ্ঞান থাকা দরকার; ভালও নয় অতিশয়; সর্বম অত্যন্তম গর্হিতম্। |
অল্পকথাতেই জ্ঞানীরা বোঝে | জ্ঞানীরা সারসংক্ষেপ পছন্দ করে। |
অল্প খেলে বেশি খাবে, বেশি খেলে অল্প খাবে | অল্প খেলে আয়ু বেশি দিন হয় ফলে বেশি দিন ধরে খাওয়া খায়। |
অল্পগর্জনে অতিবৃষ্টি // অল্পগর্জনে ভারীবর্ষণ | কাজের লোকেরা কম কথা বলে। |
অল্পজলে সফরি ফরফরায়তে // অল্পজলের তিতো পুঁটি, তার এত ছটফটি | অল্পবিদ্যার অধিকারীরাই বেশি বিদ্যা জাহির করে; অল্পজ্ঞানীরা অহঙ্কারী হয়। |
অল্পজলে পুঁটিমাছ ফরফর করে; অগাধজলে কাৎলামাছ নিঃশব্দে সরে | অল্পজ্ঞানীদের অহঙ্কার বেশি হয় এবং সেই অহঙ্কারে কথাবার্তায় জাহির করে; জ্ঞানীরা নিঃশব্দে কাজ সারে। |
অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী // অল্পজ্ঞানীরা অহংকারী হয় | সামান্য বিদ্যা খুব ক্ষতিকর কারণ এতে অহংকার জন্মে অথচ প্রকৃত পাণ্ডিত্য লাভ হয় না; অল্প লেখাপড়া জানা ব্যক্তিরা অতিদর্প দেখায়। এরা যেখানেই হাত দেয় সেখানেই অনর্থ বাঁধায়। |
অল্পবৃষ্টিতে কাদা, বেশিবৃষ্টিতে সাদা১ | অল্পজ্ঞানীর ভাবনাচিন্তা অসচ্ছ হয়; জ্ঞানীপুরুষের ভাবনাচিন্তা সচ্ছ হয়। |
অল্পবৃষ্টিতে কাদা, বেশিবৃষ্টিতে সাদা২ | শোকে অল্প কান্নায় শোক বৃদ্ধি পায়, কিন্তু টানা কান্নায় শোকের অনেকটা লাঘব হয়। |
অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর | অল্প শোকে মানুষ হা-হুতাশ করে, কিন্তু বেশি শোকে শোক প্রকাশের পথ না পেয়ে দুঃখী মূক, নিথর বা নিঃসাড় হয়ে যায়। |
অশুভস্য কালহরনম | অশুভ কাজে কালক্ষেপণ কর্তব্য। |
অশোচ্যা নির্ধনঃ প্রাজ্ঞোহশোচ্যঃ পণ্ডিতবান্ধবঃ। অশোচ্যা বিধাব নারী পুত্রপৌত্রপ্রতিষ্ঠাতা॥ (চাণক্য) | জ্ঞানী নির্ধন হলেও শোচনীয় নন, যে ব্যক্তির বন্ধু পণ্ডিত তিনিও শোচনীয় নন, পুত্রপৌত্রের দ্বারা পরিপালিতা বিধবা নারীও শোচনীয় নন। |
অশ্ন তে স হি কল্যাণং ব্যসনে যো ন মুহ্যতি | যে ব্যক্তি বিপদে মুহ্যমান হয় না সে শ্রেয় প্রাপ্ত হয়। |
অশ্বডিম্ব | অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না; সমতুল্য- আঁটকুড়ের ব্যাটা, আকাশকুসুম, এঁড়ে গরুর দুধ, কাঁঠালের আমসস্ত্ব, ঘোড়ার ডিম, পশ্চিমে সূর্যোদয়, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি |
অশ্বতরী গর্ভ ধরে আপন মরণে | ধারণা করা হয় যে গর্ভবতী অশ্বতরী সন্তানপ্রসবের সময় যন্ত্রণায় মৃত্যুমুখে পতিত হয়; এ যেন ইচ্ছা করে বিপজ্জনক কাজে অগ্রসর হওয়া; বিপজ্জনক কাজে অগ্রসর হলে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী। |
অশ্বত্থামা হত ইতি গজ | অসত্যকে কৌশলে সত্যরূপে প্রকাশ করা; সত্যের আড়ালে মিথ্যা কথন; সব কথা না বলে কিছু কথা গোপন করা; মহাভারতে যুধিষ্ঠিরের একবারমাত্র মিথ্যাভাষণের উল্লেখ আছে। |
অশ্বত্থের ছায়াই ছায়া, মায়ের মায়াই মায়া | অশ্বত্থগাছ বিরাট ও বিশাল; তার ছায়া সুশীতল; আশ্রয় নিতে হলে অশ্বত্থগাছে মত মহতের কাছে নিতে হয়; মায়ের স্নেহ ও মমতারও কোন তুলনা হয় না; আসলের কাছেই আসল জিনিষ পাওয়া যায়। |
অসংভাব্যং ন বক্তব্যং প্রত্যক্ষমপি দৃশ্যতে | প্রত্যক্ষ করলেও অসম্ভব কথা বলেও নেই। |
অসংভাব্যং ন বক্তব্যং প্রত্যক্ষমপি দৃশ্যতে। ডশলা তরতি পানীয়ং গীতং গায়তি বানরঃ।। (চাণক্য) | পাথর জলে ভাসছে, বানর গান করছে- এইরকম অসম্ভব ঘটনা স্বচক্ষে ঘটতে দেখলেও বলা উচিত নয়। |
অসৎ আনন্দের চেয়ে পবিত্র বেদনা অনেক ভালো | কোন মন্দই ভালো নয়। |
অসৎ কাজের অসৎ পরিণতি হয়- জাপানী প্রবাদ | মন্দ কাজের ফল ভাল হতে পাড়ে না; সমতুল্য- 'যেমন কর্ম তেমন ফল'। |
অসৎ পথের আয় অসৎ পথেই যায় | অসৎ পথের আয়ের সঠিক ভোগ হয় না; সমতুল্য- 'উৎপাতের আয় চিৎপাতে যায়', 'পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায়' ইত্যাদি। |
অসৎ সঙ্গ থেকে নিঃসঙ্গতা ভাল | দুর্জনের সংসর্গ কাম্য নয়; সমতুল্য- 'দুষ্ট গরু থেকে শূন্য গোয়াল ভাল'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'নেই-মামার চেয়ে কানামামা ভালো'। |
অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ | সঙ্গদোষে মানুষ নষ্ট হয়। |
অসতী নারী, ফুটো হাঁড়ি ও ভগ্নপ্রায় বাড়ী পরিত্যজ্য | তিনই বিপদ ডেকে আনতে পারে। |
অসতো মা সদ্গময় তমসো মা জ্যোতির্গময় মৃত্যোর্মা অমৃতং গময়- উপনিষদ | আমাকে নিয়ে চলো অসত্য থেকে সত্যে, অন্ধকার থেকে আলোকে, মৃত্যু থেকে অমৃতে। |
অসত্য ও ছলনার মাধ্যমে লাভবান হওয়া থেকে সত্য ও সঠিক পথে থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ভাল- ইহুদী প্রবাদ | অসৎ পথে লাভবান হওয়া ন্যায়ের পথ নয়। |
অসন্তুষ্টা দ্বিজা নষ্টা | দ্বিজ অসন্তুষ্ট হলে বিনষ্ট হয়। |
অসময়ের দিনগুলি দীর্ঘতর হয় | অসময়ের দিনগুলি কাটতেই চায় না। |
অসময়ের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু | দুর্বিপাক বন্ধুত্ব বিচারের কষ্টিপাথর |
অসময়ে সকলি সই, শোনরে দুঃখ তোরে কই | দুর্ভাগ্যের সব ফের গা-সহা হয়ে গেছে। |
অসম্ভব কোন কাজ বলা সহজ করা কঠিন | বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধা বলা সহজ, করা কঠিন। |
অসম্ভবের পিছনে ছোটো না | যা হয় না তা পাওয়ার চেষ্ঠা করা বৃথা। |
অসম্মানীয় ব্যক্তি অপরকে অসম্মান করে | যার সম্মানবোধ নেই সে কাউকে সম্মান করতে জানে না |
অসহ্যং জ্ঞাতিদুর্ব্বাক্যং মেঘান্তরিত রৌদ্রবৎ | জ্ঞাতিজনের দুর্বাক্য মেঘবিহীন আকাশের রৌদ্রতাপের মতই অসহ্য। |
অসাধারণ জ্ঞানীরা অবোধ বলে প্রতিভাত হয়- চীনা প্রবাদ | অতিজ্ঞানীদের কাণ্ডজ্ঞান কম হয়। |
অসারে খলু সংসারে সারমেতচ্চতুষ্টয়ম। কাশ্যাংবাসঃ সতাং সঙ্গো গঙ্গাম্ভ শিবপূজনম।। | অসার এই সংসারে মাত্র আরটি সার বস্তু আছে, যথা- কাশীবাস, সাধুজনের সঙ্গলাভ, গঙ্গাজল ও শিবপূজা। |
অসারে খলু সংসারে সারং শ্বশুরমন্দিরম্ | অসার সংসারে সার শ্বশুরের ঘর; কৌতুকে- জামাই আদরের কথা বলা হয়েছে |
অসারের তর্জন গর্জন সার১ | গুণহীন অক্ষম ব্যক্তিরা বৃথা আস্ফালন করে; 'গুণহীনের গুণহীন নয়' প্রমাণের বৃথা চেষ্টা; |
অসারের তর্জন গর্জন সার২ | ক্ষমতাহীন ব্যক্তি সাধারণতঃ আস্ফালন বেশী করে; আসলে অনেক ক্ষমতা ধরে বোঝানোর ব্যর্থ প্রয়াস; সমতুল্য- 'ফাঁকা কলসি বাজে বেশি','ফোঁপরা ঢেঁকির চোপর বেশি' ইত্যাদি। |
অসি থেকে মসী বড় | পেশীর জোর থেকে বুদ্ধির জোর বেশি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'কথার চেয়ে কাজের গলার জোর বেশি'। |
অসৈরণ সইতে নারি | অসহ্য ব্যাপার সহ্য হয় না। |
অস্তি নাস্তি না জানন্তি দেহি দেহি পুনঃপুনঃ | আছে কি নেই ভাবে না, কেবল বলে দাও দাও; প্রবাদটি অতিথি শিশু ও নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। |
অস্তি পুত্রো বশে যস্য ভৃত্যোভার্যা তথৈব চ। অভাবে সতি সন্তোষঃ স্বর্গস্থোহসৌ মহীতলে॥ (চাণক্য) | যাঁর পুত্র, ভৃত্য, স্ত্রী বশে আছে, অভাবের মধ্যেও যিনি প্রসন্ন থাকেন- তিনি পৃথিবীতে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে স্বর্গে আছেন। (স্বর্গসুখ ভোগের অধিকারী কে?) |
অস্থানে তুলসী, অপাত্রে রূপসী | অপবিত্র জায়গায় তুলসীগাছ মানানসই নয়। তেমনি কোন সুন্দরী নারীর অযোগ্য/অসুন্দর বরের সাথে বিয়ে হলে তা মানানসই নয়; উৎকৃষ্ট বিষয়ের অপব্যবহার; সমতুল্য- বানরের গলায় মুক্তোর মালা |
অস্থির চিত্ত প্রতিষ্ঠা পায় না | মন শান্ত না হলে কোন কাজ হয় না। |
অস্থির পতঙ্গ আগুনে পোড়ে // অস্থির পোকা জালে পড়ে // অস্থির বাঘ জালে পড়ে | অস্থিরচিত্তের প্রতিষ্ঠা নেই; অস্থির মন নানাদিক থেকে বিপদে পড়ে। |
অস্থির মধ্যে যা পুষ্ট তা মাংস ভেদ করে বাইরে আসে না- আরবী প্রবাদ | সযত্নে লালিত বিষয় নষ্ট হয় না। |
অহংকারীরা অল্পজ্ঞানী হয় | অল্পজ্ঞানীরা বিনয় কি বস্তু জানে না। |
অহংকারে গদগদ, মাটিতে পড়ে না পদ | অহংকারীরা সাধারণ মানুষকে মানুষ বলে গ্রাহ্য করে না। |
অহংকার পতনের মূল // অহঙ্কার পতন ডেকে আনে // অহঙ্কারে ছারখার | অহঙ্কারে পতন অনিবার্য। |
অহংকারে পথ দেখতে পায় না | অহংকারীর বিচারশক্তি থাকে না। |
অহন্যহনি ভূতানি গচ্ছন্তি যমমন্দিরম। শেষা স্থিরত্বমিচ্ছন্তি কিমাশ্চর্যমতঃপরম। (গীতা) | প্রতিদিন মানুষ যমালয়ে যাচ্ছে দেখেও অবশিষ্টরা ভাবে তাদের মৃত্যু হবে না; এর থেকে আশ্চর্যের আর কি হ'তে পারে? |
অহিংসা পরমো ধর্মঃ | দয়াই শ্রেষ্ঠ ধর্ম; কারো হিংসা না করা বা অনিষ্ট না করাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম। |
অহিতে বিপরীত | খারাপ হতে গিয়ে ভালো হয়ে গেল; দুর্ভাগ্য অনেক স্থলে সৌভাগ্যের কারণ হয; সমতুল্য- 'শাপে বর'; বিপরীত উক্তি- 'হিতে বিপরীত'। |
আ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
আঁখ কে অন্ধে গাঁট কে পুরে- হিন্দী প্রবাদ | মুর্খ ধনবান, টাকার বেলায় টনটনে জ্ঞান। |
আঁখ কে অন্ধে নাম নয়নসুখ- হিন্দী প্রবাদ | গুণহীনকে গুণবান করা; সমতুল্য- 'কানাপুতের নাম পদ্মলোচন';'কালোছেলের নাম গৌরাঙ্গসুন্দর'; 'ঘুঁটে কুড়ানীর ছেলের নাম চন্দবিলাস' ইত্যাদি। |
আঁচ আছে, আগুন নাই | শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। |
আঁটকুড়ের ব্যাটা | নিঃসন্তানের সন্তান অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না- গালিবিশেষ; সমতুল্য- অশ্বডিম্ব, আকাশকুসুম, এঁড়ে গরুর দুধ, কাঁঠালের আমসস্ত্ব, ঘোড়ার ডিম, পশ্চিমে সূর্যোদয়, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি |
আঁটকুড়েরা মানুষ নয়-ইহুদী প্রবাদ | নিঃসন্তানের বাৎসল্যবোধ থাকে না। |
আঁটাআঁটি হলেই লাঠালাঠি হয় | মন কষাকষি হলেই ঝগড়াঝাটিতে পরিণত হয়। |
আঁটি চোষা | পদার্থের সার অংশ থেকে বঞ্চিত হওয়া। |
আঁটুনি কসুনি সার | কেবল সরগরম করা; কাজের কিছুই নয়। |
আঁত পাওয়া ভার | মনোভাব বোঝা কঠিন; বড় চাপা স্বভাবের লোক। |
আঁতে ঘা দেওয়া | অন্তরে আঘাত দেওয়া; মর্মপীড়া দেওয়া। |
আঁতে খালি, দাঁতে নূন, পেটের ভরে তিন কোণ; দুই সন্ধে বাহ্যে যায়, তার কড়ি কি বদ্যি খায় | যে পেট পরিস্কার রাখে, নূন দিয়ে দাঁত মাজে, পেটের এক-চতুর্থাংশ খালি রেখে খাবার খায় তাকে বদ্যি ডাকতে হয় না। |
আঁধার ঘরের মাণিক | পরম আদরের সন্তান। |
আঁস্তাকুড়ের পাত কখনো স্বর্গে যায় না | মন্দব্যক্তি ভালসঙ্গ পায় না। |
আইতেও একা, যাইতেও একা, কার সঙ্গে বা কার দেখা | কেউ কারো নয়; কেউ কারো সঙ্গে আসে না, কাউকেও সঙ্গে নিয়েও যায় না। |
আইতে ছাগল, যাইতে পাগল | দেরী সয় না, তড়বড়ে। |
আইতে শাল যাইতে শাল তার নাম বরিশাল | বরিশালের একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াত শালতি ছাড়া সম্ভব নয়। |
আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানো | আইনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে অবৈধ কাজ করে যাওয়া। |
আইবুড়ো নাম ঘোচানো/খণ্ডানো | বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়া সত্বেও বিবাহিত/বিবাহিতা হওয়া |
আউশ ধানের চাষ লাগে তিন মাস- খনা | রোপণের তিন মাসের মধ্যে আউশ ধান ঘরে তোলা হয়। |
আওয়াজওয়ালা বিড়াল ইঁদুর ধরে না- জাপানী প্রবাদ | ধীর স্থির না হলে কাজে সাফল্য আসে না; সমতুল্য- 'চিল্লানে কুকুর কামড়ায় না'। |
আওলে (অস্থির) বাঘ জালে পড়ে | চঞ্চল মন নানা সমস্যায় জড়ায়। |
আকন্দে যদি মধু পাই তবে কেন পর্বতে যাই | কেউ কষ্ট স্বীকার করে না। |
আকস্মিক প্রাপ্তি কাকতালীয়, দৈব ঘটনা নয় | বিধি পুরুষাকারের জন্য অপেক্ষা করে। |
আকাটা নায়ের সাজ বেশি | নৌকা তৈরী হওয়ার আগেই সাজসঞ্জাম প্রস্তুত; রামের আগে রামায়ণ; বেশি বাড়াবাড়ি। |
আকামের মাঝু, কদু কুটনের যম। | অকর্মা বউ লাউ কুটতে খুব ওস্তাদ। |
আকালে কিনা খায়, পাগলে কি না কয়/বলে | আকালে সবাই সবকিছু খায়, বাচবিচার কওরে না; পাগলেও না বুঝে বাচ্য অবাচ্য বলে; অজ্ঞানের কথাবার্তা না ধরাই ভালো। |
আকালে কিনা খায়, বিবাদে কিনা যায় | দুর্ভিক্ষে খাবারের বাছবিচার চলে না; ঝগড়াবিবাদে জড়ালে অর্থ, সুখ, শান্তি সবই নষ্ট হয়। |
আকালের ভাত যুগের খোঁটা | অসময়ে কোন উপকার করে সারা জীবন ধরে তারজন্য কথা শোনানো হলে এই প্রবাদ বলা হয়। |
আকাঙ্ক্ষার কোন শেষ/সীমা নাই | চাওয়ার কোন শেষ নেই; একটা মিটলে আরেকটা এসে উপস্থিত হয়। |
আকাশকুসুম কল্পনা/চিন্তা | যে চিন্তা কোনদিন বাস্তবায়িত হবে না,অসম্ভব ব্যাপার যা হবার নয়; সমতুল্য- অশ্বডিম্ব, এঁড়ে গরুর দুধ, কাঁঠালের আমসস্ত্ব, ঘোড়ার ডিম, পশ্চিমে সূর্যোদয়, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি |
আকাশপাতাল চিন্তা | নানারকমের দুশ্চিন্তা। |
আকাশে থুতু ফেললে নিজের গায়ে পড়ে // আকাশে ধূলো ছোঁড়ে, আপন চোখে এসে পড়ে | আত্মীয়স্বজনের নিন্দা করলে নিজেরই নিন্দা করা হয়; বোকার মত কাজ করলে নিজের ক্ষতি হয়। |
আকাশে ফাঁদ পেতে চাঁদ ধরতে চায় // আকাশে ফাঁদ পেতে বনের পাখি ধরতে চায় | দূরাশায় বসে থাকা; যে হয় না তার জন্য চেষ্টা; বৃথা চেষ্টা থেকে কোন ফললাভ হয় না। |
আকাশে যত ঝড় ওঠে, গোয়ালে তত গরু ছোটে | পূর্ব বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা থেকে বিপদের আশঙ্কা। |
আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া | দুর্লভ বস্তু হাতে পাওয়া। |
আকাশের নীচে কিছুই অসম্ভব নয় | বাস্তব ঘটনা অনেকসময় কল্পনাকেও হার মানায়। |
আকৃতি থেকে প্রকৃতি/আচরণ ভালো | রূপ থেকে গুণের কদর বেশি; সুন্দর কাজের মধ্য দিয়ে ব্যক্তির সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। |
আক্কেল গুড়ুম | ভয়ে বা বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে যাওয়া। |
আক্কেল দাঁত না গজানো | বুদ্ধিবিবেচনা/কান্ডজ্ঞান না হওয়া, পরিণত বয়সে অপরিণত বুদ্ধির পরিচয় দেওয়া। |
আক্কেল সেলামি | নির্বুদ্ধিতার দণ্ডদান; সমতুল্য- 'ঝকমারির মাসুল'। |
আক্কেলে সকল বন্দী, জালে বন্দী মাছ; স্ত্রীর কাছে পুরুষ বন্দী, ছালে বন্দী গাছ | কেউ স্বাধীন নয়; জন্মের পরমুহূর্ত থেকে সবাই কোথাও-না-কোথায় বন্দী অবস্থায় থাকে। |
আক্রমণই প্রতিরোধের প্রকৃষ্ট উপায় | প্রতিপক্ষকে অপ্রস্তুত অবস্থায় পাওয়া যায়। |
আখ আর সর্ষে না পিষলে রস কিসে? | রস পেতে হলে রসেভরা জিনিষ কচলাতে হয়; রসিকমনের কাছে গেলে রসের খোঁজ পাওয়া যায়। |
আগ নাংলা যেদিকে যায় পাছ নাংলা সেদিকে যায় | চাষের সময় ক্ষেতে প্রথম লাঙলের পিছনের লাঙলগুলি সারি বেঁধে অনুসরণ করে; অন্ধভাবে কারো কাজের অনুকরণ করলে এই প্রবাদ ব্যবহৃত হয়। |
আগচ্ছতি/আজগাম যদা লক্ষ্মীর্নারিকেলফলাম্বুবৎ। নির্গচ্ছতি/নির্জগাম যদা লক্ষ্মীর্গজভুক্ত কপিত্থবৎ।। (চাণক্য) | নারকেলে জল কোথা থেকে আসে যেমন কউ জানে না তেমনি লক্ষ্মী অদৃশ্যভাবে আসেন; গজপোকায় কাটলে কয়েতবেল যেমন অসার হয়, তেমনি লক্ষ্মী চলে গেলে সংসার সারশূন্য হয়ে পড়ে। |
আগাছা ছাড়া বাগান হয় না | দোষেগুণে মানুষ; সংসারে ভালোমন্দ মিশিয়ে মানুষ আছে। |
আগাছার বাড় বেশি, ফল কম | জগতে অপ্রয়োজনীয় বস্তুর প্রাচুর্য বেশি হয়; বিনা পরিশ্রমে যেমন প্রয়োজনীয় বস্তু পাওয়া যায় না তেমনি বিনা পরিচর্যায় যোগ্যমানুষ হয় না; সমতুল্য- 'ধান একগুণ ঘাস শতগুণ','ঠগ বাচতে গাঁ উজাড়' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- আগাছা ছাড়া বাগান হয় না; আগাছে ফল বেশী ইত্যাদি। |
আগামীকাল কখনো আসে না | ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত; আজকের জন্য বাঁচো আগামীকাল কখনো আসবে না আগামীকাল করব বললে কোন কাজ ফেলে রাখা উচিত নয়। |
আগামীকাল জন্মায় নি, গতকাল মৃত, আজই সত্য | আজ খাওদাও আনন্দ কর, আগামীকাল আমরা সবাই মরব। |
আগামীকাল নিজের যত্ন নেবে- আরবী প্রবাদ | আগামীকালের জন্য আগাম ভাবার কোন প্রয়োজন নেই। |
আগামীকাল নিয়ে চিন্তা করা মানেই আজকে অসুখী হওয়া | আগাম দুশ্চিন্তা করে অনর্থক স্বাস্থ্যহানি করার প্রয়োজন নেই। |
আগামীকাল সর্বদাই আছে- আরবী প্রবাদ | আগামীকালের জন্য আগাম ভাবার কোন প্রয়োজন নেই। |
আগামীকালের একটি হাঁস থেকে আজকের একটি ডিম বেশি দামী | আগামী কাল থেকে আজকের দাম অনেক বেশি; আগামীকাল অনিশ্চয়তায় ভরা; সমতুল্য- 'নগদ যা পাও হাত পেতে নাও বাকীর খাতায় শূন্য থাক, দুরের বাদ্য লাভ কি শুনে মাঝখানেতে বেজায় ফাঁক'- খৈয়াম। |
আগামীকালের জন্য অজ্ঞানে অপেক্ষা করে; জ্ঞানী আজরাত্রের মধ্যেই কাজ শেষ করে | জ্ঞানীরা অনিশ্চিতের মধ্যে থাকে না; বিপরীত উক্তি- জ্ঞানীরা বলে 'সবুরে মেওয়া ফলে'। |
আগুন কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না // আগুন চাপা থাকে না // আগুন ছাইচাপা থাকে না | গুণ বা সত্য গোপন করা যায় না; পাপ কখনো ঢাকা থাকে না। |
আগুন দিয়ে আগুন তাড়ানো যায়/নেভে না | শত্রুতা করে শত্রুনাশ হয় না, প্রেমে হয়। |
আগুন না থাকলে ধোঁয়া হয় না | কার্যের পিছনে কারণ থাকে, অকারণে কিছু হয় না; অকারণে গাছের একটি পাতাও নড়ে না। |
আগুন নিয়ে খেলা | বিপজ্জনক বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া করা। |
আগুন পোহাতে গেলে ধোঁয়া সইতে হয় | অবিমিশ্র সুখ হয় না;জীবনের সবক্ষেত্রেই কিছু অর্জন করতে হলে, কিছু ঝামেলা সহ্য করতে হয়; সমতুল্য- 'কষ্টবিনা কেষ্ট নাই'; 'গোলাপ তুলতে গেলে কাঁটা সইতে হয়';'ন হি সুখং দুঃখৈর্বিনা লভ্যতে'। |
আগুনে ঘি ঢালা | উত্তেজনা/রাগ বৃদ্ধি করা। |
আগুনে পুড়ে সোনা/সীতা খাঁটি | জীবনযন্ত্রণায় না পুড়লে মানুষ খাঁটি হয় না। |
আগুনে হাত দিলে ইচ্ছাতেও পোড়ে, অনিচ্ছাতেও পোড়ে | আগুনের কোন বাছবিচার নেই; বিপদকে আহ্বান করলে বিপদ এসে জড়িয়ে ধরে। |
আগুনের কাছে ঘি// আগুনের কাছে ঘি গাঢ় থাকে না | আগুনের কাছে ঘি থাকলে গলবেই; প্রবলের সাথে দুর্বল পেরে ওঠে না; ঘি নারীসম; আগুন পুরুষসম; পুরুষের সামনে নারী স্থির থাকে না; সমতুল্য- 'ঘৃতকুম্ভসমা নারী তপ্তাঙ্গারসমঃ পুমান'। |
আগুয়ান ঘটনা সামনে তার ছায়া ফেলে- চীনা প্রবাদ | কি ঘটতে চলেছে আগেভাগেই অনুমান করা যায়। |
আগে আপন পরে পর, আপন সামালে পরকে ধর // আগে আপন সামাল কর পরে গিয়ে পরকে ধর১ | পরের দোষ না দেখে আগে নিজের দোষ খোঁজ; পরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হ'তে পারে। |
আগে আপন পরে পর, আপন সামালে পরকে ধর // আগে আপন সামাল কর পরে গিয়ে পরকে ধর২ | নিজে ভাল না থাকলে পরের ভালো করা যায় না; বৈদ্য আগে নিজেকে সামলায় পরে পরকে সামলায়। |
আগে আমি, পরে বাপ | আগে নিজের স্বার্থ সামলাও পরে অপরের স্বার্থ সামলাবে; সমতুল্য- 'আপনি বাঁচলে বাপের নাম'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও, তার মত সুখ কোথাও কি আছে আপনার কথা ভুলিয়া যাও'। |
আগে উপযুক্ত হও, পরে আকাঙ্ক্ষা কর | কিছু চাইলে আগে পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন কর। |
আগে কড়ি পিছে কাজ | মাগনায় কিছু হয় না; নগদ দাম দাও, তবে জিনিষ দেব; সমতুল্য- 'ফেলো কড়ি মাখো তেল, তুমি কি আমার পর'। |
আগে কাজ, পিছে আরাম/বাত // আগে লাথ পিছে বাত- হিন্দি প্রবাদ | কাজের দাবী সর্বাগ্রে, কাজ ফেলে অকাজ করা নেই |
আগে কুঁয়া, পিছে খাই (খাল)- হিন্দি প্রবাদ | উভয়সঙ্কট, দুদিকেই বিপদ; কোন নিস্তার নেই; সমতুল্য-'জলে কুমীর, ডাঙায় বাঘ', 'এগুলে রাবণ, পিছুলে রাম' ইত্যাদি। |
আগে গেলে বাঘে খায়, পাছে গেলে টাকা/সোনা পায় | যে আগে থাকে বাঘ আগে তাকেই আক্রমণ করে; ঝড়ঝাপ্টা আগের লোককেই প্রথমে লাগে; তাড়াতাড়ি করা নেই, তাতে ভুল হয়; কার্যসিদ্ধির জন্য সময় লাগে; সমতুল্য-'বিলম্বে কার্যসিদ্ধি', 'যে সয় সে রয়', 'সবুরে মেওয়া ফলে','সয়ে গেলে রয়ে যায় ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি-'আগের/ভোরের পাখি পোকা/মাছি ধরে' ইত্যাদি। |
আগে গেলেও দোষ, পাছে গেলেও দোষ | উভয়সঙ্কট; ভাগ্য বিরূপ হলে সব কাজই বিফল হবে। |
আগে গেলেও নির্বংশের ব্যাটা, পাছে গেলেও নির্বংশের ব্যাটা // আগে গেলেও ভেড়ের ভেড়ে, পাছে গেলেও ভেড়ের ভেড়ে | এমন এক অবস্থা যেখানে নিন্দাছাড়া সাধুবাদ নাই; কন অবস্থাতেই প্রাশংসা লাভের আশা নেই;; দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না। |
আগে ঘর পরে পর, ঘর সামলে পরকে ধর | খয়রাত ঘর থেকে শুরু হয়; প্রবাদটিতে স্বার্থে গন্ধ আছে; সমতুল্য- 'আগে আমি পরে বাপ'; 'আত্ম রেখে ধর্ম তবে পিতৃকর্ম','আপনি বাঁচলে বাপের নাম', 'চাচা আপন প্রাণ বাঁচা' ইত্যাদি। |
আগে জামাই কাঁঠাল খান না, শেষে জামাই ভোঁতাও পান না | আহাম্মকের বাঁকাবুদ্ধি; সমতুল্য- 'যাচলে জামাই কাঁঠাল খান না' |
আগে তিতা, শেষে মিঠা১ | স্বাস্থ্যের কারণে বৈদ্যের বিধান- তিতা দিয়ে আহার শুরু মিষ্টি দিয়ে আহার শেষ। |
আগে তিতা, শেষে মিঠা২ | অনেক কিছুই প্রথমে অপ্রীতিকর মনে হয় শেষে সেই সুখকর হয়। |
আগে দর্শনদারী পরে গুণ বিচারী | বাহ্যিক সৌন্দর্যই প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করে; চটকই প্রথম চোখ টানে, শুধু গুণে আকৃষ্ট হ'তে কিছু সময় লাগে; সমতুল্য- 'যো দেখতা হ্যায় উয়ো বিক্তা হায়', 'ঠাট-ঠমকে বিকোয় ঘোড়া' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'রূপের চেয়ে গুণের কদর বেশি'; 'শুধু দেখনাই ভাল হলেই চলে না গুণ থাকা চাই' ইত্যাদি। |
আগে দুখ পরে সুখ | তাতে মানসিক শান্তি বেশি হয়। |
আগে দেও কড়ি, তবে দেবো বড়ি | নগদ দাম দাও তবে জিনিস দেবো; সমতুল্য- 'ফেলো কড়ি, মাখো তেল'; 'রোখা কড়ি চোখা মাল' |
আগে দেখ পরে লও শেষে দাও কড়ি | আগে দেখে পছন্দ কর তারপর দাম দিয়ে জিনিস নেবে তা-না-হলে ঠকতে পারো। |
আগে দেখো, পরে লাফাও | বিপদের কথা চিন্তা না করে কোন সিদ্ধান্ত নিও না; বিবেচক এক পা দেখে এক পা রাখে। |
আগে না বুঝিলে বাছা যৌবনের ভরে, পশ্চাতে কাঁদিতে হবে নয়নের ঝোরে | যৌবনের অহঙ্কারে ভালমন্দ বিচার না করে কাজ না করলে বৃদ্ধবয়সে পস্তাতে হবে; সময় থাকতে সাবধান; ভুল করলে শেষে আফশোস করতে হবে এবং কেঁদে কূল পাবে না; সমতুল্য- 'যৌবনে অন্যায় ব্যয়ে বয়সে কাঙালি'। (সময় থাকতে সাবধান হওয়ার পরামর্শ) |
আগে নিজেকে সংশোধন কর, পরে অপরের সংশোধন করবে- ইহুদী প্রবাদ | নিজে ভালো না হলে পরের ভাল করা যায় না। |
আগে পাজি, পরে কাজী, পরে হাজী, শেষে গাজী | শুরুতে দুস্কৃতি, পরে সুবুদ্ধিসম্পন্ন, পরে ধর্মভীরু, শেষে ধর্মব্যবসায়ী-শুরু যেখানে শেষ সেখানে। |
আগে পিঠে দড় তবে ঘোড়ার পিঠে চড় | শক্তি ও সামর্থ থাকলে তবেই কঠিন কাজে হাত দেওয়া উচিৎ। |
আগে ফাঁসি পরে বিচার | উদ্ভট কার্যকলাপ; উল্টোপুরাণ। |
আগে ভাল ছিল জেলে জালদড়া বুনে, কি কাজ করিল জেলে এঁড়ে গরু কিনে | বেশি লোভ করলে ফল খারাপ হয়; অভ্যস্ত কাজ ছেড়ে অনভ্যস্ত কাজে হাত দিলে ফল ভালো হয় না। |
আগে রামনাম, পরে সবকাম | দুর্বলচিত্তের লোক ভগবানের নাম নিয়ে সবকাজ শুরু করে। |
আগে রাহ বাতায়ে পাছে গোঁতা- হিন্দি প্রবাদ | প্রথমে পথ দেখায় পরে ধাক্কা মারে; সমতুল্য- 'গাছে তুলে মই কেড়ে নেয়'। |
আগে সামলা ধাক্কা, পরে যাবি মক্কা | আগেতো বাঁচো; পরে ভগবানের নাম করা যাবে। |
আগে হলাম আমি, পিছে হল মা; হাসতে হাসতে দাদা হলো, বাবা হলো না | অর্থহীন হেঁয়ালি; অসংলগ্ন কথাবার্তা; কথার কোন মাথামুণ্ড নেই; পাগলের প্রলাপ। |
আগে হাঁটে, পাঁঠা কাটে, প্রদীপ উস্কোয়, দই বাঁটে; ভাণ্ডারী, কাণ্ডারী, রাঁধুনী বামুন, যশ পায় না এই সাতজন | এই কাজের লোকেরা ঠিকঠাক কাজ করলে প্রশংসা পায় না; কিন্তু একটু ভুল হলেই নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। |
আগের চেয়ে দেরী ভালো | ভালো কাজ হলে ভেবেচিন্তে দেরীতে করাই ভালো। |
আগের পাখি পোকা/মাছি ধরে | সামনের লোকের সুযোগ সদব্যবহারের সম্ভাবনা বেশি থাকে; বিরুদ্ধ উক্তি- 'আগে গেলে বাঘে খায়, পাছে গেলে সোনা পায়', 'বিলম্বে কার্যসিদ্ধি', 'যে সয় সে রয়', 'সবুরে মেওয়া ফলে', 'সয়ে গেলে রয়ে যায় ইত্যাদি। |
আগের লাঙল/হাল যে দিকে যায় পাছের লাঙল/হাল সে দিকে যায় | অন্ধভাবে অন্যের অনুকরণ করা। |
আগ্রার মানুষ তাজমহল দেখে না | সহজলভ্য জিনিসের আকর্ষণ বা মূল্য নেই;সমতুল্য- 'কালিঘাটের মানুষের কালীদর্শন হয় না','গির্জার পাশের মানুষ গির্জায় যায় না','মক্কার মানুষ হজ্জ পায় না','যত মন্দির কাছে তত ঈশ্বর থেকে দূরে' ইত্যাদি। |
আঘাত করলে প্রত্যাঘাত খেতে হয় | অন্যের ক্ষতি করলে নিজেরও ক্ষতি হয়; সমতুল্য-'আয়না যেমুখ দেখে সেইমুখ দেখায়', 'ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়', 'ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া থাকে', 'চড় মারলে চড় খেতে হয়','ধ্বনির প্রতিধ্বনি আছে/থাকে' ইত্যাদি। |
আঙুর ফল টক | অলভ্য জিনিষ মন্দ; সমতুল্য-'কর্তা পান না তাই খান না'। |
আঙুল ঘুরিয়ে পাঁচিল দেওয়া | ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় বিরাট কাজ করার প্রয়াস |
আঙুল ফুলে কলাগাছ | অবৈধ পথে দ্রুত উন্নতি লাভ; হঠাৎ বিত্তশালী। |
আচার ভ্রষ্ট, সদা কষ্ট | অনুশাসন না মানলে জীবনে ভোগান্তি আছে। |
আচারে বাড়া, বিচারে এড়া | আচারসর্বস্ব ব্যক্তি, যে যুক্তির ধার ধারে না। |
আচারে লক্ষ্মী, বিচারে পণ্ডিত | সর্ব্যবগুণসম্পন্ন/সম্পন্না। |
আছে কাজ তাই সকালসকাল সাজ | কাজ থাকলে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়। |
আছে গরু না পায় হালে, দুঃখ না ছাড়ে কোন কালে- খনা | গরু আছে অথচ চাষ করে না, তার অভাব কখনই যাবে না; পরিশ্রমবিনা সৌভাগ্য আসেনা। |
আছে যথেষ্ট, নেই অদৃষ্ট | ভাগ্য না থাকলে ভোগ হয় না। |
আজ আমীর/বাদশা কাল ফকির // আজ রাজা কাল ভিখারী, ফুটানি করে দিন দুচারি // আজ যে রাজা কাল সে ফকির | সবদিন কারো সমান যায় না; সমতুল্য- 'চক্রবৎ পরিবর্তন্তে দুখানি চ সুখানি চ', 'চিরদিন কারো সমান নাহি যায়' ইত্যাদ। |
আজ খায় না রাগে, কাল সবার আগে | ঠাণ্ডা মাথায় বুদ্ধি খোলে। |
আজ বুঝলি না বুঝবি কাল, বুক চাপড়াবি পাড়বি গাল | সময়ের কাজ সময়ে না করলে উল্টো বিপত্তি হতে পারে। |
আজ মরলে কাল দুদিন হবে | দুঃসহ জীবনযন্ত্রণা। |
আজ মুচি কাল শুচি | ভাগ্য পরিবর্তিত হয়। |
আজই সত্য, আগামীকাল কখনো আসে না | আজকের কথা আজ ভাব, কালকের কথা কাল হবে। |
আজকের খেয়ে নেড়া নাচে | ঘরে অন্নাভাব; দুর্ভিক্ষের করাল ছায়া; কিছু খাবার পেয়ে আনন্দ আর ধরে না। |
আজগাম যদা লক্ষ্মীর্নারিকেলফলাম্বুবৎ। নির্জগাম যদা লক্ষ্মীর্গজভুক্তকপিত্থবৎ।। | নারিকেলের মধ্যে জল যেমন সঞ্চারিত হয় লক্ষ্মী সেভাবে আসেন; গজকীটভুক্ত হয়ে কয়েৎবেল যেমন নিঃসারিত হয়, লক্ষ্মী সেভাবে যান। |
আটে কাটে/পিঠে দড় ত ঘোড়ার পিঠে চড় | দক্ষতা ও নৈপুণ্য থাকলে বা চৌকশ হলে পরেই দুরূহ কাজ করতে যাওয়া উচিত। |
আঠারো মাসে বছর ফুরায় | অতিশয় দীর্ঘসূত্রতা; সমতুল্য- 'বত্রিশ দিনে মাস ফুরায়'। |
আড়া কাজ বাড়া | মাত্রাতিরিক্ত অস্বাচ্ছন্দের কাজ (আড়া কাজ বাড়া করে ফেলেছি তাই কোন কাজই ঠিকঠাক হল না। |
আড়াই আঙ্গুল দড়ি, সৃষ্টি জুড়ে বেড়ি | অল্প আয়োজনে সব প্রয়োজন মেটাবার আপ্রাণ চেষ্টা; সামান্য উপায়ে বিশাল কাজ সম্পাদনের চেষ্টা। |
আড়াই কড়ার কাসুন্দি, হাজার কাকের গোল | অল্প পরিমাণ দ্রব্য পাওয়ার জন্য অনেক দাবীদার; ফলে সকলের মধ্যে কাড়াকাড়ি; যোগান অত্যল্প চাহিদা প্রচুর হলে সকলের মধ্যে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। |
আড়াই দিনের বাদশাহী | অল্পদিনের ফুটফুটানি। |
আড়ে নাই অসাড়ে (=অসার) | দৈর্ঘ্যে নাই প্রস্থেও নাই; কাজে নেই, অকাজে বেশি। |
আড়ে হাতে লওয়া | ভীষণ শত্রুতা করা। |
আড়ে হাতে লাগা১ | প্রাণপণ চেষ্টা করা। |
আড়ে হাতে লাগা২ | ভীষণ শত্রুতা করা। |
আতি চোর,পাতি চোর, হ’তে হ’তে সিঁদেল চোর | ক্রমশঃ দাগী আসামীতে পরিণত; সামান্য অপরাধ করতে করতে শেষে বিরাট অপরাধ করে ফেলে। |
আতুরে নিয়ম নাস্তি | প্রয়োজন নিয়মের অধীন নয় |
আতুরে নিয়ম নাস্তি বালে বৃদ্ধে তথৈবচ। কুলাচাররতে চৈব এষ ধর্ম সনাতনঃ।। (চাণক্য) | অসুস্থ অবস্থায় নিয়ম পালনের প্রয়োজন নেই; শিশু ও বৃদ্ধরা নিয়মের অধীন নয়; যাঁরা কুলাচারনিষ্ঠ তাঁদেরও নিয়ম না মানলে চলে; এটাই সনাতন ধর্ম। |
আত্মচ্ছিদ্রং ন জানাতি পরচ্ছিদ্রানুসারিণঃ // আত্মচ্ছিদ্রং ন জানাতি পরচ্ছিদ্রং পদেপদে | নিজের দোষ দেখে না পরের দোষ খুঁজে বেড়ায়; সমতুল্য- 'আপনার কথা কয় না শালী পরকে বলে টেবোগালী'। |
আত্মতুষ্টি সঙ্কীর্ণ মনের পরিচয় | কূপমণ্ডুক সঙ্কীর্ণমনা হয়। |
আত্মনং বিদ্ধি | নিজেকে জানাই প্রথম কাজ। |
আত্মনং সততং রক্ষেৎ পশ্চাদ্দার ধনানি চ | (যেকোন মূল্যে) নিজেকে সর্বদা রক্ষা করবে; তারপর স্ত্রী ও ধনাদি রক্ষা করবে; সমতুল্য- আপনি বাঁচলে বাপের নাম'; 'চাচা আপন প্রাণ বাঁচা'। |
আত্মবৎ সর্বভূতেষু য পশ্যতি সে পণ্ডিত- চাণক্য | যিনি সকল প্রাণীকে আত্মসম বিবেচনা করেন তিনি পণ্ডিত। |
আত্মবন্মন্যতে জগৎ // আত্মবৎ মন্যতে জগৎ | আপনার মত জগৎ দেখা; যে যেরূপ প্রকৃতির ব্যক্তি সে জগতের সকল ব্যক্তিকে সেইরূপ জ্ঞান করে; গুণী কোন নির্গুণ খুঁজে পায় না, নির্গুণ আবার কোন গুণী খুঁজে পায় না। |
আত্মমাতা, গুরোঃপত্নী, ব্রাহ্মণী, রাজপত্নিকা। ধেনুর্ধাত্রী তথা পৃথ্বী সপ্তৈতে মাতরঃস্মৃতাঃ।। (চাণক্য) | নিজমাতা, গুরুপত্নী, ব্রাহ্মণী, রাজপত্নী, গাভী, ধাতৃমাতা ও পৃথ্বী- এই সাতজন মাতার স্বীকৃতি পান। |
আত্মারাম খাঁচাছাড়া | প্রচণ্ড ভয়ে বিবর্ণ/প্রাণপাখি উড়ে গেছে। |
আত্মার্থে পৃথিবীং ত্যজেৎ | আত্মরক্ষার্থে পার্থিব সবকিছু পরিত্যাগ করবে। |
আদব শেখো বেয়াদবের কাছে | বেয়াদব যা করে তার উল্টোটাই হল আদবকায়দা। |
আদম ছিলেন প্রথম ভাগ্যবান ব্যক্তি যার শাশুড়ি ছিল না- ইহুদি প্রবাদ | দজ্জাল শাশুড়িদের প্রতি বক্রোক্তি। |
আদরে বাঁদর বনে | প্রশ্রয়ে চরিত্রগুণ নষ্ট হয়। |
আদরের ভোজন কি করে ব্যঞ্জন // আদরের ডাল-ভাতও ভাল, বিনা আদরের ঘি-ভাতও ভাল না | প্রীতিভরে খাওয়ালে প্রীতিতেই পেট ভরে যায়, ব্যঞ্জনে নজর থাকে না;সমতুল্য- 'বড়লোকের ভুরিভোজ থেকে গরীবের শাকান্ন ভাল', 'রাজার ভুরিভোজ থেকে বিদুরের শাকান্ন ভাল' ইত্যাদি। |
আদা ওষুধের আধা | আদা অর্ধেক রোগ ভালো করে। |
আদা কাঁচকলা সম্বন্ধ // আদায় কাঁচকলায় | আদা ও কাঁচকলা একসাথে সিদ্ধ হয় না; সুতরাং পরস্পর বিরুদ্ধগুণবিশিষ্ট চির বৈরীভাব; স্বভাব-শত্রুতা |
আদা জল খেয়ে লাগা | কার্যসিদ্ধির জন্য কষ্ট করে প্রাণপণ চেষ্টা করা; দৃঢ়সংকল্পে উদ্যমের সাথে কাজে লাগা; পূর্ণোদ্যমে কাজে লাগা; সমস্ত বাধা অতিক্রম করে কোন কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা; সমার্থক বাগধারা- উঠে পড়ে লাগা |
আদা ঝালের গাদা | গুণহীন পুরুষের রাগ-ঝাল বেশী। |
আদা শুকালেও ঝাল যায় না | স্বাভাবিক ধর্ম কোনকালেই লোপ পায় না; দুষ্টলোক দমিত হলেও দুষ্টবুদ্ধি ছাড়ে না; সমতুল্য- 'কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না'; 'মূলো খেলে মূলোর ঢেঁকুর ওঠে'; ' যার যা রীত ছাড়ে কদাচিৎ'; 'রসুন ধুলেও গন্ধ যায় না 'স্বভাব যায় না মলে' ইত্যাদি। |
আদাড়গাঁয়ে/বনে শিয়াল বাঘ/রাজা | বুনোগাঁয়ে শিয়ালকেই বাঘ বলে মনে হয়; যেখানে বিদ্বান লোক নেই সেখানে অল্পবিদ্বানেরা পাণ্ডিত্য ফলায়; সমতুল্য- 'দূর্বাবনে খটাশই বাঘ'; 'বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা'; 'ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল';'নিরস্ত পাদপদেশে এড়েণ্ডোহপি দ্রূমায়তে' ইত্যাদি। |
আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবর নেয় | তুচ্ছলোকের বড় ব্যাপারে নাক গলায়; অনধিকার চর্চার বিষয়; সমতুল্য- 'ভিক্ষা করতে এসে গাঁয়ের খবর নেয়', 'মশা এসে হাতীর ওজন জানতে চায়' ইত্যাদি |
আদি অন্ত পাওয়া ভার | ভেবে কূলকিনারা পাওয়া যাচ্ছে না; সমস্যার অন্ত নেই। |
আদি/আদ্দি কহিলে মানুষ রুষ্ট | কুলের কথা কারো ভালও লাগে না অর্থাৎ মানুষ অতীত ঘাটতে চায় না; অতীত ঘাটলে অনেক অপ্রীতিকর কথা এসে যায়; তাতে মানুষ রুষ্ট হয়; |
আদুরে গোপাল | অত্যন্ত আদরে পালিত সন্তান; লাই দিয়ে তার ইহকাল পরকাল ঝরঝরে। |
আদেখলার ঘটি হল, জল খেতে খেতে পরাণ গেল | আদেখলারা প্রথমে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলে। |
আদ্দিকালের বদ্দিবুড়ো | অতিবৃদ্ধব্যক্তি, থুত্থুড়ে বুড়ো। |
আধা কাঁচকলা সম্বন্ধ | জাতিবিরোধ সম্পর্ক, যেখানে একটা কাঁচকলাকেও অর্ধেক করে ভাগ করা হয়; ফলে জাতিগত বৈরিতা সৃষ্টি হয় |
আন্ কাপাস নে তুলো | কাঁচামাল আনো, জিনিস নিয়ে যাও। |
আন শুনতে কান/ধান শোনে | কালা, উল্টোপাল্টা শোনে। |
আন (অন্য) মাগীর আন (অন্য) চিন্তে, দুয়ো মাগীর পতি চিন্তে | অন্যান্য নারীরা সংসারের নানাচিন্তায় ব্যস্ত থাকে, কিন্তু যে নারীর সতীন আছে, সে স্বামীছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারে না। |
আন (অন্য) সতীনে নাড়ে চাড়ে, বোন সতীনে পুড়িয়ে মারে | নিজের লোকেরাই বেশি আঘাত হানে; রক্তের সম্পর্কের লোকেরা বেশি অনিষ্ট করে; সমতুল্য- 'আপন থেকে পর ভাল', 'ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই', 'যত রক্তের কাছাকাছি ততত রক্তারক্তি' ইত্যাদি। |
আনন্দ ও কাজ সময়কে সংক্ষিপ্ত করে | মনের আনন্দে কাজ করতে করতে কিভাবে যে সময় কেটে যায় খেয়াল থাকে না। |
আনারস বলে কাঁঠাল ভাই তুমি বড় খসখসে | পরছিদ্রান্বেষী; নিজের দোষ না দেখে পরের দোষ খুঁজে বেড়ায়; সমতুল্য-'চালুনি বলে ছুঁচ তোর পিছন দেখি ছ্যাঁদা';'চালুনি বলে ধুচুনিভায়া তুমি বড় ফুটো';'ঝাঁজরি বলে খৈ-চালা, তুই বেজায় ফোঁড়ওয়ালা'; 'নিজের পাছায় ন'মণ গু আমারে বলে তোর খান ধু'; 'হাঁড়ি বলে কড়াই তোর পিছনটা বড়া কালা' ইত্যাদি। |
আন্ধা নগরী চৌপট রাজা; টাকা সের ভাজী, টাকা সের খাজা- হিন্দি প্রবাদ | অসারের মেলায় গুণের কদর নেই। |
আন্ধা-এ দোকানদেরে, খরিদ করে কালে- হিন্দি প্রবাদ | দুইই সমান অপদার্থ। |
আপ্ ভলা তো জগ্/সব্ ভলা- হিন্দি প্রবাদ | ভালোর চোখে সবই ভাল; যে নিজে ভাল সে সবকে ভালো দেখে এবং সবাই তাকে ভালো দেক |
আপরুচি খানা পররুচি পরনা- হিন্দি প্রবাদ | নিজের পছন্দমত খাও; পরের পছন্দমত পরো। |
আপদাং কথিতঃ পন্থা ইন্দ্রিয়াণামসংযমঃ। তজ্জঃ সম্পদাং মার্গো যেনেষ্টং তেন গম্যতাম্॥ (চাণক্য) | ইন্দ্রিয়ের অসংযম সকল অনিষ্টের পথ, ইন্দ্রিয়ের জয় সকল উন্নতির পথ; যে পথে মঙ্গল, সে পথে চল। |
আপদর্থং ধনং রক্ষেৎ দারান্ রক্ষেদ্ধনৈরপি। আত্মানং সততং রক্ষেৎ দারৈরপি ধনৈরপি।। (চাণক্য) | বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য ধন-সম্পত্তি রক্ষা করবে; ধন সম্পত্তির বিনিময়েও স্ত্রীকে রক্ষা করবে; স্ত্রী বা ধন-সম্পত্তির বিনিময়েও নিজেকে সকল সময় রক্ষা করবে। |
আপন কখনো পর হয় না | কাছের মানুষ কখনো দূরের হয় না; সমতুল্য-'বসূধৈব কুটুম্বম'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'আপন থেকে পর ভাল', 'কাছের লোক কাছের নয়', 'বারো রাজপুতের তেরো হাঁড়ি', 'ভাইভাই ঠাঁই ঠাঁই', 'যত রক্তের কাছাকাছি তত রক্তারক্তি'। |
আপন কোটে পাই চিঁড়ে কুটে খাই | নিজের আয়ত্বে কাউকে পেলে আড় ছেড়ে কথা নেই; তাকে নিয়ে যা ইচ্ছা তাই করা যায়। |
আপন কোলে ঝোল সবাই টানে | সবাই নিজের স্বার্থ আগে দেখে; পরের স্বার্থ দেখে না। |
আপন গাঁয়ে কুকুর/শিয়াল রাজা // আপনা মহল্লামে কুত্তা শের | নিজের ঘরে সবাই রাজা; নিজের এলাকায় সবাই কর্তৃত্ব ফলায়; নিজের গণ্ডীতে সবাই নিজেকে বড় মনে করে। |
আপন গেলে ঘোল পায় না চাকরকে পাঠায় দুধের তরে | বুদ্ধিহীনতার প্রতি ব্যঙ্গ। |
আপন ঘর রাজপ্রাসাদ | নিজের ঘরের মত সুন্দর স্থান জগতে নেই। |
আপন ঘরে সবাই রাজা | নিজের ঘরে যেমন প্রভুত্ব করা যায় অন্যত্র তেমন পারা যায় না। |
আপন ঘোল কেউ টক বলে না | নিজের জিনিস খারাপ বলে বিক্রেতা মূল্যহ্রাস করে না। |
আপন/আপনার চরকায় তেল দাও | নিজের কাজে মন দেওয়া উচিৎ; পরনিন্দা, পরচর্চা করা উচিৎ নয়। |
আপন চেয়ে পর ভালো, পর চেয়ে জঙ্গল ভালো | নিজের লোক নিজের হয় না; অনেকক্ষেত্রেই আত্মীয় উপেক্ষা করে, অনাত্মীয় সাহায্যের হাত বাড়ায়; সমতুল্য- 'বারো রাজপুতের তেরো হাঁড়ি'; 'ভাইভাই ঠাঁই ঠাঁই'; 'যত রক্তের কাছাকাছি তত রক্তারক্তি' ইত্যাদি'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'আপন কখনো পর হয় না'; 'বসূধৈব কুটুম্বম' ইত্যাদি। |
আপন ছাগল বেঁধে রাখি পরের ছাগল হাততালি দিই | হাততালি দিলে ছাগল পালায় এবং তাকে ধরতে কষ্ট হয়; নিজে সাবধান থেকে পরের অনিষ্ট করলে এই প্রবাদ ব্যবহৃত হয়। |
আপন ছিদ্র জানে না পরের ছিদ্র খোঁজে | লোকে নিজের দোষ দেখে না শুধু পরের দোষ খুঁজে বেড়ায়; সমতুল্য- ছুঁচ বলে চালুনি তোর পিছন কেন ছ্যাঁদা? |
আপন নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ | খ্যাঁদা নাক দর্শন বিদেশ যাত্রার পক্ষে অশুভ বিবেচিত হয়; তাই নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার চেষ্টা; নিজের অনিষ্ট করে পরের অনিষ্ট করার অপচেষ্টা। |
আপন পাঁজি পরকে দিয়ে দৈবজ্ঞ বেড়ায় পথে পথে (মাথায় হাত দিয়ে | এক জ্যোতিষী নিজের পঞ্জিকা অন্যকে দিয়ে গণনা করতে না পারার জন্য তার রুজি-রোজগার বন্ধ হয়ে যায়; অন্যের উপকার করতে গিয়ে কেউ নিজের ক্ষতি করে ফেললে তার অবস্থা বর্ণনা করতে এই প্রবাদ বলা হয়। |
আপন পাঁঠা লেজে কাটি | স্ব-ইচ্ছা কাজ করার পক্ষে ওকালতি; নিজের অধিকারে সব কাজ স্বাধীনভাবে করা যায়। |
আপন পানে চায় না বুড়ি পরকে বলে তোবড়াগালি | তোবড়া গালের বুড়ি নিজের রূপ বিচার নয়া করে পড়ের রূপ বিচার করে যা উচিত নয়। |
আপন পায়ে কুড়াল মারা | নির্বুদ্ধিবশতঃ জেনেশুনে নিজের ক্ষতি করা। |
আপন বুদ্ধিতে ছিল ভাল, পরবুদ্ধিতে পাগল হল // আপন বুদ্ধিতে তর, পরবুদ্ধিতে মর | নিজের বুদ্ধিতে চলা ভালো; পরের বুদ্ধিতে চলা ঠিক নয়; পরের বুদ্ধিতে চলে যদি কোন ক্ষতি হয় তবে আফশোসের সীমা থাকে না। |
আপন বুদ্ধিতে ফকির হই, পর বুদ্ধিতে বাদশা নই/ আপন বুদ্ধিতে ভাত, পরের বুদ্ধিতে হা-ভাত | নিজের বুদ্ধি অনেক ভালো; ভাল হোক বা মন্দ হোক অনেকে এই গোঁ ধরেই কাজ করে। |
আপন বেলায় আঁটিসাটি, পরের বেলায় দাঁতকপাটি | নিজের স্বার্থের দিকে ষোলআনা নজর; পরের স্বার্থ চুলোক যাক। |
আপন বেলায় চাপন-চোপন পরের বেলায় ঝুরঝুরে মাপন | ক্রেতা হ'লে ওজনে ঝুঁকতি চায়; বিক্রেতা হ'লে পাল্লার কাঁটার দিকে নজর রাখে; আপনার দিকে বেশি রাখে পরকে দেয় সামান্য। |
আপন বোন ভাত পায়না শালীর তরে মন্ডা // আপন ভাই ভাত পায় না, শালার তরে মণ্ডা | একপেশে বিচার; ন্যায্য দাবীদারকে উপেক্ষা করে অপর কাউকে সাহায্য করা, বৌয়ের আঁচল ধরা ব্যক্তি। |
আপন ভাল তো জগৎ ভাল | ভালোর চোখে সবই ভাল। |
আপন ভাল পাগলও বোঝে | যার বিন্দুমাত্র বোধজ্ঞান আছে সেও নিজের স্বার্থটা ভালো বোঝে। |
আপন মান আপন ঠাঁই | নিজের মান নিজের আশ্রয়। |
আপন মান আপনি রাখো, কাটা কান চুলদে ঢাকো | ঘরের কুৎসা বাইরে প্রচার করতে নেই। |
আপনা গলিমে কুত্তা শের // আপনা মহল্লামে কুত্তা শের | নিজের ঘরে সবাই রাজা; নিজের এলাকায় সবাই কর্তৃত্ব ফলায় |
আপনা মাংসে হরিণা বৈরি- হিন্দি প্রবাদ | হরিণের শত্রু তার মাংস; নিজেই নিজের শত্রু। |
আপনা মুঁহ মিয়াঁ মিট্ঠু বনানা- হিন্দি প্রবাদ | আত্মপ্রশংসা করা; সজ্জন লোকের আত্মপ্রশংসা করা উচিত নয়। |
আপনা হাত জগন্নাথ | খুব কৃপণস্বভাবের লোক; কাউকে কিছু দিতে হ'লে একেবারে ঠুঁটো (হস্তহীন) জগন্নাথ হয়ে পড়ে। |
আপনা হাত জগন্নাথ, পরের হাত এঁটো পাত | নিজের সব জিনিষ ভালো, সমর্পযায়ের পরের সব জিনিষ খারাপ; পড়ের জিনিষকে ঘৃণা করার প্রবণতাকে ব্যাঙ্গ করতে এই প্রবাদ ব্যবহৃত হয়। |
আপনাকে বড় বলে বড় সেই নয়, লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়- ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত | নিজেকে যে বড় বলে সে তত ছোট হয়; 'মানুষ হল ভগ্নাংশের মত; লব হল সে নিজে এবং হর হল সে নিজেকে যা ভাবে; নিজেকে সে যত বড় ভাবে ততই সে ছোট হতে থাকে'- টলস্টয়। |
আপনার আপনার কিছু নয়, জগৎ কেবল মায়াময় | এই সংসারে আমার তোমার বলে কিছু নেই, সবই অনিত্য। |
আপনার আপনি ডোর আর কাপনি | ডোর আড় কৌপিনধারী সন্ন্যাসীর মত অন্য লোকের সম্পর্কে ভাবনা-চিন্তা রহিত; শুধু নিজের চিন্তাতেই মগ্ন, নিজের পাওনাটা হলেই হল। |
আপনার কথা কয় না শালী পরকে বলে টেবোগালী | নিজের ছিদ্র জানে না পরের ছিদ্র খুঁজে বেড়ায়; সমতুল্য- 'চালুনী বলে সুঁই তোর মার্গে কেন ছেঁদা'; 'চালুনী বলে ধুচুনিভাই তুমি বড় ফুটো'; আত্মচ্ছিদ্রং ন জানাতি পরচ্ছিদ্রং পদেপদে' ইত্যাদি। |
আপনার কিছু নয়, জগৎ মায়াময় | এই সংসারে তোমার আমার বলে কিছু নেই, সবই অনিত্য; এ মায়া প্রপঞ্চময়। |
আপনার গায়ে/গুয়ে গন্ধ নেই পরের গায়ে/গুয়ে গন্ধ // আপনার ঘামে/বগলে গন্ধ নেই পরের ঘামে/বগলে গন্ধ | নিজের সব ভালো, পরের সব খারাপ। |
আপনার ঘোল কেউ টক বলে না১ | নিজের জিনিস কেউ খারাপ বলে না। |
আপনার ঘোল কেউ টক বলে না২ | নিজের দোষ কেউ দেখে না। |
আপনার চড়কায় তেল দাও | নিজের কাজ কর পরের কাজে নাক গলিয়ো না। |
আপনার চেয়ে পর ভাল; পরের চেয়ে জঙ্গল ভাল | আমার নিজের এই ধারণাটাই সম্পূর্ণ মিথ্যা। |
আপনার ছিদ্র জানে না পরের ছিদ্র খোঁজে | নিজের দোষ দেখে না পরের দোষ খোঁজে; সমতুল্য- চালুনি করে ছুঁচের বিচার', 'কাঁঠাল ভাই তুমি বড় খসখসে', 'ঝাঁজরি বলে খৈ-চালা, তুই বেজায় ফোঁড়ওয়ালা', 'নিজের পাছায় ন মন গু, আমারে বলে তোর খান ধু' ইত্যাদি। |
আপনার ছেলেটি খায় এতটি, চলে/বেড়ায় যেন ঠাকুরটি; পরের ছেলেটা খায় এতটা, চলে/বেড়ায় যেন বানরটা | মন্দ হলেও নিজের বস্তু ভালো; ভালো হলেও পরের বস্তু মন্দ; নিজের ছেলের প্রতি আদরযত্ন, পরের ছেলের প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্য। |
আপনার ঢাকা থাক পরের বিকিয়ে যাক | পরের অনিষ্ট হয় হোক নিজের স্বার্থ বজায় থাকলেই হ'ল। |
আপনার ঢোল আপনি পেটায়/বাজায় | আত্মপ্রশংসায় পঞ্চমুখ। |
আপনার ধন পরকে দিয়ে দেবকী মরে মাথা খুঁড়ে // আপনার ধন পরকে দিয়ে মর এখন পাত কুড়িয়ে | আগে অধিকার ছেড়ে পরে হাহুতাশ করা; সম্পদ বিলিয়ে দিলে পরের অনুগ্রহে বাঁচতে হয়। |
আপনার নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা | নিজের ক্ষতি স্বীকার করে পরের ক্ষতি করা। |
আপনার পাঁজি পরকে দিয়ে দৈবজ্ঞ বেড়ায় মাথায় হাত দিয়ে | অন্যের উপকার করতে গিয়ে নিজের ক্ষতি করা; প্রয়োজনীয় জিনিষ পরের হাতে থাকলে দরকারের সময় অনেক অসুবিধা হয়। |
আপনার পাঁঠা লেজে কাটে | আপনার বিষয়ে যা খুসি করা যায়; তাতে কারো কিছু বলার থাকে না; নিজের ভাল সবাই বোঝে। |
আপনার পায়ে কুড়ুল মারে | জেনেশুনে নির্বুদ্ধিতায় নিজের ক্ষতি করে। |
আপনার বেলায় আঁটিসাটি পরের বেলায় দাঁতকপাটি | নিজের বেলায় কড়াকড়ি; পরের বেলায় কিছু না। |
আপনার বিড়াল পথ্যি পায় না | যার নিজের অন্নের সংস্থান নেই তার পক্ষে অন্যকে সাহায্য করা অসম্ভব। |
আপনার বেলায় পাঁচকড়ায় গণ্ডা // আপনার বেলায় ছকড়ায় গণ্ডা, পরের বেলায় তিনকড়ায় গণ্ডা | নিজের স্বার্থ বিলক্ষণ বোঝা; নিজের জন্য সুবিধাজনক ব্যবস্থা, পরের বেলায় বিপরীত। |
আপনার ভাল পাগলেও বোঝে | আপনার ভাল সবাই বোঝে; যার সামান্য বুদ্ধি আছে সেও স্বার্থটা ভালো বোঝে; |
আপনার মত জগৎ দেখা | নিজের আয়নায় পরকে দেখা; গুণী কোন নির্গুণ খুঁজে পায় না, নির্গুণ আবার কোন গুণী খুঁজে পায় না; সমতুল্য- ।আত্মবৎ মন্যতে জগৎ' |
আপনার মাথা আপনি খায় | নিজের ক্ষতি নিজেই করে। |
আপনার মন দিয়ে পরের মন জানা | নিজেকে দিয়ে পরের বিচার করা; নিজের আয়নায় পরকে দেখা। |
আপনার মান আপনার কাছে (হাতে) //আপনার মান আপনি রাখি, কাটা কান চুলদে ঢাকি | আত্মসম্মান নিজের হাতে; নিজের মান নিজেকেই বাঁচাতে হয়; ঘরের কথা বাইরে যে বলে সে আহাম্মক। |
আপনার পায়ে আপনি কুড়ুল মারা | জেনেশুনে নিজের সর্বনাশ করা। |
আপনারটা ঢাকা থাক পরেরটা বিকিয়ে যাক | পরেরটা নষ্ট হয় হোক, নিজেরটা ভালো থাকলেই হল। |
আপনারটা ষোলআনা, পরেরটা কিছু না | নিজের বেলায় সবটাই নেবো, পরের বেলায় কিছু দেবো না। |
আপনারটা সবাই বড় দেখে | নিজের জিনিস অন্যের জিনিসের তুলনায় মুল্যবান মনে হয়। |
আপনারে বড় বলে বড় সেই নয়; লোকে যারে বলে বড় সেই হয় | আত্মপ্রশংসা মান্যতা পায় না। |
আপনি আচরি ধর্ম অপরে শিখাও | যে আচরণ অপরকে শেখাও তা নিজে আগে কর; নিজে করে অপরকে অনুপ্রাণিত করতে হয়; সমতুল্য- 'উপদেশ অপেক্ষা উদাহরণ/দৃষ্টান্ত ভাল'। |
আপনি খেতে ভাত পায় না শঙ্করাকে ডাকে // আপনি ঠাকুর ভাত পায় না শঙ্করাকে ডাকে // আপনি শুতে ঠাঁই পায় না শঙ্করাকে ডাকে | অন্যের দয়ায় বেঁচে থেকে অন্যকে সাহায্য করার চেষ্টা; নিজের আয় দিয়া নিজে চলিতে পারে না; অথচ অন্যের জন্য খরচ করে; আহাম্মকের রকম-ফের। |
আপনি গেলে ঘোল পায় না চাকরকে পাঠায় দুধের তরে | যেখানে নিজের অনুরোধ রক্ষা হয় না সেখানে অপরকে দিয়ে কোন কাজ করার চেষ্টা; আগে থেকেই অনুমান করা যায় যে কণ এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। আগে থেকেই অনুমান করা যায় যে ব্যর্থ হবে, তখন তার প্রচেষ্টাকে ব্যাঙ্গ করে এই প্রবাদ বলা হয়; সমতুল্য- 'মনিব গেলে ঘোল পায় না বেঁশোকে পাঠায় দুধের তরে'। |
আপনি তুষ্টে জগৎ তুষ্ট | নিজে সন্তুষ্ট থাকলে জগৎ সন্তুষ্ট থাকে। |
আপনি পাগল, ভাতার পাগল, পাগল তার চেলা, এক পাগলে রক্ষা নেই তিন পাগলের মেলা- লালন | বাউলের ভাববাদী দর্শন; এই সংসার পাগলের মেলা। |
আপনি পায় না পরকে বিলায় | অবিবেচনাপ্রসূত কাজ। |
আপনি বড় ভালো, তাই লোককে বলেন কালো | নিজে মন্দ হয়েও অপরকে মন্দ বলে- এমন নীচব্যক্তির প্রতি বক্রোক্তি। |
আপনি বাঁচলে বাপের নাম | আত্মরক্ষাই সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম; আত্মজীবনের মূল্য অন্য সবকিছু থেকে অধিক;নিজের স্বার্থ দেখা; সমতুল্য- 'আগে ঘর পরে পর, ঘর সামলে পরকে ধর', 'আত্ম রেখে ধর্ম তবে পিতৃকর্ম','চাচা আপন প্রাণ বাঁচা' ইত্যাদি। |
আপনি ভালো তো জগৎ ভালো | নিজে ভালো হ'লে অন্যরাও ভালো হয়। |
আপনি ভালো তো জগৎ ভালো তারই মান থাকে, আপনি মন্দ তো জগৎ মন্দ কে তার মান রাখে? | ভালো লোকেরা সমাজে সম্মানির হয়; মন্দলোকেদের কেউ পোছেও না। |
আপনি যেমন জগৎ তেমন | আপনার আশিতে পরকে দেখা; আপনি ভালো তো জগৎ ভালো' সমতুল্য- 'আপ ভালা তো জগৎ ভালা'। |
আপনি যেমন ঢেমন জগৎ দেখি তেমন | যে নিজে দুশ্চরিত্র, ষে অপরকে দুশ্চরিত্র ভাবে। |
আপনি শুতে ঠাঁই নাই শঙ্করাকে ডাকে | যার নিজের শোয়ার স্থান নেই তার পক্ষে অন্যকে শুতে আহ্বান করা নির্বুদ্ধিতা; বিরুদ্ধ উক্তি- 'যদি হয় সুজন তেঁতুল পাতায় নজন'। |
আপনে গলিমে/মহল্লামে কুত্তা শের- হিন্দি প্রবাদ | নিজের এলাকায় সবাই কর্তৃত্ব ফলায়; সুযোগ পেলে ভৃত্যও প্রভুত্ব করে। |
আপনে রামকো ভজৈ, রিজ ভজে বা খিজ- হিন্দি প্রবাদ | ইষ্টদেবতাকে যেভাবেই ভজনা কর-না-কেন তিনি ঠিক বুঝতে পারেন। |
আপ ভলা তো জগৎ/সব ভলা-হিন্দি প্রবাদ | নিজের মন ভাল হলে সবাইকে ভাল মনে হয় এবং সবার কাছে ভাল ব্যবহার পাওয়া যায়। |
আপ রুচি খানা, পোর রুচি পরনা (পিহনা)- হিন্দি প্রবাদ | নিজের রুচিমত খাও তবে অন্যের চোখে যে বেশ ভালো দেখা তাই পরিধান কর। |
আবর তাঁতী গোবর খায় স্ত্রীর বাক্যে মরতে যায় | আগে ধারণা ছিল তাঁতীরা খুব বোকা ছিল; এই ভাবার্থে কোন বুদ্ধিহীন লোক সম্পর্কে এই প্রবাদটি প্রযুক্ত হয়। |
আবাগের বেটা ভূত | হতভাগ্যের বেটা অপদার্থ,কাণ্ডজ্ঞানহীন- গালি বিশেষ |
আবালে না নোয়ালে বাঁশ, বাঁশ করে টাঁশ টাঁশ | 'কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ বাঁশ করে টাঁশ টাঁশ'- দ্রষ্টব্য |
আবিল দৃষ্টি সব হলদে দেখে | মন্দের চোখে সবই মন্দ; সমতুল্য- 'কামলার চোখে সব শ্যামলা মনে হয়'। |
আবৃত্তিঃ সর্বশাত্রাণাং বোধাদপি গরিয়সী। | সব শাস্ত্রবোধ থেকে আবৃত্তির গৌরব অনেক বেশি। |
আম না থাকলে আমড়া চোষে // আম না পেয়ে আটিঁ চোষে | সার বস্তু না পেলে অসার বস্তু উপভোগ করতে বাধ্য হওয়া; সার না পেলে অসারই সই; একটা কিছু হলেই হ’ল; অভাগার এর বেশি কিছু জোটে না। |
আম না হতে আমসত্ব | কাজ না হতেই ফলের আশা; আগাম সুখকল্পনা। |
আম পাকলে মিঠা, মানুষ পাকলে তিতা | পরিণত-বুদ্ধি হলে মানুষ স্বার্থান্বেষী হয়, নিজের ভালো ও পরের মন্দ খোঁজে। |
আম শুকালে আমসী, যৌবন ফুরালে কাঁদতে বসি | বয়স বাড়লে রস শুকায়; নারীর যৌবন ফুরালে আদর থাকে না। |
আমও গেল ছালাও গেল | লাভ করতে গিয়ে সর্বস্ব হারানো। |
আমড়াগাছে আম ফলে না | কুবংশে সুসন্তান জন্মায় না; মন্দলোকের কাছে ভালো ব্যবহার প্রত্যাশা করা যায় না; সমতুল্য- 'ছাগলের লোমে পশম হয় না'। |
আমড়াতলায় আম পেলে, আমতলায় কেবা যায় | সহজে কিছু পেলে কেউ কষ্ট স্বীকার করে না। |
আমরা বাঁচার সাথে সাথে একটু একটু করে মরি | আয়ু দিনেদিনে ক্ষয় হয়। |
আমরা যতই জানি ততই নিজের অজ্ঞানতা আবিস্কার করি | জ্ঞানী জানে যে সে কিছুই জানে না। |
আমাদের প্রধান বিশ্বাসগুলি হল অন্ধবিশ্বাস | রিপু নামক অন্ধকারের তাড়নায় কেউ আলোর (সত্য) খোঁজ পায় না। |
আমার আমার যত করি, চিনির বলদ হয়ে মরি | আমরা সংসারীরা আসলে ভারবাহী জন্তুছাড়া আর কিছু নয়। তারা সংসারের ভার বইতে গিয়ে সুখ আর উপভোগ করতে পারে না। |
আমার নাম নিতাই, এক খাই আর এক থিতাই | অতি সতর্কলোক, যে বর্তমানের সাথে সাথে ভবিষ্যতেরও সংস্থান করে থাকে; যে ব্যক্তি অভিষ্ট বস্তু পাওয়ার পর পুনরায় সেটা পাওয়ার চেষ্টা করে তার ক্ষেত্রে এই প্রবাদ প্রযোজ্য। |
আমার পরে পৃথিবী ধ্বংস/মহাপ্লাবন | আমি নেই তো আমার ভাবনাও নেই। |
আমার বুদ্ধি শোনো, ঘরদোর ভেঙে ফেলে নটে শাক বোনো | মানুষ ভাবে সে বড় বুদ্ধিমান; স্বভাবদোষে সবাইকে পরামর্শ দেয়; এমনকি যে নিজের ভালমন্দ বোঝে না সেই নির্বোধও অপরকে পরামর্শ দিয়ে যায়; আহাম্মক আহাম্মকের মতই পরামর্শ দেয়। |
আমার হাতদুটি ধর, তাহ'লেই তোমার হাতদুটি আমার ধরা হবে | মানুষ মানুষের জন্য; একতাই বল; আমরা পরস্পর পরস্পরের সহযোগিতায় বাঁচি। |
‘আমি আমি’ করেই মানুষ মল | অহংকারেই মানুষ মরে। |
আমি কি নাচতে জানিনে, মাজার ব্যাথায় পারিনে | মিথ্যা ওজরে নিজের অক্ষমতা ঢাকার চেষ্টা। |
আমি কি নেড়ি ভেড়ি, আমার পাঁচখানা শাড়ী ধোপার বাড়ী | কিছু নেই তবু তার বড়াই করাতে কার্পণ্য নেই। |
আমি জানি না-বলতে শেখাটাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা-হিব্রু প্রবাদ | কারো পক্ষে সব জানা সম্ভব নয়; জানতে জানতে জানা যায় জানার কোন শেষ নাই। |
আমি ছাড়লে কি হবে কম্বল তো আমায় ছাড়ে না- হিন্দি প্রবাদ | বিপদ এড়াতে চাইলে কি হবে, বিপদ আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে থাকে। |
আমি জীবনপাত্রের তলানিটুকু নিঃশেষে পান করব | জীবন চুটিয়ে ভোগ করার লিপ্সা; চার্বাকী দর্শন- হেসে খেলে নাও দুদিন বইতো নয়...। |
'আমি বহু বাসনায় প্রাণপনে চাই বঞ্চিত করে বাঁচালে মোরে'- রবীন্দ্রনাথ | মানুষের চাওয়ার কোন শেষ নেই; হাত পাতলেই যে পাওয়া তা পাওয়া নয়। |
আমি যাই বঙ্গে কপাল যায় সঙ্গে | হতভাগ্যের ভাগ্য কখনো ফেরে না; সমতুল্য- 'অভাগা যে দিকে চায় সাগর শুকায়ে যায়', 'পোড়া কপাল জোড়া লাগে না।। |
‘আমি’ যাবে মলে | অহমহমিকা নিয়ে মানুষ মরে। |
আমি যার করি আশ সেই করে সর্বনাশ | যার কাছ থেকে সাহায্য আশা প্রত্যাশা করা হয় সেই উলল্টে সর্বনাশ করে |
আমিও ফকির হলাম দেশে অকাল এলো | বাঁচার জন্য ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করেছিল; অকাল আসাতে সেটাও গেল; কোন কাজ অস্বাভাবিকভাবে বাধাপ্রাপ্ত; সমতুল্য- 'অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকায়ে যায়'; আমি যাই বঙ্গে কপাল যায় সঙ্গে। |
আমি কি নাচতে জানিনে মাজার ব্যথায় আর পারিনে | নিজের অক্ষমতা ঢাকার জন্য মিথ্যা অজুহাত দেখানো। |
আমি কি নেড়ি ভেড়ি আমার পাঁচখানা কাপড় ধোপার বাড়ী | গরীবের বড়লোকী চাল; কিছু না থাকলেও বড়াই করে নিজের সম্পদের প্রমাণ দেওয়া। |
আমে দুধে এক হয়, আঁটি যায় গড়াগড়ি // আমে দুধে এক হয়,আদাড়ের আঁটি আদাড়ে যায় | উপরতলায় গলাগলি, নীচের তলায় হেলাফেলা; যোগ্য যোগ্যের সাথে মিলিত হয়, নিস্প্রয়োজনীয় বস্তু ফেলা যায়। |
আমে ধান তেঁতুলে বান- খনা | আমের ফলন বেশি হলে ধান বেশি উৎপন্ন হয়; তেঁতুলের ফলন বেশি হলে দেশে বন্যা হয়। |
আয় বুঝে ব্যয় কর | অপব্যয় করো না, মিতব্যয়ী হও; সমতুল্য- 'অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেও'; 'ওজন বুঝে চল'; 'কাপড় বুঝে জামা কাটো'; 'জিত্নি চদ্দর দেখো, উৎনি পৈর ফৈলাও ইত্যাদি |
আয়না যে মুখ দেখে সেই মুখ দেখায় | অন্যের ক্ষতি করলে নিজেরও ক্ষতি হয়; ধাক্কা দিলে পাল্টা ধাক্কা খেতে হয়; সমতুল্য-'আঘাত করলে প্রত্যাঘাত খেতে হয়', 'ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়', 'ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া থাকে', 'চড় মারলে চড় খেতে হয়','ধ্বনির প্রতিধ্বনি আছে/থাকে' ইত্যাদি। |
আয়ুর্ম্মর্ম্মাণি রক্ষতি | সকল সঙ্কট থেকে আয়ু প্রাণকে রক্ষা করে; আয়ু থাকলে কেউ মরে না। |
আয়ুর্যাতি দিনে দিনে | আয়ু দিনে দিনে ক্ষয় হয়; বয়বৃদ্ধির সাথেসাথে আমরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলি। |
আয়ুর্বেদকৃতাভ্যাসঃ সর্বেষাং প্রিয়দর্শনঃ। আর্যশীল গুণোপেত এষ বৈদ্যো বিধীয়তে॥ (চাণক্য) | যে ব্যক্তি চিকিৎসাশাস্ত্রে অভিজ্ঞ, যিনি সবলের চোখেই সৌম্যদর্শন, যিনি সৎস্বভাবিশিষ্ট- তিনিই চিকিৎসক হওয়ার যোগ্য। |
আর কি নেড়া বেলতলায় যায় | যে একবার ঠকেছে সে খুব সতর্ক থাকে যাতে দু'বার ঠকতে না হয়। |
আর গাব খাব না, গাবতলা দিয়ে যাব না; গাব খাব না ত খাব কি, গাবের মত আছে কি | তৃপ্তিসাধনে কিছু করে বিপদে পড়লে দ্বিতীয়বার না করার প্রতিজ্ঞা করে; কিন্তু বিপদ থেকে মুক্ত হলেই আগের মূর্তি; লোভ-রিপুকে সম্বরণ করা বড়ই কঠিন ব্যাপার। |
আরগুণ নাই ছারগুণ আছে (ঢাকা) | অরগুণ নাই বরগুণ আছে (২৪ পরগণা)। |
আরম্ভ করলে শেষ হতে আর কতক্ষণ? | আরম্ভ করতেই অর্ধেক সময় ব্যয় হয়। |
আরম্ভ করলে শেষ দেখে ছাড়তে হয় | আধা-খেঁচড়া কাজ করা উচিত নয়। |
আরম্ভসদৃশোদয়ঃ | যেভাবে আরম্ভ হয় শেষ বা সমাপ্তিও সেইভাবে হয়। |
আরশোলা হল পাখি, রইল কী আর দেখতে বাকি // আরশোলাও পাখি, মুন্সেফও হাকিম | ডানা থাকলেই পখি হয় না; কাগজ নাড়াচাড়া করলেই বিচারক হয় না; দুই অসম বিষয়ের তুলনা হয় না; কিসে আরে কিসে সোনা আর সিসে। |
আরাম অলসের ধন | অলস খুব আরামপ্রিয়। |
আরাম হারাম হায় | স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকর; পরিশ্রমই শেষ কথা। |
আরের দাঁত আড় ছিরে বুড়োর মাড়ি | সমর্থ লোক দাঁতের সাহায্যে যা করতে পারে একটা বুড়ো লোকও মাড়ির সাহায্যে তা করতে পারে; অপরে বহু আয়াসে জে কাজ করতে পারে ব্যক্তিবিশেষে সেই কাজ আনায়াসে করতে পারে। |
আরের মন যেদিকে চোরের মন বোঁচকার দিকে | কোন লোকে কেবল নিজের স্বার্থের দিকে নজর রাখলে এই বাক্য প্রযুক্ত হয় |
আলখাল্লা পরলেই মোল্লা হয় না | চেহারা সবসময় সত্যকথা বলে না; বাহ্যিক আড়ম্বরে ধার্মিক হওয়া যায়ুয়া, অন্তরে ভক্তি থাকা প্রয়োজন; সমতুল্য- 'চকচক করলেই সোনা হয় না'; 'তিলক পরলেই বৈষ্ণব হয় না'; 'পৈতা থাকলেই বামুন হয় না'; 'মন্দিরে গেলেই সাধু হয় না' ইত্যাদি। |
আলগা জিহ্বা দুষ্ট দুটি হাত থেকেও খারাপ- ইহুদী প্রবাদ | অসংযত কথাবার্তা বলে মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। |
আলগা পেলে সন্ন্যাসীও মাতে | কঠোর অনুশাসন কারও মনঃপুত নয়; মনোরম ঢিলেঢালা জীবন পরম আদরণীয়। |
আলগা মাটিতে বিড়াল আঁচড়ায়/হাগে | নরম লক পেলে সাবাই তার উপর আধিপত্য ফলায়। |
আল ভেঙে জল যাচ্ছে, ভালুকে তালি মারছে | একজনের ক্ষতিতে অন্যজনের আনন্দ প্রকাশ। |
আলস্যং হি মনুষ্যানাং শরীরস্থো মহান রিপু। নাস্ত্যুদয়মসমো বন্ধুঃ কৃত্বা যন্নাবসীদতি॥ (চাণক্য) | শরীরের আলস্য মানুষের প্রধান শত্রু; পরিশ্রমের মত দ্বিতীয় কোন বন্ধু হয় না; পরিশ্রমী কখনো দুঃখী হয় না। |
আলস্য হেন ধন থাকতে দুঃখের অভাব কি? | অলস লোক দুঃখ ভোগ করবে এটা সুনিশ্চিত; অলসের প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি। |
আলার নীচেই কালা রয়েছে | প্রদীপের নীচেই অন্ধকার থাকে; ঈশ্বরের পিছনেই শয়তানের বাস; শয়তান পিছু ছাড়ে না। |
আলালের ঘরের দুলাল | ধনী ঘরের অতি আদরের ও আবদারে ছেলে যে অতিরিক্ত আদরযত্ন পেয়ে উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়েছে। |
আলো এলে অন্ধকার পালায় | জ্ঞানের আলোতে মনের অন্ধকার ঘুচে যায়। |
আলোচাল দেখলে ভেড়ার মুখ চুলকায় | ঈপ্সিত লোভের জিনিষ দেখলে সবারই লালসা বৃদ্ধি পায়। |
আলো বাতাস বেঁধো না, রোগ ঘরে ডেকো না- খনা | শরীরমন সুস্থ রাখার জন্য ঘরে আলোবাতাস প্রয়োজন। |
আলোর পর আঁধার আসে | সুখ ও দুঃখ ঘুরে ফিরে আসে;সমতুল্য- 'চক্রবৎ পরিবর্তন্তে সুখানি চ দুখানি চ'। |
আল্লা যারে দেয় ছাদ ফুঁইড়া দেয় | ভগবান যারে দেয় ঢেলেই দেয়; ভাগ্যবানের বোঝা ভগবানে বয়; সৌভাগ্যবান বিধির বরপুত্র। |
আশমান জমিক ফারাক | বিরাট তফাৎ; আকাশ ও পাতালের মত বিশাল দুরত্ব। |
আশা আর ফুঁ আছে, দুধ আর বাটি নেই | গরম দু্ধ ফুঁ দিয়ে খাবার ইক্সক্সহা হয়, কিন্তু দুধও নাই বাটিও নাই; ঈপ্সিত বস্তুর অভাব হলে এই বাক্য ব্যবহৃর হয়; অভাগার হাহুতাশ। |
আশা আর বাসা ছোট করতে নেই | আশা থাকলে চেষ্টা থকে; চেষ্টা থাকলে সাফল্য আসে; সুতরাং আশা বড় হলে সাফল্যও বড় হয়; ছোট কুঠরীতে স্বচ্ছন্দে বাস কর যায় না; ছোট ছোট বিষয় মনকে সঙ্কীর্ণ করে, হতাশাগ্রস্ত করে। |
আশা করে ঘর বাঁধে, কেউ হাসে কেউ কাঁদে | সবার ঘর-সংসার সুখের হয় না। |
আশা করেছেন কাও পাকলে খাবেন ডেও | যবে ড্যাফল পাকবে তখন খাবে সেই আশায় কাক অপেক্ষা করে আছে; খুব দূরবর্তী আশা করে কেউ বসে থাকলে এই বাক্য প্রযোজ্য হয়। |
আশা গরীবের খাদ্য | আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। |
আশা গরীবের খাদ্য | আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। |
আশাবধিং কো গতঃ | আশার অবধি বা শেষ নেই; আশার সীমা পর্যন্ত কেউ পৌঁছাতে পারে না; আশা অনন্ত ও অসীম। |
আশা বৈতরণী নদী | পাপীরা যার শেষ পায় না (পাপীরা স্বর্গে যেতে পারে না), সেই বৈতরণী নদীর মত আশারও কোন শেষ নাই। বৈতরণী পার হওয়া খুব কষ্টকর ও সময়সাধ্য। (মূলশ্লোক- ক্রোধো বৈবস্বত্ব রাজা...') |
আশাই পরম দুখ, নিরাশা পরম সুখ | সীমাহীন আশার একটা আশা পূর্ণ হলে আরেকটা আসে উপস্থিত হয়; সুতরাং সুখভোগ আর হয় না; আশা নিবৃত্ত করতে পারলে নৈরাশ্যের যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় না। |
আশাবধিং কো গতঃ | আশা অনন্ত ও অসীম; তার শেষসীমায় কেউ পৌঁছাতে পারে না। |
আশায় আমার পড়ল ছাই, এখন বল কোথায় যাই | আশাভঙ্গে হতাশা। |
আশায় খেলিছে পাশা | মানুষ আশা নিয়ে বাঁচে, আশা নিয়ে মরে। |
আশায় বাঁচে চাষা | দুর্বলশ্রেণির মানুষেরা এই আশা নিয়েই বেঁচে থাকে যে একদিন-না-একদিন তাঁদের সুদিন ফিরবে। |
আশায় মরে চাষা | আষাঢ়মাসে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার আশায় এবং না হওয়ার আশঙ্কায় সবসময় চাষা আতঙ্কিত থাকে। |
আশার অর্ধেক ফল | সবসময় আশানুরূপ ফল হয় না; অর্ধেক হলেই যথেষ্ট পাওয়া হয়; যথা লাভ। |
আশার চেয়ে নিরাশা ভাল, হয়ে গেল তো হয়ে গেল | আশায় না থাকলে নিরাশা হলে দুঃখ পেতে হয় না। |
আশার শেষ নেই | আশা কুহকিনী; দরিদ্র চায় লাখোপতি হতে; লাখোপতি চায় ক্রোড়পতি হতে; ক্রোড়পতি চায় কুবেরের সম্পত্তি; কামনা-বাসনার কোন শেষ নেই। |
আশাহি পরমং দুঃখং, নৈরাশ্যং পরমং সুখং | আশার সীমা নেই; একটা আশা পূর্ণ হলে আরেকটা আশার জন্ম হয়; সুখভোগ আর হয় না; সুতরাং আশা ত্যাগ করতে পারলেই প্রকৃত সুখলাভ হয়। |
আশ্বিন মাসে কুঠে (কুষ্ঠরোগগ্রস্ত) পাঁঠাতেও কড়ি | দুর্গাপুজার সময় সকল প্রকার পাঁঠা চড়া দরে বিক্রি হয়; দরকারের সময় মন্দ জিনিসও ভালও দামে বিক্রি হয়; উপযুক্ত সময়ে লোকে লাভবান হয়। |
আশ্রয়, ফল ও ছায়া বড়গাছের তলায় নিতে হয় | ফল না পেলেও আশ্রয় ও ছায়াতো পাওয়া যাবে; ক্ষমতাসম্পন্ন লোকের আশ্রয় নিতে হয়। |
আষাঢ়মাস চাষার আশ | চাষা আশা করে আষাঢ় মাসে সময় মত বৃষ্টি আসবে এবং প্রচুর বৃষ্টি হবে। |
আষাঢ়ে গল্প | কল্পনামূলক, আজব বা অবাস্তব গল্প; উৎস-আষাঢ় মাসের অঝোরে বৃষ্টি পড়ার কালে অলস মুহূর্তের গল্পের আসর থেকেই ‘আষাঢ়ে গল্প’ প্রবাদটির সৃষ্টি হয়েছে। |
আষাঢ়ে না হলে সূত, হা সূত যো সুত; ষোলতে না হলে পুত হা পুত যো পুত | আষাঢ় মাসের দিনগুলি দীর্ঘ হয়; সেইসময় সূতা না কাটলে সূতা পেতে কষ্ট হয়; ষোলবৎসর বয়সে কোন স্ত্রীলোকের সন্তান না হলে পরে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে; সময়ের কাজ সময়ে করতে চেতাবনী। |
আসতেও একা, যেতেও একা, কার সঙ্গে বা কার দেখা | কেউ কারো নয়, জগত মায়াময়; সমতুল্য- 'তুমি কার, কে তোমার, কারে বলরে আপনার'? |
আসনং চালয়েৎ দৃষ্ট্বা পথি নারী বিবর্জিতা। জাগরণে ভয়ং নাস্তি অতিক্রোধো নিবর্যতে।। (চাণক্য) | আসন দেখে চালনা করতে বসতে হয়; পথ চলতে ত্রীলোককে সঙ্গে নিতে নেই; জেগে থাকলে ভয়ে নেই; ক্রোধ সবসময় সংবরণ করবে। |
আসন্নকালে বিপরীতা বুদ্ধিঃ | বিপদকালে মানুষের বুদ্ধিভ্রম হয়; সঠিক কাজ করতে গিয়ে ভুল করে ফেলে; অবস্থা শোচনীয় হলে কার্যকলাপও দুর্বুদ্ধিপ্রসূত হয়। |
আসরঘরে মশাল নেই, হেঁশেলঘরে চাঁদোয়া // আসলে মুষল নেই ঢেঁকি ঘরে চাঁদোয়া | নিজের ঘর না সামলে পরের ঘর সামলানো; প্রয়োজনের দিকে দৃষ্টি নেই অপ্রয়োজন নিয়ে বাড়াবাড়ি; সংগতিহীন হয়েও বড়মানুষি ভাব; সমতুল্য- 'ভিতরে ছুঁচোঁর কেত্তন, বাইতে কোঁচার পত্তন'। |
আসল ছেড়ে ছায়ার পিছনে ছূটো না | অনিশ্চিতের আশায় নিশ্চিত ত্যাগ করো না। |
আসলের খোঁজ নেই, তার সুদের খবর | যে আসল ফিরে পাবার সম্ভাবনা নেই, তার সুদের জন্যে ব্যস্ততা; ক্ষুদ্রস্বার্থের জন্য বৃহৎস্বার্থ ত্যাগ। |
আসলের চেয়ে সুদ মিষ্টি // আসলের চেয়ে সুদের কদর বেশি | মহাজনের যেমন আসল ফেরত পাওয়া থেকে সুদ পেতে বেশি পছন্দ করে তেমনই দাদার কাছে ছেলে থেকে নাতির আদর বেশি হয়। |
আসেন লক্ষ্মী যান বালাই১ | সৌভাগ্য এলে দুর্ভাগ্য কাটে। |
আসেন লক্ষ্মী যান বালাই২ | যার উপস্থিতিতে কিছু যায় আসে না অর্থাৎ এলেও লাভ নেই গেলেও ক্ষতি নেই তার সম্পর্কে প্রযোজ্য। |
আস্কে খায় তার ফোঁড় গোণে না | আসকে চালের গুঁড়ো গিয়ে তৈরী একপ্রকার ফোঁড়যুক্ত পিঠে; খাবার সময় কেউ নজর করে না তাতে কয়টা ফোঁড় আছে; যারা খায় দায় ঘুরে বেড়ায় কিন্তু খবর রাখেনা কোথা থাকে খাবারদাবার আসছে তাদের লক্ষ্য করে এই প্রবাদ বলা হয়; 'কত ধানে কত চাল তার হিসাব রাখে না' 'গকুলের ষাঁড়', গায়ে ফুঁ দেইয়ে বেড়াণো লক'। |
আস্তাকুঁড়ের পাত/পাতা কখনো স্বর্গে যায় না | নীচ কখনো উঁচুপদ লাভের উপযুক্ত হয় না; পরমুখাপেক্ষী কখনো সমৃদ্ধিলাভ করে না। |
আহাম্মক তিন যায়গায় বিষ্ঠা মাখে | ভুলবশতঃ প্রথমে পায়ে; সন্দেহ হওয়াতে পা থেকে আঙুলে; নিঃসন্দেহ হ'তে আঙুল থেকে নাকে। |
আহাম্মক যে হয়, পিছনে সে কথা কয় | পিছনে কথা বলা যুক্তিযুক্ত নয়। |
আহাম্মক এক যে পরের মালে করে টেঁক; | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক দুই যে পরের চালে তোলে পুঁই | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক তিন যে ঋণ করে দেয় ঋণ | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক চার যে মধ্যস্থ হয়ে খায় মার | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক পাঁচ যে পরের পুকুরে ছাড়ে মাছ | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক ছয় যে একের কথা আরে কয় | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক সাত যে শ্বশুর বাড়ী খায় ভাত | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক আট যে মাগকে পাঠায় হাট | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক নয় যে ঘর থাকতে পরের ঘরে রয় | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মক দশ যে মাগের কথায় বশ | অর্থ স্পষ্ট। |
আহাম্মকের সাথে তর্ক করো না, মানুষ ভুল করে তোমাকে আহাম্মক ভাবতে পারে- আরবী প্রবাদ | বুদ্ধিমান আহাম্মকের সাথে তর্ক করে না; আহাম্মকের সাথে তর্ক করার অর্থ পাথরে মাথা ঠোকা। |
আহার করবে ধীরে, কোনদিকে না চাবে ফিরে | স্বস্থ্যের কারণে বৈদ্যের বিধান। |
আহার, নিদ্রা ভয়, যতই করবে ততই হয় | আহার, নিদ্রা ভয় ইত্যাদি যতই বাড়িয়ে যাওয়া যায় ততই বাড়তে থাকে। |
আহারো দ্বিগুণঃ স্ত্রীণাং বুদ্ধিস্তাসাং চতুর্গুণা। ষড্গুণো ব্যবসায়শ্চ কামশ্চাষ্টগুণঃ স্মৃতঃ॥ (চাণক্য) | স্ত্রীলোকের আহার পুরুষের দ্বিগুণ, তাদের বুদ্ধি পুরুষের চতুর্গুণ, ব্যবসা-বাণিজ্যের বুদ্ধি পুরুষের ছয়গুণ আর ভোগলিপ্সা পুরুষের আটগুণ। |
আহুঃ সপ্তপদী মৈত্রী | যার সাথে সাত পা হাঁটা যায় তার সাথে বন্ধুত্ব হয়। |
আহ্লাদে আটখানা, ল্যাজা মুড়ো দশখানা | বেজায় খুশি; আনন্দের আর সীমা-পরিসীমা নেই; যে সামান্য বিষয় উপলক্ষে অযথা আনন্দ প্রকাশ করে তার ক্ষেত্রে এই প্রবাদ বলা হয়। |
আহ্লাদে আটখানা মূল্য পাঁচ-আনা | আহাম্মকের অতিরিক্ত আহ্লাদের প্রতি তির্যকোক্তি। |
আহ্লাদে পুতুল | কেবল আমোদপ্রমোদে রত দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তি। |
ই/ঈ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ইঁচোড়ে পাকা | অকালপক্ক; ইঁচোড়ে পাকা কাঁঠালের স্বাদ-গন্ধ কিছু থাকে না; সেইরকম অকালপক্ক ছেলের বিজ্ঞের মত কথাবার্তা বিস্বাদ বিসদৃশ লাগে। |
ইঁদুর ডুবন্ত জাহাজ ছেড়ে পালায় | মানুষ বিপদে পড়লে উপকৃতরা আগে তাকে ছাড়ে। |
ইঁদুর গর্ত খুঁড়ে মরে, সাপ এসে দখল করে | দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার। |
ইক্ষু পিষ্ট হলেও মিষ্টত্ব ত্যাগ করে না | গুণী কখনো তার গুণ হারায় না। |
ইঙ্গিতে বুঝলে মন কাজ হতে কতক্ষণ | মন পড়তে পারলে কাজ হতে বেশি দেরী হয় না। |
ইঙ্গিতাকারতত্ত্বজ্ঞো বলবান্ প্রিয়দর্শনঃ। অপ্রমাদী সদা দক্ষঃ প্রতীহারঃ স উচ্যতে।। (চাণক্য) | যিনি লোকের মনোগত অভিপ্রায় অনুধাবন করতে সক্ষম, শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ করে তার কারণ অনুমানে সক্ষম, যিনি সুন্দর আকৃতিবিশিষ্ট, যিনি সর্বদা সাবধানে থাকেন যিনি সকল কাজে নিপুণ- তিনিই দ্বাররক্ষকের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হন। |
ইচ্ছা আছে যার পথ আছে তার // ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয় // উপায় থাকলেই কার্যসিদ্ধি হয় | ইচ্ছা থাকলে কাজের উপায় বেরুবেই; যতই দুরুহ হোক উপায়জ্ঞের কাছে সব কাজই সহজসাধ্য মনে হয়; ইচ্ছুকের কাছে কিছুই অসম্ভব নয়। |
ইচ্ছা ঘোড়া হলে সব অভাবীরা তার ওপর চাপ'ত | ইচ্ছা থাকলেই পেট ভরে না; সৌভাগ্যবানের ইচ্ছার সাথে পরিশ্রমের আগ্রহ থাকে। |
ইচ্ছাকৃতভাবে যে তোমার দিকে একটা আঙুল বাড়ায় সে তোমার দিকে তার সমগ্র হাতও বাড়াবে- জিপসি প্রবাদ | যে সাহায্য করতে চায় সে মনেপ্রাণেই সাহায্য করতে চায়। |
ইচ্ছার ভার বোঝা মনে হয় না | যার কাজ করার ইচ্ছা আছে সে আনন্দের সাথে কাজ করে; তার কাছে কাজ করাতে কষ্টবোধ হয় না। |
ইজ্জত দৌলতে বজায় থাকে | অর্থই ইজ্জতের মাপকাঠি। |
ইজ্জত যায়না ধুলে স্বভাব যায় না মলে | মানীর মান নষ্ট হওয়া যেমন কঠিন, বদলোকের স্বভাব পরিবর্তন হওয়াও তেমন কঠিন। দুটি চিরসত্য এক প্রবাদে বলা হয়েছে। |
ইজ্জতের দাম লাখ টাকা | ইজ্জত হেলাফেলার বিষয় নয়। |
ইট পড়লে পাটকেলও পড়ে // ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয় | অন্যের ক্ষতি করলে নিজেরও ক্ষতি হয়; কারো সাথে দুর্ব্যবহার করলে বিনিময়ে দুর্ব্যবহার পেতে হয়; সমতুল্য- 'আঘাত করলে প্রত্যাঘাত খেতে হয়', 'আয়না যেমুখ দেখে সেইমুখ দেখায়', 'ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া আছে/থাকে', 'চড় মারলে চড় খেতে হয়', 'ধ্বনির প্রতিধ্বনি আছে/থাকে' ইত্যাদি। |
ইটে নাই ভিটে নাই বাইরে মর্দানী | ঘরে অন্ন নেই, বাইরে বাবুয়ানা; ফতেবাবুর ফুটানি; সমতুল্য- 'ফতো নবাব'; 'ভিতরে ছুঁচোর কীর্তন, বাইরে কোঁচার পত্তন'। |
ইতরতাপশতানি যথেচ্ছয়া বিতর তাহে সহে চতুরানন অরসিকেষু রসস্য নিবেদনম শিরসি মা লিখ মা লিখ মা লিখ | কবি দুঃখ করে বলেছেন- হে বিধাতা তুমি আমার অদৃষ্টে অন্য যতপ্রকার দুঃখ আছে দাও কিন্তু অরসিক লোকের কাছে রসের নিবেদনরূপ দুঃখ আমার অদৃষ্টে লিখিও না, লিখিও না, লিখিও না। |
ইতর সন্তোষ প্রকাশ করে ব্যবহার মত | ইতরের বিচারের মাত্রা হল তার প্রাপ্তির পরিমাণ। |
ইতি করা | শেষ করা। |
ইতিহাস হল বিজয়ীর লেখা বিজিতে সম্পর্কে একরাশ মিথ্যা ও কুৎসা | পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ইতিহাস লেখা হয়। |
ইতো ভ্রষ্টস্ততো নষ্টঃ //ইতো নষ্টঃ ততো ভ্রষ্টঃ | এদিকও গেল ওদিকও গেল, কোনদিক আর রইল না; সমতুল্য- 'একুল ওকুল দুকল গেল অকূল পারে গোকুল'। |
ইন্দুর, উই, কুজন ভাল ভাঙ্গে তিনজন; সূঁচ, সোহাগা, সুজন ভাল করে তিনজন | ইঁদুর উই এবং অসাধু লোক সব নষ্ট করে; অপরপক্ষে ছুঁচ সোহাগা এবং সাধু লোক সর্বদা সবার হিত করে। |
ইন্দ্রোহপি লঘুতাং যাতি স্বয়ং প্রখ্যাপিতৈর্গুণৈঃ (চাণক্য) | স্বয়ং ইন্দ্রও যদি নিজের প্রশংসা করেন তবে তিনি লঘুত্বপ্রাপ্ত হন; নিজেকে যে বড় বলে ষে বড় নয়। |
ইল্লত যায় ধুলে. স্বভাব যায় মলে | জল দিয়ে ধুলে যেমন নোংরাস্থান পরিস্কার হয়, তেমনি মৃত্যুর পর মানুষ কলঙ্কমুক্ত হয়। |
ইল্লত যায় না ধুলে. স্বভাব যায় না মলে | জল দিয়ে ধুলে যেমন সব নোংরা যায় না, তেমনি স্বভাবও আমৃত্যু বদলায় না; সমতুল্য- 'অঙ্গারঃ শতধৌতেন মলিনত্বং ন মুঞ্চতি','কয়লা ছাড়ে না ময়লা', 'দুধ খাওয়ালেও সাপের বিষ কমে না', 'দুধ ঢাললেও নিম নিষ্টি হয় না; 'যার যা রীত ছাড়ে কদাচিৎ', 'স্বভাব যায় না ম’লে' ইত্যাদি। |
ইসারায় দিশাহারা | প্রলোভনে বিভ্রান্তি। |
ইস্তক জুতো সেলাই, নাগাদ/লাগাত চণ্ডীপাঠ | মুচির জুতা সেলাই থেক ব্রাহ্মণের চণ্ডীপাঠ পর্যন্ত সব কাজ; সংসারের ভালমন্দ সবরকমের কাজের কাজি। |
ঈদকা চাঁদ // ঈদের চাঁদ | যে চাঁদ দেখার জন্য সমগ্র মুসলমান জগৎ উদ্গ্রীব থাকে অথচ দেখা পায় না; দুর্লভ দর্শন, যার দেখা পাওয়া যায় না; সমতুল্য- 'ডুমুরের ফুল। |
ঈশা বাস্যমিদং সর্বং যৎ কিঞ্চ জগৎ্যাং জগৎ। তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জীথা মা গৃধঃ কস্য স্বিদ্ধনম্॥ (উপনিষদ) | ব্রহ্মাণ্ডে যা কিছু অনিত্য বস্তু, সবই পরমেশ্বরের দান। ত্যাগের মধ্য দিয়ে ভোগ কর। কারও ধনে লোভ করো না। |
ঈশান কোণের মেঘে ঝড় ওঠে বেগে | উত্তর-পূর্ব কোণে মেঘ জমলে ঝড় অবশ্যাম্ভাবী। |
ঈশ্বর ঈশ্বর করে যেই, তার ঘরে ভাত নেই | শুধু ভজনায় কার্যসিদ্ধি হয় না। |
ঈশ্বর করেন কাম, মানুষের বদনাম | তিনিচালান আমরা চলি; দোষ হলে তাঁরই দোষ। |
ঈশ্বর যদি করেন, কর্তা (স্বামী) যদি মরে্ন তবে ঘরে বসে কীর্তন শুনবো | পরের বাড়ীতে দিয়ে কীর্তন শুনতে না পেরে এল আহাম্মক স্ত্রীলোকের খেদোক্তি; অল্পলাভের জন্য সঙ্কীর্ণমনার বেশি ক্ষতিস্বীকারের বাসনা। |
ঈশ্বর যা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন | ঈশ্বরের ইচ্ছা অনিচ্ছা আমাদের বোধগম্য নয়। তবে এই বিশ্বাস মনে রাখলে মন বিক্ষিপ্ত হয় না। |
ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি | ঈশ্বর সর্বত্র বিরাজ করেন। |
উ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
উঁচান বাড়ি বড় ভয়, পড়লে বাড়ি সয়ে যায় | উঁচানো লাঠি দেখলে ভয় হয় কতনা লাগবে; লাঠি পড়লে সয়ে যায়; তেমনি কাজ শুরুর আগে ভয় হয়; অথচ কাজ একবার শুরু হলে অতিকঠিন কাজও সহজে সম্পন্ন হয়। |
উঁচুগাছেই ঝড় বেশী লাগে | বড়কেই সংসারের সব ঝক্কি সামলাতে হয়। |
উঁচুগাছেই মই বাঁধো | ফললাভের সম্ভাবনা বেশি থাকে। |
উঁচুমনের মানুষ যা খোঁজে নিজের মধ্যে খোঁজে, নীচমনের মানুষ যা খোঁজে পরের মধ্যে খোঁজে- কনফুসিয়াস | মহানব্যক্তি নিজের দোষ খোঁজে; হীনব্যক্তি অপরের দোষ খুঁজ বেড়ায়। |
উঁচী দুকান্ ফীকি পকান্- হিন্দি প্রবাদ | জাঁকজমকপূর্ণ দোকানের মিষ্টি মিষ্টতাশূন্য; দেখনদারী; বাইরের আড়ম্বরমাত্র; সমতুল্য- 'উপরে চিকণ চাকণ ভিতরে খেড় (খড়)'। |
উঁচু যদি হতে চাও নীচু হও তবে // উঁচু হবে, তবে নীচু হয় | বিনম্রস্বভাবের লোককে সবাই শ্রদ্ধা করে; নম্রতাই মহত্বের লক্ষণ। |
উঁচু হলে ঝড়ে উড়াবে, নীচু হলে ছাগলে মুড়াবে | উভয় অবস্থারই ভয় আছে মধ্যমপন্থা শ্রেষ্ঠপন্থা। |
উঁট কে মুঁহমে জীরা- হিন্দি প্রবাদ | প্রয়োজনকালে ন্যূনতম বিধান; প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম প্রাপ্তি। |
উই, ইঁদু্র, কুজন ভালো ভাঙে তিনজন, সুঁই, সোহাগা, সুজন- ভালো করে তিনজন | উই, ইঁদু্র, কুজন- এই তিনজন ভালো জিনিষ নষ্ট করে এবং সুঁই, সোহাগা, সুজন- এই তিনজন ভালো জিনিষ গড়ে তোলে। |
উকিল আর গাড়ীর চাকা, তেল চর্বি দিয়ে রাখা | তেল না দিলে উভয়েই নড়ে না; খাবার পেলে সবাই দাস। |
উকিল নিজের ওকালতি করে না | তাহ'লে নিজের পক্ষে মিথ্যাকথা বল'তে হয়। |
উক্তস্য পুনঃ কথনং | উক্ত বিষয়ের পুনরুক্তি। |
উচিৎ কথায় আহাম্মক রুষ্ট | উচিৎ কথা কইতে মানা; হক কথা শুনে নির্বোধও রাগ করে। |
উচিৎ কথায় দেবতা তুষ্ট, উচিৎ কথায় মানুষ রুষ্ট | দেবতা, দেবতুল্যলোক উচিৎ কথা শুনে সন্তুষ্ট হন,কিন্তু সাধারণ মানুষেরা উচিৎ কথা শুনে ক্ষেপে যায়। |
উচিত কথায় বন্ধু/মামা বেজার | সত্যকথা কেউ শুনতে নারাজ; সত্যকথা বললে আপনজনও অপছন্দ করে; সুতরাং মা ব্রুয়াৎ সত্যমপ্রিয়ম। |
উচিৎ কথার ভাত নাই | উচিৎ কথা দাম পায় না। |
উচোট খেয়ে প্রণাম | ইচ্ছা করে ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম নয়; আকস্মিকভাবে হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়েছে; তাই প্রণাম স্বীকার; দায়ে পড়ে কার্যগতিতে কোন ভালো কাজ করে ফেলা; সমতুল্য- 'পড়ে দিয়ে পদ্মনাভ';'হোঁচট খেয়ে প্রণাম/পদ্মনাভ'। |
উচ্চপ্রাণের লোকেরা তত্ত্ব নিয়ে চর্চা করে; মধ্যম প্রাণেরা লোকেরা ঘটনা নিয়ে চর্চা করে; ক্ষুদ্রপ্রাণের লোকেরা পরনিন্দা করে | জ্ঞানীরা তত্ত্ব নিয়ে ব্যস্ত থাকে; সাধারণলোকেরা সাংসারিক বিষয়ে ব্যস্ত থাকে; হীনলোকেরা শুধু পরচর্চা করে। |
উচ্ছে খাবে কচি, পটল খাবে বীচি | দুইই উপাদেয় এবং স্বাস্থের পক্ষে মঙ্গল। |
উচ্ছের কচি, পটলের বীচি, ছাগলের ছা, মাছের মা- এগুলি বেছে খা | কচি উচ্চে, পালা পটল, পচি পাঁঠার মাংস ও পাকা মাছ- এগুলি হল উপাদেয় খাদ্য। |
উছল নদীর কলকলানি বেশি | উদ্দাম যৌবনের ঝলকানি বেশি; অজ্ঞানেরা বেশী লম্ফঝম্ফ করে। |
উজাড় (শূন্য) বনে শিয়াল রাজা | যেখানে বাধা দেবার কেউ নেই সেখানে সাধারণলোকও কর্তৃত্ব করে। |
উঠ ছুঁড়ি তোর বিয়ে, বাড়া ভাত খেয়ে | কোন কথাবার্তা নেই, কোন সম্ভাবনা নেই, হঠাৎ কাজ এসে উপস্থিত এবং 'এখনই করতে হবে' এমন অবস্থা; সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত অবস্থায় কাজ করার ডাক। |
উঠন্ত বৃক্ষ পত্রেই চেনা যায় | চারাগাছের পাতা দেখেই বোঝা যায় গাছ কেমন হবে; তেমনি কাজের আরম্ভ দেখেই বুঝা যায় কাজের শেষটা কিরকম হবে। |
উঠন্তিমূলো পত্তনিতেই চেনা যায় | কাজের আরম্ভ দেখেই পরিণাম আন্দাজ করা যায়। |
উঠল বাই তো কটক যাই | চটজলদি সিদ্ধান্ত, বিচার বিবেচনার নাম করে না। |
উঠান ভরা লাউ শশা, ঘরে তার লক্ষ্মীর দশা- খনা | যে চাষীর উঠান লাউ শশায় ভরে থাকে তার কোন অভাব থাকে না। |
উঠোন পেরুলেই অর্ধেক সফর | কাজ শুরু হলেই অর্ধেক কাজ শেষ হয়ে যায়। |
উঠে পড়ে লাগা | সমস্ত বাধা অতিক্রম করে যেমন করেই হোক কোন কাজ সমাধা করার চেষ্টা |
উড়তে পারে না পোষ মানে | অক্ষমের পরনির্ভরশীলতা; নিরুপায় হয়ে কোন কাজ করতে বাধ্য হওয়া। |
উড়তে পারে না ফুরফুর করে | অক্ষমের বাড়াবাড়ি; কাজ করার শক্তি নেই, তবুও কাজ করার ইচ্ছা জাগে। |
উড়কিধানের মুড়কি আর সরুধানের চিঁড়ে | দুইই খেতে সুস্বাদু। |
উড়ে এসে জুড়ে বসা | অযাচিতভাবে (বিনা অধিকারে) হঠাৎ এসে সর্বেসর্বা হয়ে বসা। |
উড়ো খই গোবিন্দায় নমঃ | অলভ্য দ্রব্য সৎকাজে দানের ভান; প্রতিকূল অবস্থায় পড়ে বাধ্য হয়ে কোন সৎকার্য করা। |
উৎপাতের কড়ি চিৎপাতে যায় | অসদুপায়ে অর্জিত অর্থ বাজেভাবে খরচ হয়। |
উৎসবে ব্যসনে চৈব দুর্ভিক্ষে শত্রুনিগ্রহে। রাজদ্বারে শ্মশানে চ যস্তিষ্ঠতি স বান্ধবঃ॥ (চাণক্য) | যে ব্যক্তি উৎসব, বিপদকাল, দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ, বিচারালয় এবং শ্মশানে পাশে উপস্থিত থাকে, সেই প্রকৃত বন্ধু- প্রকৃত বন্ধুর পরিচিতি। |
উত্তমপুরুষ যা খোঁজে নিজের মধ্যে খোঁজে, অধমপুরুষ যা খোঁজে পরের মধ্যে খোঁজে- কনফুসিয়াস | জ্ঞানীলোকেরা আত্মানুসন্ধান করে, সামান্যলোকেরা পরছিদ্রান্বেষী হয়। |
উত্তম মধ্যম দেওয়া | প্রহার করা। |
উত্থায় হৃদি লীয়ন্তে দরিদ্রনাং মনোরথাঃ | দরিদ্রের বাসনা উদয় হয়েই লুপ্ত হয়; অর্থের টানাটানিতে কার্যে পরিণত করা যায় না। |
উত্তিষ্ঠত জাগ্রত প্রাপ্য বরান নিবোধত (উপনিষদ) | ওঠো, জাগো। বরনীয় জ্ঞানীদের কাছে গিয়ে জ্ঞানপ্রাপ্ত হও। |
উদ (জল) খেতে ক্ষুদ নেই নেউলে বাজায় শিঙে | একমুঠো খুদ মুখে দিয়ে জল খাবে এমন সামর্থ নেই অথচ বাঁশি বাজিয়ে বেড়ায়; ঘরে অন্নের সংস্থান নেই বাইরে আস্ফালন; সমতুল্য- 'ভিতরে ছুঁচোর কীর্তন, বাইরে কোঁচার পত্তন'। |
উদবিড়ালে শিকার করে, খটাশ করে তিনভাগ | উদবিড়ালে কষ্ট করে মাছ ধরে; খটাশ এসে তাতে ভাগ বসায়; একের পরিশ্রমের ফল অন্যে এসে ভোগ করে; সমতুল্য- 'কেউ মরে বিল ছেঁচে, কেউ খায় কৈ'। |
উদর চিরলে ক বেরোয় না | মহামূর্খ; সমতুল্য- 'ক অক্ষর গো-মাংস'। |
উদারচরিতানান্তু বসুধৈব কুটুম্বকম | উদারচরিত্রের ব্যক্তির কাছে জগতবাসী সকলেই আত্মীয়। |
উদিতে তু সহস্রাংশৌ ন খদ্যোতো ন চন্দ্রমাঃ | সূর্য উঠলে চন্দ্র জোনাকি ইত্যাদি ম্লান হয়ে যায় এবং তাদের আড় কোন প্রয়োজন লাগে না।। |
উদুখলে (শস্য রাখার পাত্র) ক্ষুদ নাই চাঁটগায়ে বরাত | ঘরে অন্নের সংস্থান নেই, অথচ অন্যলোককে অন্যস্থানে টাকা নেবার দায়িত্ব দেয়; নিতান্ত বাড়াবাড়ি। |
উদে (উদবিড়াল) মাছ ধওরে, খটাশে তিনভাগ করে | একের পরিশ্রমের ফল অন্যে ভোগ করে। |
উদো/উধোর (মূর্খ) বোঝা/ পিণ্ডি বুধোর (পণ্ডিত) ঘাড়ে | নির্দোষব্যক্তির ওপর দোষীব্যক্তির অপরাধ পতিত হওয়া; একের দোষ অন্যের ঘাড়ে; চরম বিশৃঙ্খলা। |
উদ্যমেন হি সিদ্ধান্তি কার্যাণি ন মনোরথৈ। নহি সুপ্তস্য সিংহস্য মুখে প্রবিশন্তি মৃগা॥ চাণক্য | উদ্যোগেই কার্যসিদ্ধি হয়, শুধু মনের ইচ্ছাতে হয় না; ঘুমন্ত সিংহের মুখে হরিণ স্বেচ্ছায় প্রবেশ করে না। |
উদ্যোগিনং পুরুষ্পসিংহমুপতি লক্ষ্মী। দৈবেন দেয়মিতি কাপুরুষা বদন্তি॥ (চাণক্য) | উদ্যোগীপুরুষ লক্ষ্মী লাভ করে; কাপুরুষেরা বলে- ভাগ্য থাকলে পাব। |
উদ্যোগিনং পুরুষ্পসিংহমুপতি লক্ষ্মী দৈবেন দেয়মিতি কাপুরুষা বদন্তি। দৈবং নিহত্য কুরু পৌরুষমাত্মশক্ত্যা যত্নে কৃতে যদি না সিধ্যতে কোহত্র দোষঃ।। (চাণক্য) | লক্ষ্মী উদ্যোগী পুরুষকেই আশ্রয় করে থাকেন; একমার কাপুরুষেরা বলে- ভাগ্যে যা আছে তাই পাবো; সুতরাং স্বীয় শক্তি দ্বারা পৌরুষ প্রকাশ কর; সবিশেষ যত্নেও যদি কার্য সিদ্ধ না হয় তাতে দোষের কি আছে? |
উদ্যোগীর অসাধ্য কিছুই নেই | উদ্যোগী কখনো অসফল হয় না। |
উদ্যোগীর কাছে কোন পথই দূর নয় | উদ্যোগীর কাছে কোন পথই অনতিক্রম্য নয়। |
উনপাঁজুরে বরাখুরে | লক্ষ্মীছাড়া, হতভাগা- গালিবিশেষ; দুশ্চরিত্র অন্নহীনকে এই বলে গালি দেওয়া হয়। |
উনবর্ষয় দু্ন শীত- খনা | বৃষ্টি কম হলে শীত বেশি পড়ে। |
উনভাতে দুন বল, অতি/ভরাভাতে রসাতল | কম খেলে শরীর সুস্থ থাকে, বেশি খেলে শরীর ভারী হয়। |
উন/উনা কলসির দুন/দুনা শব্দ | কলসি একটু ভর্তি হলেই জোরে শব্দ করতে শুরু করে; অল্প শিক্ষিতরা বেশি বিদ্যার জাহির করে; সমতুল্য- 'ফাঁকা কলসি বাজে বেশি'। |
উপকারগৃহীতেন শত্রুণা শত্রুমুদ্ধরেৎ। পাদলগ্নং করস্থেন কণ্টকেনেব কণ্টকম্॥ (চাণক্য) | হাতের কাঁটা দিয়ে যেমন পায়ে কাঁটা তোলা হয়, তেমনি উপকারগ্রহণকারী শত্রু দিয়ে শত্রুনাশ করতে হয়- শত্রু নিধনের উপায়। |
উপকারী গাছের ছাল থাকে না | উপকারী গাছের সবই উপকারী, কিছুই ফেলা যায় না; ওষধি গুণযুক্ত গাছের বাকল সবাই নিয়ে যায় খাওয়ার জন্য; সাধারণত অসুন্দর বস্তু বেশী কাজের হয়; সুতরাং কোন কিছুর বাহ্যিক রূপ দেখে তার গুণ বিচার করা হলে ভুল হতে পারে। |
উপকারীকে বাঘে খায় | উপকৃত উপকারীর বেশি ক্ষতি করে। |
উপকারো জগত্তাতো, বিশ্বস্য জননী দয়া | উপকার জগতের পিতাস্বরূপ; দয়া বিশ্বের জননীস্বরূপা। |
উপদেশ অপেক্ষা উদাহরণ/দৃষ্টান্ত ভাল | নিজে করে অপরকে অনুপ্রাণিত করতে হয়; সমতুল্য- 'আপনি আচরি ধর্ম অপরে শিখায়'। |
উপদেশো হি মূর্খানাং প্রকোপায় না শান্তয়ে | উপদেশ মুর্খকে শান্ত করে না পরন্তু ক্রুদ্ধ করে। |
উপবাসী প্রাণ করে আনচান | খিদের ছটফটানি। |
উপবাসে যাবে দিন ধার করলে হবে ঋণ | অন্নের সংস্থান না থাকলে একদিন কেটে যাবে তবু ধার করা নাই; একবার ঋণের ফাঁদে জড়ালে তার থেকে মুক্তি নেই। |
উপরতলায় গলাগলি, নীচের তলায় হেলাফেলা | স্বার্থের মিলন। |
উপর থেকে পড়ে গেল জন পাঁচ সাত; যার যেখানে ব্যথা, তার সেখানে হাত | যার যেখানে স্বার্থ তার সেখানে নজর; যে পড়েছে সেই জানে জুতা কোথায় চিমটি কাটে। |
উপরটায় চিকন চাকন ভিতরটায় খেড় // উপরে বাবুয়ানা ভিতরে খড়ের বেনা (পোষাক) | ফোঁপরা লোকের দেখনদারি; বাহ্যিক আড়ম্বরপূর্ণ লোকের ভিতরটা শূন্যগর্ভ। |
উপরে মধু অন্তরে বিষ, ত্যজো তারে অহর্ণিশ | মন্দলোকের সঙ্গ সবসময় পরিত্যজ্য। |
উপরোধে ঢেঁকি গেলা | অনুরোধ ঠেলতে না পেরে অনিচ্ছা সত্বেও দুঃসাধ্য কাজ করতে যাওয়া। |
উপস্থিত অন্ন ত্যাগ করতে নেই | অন্যত্র খাওয়ার আশায় প্রস্তুত খাদ্য ত্যাগ করলে সেদিন অদৃষ্টে খাদ্য নাও জুটতে পারে; সমতুল্য- 'হাতের এক পাখি বনের দুই পাখির সমান'; 'হাতের পাখি ছাড়তে নেই'। |
উপায়ং চিন্তয়েৎ প্রাজ্ঞঃ অপায়মপি চিন্তয়েৎ | প্রাজ্ঞব্যক্তি উপায় চিন্তা করেন; বাধাবিঘ্ন নিয়েও চিন্তা করেন। |
উপায়জ্ঞের কাছে দুঃসাধ্য কাজও সহজসাধ্য মনে হয়- (চাণক্য) | উপায়জ্ঞ সমাধানের সহজ পথ খুঁজে পায়। |
উপোস করলেই ধর্ম হয় না | আচারসর্বস্বতার অসারতার প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি। |
উপোসে কেউ নয়, পারণের গোঁসাই১ | আনাহারে বেঁচে থাকতে কেউ দেখে না শ্রাদ্ধে এসে হাজির। |
উপোসে কেউ নয়, পারণের গোঁসাই২ | কষ্টের সময় কেউ আসে না, ফলভোগের সময় সবাই হাজির। |
উভয়প্রান্তে মোমবাতি জ্বালানো১ | অতিরিক্ত পরিশ্রম বা শক্তিক্ষয় করা |
উভয়প্রান্তে মোমবাতি জ্বালানো২ | অর্থের অপব্যয় করা; সমতুল্য- দিনের বেলায় মোমবাতি জ্বালানো |
উরুৎ বেয়ে রক্ত ঝরে চোখ গেলোরে বাবা১ | সম্পর্কবিহীন দুই কাজ |
উরুৎ বেয়ে রক্ত ঝরে চোখ গেলোরে বাবা২ | দুটি বাক্যের মধ্যে কোন সম্বন্ধ নেই, যেমন 'এখান থেকে মারলাম তীর; তীর লাগল কলাগাছে; চোখ গেলোরে বাবা'। |
উলুখাগড়ার প্রাণ যায় | সাধারণ মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত |
উলুবনে মুক্তা ছড়ানো১ | উলুঘাসে মুক্তা ছড়ালে কেউ তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে না; তেমনি অযোগ্যের হাতে মুল্যবান দ্রব্য দেওয়া বৃথা; সমতুল্য- 'অরসিকেষু রসস্য নিবেদনম', 'বানরের গলায় মুক্তাহার'। |
উলুবনে মুক্তা ছড়ানো২ | যে আদর করতে জানে না বা মূল্য বোঝে না তার কাছে কোন বিষয়ের উপস্থাপন করা। |
উলুবনে সাঁতার দেওয়া | আহাম্মকের কাজ; কথিত আছে- এক আহাম্মক জ্যোৎস্না রাতে উলুবনকে পুকুর ভেবে সাঁতার দিতে গিয়েছিল। |
উলোর মেয়ের কুলুজী, অগ্রদ্বীপের খোঁপা; শান্তিপুরের হাত নাড়া, গুপ্তিপাড়ার চোপা | উপরের চারটি বিষয়ের জন্য চার অঞ্চলের স্ত্রীলোকের প্রসিদ্ধি ছিল। |
উলটা বুঝলি রাম | ভালকথার বা সদুপদেশের মন্দ ব্যাখ্যা করা। |
উল্টা চোরা কোতয়ালকে ডাঁটে- হিন্দি প্রবাদ | দোষ করেও চোর কোতয়ালকে চোখ রাঙায়; সমতুল্য- 'চোরের মায়র বড় গলা'। |
উল্টে চোরা মশান গায়১ | নির্দোষ বলে গলা ফাটায়। |
উল্টে চোরা মশান গায়২ | অপরাধ স্বীকার করা তো দূরের কথা, চোরে ধর্মকাহিনী শোনাতে ব্যস্ত (মশান =শ্রীমন্তের মশান পালা)। |
উষ্ণো দহতি চাঙ্গারঃ শীতঃ কৃষ্ণায়তে | কয়লা উষ্ণ থাকলে হাত পোড়ায়, শীতল থাকলে হাত ময়লা করে; ভাবার্থ- নীচব্যক্তি শত্রু হলে অনিষ্ট করে, মিত্র হলে লোকনিন্দা হয়। |
উসকো মাটিতে বিড়াল হাগে | দুর্বলের উপর সবলে আধিপত্য ফলায়। |
ঊ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঊনো পাঁজুরে বরাখুরে | হতভাগ্য, অলুক্ষণে বলে গালি। |
ঊনো বর্ষা দুনো শীত- খনা | বৃষ্টি কমে হলে শীত বেশি পড়ে। |
ঊনো ভাতে দুনো বল, অতি ভাতে রসাতল | পরিমিত আহারে স্বাস্থ্য রক্ষা হয়, অপরিমিত আহারে স্বাস্থ্য নষ্ট হয়। |
ঊরুৎ বেয়ে রক্ত পড়ে, চোখ গেলোরে বাবা | একের সাথে অন্যের কোন সম্পর্ক নেই; অর্থহীন প্রলাপ। |
ঋ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঋণকর্তা পিতা শত্রুর্মাতা চ ব্যভিচারিণী। ভার্যা রূপবতী শত্রুঃ পুত্র শত্রুরপণ্ডিতঃ॥ (চাণক্য) | ঋণগ্রহীতা পিতা, দুশ্চরিত্রা মাতা, অতিরূপবতী স্ত্রী এবং মূর্খ পুত্র শত্রু রূপে বিবেচিত হয়ে থাকে। |
ঋণশেষোহগ্নিশেষশ্চ ব্যাধিশেষস্তথৈব চ। পুনশ্চ বর্দ্ধতে যস্মাৎ তস্মাচ্ছেষং ন কারয়েৎ॥(চাণক্য) | ঋণ, অগ্নি ও ব্যাধির শেষ রাখতে নেই; এগুলি শেষ না হলে বৃদ্ধি পায়। |
ঋণং কৃত্বা ধৃতং পিবেৎ (চার্বাক) | ক্ষণস্থায়ী জীবন দুদিন বইত নয়; সুতরাং যত পারো সুখ ভোগ করে নাও। |
ঋদ্ধিশ্চিত্তবিকারিণী | সম্পদ চিত্তে বিকার আনয়ন করে। |
এ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
এঁচোড়ে পাকিলে অচিরেই গোল্লায় যায় | ছেলেবেলায় উচ্ছন্নে বা জেঠিয়ে গেলে তার আর উন্নতি হয় না। |
এঁটে ধরলে চিঁচিঁ করে, ছেড়ে দিলে লম্ফ/লঙ্কা মারে | ভীরুলোক কড়া হাতে বা কায়দায় পড়লে জব্দ থাকে, ঢিলে দিলে লম্ফঝম্ফ বা মহা আস্ফালন করে। |
এঁটো খায় মিঠার লোভে, যদি এঁটো মিঠা লাগে | লাভের গন্ধ থাকলে মানুষ নীচু কাজ করতেও পিছুপা হয় না। |
এঁটোপাত না যায় স্বর্গে | নীচু কখনো উঁচুপদ পায় না; পরমুখাপেক্ষীর সমৃদ্ধি সম্ভব হয় না। |
এঁড়ে গরু না টেনে দো | যা সম্ভব নয় তাই করতে যাওয়া; সমতুল্য- 'চাউল নাই তবে ভাতে ভাত রাঁধো'। |
এঁড়ে গরুর দুধ | অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না; সমতুল্য- অশ্বডিম্ব, আঁটকুড়ের ব্যাটা, আকাশকুসুম, কাঁঠালের আমসস্ত্ব, ঘোড়ার ডিম, পশ্চিমে সূর্যোদয়, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি। |
এঁদো (পানাপচা) পুকুরে ডুবে মরা | বিরাট কাজ করে সামান্য ভুল করা। |
এ কী ছেলে হাতের পিঠে/মোয়া | পাকা লোককে ভোলানো সহজ নয়। |
এ কী মোর জ্বালা, মেয়ে চামকাঠ ডালা, কানে দুটো ঘুরুঘুরে গলায় মোতির মালা | মেয়ে দেখতে কুৎসিত, তায় আবার কানে ঘুরঘুরে পোকার মত দুল এবং গালায় মোতির মালা পরে দেহের শোভাবর্ধন করেছে; কোন অসহনীয় বিষয়সম্পর্কে প্রযোজ্য। |
এ কেবল দিনে রাত্রে জল ঢেলে ফুটা পাত্রে. বৃথা চেষ্টা তৃষ্ণা মিটাবারে- রবীন্দ্রনাথ১ | মানুষের বাসনাকামনার শেষ নেই; একটার পরিতৃপ্তি অন্য বাসনা ডেকে আনে। |
এ কেবল দিনে রাত্রে জল ঢেলে ফুটা পাত্রে. বৃথা চেষ্টা তৃষ্ণা মিটাবারে- রবীন্দ্রনাথ২ | নিস্ফল বা বৃথা প্রচেষ্টা; সমতুল্য- অন্ধকারে ঢিল/ঢেলা ছোঁড়া/মারা // অন্ধকারে লাউ কোটা। |
এ গিরগিটি নয়, সাক্ষাৎ মা মনসা | তীব্রশক্তির ক্ষেত্রে প্রযুক্তল ভয়াঙ্ক ক্ষতি হতে পারে। |
এ তো সবে কলির সন্ধ্যে | অধঃপতনের সবে শুরু; ভয়াবহ সঙ্কটের সূচনামাত্র। |
এ যদি গোরাচাঁদ হয়, তবে কালাচাঁদ কেমন? | বলার সাথে কাজের কোন মিল নেই। |
এ যে ঘোর কলি | প্রচণ্ড অন্যায়ল সহ্যের বাইরে। |
এই ডুমুরের গরব কর; পাকলে ডুমুর পড়ে মর | সুন্দর ডুমুর পাকলে ঝরে পড়ে; সুতরাং সৌন্দর্যের জন্য গর্ব করা বৃথা। |
এই দৃঢ় বিশ্বাস মনে রেখো, জীবিত বা মৃত, ভাললোকের কোন ক্ষতি হয় না (উপনিষদ) | সৎপথে থাকলে ক্ষতির কোন সম্ভাবনা নেই। |
এই বিড়াল বনে গেলে বনবিড়াল হয় | অবস্থান্তর ঘটলে স্বভাবেও পরিবর্তন আসে; যে যায় লঙ্কায় ষে হয় রাবণ। |
এই মানুষ বনে গেলে বনমানুষ হয় | দুষ্টচক্রে পড়লে সৎমানুষও অসৎমানুষে পরিণত হয় |
এক অগ্রানে ধান তিন শ্রাবণে পান- খনা | এক অগ্রানেই ধান পাওয়া যায়, কিন্তু তিন শ্রাবণের কম পান চাষ ঠিক হওয় নয়া (ধান ও পান চাষ পদ্ধতি) |
এক অনার/আনার সৌ বীমার- হিন্দি প্রবাদ | বস্তু একটি, কিন্তু পাওয়ার জন্য দাবীদার অনেক; একটা বিষয়য় নিয়ে সকলের মধ্যে কাড়াকাড়ি। |
এক আঁচড়ে চেনা যায় | কৃপণলোক গায়ে তেল মাখে না; এক আঁচড়েই তার গায়ে খড়ি ফোটে; সামান্য পরীক্ষা করে মানুষ চেনা যায়; সামান্য চিহ্নের ব্যক্তি ও বস্তুর গুণাগুণ বোঝা যায়। |
এক আকাশে দুই সূর্য | দুই প্রবলশক্তির পাশাপাশি থাকা, যা সম্ভব নয়; সমতুল্য- 'এক খাপে দুই তরোয়াল', 'একবনে দুই বাঘ' ইত্যাদি। |
এক আঙটা বিকল তো সমস্ত শিকল বিকল | মানুষের দুর্বলতম স্থানের প্রতি ইঙ্গিত। |
এক আঙুলে তুড়ি লাগে না | দ্বন্দ্বে দু’পক্ষ অবশ্যই থাকা প্রয়োজন |
একই সাথে মনোহর ও হিতকারী বাক্য দুর্লভ | সত্যকথা সর্বদা অপ্রিয় হয়; হিতং মনোহারি চ দুর্লভং বচঃ। |
এক ওয়াকিফহাল সাত নবিসিন্দা- হিন্দি প্রবাদ | একজন পারদর্শী সাতজন শিক্ষানবিশীর সমান; সাতজন শিক্ষানবিশী যা করতে পারে একজন বিশেষজ্ঞ তাই করতে পারে। |
এক ঔর এক গ্যারহ হতে হৈঁ- হিন্দি প্রবাদ | সংগঠনে শক্তি বাড়ে; সকলে মিলে কাজ করলে কাজ সহজ হয়; সমতুল্য- 'একতাই বল'। |
এক কড়া বুদ্ধি নেই চার কড়ার মেজাজ | অবোধের হম্বিতম্বি বেশি। |
এক কড়ার মুরোদ নেই কিল/ভাত মারার গোঁসাই | দুর্বলতা লুকোতে অক্ষমের দুর্ব্যবহার। |
এক কলসী দুধে একফোঁটা চোনা | একদোষে সবগুণ নষ্ট; এমন উৎকট মন্দ জিনিষ যার অত্যল্প পরিমাণ প্রচুর ভালো জিনিষ নষ্ট করে; সর্বাংশে ভাল কাজ করে ছোট্ট একটা দোষে বদনাম কেনা বা সব সুনাম নষ্ট; শেষরক্ষা না হওয়া। |
এক কাটে ভারে, আরেক কাটে ধারে১ | কোন কিছু কাটতে অস্ত্রের ধার ও ধার দুই লাগে; তেমনি শক্তি ও বুদ্ধির সমন্বয়ে কার্যসিদ্ধি হয়। |
এক কাটে ভারে, আরেক কাটে ধারে২ | পয়সার ভার থাকলে মানুষ বাধ্য হয় নতুবা বুদ্ধির ধার থাকলে মানুষ বিনয়াবনত হয়। উভয়ই না থাকলে কেউ বাধ্য হয় না। |
এক কাঠি বাজে না | নিজের সাথে দ্বন্দ্ব হয় না; দ্বন্দ্বে দুইপক্ষ লাগে। |
এক কান কাটা বাজার/রাস্তা/সহরের ধার দিয়ে যায়, দুকান কাটা বাজার/রাস্তা/সহরের মাঝদিয়ে যায় | অল্প-বেহায়ার কিছু লজ্জাবোধ থাকে; নির্লজ্জ-বেহায়া নিজেকে বেশি জাহির করে আনন্দ পায়; পূর্ণমাত্রার বেহায়ার লজ্জাশরম নেই। |
এক কানা আরেক কানাকে পথ দেখালে দুজনেই খানায় পড়ে | দুজনেই বিচারে অক্ষম; সবক্ষেত্রে এক এক মিলে দুই হয় না। |
এক কানে শোনে অন্য কানে বেড়োয়১ | কাজে একান্ত অমনোযোগী। |
এক কানে শোনে অন্য কানে বেড়োয়১ | কোন সদুপদেশ গ্রহণ করে না, এমন ব্যক্তি। |
এক কাল ঠেকেছে তিন কাল গিয়ে | অতিবৃদ্ধ লোক। |
এক কিলো জিনিসে পাঁচ কিলো ঠকায় | মাত্রাহীন/লাগামছাড়া চুরি। |
এক কূল ভাঙে তো এক কূল গড়ে | সংসারে শুধু ভাঙা গড়ার খেলা চলে। |
এক কেঁড়ে দুধে এক ছিঁটে চোনা | একটু দোষে সব কাজ পণ্ড। |
এককে আর দেখবে বেগার | বেগার ধরে কাজ করালে কাজ প্রায় ঠিক হয় না; এককে আর হয়ে যায়। |
এক কোপে বটগাছকে ফেলা যায় না | বৃহৎকে সহজে কাবু করা যায় না। |
এক ক্ষুরে মাথা কামানো | একরকম অপরাধে অপরাধী; একগোত্রের লোক; সকলের এক দশা। |
এক খাপে দুই তরোয়াল // একস্থানে দুই তরোয়াল- হিন্দি প্রবাদ | দুই প্রবলশক্তি পাশাপাশি থাকে না; সমতুল্য- 'এক আকাশে দুই সূর্য', 'এক বনে দুই বাঘ' ইত্যাদি। |
এক খায়, এক থিতায় | একটা খায়,সঙ্গে পরেরটা কি খাবে ভাবে; বর্তমানে খায় সঙ্গে ভবিষৎ খাবারের সংস্থান করে; অভিষ্টবস্তু পাওয়ার সঙ্গে পুনরায় সেটি পাওয়ার জন্য সচেষ্ট হয়। |
এক খাল কেটে অন্য খাল ভরায় | চূড়ান্ত ধান্ধাবাজী। |
এক গাঁয়ে ঢেঁকি পড়ে, অন্য গাঁয়ে মাথা ধরে | যার সাথে কোন সম্পর্ক নেই, তার জন্য মাথাব্যথা; অনধিকার চর্চা করা। |
এক গাঁয়ের কুকুর অন্যগাঁয়ে ঠাকুর | স্থানান্তরে নিজ পরিচয় লুকিয়ে সাধু সাজা যায়; সমতুল্য- অতিচেনার কদর নেই |
এক গাছের ছাল অন্য গাছে জোড়া লাগে না১ | সমধর্মী না হলে মিল হয় না; |
এক গাছের ছাল অন্য গাছে জোড়া লাগে না২ | পর কখনো আপন হয় না। |
এক গালে চূণ অন্য গালে কালি মাখানো/লাগানো | চরম অপমান করা। |
এক গুরলে/গুলতিতে দুই পাখি মারা // এক গোলি দো চিড়িয়া- হিন্দি প্রবাদ | এক চেষ্টায় দুই কাজ সম্পন্ন করা; এক কাজ করার উপলক্ষে অন্য কাজ করা; সমতুল্য- 'রথ দেখা কলা বেচা'। |
এক গোয়ালে বিয়াইছে গাই সেই রিস্তায় চাচাতো ভাই | গোঁজামিল দিয়ে সম্পর্ক দেখানোর অপচেষ্টা। |
এক চন্দ্রই যে অন্ধকার দূর করে, সকল তারা মিলেও তা পারে না | হাজার নির্গুণে সমাবেশে এক গুণীর সৃষ্টি হয় না। |
এক চন্দ্রে জগৎ আলো | একাই একশ। |
এক চাকাতে রথ চলে না | নিজের সাথে বিবাদ হয় না; বিবাদে দুপক্ষ থাকে। |
এক চির পান দুই চির হল সোনার সিংহাসনে ভাগ বসিল | সপত্নী আসাতে স্বামী বিভক্ত হওয়ায় প্রথমা স্ত্রীর প্রভুত্ব ক্ষুণ্ণ হল এবং সেইজন্য তার খেদোক্তি। |
এক চুল ক্ষতি করতে না পারা | কোন ক্ষতি করতে না পারা। |
এক চোখে কাঁদা, অন্য চোখে হাসা // একচোখে কান্না, এক চোখে হাসি১ | অবিমিশ্র সুখ হয় না; সুখ-দুঃখ মিলিয়ে সংসার; একই সঙ্গে সুসংবাদ ও দুঃসংবাদ এলে এমন মনের অবস্থা হয়। |
এক চোখে কাঁদা, অন্য চোখে হাসা // একচোখে কান্না, এক চোখে হাসি২ | কপটচারিতা- কপটচারী লোক পরের দুঃখে লোক দেখানোর জন্য কাঁদে কিন্তু মনে মনে হাসে। |
একচোখো মাসি কারে ভালোবাসি | মা ও মাসি সমান হতে পারে না। |
এক ছাতার তলে বাস | এক স্বভাবের লোক; সমদোষে দুষ্ট; সবাই মন্দলোক; সবারই একই দশা। |
এক ছেলে তার ফুলের শয্যে, পাঁচ ছেলে তার কাঁটার শয্যে | একছেলে সবসময় আদর যত্ন পায়; পাঁচছেলে হলে কারো ভাগ্যে আদরযত্ন জোটে না। |
এক ছেলে যার হাজার মানত তার | মা-বাবা অজানা আশঙ্কায় সবসময় ভীত থাকে। |
এক জঙ্গলে দুই বাঘ থাকে না | দুই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী পাশাপাশি থাকে না। |
একজন ঘুমন্ত মানুষ আরেকজন ঘুমন্ত মানুষকে জাগাতে পারে না | নির্গুণের ছোঁয়ায় কেউ গুণী হয় না। |
একজন বন্ধুর চেয়ে একজন শত্রু থাকা ভালো | সেক্ষেত্রে নিজের দোষ জানতে পারা যায়। |
একজন বন্ধুলাভ দশজন বন্ধুহারানোর সমানই | কোন প্রাপ্তিযোগই হারাতে নেই। |
একজন মা বুঝতে পারে একজন শিশু যে কথা বলে না- ইহুদী প্রবাদ | মাতৃহৃদয়ের তুলনা হয় না; একমাত্র মাই বোঝে শিশুমনের কথা। |
একজন মানুষ যা করতে পারে তার বেশি সে পারে না | সাধ্যের বেশি কেউ করতে পারে না, করার চেষ্টা করাও উচিত নয়। |
একজন শত্রুর স্মিতহাসি থেকে একজন বন্ধুর ভ্রুকুটি ভাল | সেক্ষেত্রে ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকে। |
একজনকে বন্ধু করার আগে তার সাথে এক যোজন পথ হাঁটো | হাত বাড়ালেই প্রকৃত বন্ধু মেলে না; বন্ধু চিনতে সময় লাগে। |
একজনের কাছে অমৃত অন্যজনের কাছে বিষ | সব জিনিষ সবার কাছে সমান বা উপযোগী নয়। |
এক জায়গায় থাকলে হাঁড়িতে হাঁড়িতে ঠোকাঠুকি হয় | যত কষাকষি তত লাঠালাঠি; অন্তরঙ্গতায় মন কষাকষির সম্ভাবনা থেকে যায়। |
এক ঝিকরে/টানেতে মাছ গাঁথে না এ কেমন বঁড়শি, এক ডাকেতে সাড়া দেয় না সে কেমন পড়শি? | বঁড়শি ও পড়শির উপকারে আসা উচিৎ ছিল; গুণের না হ'লে কোন কাজের হয় না। |
এক টাকা সঞ্চয়ের অর্থ এক টাকা আয় // এক পয়সা জমানো মানে এক পয়সা রোজগার করা | অর্থের অপচয় সমর্থনযোগ্য নয়। |
একটা/টি কড়িকাঠ যত বড়ই হোক-না-কেন সমগ্র বাড়ীর ভার বইতে পারে না- চীনা প্রবাদ | একার শক্তি কোন শক্তি নয়; এক পায়ে খাড়া থাকা যায় না। |
একটা/টি ছোট্ট ছিদ্রও বিরাট জাহাজকে ডোবাতে পারে | একটি ছোট ভুল বিরাট ক্ষতি করতে পারে। |
একটা/টি ছোট্ট তিন-ইঞ্চির জিভ সাত-ফুটের একজন দশাসই ব্যক্তিকেও ধরাশায়ী করতে পারে (চীনা প্রবাদ) | রসনা সংযত রাখার পক্ষে চেতাবনি। |
একটা/টি দিয়াশলাই কাঠি খাণ্ডবানল সৃষ্টি করতে পারে | কোন তুচ্চ বিষয় তুচ্চ নাও হতে পারে। |
একটা/টি দোষ বহু গুণকে গ্রাস করে | দোষের প্রতিক্রিয়াশক্তি বহুগুণ বেশি। |
একটা/টি পতন তোমাকে জ্ঞনীমানুষ করে তোলে- চীনা প্রবাদ | পতন থেকে মানুষ শিক্ষা নেয়। |
একটা/টি পদক্ষেপে হাজার মাইলের যাত্রা শুরু হয়- চীনা প্রবাদ | সব বিশালের শুরু সামান্য দিয়েই শুরু হয়। |
একটা/টি পয়সা সঞ্চয় হলে একটি পয়সা অর্জিত হয় | সঞ্চয় অর্থোপার্জনের মতই সমান গুরুত্বপূর্ণ। |
একটা/টি বই যেন একটি আস্ত ফুলের বাগান- চীনা প্রবাদ | বই পড়ে রূপ রস গন্ধ- সব আহরণ করা যায়। |
একটা সুতা তার সবচেয়ে পাতলা জায়গাতে ছিঁড়ে- ইংরাজী প্রবাদ | অকর্মণ্য কর্মচারীদের জন্য প্রতিষ্টান ধ্বংস হয়; সমতুল্য- 'একটি শিকল তার দুর্বল আংটাটার মতই সমান শক্তিশালী'। |
একটি আজকাল দুটি আগামীকালের সমান | আজ নিশ্চিত কাল অনিশ্চিত; অনিশিচতের পিছনে ছুটতে নেই; সমতুল্য- 'হাতের একটা পাখি বনের দুটি পাখির সমান' । |
একটি বদরোগ ভাল করা যায়, একটি বদনাম ঘুচানো যায় না | বদরোগের কোন দোষ/কলঙ্ক নেই, বদনামে দোষ/কলঙ্ক মিশে থাকে। |
একটি বনাঞ্চল গড়তে দশবছর সময় লাগে, একটি মানুষ গড়তে একশবছর সময় লাগে | মানুষের অনুশীলন অনেক সময়সাপেক্ষ। |
একটি ভাত টিপলে, হাঁড়িসুদ্ধ ভাতের খবর মেলে | সবাই এক গুণসম্পন্ন হয়। |
একটি ভাল বই একজন ভাল বন্ধু | ভাল বই বন্ধুর মত ভাল পরামর্শদাতা হয়। |
একটি মিথ্যা ঢাকতে দশটা মিথ্যা কথা বলতে হয় | মিথ্যাকে সত্য প্রতিপন্ন করতে অনেক কথা বলতে হয়। |
একটি মূলার জন্য একটা গর্ত (চীনা প্রবাদ) | যে যার নিজের কাজ কর; অন্য অর্থে- কেউ অপরিহার্য নয়। |
একটি শিকল তার দুর্বল আংটাটার সমান শক্তিশালী // এক আংটা বিকল তো সমস্ত শিকলটাই বিকল- ইংরাজী প্রবাদ | অংশ বাদ দিয়ে সমগ্র হয় না; দলের সাফল্য তার প্রতি সদস্যের সাফল্যের উপর নির্ভর করে; সমতুল্য- 'একটি সুতা তার সবচেয়ে পাতলা জায়গাতে ছিঁড়ে'। |
একটি সুন্দর শুরু কাজের অর্ধেক সাফল্য এনে দেয় | পরিকল্পনা সঠিক হলে কাজের অর্ধেক শুরুতেই শেষ। |
একটু জানা/শেখা বিপজ্জনক ব্যাপার | অর্ধ-জ্ঞানী বিশেষজ্ঞ সেজে ভুল তথ্য জানায়। |
একটু হাসি দশবছর আয়ু বাড়িয়ে দিতে পারে // একটু হাসি দশবছর বয়স কমিয়ে দিতে পারে- চীনা প্রবাদ | বাঁচতে হ'লে হাসতে শেখো; হাসির মত ওষুধ হয় না। |
একটু হাসি লক্ষ দুশ্চিন্তা মুছে দিতে পারে। | হাসি নির্মল আনন্দের উৎস। |
এক ডালে দুই পাখি, গা্য়েগায়ে মাখামাখি | মনের মিল থাকলে পাশাপাশি বাস করা যায়। |
এক ঢিলে দুই পাখি মারা | এক গুলতিতে দুই পাখি মারার অনুরূপ। |
একতাই বল | সমষ্টির শক্তিই আসল শক্তি। |
এক তালুকে দুই ভালুক থাকে না | তুলনীয়- এক জঙ্গলে দুই বাঘ থাকে না। |
একতায় উত্থান, বিভেদে পতন | সংঘবদ্ধতার শক্তি অসীম। |
এক দিকে ছুঁচ গলে না, অন্য দিকে হাতি গলে | ছোটখাটো বিষয়ের দিকে আমরা বেশি নজর দিই। |
একদিন শয়তান তো চিরদিন শয়তান | চোর কখনো সাধু হয় না। |
একদুয়ার বন্ধ তো হাজারদুয়ার খোলা | ভিক্ষুকের প্রতি বক্রোক্তি। |
এক দেখে শেখা আরেক ঠেকে শেখা | নানাভাবে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়। |
এক দোষে সব গুণ ক্ষয় হয় | ছোট্ট একটা বদনাম সব সুনাম নষ্ট করে দেয়। |
এক পন্থ দো কাজ- হিন্দি প্রবাদ | এক উপায়ে দুই কাজ করা; দ্বিগুণ লাভ; সমতুল্য- 'এক ঢিলে দুই পাখি মারা'; 'রথ দেখা কলা বেচা'। |
এক পয়সা জমানো মানে এক পয়সা রোজগার | স্বল্পসঞ্চয় থেকে একদিন বিরাট অর্থে পরিণত হয় |
এক পয়সা নেই থলিতে, লাফিয়ে বেড়ায় গলিতে | ভিতরে টানাটানি বাইরে ফুটানি। |
এক পাঁঠা তিনবার কাটা | ধান্ধাবাজী করে এবং ধান্ধাবাজী ধরা পড়ে; একটা জমি তিনবার তিনজনকে বিক্রি করার ধান্ধা বা একটা বই লিখে একাধিক লোককে উৎসর্গ করা; সমতুল্য- 'একটা মুরগী সাতবার জবাই'। |
এক পা জলে এক পা স্থলে১ | দ্বিধা-দ্বন্দ্বে মনস্থির করতে অপারগ; সমতুল্য- 'কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা'। |
এক পা জলে এক পা স্থলে২ | দুকুল রাখার চেষ্টা; দুটি পরস্পরবিরোধী কাজ একইসাথে সম্পন্ন করার প্রয়াস; সমতুল্য- 'দু নৌকায় পা'। |
এক পাগলে রক্ষা নেই সাত-পাগলের মেলা | চরম বিশৃঙ্খলা; একটা সমস্যাতেই জর্জরিত, সেখানে একাধিক সমস্যা এসে উপস্থিত। |
এক পায়ে খাড়া | উদগ্রীব, এখনি রাজী। |
এক পালকের পাখি এক যায়গায় ভিড় করে | সংঘবদ্ধ হওয়া প্রকৃতির স্বাভাবিক ধর্ম। |
এক পুতের আশ/আশা, নদীর তীরে বাস/বাসা // এক পুতের আশ, নদীর তীরে বাস, ভাবনা বারোমাস | এক ছেলের বাবামা সবসময় অপুত্রক হওয়ার আশঙ্কায় ভোগে। |
এক ফুলে মালা হয় না | বিরাট কাজে যৌথ উদ্যোগ চাই। |
এক ফোঁটা শিশিরেও বন্যা হতে পারে, যদি গর্তটা পিঁপড়ের হয় (ফারসী প্রবাদ) | সব কিছুই আপেক্ষিক। |
এক বনে দুই বাঘ থাকে না | দুই প্রবলশক্তি পাশাপাশি থাকে না; সমতুল্য- 'এক আকাশে দুই সূর্য থাকেনা', 'এক খাপে দুই তরোয়াল থাকে না' ইত্যাদি। |
একবরের মাগ চিংড়ীমাছে খোসা, দোজবরের মাগ নিত্য করে গোঁসা // একবরের স্ত্রী হেলফেলা, দোজবরের স্ত্রী গলায় মালা | দ্বিতীয়পক্ষের স্ত্রী তুলনায় স্বামীর বেশি আদরণীয়া হয়। |
এক বাক্সে সব ডিম রাখা ঠিক নয় | গেলে সব একসাথে যাবে। |
একবার করার আগে দু'বার ভাবো | বুদ্ধিমান এক পা চলার পর একটু থামে। |
একবার দংশন দুইবার কুণ্ঠা | অভিজ্ঞতা সতর্ক হতে শিক্ষা দেয়; সমতুল্য- 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়', 'গরম জলে ছ্যাঁকা খাওয়া কুকুর জল দেখলে ভয় পায় ইত্যাদি। |
একবার না পারিলে দেখ শতবার | কার্যসিদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত থামতে নেই। |
একবার রোগী তো একবার রোজা (বৈদ্য) | অভিজ্ঞতা থাকলে প্রতিকার করা যায়; ভূক্তভোগী পরেরবারের জন্য সতর্ক; অন্য অর্থে- আজ সে সাহায্যপ্রার্থী হলেও কাল সে সাহায্যকর্তা হ'তে পারে। |
একবৃক্ষে যদা রাত্রৌ নানা পক্ষীসমাগম। প্রভাবতে তু দিশো যান্তি কা কস্য পরিবেদনা।। (চাণক্য) | রাত্রিকালে বাসের জন্য নানা পক্ষী এসে সমবেত হয়; প্রভাতসমাগমে তারা নানাদিকে চলে যায়; সুতরাং কার জন্য কি বেদনা? |
এক ব্যঞ্জন ভাত, তাও আবার নুনে পোড়া/বিষ | কষ্টের ওপর কষ্ট; একমাত্র ছেলের দুশ্চরিত্রের হলে মা-বাবার কষ্টের সীমা হাকে না। |
এক ভস্ম আরেক ছার(ক্ষার=ছাই), দোষগুণ কব কার | কে কারে দোষে, দুইই সমান অপদার্থ, দুই সমান অপরাধী। |
এক মন হলে সমুদ্র শুকায় | সবাই একসাথে কাজ করলে অসাধ্যসাধন করা যায়। |
এক মাঘে শীত যায় না | বিপদাপদ শুধু একবারই আসে- এমন ধারণা ভুল। |
এক মাণিক (বড় রত্ন) সাত রাজার ধন | পরমপ্রিয় পুত্র। |
একমাত্র বিজ্ঞতম এবং মহামূর্খরাই পরিবর্তিত হয় না- কনফুসিয়াস | উভয়ই নিজের ধারণা সম্পর্কে গোঁড়া হয়। |
একমাত্র মৃত্যুই সকলকে সমান করে | মড়ার কোন জাতবিচার হয় না। |
এক মায়ের পুত, খায় দায় যেন যমের দূত | অত্যধিক আদর পেয়ে দুর্দমনীয়, দুর্বিনীত ছেলে। |
এক মিথ্যা হাজার মিথ্যার জন্ম দেয় | এক মিথ্যা চাপতে হাজার মিথ্যা কথা বলতে হয়। |
এক মুখ সোনা দিয়ে ভরা যায়, তিন মুখ ছাই দিয়েও ভরে না | একজনকে সন্তুষ্ট করা যার সবাইকে পারা যায় না। |
এক মুখে দুই/তিন কথা শুনে মনে/প্রাণে লাগে ব্যথা | নীতিহীনতা পীড়াদায়ক; যে কথা দেয় কিন্তু কথা রাখে না বা অস্বীকার করে তাকে কেউ পছন্দ করে না; কথার হেরফের সত্যিই বেদনাদায়ক। |
এক মুরগি কবার জবাই/ এক মুরগি সাতবার জবাই | চুড়ান্ত ধান্ধাবাজী; একটা জমি বিক্রি করার নামে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে আগাম নেওয়ার মত ধান্ধাবাজী ধরা পড়ে; সমতুল্য- এক পাঁঠা তিনবার কাটা |
একমেবাদ্বিতীয়ম | ঈশ্বর এক, দ্বিতীয় ঈশ্বর নেই। |
এক যাত্রায় পৃথক ফল | অভিন্ন কাজের একজন পুরস্কৃত তো অন্যজন তিরস্কৃত। |
এক রত্তি দড়ি সকল ঘর বেড়ি | সামান্য সলতেতে প্রদীপ জ্বাললে সারা ঘর আলোকিত হয়; সামান্য ক্ষমতায়/সম্পদে সব সমস্যা মেটানোর চেষ্টা। |
একরত্তি সোনা, স্যাঁকরা হাজার জনা | অল্পবিষয়ের বহু প্রার্থী |
এক লাউয়ের বিচি কেউ করছে কচরকচর, কেউবা আছে কচি | এক পিতামাতার পাঁচটা ছেলে পাঁচরকম প্রকৃতির হয়। |
একলা ঘরের গিন্নী চাবীকাটি ঝুলিয়ে নাইতে যাব | প্রতিটি নারীর সুপ্তবাসনা থাকে- ঘরের প্রভুত্ব করবো। |
একলা চলা চলা নয় | সবাই মিলে না চললে মানসিক অবসাদ আসতে পারে। |
এক লাঠিতে সাত সাপ মারি | এক কৌশলে বহুকাজ হাসিল করার চেষ্টা। |
এক লাফেই তালগাছে ওঠা যায় না | সব কিছুতেই আয়াস লাগে, সময় লাগে। |
একলা মানুষ, মানুষ নয় | মানুষ সামাজিক জীব, একলা থাকতে পারে না বা ভালবাসে না। |
এক সুপুত্রে বংশ ধন্য | সু-এর তুলনা হয় না। |
এক হাজার পদক্ষেপ নিয়ে এক মাইলের যাত্রা শুরু- চীনা প্রবাদ | প্রতিটি বিশাল কাজের একটি ছোট্ট শুরু থাকে। |
এক হাটে কিনে অন্যহাটে বেচা | বুদ্ধিমান, লাভের উদ্যোগ। |
এক হাত নড়ে না দুই হাত নড়ে | দুপক্ষ না হলে বিবাদ হয় না। |
এক হাত পায় এক হাত মাথায় | কখনো সম্মান করে কখনো অপমান করে। |
এক হাতে তালি বাজে না | এক পক্ষের দোষে বিবাদ হয় না। |
একাই একশ | সব গুণের অধিকারী |
একা কাঁদি, একা হাসি; গরম রেঁধে খাই বাসি | সুখেদুঃখে ভরা জীবন; একাকীত্বের জ্বালা। |
একাগ্রচিত্তে কাজ করলে পাহাড় টলানো/ডিঙানো যায়- চীনা প্রবাদ | চেষ্টায় কি না হয়; চেষ্টা করলে পঙ্গুও পাহাড় ডিঙাতে পারে। |
একা ঘরের একা ভাই খাইতে বড় সুখ, মারতে গেলে ধরতে নাই তাইতো বড় দুখ | একান্নবর্তী পরিবারের কোন তুলনা হয় না। |
একা ঘরের বউ, খেতে বড় সুখ, মারতে এলে ধরতে নাই, তাতে বড় দুখ | অনেক মেয়েই যৌথপরিবারে থাকতে চায়না, নিজের সংসারে তারা সুখ পায়, কিন্তু দাম্পত্যকলহ বাঁধলে মিটমাট করিয়ে দেয়ার লোক থাকে না। একক পরিবারের কুফল সম্পর্কে চেতাবনী। |
একাদশে বৃহস্পতি | চরম সৌভাগ্য। |
একান্নও পাপ, বাহান্নও পাপ | পরিমাণ গুণে পরিবর্তন আনে না; গল্পে আছে এক দস্যু নদীর ধারে এক নারীর সতীত্ব রক্ষা করতে গিয়ে অত্যাচারীকে হত্যা করতে গিয়ে এই উক্তি করেছিল। |
একা রামে রক্ষা নেই সুগ্রীব/লক্ষণ তার দোসর | কষ্টের ওপর কষ্ট; একের বিক্রমই যার যথেষ্ঠ তার আবার সঙ্গীর কি প্রয়োজন; একের বিক্রমেই প্রাণ ওষ্ঠাগত দুইয়ের বিক্রমে মরলাম। |
একি ছেলের হাতে মোয়া? | সবদ্রব্য সহজলভ্য নয়; ভুলিয়েভালিয়ে ছেলের হাত থেকে মোয়াটা নেওয়া যায়, পাকা লোককে বোকা বানানো যায় না। |
একি বিধির খেলা কাকের/বকের/বিড়ালের গলায় তুলসীমালা | ভেকধারী ধার্মিকের প্রতি বক্রোক্তি। |
একুল ওকুল দুকল গেল অকূল পারে গোকুল | এদিকও গেল ওদিকও গেল, কোনদিক আর রইল না; সমতুল্য- 'ইতো নষ্টঃ ততো ভ্রষ্টঃ'। |
একুশ কোড়া গুণে খান, ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যান | অতি সুখী শরীর বা অভিমানী মন; গল্পে আছে এক রাজকন্যা উপপতির সব অত্যাচার সহ্য করত, কিন্তু ফুল ছূঁড়ে মারলে মূর্ছা যেত |
একে গুণ গুণ, দুইয়ে পাঠ, তিনে গোলমাল, চারে হাট // একে রুণুঝুণ্, দুইয়ে পা্ তিনে গোলমাল, চারে হাট | অধ্যয়ন বিষয়ক প্রবাদ; অভিজ্ঞতায় বলে একজন শিক্ষার্থী হলে পাঠে মন বসে না; দুইজন শিক্ষার্থী একসাথে পড়শুনা করলে পরস্পরের সাহায্যে লেখাপড়া ভাল হয়; তিনজন শিক্ষার্থী হলে পড়াশুনা বিশৃঙ্খল হয় এবং চারজন শিক্ষার্থী একত্র হলে পাঠের পরিবর্তে হাট বসে যায়। |
একে চায় আরে পায় | কাঙ্ক্ষিত বস্তু ছাড়াও অন্য মনোমত বস্তু পেলে আনন্দে নেচে ওঠে। |
একে ছেঁড়াকাঁথা তায় শততালি | কষ্টের ওপর কষ্ট। |
একে তো উমা তায় তুষার ধুমা | কষ্টের ওপর কষ্ট। |
একে তো ছাই- তার উপর বাতাস | কষ্টের ওপর কষ্ট। |
একে তো মধুপর্কের বাটি তায় আবার কাত | নানাদোষে দুষ্ট। |
একে তো হনুমান তায় আবার রামের বাণ | যন্ত্রণার উপর যন্ত্রণা। |
একেন পাপ শতেন কিংবা | একটা পাপ করলেও যা পাঁচটা করলেও তা; পাপ করতে যাওয়ার আগে পাপীর মনোভাব; যাহা বাহান্ন তাহাই তিপ্পান্ন। |
একে নাচনি বুড়ি তাতে পড়েছে ঢোলের বাড়ি // একেই নাচনি বুড়ি তায় নাতনীর বিয়ে // একে তো নাচুনি কালী, তাতে মৃদঙ্গের তালি // একে বউ নাচনি তায় খেমটার বাজনি | ইন্ধন যোগানো; উস্কে দিলে বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যায়। |
একেনাপি কুবৃক্ষেণ কোটরস্থেন বহ্নিনা। দহ্যতে তদ্বনং সর্বং কুপুত্রেণ কুলং যথা।। (চাণক্য) | যেমন একটিমাত্র কুবৃক্ষের কোটরের আগুনের দ্বারা সেই সমগ্র বন দগ্ধ হয়, তেমনি একটিমাত্র কুপুত্রের দ্বারা সমগ্র কুল কলঙ্কিত হয়। |
একেনাপি সুবৃক্ষেণ পুষ্পিতেন সুগন্ধিনা। বাসিতং স্যাদ্ বনং সর্বং সুপুত্রেণ কুলং যথা।। (চাণক্য) | যেমন সুগন্ধ ফুলে ভরা একটিমাত্র গাছের দ্বারাই সমগ্র বনভূমি (সুগন্ধে) আমোদিত হয়, তেমনি একটিমাত্র সুপুত্রের দ্বারা সমগ্র বংশ গৌরবান্বিত হয়। |
একেবারে না হওয়ার চেয়ে দেরিতে হওয়া ভালো | কিছু না হওয়া অকাজের সামিল। |
একেবারে কিছু না করলে কুকাজ করা হয় | অলস না থেকে কিছু-না-কিছু করা উচিৎ। |
একেবারে না হওয়া থেকে দেরিতে হওয়া ভালো | তাতেও কিছু হয়। |
একে মা মনসা তায় আবার ধূনার গন্ধ | ইন্ধন যোগানো; কোপনস্বভাবের ব্যক্তিকে উস্কে দিলে সে আরও ক্রোধান্বিত হয়। |
একে মা রাঁধেনা তার ওপর তপ্ত আর পান্তা | সামান্য বিষয় জোটে না, অসামান্যের দাবী; অনায্য দাবী। |
একের বোঝা, দশের আঁটি/লাঠি | ভাগাভাগি করলে সমস্যা অর্ধেক হয়ে যায়। |
একো হি দোষো গুণসন্নিপাতে নিমোজ্জতীন্দোরিতি | বহু গুণের মধ্যে একটি দোষ থাকলে সেটা গুণসাগরে নিমজ্জিত হয়। |
একো হি দোষো গুণসন্নিপাতে নিমোজ্জতীন্দোরিতি যো বভাষে। নূনং ন দৃষ্টং কবিনাপি তেন দারিদ্র্যদোষো গুণরাশিনাশী | বহু গুণের মধ্যে একটি দোষ থাকলে সেটা গুণসাগরে নিমজ্জিত হয়- এই উক্তি যে কবি করেছেন তিনি জানেন না যে, একমাত্র দারিদ্রদোষে সব গুণ নষ্ট হয়ে যায়। |
এখন শুনলে না বঁধু যৌবনভব্রে, পশ্চাতে কাঁদিতে হবে অঝরঝরে | যৌবনের অহংকারে সব কিছু ফুৎকারে ওড়ালে বৃদ্ধবয়সে কপালে দুঃখ আছে; কেউ কথা না শুনলে এই প্রবাদ বলা হয়। |
এখনই সন্দেশ খেয়েচি, চায়ে চিনি দিওনা, সুগার আছে | নিজেকে জাহির করার মানসিকতা; দেখনদারী। |
এগুনে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারী | গুণ অদ্শ্য; রূপ দৃশ্য; তাই রূপই প্রথম আকর্ষণ করে; পরে গুণের বিচার হয়। |
এগুলে রাম, পেছুলে রাবণ // এগুলে সর্বনাশ, পেছুলে নির্বংশ // এগুলে নির্বংশের ব্যাটা, পেছুলে নির্বংশের ব্যাটা | উভয়সঙ্কট; প্রাণপণ খেটেও কারও সন্তোষবিধান করা যায় না; সমতুল্য- |
এড়া কাজে বেড়া | জটিল বাঁকাধরণের কাজে বিপত্তি বেশি হয়। |
এড়ে (ছেড়ে) দিয়ে তেড়ে ধরে | পাওয়া সুযোগ হেলায় ছেড়ে দিয়ে ফিরে পাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা। |
এত বড় হাবা জন্ম দেয়নি কারো বাবা | মহামূর্খ। |
এত ভঙ্গ বঙ্গদেশ তবু রঙ্গভরা- ঈশ্বর গুপ্ত | নানা সমস্যায় বাংলা বারবার বিদীর্ণ হচ্ছে তবুও তার ভাবজগৎ নানা ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ। |
এত সুখ যদি তোর কপালে তবে কেন কাঁথা বগলে? | বাহ্যলক্ষণ দেখে মনে হয় মেকি সুখী, সুখের ভান; কারো আত্মগৌরব প্রচারে অবিশ্বাস; নিজের অবস্থা বাড়িয়ে বর্ণনাকারীকে উপহাস করার জন্য ব্যবহাত প্রবাদবাক্য। |
এতে কিছু যায় আসে না কত আস্তে তুমি হাঁটছো, যতক্ষণ না তুমি থামছো- কনফুসিয়াস | চলাটাই হল আসল কথা; জীবন কখনো স্থির নয়; বেদের উপদেশ- চরৈবেতি চরৈবেতি। |
এতো মূলোবাড়ী নয় এতো বেগুনবাড়ী | যেস্থানে একসময়ে সাহায্য পাওয়া যায় সেটি হল মূলোবাড়ী; যেস্থানে অল্প হলেও সবসময় সাহায্য পাওয়া যায় সেটি হল বেগুনবাড়ী। |
এদিক নেই ওদিক আছে | বাড়াবাড়ির প্রতি ব্যঙ্গোক্তি। |
এনে দাও কাছে মারি, বাপের পূণ্যে নড়তে নারি | অলসের উক্তি। |
এমন মানবজীবন রইল পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা | ঠিক সময়ে ঠিক কাজ করলে জীবনরূপ জমি ফুলে-ফলে ভরে তোলা যায় |
এমনকি একজন বোকারও একটি প্রতিভা আছে- জাপানী প্রবাদ | কেউই একেবারে বোধশূন্য হয় না; কাউকেও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে নেই। |
এমনকি একটা/টি খরগোশও কামড়াতে পাড়ে যদি সে কোণঠাসা হয়- চীনা প্রবাদ | প্রাণীমাত্রই মরণ পণ করে আত্মরক্ষা করত চায়। |
এমনকি বানরেরাও গাছ থেকে পড়ে- জাপানী প্রবাদ | দক্ষ মানুষেরও কাজে ভুল হ'তে পারে। |
এমনি কেউ কারও বন্ধু নয় বা শত্রু নয় | অকারণে কিছু হয় না। |
এমনি যায় না মাস, তায় আবার দুদিন বেশি১ | প্রচণ্ড টানাটানি। |
এমনি যায় না মাস, তায় আবার দুদিন বেশি২ | কষ্টের ওপর কষ্ট; যন্ত্রণার উপর যন্ত্রণা। |
এরণ্ডোহপি দ্রুমায়তে | (বৃক্ষহীন দেশে) ভেরেণ্ডাও বৃক্ষ বলে বিবেচিত হয়; (মূলশ্লোক- নিরস্ত পাদপদেশে এরণ্ডোহপি দ্রুমায়তে) |
এর মুণডু ওর ঘাড়ে | একজনের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপানো। |
এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই | এলোমোলো অবস্থায় সুযোগ নেওয়া; সমতুল্য- 'ঘোলা জলে মাছ ধরা'। |
এলো শ্রাদ্ধের গুঁতো দক্ষিণা | যে কাজে শৃঙ্খলা নেই সেখানে লাভ না হয়ে লোকসানই হয়। |
এসেছি একা, যাবোও একা, কার সঙ্গে কার বা দেখা। | কেউ কারো নয়। |
এ্যাং যায়, ব্যাং যায়, খলসে বলে আমিও যাই- অমৃতলাল বসু১ | সবাই সমান/সঙ্গী হতে চায়; যে কাজে সে অসমর্থ সেই কাজ করতে গিয়ে হাস্যাস্পদ হয়। |
এ্যাং যায়, ব্যাং যায়, খলসে বলে আমিও যাই- অমৃতলাল বসু২ | 'বামুন কায়েতরা জাত নিয়ে মারামারি করে, তাঁতিরা বলে আমরা চুপ করে থাকি কেন?'-টেকচাঁদ ঠাকুর |
এ্যায়সা দিন নেহি যায়েগা, জোয়ারমে ভাটা গিরেগা, খেয়াল ঠিক রাখনা। | অবিমিশ্র সুখদুঃখ হয় না; সুখের পরে দুঃখ আসে, দুখের পরে সুখ; সমতুল্য- 'চক্রবৎ পরিবর্তন্তে সুখানি চ দুখানি চ'; 'চিরদিন কারো সমান নাহি যায়'। |
ঐ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঐ দিন আর নাইরে নাথু খাবলা খাবলা খাবা ছাতু | সুযোগ নেবার দিন শেষ। |
ঐ ধান ঐ চাউল গিন্নিগুণে আউল-ছাউল | সব এলোমেলো। |
ঐশ্বর্য অর্জন করা সহজ, রক্ষা করা কঠিন। | ধনসম্পদ যত সহজে পাওয়া যায় তত সহজে রাখা যায় না। |
ঐশ্বর্য চিত্তের বিকার ঘটায় | ঐশ্বর্য ভোগলিপ্সা বাড়ায়, চিত্তের স্থিরতা নষ্ট করে। |
ঐশ্বর্যের দেমাক থেকে অন্তরের টান অনেক বেশি আদরণীয়; | সমতুল্য- 'আদরের ভোজন কি করে ব্যঞ্জন', 'আদরের ডাল-ভাতও ভাল, বিনা আদরের ঘি-ভাতও ভাল না', 'রাজার ভুরিভোজ থেকে বিদুরের শাকান্ন ভাল' ইত্যাদি। |
ঐশ্বর্যস্য বিভূষণং সুজনাতা, শৌর্যস্য বাকসংযমো, জ্ঞানস্যোপশমঃ কুলস্য বিনয়ো, বিত্তস্য পাত্রে ব্যয়। অক্রেবিস্তপমঃ ক্ষমা, বলবতাং ধর্মস্য নির্ব্যাজতা, সর্বেষামপি সর্বকারণমিদং শীলং পরং ভূষণম্॥ (চাণক্য) | ঐশ্বর্যের অলংকার সৌজন্য, শৌর্যের অলংকার বাক্সংযম, জ্ঞানের অলংকার প্রশান্তি, বংশের অলংকার বিনয়, ধনের অলংকার যথাযথ পাত্রে ব্যয়, তপস্যার অলংকার ক্রোধহীনতা, বলবানের অলংকার ক্ষমা, ধর্মের অলংকার সরলতা, আর সবের মধ্যে সচ্চরিত্রতাই সর্বশ্রেষ্ঠ অলংকারস্ব |
ঐশ্বর্যের সময় দারিদ্রের কথা ভেবো, দারিদ্রের সময় ঐশ্বর্য্যের কথা ভেবো না- চীনা প্রবাদ | তাতে চিত্তের বিকার ঘটবে। |
ও
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ওজন বুঝে চলা১ | আত্মসম্মান বজায় রেখে চলা। |
ওজন বুঝে চলা১ | অপব্যয় না করা, মিতব্যয়ী হওয়া; সমতুল্য- অবস্থা বুঝে ব্যবস্তজা'; 'আয় বুঝে ব্যয় করা'; 'কাপড় বুঝে জামা কাটা' যখন যেমন তখন তেমন' ইত্যাদি। |
ওঝার ঘাড়ে ভূতের বোঝা | রক্ষাকর্তার উপর অতিরিক্ত চাপ; যে ব্যক্তি বিপদ থেকে রক্ষা করে সেই বিপদে পড়েছে। |
ওঝার বেটা বনগরু | পণ্ডিতের ছেলে মহামূর্খ। |
ওঠ ছুঁড়ি তোর বিয়ে | অপ্রস্তুত অবস্থায় কাউকে কিছু করতে বলা; প্রস্তুতি ছাড়াই হঠাৎ কিছু করতে আহ্বান করা। |
ওপরে চিকণ চাকণ ভেতরে খ্যাড়(=খড়) | বাইরে বাবু ভিতরে ফকির। |
ওম জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্। ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্।। | প্রভাতী সূর্যপ্রণামমন্ত্র। |
ওরে পাগল খাবিনে, না, হাত ধোব কোথা? | সেয়ানা পাগল। |
ওল কচু মান তিনই সমান | সবগুলি তুল্যমূল্য, উনিশ-বিশ। |
ওল খেয়ে গোল | সমস্যার সম্মুখীন। |
ওল বলে, মানকচু তুই নাকি লাগ | নিজের ত্রুটির প্রতি নজর নেই পরের দোষ খুঁজে বেড়ায়। |
ওলো রঙ্গী তোর ঘর পড়েছে, 'পুড়ুক গিয়ে ঘর; আমার ত রঙ পুড়বে না কো, কিবা তা'তে ডর' | রূপসী রূপের গর্ব নেচে বেড়ায় অন্য কোনদিকে নঞ্জর করে না; সেদিক থেকে সুপরামর্শের প্রবাদ- 'জাতের নারী কালাও ভালা','বিয়ে কর কালো
তাই গৃহস্থের ভালো'। |
ওষুধ ধরেছে | কাজের কাজ হয়েছে; প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। |
ওষধার্থে সুরাপান | মদ খাওয়ার পক্ষে বাহানা। |
ওষুধের চেয়ে পথ্যি ভালো | সুসমখাদ্য ডাক্তারের চেয়ে ভাল ডাক্তার। |
ওস্তাদের মার শেষ রাতে | দক্ষ ব্যক্তি শেষমূহুর্তে তার দক্ষতা দেখায়। |
ঔ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঔষুধ ধরেছে | ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে; ফল ফলতে শুরু করেছে। |
ঔষুধার্থে সুরাপান, পান না বাড়ালেই থাকে মান | পরিমিত সুরাপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল। |
ক
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ক অক্ষর গোমাংস // ক লিখতে কলম ভাঙে // ক লিখতে হ লিখে | অক্ষরজ্ঞানহীন মহামূর্খ ব্যক্তি; বর্ণপরিচয় হয় নি। |
কঃ পরঃ প্রিয়বাদিনাম্ | মিষ্টভাষীদের কেউ শত্রু হয় না। |
কঃ প্রাজ্ঞো বাঞ্ছতি স্নেহং বেশ্যাসু সিকিতাসু চ | বিজ্ঞব্যক্তি গণিকা ও বালুকা থেকে স্নেহরস পেতে চায় না (গণিকা ও বালুকায় স্নেহরস নেই) |
কই হইল আগরতলা, আর কই চৌকিরতলা | দুই অসম বিষয়ের মধ্যে তুলনা হয় না। |
কই মাছের প্রাণ অল্পেতেই না যান // কইমাছের প্রাণ শক্ত বড় | কষ্টসহিষ্ণু লোক অল্পেতে কাবু হয় না। |
কইয়ের তেলে কই ভাজা | যার কাজ তাকে দিয়েই কাজ হাসিল করা; বিনা পরিশ্রমে কার্যোদ্ধার। |
কইতে কইতে মুখ বাড়ে, খাইতে খাইতে পেট বাড়ে | সব কিছুতেই পরিমিতিবোধ থাকার প্রতি ইঙ্গিত। |
কইতে জানলে ঠকি না,বসতে জানলে উঠি না | জ্ঞানীগুণীরা কখনো অপ্রতিভ বা অপ্রস্তুত হয় না। |
কইতে পারি সইতে পারি না | কথা শোনাতে পারে কিন্তু কথা শুনতে নারাজ। |
কইলাম কথা সবার মাঝে/মধ্যে; যার কথা তার গায়ে বাজে/বিন্দে | পরোক্ষে কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলা। |
কইলে যায় মনের দুঃখ খাইলে যায় পেটের ভুখ | চুপচাপ বসে থাকা যায় না; না খেলেও বাঁচা যায় না। |
কংস রাজার বদ (বধ) ফরমাশ | অন্যায় ও অসম্ভব আদেশ। |
কখনো অপ্রিয় সত্য কথা বলিও না | কেউই অপ্রিয় সত্য কথা শুনতে চায় না। |
কখনো খেওনা ওলে/তালে আর ঘোলে; কখনো ভুলো না ঢেমনার (লম্পট) বোলে | বিরুদ্ধ বস্তুর মিশ্রণ খেতে নেই; প্রবঞ্চকের কথায় বিশ্বাস করতে নেই; করলে প্রাণ ওষ্টাগত হবে। |
কখনো না হওয়া থেকে দেরীতে হওয়া ভালো | তবুতো কিছু হবে। |
কখনো প্রমাণ করতে যেওনা যা কেউ সন্দেহ করে না- চীনা প্রঃ | যেখানে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই সেখানে প্রমাণের প্রয়োজন হয় না। |
কঙালী মেঁ আটা গীলা- হিন্দি প্রবাদ | কষ্টের ওপর কষ্ট; দুঃখীকে আরো দুঃখী হওয়। |
কচলা (ধোয়া) কাপড় ছাড়তে নাই | ভাগ্য সুপ্রসন্ন হ'লে কোন কাজ ছাড়তে নেই। |
কচি উচ্চে পাকা পটল, কচি পাঁঠা, পাকা কাতল (কাৎলা মাছ) | এইসব খাদ্য বড়ই সুস্বাদু। |
কচি পাঁঠা, পাকা মেষ, দইয়ের আগা ঘোলের শেষ, এইগুলি খেতে বেশ | এইসব খাদ্য খেয়ে বড়ই তৃপ্তি পাওয়া যায়। |
কচি খুকি কুলোয় শুয়ে তুলোয় দুধ খান | নির্বুদ্ধি বয়স্কামহিলা সম্পর্কে প্রযোজ্য। |
কচু কাটতে কাটতেই ডাকাত | লেগে থাকলে একদিন সিদ্ধি হবেই। |
কচুপোড়া খাও | ব্যর্থ মনোরথ হয়ে পড়ে থাকো; 'অণ্ডকোষ পুড়িয়ে খাও' অর্থে গ্রাম্য কুতসিৎ গালিবিশেষ। |
কচুবনের কালাচাঁদ | লম্পট, দুশ্চরিত্র ব্যক্তি; গল্পে আছে রমণীদের ভোলাবার জন্য রাতের অন্ধকারে লম্পটেরা কচুবনে লুকিয়ে থাকে। |
কচুর বেটা ঘেঁচু, তার আবার মান // কচুর বেটা ঘেচু,বড় বাড়েন তো মান | কচুজাতীয় মূলের মধ্যে মানই সবথেকে বড়; নীচু যত বড়ই হোক-না-কেন নীচু নীচুই থাকে; অপদার্থের কোন মানসম্মান হয় না। |
কঞ্চিতে বংশলোচন জন্মানো | নীচের উচ্চপদ পাওয়া (কঞ্চিতে বংশলোচন জন্মালে কঞ্চি বাঁশের উচ্চপদ ল্পাভ হয়) |
কটি ছেলে? না, পুড়িয়ে খাব | বদ্ধকালার অসংলগ্ন কথাবার্তা। |
কড়িকাঠ গুণে যাও | ব্যর্থমনোরথ হয়ে পড়ে থাকো; অলসে সময় কাটাও। |
কড়িতে কড়া/চতুর, কাহনে কানা | অল্প খরচে কিপ্টেমি, বেশি খরচে দরাজহস্ত। |
কড়ি থাকলে বাঘের দুধ মেলে | অর্থের অসীম শক্তি। |
কড়ি থাকলে বেয়াইয়ের বাপের শ্রাদ্ধ হয় | টাকার অপচয় করা যায়। |
কড়ি দিয়ে কানা গরু কেনা | অজ্ঞতাবশতঃ টাকা খরচ করে ঠকে গেলে এই প্রবাদ বলা হয়। |
কড়ি দিয়ে কিনবো দই, গোয়ালিনী মোর কিসের সই // কড়ি দিয়ে খাই দই, কি করবে মোর গয়লা সই১ | পয়সা খরচ করে জিনিষপত্র কিনতে হ'লে সে আত্মীয় হতে পারে না। |
কড়ি দিয়ে কিনবো দই, গোয়ালিনী মোর কিসের সই // কড়ি দিয়ে খাই দই, কি করবে মোর গয়লা সই২ | যে ব্যক্তি কোন বিষয়ে কারো কাছে বাধ্য নয়, সে এই প্রবাদ ব্যবহার করে। |
কড়ি দিয়ে হেঁটে নদী পার হোয়া | অর্থ গেল পরন্তু পরিশ্রমও করতে হল। |
কড়ি নেবে গুণে, পথ চলবে শুনে | টাকাপয়সা নেবার সময় গুণে নিতে হয়; পথ জেনে তবে পথ চলত্র হয়; বিচার-বিবেচনার সাথে কাজ সম্পাদন করা উচিৎ। |
কড়ি পেলে কাঠের ঘোড়া (ধর্মরাজ) হাঁ করে | ঘুষের দাপট। |
কড়ি ফটকা চিঁড়ে দই, কড়ির মত বন্ধু কই | টাকার জোরে সব মেলে; টাকার মত বন্ধু হয় না। |
কড়ি বই বন্ধু নেই | টাকা থাকলে ভাবনা থাকে না। |
কড়ি হলে বাঘের দুধ মেলে- ভারতচন্দ্র | পয়সা খরচ করলে যেকোন দুস্প্রাপ্য বস্তু পাওয়া যায়। |
কড়ির জিনিষ পড়িস না১ | দামী জিনিস কম ব্যবহার করবে। |
কড়ির জিনিষ পড়িস না২ | মূল্যবান সামগ্রী সাবধানে ব্যবহার করবে। |
কড়ির মাথায় বুড়োর বিয়ে১ | কড়ি থাকলে বুড়ো বয়সেও বিয়ে করা যায়। |
কড়ির মাথায় বুড়োর বিয়ে২ | বুড়োর যে বিয়ে তার মুলে আছে অর্থ। |
কড়ির যত্ন নাও, কাহন (সঞ্চিত অর্থ) তোমার যত্ন নেবে | প্রয়োজনে অর্থের অভাব হবে না। |
কণশঃ ক্ষণশ্চৈব বিদ্যামর্থং চ সাধয়েৎ | একটু একটু করে এবং বহু সময় ধরে বিদ্যা ও অর্থ উপার্জন করবে। |
কণ্টকবিনা কমল নাই, কলঙ্কশূন্য চন্দ্র নাই | জগতে নির্দোষ কিছুই নাই। |
কণ্টকে কণ্টকোদ্ধার করা // কণ্টকেনৈব কণ্টকম | কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা; সমতুল্য- 'শত্রু দিয়ে শত্রু নাশ'। |
কত ক্ষণ রহে শিলা শূন্যেতে মারিলে? | পতন অনিবার্য। |
কত জলে কত চাল/চিঁড়ে ভেজে দেখো | যা জানতে না তা এখন জেনে নাও। |
কত ঢং দেখালি গুয়ে, তুলসীতলায় শুয়ে শুয়ে | কপট আচারের প্রতি বক্রোক্তি। |
কত ধানে কত চাল জান না, কোন হিসাব রাখ না | কোনো বিষয়ের প্রকৃত অবস্থার খবর/হিসাব করে চলার প্রতি ইঙ্গিত। |
কত রঙ্গ দেখালে মাসি | আদিখ্যেতার প্রতি বক্রোক্তি। |
কত রবি জ্বলেরে, কেবা আঁখি মেলেরে! | অতি-অলসের উক্তি। |
কত শত গেল রথি, শেওড়াতলার চক্রবর্তী // কত হাতী গেল তল ভেড়া/মশা বলে কত জল | অক্ষমের আস্ফালন; বুদ্ধিহীনের বড়াই। |
কতই বা দেখবো আর ছুঁচোর/বানরের গলায় চন্দ্রহার১ | অযোগ্যের হাতে মহার্ঘবস্তু দেখে আক্ষেপ। |
কতই বা দেখবো আর ছুঁচোর গলায় চন্দ্রহার২ | যে ব্যক্তি অবস্থার অতিরিক্ত বেশভূষা করে যে ব্যক্তি হাস্যাস্পদ হয় তার প্রতি বক্রোক্তি। |
কতই সাধ ছিলরে চিতে মলের আগে চুটকি দিতে // কতই সাধ হয়রে চিতে, ফোকলাদাঁতে মিশি দিতে // কত সাধ হয়রে চিতে বেগুন গাছে আঁকশি দিতে | অক্ষমের বাসনা; নৈরাশ্যব্যঞ্জক উক্তি; যা হবার নয় তাই হবার ষে সম্পর্কে আক্ষেপোক্তি। |
কথং মারাত্মকে ত্বয়ি বিশ্বাসঃ | তোমার মত শয়তানকে বিশ্বাস কি? |
কথা কম কাজ বেশী | কথা থেকে কাজের দাম বেশী। |
কথা টলার চেয়ে পা টলা (আছাড় খাওয়া) ভালো | কথা দিলে কথা রাখতে হয়; অঙ্গীকার পালন করা প্রধান কর্তব্য। |
কথা দিয়ো ধীরে; কাজ করো তীরে (দ্রুত) | চিন্তাভাবনা করে কথা বলা উচিৎ; গদাইলস্করি চালে কাজ করা উচিৎ নয়, তবে কাজ দ্রুত সনাধা করা উচিত। |
কথা বলা থেকে কথা শোনার দাম বেশী | জ্ঞানীরা শোনে বেশি বলে কম। |
কথা বলার আগে যথেষ্ঠ সময় নিতে হয় যাতে কথা ফলের মত পরিপক্ক (সার্থক) হয়- আরবী প্রবাদ | চিন্তাভাবনা করে কথা বলতে হয় যাতে কার্যসিদ্ধি হয়। |
কথা বেচে খাওয়া১ | কথার বিনিময়ে অর্থোপার্জন। |
কথা বেচে খাওয়া২ | লোক ঠকিয়ে জীবিকানির্বাহ; উকিলেরা কথা বেছে খায়। |
কথাবার্তায় ক্রোধের পরিমাণ খাবারের লবণের মত | পরিমিত হ'লে রুচিকর, বেশি হ'লে ক্ষতিকর। |
কথা শোনো দ্রুত; কথা বল ধীরে | কেউ কিছু বললে তৎক্ষণাৎ শোনও এবং ধীর ও স্পষ্টভাষায় উত্তর দাও। |
কথা শুনে পেটের ভাত চাল হয়ে যায় | বিপদের কথা শুনে আশঙ্কায়/ভয়ে প্রাণ শুকিয়ে যায়। |
কথা শুনে হরিভক্তি উড়ে গেল | নিতান্ত অশ্রদ্ধার কথা, যা শুনে সব শ্রদ্ধা নষ্ট হল। |
কথায় কথা বাড়ে, ভোজনে পেট বাড়ে | বাকবিতণ্ডায় অনাবশ্যক কথার অবতারণা হয়; তর্ক বন্ধ্য হলেই গলযোগ মিটে যায়; বেশি আহারে আহারের স্পৃহা বাড়ে। |
কথায় কথা বাড়ে, ক্রোধে হয় ঝড়, কথা না বাড়িয়ে সখি যাও তবে ঘর | অনাবশ্যক কথা বাড়িয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়ানো উচিত নয়। |
কথায় কলসী/পেট ভরে না // কথায় চিঁড়ে ভেজে না // কথায় ভাত রাঁধে না- চীনা প্রবাদ | শুধু কথায় কাজ হয় না; ফাঁকা আওয়াজে কাজ হয় না; ফাঁকি দিয়ে কাজ হাসিল হয় না। |
কথায় চিঁড়ে ভেজে না | কেবল বাক্যব্যয়ে কোন কাজ হয় না। |
কথায় বড় হতে হবে না, কাজে বড় হও- ইহুদী প্রবাদ | আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে? |
কথায় বলে কথায় থাকো | প্রবাদে বলে সবার সাথে সম্পর্ক রাখো। |
কথায় মন ভিজে চিঁড়ে ভেজে না | শুধু কথায় কারো মন জয় করা যায় কিন্তু কোন কাজ হয় না। |
কথার কথা কাজের নহে | বাজে কথার মূল্য নেই। |
কথার কোন মাথা নেই, ব্যাঙে খায় চিঁড়ে দই | নিতান্ত অবিশ্বাস্য আজগুবি কথা যার কোন অর্থ হয় না; পাগলের প্রলাপ। |
কথার গুণে বার্তা নষ্ট | বাকচাতুর্যে আসল কথা হারিয়ে যায়; বাক্যদোষে ঈপ্সিত ফললাভ হয় না। |
কথার চেয়ে কাজের গলা দরাজ | মানুষ কাজ চায়, কথা চায় না। |
কথার বেলায় ঢুসঢাস কাজের বেলায় হাওয়া // কথার বেলায় সরগম কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা | কথাবার্তায় পটু, কাজে কিছু না। |
কদম গাছের কানাই | লম্পট চরিত্রের লোক। |
কন্ওয়া বৈল্ বয়ারে সন্কৈ- হিন্দি প্রবাদ | কানা গরু বাতাস বইলেই ভয় পায়; সমতুল্য[ 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পায়'। |
কনের ঘরের মাসি, বরের ঘরের পিসি | দু'পক্ষেই আছে। |
কনের বাপ বসে বসে চোখের জলে ভাসে, বরের বাপ বসে আছে পাঁচশ টাকার আশে | বিয়ের অন্যায্য উপঢৌকনের প্রতি ইঙ্গিত। |
কনের মা কাঁদে আর টাকার পুটুলি বাঁধে | কন্যা বিক্রয়ে মায়ের মনোভাব ব্যক্ত; একদিকে কন্যার জন্য শোক; অন্যদিকে অর্থলালসা। |
কন্যা বরয়তে রূপং, মাতা বিত্তং, পিতা শ্রুতম্। বান্ধবাঃ বরয়তে কুলমিচ্ছন্তি, মিষ্টান্নমিতরে জনাঃ। (চাণক্য) | কন্যা বরের রূপ; মাতা বরের অর্থ; পিতা বরের গুণ, আত্মীয়রা বরের কুল আর অতিথিরা ভোজন প্রত্যাশা করে। |
কপট প্রেমে লুকোচুরি মুখে মধু হৃদে ছুরি | কপট বন্ধুত্বে মুখে মিষ্টি কথা বলে আর মনে মনে নিষ্ট করার চিন্তা কওরে। |
কপট বন্ধুত্ব থেকে প্রকাশ্য শত্রুতা ভাল | ভণ্ডামী কোন অর্থেই সমর্থনযোগ্য নয়। |
কপট বন্ধুর/প্রেমের লুকোচুরি, মুখে প্রেম অন্তরে/হৃদে ছুরি | কপটতা সম্পর্কে সচেতন থাকতে চেতাবনি; কপটাচারী মুখে মিষ্টতার ভান দেখায়, অথচ মনে মনে অনিষ্ট করার চিন্তা করে। |
কপালগুণে গোপাল ঠাকুর | ভাগ্য ভালো থাকলে অযোগ্য ব্যক্তিও বড়ো হয়। |
কপাল ছাড়া পথ নাই | ভাগ্য ভিন্ন গতি নাই; অদৃষ্টে যা আছে তা ঘটবেই। |
কপাল ভাঙ্গলে জোড়া লাগে না | মন্দভাগ্য সহকে পালটায় না; একবার ভাগ্য অপ্রসন্ন হলে সহজে উন্নতি হয় না। |
কপাল ভালো তো সব ভালো | সৌভাগ্য থাকলে যাতে হাত দেবে তাই সফল হবে। |
কপাল মূলং খলু সর্বদুঃখম | কপালই সব দুঃখের মূলকারণ; অদৃষ্টই সকল দুঃখকষ্টের মূল; মুলশ্লোক-('কিংবা স্বয়ম্ভূ শিবশক্তিবিষ্ণুঃ...') |
কপাল সঙ্গে সঙ্গে যায়/ কপাল সাথে সাথে ফেরে | যা হবার তা হবে; অভাগার কোথাও সুখ লেখা নেই; সমতুল্য- 'আমি যাই বঙ্গে কপাল যায় সঙ্গে |
কপালে তোর নেইকো ঘি ঠকঠকালে হবে কি? | ভাগ্যে না থাকলে প্রত্যাশা করে কোন লাভ নেই; যার কপালে সুখ লেখা নেই ষে শত চেষ্টাতেও কপাল ফেরাতে পারে না। |
কপালের লিখন যায় না খণ্ডন | ভাগ্যে যা আছে তা ঘটবেই; ভাগ্যে ভোগান্তি থাকলে ভুগতেই হয়। |
কফিনে শেষ পেরেক ঠোকা/মারা | সম্পূর্ণ বিনাশ করা |
কবে রাম রাজা হবে, তবে সীতা উদ্ধার পাবে | দীর্ঘ প্রতীক্ষার কারণে হতাশা প্রকাশ। |
কম পানির মাছ বেশ পানিতে উঠলে ও মাছে বেশ লাফালাফি করে | প্রাণীমাত্রই নিজের পছন্দের পরিবেশ পছন্দ করে। |
কম্বল ও কমণ্ডুল না নিলে সাধু হওয়া যায় না | ভেকধারীদের প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি। |
কম্বল(ভল্লুক) আমি ছেড়ে দিয়েছি কম্বল আমায় ছাড়ে না | নাচ্ছোড়বান্দার পাল্লায় পড়ে নাজেহাল। |
কম্বলের লোম বাছলে থাকে কি? | যেখানে সবাই মন্দ সেখানে মন্দলোক বাচতে যাওয়া বৃথা; সমতুল্য- 'ঠগ বাছতে গা উজাড়। |
কয়লা খেয়েছো আঙরা হাগো | যেমন কর্ম তেমন ফল। |
কয়লা ছাড়েনা ময়লা/কয়লা ধুলে ময়লা যায়না | কয়লা হাজার ধুলেও যেমন রঙ বদলায় না তেমনিই কুলোক কখনো কুপ্রবৃত্তি ছাড়ে না; স্বাভাবিক ধর্ম কখনো লোপ পায় না; সমতুল্য- 'অঙ্গারঃ শতধৌতেন মলিনত্বং ন মুঞ্চতি'; 'আদা শুকালেও ঝাল যায়না'; 'ইল্লৎ যায় না ধুলে'; 'রসুন ধুলেও গন্ধ যায় না' 'স্বভাব যায় না মলে' ইত্যাদি। |
কয়লা পুড়লে ময়লা যায় | আগুনে শুদ্ধ হলে কয়লার ময়লা যায়; জ্ঞানাগ্নিতে শুদ্ধ হলে মানুষের মনের অজ্ঞতা দূর হয়। |
কর গোবিন্দের বাপের শ্রাদ্ধ, আরও বামুন আছে | নগণ্য কাজের জন্য লোকের অভাব হয় না। |
কর যদি তাড়াতাড়ি ভুলের হবে বাড়াবাড়ি | তাড়াতাড়ি করলে নজর এড়িয়ে অনেক ভুল থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। |
করছে কীসের জাঁক, ময়না টিয়ে উড়িয়ে দিয়ে খাঁচায় পোষে কাক | অবিমৃষ্যকারিতার প্রতি ইঙ্গিত। |
করা থেকে বলা সহজ | কিছু করতে গেলে পরিশ্রম লাগে। |
করার আগে ভাবো, ভাবার আগে কোরো না | তাতে হটকারিতা কখনো হ'বে না। |
করুণার পাত্র হওয়া থেকে শত্রু হওয়া ভাল | অনুকম্পার পাত্রকে সকলে ঘৃণা করে। |
কর্কশ কথা আগুনের জ্বালার চেয়েও ভয়ঙ্কর- চাণক্য | অনেকের অনুভূতিই সেইরকম। কাউকে কটাক্ষ করা নেই। |
কর্জ করে যেই কষ্ট পায়/ভোগে সেই | ঋণী বড় দুখী; অঋণী খুবই সুখী। |
কর্তব্যো নাতি সঞ্চয়ঃ | বেশি সঞ্চয় করা উচিত নয়, তাতে কার্পণ্য, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি বাড়ে। |
কর্তা মুগের ডাল খান না; কেন খান না; পান না, তাই খান না | অলভ্য জিনিষ মন্দ; দুস্প্রাপ্য জিনিষে বৈরাগ্য; সমতুল্য- 'আঙুরফল টক'। |
কর্তা যে ঘি খান না, তা এক আচঁড়েই মালুম | যার গায়ে আঁচড় টানলে গায়ে খড়ি পড়ে তিনি নিশ্চয়ই ঘি খান না; পরীক্ষাতেই বিদ্যা প্রকাশ পায়। |
কর্তার ইচ্ছায় কর্ম; উলুবনে কেত্তন। | সবলের অনুচিত ইচ্ছাপূরণ; অন্যের প্রতিবাদ বৃথা যায়। |
কর্ত্তোব্য নাতি সঞ্চয় | বেশি সঞ্চয় করা উচিৎ নয়; তাতে নানা দোষ আসতে পারে, যেমন- কার্পণ্য, দুশ্চিন্তা, বিলাসিতা দম্ভ ইত্যাদি। |
কর্মণা বাধ্যতে বুদ্ধিঃ ন বুদ্ধ্যা বাধ্যতে কর্ম | কর্ম (অদৃষ্ট) বুদ্ধিকে বশীভুত করে; বুদ্ধি কর্মকে বশীভূত করে না। |
কর্মণা হি প্রধানেন বুদ্ধিনাং কি প্রয়োজনম্। পাষাণস্য কত বুদ্ধিস্ততো দেবো ভবিষতি।। (চাণক্য) | কর্মই প্রধান; বুদ্ধিদ্বারা কোন প্রয়োজন সিদ্ধ হয় না; পাষাণের বুদ্ধি কোথায়? তবুতো দেবতাদের অধিষ্ঠান এই পাষাণেই হয়। |
কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন (গীতা) | বিহিতকর্মেই তোমার অধিকার; কর্মফলে কখনো নয়। |
কর্মণ্যাণি প্রাধানানি সতি কক্ষে শুভে গৃহ। বশিষ্ঠদত্তলগ্নেহপি জানকী দুঃখভাগিনী।। (চাণক্য) | গ্রহদেবতারা প্রসন্ন হলেও কর্মের প্রাধান্যকে মেনে নিতে হবে; কারণ জানকীর বিবাহের সময় ঋষি বশিষ্ঠ লগ্ন স্থির করেছিলেন তবু কর্মদোষেই জানকী দুঃখভাগিনী হয়েছিলেন। |
কর্মদোষেণ দরিদ্রতা | কর্মদোষেই মানুষ অভাগা। |
কলঙ্ক গঙ্গাজলে ধুলেও যায় না | বদনাম কখনো ঘুচে না। |
কলঙ্ক বিনা চাঁদ নাই | অবিমিশ্র সুখ হয় না; দোষেগুণে মানুষ। |
কলসির জল গড়তে গড়তেই শেষ // কলসির জল গড়তে গড়তে কত থাকে | সীমিত সম্পদ দ্রুত শেষ হয়; আয়ের উৎস না থাকলে সঞ্চিত অর্থে বেশি দিন চলে না। |
কলাপোড়া খাও | ব্যর্থ হয়ে পড়ে থাকো; সমতুল্য- 'কচুপোড়া খাও'। |
কলার ভেলায় সাগর পার | সামান্য উপায়ে বিরাট কাজ করার বৃথা চেষ্টা। |
কলুর বলদ | নিজের ভালমন্দ না বুঝে পরের নির্দেশমত শুধু মুখবুজে খেটে মরা লোক। |
কল্পনার ডানা পাখা মেলে | কল্পনার রঙে না রাঙালে সবকিছু শুস্কং কাষ্ঠং থেকে যায়, নিরস তরুবর হয় না; সমতুল্য- 'গল্পের গরু গাছে চড়ে'। |
কল্পান্তস্থায়িনো গুণাঃ | সৎকর্ম, কীর্তি ইত্যাদি অবিনাশী। |
কল্লার (দুষ্ট) ঘাড় বোল্লায় (বোলতা) ভাঙে | দুষ্টের শাস্তি হবেই। |
কল্লে যত্ন মেলে রত্ন | সাধনায় সিদ্ধি হবেই। |
কষতে কষতে বাঁধন ছেঁড়ে | বেশি টানাটানিতে সূতা ছিঁড়ে যায়; বাড়াবাড়ি ভাল নয়; সমতুল্য- 'ভাল নয় অতিশয়', সর্বম অত্যন্তম গর্হিতম'। |
কষ্ট না করলে কেষ্ট মিলে না // কষ্ট বই ইষ্ট নাই // কষ্টবিনা কৃষ্ণ মেলে না // কষ্টবিনা কেষ্ট নাই | পরিশ্রম না-করলে সফলতা পাওয়া যায় না; বিনা পরিশ্রমে কিছুই মেলে না;কিছু পেতে গেলে কিছু ঝামেলা সইতে হয়; সমতুল্য- 'আগুন পোহাতে গেলে ধোঁয়া সইতে হয়,'গোলাপ তুলতে গেলে কাঁটা সইতে হয়', 'নহি সুখং দুঃখৈর্বিনা লভ্যতে', সাধনা না করলে সিদ্ধি নাই' ইত্যাদি। |
কষ্টা বৃত্তিঃ পরাধীনা কষ্টো বাসো নিরাশ্রয়ঃ। নির্দ্ধনো ব্যবসায়শ্চ সর্বকষ্টা দরিদ্রতা॥ (চাণক্য) | চাকরের জীবিকা কষ্টকর; নিরাশ্রয় ব্যক্তির পরগৃহে বসবাস কষ্টকর; ধনহীনের পক্ষে ব্যবসা-বাণিজ্য করা কষ্টকর; দারিদ্র্য সকল কষ্টের কারণ। |
কসুরও নাই কামাইও নাই | কোন ছাড়ছোড় নেই অবিচ্ছিন্নভাবে চলছে। |
কস্য মাতা, কস্য পিতা, কস্য ভ্রাতা সহোদরঃ। কায়ঃপ্রাণৈর্ন সম্বন্ধঃ কা কস্য পরিব্রদনা।। (চাণক্য) | কার মা, কার বাবা, কার ভাই- এসব ভেবে কাজ নেই; কেউ কারো নয়; অতএব কার জন্য কি বেদনা? |
কহাঁ রাজা ভোজ কহাঁ গঙ্গু তেলী- হিন্দী প্রবাদ | দুজন মানুষ মধ্যে বিস্তর ব্যবধান থাকে; সমতুল্য- কিসে আরে কিসে সোনা আর সীসে', 'কোথায় রাণী ভবানী, কোথায় ফুলি জেলেনি' ইত্যাদি। |
কাঁচপোকায় আরশোলা খায়/ধরে | এমন অবস্থা যার থেকে নিস্কৃতি নেই। |
কাঁচা খাই, ডাসা খাই, আর খাই পাকা | সর্বভুক। |
কাঁচা গাঁথুনির দুনো খাটুনি // কাঁচা গাঁথুনির নেই আঁটুনি | পরিশ্রম করে গড়ে; ভেঙে গেলে দ্বিতীয়বার পরিশ্রম করে সেগুলি সরায়; কাঁচা কাজ করা নেই। |
কাঁচা গুয়ে ঢিল মারা | অপ্রীতিকর কাজ করে নিজের অনিষ্ট করা। |
কাঁচা বাঁশে ঘুণ ধরা | অল্পবয়সেই দুশ্চরিত্র হওয়া। |
কাঁচা বাঁশে ঘুণ ধরে না | সতেজ তরুণমনে পাপবোধ জন্মে না। |
কাঁচা মাটিতে পা দেওয় | ভুল যায়গায় আগ বাড়া; ভিত্তি সুদৃঢ় না হলে কাজে সাফল্য আসে না। |
কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ পাকলে করে ট্যাঁশ ট্যাঁশ | সময়ে শিক্ষা না দিলে সন্তান মানুষ হয় না; বদঅভ্যাসের লাগাম টেনে না ধরলে পরে বিপত্তি ঘটে; কোন কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রাথমিক অবস্থাতেই তা করা উচিত তা বোঝাতে এই প্রবাদ বলা হয়। |
কাঁচে কাঞ্চনে সমান১ | কোনটা অল্পমূল্যের, কোনটা বেশি মূল্যের তা বোঝার সামর্থ নেই। |
কাঁচে কাঞ্চনে সমান২ | সংসারবৈরাগি কাছে দুইই সমভাবে উপেক্ষণীয়। |
কাঁটাগাছের তলায় থাকে | সবসময় চিন্তার থাকা শঙ্কিত থাকা[ সমতুল্য- 'নদীর তীরে বাস, ভাবনা বারোমাস'। |
কাঁটাচামচের আগে আঙ্গুলের জন্ম | হাতে খাওয়ার পক্ষে ওকালতি। |
কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা১ | একদুষ্টের বিরুদ্ধে অন্যদুষ্ট লেলিয়ে দিয়ে উভয়ের বিনাশ সাধন করা। |
কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা১ | শত্রু দিয়ে শত্রুনাশ করা; সমতুল্য- 'জল দিয়ে জল বার করা'; 'ঢিল দিয়ে ঢিল ভাঙা'। |
কাঁটা বিনা কমল/গোলাপ নাই | অবিমিশ্র সুখ হয় না; সুখদুঃখ জড়িয়ে জীবন। |
কাঁঠালের আমসস্ত্ব | অবাস্তব বস্তু; অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না; সমতুল্য- অশ্বডিম্ব, আঁটকুড়ের ব্যাটা, আকাশকুসুম, এঁড়ে গরুর দুধ, ঘোড়ার ডিম, পশ্চিমে সূর্যোদয়, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি |
কাঁড়ানো চালে তিন ঘা পাড় (ঢেঁকির আঘাত) | সম্পন্ন কাজে পুনরায় পরিশ্রম নিস্প্রয়োজন। |
কাঁধে কুড়ুল রেখে বনময় খোঁজে // কাঁধে গামছা ঘরময় খোঁজে | কাছে থাকা জিনিষ নানাস্থানে খুঁজে বেড়ানো; ভোলেভালা লোক; সমতুল্য- চোখে চশমা ঘরময় খোঁজে'; 'বগলে ছাতা/পুঁথি ঘরময় খোঁজে |
কাউকে বুকে করা কাউকে পিঠে করা | কাউকে আদর করা, কাউকে অনাদর করা। |
কাউয়ার ওপর কামানের গুলি/কাকের উপর কামান দাগা | অল্পদোষে বেশি শাস্তি। |
কা কস্য পরিবেদনা | কে কার কথা বিবেচনা করে; কে কার জন্য বেদনা অনুভব করে; বৃথা হাহুতাশ; (মূলশ্লোক- 'কস্য মাতা, কস্য পিতা...') |
কাক কাঁকুড়ের জ্ঞান নেই | দুই বস্তুর তত্ত্বগত পার্থক্য বুঝতে না পারা। |
কাক-কোকিলে ভেদজ্ঞান নেই | ভাল-মন্দের তফাৎ বুঝতে না পারা। |
কাক ও কোকিল একই বর্ণ, কিন্তু স্বরে ভিন্ন ভিন্ন | আকৃতিতে সাধু-অসাধু চেনা যায় না, কাজে বা প্রকৃতিতে তাদের চেনা যায়। |
কাক কোকিলের সমান দাম | ভালমন্দ বিচার নেই; সমতুল্য- 'মুড়িমিছির/মুড়িমুড়কির সমান দর'। |
কাক কাকের মাংস খায় না | স্বজাতির ক্ষতি কেউ করে না বা চায় না। |
কাক খায় কাঁঠাল, বকের মুখে আঠা১ | একজনের অপরাধে অন্যজনের শাস্তি; সমতুল্য-'উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে'; 'কাক খেলো ধান, ব্যাঙের পায়ে দড়ি'। |
কাক খায় কাঁঠাল, বকের মুখে আঠা২ | একের সৌভাগ্য দেখে অপরের ঈর্ষা। |
কাক খেলো ধান, ব্যাঙের পায়ে দড়ি১ | চরম বিশৃঙ্খলা |
কাক খেলো ধান, ব্যাঙের পায়ে দড়ি২ | একজনের অপরাধে অন্যজনের শাস্তি; সমতুল্য- 'উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে'; 'কাক খায় কাঁঠাল, বকের মুখে আঠা'। |
কাক চুরির দ্রব্য লুকিয়ে মনে করে কেউ সেটা দেখে নি | বোকা অনেক সময় অভিজ্ঞকে ফাকি দিতে পেরেছে মনে করে মিথ্যা আত্মতৃপ্তি লাভ করে। |
কাকতালীয়বৎ প্রাপ্তং দৃষ্টাপি নিধিমগ্রতঃ। ন স্বয়ং দৈবমাদত্তে পুরুষার্থমপেক্ষতে॥ (চাণক্য) | কুড়িয়ে নিতে গেলেও চেষ্টা করা চাই; পুরুষের চেষ্টা বিনা সিদ্ধি নাই। |
কাকপক্ষীও টের পাবে না | কেউ টের পাবে না; অতিসতর্ক কাকের কিছুই নজর এড়ায় না। |
কাক ভেজে জলে, ব্যাঙের লাগে সর্দি | আজগুবি কথা, যা কখনো হয় না। |
কাক ভাবে আমি বড় সেয়ানা | আহাম্মকের আত্মগরিমা। |
কাক মরল ঝড়ে, প্যাঁচা ভাবে আমার শাপ লাগল হাড়েহাড়ে | অক্ষমের সান্ত্বনা; শত্রুনিপাত হলে বিপক্ষ ভাবে তার অভিশাপেই এমন ঘটেছে। |
কাক সকলের মাংস খায়, কাকের মাংস কেই খায় না | ঠগ সবাইকে ঠকায়, কিন্তু কেউ ঠগকে ঠকাতে পারে না। |
কাকস্য চঞ্চুয্যদি স্বর্ণযুক্ত মাণিক্যযুক্তৌ চরণৌ চ তস্য। একৈকপক্ষে গজরাজমুক্তা তথাপি কাকো চ ন রাজহংসঃ | সোনাদানার গহণা পড়লেও কাক কখনো রাজহাঁস হয় না; ভালো জামাকাপড় পরলেও চোর কখনো সাধু হয় না। |
কাকিলা বধু ছেলে ধরতে জানে না | কোকিলা সন্তান প্রতিপালন করতে জানে না; ন্যাকামী করা বউয়ের প্রতি বক্রোক্তি। |
কাকে নিয়ে গেল কান, কাকের পিছনে ছোট | নিজে বিবেচনা করে না, পরের কথায় ছুটে মরে। |
কাকের উপর কামান দাগা/কাউয়ার ওপর কামানের গুলি | অল্পদোষে বেশি শাস্তি। |
কাকের ডানায় মুক্তা বসালেও কাক রাজহাঁস হয় না // কাকের লেজে ময়ূরপালক লাগালেও কাক ময়ূর হয় না | অসারবস্তু কখনো সারবস্তু হয় না; নকল কখনো আসল হয় না। |
কাকের ডিম সাদা হয়, বিদ্বানের ছেলে গাধা হয়। | অস্বাবাভাবিক কিছু নয়। |
কাকের পিছনে ফিঙে লাগা | কাউকে অনবরত উত্যক্ত করা। |
কাকের বাসায় কোকিলের ছা, জাতস্বভাবে করে রা | জাতস্বভাব কখনো বদলায় না; সমতুল্য- স্বভাব যায় না মলে। |
কাকের মাংস কাকে খায় না | সমধর্মী লোকেরা পরস্পরের ক্ষতি করে না। |
কাকের লুকানো (খাদ্য) | বোকার মরণ; সে জিনিষ এমনভবে লুকায় যে পরে কাকের মত আর খুঁজে পায় না। |
কাকো ন চ রাজহংসঃ | কাক কখনো রা জহাঁস হয় না। |
কাঙলা আপনা সমালা | আগে সবাই নিজেকে সামলাক; পরের উপকার পরে করা যাবে; সমতুল্য- 'আপনি বাঁচলে বাপের নাম'। |
কাঙালকে শাকের ক্ষেত দেখাতে নেই | অভাবীকে লোভ দেখাতে নেই; যাতে লোকের লোভ বাড়ে এমন কাজ করতে নেই; সমতুল্য- 'ছাগলকে ভাঙা বেড়া দেখাতে নেই'। |
কাঙালী মেরে কাছারি গরম | গরীব মেরে আসর গরম করা। |
কাঙালের অশ্রুতে যে রক্ত ঝরে ভগবান দেখেও কিন্তু দেখে না | ভগবান বড়লোকের ঘরে বাঁধা। |
কাঙালের কথা বাসি হলে খাটে/ফলে | নগণ্যের সঠিক কথা প্রথমে উপেক্ষিত হলেও পরবর্তীকালে সঠিক প্রতিপন্ন হয়। |
কাঙালের কাছে মুড়কিই সোনা // কাঙালের কাছে রাংতাই সন্দেশ | অভাবীর কাছে এককড়ারও দাম আছে; তার পক্ষে যা পাওয়া সম্ভব তাতেই সে সন্তুষ্ট থাকে। |
কাঙালের ক্ষিদে বেশি | কাঙাল শুধু খাই খাই করে। |
কাঙালের/ কাঙালের পুতের ঘোড়ারোগ | যা পাওয়ার অধিকারী নয় তাই পাওয়ার ইচ্ছা; অনুচিত |
কাঙালের ঠাকুরব্যাধি | যে খেতে পায় না সেও পূজা করতে চায়; অবস্থার অরিতিক্ত ব্যয়ের বাসনা। |
কাঙালের মরণ বিটকেল | কাঙাল সুখে মরতেও পারে না, অনেক কষ্ট পেয়ে মরে। |
কাচঃ কাচঃ মণির্ম্মণি | যে যা, তাই থাকে; কাঁচ কাঁচই থাকে; মণি মণিই থাকে; কাচ মণি হয় না; মনি কাচ হয় না। |
কাছা খুলতে দেরী হয়১ | কাজে সবসময় ঢিলে ঢালা |
কাছা খুলতে দেরী হয়১ | কপাল চাপা; অদৃষ্ট সহজে সুপ্রসন্ন হয় না। |
কাছা দিতে কোঁচা আঁটে না, কোঁচা দিতে কাছা আঁটে না | অভাবের সংসার; সবসময় অর্থের টানাটানি; সমতুল্য- 'পা ঢাকলে মাথা ঢাকে না, মাথা ঢাকলে পা ঢাকে না' |
কাছের লোক কাছের নয় | কাছের লোক বিপদের সময় সরে থাকে; ঘরের লোক বেশি শত্রুতা করে; সমতুল্য- 'আপন থেকে পর ভাল', 'ভাইভাই ঠাঁই ঠাঁই', 'যত রক্তের কাছাকাছি তত রক্তারক্তি' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'আপন কখনো পর হয় না', 'বসুধৈব কুটুম্বম' ইত্যাদি। |
কাছের লোক গাড়ী ফসকায় | কাছের লোকের গয়ং গচ্ছভাবের প্রতি তির্যোক্তি। |
কাজ আটকালে বুদ্ধি যোগায় | সমস্যায় পড়লে বুদ্ধি খোলে; সমস্যা সমাধানের উপায় আপনি মাথায় আসে। |
কাজ নেই কাজ করে, ধানে চালে এক করে | কাজ নেই তো অকাজ, কুকাজ করে। |
কাজও নেই, কামাইও নেই | অনির্দিষ্ট কাজের কোন নিয়ম থাকে না; যখন-তখন উপস্থিত হতে হয় বলে অনির্দিষ্ট কাজে বিরাম পাওয়া যায় না। |
কাজ নেই তো ভাজো খই | অকাজে সময় নষ্ট করা। |
কাজ শুরু হলেই অর্ধেক কাজ শেষ | কাজের প্রস্তুতিতেই অর্ধেক সময় ব্যয় হয়। |
কাজ সরিয়ে রাখলে কাজ বরবাদ | কালে পেলে কজ কোনদিন শেষ হয় না। |
কাজীর কাছে হিঁদুর পরব | ভিন্ন মতাবলম্বীর কাছে স্বীয় মতের পোষকতা পাওয়া যায় না। |
কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই | সরকারী কাজে হিসাবের গোলমাল। |
কাজীর বিচার১ | তোমার অর্ধেক, আমার অর্ধেক; মাঝামাঝি রফা |
কাজীর বিচার২ | অন্যায় বিধিবিরুদ্ধ পক্ষপাতদুষ্ট বিচার; একপেশে বিচার |
কাজে এড়া অকাজে দেড়া | কাজ করে না অকর্ম করে। |
কাজে এড়া, আচারে দেড়া | আচারসর্বস্ব। |
কাজে এড়া ভোজনে দেড়া // কাজে কম খেতে যম // কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা,খাবার বেলায় বেশি বেশি | যে চাকর খাটে কম খায় বেশি তার সম্পর্কে প্রযোজ্য |
কাজে কুঁড়ে ভোজনে দেড়ে বচনে মারে পুড়িয়ে ঝুড়িয়ে | অলস, ভোজনপটু ও কর্কশভাষী বচনসর্বস্ব নির্গুণ ব্যক্তি সম্পর্কে প্রবচন |
কাজের কথা মনেই থাকুক, মুখে প্রকাশ করো না | মূল্যবান কথা পাঁচকান কর'তে নেই। |
কাজের কাজি | কর্মঠ দক্ষ কাজের লোক, যে কার্যত করে, শুধু মুখে বলে না। |
কাজের বেলায় পায় না খুঁজে, খাবার বেলা সবার আগে // কাজের বেলায় ভাগে খাবার বেলায় আগে | পরিশ্রমে বিমুখ কিন্তু খাবার বেলায় প্রথম পাতে। |
কাজের বেলায় কাজি কাজ ফুরালে পাজি | যে কাজ করবার জন্য সনির্বন্ধ অনুরোধ করে কিন্তু কাজ শেষ হলে খোঁজখবর নেয় না; কার্যোদ্ধার হতেই উপকারীকে অগ্রাহ্য; প্রয়োজনের সময় কাউকে তোষামোদ, প্রয়োজন শেষ হলে তার পাছায় লাথি; প্রয়োজনের সময় তোষামোদ করা আর প্রয়োজন শেষ হলে ভুলে যাওয়া। |
কাজের মধ্যে চাষ, রোগের মধ্যে কাশ | দুইই সমানভাবে কষ্টদায়ক। |
কাজের মধ্যে দুই খাই আর শুই | চুড়ান্ত অলসের প্রতি শ্লেষোক্তি; সমতুল্য-'অলসের চূড়ামণি'; 'নিকম্মার ঢেঁকি'। |
কাজের হাত, পা, মাথা ও মুণ্ডু- কিছুই নেই | বিশৃঙ্খল কাজ। |
কাটতে কাটতে নির্মূল | বড় জিনিস কাটতে কাটতে এমন ছোট হল যে আর কাজে আসে না। |
কাটলে রক্ত নেই, কুটলে মাংস নেই | অসার শুকনা কাঠের মত শরীর। |
কাটা কইয়ের মত ছটফট করা | নিদারুণ যন্ত্রণায় ছটফট করা |
কাটা কাটা কথা আগুনের জ্বালার চেয়েও জ্বালাময় | অন্তরে তীব্র জ্বালা ধরায়। |
কাটা কান চুলদে ঢাকি | কানকাটা লোক ঘরের কলঙ্ক পাঁচকান করে না, লুকিয়ে রাখে। |
কাটা ঘায়ে নূনের ছিটে১ | অপমানের উপর অপমান। |
কাটা ঘায়ে নূনের ছিটে২ | ব্যথার উপরে আরও ব্যথা দেওয়া; যন্ত্রণার ওপর যন্ত্রণা। |
কাটো তো খুন নহীঁ- হিন্দী প্রবাদ | কাটো তবে রক্ত যেন না পড়ে; প্রচণ্ড ভয়ে ভীত; ভয়ে আধমরা অবস্থা। |
কাঠ খায় আঙরা হাগে | উনুন; মন্দ কাজ করে মন্দ ফলভোগ করে। |
কাঠবিড়ালীর সাগর বাঁধা | অসাধ্য কাজ সম্পাদনের প্রচেষ্টা; মহৎকাজে নগণ্যের সাহায্য উপেক্ষণীয় নয়। |
কাঠে কাঠে কাঠাকাঠি | সমানে সমানে লড়াই; সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি; যেমন কুকুর তেমন মুগুর। |
কাঠের বিড়াল হোক না, ইঁদুর ধরতে পারলেই হ'ল | উপায়, যন্ত্র যাই হোক কাজ হলেই হ'ল। |
কাঠের ভিতর পিঁপড়ে বলে চিনি ছাড়া খাবনি, চিন্তামণি চিন্তা করে যোগায় তারে অমনি | জীবের রক্ষাকর্তা ভগবান; অপ্রত্যাশিত স্থলেও ভগবান লোকের অভিলাষ পূরণ করেন; সমতুল্য- 'যে খায় চিনি, তারে যোগান চিন্তামণি'। |
কাণ্ডজ্ঞানবিশিষ্ট লোক থেকে সতর্ক থেকো যদি সে ক্রুদ্ধ হয়- আরবী প্রবাদ | স্থিরমস্তিস্কের লোকেরা কুপিত হলে বিষম ব্যাপার ঘটে যায়। |
কা তব কান্তা কস্তে পুত্রঃ। সংসারোহমতীব অতি বিচিত্রঃ।। (চাণক্য) | কে তোমার স্ত্রী, কে তোমার পুত্র; এই সংসারে ব্যাপারস্যাপার খুবই বিচিত্র। |
কা তব কান্তা কস্তে পুত্রঃ। সংসারোহমতীব অতি বিচিত্রঃ।। কস্য ত্বং বা কুত আয়াতঃ, তত্ত্বং চিন্তয় তদিদং ভ্রাতঃ।। (চাণক্য) | কে তোমার স্ত্রী, কে বা তোমার পুত্র; এই সংসার খুবই বিচিত্র; হে ভাই তুমি কার বা কোথা থেকে এসেছো এই তত্ত্ব চিন্তা কর। |
কাদায়/খানায়/গর্তে পড়লে হাতি, চামচিকেতে মারে লাথি | অসহায় অবস্থায় পেলে সকলেই দুর্ব্যবহার করে। |
কাদায় গুণ ফেলা | ধৈর্য ধরে থাকা; সবুরে মেওয়া ফলে |
কান চাটা (কানে ক্ষতরোগ) গাফাটা গায়ে দাদ যার সদাই বিরস মন সুখ নেই তার | শরীরে নানারোগ থাকলে মনে সুখশান্তি থাকে না। |
কান চায় সোনারে (শোনা), সোনা চায় কানেরে | পরস্পরে অনুরক্ত লোকে পরস্পরের সান্নিধ্য খোঁজে। |
কান টানলে মাথা আসে | উপলক্ষ্য ধরে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়; একটা বিষয়ের খোঁজ নিতে চাপ দিলে সম্পর্কিত অন্য বিষয়ের খোঁজও পাওয়া যায়। |
কান নিয়ে গেল কাকে কাকের পিছনে পিছনে ছোটা | বিচার বিবেচনা না করে উদ্ভ্রান্তের মত কাজ করা। |
কানপুর দিয়ে নাগপুর যাওয়া | ঘুরিয়ে/বাঁকাপথে কাজ করা; অযথা সময় নষ্ট করা। |
কান মন্ত্রে মন নাশ | কান ভাঙানিতে মনে মালিন্য জন্মে। |
কানাইয়ের মা | পরের ছেলের মা। |
কানা কয়বার নড়ি (লাঠি) হারায় | একবারও না; যার যেটা একমাত্র অবলম্বন সেই বিষয়ে সে খুব সতর্ক থাকে। |
কানা কাঁদেন সোনারে, সোনা কাঁদেন কানারে // কানা চায় সোনারে, সোনা চায় কানারে | সোনা পড়লে কানের শোভা বাড়ে, আবার কানে গেলে সোনার সৌন্দর্য বাড়ে; পরস্পর অনুরক্ত লোকে পরস্পরের সান্নিধ্য খোঁজে। |
কানা, কুঁজো, খোঁড়া, তিন অসতের গোড়া // কানা খোঁড়া কুঁজা তিন নোয় সুজা (সহজ) | লোকে মনে করে এই তিনপ্রকারের লোক দুষ্টপ্রকৃতির হয় (সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা)। |
কানা খোঁড়ার এক গুণ বাড়া | নির্গুণের অহংকার/বড়াই বেশি হয়; লোকের ধারণা এরা একটি স্বতন্ত্রপ্রকৃতির হয়; কিংবা শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তি বেশি অনুভবী হয়। |
কানা গরু বাতাস বইলেই ভয় পায় | দুর্বলের একটুতেই ভয় হয়। |
কানা গরু বামুনকে দান | অবজ্ঞা/অশ্রদ্ধার দান; অপ্রয়োজনীয় বস্তু দান করে পূণ্যলাভের আকাঙ্ক্ষা। |
কানা গরুর ভিন্ন গোঠ/পথ/মাঠ | অজ্ঞান/কাণ্ডজ্ঞানহীন লোক কানাগরুর মত গোয়ালের দিকে না গিয়ে অর্থাৎ নিরাপদ পথ ত্যাগ করে বিপধে যায়; বুদ্ধিহীন লোক যুক্তির পথে হাঁটে না; সমতুল্য- মুরাস্তৃতীয়ঃ পন্থাঃ |
কানা গলিতে ঘুরে মরা | দিশাহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো; নিস্কৃতির পথ হন্নে হয়ে খুঁজে মরা। |
কানা ঘোড়ার সিধা দৌড় | আহাম্মকের বিপথে চলা। |
কানা চোখে দিয়ে কাজল, আপন রূপে আপনি পাগল | আপনার চেয়ে কেউ বেশি সুন্দর নয়। |
কানাছেলের/পুতের নানারোগ১ | অক্ষমের নানাদিক থেকে ঘাটতি থাকে। |
কানাছেলের/পুতের নানারোগ২ | ক্লিষ্ট লোকের নানা কষ্ট থাকে। |
কানাপুতের নাম পদ্মলোচন // কালো ছেলের নাম গৌরাঙ্গসুন্দর | কুৎসিতকে সুন্দর করার হাস্যকর প্রয়াস; গুণহীনে গুণের আরোপ; অযোগ্যকে অতিরিক্ত সম্মানদান; সমতুল্য- 'আঁখোকে অন্ধ নাম নয়নসুখ'; 'ঘুঁটে কুড়ানীর ছেলের নাম চন্দবিলাস' ইত্যাদি। |
কানামেঘের বৃষ্টি সর্বত্র নয় দৃষ্টি১ | অবিবেচকের একদেশদর্শী বিচার। |
কানামেঘের বৃষ্টি সর্বত্র নয় দৃষ্টি | খামখেয়ালী বড়লোকের দান সাধারণের মধ্যে সমানভাবে বণ্টিত হয় না। |
কানায়ে ভাগনে/ভাগিনা | লম্পটচরিত্রের লোক। |
কানু ছাড়া কীর্তন/গীত নাই১ | একমাত্র গতি, অনন্যোপায়; সমতুল্য- 'নান্য পন্থা বিদ্যতে অয়নায়'। |
কানু ছাড়া কীর্তন/গীত নাই২ | সকল প্রসঙ্গে একই বিষয়ের উথাপনা। |
কানে কলম গুঁজে দুনিয়াভর খোঁজে | তুলনীয়-কাঁধে কুড়ুল রেখে বনময় খোঁজে |
কানে কানে কথা থাকে না গোপনে | কথা পাঁচকান হলে সে কথা গোপন থাকে না। |
কানে দিয়েছি তুলো, পিঠে বেঁধেছি কুলো | কিছুতেই কিছু না করা; সবকিছু অগ্রাহ্য করা। |
কানে হাত না দিয়েই বলে কান নিয়ে দেল চিলে | অবিবেচকের মত কাজ; অবোধা পরের কথায় নেচে মরে। |
কানের জল, জল দিলেই বেরোয় | বিষে বিষে বিষক্ষয় হয়। |
কানের পিছনে উকুনের বাসা | পিছনে শত্রু দাঁড়িয়ে আছে সাবধান- সতর্কবাণী |
কাপড় বুঝে জামা কাটো- ইংরাজী প্রবাদ | ক্ষমতা বুঝে কাজ কর; সমতুল্য- 'অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা'; 'আয় বুঝে ব্যয় কর'; 'যতদূর মাদুর ততদূর পা ছড়াও', 'যতদূর চাদর দিয়ে পা ঢাকতে পারো ততদূর পা ছড়াও' ইত্যাদি। |
কাপড় হলে পচা, আঙ্গুল হয় খোঁচা১ | একটা কোন অজুহাত দেখানো। |
কাপড় হলে পচা, আঙ্গুল হয় খোঁচা২ | অদৃষ্টে ক্ষতি লেখা থাকলে সামান্য বিষয় থেকেও ক্ষতি হতে পারে। |
কাপড়ে আগুন ঢাকা যায় না১ | সত্যকে মিথ্যার আবরণে ঢাকা যায় না। |
কাপড়ে আগুন ঢাকা যায় না২ | কলঙ্ককে কোন অজুহাতে চাপা যায় না। |
কাপড়ের দাগ যায় ধুলে, মনের দাগ যায় মলে। | মনের দাগ জীবনে যায় না। |
কাম নাই কুত্তার আইলে আইলে দৌড় | যার কাজ নেই সে ফালতু কাজ বেশী করে। |
কামড়াতে না পারো তো দাঁত দেখিয়েও না | মিছিমিছি ভয় দেখিয়ো না। |
কামড়িয়ো না ফোঁস কর | ক্ষতি করো না; ভয় দেখাও। |
কামলা (ন্যাবা রোগী) আপনি সামলা | বৈদ্য নিজেই নিজেকে নিরাময় কর; যে যার নিজেরটা দেখুক। |
কামলা সব শ্যামলা দেখে | মন্দচোখে সবই মন্দ দেখে; সমতুল্য- 'আবিল দৃষ্টি সব হলদে দেখে' |
কামাতে না পারে নাপিতের ধামাভরা ক্ষুর // কামাতে পারে না নাপিত ধামাভরা ক্ষুর, কামাতে কামাতে যায় রঘুনাথপুর | অক্ষমের ভড়ং বেশি; কিছু কাজ জানে না, শুধু কিছু কথা শিখে রেখেছে। |
কামানো মাথায় ক্ষুর বোলায় | অপ্রয়োজনীয়/বাহুল্য কাজ। |
কামার বুড়ুলে লোহা শক্ত হয় | বৃদ্ধ কামার লোহা পিটতে অসমর্থ হয়ে বলে লোহা শক্ত হয়েছে; অক্ষমের অজুহাত; সমতুল্য- নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা'। |
কামারের কাছে ছূঁচ বেচতে আসা // কামারের কাছে লোহা চুরি | উপরচালাকি; চতুরের সাথে চাতুরী; অভিজ্ঞ চোখকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা। |
কামারের কাছে লোহা জব্দ | বলবানকে বলবানই দমন করতে পারে; শক্ত পাল্লায় পড়লে সবাই বাগে থাকে। |
কামারের কাজ কুমোরের সাজে না // কামারের কুমোর বৃত্তি | অনধিকারে হাত বাড়ানো ঠিক নয়; যে কাজে পটু নয় সেই কাজ করতে গেলে বিপত্তি হয়। |
কার কপালে/ভাগ্যে কেবা খায় | কেউ কারো সুখ-দুঃখের জন্য দায়ী নয়; সকলেই নিজনিজ অদৃষ্ট অনুসারে সুখ-দুঃখ ভোগ করে। |
কার শ্রাদ্ধ কে বা করে, খোলা কেটে বামুন মরে/কার শ্রাদ্ধ, বামুন হদ্দ | যার কাজ তার মনযোগ নেই অন্যে তার জন্য খেটে মরে; একজনের সমস্যার জন্য অন্যের চিন্তা করা বৃথা। |
কার সাধ্য মারে তারে, খোদা হেসে রাখে যারে | ঈশ্বর যাকে রাখে তার ক্ষতি হয় না। |
কারণ বই কার্য নাই // কারণবিনা কেউ বন্ধু নয়, কেউ শত্রু নয় | অকারণে কিছু হয় না; সমতুল্য- ধোঁয়া থাকলে আগুন আছে; বিনা কারণে গাছের পাতা নড়ে না; বিরুদ্ধ উক্তি- 'অকারণে হৈ চৈ'; 'নেই মাথা তার মাথা ব্যাথা' ইত্যাদি। |
কারে পড়ে আল্লার নাম | বিপদে না পড়লে কেউ ঈশ্বরকে ডাকে না; সমতুল্য- 'ঠেলায় পড়ে ঢেলায় প্রণাম', 'বিপদে পড়লে শ্রীমধুসূদন' ইত্যাদি। |
কারে ভজে কার দাস | খণ্ড ঈশ্বরধারণার জন্য খেদোক্তি। |
কারো আগেও নয় কারো পাছেও নয় | কোনপ্রকার তোষামোদি নয়; কোনপ্রকার উঁচুনীচু নয়; |
কারো উপকার করলে কখনো উল্লেখ করো না আর কেউ উপকার করলে তাকে কখনো ভুলো না | আত্মপ্রচার করো না এবং অকৃতজ্ঞ হয়ো না; সমতুল্য- 'অকৃতজ্ঞের নরকবাস'। |
কারো ঘর পোড়ে, কেউ আগুন পোহায় // কারো ঘর পোড়ে, কেউ ধোঁয়া খায় | একের বিপদে অন্যের সুখভোগ; কারো দুঃখ, কারো বা সুখ; সমতুল্য- 'কারো পৌষমাস, কারো সর্বনাশ'; 'কারো শাকে বালি, কারো দুধে চিনি'। |
কারো চাকর নই, কারো প্রভুও নই- এব্রাহাম লিঙ্কন | সমানে সমানে ব্যবহার চাই; সাম্যের অধিকার। |
কারো দুধে চিনি কারো শাকে বালি // কারো শাকে বালি কারো দুধে চিনি | কারো সুখের ওপর সুখ, কারো দুঃখের ওপর দুঃখ; কারো ঘরে ঝাড়বাতি জ্বলে; কারো ঘরে প্রদীপ জ্বলে না; সমতুল্য- 'কারো ঘরে ঝাড়বাতি; কারো ঘর নিস্প্রদীপ'। |
কারো দুধে চিনি কারো শাকে বালি // কারো শাকে বালি কারো দুধে চিনি | কারো প্রয়োজনীয় বিষয়ে বিঘ্ন, কারো প্রয়োজনীয় বিষয়ে অতিরিক্ত বিদ্যমান। |
কারো ধার ধারি না | চাটুকারীতা করতে অনিচ্ছুক, মোটেই পছন্দ নয়। |
কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ | কারো বিরাট লাভের পাশাপাশি অন্য কারো বিরাট ক্ষতি হওয়া; কেউ সৌভাগ্যবান কেউ হতভাগ্য; সমতুল্য- কারো ঘর পোড়ে, কেউ ধোঁয়া খায়; 'গো মড়কে মুচির পার্বণ'। |
কারো প্রতি অটুট শ্রদ্ধা রাখার একমাত্র উপায় হল তার সাথে কখনো দেখা না করা | বেশি ঘনিষ্টতায় দোষগুণ ধরা পড়ে। |
কারো সাথে ভাগাভাগি করলে সমস্যা অর্ধেক হয়ে যায় | কাজ ভাগ করে নিলে কাজ হালকা হয়; দশের লাঠি, একের বোঝা। |
কারোকে বুকে করা কারোকে পিঠে করা | একজনকে আদর করা অন্যজনকে অনাদর করা। |
কার্তিকের জল উনো, ধান জন্মে দুনো- খনা | কার্তিকমাসে জত জল কম হবে ধানগাছে তত বেশী ধান ফলবে। |
কার্যকালে সমুৎপন্নে ন সা বিদ্যা ন তদ্ধনম্ | প্রয়োজনের সময় কাজে লাগে না, এমন বিদ্যা নয়, এমন ধন ধন নয়। |
কার্য থাকলে কারণ আছে | কারণ বিনা কোন কাজ হয় না; সমতুল্য- 'অকারণে কিছু হয় না', 'ধোঁয়া থাকলে আগুন আছে', 'পর্বতো বহ্নিমান ধুমাৎ' ইত্যাদি; বিরুদ্ধউক্তি- 'অকারণে হৈচৈ', 'মাথা নেই তার মাথাব্যথা' ইত্যাদি। |
কালনেমির লঙ্কাভাগ | অতি আগাম পরিকল্পনা; অতি আশা করে নিরাশ হওয়া; সমতুল্য- 'আম না হতে আমসি/আমস্বত্ব', 'গাছ না উঠতে এককাঁদি','গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল';'পাত্রপাত্রীর দেখা নাই, শুক্রবারে বিয়ে'; 'রাবণের ছাদনাতলা';'রাম না হতে রামায়ণ' ইত্যাদি। |
কাল ছিলাম বসে স্বর্ণপিঁড়ে আজ বসেছি আস্তাকুঁড়ে | অবস্থা বিপর্যয়ের জন্য খেদোক্তি; সুখের পরে দুঃখ। |
কাল যায় না জল যায় | জলেস্রোতের মত সময় বয়ে যায়। |
কাল রাম রাজা হবে আজ তার বনবাস | আকস্মিক বিপদ এসে উপস্থিত; সুখভোগের মুহূর্তে দুঃখভোগ; আনন্দের মাঝে দুঃসংবাদ; আশায় নৈরাশ্য। |
কালস্য কুটিলা গতিঃ | কালচক্রের গতি বোঝা ভার; কখন কি হবে কেউ জানে না। |
কালা জগতের আলা | শ্রীকৃষ্ণ বিনা সব অন্ধকার। |
কালা অক্ষর ভৈঁসা বরাবর- হিন্দি প্রবাদ | অশিক্ষিত, একদম লিখতে পড়তে জানে না। |
কালা কাজলের মাটি, তা'র লাগি ছ'মাস হাঁটি; সুন্দর ধুতুরার ফুল, তা'র নাই কড়ার মূল | গুণবতী কালো হলেও ভালো; গুণহীনা রূপবতী হলেও গন্ধহীন ধুতুরা ফুলের মতই মূল্যহীন; সমতুল্য- 'জাতের নারী কালাও ভালা, নদীর পানি ঘোলাও ভালা','রূপে মারি লাথি, গুণে ধরি ছাতি'। |
কালা (কানে খাটো) পুরুত, তোতলা যজমান | এমন মনিকাঞ্চন যোগে শ্রাদ্ধের কাজ এগোয় না; কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটে। |
কালা বলে গায় ভালো, কানা বলে নাচে ভালো | অবোধের অবুঝ দাবী; অজ্ঞরা জ্ঞানীর ভান করে; ফাঁকিবাজী। |
কালা বামুন, কটা শুদ্র, বেঁটে মুসলমান, ঘরজামাই, পোষ্যপুত্র- পাঁচজনাই সমান | কথিত আছে এই পাঁচজনের স্বভাব ভালো হয় না। |
কালা শোনে ঢাকের বাদ্যি কালা বলে আমার বিয়েরর বাদ্যি | একের কাজে অন্যের কাজ আরোপ। |
কালি কলম পাত, তবে লেখার হাত // কালি কলম পাত, যেমন তেমন হাত | কালি কলম ও কাগজ ভাল হলে কাঁচা হাতেও সুন্দর লেখা বেরোয়; উত্তম উপায় ও উপকরণ হলে কাজও উত্তম হয়। |
কালি কলম মন, লেখে তিন জন | লেখার উপকরণ ভাল হলে এবং মনোসংযোগ থাকলে লেখাও সুন্দর হয়। |
কালির অক্ষর/আঁচর নাইকো পেটে, চণ্ডী পড়ে কালীঘাটে | মুর্খ বামুনে চণ্ডীপাঠ করে; আগে কালিঘাটের এই দুর্নাম ছিল। |
কালীঘাটের কাঙ্গালী | নাছোড়বান্দা। |
কালীঘাটের লোকের কালীদর্শন হয় না | গয়ংগচ্ছভাবের জন্য কাছের লোকের দেরী হয়; সমতুল্য-'আগ্রার মানুষ তাজমহল দেখে না', 'গির্জার পাশের মানুষ গির্জায় যায় না','মক্কার মানুষ হজ্জ পায় না ইত্যাদি। |
কালে কালে কতই হল পুলিচিঠের লেজ গজালো // কালে কালে কতই হ'ল বেগুনের হাড় হ'ল | কোন অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটলে এই প্রবাদ বলা হয়। |
কালের আবার কালাকাল | মৃত্যু কখন এসে উপস্থিত হবে কেউ বলতে পারে না। |
কালো আর কালোয় মিলে ধলো হয় না১ | সমজাতীয়/ধর্মীয় মিলনে ভিন্ন জাত/ধর্ম উৎপন্ন হয় না। |
কালো আর কালোয় মিলে ধলো হয় না২ | সবসময় বিষে বিষে বিষক্ষয় হয় না। |
কালো আর ধলো বাইরে কেবল, ভিতরে সবাই সমান রাঙা | সবারই রক্তের রঙ লাল। |
কালো ছেলের নাম গৌরাঙ্গসুন্দর | কুৎসিতকে সুন্দর করার ব্যাপার; যা নয় তাই হওয়ার চেষ্টা; সমতুল্য-'আঁখোকে অন্ধ নাম নয়নসুখ'; কানাছেলের নাম পদ্মলোচন; 'ঘুঁটে কুড়ানীর ছেলের নাম চন্দবিলাস' ইত্যাদি। |
কাশীধাম ঘুরে কাঞ্চীপুরপম/কামাখ্যা যাত্রা | ঘুরপথে/বাঁকাপথে কাজ করা। |
কাশীধামে কাক মরেছে কালিঘাটে/কুমিল্লাতে হাহাকার | অকারণ হৈচৈ; অনধিকার চর্চা; মাথা নেই মাথাব্যথা |
কাশীধামে ভূমিকম্প | কোন অসম্ভব ঘটনার সংগঠন; মানুষের বিশ্বাস শিবের ত্রিশুল কাশীতে ভূমিকম্প হতে দেয় না। |
কাহারও পৌষমাস কাহারও সর্বনাশ | কোন ঘটনায় একজনের লাভ হয় এবং অন্যজনের ক্ষতি হয়। |
কি অপূর্ব সৃষ্টি মা তিতা, ছা মিঠা | পলতা তিতা পটল মিষ্টি; কু থেকে সু সৃষ্টি হতে পারে; পাঁকে পঙ্কজ জন্মে। |
কি দিব কি দিব খোঁটা গয়ায় মরেছে বাপবেটা | নিন্দা করার কিছু না পেলে যা খুশি বলে নিন্দা কর। |
কিং করিষ্যন্তি বক্তারঃ শ্রোতা যত্র ন বিদ্যতে। নগ্নক্ষপণকে দেশে রজকঃ কিং করিষ্যতি॥ (চাণক্য) | যে সভায় যোগ্য শ্রোতা নেই সেখানে বক্তা কী করবেন? যেদেশে সকলেই উলঙ্গ সে দেশে ধোপার কী কাজ? |
কিং কুর্বন্তি গ্রহা সর্ব্বৈ যস্য কেন্দ্রী বৃহস্পতিঃ | তুঙ্গে যার বৃহস্পতি অন্যান্য গ্রহেরা তার কিছু করতে পারবে না। |
কিং কুলেন বিশালেন গুণহীনস্তু যো নরঃ। অকুলীনোহপি শাস্ত্রজ্ঞো দৈবতৈরপি পূজ্যতে॥ (চাণক্য) | কুলীনবংশে জন্মগ্রহণ করলেও গুণহীন ব্যক্তি সার্থকতা কোথায়? অপরপক্ষে কুলীনবংশে জন্মগ্রহণ না করলেও শাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তিকে দেবতারা সমাদর করেন। |
কিংকর্তব্যবিমূঢ় | দ্বিধা-দ্বন্দ্বে মনস্থির করতে অপারগ; সমতুল্য- ত্রিশঙ্কু অবস্থা';'বেড়ার ওপর বসে'। |
কিংবা স্বয়ম্ভূ শিবশক্তিবিষ্ণুঃ কপালদুঃখং ন করোতি দূরম্; স্বকর্ম ভোগং কুরুতে জীবং কপালমূলং খলু সর্বদুঃখম।। | ব্রহ্মা, বিষ্ণু মহেশ্বর কেউই কপালের দুঃখ দূর করতে সমর্থ নহেন; জীবগণ স্ব স্ব কৃত কর্মের ফল ভোগ করে থাকে; সুতরাং কপালই সব দুঃখকষ্টের মূলকারণ। |
কিছু করার আগে তিনবার ভাববে- চীনা প্রবাদ | ভালভাবে ভেবেচিন্তে কাজ কয়ড়া উচিত। |
কিছু করার ক্ষেত্রে যারা আগে উপস্থিত হয় তাদের শাস্তি দাও এবং যারা পরে উপস্থিত হয় তাদের বাধা দাও- চীনা প্রবাদ | কোন কিছুতেই ব্যগ্রতা সমর্থনযোগ নয় আবার দীর্ঘসূত্রিতাও সমর্থনযোগ্য নয়; সময়ানুবর্তিতাই আদর্শ হওয়া উচিত। |
‘কিছু না’ করলে কিছু হয় না | কাজ না করলে কার্যসিদ্ধি প্রশ্ন নেই। |
‘কিছু না’ করা কুকাজ করার সামিল | না এগুনোর অর্থ পিছিয়ে যাওয়া। |
'কিছু না’ শিখলে অকাজ করা শেখা হয়। | অলসে সময় কাটানো অকাজের সামিল। |
কিছু পেতে গেলে কিছু দিতে হয় | দক্ষিণাবিনা কার্যসিদ্ধি হয় না। |
‘কিছুই শিখি নি’ বলতে পারাটাই সব থেকে বড় শিক্ষা | ক্ষুদ্রজীবনে অসীম জ্ঞানভান্ডার থেকে অনু পরিমাণ আহরণ করা যায়। |
কিনতে ছাগল, বেচতে পাগল | কেনার সময় ছাগলের মত তাড়াতাড়ি করে এবং বেচার সময় পাগলের মত হন্যে হয়ে বেড়ায়; অবিবেচক, বেহিসাবী, কোন কিছুতে তর সয় না। |
কিন্তু রোষপরীতেন গুরুণা জায়তি গুণঃ। শত্রোরপি গুণা বাচ্যা দোষা বাচ্যা গুরোরপি।। (চাণক্য) | গুরূ রোষের বশে কিছু বললেও গুণের কথা বলে; কিন্তু শত্রূর গুণ থাকলে তা ব্যক্ত করবে এবং গুরুর দোষ থাকলে তাও ব্যন্ত করবে। |
কিবা জ্যেষ্ঠ কি কনিষ্ঠ, যেই বুঝে সেই শ্রেষ্ঠ | বয়স যাই-হোক-না-কেন জ্ঞানীর স্থান সর্বাগ্রে; সমতুল্য- 'বয়সে না বড় হয়, বড় হয় জ্ঞানে'। |
কিভাবে কথা বলতে হয় না জানলে অন্তত কিভাবে চুপ থাকতে হয় তা শিখে নাও | অক্ষমতা লুকাতে চেষ্টা করো; এটাও একধরণের শিক্ষা। |
কিমাশ্চর্য্যমতঃপরম্ | কি অদ্ভুত ব্যাপার; এর পর/বেশি আশ্চর্য হওয়ার কি আছে? (মূলশ্লোক- 'অহন্যহনি ভূতানি গচ্ছন্তি যমন্দিরম্...') |
কিমাদ্রবণিজো বহিত্রচিন্তয়া | আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবরের কাজ কী? |
কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে, কভু আশীবিষে (বিষধর সাপ) দংশেনি যারে-কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার | সুখী মানুষ জীবনযন্ত্রণা কাকে বলে জানে না; ভুক্তভোগীই একমাত্র বোঝে যন্ত্রণার জ্বালা কি; ব্যথিত হৃদয়ের বেদনা একমাত্র সমব্যথীই বুঝতে পারে; সমতুল্য- অকণ্টকবিদ্ধ কি জানে কাঁটাফুটা কি? |
‘কি হতে পারি’ কথা নয়, কথা হল ‘কি করতে পারি' | নিজের চেষ্টায় করার আনন্দই আলাদা। |
কিল খেয়ে কিল চুরি/হজম১ | অপমানিত হয়েও ঘটনা গোপন করা। |
কিল খেয়ে কিল চুরি/হজম২ | মার খেয়েও পালটা মার না দেওয়া। |
কিল মারার গোঁসাই | সুখ দিতে পারে না দুঃখ দিতে সবসময় মুখিয়ে আছে। |
কিলিয়ে কাঁঠাল পাকানো | সময়ের আগেই কার্যসিদ্ধির চেষ্টা। |
কিল্লা/কেল্লা ফতে- আরবী প্রবাদ | সফল কার্যোদ্ধার, সিদ্ধিলাভ |
কিসে আর কিসে সোনা আর সীসে | দুটো অসম বিষয়ের তুলনা হয় না। |
কিসের মধ্যে কি, পান্তা ভাতে ঘি // কিসের নাই কি পান্তা ভাতে ঘি | অবিবেচনাপ্রসূত কাজ; পান্তাভাতে ঘি দিয়ে খাওয়া রীতিবিরুদ্ধ এবং হাস্যকর। |
কিসের মধ্যে কি, বেগুন পোড়ায় ঘি // কিসের নাই কি বেগুনপোড়ায় ঘি | বেগুনপোড়ায় তেল দেয় ঘি দেয় না; অযথা অর্থের অপচয় করে বড়লোকীপনা দেখাতে গিয়ে হাস্যাস্পদ হওয়া। |
কিসের মাসী কিসের পিসী, কিসের বৃন্দাবন; মরাগাছে ফুল ফুটেছে মা বড় ধন | মায়ের সাথে কারো তুলনা হয় না; মায়ের জন্য পৃথিবীর সবকিছু ত্যাগ করা যায়; সমতুল্য- 'জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী'। |
কীর্তির্যযস্য স জীবতি | যার কীর্তি আছে তিনিই আমর; কীর্তিমান ব্যক্তিরা মানুষের মনে চিরজীবী হয়ে থাকেন; (মূলশ্লোক- চলচ্চিত্তং চলদ্বিত্তং...') |
কীর্তিমান জনকের পুত্র হওয়া বৃথা | সূর্যের আলোয় তারা ঢাকা পড়ে। |
কুঁজী, না ও খুঁজি | যে যা ভালোবাসে ষে তা ষে খুঁজে বেড়ায়। |
কুঁজী, না ঐ পুঁজি | তবুতো কিছু আছে; কুঁজ ভাঁঙিয়ে অন্ন জোগাড় হয়। |
কুঁজীর মন্ত্রণা | দুষ্টলোকের কুমন্ত্রণা। |
কুঁজোর ইচ্ছা চিৎ হয়ে শোয় | অক্ষমের দুরাশা; সামর্থহীনতায় ইচ্ছা পূর্ণ না হওয়ায় নৈরাশ্য। |
কুঁড়ে কৃষাণ অমাবস্যা খোঁজে | কাজ না করার অজুহাত (উৎস- অমাবস্যায় কিষান লাঙল ছোঁয় না)। |
কুঁড়ে গরুর এঁটুলি সার | অলসের ভাগ্যে অসার বস্তু বই কিছু জোটে না। |
কুঁড়ে ঘরে বসে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা // কুঁড়ে ঘরে বাস, খাট-পালঙ্কের আশ | অক্ষমের বড়লোক হওয়ার বাসনা; স্বপ্ন দেখতে পরিশ্রম করতে হয় না; স্বপ্ন দেখতে পয়সা লাগে না; আপনার যা অবস্থার উপযুক্ত তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা উচিট। |
কুঁড়ের অন্ন জোটে না | পরিশ্রম না করলে সিদ্ধিলাভ হয় না |
কুঁড়ের পাতে বসে খেও বেরোর (উপদংশ রোগ) কাছে কখনো না যেও | উপদংশ রোগের ভীষণতা বোঝাতে এই প্রবাদের সৃষ্টি হয়েছে |
কুঁড়ের বাক্যে পুড়ে মরি | কুঁড়ের বাগাড়ম্বর খুবই বিরক্তিকর। |
কুঁড়ের বাথান বৈদ্যনাথ | অলসব্যক্তি তীর্থ করতে গিয়েও ভিক্ষাবৃত্তি করে অন্ন জোগাড় করে। |
কুঁড়ের মুখে আঁটুনি | অকর্মণ্য মুখ সর্বস্ব হয়; বচনবাগীশ। |
কুঁদের মুখে বাঁক থাকে না, কুঁদিলে বাঁকা কাঠও সোজা হয় | শক্তলোকের পাল্লায় পড়লে বাঁকালোকও সোজা হয়; যোগ্য শাসনে দুষ্টলোক শিষ্ট হয় (উৎস-কুঁদযন্ত্র বাঁকা কাঠকে সোজা কাটে) |
কুকুর রাজা হলেও জুতা খায় | জাতস্বভাব কেউ ছাড়তে পারে না। |
কুকুরকে নাই দিলে কাঁধে চড়ে // কুকুরকে লাই দিলে মাথা ওঠে। | নীচকে প্রশ্রয় দিতে নেই; নীচকে প্রশ্রয় দিলে প্রশ্রয়দাতার ক্ষতি হয়। |
কুকুরের আড়াই পাক | কুকুরে স্বভাব; অভ্যাস দ্বিতীয়প্রকৃতি। |
কুকুরের কাজ কুকুরে করেছে কামড় দিয়েছে পায়, তা বলে কি কুকুরের কামড় মানুষের শোভা পায় | অবোধার কাজ বোধার সাজে না। |
কুকুরের কামড় হাঁটুর নীচে১ | নগণ্য বিরাট ক্ষতি করতে অক্ষম। |
কুকুরের কামড় হাঁটুর নীচে২ | শত্রু বিশেষ ক্ষমতা ধরে না। |
কুকুরের দৌড় ছাড়া হাঁটা নেই। | অস্থিরচিত্ত সবসময় ছটফট করে। |
কুকুরের লেজ কাজে লাগে না | বাহুল্যের কোন মূল্য নেই। |
কুকুরের পেটে ঘি সয় হয় না১ | অনভ্যস্ত লোককে ভালো জিনিষ দিলেও সেটা তারপক্ষে প্রীতিকর হয় না। |
কুকুরের পেটে ঘি সয় হয় না২ | মন্দলোকে ভাল উপদেশ নেয় না; |
কুকুরের লেজে ঘি মাখলেও সোজা হয় না | বেয়াড়া লোককে সংশোধন করা যায় না; বহু চেষ্টাতেও স্বভাব অরিক্রম করা যায় না; সমতুল্য- স্বভাব যায় না মলে'। |
কুকুরের স্থান পায়ের নীচে | নীচের জিনিষ নীচেই থাকে, উপরে ওঠে না। |
কুজন-পিরিত কাঁচ, ভাঙিলে ফুরায়; সুজন-পিরিত সোনা, ভেঙে গড়া যায় | মন্দজিনিষ বাতিল করতে হয়; ভালজিনিষ ব্যবহার করতে হয়। |
কুজনের নেই লাজ নেই অপমান; সুজনের এককথা মরণ সমান | মন্দলোকের লাজঘেন্না বলে কিছু নেই কিন্তু একটু কটু কথা শুনে ভদ্রলোক মৃতপ্রায় হয়। |
কুটুম্বের মধ্যে শালা, গয়নার মধ্যে বালা | দুইই সমান আদরণীয়। |
কুঠে মুরগির ঠোঁটে বল | দুর্বলেরা বাকসর্বস্ব হয়। |
কুড়ি হলেই বুড়ি | অর্থ স্পষ্ট' স্ত্রীলোকের মধ্যে প্রচলিত; বর্তমানে অচল। |
কুৎসিত ছেলের নাম দিব্যসুন্দর | বিসদৃশ নামকরণ; যা নয় তাই হওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা। |
কুদেশঞ্চ কুবৃত্তিঞ্চ কুভার্যাং কুনদীম্ তথা। কুদ্রব্যঞ্চ কুভোজ্যঞ্চ বর্জয়েচ্চ বিচক্ষণঃ।।(চাণক্য) | খারাপ দেশ, নিন্দনীয় জীবিকা, দুশ্চরিত্রা/রুগ্না স্ত্রী, খারাপ নদী, খারাপ দ্রব্য এবং খারাপ আহার্য বিচক্ষণ ব্যক্তি বর্জন করবেন। |
কুদেশমাসাদ্য কুতোহর্থসঞ্চয়ঃ কুপুত্রমাসাদ্য কুতো জলাঞ্জলিঃ। কুগোহিনীং প্রাপ্য কুতো গৃহে সুখং কুশিষ্যমধ্যাপয়তঃ কুতো যশঃ।। (চাণক্য) | কুদেশে গিয়ে অর্থসঞ্চয়ের আশা কোথায়? কুপুত্রের জন্ম দিয়ে পারলৌকিক জলাঞ্জলি পাওয়ার আশা কোথায়? দুর্বিনীতা স্ত্রী লাভ হলে ঘরে সুখের আশা কোথায়? দুর্বিনীত ছাত্রকে শিক্ষাদান করে যশের আশা কোথায়? |
কুপুত্র যদ্যপি হয়, কুমাতা কখনো নয় // কুপুত্র হয় যথাতথা কুমাতা নয় কখনতো // 'কুপুত্র অনেক হয় মা কুমাতা নয় কখন ত'-রামপ্রসাদ | পুত্ররা যতই অত্যাচার করুক, মায়েরা কখনো বিরূপ বা স্নেহ-শূন্যা হয় না। |
কুপুত্রেণ কুলং যথা | একজন কুপুত্রের জন্য বংশ বিনষ্ট হয়; (মূলশ্লোক- 'একেনাপি কুবৃক্ষেণ...') |
কুবার্তা/সংবাদ বাতাসের আগে ছোটে/ধায় | দুঃসংবাদ তড়িৎ গতিতে ছড়ায়;পরের কুৎসা গাইতে মানুষ মুখিয়ে থাকে;পরের কুৎসা মুখরোচক খাদ্য। |
কুব্জার মন্ত্রণা | কুমন্ত্রণা |
কুমির যখন জলে থাকে ডাঙায় ডিমে নজর রাখে | মাতৃহৃদয়ের তুলনা নেই; মা জগতের শ্রেষ্ঠরূপা নারী। |
কুমিরের সঙ্গে বিবাদ করে জলে/পানিতে বাস | যার যেখানে প্রভুত্ব, সেখানে তার সাথে বিবাদ করে বাস করা যায় না। |
কুম্ভকর্ণের নিদ্রা | দীর্ঘকাল ধরে একটি কাজ অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে। |
কুম্ভকর্ণের নিদ্রাভঙ্গ | দীর্ঘকাল ধরে অবহেলিত কোন কাজে সহসা হাত পড়েছে। |
কুয়ো হয়, আমের ভয়, তাল তেঁতুলের কিছুই নয়–খনা | কুয়াশা আমের বৌল নষ্ট করে; তাল তেঁতুলের করে না। |
কুল রাখি না শ্যাম রাখি | উভয়সঙ্কটে পড়া; ভালমন্দ বিচারে দ্বিধা। |
কুলশীলগুণোপেতঃ সর্বধর্মপরায়ণঃ। প্রবীণঃ প্রেষণাধ্যক্ষো ধর্মাধ্যক্ষো বিধীয়তে।। (চাণক্য) | যিনি সদ্বংশে জন্মগ্রহণ করেছেন, যাঁর চরিত্র নির্দোষ, যিনি বিভিন্ন গুণে ভূষিত, যিনি সবল ধর্মে নিষ্ণাত বা অভিজ্ঞ, যিনি প্রাজ্ঞ এবং ভৃত্য প্রভৃতি লোকনিয়োগে বিচক্ষণ- তিনিই বিচারক হওয়ার যোগ্য। |
কুলীনৈঃ সহ সম্পর্কং পণ্ডিতৈঃ সহ মিত্রতাম্। জ্ঞাতিভিশ্চ সমং মেলং কুর্বাণো ন বিনশ্যতি॥ (চাণক্য) | কুলীনবংশীয় পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কস্থাপন করেছেন, পণ্ডিতব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্বস্থাপন করেছেন এবং আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মিলেমিশে থাকেন এমন ব্যক্তি কখনো বিপদে পড়ে না |
কুলোয় শুয়ে তুলোয় করে দুধ খায় | শিশুর মত অতি সরল, যেন কিছু জানে না- এমন কপটব্যক্তির প্রতি বিদ্রুপোক্তি। |
কুশিক্ষিত হওয়া থেকে অশিক্ষিত থাকা ভাল | বদনাম দোষণীয়, অজ্ঞানতা কোন দোষের নয়। |
কুসংবাদ বাতাসের আগে ধায় | বাজে খবর লোকের কানে আগে ছড়ায়। |
কুসঙ্গে থাকার চেয়ে একা/সঙ্গীহীন থাকা ভাল | বদনাম কুড়াবার ভয় থাকে না; সমতুল্য- 'দুষ্ট গরু থেকে শূন্য গোয়াল ভাল'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'নেই-মামার চেয়ে কানামামা ভাল'। |
কূপোদকং বটচ্ছায়া শ্যামা স্ত্রী ইষ্টকালয়ম্। শীতকালে ভবেদুফ’ গ্রীষ্মকালে চ শীতলম্।। (চাণক্য) | কূপের জল, বটগাছের ছায়া, মধ্যযৌবনে উপনীত স্ত্রী এবং ইটের তৈরি বাড়ি- এগুলি শীতকালে উষ্ণ থাকে আর গ্রীষ্মে থাকে শীতল। |
কৃতং কর্ম শুভাশুভম | শুভ ও অশুভ, সব কৃতকর্মের ফলভোগ করতে হবেই। |
কৃতঘ্ন বিশ্বাসঘাতকের ইহকালও নেই পরকালও নেই | বিশ্বাসঘাতকের কোনদিন ভাল হয় না; সমতুল্য- 'অকৃতজ্ঞের নরকবাস'। |
কৃতজ্ঞ কুকুর অকৃতজ্ঞ মানুষ অপেক্ষা শ্রেয় | কুকুরের কৃতজ্ঞতাবোধ মানুষ থেকে অনেক বেশি; সমতুল্য- যতই মানুষকে দেখছি ততই কুকুরকে ভালো লাগছে। |
কৃতস্য করণং নাস্তি, মৃতস্য মরণং যথা। গতস্য শোচনা নাস্তি ইতি বেদবিদ্যাং মতম॥ (চাণক্য) | পণ্ডিতগণ বলে থাকে- মৃতব্যক্তির যেমন পুনরায় মরণ নেই, তেমনিই কৃতকর্মের আর করণ নেই; অর্থাৎ যা গত হয়েছে তার জন্য শোক করে লাভ নেই। |
কৃপণের মত দাতা নেই | নিজে ভোগ না করে পরের ভোগের জন্য সন অর্থ রেখে যায়। |
কৃপণের ধন চোরে/বাটপাড়ে খায় | কৃপণ সৎকাজে অর্থ ব্যয় করে না; অথচ প্রবঞ্চকের পাল্লায় পড়ে সব অর্থ হারায়। |
কৃপণের সন্তান অমিতব্যয়ী হয | কেনারামের ছেলে ভোগীরাম হয়; ভোগের অর্থ হাতে থাকলে অপব্যয়ে খামতি হয় না। |
কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরুল | তুচ্ছ বিষয় থেকে বিপজ্জনক পরিস্থিতির উদ্ভব হল; সামান্য বিষয়ের অনুসন্ধান থেকে গুরুতর বিষয় প্রকাশিত |
কেঁচো দিয়ে কাতলা ধরা১ | সামান্য উপকরণ দিয়ে বিরাট কাজ সম্পন্ন করা। |
কেঁচো দিয়ে কাতলা ধরা২ | একজনের সাহায্যে অন্যের কষোটি করা। |
কে একবার আমার হাত মুচড়েছিল মনে রাখি; কে দশবার আমার হাত ধরেছিল ভুল যাই | অকৃতজ্ঞতার প্রতি ইঙ্গিত। |
কে তুমি হরিদাস পাল? | কোন বিষয়ে কেউ কর্তৃত্ব ফলাতে গেলে ব্যঙ্গ করে তার প্রতি এই বাক্য উক্ত হয়; (উৎসকাহিনী- বিংশশতাব্দীর কল্পকাতার এক ধনাঢ্য প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন হরিদাস পাল) |
কেউ কারো মিত্র নয় কেউ কারো শত্রু নয়, ব্যবহারে শত্রুমিত্র হয় | হাত বাড়ালেই বন্ধু, হাত ছাড়ালেই শত্রু। |
কেউ মরে, কেউ হরি হরি বলে | একের দুঃখে অন্য আনন্দ করে' সমতুল্য- 'কারো পৌষমাস কারো সর্বনাশ'। |
কেউ মরে বিল ছেঁচে, কেউ খায় কৈ | একের পরিশ্রমের ফল অন্যের ভোগ করে; সমতুল্য- 'উদবিড়ালে শিকার করে, খটাশ করে তিনভাগ' |
কেউই জ্ঞানী হয়ে জন্মায় না। | শিক্ষায় জ্ঞান অর্জিত হয়। |
কেন্দু (হলুদ রঙের ফল) গাছে কেন্নোটা (পোকা) | উজ্জ্বল বর্ণের পোষাক পরে থাকা কালো কুৎসিত ব্যক্তির প্রতি কটাক্ষ। |
কেবল মন দিয়েই মন জয় করা যায় | গায়ের জোরে মন জয় করা যায় না। |
কেলেমাণিকের নাম গৌরাঙ্গসুন্দর | বিসদৃশ নামকরণ; যা নয় তাই হবার ইচ্ছা। |
কেল্লা/কিল্লা ফতে- আরবী প্রবাদ | সফল কার্যোদ্ধার, সিদ্ধিলাভ |
কেশব, গোপাল, হরিহরি, হরহর | দেবতাদের নাম নিয়ে সোনারির সোনাচুরির ধান্ধাবাজি/ফন্দি। |
কোঁদলে জাত নষ্ট | বিবাদই সকল অনিষ্টের মূল। |
কোকিলানাং স্বরো রূপম্ নারীরূপং পতিব্রতম্। বিদ্যা রূপং কুরূপাণাং ক্ষমা রূপং তপস্বিনাম্॥ (চাণক্য) | কোকিলের কণ্ঠস্বরই তার রূপ, পাতিব্রত্যই স্ত্রীর রূপ, কুৎসিত পুরুষের বিদ্যাই রূপ এবং তপস্বীদের ক্ষমাই রূপ। |
কোণঠাসা ইঁদুর বিড়ালকে কামড়ায়- জাপানী প্রবাদ | বিপদে পড়লে দুর্বলও দুঃসাহসী হয়ে ওঠে। |
কোথা রাম রাজা হবে, না কোথা রাম বনে যাবে | সুদিনের পরিবর্তে দু্র্দিন; সুখের কল্পনা ভেঙে চুরমার। |
কোথাকার জল কোথায় গড়ায়/মরে // কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় | অনিশ্চিত পরিণতি; শুরু দেখে কাজের পরিণতি বোঝা যায় না। |
কোথায় আগরতলা আর কোথায় চৌকিরতলা // কোথায় অযোধ্যার রঘু আর কোথায় বাঁশবনের ঘুঘু // কোথায় রাজা ভোজ, আর কোথায় গঙ্গু তেলী // কোথায় রাণী ভবানী আর কোথায় ফুলী জেলেনী | দুই অসমবস্তুর মধ্যে তুলনা হয় না। |
কোথায় রাম রাজা হবেন, না তার বনবাস | কোথা রাম রাজা হবে, না কোথা রাম বনে যাবে- এর অনুরূপ |
কোথায় স্বর্গ, কোথায নরক কে বলে তাহা বহুদূর;মানুষেরই মাঝে স্বর্গ-নরক মানুষেতে সুরাসুর (রেজাউল করিম) | স্বর্গ নরক ইহজগতে মানুষ রচনা ্করে। |
কোদাল পাড়লেই/মারলেই চাষ হয় না | দক্ষতাবিনা কার্যসিদ্ধি/ফললাভ হয় না। |
কোদালকে কোদাল বল | সোজা কথা সোজা ভাষায় বল। |
কোদালে কুড়ুলে মেঘ দেখিলে চাষিকে বলে বাগাগে হাল- খনা | পূর্বপ্রস্তুতি থাকলে কাজকর্মে সহায়তা আসে। |
কোদালের শিয়র কুড়ুলের পাশ, যে যাবে তার সর্বনাশ | দুর্জনের সঙ্গ পরিত্যজ্য। |
কোন্ বে-আক্কেলে কয় সংসার আমার নয়? | সংসার গড়তেই তো জগতে আসা। |
কোন কাজ অর্ধসমাপ্ত রাখা নেই | অর্ধসমাপ্ত কাজ না-কাজের সামিল। |
কোন কাজেই তাড়াহুড়ো করা নেই | তাড়াতাড়িতে কাজে ভুলভ্রান্তি হয় এবং তাতে কাজ সম্পন্ন করতে দেরী হয়। |
কোন কাজের শুরুটা বাজে হলে শেষটাও বাজে হয় | সুন্দরভাবে শুরু করলে সুষ্টভাবে সম্পন্ন হয়। |
কোন কাজের শেষ ফেলে রাখতে নেই | কালে পেলে কোনকালে কাজ শেষ হবে না। |
কোন কালে নাইকো গাই চালুনি নিয়ে দুইতে যাই | না জান কাজ করতে গিয়ে হাস্যস্পদ হলে এই প্রবাদ উক্ত হয়; সমতুল্য- কোন জন্মে ছিল না ডুলি আগে দুই পা তুলি। |
কোন কালে নেই ষষ্ঠীপূজা একেবারে দশভুজা | বিসদৃশ ব্যাপার; কৃপণের বৃহৎ ক্রিয়াকর্ম। |
কোন ঘুমন্ত লোকের পাশে বসে থাকা (বা না ঘুমানো) ভদ্রতা- আরবী প্রবাদ | সৌজন্যবোধের একটি উপায়। |
কোন জন্মে ছিল না ডুলি আগে দুই পা তুলি | কোনকালে নাইকো গাইল চালুনি নিয়ে দুইতে যাই-এর অনিরূপ। |
কোন মানুষই পুর্ণাঙ্গ নয় | কোন মানুষই সর্বাঙ্গসুন্দর হতে পারে না। |
কোন্কালে/জন্মে হবে পো ন্যাকড়া-কানি তুলে থো | দূর ভবিষ্যতে কোন কাজ হবে তার জন্য এখনি উদ্যোগ করা; অনাগতবিধাতা, |
কোন্ বা বিয়ে তক্লের দুপায়ে আলতা | নগণ্য কাজের জয় আড়ম্বরের আবশ্যকতা নেই। |
কোমল ব্যবহার সংঘর্ষ এড়ায় | মিষ্টি ব্যবহারে মানুষের মন জয় করা যায়। |
কোম্পানীকা মাল দরিয়ামে ঢাল- হিন্দি প্রবাদ | পরের জিনিষের অপচয়, হেলেফেলায় ব্যবহার; পরের ঘি পেলে প্রদীপে দেয় ঢেলে। |
কোয়লাকা ময়লা ছুটে যব্ আগ্ করে পর্বেশ- হিন্দি প্রবাদ | আগুনে শুদ্ধ হলে কয়লার ময়লা যায়; জ্ঞানাগ্নিতে শুদ্ধ হলে মানুষের মনের অজ্ঞতা দূর হয়; সমতূল্য- 'কয়লা পুড়লে ময়লা যায়'। |
কোয়লা ধোয়ে না উজ্রৈ লাশুন তজৈ না বোয়। কুর কুরাই না তজৈ কি বৈঠে ঘর্ খোয়।।- হিন্দি প্রবাদ | কয়লা ধুলে ময়লা যায় না; রসুন ধুলে গন্ধ যায় না; ক্রুর ব্যক্তি নিঃসম্বল হলেও ক্রুরতা ছাড়ে না। |
কোলটানা ছ | নিজের দিকে টানা; অক্ষর 'ছ' লিখতে গেলে কোলের দিকে একটা রেখা টানতে হয়। |
কোলপাতলা ডাগর গুছি লক্ষ্মী বলেন ঐখানে আছি- খনা | ধানের চারা কিছুটা দূরে দূরে বসালে ফসল বেশ ভাল হয়। |
কোহতিভারঃ সমর্থানাং কিং দূরং ব্যবসায়িনাম্। কো বিদেশঃ সবিদ্যানাং কঃ পরঃ প্রিয়বাদিনাম্॥ (চাণক্য) | সক্ষমব্যক্তির কাছে কোন কাজই কঠিন নয়; ব্যবসায়ীর কাছে কোনপথই দূর নয়; বিদ্বানের কাছে কোনদেশই বিদেশ নয়;ও মিষ্টভাষীর কাছে কেউই পর নয়। |
ক্রশ/ক্রুশের পিছনেই শয়তানের আস্তানা | প্রদীপের নীচেই অন্ধকার; ভালো ও মন্দের সহাবস্থান; অবিমিশ্র কিছু হয় না। |
ক্রিয়া শব্দের চেয়ে বেশি জোরে কথা বলে | কিছু বললে এবং কিছু করলে লোকের করার কথাই মনে রাখবে, বলা-কথা মনে রাখবে না। |
ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া আছে/থাকে | অন্যের ক্ষতি করলে নিজেরও ক্ষতি হয়; সমতুল্য-'আঘাত করলে প্রত্যাঘাত খেতে হয়', 'আয়না যেমুখ দেখে সেইমুখ দেখায়', 'ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়','চড় মারলে চড় খেতে হয়','ধ্বনির প্রতিধ্বনি আছে/থাকে' ইত্যাদি। |
ক্রোধ এবং ঘৃণা সুপরামর্শের পক্ষে বাধাস্বরূপ | রিপু মানুষকে অন্ধ করে; জ্ঞানর্জনে বাধা সৃষ্টি করে। |
ক্রোধের প্রকাশ দৃষ্টিতে; গুণের প্রকাশ শিষ্ট আচরণে | আচরণে মানুষ চেনা যায়। |
ক্রোধো বৈবস্বতো রাজা আশা বৈতরণী নদী। বিদ্যা কামদুঘা ধেনুঃ সন্তোষো নন্দনং বনম্।। | মহারাজ বিক্রমাদিত্য একবার বেতালের প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন- মানুষের ক্রোধ কৃতান্তস্বরূপ; আশা বৈতরণী নদীর মত অপার; বিদ্যা কামধেনুতুল্য; এবং সন্তোষ নন্দনকাননের মত সুখকর। |
ক্ষমা পরমোধর্মঃ | ক্ষমার মত ধর্ম নেই। |
'ক্ষমাই যদি করতে না পার, তবে তাকে ভালোবাস কেন?'- রবীন্দ্রনাথ | ভালবাসার লোককে সহজে ক্ষমা কয়ড়া যায় |
ক্ষমার বড় গুণ নাই, দানের বড় পূণ্য নাই | ক্ষমাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং দানই শ্রেষ্ট কর্ম। |
ক্ষিপ্রতা শয়তানের পছন্দ , করুণাময় ঈশ্বরের পছন্দ ধৈর্য- আসিরীয় প্রবাদ | শয়তান সবসময় আগ বাড়িয়ে থাকে, করুণাময় ঈশ্বর সবসময় সহিষ্ণু। |
ক্ষীণে কস্যাস্তি গৌরবম্ | দুর্বল কোথায় গৌরব অর্জন করে থাকে? সকলেই সবলের সহায়ক; সমতুল্য- 'বীরভোগ্যা বসুন্ধরা'। |
ক্ষুধা/ক্ষিদে থাকলে নূন দিয়েও ভাত খাওয়া যায় | আগে পেট পরে রসনা; ক্ষিদের কোন পছন্দ-অপছন্দ নেই। |
ক্ষুধা/ক্ষিদে পেলে দুহাতে খেতে চায় | জঠরজ্বালা মানুষকে জ্ঞানশূন্য করে। |
ক্ষুধা/ক্ষিদের কোন জাত নেই | ক্ষিদের বাছবিচার নেই। |
ক্ষুধা/ক্ষিদের চোটে পাটকেল কামড়ায় | ক্ষিদের জ্বালায় অভক্ষ্যও খাদ্য হয়। |
ক্ষুদ খেয়ে পুঁজি করে দুপুরুষে খরচ করে | কার্পণ্যের প্রতি ব্যঙ্গোক্তি। |
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালিকণা বিন্দু বিন্দু জল গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল | সব বিশাল সৃষ্টি অসংখ্য ক্ষুদ্রের সমষ্টিতে গড়ে উঠে। |
ক্ষুদ্র শরীরে একটি বিরাট আত্মা বাস করে | আত্মার সীমা পরিমাপ করা যায় না। |
ক্ষুধার্ত পাকস্থলীর জিভ থাকে না | ক্ষিদের পছন্দ-অপছন্দ নেই; ক্ষিদের পেট বাছবিচার করে না। |
ক্ষুধার্ত পেটের কান নেই- আরবী প্রবাদ | ক্ষুধার্ত পেট বাধা নিষেধ শোনে না। |
ক্ষুরে ক্ষুরে দণ্ডবৎ | ব্যঙ্গার্থে- পরোক্ষভাবে অপরকে পশু বলে তার নিকট নিষ্কৃতি প্রার্থনা |
ক্ষুরের ধার ছুঁতে কাটে | তীক্ষ্ণাধার বস্তু নিয়ে নাড়াচাড়া করতে নেই। |
ক্ষেত্রে কর্ম বিধিয়তে | ক্ষেত্র বিচার করে কাজের বিধান হয়। |
ক্ষেপই হারে, জনম হারে না | মানুষ একবারই ঠকে; সারাজীবন ধরে ঠকে না। |
খ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
খঞ্জনের নাচ দেখে চড়ুইয়ের নাচ | অক্ষমের উচ্চাশা, অনুকরণপ্রিয়তা; উৎকৃষ্টকে অনুকরণ করে নিকৃষ্টের হাস্যাস্পদ হওয়া। |
খড় কেটে বন উজাড় | বসতি স্থাপন করতে গিয়ে প্রাকৃতিক সঙ্কট সৃষ্ট। |
খড়ম পায়ে দিয়ে গঙ্গা পার | অসাধ্যসাধন করার ব্যর্থপ্রয়াস। |
খড়ের আগুন যেমনি জ্বলে তেমনি নেভে | বদরাগীর রাগ চড়তে দেরী হয় না পড়তেও দেরী হয় না; কাজে তাড়াতাড়ি উৎসাহ আসে, আবার তাড়াতাড়ি উৎসাহ উবেও যায়। |
খড়ের গাদায় সূচ খোঁজা | অসাধ্য কাজে নিয়োজিত হওয়া, অসম্ভব কাজ যা হবার নয়; সমতুল্য- অন্ধকারে উকুন বাছা, অন্ধকারে কালো বিড়াল খোঁজা ইত্যাদি |
খনা ডেকে বলে যান, রোদে ধান ছায়ায় পান | আলোতে ধান এবং ছায়াতে পানের চাষ করতে হয়। (শস্যগণনা, চাষ করার সময়নির্ণয়) |
খনা বলে এরেও ঠেলি, যদি না দেখি সম্মুখে তেলি | যাত্রাকালে সমস্ত বাধাই হয়তো ঠেলা যায়, কিন্তু সামনে তেলীজাতের লোককে দেখলে কদাচ যাত্রা করিতে নাই। (যাত্রাকালীন অশুভ লক্ষণ) |
খয়রাত ঘর থেকে শুরু হয় | আগে ঘর সামলাতে হয়, পরে অপরকে দেখার প্রশ্ন আসে। |
খর নদীতে চর পড়ে না | সতেজ মনে কলুশ জমে না। |
খরচের আঁকে আনতে জমার আঁকে কুলায় না | অর্থের টানাটানি; সমতুল্য- 'ডাইনে আনতে বাঁয়ে কুলায় না, 'নুন আনতে পান্তা ফুরায়' ইত্যাদি। |
খল যায় রসাতল | খলের পরিণতি ভাল হয় না। |
খলঃ করোতি দুর্বৃত্তং, নূনং ফলতি সাধুষু | দুষ্টের দুস্কৃতির ফল সঙ্গদোষে সাধুকে ভোগ করতে হয়। |
খলঃ করোতি দুর্বৃত্তং, নূনং ফলতি সাধুষু। দশানন হরেৎ সীতাং বন্ধনং স্যাম্মোহদধেঃ।। | দুর্জনের দুস্কৃতির ফল সঙ্গদোষে সাধুকে ভোগ করতে হয়; দৃষ্টান্তস্বরূপ দশানন সীতা হরণ করল তার ফলে লঙ্কাপুরীর সন্নিকটস্থ সাগর বন্ধনদশাপ্রাপ্ত হ'ল। |
খলঃ কেন নিবার্যতে | দুর্জনকে কে নিবৃত্ত করবে; দুর্জনের সাথে পারা যায় না। |
খলের ছলের অভাব হয় না | ছলচাতুরীতে খল ভারী ওস্তাদ। |
খাঁচায় পুরে খোঁচা মারে | আয়ত্তে এনে অত্যাচার করা; দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার। |
খাঁচার পাখি গান গায় না | অধীনের মনে আনন্দ থাকে না। |
খাঁদা নাকে নথ, গোদা পায়ে মল // খাঁদা নাকে তিলক কাটা | বিশ্রী বেমানান সাজ; যে সাজে মানায় না সেইরকম সজ্জা করলে এই প্রবাদ বলা হয়। |
খাই দাই কাসি/বাঁশি বাজাই, কারো খবর রাখি না | খেদেদেয়ে সুখেই আছি, দুশ্চিন্তায় মাথা খারাপ করি না। |
খাই দাই তবলা বাজাই, দুদিন বইতো নয় | ক্ষণস্থায়ী জীবনে সুখ করে নাও; সমতুল্য- 'হেসে খেলে নাও দুদিন বইতো নয়, কে জানে কখন কার সন্ধ্যে হয়' |
খাই দাই ভুলি না তত্বকথা ছাড়ি না১ | সংসারে থেকেও ধর্ম চর্চা করা যায়। |
খাই দাই ভুলি না তত্বকথা ছাড়ি না২ | আমাকে খাইয়ে পড়িয়ে যতপ ভোলাও না কেন ঈপ্সিত লক্ষ্য থেকে সরি না। |
খাই না খাই আছি ভালো, ভাঙাঘরে চাঁদের আলো | নিজেকে নিয়ে নিরন্নের রসিকতা; পেটে ভাত নেই, তবু ভাঙা ঘরে চাঁদের আলোয় তার দিলখুশ। |
খাওয়ার সাথে খিদে আসে | ক্ষিদে না হলে খাওয়া নেই- বৈদ্যের বিধান। |
খাওয়াবে হাতির ভোগে, দেখবে বাঘের চোখে | ছেলে মানুষ করার স্বীকৃত পদ্ধতি; সন্তানকে ভাল খাওয়াবে কিন্তু কঠোর শাসন করবে; শ্রেষ্ঠ শিক্ষা গৃহে শুরু হয়। |
খাচ্ছিল জেলে জাল বুনে, কাল হল তার হালের গরু কিনে // খাচ্ছিল তাঁতি তাঁত বুনে, কাল হল তার এঁড়ে গরু কিনে // 'খাচ্ছিল আবদুল চাষ করে ছিল ভাল, চৌকিদারির কাজ নিয়ে আবদুল পরাণে মল১ | অভ্যস্ত কাজ ছেড়ে অনভ্যস্ত কাজে হাত দিলে ফল ভালো হয় না। |
খাচ্ছিল জেলে জাল বুনে, কাল হল তার হালের গরু কিনে // খাচ্ছিল তাঁতি তাঁত বুনে, কাল হল তার এঁড়ে গরু কিনে // 'খাচ্ছিল আবদুল চাষ করে ছিল ভাল, চৌকিদারির কাজ নিয়ে আবদুল পরাণে মল'১ | বেশি আশা করলে বেশি নিরাশা হ'তে হয়; সমতুল্য- 'অতি আশ সর্বনাশ', 'অতিলোভে তাঁতী নষ্ট', অতি আশায় মরে চাষা' ইত্যাদি। |
খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি | মূলকাজের চেয়ে অনাবশ্যক কাজে আড়ম্বর বেশি। |
খাট ভাঙ্গলে ভূমিশয্যা | শেষসম্বল নষ্ট হওয়ার আগে সতর্কবার্তা; যখন যেরকম অবস্থা সেইভাবেই মানিয়ে চলা। |
খাটে খাটায় লাভের গাঁতি, তার অর্ধেক মাথার ছাতি; ঘরে বসে পুছে বাট তার ঘরে হা-ভাত (খনা) | যে ব্যক্তি কাজের লোকের সাথে খাটে সে পূর্ণফল পায়; যে কাজের লোকের ওপর নজর রাখে সে অর্ধেক ফল পায়; যে কাজ করে না, কাজে নজরও দেয় না তার ফললাভ শূন্য। |
খাড়া-বড়ি-থোর, থোর-বড়ি-খাড়া | অবস্থা যখন আগে-পরে একই রকম এবং বৈচিত্র্যহীন |
খানায় পড়লে হাতি, চামচিকেতে মারে লাথি | অসহায় অবস্থায় পেলে সকলেই তার সুযোগ নেয়। |
খানে কে দাঁত অঔর, দিখানে কা দাঁত অঔর- হিন্দি প্রবাদ | কিছু করার জন্য দেখানোর জন্য নয় এবং কিছু দেখানোর জন্য করার জন্য নয়, যেমন হাতীর দাঁত। |
খাবার আগে/সময় শোবার চিন্তা | আগাম ভাবনায় সতর্কতা; দুশ্চিন্তায় কাতর ব্যক্তির প্রতি বক্রোক্তি। |
খাবার আছে চা'বার নেই, দেবার আছে নেবার নেই | চুড়ান্ত ভারসাম্যহীনতা; চারিদিকে বিশৃঙ্খলা। |
খাবার বেলায় আগে, কাজের বেলায় ভাগে // খাবার বেলায় নেবার মা, উলুর বেলায় মুখে ঘা // খাবার বেলায় বেশি বেশি, কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা | খাবার পেতে যত ঔৎসুক্য, কাজের বেলায় তত অনীহা। |
খায় না খায়, সকালে নায়, হয় না হয় দুবার যায়, তার কড়ি বদ্যি না খায় | সকালে স্নান, দিনে দুবার মলত্যাগ করলে স্বাস্থ্য ভাল থাকে ফলে বদ্যি ডাকতে হয় না। |
খায় মালকোঁচা মেরে, ওঠে হাঁটু ধরে | অপরিমিত আহার; মহাপেটুক। |
খাল কেটে কুমির আনা // খাল কেটে বেনো জল ঢোকানো | বাইরের বিপদ ঘরে ডেকে আনা; সমতুল্য- সাধ করে শাল নেওয়া |
খাল পার হলে কুমিরকে কলা // খাল পার হলে পাটনী শালা | বিপদ কেটে গেলে সবাই বীরপুরুষ; কার্যসিদ্ধি হয়ে গেলে লোকে উপকারীকে ভুলে যায়। |
খালি কলসি বাজে বেশি | হালকাচরিত্রের লোক বেশি বকে; অন্তঃসারশূন্য ব্যক্তি বাহ্যিকভাবে তর্জন-গর্জন করে। |
খালি কলসি বাজে বেশি ভরা কলসি বাজে না, রূপ নাই কইন্যার সাজন বেশি রূপের কইন্যা সাজে না | সৌন্দর্যবৃদ্ধির জন্য- যার রূপ নেই তার অলঙ্কারের প্রয়োজন হয়; যার রুপ আছে তার অলঙ্কারের প্রয়োজন হয় না। |
খালি দুয়া (দোয়া) করলে পুয়া (ছেলে) অয় (হয়) না | বিনা পরিশ্রমে শুধু প্রার্থনাতে কার্যোদ্ধার হয় না। |
খালি পেটে জল, ভরা পেটে ফল | খালি পেটে জল খাওয়া নেই এবং ভরা পেটে ফল খাওয়া নেই- বৈদ্যের বিধান। |
খালি বস্তা খাড়া থাকে না | গুণহীন লোকের প্রতিষ্ঠা নেই। |
খালি হাত চিলকে প্রলুব্ধ করে না | আকর্ষণীয় বস্তু না থাকলে কেউ আকৃষ্ট হয় না; যার কিছু নেই তার হারাবার কিছু নেই। |
খিচুড়ি পাকানো | কোন কাজ বিশৃঙ্খলভাবে উপস্থাপন করা। |
খিড়কি দিয়ে হাতি গলে, সদরে বাধে ছুঁচ১ | পিছনের খবর কেউ রাখে না; সামনের দিকেই যত কড়াকড়ি যত নজর। |
খিড়কি দিয়ে হাতি গলে, সদরে বাধে ছুঁচ২ | অজান্তে অনেক খরচ হয় জানতে করচ করা কষ্টকর। |
খিদে পেলে বাঘ ধানও খায | খিদের জাতবিচার নেই; প্রয়োজন নিয়ম মানে না। |
খিদে পেলে দুহাতে খায় | জঠরজ্বালা মানুষকে পাগল করে, জ্ঞানশূন্য করে |
খিদেয় বাঘ লোকালয়ে | খিদেয় মানুষ পাগল হয়। |
খিদের চোটে পাটকেলে কামড় | খিদের সময় কেউ ভক্ষ্য, অভক্ষ্য দেখে না। |
খুঁট-আঁখুরে দেশের বালাই | অল্প শিক্ষিতরা সমাজের বোঝা। |
খুঁট আখুরে, বরাখুরে | অপদার্থ কোন কাজের নয় বলে গালি/তিরস্কার |
খুঁটি না থাকলে ঘর আপনি পড়ে | পরের শক্তিতে লড়া যায় না; সাহায্যকারী না থাকলে সংসারে দাঁড়ানো কষ্টকর। |
'খুঁটির গোড়ায় নেইকো মাটি, কিসে ঘর রবে খাঁটি'- লালন | ভাল মুরুব্বির থাকলে উন্নতি সহজ হয়। |
খুঁটির জোরে ভেড়া নাচে/লড়ে | শক্তিশালী ব্যক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় অযোগ্য ব্যক্তিরও উন্নতি সম্ভব; সহায়তা পেলে গুরুতর কাজে এগুনো যায়; |
খুঁড়িয়ে বড় হওয়া | নিম্নবিত্তের লোকের উচ্চবিত্তের সমকক্ষ হওয়ার ব্যররথ প্রয়াস। |
খুদের জাউ পায় না, ক্ষীরের জন্য কাঁদে১ | যোগ্যতার বাইরে প্রত্যাশা করা। |
খুদের জাউ পায় না, ক্ষীরের জন্য কাঁদে২ | দরিদ্রের উচ্চাভিলাষ। |
খুব কাছে ভালো নয়; খুব দূরে নিস্ফলা | মধ্যপন্থা শ্রেষ্ট পন্থা; ভাল নয় অতিশয়। |
খুরে খুরে দণ্ডবৎ | ব্যঙ্গার্থে- পরোক্ষভাবে অপরকে পশু বলে তার নিকট নিষ্কৃতি প্রার্থনা |
খুশ খবরের ঝুটাও ভাল | মন খুশি থাকে। |
খেঁকি কুকুরের ঘেউ ঘেউ সার | নগণ্যের কোন গুরুত্ব নেই। |
খেয়ে দেয়ে একাদশী | আচার বিচারে আস্থা নেই। |
খেতে দিলে/পেলে শুতে চায় | সুযোগ পেলে আরও সুযোগ খোঁজে; আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই। |
খেতে দেবার মুরোদ নেই, কিল মারার দোঁসাই | ভালো করতে পারে না মন্দ করতে মুখিয়ে আছে। |
খেতে পায় না পুঁটি হাতে পরে আংটি | দরিদ্রের বাহ্যাড়ম্বর; সমতুল্য- ভিতরে ছুঁচোর কীর্তন, বাইরে কোঁচার পত্তন'। |
খেতে পারি, দিতে পারিনা | আত্মসর্বস্ব/সঙ্কীর্ণমনা ব্যক্তি, যে নিতে পারেম দিতে পারে না। |
খেতে ভাল ভাজা-চাল,দেখতে ভাল মুড়ি; রসকে ভাল এক ছেলের মা, দেখতে ভাল ছুঁড়ি | ভাজা-চাল দেখতে ভাল নয়, কিন্তু খেতে ভাল; মুড়ি দেখতে ভাল কিন্তু খেতে তেমন নয়; একইভাবে এক সন্তানের মা রসিকতায় ভাল, কিন্তু দেখতে অল্প বয়স্কা নারীই ভাল। |
খেদাই না তোর উঠান চষি১ | কড়াকথা ঘুরিয়ে বলা। |
খেদাই না, তোর উঠান চষি২ | মুখে কিছু না বলে কার্যতঃ ক্ষতি করা। |
খেলতে জানলে কানা কড়ি দিয়েও খেলা যায় | উপায়জ্ঞের কাছে উপায় কোন সমস্যা নয়; যে উপাদান পায় তাই দিয়েই সে সমস্যার সমাধান করে। |
খেলে ধন পাতাল যায়, না-খেলে ধন আকাশ ধায় | খেলে সম্পদ কাজে আসে, না-খেলে সম্পদ নষ্ট হয়। |
খোদার মার দুনিয়ার বার | আল্লাহর বিধান অপ্রতিরোধ্য। |
খেয়ে যার হজম হয়, ব্যাধি তার দূরে রয় | হজম হওয়া সুস্থতার লক্ষণ। |
খেয়ার কড়ি গুণে দিয়ে সাঁতরে নদী পার | সুযোগ নষ্ট করা হল; অর্থও ব্যয় হল, আবার পরিশ্রমও হল। |
খেল খতম পয়সা হজম | যা হবার হয়ে গেছে। |
খেলে ধন পাতাল যায়, না-খেলে ধন আকাশ ধায় | ভোগ করলে সম্পদ কাজে লাগে; না-খেলে সম্পদ নষ্ট হয়। |
খেলোয়াড়দের চেয়ে দর্শকেরা বেশি খেলা দেখে- চীনা প্রবাদ | বাইরে থেকে সমস্যা বেশি অনুধাবন করা যায়। |
খৈয়ের বন্ধনে পড়া১ | উভয়সঙ্কটে পড়া। |
খৈয়ের বন্ধনে পড়া২ | নির্বুদ্ধিতার জন্য কষ্টে পড়া। |
খোঁটার বলে গাড়ল যুঝে | খুঁটির জোরে ভেড়া নাচে/লড়ে-এর অনুরূপ |
খোঁড়ার পা খানায়/গর্তে পড়ে | অসহায়ের পদেপদে বাধা; যার যে বিষয়ে বিপদের আশঙ্কা, সে সেই বিপদেই পড়ে। |
খোদা পহাড় নিকলী চুহিয়া- হিন্দি প্রবাদ | কঠিন পরিশ্রমে অল্প প্রাপ্তি; সমতুল্য- 'পর্বতের মুষিক প্রসব'। |
খোদা যারে দেয় ছাদ ফুঁইড়াই দেয় | কারো কারো ক্ষেত্রে ভগবানের অসীম করুণা অঝোরে ঝরে। |
খোদার উপর খোদকারী | যোগ্য লোকের কাজে অযোগ্য লোকের অসঙ্গত হস্তক্ষেপ। |
খোদার খাসি | হৃষ্টপুষ্ট চেহারাযুক্ত লোক। |
খোদার নাও দোয়ায় চলে | সংসারের সবকিছুই তাঁর ইচ্ছার অধীন। |
খোদার কর্ম খোদাই জানে | কর্ম কি হবে তা কর্তাই জানে। |
খোলা দরজা সাধুকেও প্রলুব্ধ করে | আলগা পেলে সবাই সুযোগ নিতে চায়। |
খোলা মুখে মাছি ঢোকে | সতর্ক না থাকলে ক্ষতি হতে পারে। |
খোলা শত্রুতার চেয়ে কপট বন্ধুত্ব বেশি খারাপ | কপটতা খুবই নিন্দনীয়; কপট বন্ধুর থেকে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকে। |
খোশখবরের ঝুটাও ভাল | মিথ্যা সুসংবাদ শুনলে আনন্দ হয়। |
খোষে তৈল নাই কলাবড়ার সাধ | যা পাওয়া সম্ভব নয় তার আশা করা অন্যায়। |
খ্যাপা শেয়াল, ভাঙা দেয়াল আর বড়লোকের খেয়াল- তিনই সমান | তিনটিই সমান বিপজ্জনক- ক কামড়াতে পারে; খ আচমকা ভেঙে পড়তে পারে; গ জীবন ওষ্ঠাগত করে তুলতে পারে। |
গ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
গঙ্গা গঙ্গা না জানি কত রঙ্গা চঙ্গা | যা দেখিনা তা বড়ই সুন্দর মনে হয়; স্বর্গ দেখি না বলেই স্বর্গ বড়ই সুন্দর। |
গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা | গঙ্গাদশমীতে গঙ্গাস্নান করে গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা করা হয়; বিনাব্যয়ে কার্যোদ্ধার; অপরের অর্থে অপরের উপকার; সমতুল্য- মাছের তেলে মাছ ভাজা। |
গঙ্গাজলে ধুলেও কলঙ্ক যায় না | কলঙ্ক যাবার নয়; মরার আগে কলঙ্ক মোছে না। |
গঙ্গা মড়া আলেন না | মড়া ফেললে গঙ্গা না বলে না; নীরবে সে বয়ে নিয়ে যায়; নির্বিরোধী লোককে যে কাজই দাও সে অনিচ্ছা জানায় না। |
গঙ্গায় ময়লা ফেললে গঙ্গার মাহাত্য যায় না | নিন্দাবাদে মহতের মহত্ব নষ্ট হয় না। |
গঙ্গার জল গঙ্গায় রইল, পিতৃপুরুষ উদ্ধার হল | তর্পণের সময় গঙ্গার জল তুলে গঙ্গাতেই ফেলা হয়; এতে গঙ্গার জল গঙ্গায় থাকে, আবার পিতৃপুতুষও উদ্ধার পায়; অর্থাৎ বিনাব্যয়ে কার্যসিদ্ধি। |
গঙ্গার দুকূল ভাঙে না | এক কাজের দুই ফল হয় না; কিছু গেলে কিছু আসে; কিছু হারালে কিছু পাওয়া যায়। |
গচ্ছন্ পিপীলকো যাতি যোজনানাং শতান্যপি। অগচ্ছন্ বৈনতেয়োহপি পাদমেকং ন গচ্ছতি॥ (চাণক্য) | পিঁপড়ে চলতে থাকলে শত যোজন এগুতে পারে; আর বিনতার পুত্র গরুড় যদি স্থির হয়ে বসে থাকে তবে সে এক পা-ও এগুতে পারে না। |
গজকচ্ছপের লড়াই | দুই প্রবল শক্তির মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী লড়াই |
গজভুক্তকপিত্থবৎ | গজ নামক পোকায় খাওয়া সারশূন্য শূন্যগর্ভ কয়েৎবেলের মত অন্তঃসারশূন্য অবস্থা/ব্যক্তি; (মূলশ্লোক- 'আগচ্ছতি যথা লক্ষ্মী...') |
গজমাত্রেই মোতি থাকে না | সব মানুষ মানুষ হয় না। |
গড্ডলিকা প্রবাহ | ভেড়ার পাল; নিজের বুদ্ধিতে পরিচালিত না হয়ে অন্ধভাবে অপর সকলকে অনুসরণ। |
গড়তে চায় ঠাকুর হয়ে যায় কুকুর | ভালো করতে চায় কিন্তু মন্দ হয়ে যায়। |
গড়তে যত সময় লাগে ভাঙ্গতে তত সময় লাগে না। | সৃষ্টির ছন্দ অতি ধীর; ধ্বংস চোক্ষের পলকে শেষ। |
গড়ানো পাথরে শ্যাওলা ধরে না- ইংরাজী প্রবাদ | অস্থিরমতির সঞ্চয় হয় না; গতিশীল মনে ময়লা জমে না; স্থিরমতি না হলে উন্নতি হয় না। |
গড়িমসিতে সময় চুরি যায় | আজ নয় কাল করে সময় নষ্ট হয়; গয়ংগচ্ছভাবে অযথা সময় বয়ে যায়। |
গণ্ডুষ জলমাত্রেণ সফরী ফর্ফরায়তে | অল্পজলে সফরী লাফিয়ে বেড়ায়; অল্পশিক্ষিতরা বেশি বিদ্যার জাহির করে; (মূলশ্লোক- 'অগাধজলসঞ্চারী...') |
গতর নেই চোপায় দড়, মেঙ্গে খায় তার পালি (=পঙ্ক্তি) বড় | অক্ষমের গলার জোর বেশি; কাঙালের লাইন বিরাট লম্বা। |
গতস্য শোচনা নাস্তি | যা গেছে তা গেছে, তারজন্য অনুশোচনা করে লাভ নেই; (মূলশ্লোক- 'কৃতস্য করণং নাস্তি...') |
গন্ধবিহীন শিমুলফুল সুন্দর হ’লেও আদরণীয় নয় | গুণহীন বাহারে বস্তুর কোন মূল্য নেই। |
গন্ধমাদন বয়ে আনা | কাউকে একটা জিনিষ আনতে বললে সে দশটা জিনিষ নিয়ে আসে |
গব্য থাকলে আগেপাছে কী করবে তার শাকে মাছে? | আগে ঘি পরে দুধ থাকলে- শাক মাছের প্রয়োজন হয় না; সমতুল্য- 'যদি থাকে আগে পাছে কী করবে তার শাকে মাছে?' |
গভীর জলে কাৎলা নিঃসাড়ে চলে; অল্প জলে সফরী ফরফরায় | জ্ঞানীরা জাহির করে না; অল্পজ্ঞানীরা জাহির করে বেড়ায়। |
গভীর জলের মাছ/মীন | অচঞ্চল স্থিরবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি; অনেক বুদ্ধি ধরে; অত্যন্ত ধূর্ত ও চাপাস্বভাবের লোক, যার ক্রিয়াকলাপের উদ্দেশ্য বোঝা দুষ্কর |
গভীর নদী ধীরে/নিঃসারে বয় | জ্ঞানীমানুষেরা চিন্তাভাবনা করে ধীরসুস্থে কাজ করে। |
গয়ার পাপ/ভূত বিদায় করা | যাকে সহজে তাড়ানো যায় না, তাকে তাড়ানো। |
গরজ বড় বালাই১ | প্রয়োজনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। |
গরজ বড় বালাই২ | প্রয়োজন হলে মানুষ দুস্কর্ম করতেও পিছুপা হয় না। |
গরজে গঙ্গাস্নান | দায়ে পড়ে পূণ্যকর্ম করা; গরজ বড় বালাই। |
গরজে গয়লা ঢেলা বয় | প্রয়োজনের জ্বালা বড় জ্বালা; গয়লার বাঁকে যদি একদিকে হাঁড়ি থাকে তবে ভারসাম্য রাখার জন্য অন্যদিকে ইঁটপাথর রাখে; অর্থাৎ আবশ্যক হলে পরিশ্রমসাধ্য অনাবশ্যক কাজও করতে হয়; সমতুল্য- 'দোয়া গাইয়ের চাঁট সই'। |
গরব কর যৌবনভরে, কাঁদিতে হবে অঝোর ঝরে | যৌবন ফুরিয়ে গেলে নানা দুস্কর্মের কথা মনে পড়বে; তখন এবং তারজন্য অনুশোচনা করতে হবে। |
গরম অম্বল, ঠাণ্ডা দুধ যে খায় সে নির্বোধ | দুইই স্বাস্থ্যের পক্ষে সমান হানিকর। |
গরম জলে ছ্যাঁকা খাওয়া কুকুর জল দেখলে ভয় পায়- ইংরাজী প্রবাদ | অভিজ্ঞতা সতর্ক হতে শেখায়; পূর্বে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকে; যে একবার ঠেকেছে সে দ্বিতীয়বার সেই কাজে এগোয় না; সমতুল্য- 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরেমেঘ দেখলে ভয় পায়', 'চূন খেয়ে গাল পোড়ে, দই দেখলে ভয় করে', দগ্ধ শিশু আগুন দেখলে ভয় পায়', 'নেড়া বেলতলায় একবার' ইত্যাদি |
গরম দুধ অমেয় মিঠা | গরম দুধ অমৃতসমান; প্রাণবর্ধক। |
গরম দুধে যার মুখ পুড়েছে সে ফুঁ দিয়ে ঘোল খায়- হিন্দি প্রবাদ | বেদনাদায়ক পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে অতিসতর্কতা। |
গরম ভাতে বিড়াল বেজার, উচিৎ কথায় বন্ধু বেজার | কাউকে অপছন্দের জিনিষ দিলে তার মন খারাপ; উচিৎ কথা বললে বন্ধুর মন খারাপ। |
গরানো পাথরে শ্যাওলা জমে/ধরে না | সচল মনে ময়লা জমে না। |
গরীব খোঁজে খাদ্য, ধনী খোঁজে খিদে- হিন্দি প্রবাদ | গরীব খিদের জ্বালায় পাগল হয় আর ধনী খিদে না হওয়ার জ্বালায় পাগল হয়। |
গরীবের কথা বাসি হলে ফলে বা সত্য হয় | সাধারণে নগণ্যের কথার গুরুত্ব দেয় না, কিন্তু পরে ঠেকে বুঝতে পারে আগে তার কথা শুনলে ভাল হ'ত। |
গরীব মানুষ ফড়িং খায় ঘোড়ায় চেপে বাহ্যি যায় | দুর্গতিতেও আড়ম্বর বজায় রাখার চেষ্টা। |
গরীবের ঘোড়ারোগ | যে জিনিস পাওয়ার অধিকারী নয় তাই পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা; সামর্থ নেই তবু ধার করে খরচ করে লোক দেখানো বড়লোকি করা। |
গরীবের ঠাকুর ব্যাধি | যে খেতে পায় না তার বাড়ীরে ঠাকুর রেখে সেবা করার মত অবস্থার অতিরিক্ত ব্যয়ের সাধ। |
গরীবের বৌ সবার ভাবি- হিন্দী প্রবাদ | গরীবের অন্তরঙ্গতা বেশী; গরীবের কাছে সবাই একটু বেশি সুবিধা নেবার চেষ্টা করে। |
গরীবের মরণ বিটকেল | গরীব অনেক কষ্ট পেয়ে ম্যারা যায়। |
গরীবের মুড়কিই সন্দেশ | নিজের অবস্থায় যা পাওয়া সম্ভব তাই পেয়ে সন্তুষ্ট থাকা |
গরীবের রাঙ/রাঙ্তাই সোনা | খুব অল্পদামের জিনিসও গরীবের কাছে বহু মুল্যবান; যার যা আছে তাই তার কাছে অমূল্য। |
গরু গামলার ঘাস খায় না // গরু গোয়ালের পাশের ঘাস খায় না | সহজলভ্য জিনিষের কদর নেই। |
গরু ছাগলের মুখে বিষ | মুড়ালে গাছের বৃদ্ধি হয় না; মুর্খের কথাবার্তা অশালীন। |
গরু/গাই বাছুরে মিল থাকলে মাঠে গিয়ে দুধ দেয় | পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকলে ফাঁকিতে কাজ করা যায়। |
গরু জরু ধান রাখো বিদ্যমান | এই তিন সম্পদ নিজের অধীনে রাখতে হয়; অপর হাতে পড়লে তা নষ্ট হয়। |
গরু মেরে বামুনকে জুতো দান | গরু মেরে তার চামড়ায় জুতা বানিয়ে ব্রাহ্মণকে দান; জঘন্য অন্যায় কাজের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে সামান্য প্রতিদান দেওয়া; পাপকার্যের সাহায্যে পূণ্য অর্জনের চেষ্টা |
গরু যার গোবর তার | অর্থ স্পষ্ট |
গরজনে ওয়ালে বরষতে নহীঁ- হিন্দি প্রবাদ | যে বেশি কথা বলে সে বেশি কিছু করে না; সমতুল্য- যে মেঘ গর্জায় সে বর্ষায় না'। |
গর্জায় কিন্তু বর্ষায় না | ভয় দেখায় তবে ভয়কর নয়। |
গর্তে পড়লে বুদ্ধি গজায়- চীনা প্রবাদ | বিপদ থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়। |
গর্তের সাপ খুঁচিয়ে বার করা | অনুপস্থিত বিপদকে কাছে ডেকে আনা। |
গলা টিপলে দুধ বেরোয় | শিশু পাকা পাকা কথা বললে এই প্রবাদ প্রযুক্ত হয়। |
গলা ধরে কাঁদবে তবু মালা ছুঁতে দেবে না | ক্ষেত্রবিশেষে একসাথে থাকলেও স্বার্থত্যাগ করে না। |
গলায় কাঁটা ফুটলে বেড়ালের পায়ে ধরে/পড়ে | বিপদে পড়লে নগণ্যের কাছেও সাহায্য চায়। |
গলায় গলায় পীড়িত | অতিমাত্রায় প্রীতি-ভালোবাসা- বিদ্রুপচ্ছলে ব্যবহৃত |
গলার নীচে গেলে আর কিছু মনে থাকে না | গলায় কাঁটা ফুটলে যন্ত্রণায় দেবতার কছে মানত করে; কাঁটা নেমে গেলেই মানতের কথা ভুলে যায়; কার্যোদ্ধার হয়ে গেলে মানুষ কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুলে যায়; সমতুল্য- 'বিয়ে হয়ে গেলে ছাদনাতলায় লাথি' ইত্যাদি। |
গল্প থেকে বাস্তবঘটনা বেশি বিস্ময়কর | বাস্তব অনেকসময় কল্পনাকেও হার মানায়। |
গল্পের গরু গাছে চড়ে | বর্ণনায় রঙ চড়ানো না হলে ঘটনা সুন্দর হয় না; সমতুল্য- 'কল্পনার ডানা পাখা মেলে'। |
গাঁ বড় তার মাঝের পাড়া; নাক নেই তার নাক নাড়া১ | ছোট্গাঁয়ে কয়েক ঘরের বাস; সেখানে একাধিক পাড়া থাকে না; অস্তিত্বহীন বস্তুর কল্পনা; সম্পূর্ণ নির্গুণ ব্যক্তির গুণের উল্লেখ। |
গাঁ বড় তার মাঝের পাড়া; নাক নেই তার নাক নাড়া২ | ক্ষুদ্রের বৃহতের মত আস্ফালন করলে এই প্রবাদ বলা হয়। |
গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল | অযোগ্যব্যক্তির অপরের উপর অযাচিতভাবে কর্তৃত্ব করার চেষ্টা। |
গাঁয়ের গুণে গড়ে (অলস) গরু বিকোয় | সবাই একযোগে বললে অলসও কর্মঠ হয়। |
গাই ছিল না হ'ল গাই চালুনি নিয়ে দুইতে যাই | কোন বিষয়ে কারো অজ্ঞতা প্রকাশ পেলে তাকে ব্যঙ্গ করতে এই প্রবাদ ব্যবহৃত হয়। |
গাই নাই তো বলদ দুয়ে দে // গাই নাই তো বলদ দো | যেভাবেই হোক কোন কাজ করিয়ে নিয়ে পারিশ্রমিক দেওয়া। |
গাই নেবে দুইয়ে বলদ নেবে বেয়ে | গুণ যাচাই করে বস্তু নির্বাচন করা উচিত। |
গাই বাছুরে পীরিত থাকলে মাঠে গিয়ে দুধ দেই | দোহনকালে অনেক গরুর সব দুধ দেই না কিছু লুকিয়ে রাখে পরে মাঠে চরার সময় বাছুরকে দুধ খাওয়ায়; মনে মিল বড় মিল। |
গাইতে গাইতে গায়েন, বাজাতে বাজাতে বায়েন | অধ্যবসায়ের ফলে দক্ষতা আসে; অভ্যাস দ্বিতীয় প্রকৃতি; মানুষ ক্রমে ক্রমে বিজ্ঞ হয়; দমতুল্য- ভবতি বিজ্ঞতম: ক্রমশো জন:। |
গাইতে চাইলে বলতে শেখো | সববিষয়েই আগাম প্রস্তুতি লাগে। |
গাঙ পেরুলেই কুমীরকে কলা | ভয় কাটলেই বীরপুরুষ |
গাঙে গাঙে দেখা হয়, বোনে বোনে দেখা নেই | বহুদূর বয়ে গিয়ে দুটি নদীর মিলন সম্ভব, কিন্তু কখনো দুইবোনের মিলন সম্ভব নয়। |
গাছ থেকে ফল ভারি নয় | অখণ্ড থেকে খণ্ড বড় হয় না; যে যা থেকে উৎপন্ন সে তা থেকে বড় নয়। |
গাছগাছালি ঘন রোবে না; গাছ হবে তার ফল হবে না- খনা | আলো না পেলে গাছ কলবতী হয় না; |
গাছে গাছে আগুন জ্বলে, বৃষ্টি হবে খনায় বলে | বনে আগুন লাগলে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। |
গাছ থেকে পড়ে গেল জন পাঁচ সাত, যার যেখানে ব্যথা তার সেখানে হাত | যার যেখান স্বার্থ তার সেখানে নজর; জুতা যে পরেছে সেই জানে কাঁটা কোথায় বিঁধছে। |
গাছে উঠতে পারে না বড় আমটি আমার | অতিরিক্ত/অন্যায় আবদার। |
গাছে উঠে পড়তে, জামিন হয় মরতে | গাছে উঠলে পড়ার ভয় থাকে; জামিন হলেই অর্থদণ্ড দেওয়ার ভয় থাকে। |
গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল | গাছের কাঁঠাল গাছেই আছে; সেটা খেতে গেলে পাছে আঠা লাগে তাই আগে থেকেই গোঁফে তেল মাখানো হচ্ছে; প্রাপ্তির পূর্বেই ভোগের আয়োজন; সমতুল্য- 'কালনেমির লঙ্কাভাগ'। |
গাছে গাছে লাগলে আগুন বৃষ্টি হবে দ্বিগুণ দ্বিগুণ- খনা | বনাঞ্চলে আগুন লাগলে দ্বিগুণ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, |
গাছে চড়ানো | অযথা প্রশংসা করা; চাটু বাক্যে গর্বিত করা; সমতুল্য- তোল্লাই দেওয়া |
গাছে তুলতে সবাই আছে, নামাতে কেউ নেই | বিপজ্জনক কাজে নামিয়ে দিতে সবাই তৎপর, কিন্তু বিপদে পড়লে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসে না। |
গাছে তুলে মই কেড়ে নেই | বিপজ্জনক কাজে নামিয়ে উদ্ধারের উপায় বন্ধ করে কেটে/সরে পড়ে; উৎসাহ দিয়ে কর্মে প্রবৃত্ত করে অসহায় অবস্থায় ফেলে সরে দাঁড়ায়। |
গাছে না উঠতেই এক কাঁদি১ | কাজ নামার সঙ্গে সঙ্গেই কিছু ফল প্রাপ্তি। |
গাছে না উঠতেই এক কাঁদি২ | কাজ নামার আগেই ফলের প্রত্যাশা করা। |
গাছের পরিচয় ফলে | আচরণই মানুষকে চেনায়। |
গাছের ভয় বাতাসে, পদ্মের ভয় শিশিরে, সজ্জনের ভয় দুর্জনে | প্রত্যেকেরই একটি করে ভয়ের যায়গা থাকে। |
গাছেরও খায় তলারও কুড়ায়১ | নিতান্ত স্বার্থপরের মত কাজ করা |
গাছেরও খায় তলারও কুড়ায়২ | সম্পদের সবটুকুই ভোগ করে; সব সুবিধাগুলি পেতে চায়। |
গাছের দশটা থেকে পাতের একটাই ভাল | সম্ভাব্য কোন বড়প্রাপ্তি থেকে নিশ্চিত এক ছোটপ্রাপ্তি অনেক ভাল; সমতুল্য- 'হাতের একটা পাখি বনের দুটি পাখির সমান'; 'হাতের জিনিস ফেলে দূরের জিনিষ নিতে নেই'। |
গাজনের নেই ঠিকানা ডেকে বলে ঢাক/বাজনা বাজা না | কাজের কোন ঠিক নাই, শুধু আসর গরম করে। |
গাজীসাহেবের মোরগ, পেটে গেলেও ডাক দেয় | যে জিনিস আত্মসাৎ করা অসম্ভব সেইক্ষেত্রে এই প্রবাদ প্রযোজ্য। |
গাড়িকাপর লা লাকাপর গাড়ি- হিন্দি প্রবাদ | কখনো গাড়ির উপর নৌকা কখনো বা নৌকার উপর গাড়ি; অবস্থা সবসময় সমান থাকে না; সমতুল্য- 'চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়' |
গাড়োয়ানের চুমকুড়ি গরুতে চেনে | চেনাজানা লোক একে অপরকে বুঝতে পারে; সমতুল্য- 'সাপের হাঁচি বেদেয় চেনে' |
গাধা জল ঘোলা করে খায় | বোকা সুষ্ঠভাবে কাজ করতে অপারগ। |
গাধা ডাকলে তুমিও তার সাথে ডেকো না | বোকামিকে সমর্থন করা উচিৎ নয়। |
গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করা | স্থূলবুদ্ধিসম্পন্নকে শিখিয়ে পড়িয়ে তীক্ষ্ণবুদ্ধিসম্পন্ন করার মত কঠিন কাজ করা। |
গাধা পেটালে ঘোড়া হয় না | নির্বুদ্ধিকে বুদ্ধিমান করা যায় না; হেয় জিনিষ হেয়ই থাকে মূল্যবান হয় না। |
গাধা সকল বইতে পারে ভাতের কাঠি বইতে নারে | যে খুব শ্রমসাধ্য করতে পারে সে সামান্য কাজে অক্ষমতা জানালে এই প্রবাদ ব্যবহৃত হয়। |
গাধা সিংহের ছাল পড়লে সে সিংহ হয় না | নকল কখনো আসল হয় না। |
গাধাকে প্রশ্ন কোরো না সে মোট বইবে কিনা | নিত্য কাজের খবর করা অর্থহীন। |
গাধার পিঠে ভারী বোঝা | অবোধের খাটনি ভারি। |
গাধার পিঠে সোনার বোঝা চাপালেও সে গাধাই থাকে | অবোধ কখনো বোদ্ধা হয় না; কালো কখনো সাদা হয় না। |
গাবতলা দিয়ে যাবনা, আর গাব খাবনা, গাব খাব না তো খাবো কি, গাবের মত আছে কি | গাব খেতে গিয়ে এক কাকের ঠোঁট আঠায় জড়িয়ে যায়; বিপদে পড়ে সে প্রতিজ্ঞা করে আর গাব খাবে না; আঠা ছেড়ে যেতেই সে দ্বিতীয় বচনটি আওড়ায়; কারে পরে প্রতিজ্ঞা; বিপদ কেটে যেতেই স্বমূর্তি; প্রতিজ্ঞা ভাঙ্গতে কতক্ষণ! |
গায়ে ওড়ে খড়ি, কলপ দেওয়া দাড়ি | ঘরের অবস্থা মন্দ, বাইরে আড়ম্বর প্রদর্শন; সমতুল্য- 'ভিতরে ছুঁচোর কীর্তন, বাইরে কোঁচার পত্তন'। |
গায়ে গু মাখলে যমেও ছাড়ে না | দোষ করলে শাস্তি হবেই; সমতুল্য- 'পাপ বাপকে ছাড়ে না', 'এমন কর্ম তেমন ফল,। |
গায়ে ফুঁ দিয়ে বেড়ানো | নির্ভাবনায় বাবুয়ানা ও ফুর্তি করে বেড়ানো। |
গায়ে ফুঁ দিয়ে বেড়ানো | নির্ভাবনায় বাবুয়ানা ও ফুর্তি করে বেড়ানো। |
গায়ের কালি ধুলে যায়, মনের কালি ম’লে যায় | ভুলত্রুটি সংশোধন করা যায়, কিন্তু মনের গ্লানি মরার আগে মুছে না। |
গায়ের গন্ধে ভূত পালায়, মাথায় মাখে খুসবু/ফুলেল তেল | আদিখ্যেতা; অবস্থার বিপরীত আচরণ। |
গাল টিপলে দুধ বেরোয় | একেবারে অবোধ। |
গাল বাড়িয়ে চড় খাওয়া১ | শখ করে বিপদ ডেকে আনা। |
গাল বাড়িয়ে চড় খাওয়া২ | নির্বুদ্ধিতার কারণে অপমানিত হওয়া। |
গিন্নির উপর গিন্নিপনা ভাঙা পিঁড়েয় আলপনা১ | আগ বাড়িয়ে কাজ নষ্ট |
গিন্নির উপর গিন্নিপনা ভাঙা পিঁড়েয় আলপনা২ | অনধিকারে কর্তার উপর কর্তৃত্বপনা। |
গিন্নির দোষে/পাপে গৃহস্থ নষ্ট | গিন্নি অকর্তব্যকাজ করলে সংসার সুখের হয় না; সমতুল্য- 'রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট'। |
গিন্নির হাতে রাঙা পলা, বউয়ের হাতে সোনার বালা | মর্যাদার উল্লঙ্ঘন। |
গির্জার পাশের লোক গির্জায় যায় না | যখন খুশি যাওয়া যাবে এই ভাবনায় আলসেমি করে যাওয়া হয় না; সহজলভ্যের আকর্ষণ কম; |
গুজব বাতাসে ওড়ে | গুজব খুব দ্রুত ছড়ায়; গুজব মানুষের প্রিয় খাদ্য। |
গুটিপোকা গুটি করে নিজের ফাঁদ নিজে গড়ে | নিজের কাটা গর্তে নিজেই পড়া; নিজের পাতা ফাঁদে নিজেই জড়িয়ে পরা। |
গুড় অন্ধকারেও মিষ্টি লাগে | ভাল জিনিস সকল অবস্থাতেই ভাল। |
গুড় দিয়ে খেলে গুণচটও (থলি) মিষ্টি লাগে | ভালোর সংস্পর্শে এলে মন্দও ভাল হয়। |
গুড় না দিলে মালপো তৈরী হয় না- ইহুদী প্রবাদ | ভালো কিছু পেতে হলে ভালোর সম্মেলন চাই। |
গুণ থাকলে দোষের ভয় | দোষে গুণে মানুষ; কোন অবস্থাতেই মানুষ সমালোচনা এড়াতে পারে না। |
গুণবানের আশ্রয়ে নির্গুণও গুণী হয় | আলোর স্পর্শে এলে অন্ধকার কাটে; চন্দন বলে অচন্দনও চন্দন হয়। |
গুণলুব্ধা স্বয়মেব সম্পদ | সম্পদ গুণানুরাগী; গুণ থাকলে সম্পদ আপনা থেকেই আসে। |
গুণী গুণং বেত্তি, ন বেত্তি নির্গুণঃ | গুণী গুণের কদর বোঝে, নির্গুণে বোঝে না; অর্থাৎ অসারের সার বোঝার ক্ষমতা নেই। |
গুণী গুণং বেত্তি, ন বেত্তি নির্গুণো বলী বলং বেত্তি ন বেত্তি নির্বলঃ। পিকো বসন্তস্য গুণং ন বায়সঃ করী চ সিংহস্য বলং ন মূষিকঃ।। (চাণক্য) | গুণী গুণবানের গুণ বোঝে, নির্গুণে তা বোঝে না; বলীই বলবানের শক্তি অনুধাবন করতে পারে দুর্বলে তা পারে না; কোকিলই বসন্তকালের মর্ম বুঝতে পারে কাকের পক্ষে তানুভব করা সম্ভব নয়; এবং সিংহই হাতীর শক্তি অনুভব করতে পারে মুষিকের পক্ষে তা সম্ভব নয়। |
গুণে কড়ি জলে ফেলি সেও ভাল | কাজ বুঝে নেওয়াই উচিত। |
গুণে নুন দিতে নেই | নূন দিলে ব্যঞ্জন সুস্বাদু হয়, কিন্তু নূন দিলেও নির্গুণ কখনো গুণী হবে না; নির্গুণের প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি। |
গুণেতে হইলে বড়, বড় বলে সবে, বড় যদি হতে চাও, ছোট হও তবে- হরিশ্চন্দ্র মিত্র | মানুষ ভগ্নাংশের মত; সে প্রকৃত যা সেটা হল হর; আর সে নিজেকে যা ভাবে সেটা হল লব; নিজেকে ছোট ভাব তাহলেই বড় হবে। |
গুণের ঘাট (ঘাটতি) নেই১ | জে কোন অপকর্ম করেছে তার প্রতি বক্রোক্তি। |
গুণের ঘাট (সীমা) নেই২ | বদগুণের সীমা-পরিসীমা নেই; নির্গুণের প্রতি বিদ্রুপোক্তি। |
গুণের বালাই দেখে মরি | সদগুণের অভাব দেখে খেদোক্তি। |
গুণের বালাই নেই | বদগুণের আধিক্য দেখে খেদোক্তি। |
গুবরেপোকার পদ্মমধু খাবার সাধ | অক্ষমের উচ্চাশা; নীচের উচ্চাকাঙ্ক্ষা। |
গুমরে মাটিতে পা পড়ে না | অহংকারী মেজাজে ধরাকে সরা মনে করা। |
গুয়ের এপিঠ আর ওপিঠ, দু’পিঠই সমান | মন্দের সবই মন্দ; অপকৃষ্টতায় উভয়ে তুল্যমূল্য। |
গুয়ে বলে গোবরদাদা তোর গায়ে গন্ধ | নিজের দোষ জানে না পরের দোষ খোঁজে; সমতুল্য- 'চালুনি বলে ছুঁচ তোর পিছনে/মার্গে কেন ছ্যাঁদা'; 'চালুনি বলে ধুচুনিভাই তুমি বড় ফুটো'। |
গুরু ছেড়ে গোবিন্দ ভজে, সে জন নরকে মজে | ইষ্টগুরু সর্বাগ্রে পূজ্য। |
গুরু বোবা শিষ্য কালা, যেমন গুরু তেমন চেলা | উভয়ই মন্দ/মূর্খ; মনিকাঞ্চনযোগ। |
গুরুমারা বিদ্যা১ | অনিষ্ট করার জন্য গুরুর কাছে প্রাপ্তশিক্ষা তারই উপর প্রয়োগ। |
গুরুমারা বিদ্যা২ | বিদ্যায় গুরুকে অতিক্রম। |
গুরু মোটে দাঁড়িয়ে তো শিষ্য মোতে পাক দিয়ে | গুরু থেকে শিষ্য তীক্ষ্ণ; মূল অপেক্ষা শাখা প্রবল; সমতুল্য- 'তালৈয়ের চেয়ে পুতরা ভারি'; 'বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়'; 'বাপের চেয়ে ছেলে কড়া'; 'সূর্যের চেয়ে বালির তাপ বেশি' ইত্যাদি। |
গুরুর কথা শোনে না কানে প্রাণ যায় তার হেঁচকা টানে | গুরুজনদের কথা অগ্রাহ্য করলে বিপদে পড়তে হয়। |
গুরুরগ্নির্দ্বিজাতীনাং বর্ণানাং ব্রাহ্মণো গুরুঃ। পতিরেকো গুরুঃ স্ত্রীণাং সর্বত্রাভ্যাগতো গুরুঃ।। (চাণক্য) | আগুন দ্বিজাতির (ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় এবং বৈশ্যের) গুরু, ব্রাহ্মণ সকল বর্ণের (ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্রের) গুরু, নারীদের স্বামীই একমাত্র গুরু এবং সকলের পক্ষেই অতিথি গুরু। |
গূঢ়ঞ্চ মৈথুনং ধার্ষ্ণ্যং কালে কালে চ সংগ্রহম্। অপ্রমাদমনালস্যং পঞ্চ শিক্ষেত বায়সাৎ।। | গোপনে মৈথুন ক্রিয়া, প্রগল্ভতা (চটপটে ভাব), যথাকালে খাদ্যাদি সংগ্রহ, কখনো অসচেতন না থাকা এবং আলস্যহীনতা- এই পাঁচটি গুণ কাকের কাছ থেকে শিক্ষণীয়। |
গৃহ স্থির আগে কর্ গৃহিণী স্থির তারপর | আগে ব্যবস্থা না করে কোন কাজ করা উচিত নয়। |
গৃহিণী গৃহমুচ্যতে | গৃহিণী থাকলে গৃহ প্রকৃত গৃহে পরিণত হয়; (মূলশ্লোক- ন গৃহং গৃহমিত্যাহু...') |
গৃহীত ইব কেশেষু মৃত্যুনা ধর্মমাচরেৎ | যম চুলের মুঠি ধরে আছে এই ভেবে ধর্মাচরণ করবে। |
গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না | নিজের দেশে বা স্বজনে গুণীর কদর নেই; সমতুল্য- 'অতি চেনার কদর নেই'। |
গেরস্ত কাওরা (অনুন্নত হিন্দু সম্প্রদায়) শোরে কড়ি | কাওরা জাতীয় গৃহস্থীরা শুয়োর বিক্রি করেও লাভবান হয়। |
গেরস্তেরে ভূতে পায়, চাল কুটে পিঠে খায় | বহু কষ্ট স্বীকার করে সেই ভাতই খায় |
গৈর্ গুড় পুয়া নহী বনতে হৈ- হিন্দি প্রবাদ | গুড় না দিলে মালপো তৈরী হয় না; অর্থ না থাকলে কোন কাজ হয় না। |
গোঁফ খেজুরে | অত্যন্ত অলস প্রকৃতির লোক; সমতুল্য- পি পু ফি শু |
গোঁফ দেখলে শিকারী বেড়াল চেনা যায়। | চোখের দিকে তাকিয়ে মনের অবস্থা বোঝা যায়। |
গোঁফ নাইকো কোনকালে দাড়ী রেখেছেন তোবড়াগালে | নিতান্ত বাড়াবাড়ি |
গোঁয়ারের মরণ খোঁয়ারে // গোঁয়ারের মরণ গাছের আগায় | গোঁয়ারের পতন বিশ্রীভাবেই হয়; হটকারী গোঁয়ার্তুমি করে মরে; সমতুল্য- 'বেদের মরণ সাপের হাতে'। |
গোকুলের ষাঁড় | স্বেচ্ছাচারী ব্যক্তি, যে পরের অনিষ্ট করে বেড়ায়; দোষ করলেও শাস্তি পায় না |
গোঙ্গা ছেলের নাম তর্কবাগীশ | গুণহীনে গুণের আরোপ; অযোগ্যকে অতিরিক্ত সম্মানদান; কুৎসিতকে সুন্দর করার হাস্যকর প্রয়াস; যা নয় তা হওয়ার ইচ্ছা; সমতুল্য-'আঁখোকে অন্ধ নাম নয়নসুখ' ;কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন'; ঘুঁটে কুড়ানীর ছেলের নাম চন্দনবিলাস' ইত্যাদি। |
গোজন্ম ঘুচে গন্ধর্বজন্ম হল | অপ্রত্যাশিতভাবে দুর্ভাগ্য কেটে গিয়ে সৌভাগ্যলাভ। |
গোড়া কেটে আগায় জল/পানি দেওয়া | দোষ শুধরানোর চেষ্টা; কারো সর্বনাশ করে সামান্য উপকার করতে যাওয়া। |
গোড়ায় গলদ | শুরুতেই ভুল; বিসমিল্লায় গলদ। |
গোদা পায়ে আলতা | বিসদৃশ সাজ। |
গোদা পায়ে লাথি | খেলে বরঞ্চ আরাম লাগে; অমূলক ভয়। |
গোদা বাড়ি, ছাদন দড়ি এখন তুমি কার, যখন যার কাছে থাকি তখন আমি তার | পরের চাটুকারি করে জে জীবিকা নির্বাহ করে তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। । |
গোদের ওপর বিষফোঁড়া | বিপদের ওপর বিপদ। |
গোনা গরু বাঘে নেয় না | সুরক্ষিত বিষয় নষ্ট হয় না; সাবধানের মার নেই। |
গোপন কথা গোপন থাকে না | গোপন কথা পাঁচকান হয়ে গোপন থাকে না; সাবধানে কথা বলার জন্য চেতাবনি। |
গোপন কথা তোমার গোলাম; ফাঁস করলে তুমি তার গোলাম- আরবী প্রবাদ | গোপন কথা ফাঁস করলেই সমূহ বিপদ। |
গোবরে পদ্মফুল | নির্গুণের ঘরে গুণী সন্তান; দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ। |
গোবর দিয়ে ঘাস এলানো | কথায় না বলে কাজে অনিষ্ট করা (গোবর ছিটানো ঘাস খায় না) |
গোবরে পোকার পদ্মমধু খেতে সাধ | নীচের উচ্চাভিলাষ। |
গোভাগ্য নেই এঁটুলি ভাগ্য আছে | সৌভাগ্য নেই শুধু দুর্ভাগা আছে। |
গো-মড়কে মুচির পার্বণ // গো-মড়কে শকুনের ভোজ | একের ক্ষতিতে অন্যের লাভ; কারো সর্বনাশ, কারো পৌষমাস। |
গোয়ায় নাই ছাল চামড়া খোদার নামে দেয় সাত দামড়া | সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে লোক দেখানো পর্যায়ের কোরবানি দেওয়া |
গোর্ভিবিপ্রৈশ্চ বেদৈশ্চ সতীভিঃ সত্যবাদীভিঃ। অলুব্ধৈর্দ্দানশীলশ্চ সপ্তর্ভিধার্যতে মহী।। (চাণক্য) | এই জগৎ সংসারে গরু, ব্রাহ্মণ, বেদ, সতীনারী, সত্যবাদী, অলোভী ও দানশীল- এই সপ্তবিধ মানুষেই বিধৃত; জগতেঁ এই সকল নয়া থাকলে জগৎ থাকত না। |
গোল গর্তে চৌকো পেরেক বা চৌকো গর্তে গোল পেরেক১ | অসম্ভব, যা হবার নয় |
গোল গর্তে চৌকো পেরেক বা চৌকো গর্তে গোল পেরেক২ | বিসদৃশ মেল, স্বাচ্ছন্দের অভাব (মার্গসঙ্গীতের আসরে আমার উপস্থিতি গোল গর্তে চৌকো পেরের মত অবস্থা) |
গোলাপ/পদ্ম তুলতে গেলে কাঁটা সইতে হয় | অনায়াসে কিছু পাওয়া যায় না; অবিমিশ্র সুখ হয় না; কিছু পেতে গেলে কিছু ঝামেলা সইতে হয়; সমতুল্য-'আগুন পোহাতে গেলে ধোঁয়া সইতে হয়,'গোলাপ তুলতে গেলে কাঁটা সইতে হয়', 'ন সুখং দুঃখৈর্বিনা লভ্যতে', সাধনা না করলে সিদ্ধি নাই' ইত্যাদি |
গোলাপে আছে কণ্টক, চাঁদে আছে কলঙ্ক | দোষগুণ মিলিয়ে মানুষ; কোন কিছুই অবিমিশ্র হয় না। |
গোলাপের জাহির নেই | গুণের প্রচার লাগে না। |
গোলেমালে চণ্ডীপাঠ // গোলে হরিবোল দেওয়া | কাজে ফাঁকি দেওয়া; অপরের যোগসাজশে গোলমাল পাকিয়ে কোনপ্রকারে কাজ সারা। |
গৌর হতে বাকি অনেকদিন | সহজে পূণ্যাত্মা হওয়া যায় না; পুণ্যাত্মা হওয়া সুকঠিন কাজ। |
গৌরবং প্রাপ্যতে দানাৎ, ন তু বিত্তস্য সঞ্চয়াৎ।স্থিতিরূচ্চৈঃ পয়োদানাং পয়োধীনামধঃস্থিতিঃ॥ (চাণক্য) | ধনসঞ্চয়ের মাধ্যমে গৌরবপ্রাপ্তি হয় না; দানের মাধ্যমেই গৌরবপ্রাপ্তি হয়; মেঘের অবস্থান উচ্চে (কারণ সে জলদান করে) এবং সমুদ্রের অবস্থান নীচে, (কারণ সে জল গ্রহণ করে)। |
গ্রহণ হলে সবাই দেখে | পরের বিপদ সবাই উপভোগ করে। |
গ্রাম নেই তার আবার সীমানা | নেই বস্তুর খোঁজের অর্থ হয় না; নাস্তি গ্রাম্যঃ কুত সীমাঃ? |
গ্রামের নাম তেঘরা, তার আবার উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়া | নগণ্যের বাড়াবাড়ি, আদিখ্যেতা; অতি ক্ষুদ্রবস্তুর ভাগ হয় না। |
ঘ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঘটকালি করতে গিয়ে বিয়ে করে আসা১ | পরের কাজ করতে গিয়ে নিজের কাজ করা। |
ঘটকালি করতে গিয়ে বিয়ে করে আসা২ | সুকাজ করতে গিয়ে কুকাজ করা। |
ঘট গড়তে পারে না, মেটের/জালার বায়না নেয়১ | ক্ষমতার বাইরে প্রত্যাশা করা। |
ঘট গড়তে পারে না, মেটের/জালার বায়না নেয়২ | ক্ষুদ্রের বৃহৎ কাজ করতে যাওয়া বিড়ম্বনামাত্র। |
ঘটি কেনা গঙ্গাস্নান | দুই কাজ একসঙ্গে সারা; সমতুল্য- 'একঢিলে দুইপাখি মারা'; রথ দেখা কলা বেচা'। |
ঘটি ডোবে না, নামে তালপুকুর | ক্ষুদ্রব্যক্তির বড় নামগ্রহণ; নামের চোটে গগন ফাটে; এক সময়ের বড়লোকের এখন চরম আর্থিক অনটন। |
ঘটির তলায় দিয়ে আঠা যোগেযাগে কাল কাটা | অভাবের সংসারে কষ্টেসৃষ্টে দিন কাটানো। |
ঘটে বুদ্ধি নাই | আহাম্মক, বুদ্ধিহীন। |
ঘড়িক্কে ঘোড়া ছোটা১ | মুহূর্তের মধ্যে বিপুল পরিবর্তন হতে পারে। |
ঘড়িক্কে ঘোড়া ছোটা২ | মুহূর্তের মধ্যে মত পরিবর্তন হতে পারে। |
ঘনাম্বুনা রাজপথে হি পিচ্ছিলে ক্বচিদ্ বুধৈরপ্যপথেন গম্যতে | বৃষ্টির জলে রাজপথ পিচ্ছিল হলে বিজ্ঞলোকও কখনো কখনো অপথে গমন করেন। |
ঘন্টা বাজিয়ে দুর্গোৎসব, ইতু পূজায় ঢাক১ | বিপরীত বুদ্ধির লোক। |
ঘন্টা বাজিয়ে দুর্গোৎসব, ইতু পূজায় ঢাক২ | কাজের অনুরূপ ব্যবস্থা না করে বিপরীত ব্যবস্থাগ্রহণ। |
ঘনদুধের ফোঁটা, বড়মাছের কাঁটা | ভাল জিনিসের অল্পও ভালো। |
ঘরও ঢোকে, পাও কাঁপে | লোভও সম্বরণ করতে পারে না আবার ভয়ও পায়। |
ঘরকন্না করতে গেলে ঘটিবাটিতে ঝগড়া হয়/ঠোকাঠুকি হয় | সংসারে মনোমালিন্য অতি স্বাভাবিক ব্যাপার। |
ঘরকুনোর বিদ্যা হয় না | কিছু জানতে গেলে বাইরে বেরুতে হয়। |
ঘরকা ভেদী লংকা ঢায়ে- হিন্দি প্রবাদ | ঘরের শত্রু অনেক দুর পর্যন্ত ক্ষতি করতে পারে' সমতুল্য- ঘরভেদী বিভীষণ |
ঘরকা/কী মুরগী দাল (ডাল) বরাবর- হিন্দি প্রবাদ | সহজলভ্য বস্তুর কদর নেই; সুলভ মুল্যবান বস্তুর তেমন আদর হয় না। |
ঘরচোরকে পেরে ওঠা দায় | নিজের লোক অনিষ্টকারী হলে সেই অনিষ্ট রোখা কঠিন। |
ঘরচোরের পার নেই | ঘরের শত্রুর বেশি শাস্তি পাওয়া উচিত। |
ঘর জামাইয়ের পোড়া মুখ, মরা-বাঁচা সমান সুখ | ঘর জামাই হয়ে থাকা নিন্দনীয়। |
ঘর জ্বালানো/নে পর ভুলানো/নে | আত্মীয়ের কাছে পীড়াদায়ক, কিন্তু পরের কাছে প্রিয় এমন স্ত্রীলোকের প্রতি ইঙ্গিত। |
ঘর থাকতে বাবুই ভেজা | সুযোগ থাকতে সুযোগ না নেওয়া; মুর্খামি। |
ঘর বাঁধবে ছাইবে না, ধার দেবে চাইবে না | দুইই চুড়ান্ত মুর্খামি। |
ঘরদোর নেইকো যার, আগুনে ভয় কি তার | অভাগার কিছুতে ভয় পাওয়ার নেই। |
ঘরনীর কাজ কখনও শেষ হয় না | সংসারের টুকিটাকি কাজ লেগেই থাকে; কাজের অন্ত নেই। |
ঘর নেই দোর বাঁধে, বৌ নেই ছেলের জন্য কাঁদে | নিস্ফল কাজ। |
ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়/ভয় পায়১ | অভিজ্ঞতা সতর্ক হ'তে শেখায়; পূর্বে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকে। |
ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়/ভয় পায়২ | যে একবার ঠেকেছে সে দ্বিতীয়বার সেই কাজে এগোয় না। সমতুল্য- 'চূন খেয়ে গাল পোড়ে, দই দেখলে ভয় করে';'নেড়া বেলতলায় একবার যায়' ইত্যাদি |
ঘর পোড়ার কাঠ | যেখানে সবই যাচ্ছে সেখানে যা আসে তাই লাভ। |
ঘর পোড়ার কাঠ | যেখানে সবই যাচ্ছে সেখানে যা আসে তাই লাভ। |
ঘর ফাঁদতে দড়ি ঘর বাঁধতে কড়ি | কাযে নামার আগে প্রয়োজোনীয় সামগ্রীর কথা ভাবা প্রয়োজন। |
ঘর বাঁধে ছায় না, ধার দেয় চায় না | নির্বোধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। |
ঘরভেদে/সন্ধানে রাবণ নষ্ট | গৃহশত্রুতার কারণে সংসার ভাঙে; ঘরে শত্রু থাকলে বিনাশ অনিবার্য। |
ঘরমুখো বাঙালি, রণমুখো সেপাই | যার যা স্বভাব; প্রবাসী বাঙালী সবসময় ঘরে ফিরতে চায়; যুদ্ধের সময় সেপাইকে ঘরে আটকে রাখা যায় না। |
ঘরশত্রু বিভীষণ // ঘর সন্ধানী বিভীষণ | ঘরের অনিষ্টকারীকে লক্ষ্য করে এই প্রবাদটি ব্যবহৃত হয়। |
ঘরামির ঘর ছেঁদা // ঘরামির ঘরে জল পড়ে // ঘরামির মটকা আদুল | পরের কাজ করে বেড়ায়, নিজের কাজে নজর নেই; নিজের কাজে অমনযোগিতা। |
ঘরে আওয়ে অন্ঘেরী বাত কহে বনায়, জানিও পুরৌ বৈরী- হিন্দি প্রবাদ | অচেনালোক ঘরে এসে চাটুকারী করলে জানবে সে পুরোমাত্রায় শত্রু। |
ঘরে ছুঁচোর কেত্তন, বাইরে কোঁচার পত্তন // ঘরেতে অষ্টরম্ভা, বাইরে কোঁচা লম্বা // ঘরে নেই ভাত, কোঁচা তিন হাত // ঘরে নেই ঘটিবাটি, কোমরে মেলা চাবিকাঠি | ঘরে অন্নের সংস্থান নেই, বাইরে বাবুগিরি; বাড়িতে চরম দারিদ্র্য বাইরে বড়লোকি দেখানো; প্রকৃত অবস্থা গোপন করে আড়ম্বর প্রদর্শন। |
ঘরে নেই দশটি পথে পথে কষ্টি১ | ঘরে দেখার কেউ নেই তাই নির্ভাবনায় বাইরে আনন্দ ক্রে বেড়ায় |
ঘরে নেই দশটি পথে পথে কষ্টি২ | 'ঘরে ছুঁচোর কেত্তন, বাইরে কোঁচার পত্তন' এর অনুরূপ। |
ঘরে নেই ভাজাভুজা, নিত্য করেন গোঁসাই পূজা | ঘরে অন্ন নেই, তবু নিত্যপূজার বিরাম নেই; ভগবানে ভীত দুর্বলচিত্ত। |
ঘরে নেই যা, বাছা মাগে তা। | অভাগী মায়ের মনঃকষ্ট। |
ঘরে বসে কেল্লামারা | ঘরে বসে সারা পাড়ার খবর রাখা; পিঁড়েয় বসে পেঁড়োর খবর |
ঘরে বসে পুছে বাত তার ঘরে হা ভাত | অলসের অন্নের সংস্থান হয় না। |
ঘরে বসে রাজা উজির মারা | লম্বাচওড়া কথা বলে অকর্মার নিজেকে জাহির করা; লম্বাই চওড়াই বাতের কাপুরুষ। |
ঘরে ভাত নেই, দ্বারে বাহারী পর্দা // ঘরে শাক সিজানা বাইরে বাবুয়ানা | দৈন্যাবস্থা লুকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা। |
ঘরে ভাত না থাকলে শালগ্রামের সোনা বেচে খায় | বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা করতে গিয়ে লেজেগোবরে; সমতুল্য- 'অভাবে স্বভাব নষ্ট'। |
ঘরের ইঁদুর বাস (কাপড়) কাটলে ধরে রাখে কে? | নিজের লোক ক্ষতি করলে তা নিবারণ করা কঠিন। |
ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ায় | নিজের টাকায় পরের উপকার করে; বিনা পারিশ্রমিকে পরের জন্য পরিশ্রম করে; না-কাম করে। |
ঘরের দরজা খোলা পেলে সাধুও চোর হয় | খোলা দরজা সজ্জনকেও প্রলুব্ধ করে। |
ঘরের ঢেঁকির কুমির হওয়া | লুকিয়ে শত্রুতা করা |
ঘরের মধ্যে ঘর, সবাই মাতব্বর | ঘরের সবাই নিজেকে মাতব্বর মনে করে। |
ঘরের মা ভাত পায় না, পরের জন্য মাথাব্যথা | ঘর ছেড়ে পরকে নিয়ে পড়া। |
ঘরের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা | ইচ্ছা করে নিজের অমঙ্গল ডেকে আনা। |
ঘরের শত্রু বিভীষণ | যে শত্রু আপনজন; প্রচ্ছন্ন শত্রু |
ঘরের ষাঁড়ে পেট ফাঁড়ে, পুরানো চাল ভাতে বাড়ে | নিজের লোক অনিষ্ট করে, আবার নিজের লোকই ইষ্ট করে। |
ঘর্ষণবিনা রত্ন উজ্বল হয় হয় না, কষ্টবিনা মানুষ সম্পূর্ণ হয় না- কনফুসিয়াস | অনায়াসে কিছু লব্ধ হয় না। |
ঘষতে ঘষতে পাথরও ক্ষয় হয় | পরিশ্রম করলে সিদ্ধি আসে; নিয়ত অভ্যাস করলে স্থূলবুদ্ধিও সূক্ষ্মবুদ্ধি হয়। |
ঘষে মেজে রূপ ধরে বেঁধে সোহাগ | নকল আসলের মত হয় না; কৃত্রিম সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী। |
ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়া | বড় কোনো বিপদ থেকে নিস্কৃতিলাভ। |
ঘা শুকালেও চিহ্ন থাকে | মর্মান্তিক বেদনার স্মৃতি চিরদিন জাগরুক থাকে। |
ঘায়েই মাছি বসে | দুস্কর্ম লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। |
ঘি আদুর ঘোল ঢাকা | মুল্যবান বস্তুর দিকে নজর নেই; সামান্য বস্তুর দিকে কড়া নজর। |
ঘি ঢাললেও কুকুরের লেজ সোজা হয় না | স্বভাব যায় না মলে। |
ঘি দিয়ে ভাজ নিমের পাতা, তবু যায় না জাতের জাতা | জাতবৈশিষ্ট্য কখনো যায় না; মন্দ কখনো ভাল হয় না। |
ঘুঁটেকুড়ুনির ছেলের নাম চন্দনবিলাস | যা নয় তাই ভেবে মনের সান্ত্বনা। |
ঘুঁটে কুড়ুনির ব্যাটা চন্দনবিলাস | যা নয় তাই হওয়ার চেষ্টা; কেউ অত্যধিক আত্মপ্রচার করলে অতীতের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে এই উক্তি করা হয়; সমতুল্য- 'আঁখোকে অন্ধকে নাম নয়নসুখ'; কানাছেলের নাম পদ্মলোচন; কালো ছেলের নাম গৌরাঙ্গসুন্দর' ইত্যাদি। |
ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে; তোমার একদিন আছে শেষে | পরের দুঃখে আনন্দ করে কিন্তু ভুলে যায় সে বিপদ নিজেরও হতে পারে। |
ঘুঘু দেখেছ ফাঁদ দেখনি | ঘুঘুর আনন্দ-বিচরণই দেখছ, তার ফাঁদে পড়ার যন্ত্রণা দেখনি; আরম্ভের সুখটাই দেখেছো, শেষের দুঃখটা দেখনি; কাউকে বিপন্ন করার ভয় দেখানো; চতুরব্যক্তির প্রতি শাস্তিপ্রাপ্তির ইঙ্গিত। |
ঘুম নাই যোগীর আর রোগীর | যোগী যোগসাধনা করে আর রোগী যন্ত্রণায় ছটফট করে তাই উভয়ে নিদ্রাশূন্য। |
ঘুমন্ত কুকুরকে জাগিয়ো না | বিপদকে আহ্বান করো না। |
ঘুমন্ত বাঘ শিকার ধরে না // ঘুমন্ত বিড়াল ইঁদুর ধরে না // ঘুমন্ত শিয়ালের হাঁস বা মুরগি জোটে না // ঘুমন্ত সিংহের মুখে হরিণ ঢোকে না | শুয়ে থাকলে ভাগ্যও শুয়ে থাকে; অলসের সৌভাগ্য হয় না। |
ঘৃণায় ঘৃণা বাড়ে | ঘৃণা তিক্ততা বাড়ায়, মনে মালিন্য সৃষ্টি করে। |
ঘৃতকুম্ভ সমা নারী তপ্তাঙ্গারসমঃ পুমান্। তস্মাৎ ঘৃতঞ্চ বহ্নিঞ্চ নৈকত্র স্থাপয়েদ্বুধঃ॥ (চাণক্য) | স্ত্রীলোক ঘৃতপূর্ণঘটের সমান; পুরুষ জ্বলন্ত আগুনের সমান; জ্ঞানীব্যক্তি ঘৃত এবং বহ্নিকে কখনো একত্রে রাখবেন না। |
ঘেউ-ঘেউ করা কুকুর কামড়ায় না বা কদাচিৎ কামড়ায় | যে মারব বলে লাফায় সে কদাচিৎ মারে। |
ঘেয়ো কাঁঠালের মুচি খদ্দের | উভয়ে সমান মন্দ। |
ঘোড়া চিনি কানে দাতা চিনি দানে মায়ে চিনি হাসে পুরুষ চিনি কাশে | অর্থ স্পষ্ট। |
ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া | উপরওয়ালাকে ডিঙিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করা। |
ঘোড়া থাকলে চাবুক আটকায় না // ঘোড়া থাকলে চাবুকের ভাবনা | বেশীটা হয়ে গেলে অল্পের জন্য ভাবনা নেই; বড়টা হয়ে গেলে ছোটটার জন্য চিন্তা হয় না। |
ঘোড়া দেখে খোঁড়া // ঘোড়া দেখে খোঁড়া হওয়া | বিলাসপ্রিয় অলসব্যক্তি; আরাম পাওয়ার সুযোগ পেলেই নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকা। |
ঘোড়া ভেড়ার একদর | ভালোমন্দের বিচার নেই; শ্রেষ্ঠত্বের দাম নেই; মুড়ি মিছরির একদর। |
ঘোড়ার আগে গাড়ী জুতা | বিপরীতবুদ্ধির কাজ; সমতুল্য- 'জল খেয়ে জাতের বিচার'। |
ঘোড়ার ঘাসকাটা | অকাজ করা; বৃথা কাজে সময় নষ্ট করা। |
ঘোড়ার ডিম | অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না; সমতুল্য- অশ্বডিম্ব, আঁটকুড়ের ব্যাটা, আকাশকুসুম, এঁড়ে গরুর দুধ, কাঁঠালের আমসস্ত্ব, পশ্চিমে সূর্যোদয়, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি; |
ঘোড়ার পেট, গাধার পিঠ, খালি থাকে কদাচিৎ | যার যা কাজ সে তাই করে- ঘোড়া সবসময় খায় আর গাধা সবসময় খাটে। |
ঘোমটার মধ্যে খেমটা নাচ১ | আড়ালে কুৎসিত আচরণ। |
ঘোমটার মধ্যে খেমটা নাচ২ | সাধুত্বের আড়ালে ভণ্ডামি। |
ঘোল, কুল, কলা- তিনে নাশে গলা | গলার পক্ষে তিনটি খাদ্য অনিষ্টকর। |
ঘোল খাবে রামা, কড়ি দেবে শ্যামা | একজনের সুখের জন্য অন্যজনের অর্থব্যায়। |
ঘোলা জলে মাছ ধরা | বিশৃঙ্খলার সুযোগে কাজ হাসিল করা; সমতুল্য- 'এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই'। |
ঘোলা জলে মাছ ধরাটা মুখ্য যাদের ধর্ম, তারা পারে না করতে, নেইকো এমন কর্ম। | দুস্কৃতি সব কিছুই করতে পারে। |
চ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
চকচক করলেই সোনা হয় না | নকল না খাঁটি, তা চেহারা দেখে বোঝা যায় না; দ্রব্যের বাহ্যিক রূপ তার গুণ প্রকাশ করে না; সমতুল্য- 'পৈতা থাকলেই বামুন হয় না'; 'মন্দিরে গেলেই সাধু হয় না'; 'সব ঝিনুকে মুক্তা থাকে না' ইত্যাদি। |
চক্রবৎ পরিবর্তন্তে সুখানি চ দুঃখানি চ | সুখদুঃখ চক্রকারে পরিবর্তিত হয়; একটার পর একটা আসে; সমতুল্য- 'আজ আমীর/রাজা কাল ফকির'; 'আলোর পোর আধার আসে'; 'চিরদিন কারো সমান নাহি যায়';'মেঘ দেখে তুই করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে' ইত্যাদি; (মূলশ্লোক- সুখস্যানন্তরং দুঃখং...') |
চক্ষু থাকতে কানা | দেখেও দেখে না; চক্ষু আছে তবে জ্ঞানচক্ষু নেই- অবোধের প্রতি তির্যোক্তি। |
চক্ষুদোষে সব হলদে | বাঁকাচোখ সব মন্দ দেখে। |
চক্ষু মুদলেই প্রলয় বন্ধ হয় না | জগৎ চলে তার নিজের নিয়ম, ব্যক্তি জগতের অংশমাত্র। |
চক্ষুলজ্জার মাথা খাওয়া | নির্লজ্জ বেহায়ার মত আচরণ। |
চক্ষু সব কিছু দেখে শুধু নিজেকে দেখতে পায় না | চক্ষু দেখে না মন দেখে। |
চক্ষে চক্ষে যতক্ষণ প্রাণ পোড়ে ততক্ষণ | না দেখলে নাই; চোখের নেশা; অস্থায়ী মেকি প্রণয়। |
চক্ষে দেখলে শুনতে চায় এমন নির্বোধ আছে কোথায়? | মহাহাম্মকই শুধু প্রত্যক্ষ প্রমাণ ছেড়ে দিয়ে শোনা কথায় আস্থা রাখে। |
চক্ষে ষরষে ফুল দেখা | ভীষণ বিপদে পড়ে হতবুদ্ধি। |
চটকস্য মাংসং ভাগ শতকং | অত্যল্প সম্পত্তির বেশি ভাগ হলে কারো ভাগে কিছু পড়ে না। |
চড় মারলে চড় খেতে হয় | অন্যের ক্ষতি করলে নিজেরও ক্ষতি হয়; সমতুল্য- 'আঘাত করলে প্রত্যাঘাত খেতে হয়', 'আয়না যেমুখ দেখে সেইমুখ দেখায়', 'ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়', 'ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া থাকে', 'ধ্বনির প্রতিধ্বনি আছে/থাকে' ইত্যাদি। |
চড় মেরে চড় খাওয়া | ইচ্ছা করে বিপদ ডেকে আনা। |
চড় মেরে গড় করা | ইচ্ছা করে অপমান করে ক্ষমা প্রার্থনা করা; ইচ্ছা করে লাথি মেরে ক্ষমা চাওয়া। |
চড়াই পাখির প্রাণ অল্পেতেই যান | ক্ষীণজীবী। |
চড়ুকে বাতিক | চড়কে পাক খাওয়ার লোভে সন্ন্যাসী হওয়ার ইচ্ছা। |
চড়ুকে হাসি | কাষ্ঠহাসি; পিঠফুঁড়ে চড়কগাছে যে পাক খায়, সে যন্ত্রণাবিদ্ধ হয়েও লোক দেখানো হাসি হাসে। |
চণ্ডালোহপি নরঃ পূজ্য যস্যাস্তি বিপুলং ধনম | প্রভুত ধনশালী হলে মন্দও সমাজে সম্মানিত হয়; অর্থেন সর্বে বশাঃ। |
চণ্ডীচরণ (মুর্খ ছেলে) ঘুঁটে কুড়োয় রামা (শিক্ষিত ছেলে) চড়ে ঘোড়া | লেখাপড়া যেমনই হোক-না-কেন কপাল না থাকলে সুখভোগ হয় না; ভাগ্যের কারণেই কেউ বা রাজা কেউ বা ফকির। |
চণ্ডীপাঠ ইস্তক/থেকে জুতো সেলাই | সবরকমের কাজ, সকল কাজের কাজী। |
চঞ্চলা নদীর গভীরতা কম | অল্পজ্ঞানী লোকেরা হালকা চরিত্রের হয়। |
চতুরের ফতুর হওয়া | অতিচালাক সর্বশান্ত হয়; সমতুল্য- 'অতিচালাকের গলায় দড়ি'। |
চতুরের সাথে চতুরালি | সমানে সমানে লড়াই; সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি। |
'চ'তে গুরু 'ম'তে শিষ্য | যেমন গুরু তেমনি শিষ্য, উভয়েই সমান; সমতুল্য- 'যেমন গুরু তেমনি চেলা'। |
চন্দনগাছ ছেদন করলেও সুগন্ধ ত্যাগ করে না | গুণী অবস্থা বিপর্যয়েও চরিত্রগুণ হারায় না। |
চন্দনগাছের সংসর্গে এসে বাঁশগাছ চন্দন হয় না | নির্গুণ কখনো গুণী হয় না; সমতুল্য- |
চন্দনগাছের সংস্পর্শে এসে শেওড়াগাছও সুগন্ধ পায় | গুণবানকে আশ্রয় দিলে নির্গুণও গুণী হয়। |
চন্দনং ন বনে বনে | ভালোর অল্প হয়। |
চন্দনং শীতলং লোকে, চন্দনাপি চন্দ্রমা। চন্দ্রচন্দনইয়োর্মধ্যে শীতলা সাধুসঙ্গতি॥ (চাণক্য) | চন্দন লোককে শীতল করে; চন্দন থেকে চন্দ্র বেশি শীতল; চন্দ্র-চন্দন থেকেও সাধুসংসর্গ আরও বেশি শীতল। |
চন্দ্র সূর্য অস্ত গেল, জোনাকি ধরে বাতি; মোগল পাঠান হদ্দ হল ফারসি পড়ে তাঁতি। | অক্ষমের আস্ফালন; মহতের অভাব কোন নগণ্য মেটাতে পারে না। |
চমড়ী যায়ে পর দমড়ী না যায়ে- হিন্দি প্রবাদ | মহা কৃপণব্যক্তি |
চরণামৃত চরণামৃত না জানি কি অমৃত, খেয়ে দেখি জল১ | অচেনা অজানা বস্ফাঁতু পিয়ে বিরাট করে দেখানো লোকগুলি দোষেগুণে ভরা সাধারণলোকের এক খণ্ডমাত্র। |
চরণামৃত চরণামৃত না জানি কি অমৃত, খেয়ে দেখি জল১ | ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বিরাট করে দেখানো লোকগুলি দোষেগুণে ভরা সাধারণলোকের এক খণ্ডমাত্র। |
চরিত্রের গুণে মানুষ সবার চোখে বাসে | আপনগুণে অচেনা মানুষ পরম আত্মীয় হইয়। |
চরিত্র সৎলোকের অনেক দোষ ঢেকে দেয়, চরিত্র অসৎলোকের গুণ ঢেকে দেয় // চরিত্রের কারণেই সম্মানীয়ব্যক্তি সম্মান হারায়, আবার নগণ্যব্যক্তি সম্মানিত হয়- আরবী প্রবাদ | আচরণেই মানুষকে চেনা যায়। |
চরৈবেতি চরৈবেতি | এগিয়ে চলো, এগিয়ে চলো; এগিয়ে চলাই ধর্ম। |
চর্চায় সিদ্ধিলাভ হয় | অনুশীলনে ফললাভ হয়। |
চলচ্চিত্তং; চলদ্বিত্তং চলজ্জীবনযৌবনম্। চলাচলমিদং সর্বং; কীর্তিযস্য স জীবতি॥ (চাণক্য) | মন, ধন, জীবন যৌবন- সবই এ জগত অস্থায়ী ও চঞ্চল; একমাত্র কীর্তিই চিরস্থায়ী। |
চলছে যদি বঙ্গে, কপাল যাবে সঙ্গে | যেখানেই যাও না কেন অদৃষ্টও তোমার সঙ্গে সঙ্গে যাবে। |
চলত্যেকেন পাদেন তিষ্ঠত্যেকেন বুদ্ধিমান্। নাহসমীক্ষ্য পরং স্থানং পূর্বমায়তনং ত্যজেৎ॥ (চাণক্য) | বুদ্ধিমান ব্যক্তি একপা চলেন, একপা স্থির থাকেন, পরবর্তী পদক্ষেপের স্থান না দেখে পূর্বস্থান ছাড়া অনুচিত। |
চলতে চাইলে দাঁড়াতে শেখো | সবকিছুতেই প্রাক-প্রস্তুতি লাগে। |
চলতে না পারলে উঠোন বাঁকা | কাজ করতে না পারলে অপরের দোষ খোঁজে; অক্ষমের অজুহাত খাড়া; সমতুল্য- 'নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা'। |
চলতে পারে না বন্দুক ঘাড়ে | ছোট কাজ পারে না বড় কাজের বরাত নেয়। |
চলতে শিখলে পড়তে হয় না | সক্ষমব্যক্তি কখনো ব্যর্থ হয় না। |
চললে পোয়া, বসলে ক্রোশ, পথ বলে মোর কিসের দোষ? | অলস না হলে কোন কাজই অসাধ্য নয়; অযথা কালক্ষেপ না করলে সব কাজই সময়ে সম্পন্ন হয়। |
চললেই চল্লিশ বুদ্ধি, না চললে হতবুদ্ধি | শিখতে শিখতেই পরিণত হয়; ভাগ্য ভাল হলে যেকোন কাজ নানা উপায়ে সিদ্ধ হয়; ভাগ্য বিরূপ হলে কোন কাজ সুষ্টভাবে সম্পন্ন হয় না। |
চশমে বদ তু- হিন্দি প্রবাদ | তোর মুখ কালা/পোড়া (কুদৃষ্টি এড়ানোর জন্য তুক)। |
চাঁদে আছে কলঙ্ক, গোলাপে কণ্টক | কোন কিছুই বিশুদ্ধ নয; কোন কিছুই অবিমিশ্র নয়; জগতে নির্দোষ কিছু হয় না। |
চাঁদের কাছে জোনাকি, ঢাকের কাছে টেমটেমি | দুই অসমানে তুলনা নয়। |
চাইলেন জিরা পাইলেন হীরা | অপ্রত্যাশিত মূল্যবান বস্তুর প্রাপ্তি। |
চাউল নাই তবে ভাতে ভাত রাঁধো | যা সম্ভব নয় তাই করতে যাওয়া; সমতুল্য- 'এঁড়ে গরু না টেনে দো'। |
চাকরি মেঘের ছায়া মিথ্যা কর মায়া | এই আছে আই নাই এমন চাকরির উপর নির্ভর করতে নেই। |
চাচা আপন চাচী পর, চাচীর মেয়ে বিয়ে কর | মুসলমান সমাজে প্রচলিত প্রবাদ; অর্থ স্পষ্ট। |
চাচা আপন প্রাণ বাঁচা | আগে নিজের প্রাণ বাঁচাও, পরে অন্যের জন্য ভাবনা; সমতুল্য-'আগে ঘর পরে পর, ঘর সামলে পরকে ধর'; 'আপনি বাঁচলে বাপের নাম';'আত্ম রেখে ধর্ম তবে পিতৃকর্ম'; কামলা আপনা সামালা। ইত্যাদি। |
চাচা বল কাকা বল কলার জোড়া দশটাকা | যতই আত্মীয়তা করা হোক-না-কেন স্বার্থ কেউ ছাড়ে না। |
চাটাইয়ে শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা | গরীবের উচ্চাভিলাষ। |
চাটুকারি ততক্ষণ পর্যন্ত ঠিক যতক্ষণ না তুমি তা গিলছো | চাটুকারিতায় তৃপ্তি চরিত্রগুণ নষ্ট করে। |
চাদরে যতটা পা ঢাকে ততটা পা মেলো | সীমার মধ্যে থাকো; ওজন বুঝে চলন। |
চাপে পড়লেই বাপ // চাপের নাম বাপ | কায়দায় পরলে লোকে বশ্যতা স্বীকার; সমতুল্য- 'গরজ বড় বালাই'। |
চামচিকে আবার পাখি | বাহ্আয কার বড় মত হলেই বড় হওয়া যায় না; গুণ থাকা চাই। |
চামচিকেতে লাথি মারে | নগণ্য ব্যক্তির কটূক্তি। |
চায়ের পেয়ালা ও ঠোঁটের মধ্যে বিস্তর ফাঁক থাকে | সামান্যের মধ্যেও বিস্তর ফাঁক থাকে। |
চায়ের পেয়ালায় তুফান- ইংরাজী প্রবাদ | সামান্য বিষয় নিয়ে তুলকালামকাণ্ড; প্রকৃত কর্মক্ষেত্রে কাজ না করে কেবল ঘরের আড্ডায় জোর আলোচনা |
চার দিনকা চাঁদনী ফির আঁধেরি রাত- হিন্দি প্রবাদ | সুখের দিনগুলি স্বল্পই হয়; চলে গেলেই অন্ধকারের মত কষ্টের দিন শুরু হয়। |
চাল না চুলো, ঢেঁকি না কুলো বিধাতা করেছে দোর বুলো বুলো // চাল নেই চুলো নেই, নিত্যানন্দ গোঁসাই | অন্নের সংস্থান, বাসস্থান, কিছুই নেই, একেবারে নিঃসম্বল; শুধু পরের দ্বারে দ্বারে ঘুরে পেট ভরানো। |
চাল নেই ধান নেই গোলাভরা ইঁদুর | অন্তঃসারশূন্য। |
চাল নেই তবে ভাতে ভাত রাঁধো | যে সম্ভব নয় তাই করতে যাওয়া। |
চাল নেই তার ধুচুনি নাড়া | দৈন্যাবস্থা চাপা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা। |
চালাকিদ্বারা মহৎকার্য হয় না | ফন্দিবাজী সৎপথ নয়। |
চালাকের ঠোঁটে তৎক্ষণাৎ উত্তর সাজানো থাকে | চালাকের মস্তিষ্ক খুব পরিস্কার। |
চালুনি করে ঘোল বিলানো | যা সম্ভব নয় তাই করা। |
চালুনি করে ছুঁচের বিচার // চালুনি বলে ছুঁচ তোর মার্গে কেন ছেঁদা // চালুনি বলে ধুচুনিভাই তুমি বড় ফুটো | নিজের বড় দোষ নজরে পড়ে না; পরের ছোট দোষে তীক্ষ্ণদৃষ্টি; সমতুল্য- 'আনারস বলে কাঁঠাল ভাই তুমি বড় খসখসে', 'ঝাঁজরি বলে খৈ-চালা, তুই বেজায় ফোঁড়ওয়ালা', 'নিজের পাছায় ন মন গু, আমারে বলে তোর খান ধু' ইত্যাদি। |
চালে খড় নেই ঘরে বাতি | মুখ্যকাজ ছেড়ে দিতে গৌণকাজ করে; সমতুল্য- 'এদিক নেই ওদিক আছে'। |
চালের কি দর? না মামার ভাতে আছি | খায় দায় ফূর্তি করে বেড়ায় সংসারে কোথায় কী হচ্ছে তার খবর রাখে না এমন দ্বায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তির প্রতি ব্যঙ্গোক্তি। |
চাষা কি জানে মদের স্বাদ | সাধারণলোকে গভীর বিষয় বুঝতে পারে না। |
চাষার গদ্দী কাস্তের ঠোকর | চাষী কাস্তের ঠোকর মেরে আদর করে; যার যেমন শিক্ষা তার তেমন ব্যবহার। |
চাষী আর চষা মাটি, এই দুইয়ে দেশ খাঁটি (খনা) | চাষী চষা মাটিতে সোনা ফলায়। |
চাষী করে চাষ, ফড়ে খায় ফসল | যার ধন তার ধন নয়, নেপোয় (বাটপাড়) মারে দই |
চাষীর গরু অমাবস্যা খোঁজে | অমাবস্যায় হাল চালানো নিষিদ্ধ; অলসের কাজে অনীহা। |
চাহিলেন জিরা পাইলেন হীরা | আকাঙ্ক্ষা ছিল সামান্য বস্তুর; পেয়ে গেল মহার্ঘ বস্তু। |
চিকিৎসা অপেক্ষা প্রতিষেধ ভাল | রোগে ওষুধ খাওয়া থেকে নিরোগ থাকার প্রতি ইঙ্গিত। |
চিৎপাতের কড়ি উৎপাতে যায় | অসৎ পথে অর্জিত অর্থ অপব্যয়ে নষ্ট হয়। |
চিত্তে বাচি ক্রিয়ায়াং চ সাধুনামেকরূপতা | সাধুরা মনে বাক্যে ও কাজে এক। |
চিনিস বা না চিনিস খুঁজে দেখে গরু কিনিস- খনা | গরু কেনার উপায় জানা থাক বা না থাক খুঁজে পেতে গরু কেনা উচিত (কৃষকের প্রতি চেতাবনি)। |
চিন্তা করো না যে কেউ তোমায় জানে না, শুধু চেষ্টা কর জানার যোগ্য হ'তে- কনফুসিয়াস | মানুষ কর্মে বড় হয় যোগ্য হয় |
চিন্তা জ্বরো মনুষ্যাণাং | দুশ্চিন্তা মানুষের জ্বরস্বরূপ। |
চিন্তা জ্বরো মনুষ্যাণাং বস্ত্রাণামাতপো জ্বরঃ। অসৌভাগ্যং জ্বরঃ স্ত্রীণাম্ অশ্বানাং মৈথুনং জ্বরঃ।। (চাণক্য) | মানুষের জ্বর চিন্তা, প্রখর সূর্যতাপ কাপড়ের জ্বর, স্ত্রীর জ্বর স্বামীর সোহাগ না পাওয়া আর মৈথুন অশ্বের জ্বর; মানুষমাত্রই চিন্তায় আক্রান্ত হয়; দুশ্চিন্তা মানুষের জ্বরস্বরূপ। |
চিন্তাবিদেরা নাস্তিক হয়- তুর্কী প্রবাদ | চিন্তাবিদেরা অন্ধ বিশ্বাস করে না। |
চিন্তায় চিন্তা বাড়ে | চিন্তা করলে দুশ্চিন্তা বাড়ে। |
চিন্তায় পোড়ে মন চিতায় পোড়ে দেহ | দুশ্চিন্তা মনের ওপর প্রভাব ফেলে। |
চিন্তার মায়ের চিন্তার হাটের লোক শোয় কোথা? | অকারণে দুশ্চিন্তা; চিন্তার মাথামুণ্ড নেই; (উৎসকাহিনী- হাটে প্রচুর লোক দেখে চিন্তের মা চিন্তিত হয়ে পড়ে এরা শোয় কোথায়) |
চিন্তাহীন শিক্ষা পণ্ডশ্রম, শিক্ষাহীন চিন্তা বিপজ্জনক- চীনা প্রবাদ | চিন্তাহীন শিক্ষা ফলপ্রসূ হয় না; অপরপক্ষে অপরিশীলিত চিন্তা ধ্বংসাত্মক হয় |
'চিরদিন কারো সমান নাহি যায়'- নজরুল | চিরকাল সমান যায় না; ভাগ্য ওঠানামা করে; সুখ-দুঃখে মিশ্রিত জীবন; সমতুল্য- 'আজ আমীর/রাজা কাল ফকির'; গাড়িকাপর লা, লাকাপর গাড়ি'; 'চক্রবৎ পরিবর্তন্তে সুখানি চ দুখানি চ'; 'মেঘ দেখে তুই করিস নে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে' ইত্যাদি। |
চিরসুখীজন ভ্রমে কি কখন ব্যথিতবেদন বুঝিতে কি পারে, কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে কভু আশীবিষে দংশেনি যারে'- কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার | সুখী মানুষ জীবনযন্ত্রণা কাকে বলে জানে না; একমাত্র সমব্যথী ব্যক্তিই দুঃখীর ব্যথা অনুধাবন করতে পারে; সমতুল্য- অকণ্টকবিদ্ধ কি জানে কাঁটাফুটা কী? |
চিল চিনে উচু ডাল; মাছ চিনে গভীর জল | নিজের পছন্দ অনুসারে যে যার স্থান নির্বাচন করে। |
চিল পড়লে কুটোটাও নিয়ে ওঠে১ | কর্মঠ লোক বৃথা শ্রম দেয় না। |
চিল পড়লে কুটোটাও নিয়ে ওঠে২ | শত্রু/লোভী কিছু-না-কিছু ক্ষতি না করে নিবৃত্ত হয় না; |
চিলকে বিল দেখাতে নেই | নিজের ক্ষতি করতে নেই। |
চিলে কান নিয়ে গেল | পরের কথায় বিশ্বাস করা। |
চিল্লানে কুকুর কদাচিৎ কামড়ায় // চিল্লানে কুকুর কামড়ায় না | ধীর স্থির না হলে কাজে সাফল্য আসে না; যে বকে সে কাজ করে না; সমতুল্য জাপানী প্রবাদ- 'আওয়াজওয়ালা বিড়াল ইঁদুর ধরে না'। |
চুরিবিদ্যা বড়/মহাবিদ্যা যদি না পড়ে/পড়ো ধরা | ফাঁকিতে প্রচুর লাভ হয়; পরিণাম স্মরণ করিয়ে দিয়ে চুরি না করার উপদেশবাক্য। |
চুলকে ঘা করা | ইচ্ছা করে নিজের বিপদ ডেকে আনা |
চুলোমুখো দেবতার ঘুঁটের ছাই নৈবদ্য | ভালোর জন্য ভালো মন্দের জন্য মন্দ বরাদ্দ হয়। |
চুলোর উপর ক্ষীর, মনে নহে স্থির | সামনে লোভের বস্তু থাকলে মন স্থির থাকে না। |
চূড়ার উপর ময়ূরপাখা | সৌন্দর্যের উপর সৌন্দর্য; অতিবাহার। |
চূন খেয়ে গাল পুড়েছে, দই দেখলে ভয় করে | পূর্বের বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার আশঙ্কা থেকে ভীতি; ভয় থেকে ভ্রান্তি; অভিজ্ঞতা সতর্ক হতে শিক্ষা দেই; সমতুল্য- 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে লেঘ দেখলে ভয় পায়', 'নেড়া বেলতলা একবার' ইত্যাদি |
চেটায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা | গরীবের উচ্চাভিলাষ। |
চেতনে অবচেতন১ | জেনেও না জানার ভান। |
চেতনে অবচেতন২ | আবেগে অন্ধ। |
চেনা বামুনের পৈতে লাগে না | স্বনামখ্যাত ব্যক্তিদের পরিচিতি লাগে না; বাহ্য প্রমাণ দেখিয়ে পরিচিতকে নিজের পরিচয় দিতে হয় নয়া। (উৎস- বাংলায় ব্রাহ্মণ ছাড়াও অন্য জাতিও পৈতা ধারণ করে; সেইকারণে অপরিচিত ব্রাহ্মণকে প্রমাণস্বরূপ পৈতা বার করে দেখাতে হয়। |
চেরাগের নীচেই অন্ধকার | যে উপদেশ দেয় সে নিজেই নিয়ম মানে না। |
চেষ্টাবিনা কেষ্টা নেই | বিনা পরিশ্রমে কিছুই পাওয়া যায় না। |
চেষ্টার অসাধ্য কোন কাজ নেই। | চেষ্টা বৃথা যায় না। |
চেষ্টার শেষ নেই | মাঝপথে চেষ্টার খামতি দিতে নেই। |
চেহারা দেখে মানুষ চেনা যায় না | চেহারা ছলনা করে; বিরুদ্ধ উক্তি- মুখ দেখলে সব জানা যায়। |
চৈতের কুয়ায় (কুয়াশা) আমের ক্ষয়- খনা | চৈত্রমাসে কুয়াশ পড়লে আমের ফলন ভাল হয় না। |
চৈতের কুয়ায় (কুয়াশা) ভাদ্ক্ষরে বান, নরের মুণ্ড গড়াগড়ি যান- খনা | চৈত্রমাসে কুয়াশ পড়লে এবং ভাদ্রমাসে বন্যা হলে দেশে মড়ক লাগে। |
চৈতের গীত বৈশাখে গায় তারে পুছে কোন শালায়/হালায় | সময়ের কাজ সময়ে না করলে কোন লাভ নাই। |
চৈত্রে কাঁপে থর থর, বৈশাখে ঝড় পাথর, জৈষ্ঠ্যেতে তারা ফোটে তবেই জানবে বর্ষা বটে- খনা | যে বছর চৈত্রমাসে শীত থাকে, বৈশাখ মাসে শিলাবৃষ্টি হয় এবং জৈষ্ঠ্যমাসে আকাশ পরিস্কার থাকে সে বছর প্রবল বর্ষণ হওয়। |
চোখ বুজলেই সব অন্ধকার | মরলেই সব শেষ। |
চোখ থাকতে কানা | দেখেও দেখে না। |
চোখ বন্ধ করলে প্রলয় বন্ধ হয় না | ছেড়ে ছুড়ে বসে থাকলে বিপদ এড়ানো যায় না। |
চোখ মনের আয়না | চোখের দিকে তাকিয়ে মনের অবস্থা বোঝা যায়; মনের ভাবনা চোখের মণিতে লেখা থাকে। |
চোখ সব দেখে কেবল নিজেকে দেখে না | চোখ হল মনের জানালা। |
চোখে চোখে যতক্ষণ প্রাণ পোড়ে ততক্ষণ | যা দেখি না তা নেই। |
চোখে দেখে শুনতে চায়, এমন বোকা আছে কোথায়? | শোনার পর দেখে, দেখার পর শোনে না। |
চোখে ষর্ষে ফুল দেখা | বিপদে উপায়হীন হয়ে দিশেহারা হওয়া; সমতুল্য- 'চোখে ধোঁয়া দেখা'। |
চোখের আড়াল হলে মনের আড়াল হয় | দেখাসাক্ষাৎ না হলে মনে থাকে না; মৌখিক ভালবাসা; মেকি প্রেম; সমতুল্য- 'মানুষের কুটুম এলে গেলে'; বিপরীত উক্তি- 'অনুপস্থিতি হৃদয়কে অনুরাগী করে তোলে'। |
চোখের আড়াল তো মনের আড়াল নয় | অন্তরের দেখা চোখের দেখার উপর নির্ভরশীল নয়। |
চোখের জল নারীর বল | নারী চোখের জলে সব জয় করে। |
চোখের জলের মত কিছুই দ্রুত শুকায় না | মানুষ দ্রুত শোক ভুলে যায়। |
চোখের দোষে সব হলদে | মন্দলোক সব মন্দ দেখে, ভালো জিনিষ খুঁজে পায় না। |
চোখের বদলে চোখ, দাঁতের বদলে দাঁত | প্রতিশোধ নেবার প্রবল ইচ্ছা। |
চোর খোঁজে অন্ধকার | সকলেই আপনার সুবিধা খোঁজে। |
চোর চায় ছেঁচা বেড়া // চোর চায় ভাঙা তালা | নজরদারি না থাকার সুবিধা; অন্যায় কাজের সুযোগ অন্বেষণ। |
চোর চুরি না করতে পারলে সাধু হয় | চোরে সাধুতে তফাৎ নেই; সমতুল্য- 'আলগা পেলে সবাই চোর'। |
চোর ছেঁচড় চোপায় দড়, আগে দৌড়ায় ঠাকুর ঘর | ভণ্ডরা মন্দকাজের সাফাই দিতে বড়বড় কথা বলে এবং কথায়কথায় ঈশ্বরের শপথ নেয়। |
চোর ধনী হলে সজ্জন হয় | অর্থবল থাকলে সব হয়। |
চোর চলে গেলে চৌকিদার আসে // চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে | ঘটনা ঘটে গেলে বুদ্ধি খোলে; সুযোগ হাতছাড়া হ'লে মাথায় নানা ফন্দি-ফিকির আসে; সময়ে বুদ্ধির অভাব ঘটলে এই প্রবাদ উক্ত হয়; সমতুল্য- 'রোগী মরলে বৈদ্য আসে'। |
চোর ধরতে চোরকে নিয়োগ | সহজে কার্যসিদ্ধি; সমত্যল্য- 'কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা'। |
চোর পর মোর- হিন্দি প্রবাদ | বেইমানের সাথে বেইমানী করা উচিত; সমতুল্য- 'শঠে শাঠ্যাং সমাচরেৎ'। |
চোর ভাল তো বেকুব ভালো না | বুদ্ধিহীন সহ্যের বাইরে; একটু সতর্ক থাকলে চুরি আটকানো যায়, কিন্তু বেকুব কোনদিক থেকে ক্ষতি করবে বোঝা ভার। |
চোর মচায়ে শোর | চোর ধরা পড়লে 'চোর চোর' বলে চিৎকার কওরে ছুটে পালায়। |
চোর মজে সাতঘর মজায়ে | চোর ধরা পড়লে অনেককে মকদ্দমায় জড়ায়; চোর ধরতে পুলিশ চোরের চেনাজানা একাধিক নির্দোষ লোককে হয়রান করে। |
চোর সাধুতে তফাৎ নেই | জন্মজ কারণে উভয়ে সমান; কেউ চোর বা সাধু হয়ে জন্মায় না। |
চোরকে বলে চুরি কর, গেরস্তকে বলে সজাগ থাকো | দুকূল/দুদিক রক্ষা করা। |
চোরকে ধর্মের কাহিনী শুনানো আর উলুবনে মুক্তা ছড়ানো একই কথা // চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী | অসৎ ব্যক্তিকে উপদেশ দিলেও সে সৎ হয় না; মন্দকে সদুপদেশ দেওয়া বৃথা। |
চোরা গরুর সাথে কপিলার বন্ধন | দোষীর সঙ্গে থাকলে নির্দোষো শাস্তি পায়; (উৎসকাহিনী- ইন্দ্র সগররাজার অশ্ব চুরি করে কপিল মুনির আশ্রমে লুকিয়ে রাখেন; অশ্বরক্ষগণ আশ্রমে সেই অশ্ব খুঁজে পেয়ে কপিলমুনিকে চোর সাব্যস্ত কওরে তাঁকে যথেষ্ট লাঞ্ছনা করে।) |
চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী- কাশীরাম দাস | দুষ্টকে সদুপদেশ দেওয়া বৃথা। |
চোরে কামারে দেখা নেই সিঁধকাঠি গড়া | মন্দকাজ সকলের অগোচরে সম্পন্ন হয়। |
চোরে চায় ভাঙা বেড়া | মন্দলোকে স্বার্থসিদ্ধির উপায় খোঁজে। |
চোরে চোরে কুটুম্বিতা ভাই // চোরে চোরে মাসতুতো ভাই | মন্দের দোসর মন্দ। |
চোরের উপর বাটপাড়ি | চোরের কাছ থেকে চোরাই মাল চুরি; উপরচালাকি; ঠগকে ঠকানো। |
চোরের উপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাওয়া | বিপরীত বুদ্ধি; চোরের কিছুই হল না,পরন্তু নিজের ক্ষতি হল; রাগে অন্ধ হলে নিজের ক্ষতি হয়। |
চোরের দশদিন, গৃহস্থের একদিন // চোরের শতেক রাত গৃহস্থের একরাত১ | কুকর্মের ফল একদিন ভুগতেই হয়। |
চোরের দশদিন, গৃহস্থের একদিন // চোরের শতেক রাত গৃহস্থের একরাত২ | পাপ কাজ কখনো চাপা থাকে না। |
চোরের ধন বাটপাড়ে খায়/লয় | অসৎ উপায়ে অর্জিত ধন কেউ নিজে ভোগ করতে পারে না। |
চোরের বল মিথ্যায় আশ্রয় | বাঁচতে গিয়ে নানান কথা। |
চোরের মন চৌকিদারে | স্বার্থান্বেষী লোক সবসময় সতর্ক থাকে। |
চোরের মন পুঁই আদাড়ে/বোঁচকার দিকে | সকলেই আপনার স্বার্থচিন্তায় মগ্ন থাকে। |
চোরের মায়ের কান্না | অসৎ কাজের জন্য গোপন অশ্রুপাত। |
চোরের মায়ের বড় গলা | অসৎ কাজ চাপা দেওয়ার জন্য আস্ফালন; যে যতবেশি অসৎ সে ততবেশি সাধুতার ভান করে। |
চোরের সাক্ষী গাঁটকাটা, শুঁড়ির সাক্ষী মাতাল। | স্বার্থের কারণে অসৎ অসৎকে সমর্থন করে। |
চৌকিদারি কি ঝকমারি | সবসময় স্বার্থহানীর চিন্তায় পাগল; লাভ অল্প, কষ্ট বেশি। |
চৌকো গর্তে গোল পেরেক বা গোল গর্তে চৌকো পেরেক | অসম্ভব, যা হবার নয়; অন্য অর্থে- বেখাপ্পা মেল, অস্বস্তিকর অবস্থা (পুলিশের চাকরী আমার কাছে চৌকো গর্তে গোল পেরের মত মনে হয়) |
চৌঘরি মাত দেখানো | দাবাখেলায় ব্যবহৃত; ভীষণ সঙ্কটে ফেলা |
চৌরে গতে বা কিমু সাবাধানম? | চোর পালালে আর সাবধানে কি ফল হবে? পণ্ডশ্রম। |
ছ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ছকড়া নকড়া করা | অতি সামান্যকে- তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা; হেলেফেলা করা। |
ছবি হল নীরব কবিতা, আর কবিতা হল কথা বলা নীরব ছবি | মন ও চোখ থাকলে সব পড়া যায়, সব দেখা যায়। |
ছল করে জল আনা | এক কার্যসিদ্ধির জন্য অন্য কাজের অভিনয় করা। |
ছাঁচের জলে খাবি খায়, সমুদ্রপার হতে চায়/যায়। | যে সামান্য কাজ করতে ভয় পায় সে বড় কাজে হাত বাড়ায়; অক্ষমের উচ্চাশা; সমতুল্য- 'বামন হয়ে চাঁদ ধরতে যায়'। |
ছাইচাপা আগুন | অব্যক্ত ক্রোধ/মর্মবেদনা; সুপ্তপ্রতিভা; ভিতরে তেজ আছে কিন্তু বাইরে প্রকাশ নেই। |
ছাইতে জানিনে গোড় চিনি | কাজ করতে পারে না, অথচ দাবী করে কাজ ভাল বোঝে- হাস্যকর দাবী। |
ছাই পায় না মুড়কি জলপান | যোগ্যতার অতিরিক্ত আশা করা; অল্প পাওয়ার আশা নেই বেশি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা।; হাস্যজনক অভিলাষ। |
ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো১ | অকাজ করার জন্য অবহেলার পাত্র; অবহেলার পাত্র কিন্তু কাজের সময় ডাক পড়ে। |
ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো২ | দোষ করুক বা না করুক, নিরীহ ব্যক্তির উপর সব দোষ চাপানো হয়। |
ছাই মাখলেই সন্ন্যাসী হয় না | রঙীন হলেই দামী নয়; সাধু সাজলেই সাধু নয়; ভণ্ডামী ধরা পড়ে। |
ছাইমুঠো ধরলে সোনামুঠো হয় | ভগ্যোদয়ে যৎসামান্য কাজেও দুটো পয়সা আসে। |
ছাগল দিয়ে ধান চাষ // ছাগল দিয়ে যব মাড়ানো | অকেজোকে দিয়ে কোন বড় কাজ করার চেষ্টা, যা হওয়ার নয়। |
ছাগল বলে আলুনি খেলাম; গেরস্ত বলে প্রাণে ম‘লাম | অসন্তুষ্টকে কখনো তুষ্ট করা যায় না। |
ছাগলকে ভাঙা বেড়া দেখাতে নেই | লোভীকে লোভের সামগ্রী দেখাতে নেই; যাতে লোভ বাড়ে এমন কিছু কয়ড়া নেই; সমতুল্য- 'কাঙালকে শাকের খেত দেখাতে নেই'। |
ছাগলে কিনা খায়, পাগলে কিনা বলে | অবোধ ছাগলে খাদ্য, অখাদ্য- সব খায়; অবোধ পাগলে বাচ্য, অবাচ্য- সব বলে; অবোধদের গুরুত্ব দিতে নেই। |
ছাগলের লোমে পশম হয় না আমড়াগাছে আম ফলে না | মন্দলোকের কাছে ভালো ব্যবহার প্রত্যাশা করা যায় না; সমতুল্য-'আনড়াগাছে আন ফলে না।লোমে পশম হয় না' । |
ছাতা দিয়ে মাথা রাখা // ছাতা দিতে মাথা বাঁচানো | উপকার করা; সামান্য় উপকার হলে কৌতুকে এই উক্তি করা হয়; সমতুল্য- 'ভাঙ্গাঘর ছেয়ে দেওয়া'। |
ছাতার বলে গাঁ আমার | নিকৃষ্টের অন্যায্য দাবী; (উৎস- ছাতার, পাখিদের মধ্যে নিকৃষ্ট বলে বিবেচিত)। |
ছাতারে কীর্তন চলছে | অনর্থক গোলমাল হচ্ছে (উৎস- ছাতার পাখির দল এক জায়গায় জড়ো হলে কিচিরমিচির শব্দে উতক্ত করে তোলে। |
ছাতা দিয়ে মাথা রাখা | উপকার করা; সামান্য উপকার হলে কৌতুকে এই উক্তি করা হয়। |
ছাতুর হাঁড়িতে বাড়ি পড়া | অকস্মাৎ বিপদে পড়ে দিশেহারা; লণ্ডভণ্ড হওয়া। |
ছাত্রানাং অধ্যয়নং তপঃ | অধ্যয়নই ছাত্রদের তপস্যা বা ধর্ম। |
ছাদনদড়ি গোদাবাড়ী, যে আমার আমি তারি | যে আমায় দেখে আমি তারি অধীন; দৃঢ় নীতিজ্ঞানশূন্য ব্যক্তি। |
ছায়া চাইলে বড়গাছের তলায় নিও- জাপানী প্রবাদ | ক্ষমতাসম্পন্ন লোকের আশ্রয় নিতে হয়; সমতুল্য- 'আশ্রয়, ফল ও ছায়া বড়গাছের তলায় নিতে হয়'। |
ছায়া ভালো ছাতার তল; বল ভালো নিজের বল- খনা | ছাতার তলার ছায়া বড় মিষ্টি; নিজের শক্তিই আসল শক্তি। |
ছায়াতে ভূত দেখা | অমূলক আশঙ্কা করা। |
ছায়ার পিছনে ছুটে ছায়া ধরা যায় না // ছায়ার পিছনে ছোট এবং আসল হারাও | অতি আশা সর্বনাশা। |
ছাল নেই কুত্তা, নাম তার বাঘা | অযোগ্যকে অতিরিক্ত সম্মান জানানো; যে গুণ নেই সেই গুণ আরোপ; আদিখ্যেতা, বাড়াবাড়ি। |
ছিঁড়লো দড়া তো ছুটলো ঘোড়া | নিয়ম উটতেই সবাই উদ্দাম; শৃঙ্খলা না থাকলে সবাই বিশৃঙ্খল হয়। |
ছিঁড়েছিঁড়ে কাটুনী, পুড়েপুড়ে রাঁধুনী | অভ্যাসে অভিজ্ঞ হয়; অভ্যাস দ্বিতীয় প্রকৃতি। |
ছিকলি কাটা টিয়ে | একবার যে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে, তাকে ফের অধীন করা সুকঠিন কাজ। |
ছিদ্রেস্বনর্থা বহুলা ভবন্তী | যেমন ছেঁড়া কাপড় সেলাই না করলে ছিদ্র বাড়তে থাকে তেমনই দোষ সংশোধন না করলে এক দোষ থেকে বহু দোষের জন্ম হয়; ছিদ্র পেলেই অনর্থগুলি বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। |
ছিল ঢেঁকি হল শূল কাটতে কাটতে নির্মূল | কাটতে কাটতে ছোট হয়ে গেছে। |
ছিল না কথা দিল গাল আজ না হয় হবে কাল | নারী সঙ্গলোলুপ লম্পটের আশা |
ছিলাম রোগী হয়েছি রোজা | লোকে ঠেকে অনেক অভিজ্ঞতা লাভ করে। |
ছুঁচ, সোহাগ, সুজন- ভালো করে তিনজন; উই, ইঁদু্র, কুজন- মন্দ করে তিনজন। | তিন ভাল সুসঙ্গী ও তিন কুসঙ্গীর প্রতি ইঙ্গিত। |
ছুঁচ হয়ে ঢোকে ফাল(লাঙ্গলের ফলা) হয়ে বেরোয় | সুযোগ নিয়ে সবাই দাঁও মারার মওকা খোঁজে; উপকার করার নামে ঢোকে, অনিষ্ট করে বেরোয়; বন্ধু হয়ে ঢোকে শত্রু হয়ে বেরোয়। |
ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করা | নেই-লাভের কাজ করে অখ্যাতি অর্জন করা; হীন ব্যক্তিকে শাস্তি দিয়ে সুনামের বদলে দুর্নাম কুড়ানো। |
ছুঁচো যদি আতর মাখে, তবু কি তার গন্ধ ঢাকে? | হীন কোনভাবেই জাতে ওঠে না; মন্দ সাধু সাজার চেষ্টা করলেও মন্দস্বভাব বেরিয়ে পড়ে। |
ছুঁচোর গু ওষুধে লাগে ছুঁচো গিয়ে পর্বতে হাগে | হীন লোকের কাছে উপকার চাইলে সে গর্বে স্ফীত হয়ে উপকার করতে অস্বীকার করে। |
ছুঁচোর গোলাম চামচিকে মাইনে তার চোদ্দ সিকে | তুচ্ছলোকের প্রতি অবজ্ঞাসূচক উক্তি। |
ছেঁড়া কচুর পাত এক বউকে ভাত দেয় না আরো বউয়ের সাধ | হাতের কাজই শেষ করতে পারে না আরো কাজের খোঁজ করে। |
ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা | সামর্থ্য নেই অথচ প্রাচুর্যের প্রত্যাশা; দরিদ্রের উচ্চাভিলাষ। |
ছেঁড়া কাপড় রুখু মাথা দুঃখ বলে যাবো কোথা? | দুঃখ অপরিচ্ছন্নতাকে জড়িয়ে ধরতে ভালবাসে। |
ছেঁড়া চুলে (পরচুলা) খোঁপা বাঁধা১ | ধার করা জিনিষে ভাল কাজ হয় না। |
ছেঁড়া চুলে (পরচুলা) খোঁপা বাঁধা২ | পরের স্বার্থে জড়িয়ে পড়া। |
ছেঁড়াবস্তায় খাসাচাল | কুদর্শন হলেও গুণের ছেলে; অগুণীর ঘরে গুণবান সন্তান; সমতুল্য- ধুকড়ির মধ্যে খাসা চাল |
ছেঁড়া সম্পর্ক জোড়া লাগে না // ছেঁড়া সম্পর্ক জোড়ে না | আবেগ না সরালে ভাঙাসম্পর্ক জোড়া লাগা কঠিন। |
ছেঁদো কথা মাথার জটা, খুলতে গেলে বিষম ল্যাঠা | যেমন চুলের জটা খোলা যায় না তেমনি অসংলগ্ন কথাবার্তা সহজে বোধগম্য হয় না। |
ছেড়ে দিয়ে তেড়ে ধরা | সুযোগ হারিয়ে আবার ফিরে পাওয়ার প্রয়াস। |
ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি | কোনরকমে সঙ্কট থেকে মুক্তি পাওয়ার কাতর ইচ্ছা; আমি আড় উপকার চাই না, তোমার হাত থেকে শুধু মুক্তি চাই। |
ছেলে থেকে ছেলের মাথা ভারী | অতি বুদ্ধিমান ছেলে। |
ছেলের চেয়ে ছেলের গু ভারী // ছেলের থেকে ছেলের ঘুনসি বড় | মূল থেকে আনুসঙ্গিক ব্যাপার অনেক বেশি; সমতুল্য- বারোহাত কাঁকুড়ের তেরোহাত বীচি', 'বারোহাত কাপড়ের তেরোহাত দশী', 'বারোহাত পুকুরে তেরোহাত মাছ', 'মিঞা থেকে মিঞার ডিঙি ভারি' ইত্যাদি। |
ছেলের হাতের মোয়া নয় যে ভোগা দেবে | বয়স্কলোককে বোকা বানাবার চেষ্টা। |
ছেলেদের প্রতিভা এবং মেয়েদের রূপ দুইই জন্মগত ও প্রলয়ঙ্কর। | দুনিয়াকে উলটে দিতে পারে। |
ছোঁড়া ঢিল/তীর ফেরে না | ছেড়ে দেওয়া সুযোগ ফিরে আসে না; সমতুল্য- 'বলা কথা ফেরে না ', 'ভাত সিদ্ধ হয়ে গেছে', মুখের কথা ফেরে না; বিরুদ্ধ উক্তি- 'মরার আগে পর্যন্ত ফিরে আসার সুযোগ থাকে |
ছোট কাঁটাটি ফোটে পায়, তুলে ফেল, নইলে দায় | ছোট দোষও বড় ক্ষতি করতে পারে। |
ছোটখাটো বিষয় নিয়ে তর্ক করলে বেশি সময় নষ্ট হয়- আরবী প্রবাদ | ছোটখাটো বিষয়ে সবার বেশি জ্ঞান থাকে। |
ছোট মুখে বড় কথা | ছোটদের মুখে বড়দের মত কথাবার্তা; লোকের মর্যাদা না রেখে কথা বলা; সমতুল্য- 'যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা'। |
ছোটে মুঁহ বড়ী বাত- হিন্দি প্রবাদ | নিজের অবস্থানের উপরে উঠে কথা বলা; ওজন না বুঝে কথা বলা; সমতুল্য- 'যতবড় মুখ নয় ততবড় কথা'। |
ছোট্ট শরীরে একটি বিরাট আত্মা বাস করে | আত্মা শাশ্বত, অক্ষয় এবং সময়ের ঊর্ধ্বে বলে বিবেচনা করা হয়। |
ছ্যাঁকা (গরম জলে) খাওয়া কুকুর জল দেখলে ভয় পায়- ইংরাজী প্রবাদ | অভিজ্ঞতা সতর্ক হতে শেখায়; পূর্বে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকে; যে একবার ঠেকেছে সে দ্বিতীয়বার সেই কাজে এগোয় না; সমতুল্য- 'চূন খেয়ে গাল পোড়ে, দই দেখলে ভয় করে', দগ্ধ শিশু আগুন দেখলে ভয় পায়', 'নেড়া বেলতলায় একবার' ইত্যাদি। |
ছ্যাঁদা কলসি চোরা গাই, চোর পড়শী ধূর্ত ভাই; মূর্খ ছেলে স্ত্রী নষ্ট, এই কয়টি বড়ই কষ্ট | ফুটো কলসি কাজের নয়; দুইবার সময় যে গাই দুশ চুরি করে তার প্রতিপালন করা বৃথা; নিজের- ভাই ধূর্ত, ছেলে মূর্খ এবং স্ত্রী দুশ্চরিত্রা হলে খুব কষ্টের বিষয় হয়। |
জ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
জগৎ জুড়ে জাল ফেলেছে পালিয়ে বাঁচবি কোথা? | সংসারের জাল থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন; যমের হাত থেকে নিস্কৃতি নাই। |
জগৎ মায়াময়, শুধু ছায়ার খেলা | তুমি কার, কে তোমার, কেউ কারো নয়। |
জগতে ত্রুটিহীন কাজ দুর্লভ | কাজ করলে ভুলত্রুটি হবেই। |
জগতে ভালো কে, যার মনে লাগে যে | যার যাকে পছন্দ সেই তার কাছে ভাল; ভিন্নরুচির্হি লোকঃ। |
জগন্নাথ পেতে গেলে হাড়ীর ঝাঁটা খেতে হয় | কষ্ট না করলে ইষ্ট পাওয়া যায় না; (উৎস- জগন্নাথ দর্শনে গিয়ে ঝাঁটার বাড়ি না খেয়ে জগন্নাথ দর্শন করা যায় না)। |
জগাখিচুড়ি | বহু আবশ্যক ও অনাবশ্যক শাকসব্জির পাকে প্রস্তুত খাদ্য যা সুস্বাদু হয় না; বিভিন্ন অবাঞ্ছিত বস্তুর সংমিশ্রণ। |
জগাখিচুড়ি পাকানো | নানাভাবে কোন বিষয়কে জটিল করে তোলা; গোলমাল বাঁধানো। |
জঙ্গল মে মঙ্গল হোনা- হিন্দি প্রবাদ | শান্ত নির্জনস্থানে নিরুপদ্রবে মনের আনন্দে বাস করা। |
জঙ্গলা কখনো পোষ না মানে, মন সদা তার কেওড়া/সোঁদর বনে | বন্যপশুর মন থেকে বন মোছে না; যার যা অভিলাষ সেইদিকে তার টান; বিরুদ্ধ উক্তি- 'বনের পাখী পোষ মানে'। |
জন জামাই ভাগনা, এ তিন নয় আপনা | মজুর, জামাই আর ভাগনে- এই তিনজনের যতই উপকার কর না কেন এরা কোনদিন আপনার হয় না। |
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী | জননী ও জন্মভূমি স্বর্গ থেকেও মহীয়সী, সর্বাপেক্ষা পূজনীয়; সমতুল্য- 'কিসের মাসী কিসের পিসী, কিসের বৃন্দাবন; মরাগাছে ফুল ফুটেছে মা বড় ধন'। |
জন্তু দাঁত বার করলে ভেবো না সে হাসছে, সে কামড়াতে চায়- আরবী প্রবাদ | পশুপ্রকৃতির লোকেদের আচরণ হিংস্র হয়। |
জন্ম মৃত্যু বিয়ে, তিন বিধাতা দিয়ে // জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ, তিন না জানেন বরাহ | নিয়তি সব নিয়ন্ত্রণ করে; মানুষের ইচ্ছা অনিচ্ছার কোন প্রশ্ন নেই। |
জন্মদিনের উৎসাহে মনে রেখো মৃত্যুর দিকে একধাপ এগুলে | আনন্দের দিনে দুঃখকেও মনে রেখো। |
জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে? | মানুষমাত্রই মরণশীল। |
জন্মে দেখেনি লোহার মুখ, কোদালকে বলে গুণছুঁচ | অবোধের আগ বাড়িয়ে বাজে বকা; অবোধে না জানা বিষয়ে মন্তব্য করে হাসির খোরাক হয়। |
জন্মের মধ্যে কর্ম নিমুর চৈত্র মাসে রাস | সামান্য একটি কাজ করে অকর্মার অহঙ্কার। |
জপতপ কর কি? মরতে জানলে ডর কি? | মরার ভয়ে মানুষ ঈশ্বরকে ডাকে; জপতপে যমকে এড়ানো যায় না। |
জপতপ কর কি মরতে জানলে ডর কি // জপতপ কর কি মরতে জানলে হয়১ | মরার ভয়ে মানুষ ঈশ্বরকে ডাকে; জপতপে যমকে এড়ানো যায় না। |
জপতপ কর কি মরতে জানলে ডর কি // জপতপ কর কি মরতে জানলে হয়২ | জপতপের কোন মূল্য নেই; একজন সারাজীবন জপতপ করে গেল, প্রতিদিন গঙ্গাস্নান করলো অথচ মরার সময় গঙ্গা পেল না; অন্যজন সারাজীবন গঙ্গা কি জানলো না অথচ মরার সময় গঙ্গা পেলো। |
জপ নেই তপ নেই ভস্মমাখা গায় | ভেকধারী সন্ন্যাসী; ধর্মের ভান; বাহ্যিক আড়ম্বর; আচারসর্বস্বতা। |
জপের কোন খোঁজ নেই ফটিকে রাঙা থোপ | পূর্বের অনুরূপ; (ফটিক- কটিকের জপের মালা) |
জব বরসতা তব গরজতা নহী, জব গরজতা তব বরসতা নহী- হিন্দি প্রবাদ | সারবান ব্যক্তির আড়ম্বর নেই; সারশূন্য হলেই আড়ম্বর দেখায়। |
জমি না দেখে জমি ছেড়ো না | পা রাখার যায়গা পেলে পা তোল। |
জমির অভাবে উঠান চষা | কাজ না পেলে অকাজ করা; সমতুল্য- 'নেই কাজ তো খই ভাজ'। |
জল এগোয় না তৃষ্ণা এগোয় | যার প্রয়োজন সেই আগুবে; এগুবে- অভিলাষী, অভিলাষিত বস্তু নয়। |
জল খেয়ে জলের বিচার // জল খেয়ে জাতের বিচার | বিপরীতবুদ্ধি, আগের কাজ পরে করা; কাজে নামার আগে দোষগুণ বিচার করা উচিৎ; সমতুল্য- 'ঘোড়ার আগে গাড়ী জুতা'; 'ভাবিয়া করিয়ো কাজ করিয়া ভাবিও না'। |
জলছাড়া কুমির/মৎস | কুমির যতক্ষণ জলে থাকে ততক্ষণ তার বিক্রম; ডাঙায় উঠলেই বিক্রম শেষ- ডালছাড়া বানর |
জল জল বৃষ্টির জল, বল বল বাহুর বল | বৃষ্টির জলের তুলনা হয় না, ছেঁচাজলে বেশিক্ষণ চলে না; নিজের বলই শ্রেষ্ঠ বল; পরের বলে নির্ভর করা যায় না। |
জল, জোলাপ, জুয়াচুরি, এই তিন নিয়ে ডাক্তারি | বলা হয় যে ডাক্তারেরা এই তিনটি বিষয় বেশি পছন্দ করেন। |
জল থেকে রক্ত গাঢ় | পারিবারিক সম্পর্ক এবং আনুগত্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ; সমতুল্য- রক্তের টান বড় টান'; বিরুদ্ধ উক্তি- রক্তের টানে রক্তারক্তি; রক্তের টানের থেকে মনের টান বড়। |
জল দিয়ে জল বার করা | শত্রুকে দিয়ে শত্রুর গোপন মন্ত্রণা জানতে চেষ্টা করে; শত্রু দিয়ে শত্রুনিধন; সমতুল্য- 'কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা'। |
জল নদীতে সুস্বাদু, সমুদ্রে বিস্বাদ | আধারগুণে চরিত্র বদলায়। |
জল নেড়ে জোঁকের বল বোঝা | জল নাড়লে বোঝা যায় জলে জোঁক আছে কিনা; কথার আভাসে অন্যের মনোভাব বোঝা; সমতুল্য- 'বেড়া নেড়ে গৃহস্থের মন বুঝা'। |
জলবিন্দুপাতেন ক্রমশঃ পূর্যতে ঘটঃ | ফোঁটাফোঁটা জল পড়ে ঘট ভর্তি হয়; সৃষ্টি তিলেতিলে গড়ে ওঠে; সমতুল্য- 'ক্ষুদ্রক্ষুদ্র বালুকণা বিন্দুবিন্দু জল গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল'; বিন্দু বলে আয়রে বিন্দু গড়ে তুলি মহাসিন্ধু'। |
জল মে রহ কর মগর সে বৈরী- হিন্দি প্রবাদ | অধীনতায় থেকে শত্রুতা করা যায় না; সমতুল্য- 'জলে থেকে কুমীরের সাথে বিবাদ'। |
জলে কুমির ডাঙায় বাঘ, যে পারে সে ভাঙে ঘাড় | উভয়সঙ্কট, দুদিকেই বিপদে পড়া; সমতুল্য- 'এগুলে রাম পিছুলে রাবণ';'শাঁখের করাত'; 'যেতেও কাটে আসতেও কাটে'; 'সাপের ছুঁচো গেলা' ইত্যাদি। |
জলে জল বাঁধে | জমিতে একটু জল থাকলে, সামান্য বৃষ্টিতেও জল দাঁড়ায়; শুকনো জমি জল শুষে নেয়; সমতুল্য- 'পয়সায় পয়সা আসে'। |
জলে জল খাপ/মিশ খায় | সমপ্রকৃতির বস্তুর মিলন হয়। |
জলে তেল সহজে বিতায় | সমমর্মী হলে সৌভ্রাতৃত্ব সহজে গড়ে ওঠে। |
জলে তেলে খাপ/মিশ খায় না | বিষমপ্রকৃতির বস্তুর মিলন হয় না; মতের মিল না হলে মনের মিল হয় না। |
জলে না নামিলে শেখে না সাঁতার, হাঁটিতে শেখে না, না খেলে আছাড় | অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হ'লে কার্যক্ষেত্রে নামতে হয়; কিছু পেতে গেলে কিছু করতে হয়; সমতুল্য জাপানী প্রবাদ- বাঘের খাঁচায় না ঢুকলে বাঘের বাচ্চা পাওয়া যায় না'। |
জলে পাথর গলে/পচে না১ | আকাট মূর্খ জ্ঞানী হয় না। |
জলে পাথর গলে/পচে না২ | দুর্বল শক্তিশালীকে কাবু করতে পারে না; শক্তিশালী সহজে বিনষ্ট হয় না। |
জলে বাস করে কুমীরের সাথে বিবাদ | প্রভাবপ্রতিপত্তিসশালীর এলাকায় বাস করে তারই সাথে বিবাদ; যার অধীনে বাস তার সাথে বিবাদ করা চলে না; সমতুল্য- 'রোমে বাস করে পোপের সাথে বিবাদ'। |
জলে ভাসে শিলা | অসম্ভব ঘটনা। |
জলের কুমির ডাঙ্গায় এলো | বিপদ সামনে উপস্থিত। |
জলের গতি নীচের দিকে | স্নেহ নিম্নগামী। |
জলের চেয়ে পাঁক ঠান্ডা; সূর্যের চেয়ে বালি গরম | নগণ্য ব্যক্তিরা নম্র হয়; নকল ব্যক্তিরা উদ্ধত হয়। |
জলের ছিঁটে দিয়ে লগির গুঁতো খাওয়া | লগি দিয়ে শালতি বাওয়ার সময় একজন যদি অসাবধানতায় অন্যজনের গায়ে জলের ছিটা দেয় তবে অন্যজন প্রথমকে লগিপেটা করে; সামান্য অনিষ্ট করতে গিয়ে বিষম শাস্তি পাওয়া। |
জলের ফোঁটা পাথর ক্ষয় করে, সূতার করাত গাছ কাটে- চীনা প্রবাদ | নিষ্ঠা ও একাগ্রতা থাকলে কঠিন কাজও সহজে করা পাওয়া যায়; সমতুল্য- 'পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই'। |
জলের রেখা খলের পীরিত | জলের রেখা যেমন ক্ষণস্থায়ী দুষ্টের প্রীতিও তেমন অতি ক্ষণস্থায়ী। |
জলের শত্রু পানা, মানুষের শত্রু কানা | প্রকৃত গুণগ্রাহীরাই গুণীর গুণের কদর করতে পারে। |
জহুরী জহর চেনে | অভিজ্ঞ চোখকে ফাঁকি দেওয়া অসম্ভব। |
জাগন্ত ঘরে চুরি নাই | সতর্ক চক্ষুকে ফাঁকি দেওয়া অসম্ভব; সমতুল্য- 'গোনাগরু বাঘে ধরে না'; 'সাবধানের মার নাই'। |
জাড্যং ধিয়ো হরতি সিঞ্চতি বাচি সত্যং মানোন্নতিং দিশতি পাপমকরোতি। চেতঃ প্রসাদয়তি দিক্ষু তন্যেতি কীর্তিং সৎসঙ্গতিঃ কথয় কিং ন করোতি পুংসাম্॥ (চাণক্য) | সৎসংসর্গ মানুষের বাহ্যিক জড়তা দূর করে; বাক্যে সত্যতা স্থাপন করে; সম্মান বৃদ্ধি করে; পাপ দূর করে; চিত্ত প্রসন্ন করে;দিকে দিকে যশ বিস্তার করে- কী না করে থাকে? |
জাতস্য হি ধ্রুবোর্মৃত্যুঃ | জন্মিলে মরিতে হবে, এটা ধ্রুব সত্য; সমতুল্য- 'জন্মিলে মরিতে হ'বে, অমর কে কোথা কবে?' |
জাত খুইয়ে বৈষ্ণব | বৈষ্ণবের কোন জাত নেই; যে কেউ বৈষ্ণব হতে পারে। |
জাত গেল পেটও ভরল না | ক্ষতি স্বীকার করেও ইষ্ট মিলল না; সমতুল্য- 'একূল, ওকূল- দুকূল গেলো অকূল পারে গোকুল'। |
জাত গোয়ালার কাঁজি ভক্ষণ | গোয়ালা দুধ খায় নয়া, আমানি খায়; ব্যবসায়ী তার নিজের জিনিস ভোগ করতে পারে না। |
জাত তো বাক্সের ভিতর | অর্থে সবাই বশীভূত; সমতুল্য- 'অর্থেন পুরুষঃ দাসঃ'। |
জাতে মাতাল তালে ঠিক | বেহিসাবি মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে নিজের কাজে হিসাবি। |
জাতের নারী কালাও ভালা/ভালো, নদীর পানি ঘোলাও ভালা/ভালো১ | নারী নির্বাচনে গুণবতী কালো হলেও ভালো; গুণহীনা রূপবতী হলেও ভাল নয়; সমতুল্য- 'কালা কাজলের মাটি, তা'র লাগি ছ'মাস হাঁটি; সুন্দর ধুতুরার ফুল, তা'র নাই কড়ার মূল','রূপে মারি লাথি, গুণে ধরি ছাতি'। |
জাতের নারী কালাও ভালা/ভালো, নদীর পানি ঘোলাও ভালা/ভালয় | বিয়ের ক্ষেত্রে নারী নির্বাচনে আগে গুণ বিচার না করে তার জাত বিচার করা হত, যাকে পালটি ঘর বলা হয়; বর্তমানে জাতবিচার হওয় না, গুণ বিচার হয়। |
জান যায় তো জবান/বাত না যায় | প্রাণ যায়, কথা থাকে। |
জান যায়, মান না যায় | প্রাণ যায় যাক ইজ্জৎ যেন থাকে। |
জানামি ধর্মং ন চ মে প্রবৃত্তির্জানাম্যধর্মং ন চ মে নিবৃত্তিঃ। ত্বয়া হৃষীকেশ হৃদিস্থিতেন যথা নিযুক্তোহস্মি তথ করোমি।। | ধর্ম কি তা আমি জানি কিন্তু তাতে আমার প্রবৃত্তি নাই; অধর্ম কি তাও আমি জানি কিন্তু তা থেকেও আমার নিবৃত্তি নাই; হৃষীকেশ তুমি হৃদয়ে থেকে আমাকে যেভাবে চালাচ্ছ আমি সেইভাবে চলছি। |
জানার কোন বয়স/শেষ নেই | আমৃত্যু শেখা যায়। |
জানিনি, পারিনি, নেইকো ঘরে, এই তিনকে দেবতা ডরে | কারো কাছে এই তিন উত্তর শোনার পর আর কোন কথা চলে না। |
জানীয়াৎ প্রেষণে ভৃত্যান্ বান্ধবান্ ব্যসনাগমে। মিত্রঞ্চাপদি কালে চ ভার্যাঞ্চ বিভবক্ষয়ে।।- চাণক্য | ভৃত্যের যথার্থ স্বরূপ তাঁর কাজের মাধ্যমে জানবে, বন্ধুর যথার্থ স্বরূপ বাসনার সময়ে জানবে। মিত্রের যথার্থ স্বরূপ উপদ্রব উপস্থিত হলে জানবে এবং ধনসম্পত্তি নাশের কালে স্ত্রীর যথার্থ স্বরূপ জানবে। |
জামা-জোব্বা বেশুমার আক্কল বিনা ছারখার | পোশাকের আড়ম্বরে বুদ্ধির দৈন্যতা দূর হয় না। |
জামাইয়ের জন্য মারে হাঁস, গুষ্টি সুদ্ধ খায় মাস | একজনের দোহাই দিয়ে সকলের সুবিধা ভোগ। |
জামিন হয় দিতে, গাছে ওঠে মরতে | উভয়কাজেই অনিষ্ট হওয়ার যথেষ্ঠ সম্ভাবনা। |
জাল ছেঁড়া, পলো ভাঙা মাছ | দুর্দান্ত ধড়িবাজ লোক। |
জালে পড়লে মাছ বেশি লাফায় | আবদ্ধ অবস্থায় প্রাণ ছটফট করে; স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায়রে, কে বাঁচিতে চায়। |
জাহাজের কাছে জেলে ডিঙি | বড়র সঙ্গে ছোটর তুলনা; সমতুল্য- চাঁদের কাছে জোনাকি |
জাহাজের পাশে নোঙ্গর/ জাহাজের পাশে জালিবোট | অপরিহার্য সঙ্গী |
জিঘাংসন্তং জিঘাংসিয়াৎ | হননকারিকে হনন করা দোষনীয় নয়; সমতুল্য- 'শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ'। |
জিতক্রোধেন সর্বং হি জগদেতদ বিজীয়তে | যে ক্রোধকে জয় করেছে সে জগতকে জয় করেছে। |
জিত্নি চদ্দর দেখো, উৎনি পৈর ফৈলাও- হিন্দি প্রবাদ | যতদূর চাদর দিয়ে পা ঢাকতে পারো ততদূর পা ছড়াও; আয় বুঝে ব্য়য় কর। |
জিত্নি মুঁহ উতনি বাতো- হিন্দি প্রবাদ | নানালোকের নানাবক্তব্য; সমতুল্য- 'নানা মুনির নানামত'। |
জিদের ভাত কুকুরে খায় | জেদ ধরলে নিজের ক্ষতি হয়। |
জিভ টলে আছাড় খাওয়া থেকে পা-টলে আছাড় খাওয়া ভাল | বেঁফাস কথা না বলা ভাল। |
জিভ দিয়েছেন যিনি আহার যোগান তিনি | ঈশ্বরই সকলের অন্নদাতা; কালকের জন্য ভাবতে হবে না; অদ্ষ্টবাদে বিশ্বাসী অভাগা। |
জিভ পুড়লো আপ্ত দোষে, কি করবে হরিহর দাসে | নিজের দোষে কষ্ট পেলে অপরের করার কিছু নেই; সমতুল্য- 'স্বখাত সলিলে ডুবে মরি শ্যামা দোষ কারো নয়গো মা'। |
জিয়ন্ত মাছে পোকা পড়ানো | মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সুচরিত্রকে কালিমালিপ্ত করা। |
জিস্কী লাঠি উস্কী ভৈঁস- হিন্দি প্রবাদ // জিস্দা তেগ উস্দা দেগ- পাঞ্জাবী প্রবাদ | যার লাঠি তার মোষ; যার শক্তি আছে সেই সমস্ত বিষয়ের অধিকারী হয়; সমতুল্য- 'জোর যার মুল্লুক তার', লাঠি যার মাটি তার'। |
জিসকো না দে খোদাতাল্লা উস্কো না দে শকে কই উদ্দৌলা | আল্লা যার প্রতি বিরূপ তার ভাগ্য কোন বাদশাহ ফেরাতে পারবে না। |
জীব দিয়াছেন যিনি আহার যোগাবেন তিনি | ঈশ্বরই সকলের অন্নদাতা; অদ্ষ্টবাদে বিশ্বাসী অভাগা। |
জীবন এক পেয়ালা চায়ের মত, যতই তৃপ্তির সাথে পান করি ততই তলার দিকে যেতে থাকি | একদিন বাঁচার অর্থ মৃত্যুর দিকে এক পা এগিয়ে যাওয়া। |
জীবন চলমান ছায়া ছাড়া আর কিছুই নয় | জীবন মায়াময় আলোছায়ার খেলা। |
জীবন সত্যই সরল, কিন্তু আমরা তাকে জটিল করার উপর জোর দিই- কনফুসিয়াস | মানুষের দুর্ভাগ্য যে সে সহজ সরল হ'তে পারে না। |
জীবনে মরণে সৎলোকের কোন ক্ষতি হয় না (উপনিষদ) | সততা জীবনের শ্রেষ্ঠমন্ত্র। |
জীবনের প্রতিটি সিঁড়িতে পা রেখেই ওপরে ওঠা উচিৎ, ডিঙ্গিয়ে নয় | সতর্ক পদক্ষেপে চলা উচিৎ। |
জীবনের লম্বা পথ বড় আঁকাবাঁকা | উত্থান-পতনে মোড়া মানুষের জীবন। |
জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর | জীবে দয়াই শ্রেষ্ট ধর্ম। |
জীর্ণমন্নং প্রশংসীয়াৎ ভার্য্যাঞ্চ গতযৌবনাম্। রণাৎ প্রত্যাগতং শূরং শস্যঞ্চ গৃহমাগতম্।। (চাণক্য | যে আহারের পরিপাক হয়েছে তাকে প্রশংসা করবে, নির্দোষভাবে যৌবন অতিক্রম করেছে এমন স্ত্রীর প্রশংসা করবে, যুদ্ধ থেকে (সসম্মানে) ফিরে আসা বীরের প্রশংসা করবে এবং যে ফসল ঘরে উঠেছে তার প্রশংসা করবে। |
জুতো মেরে গরু দান | অপমান করে পরে ক্ষমা প্রার্থনা। |
জুতো মেরেছে, অপমান তো করে নি | নির্লজ্জ বেহায়ার উক্তি; মান-অপমানবোধ নেই। |
জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ | সংসারের ছোটবড় ভালোমন্দ সবরকম কাজকর্ম। |
জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ | ছোট-বড় যাবতীয় কাজ। |
জুয়াচোরের বাড়ি ফলার, না আঁচালে বিশ্বাস নেই। | অনিশ্চয়তা সম্পর্কে সন্ধিহান; না দেখলে বিশ্বাস নেই; সমতুল্য- 'ঠগের বাড়ী নেমন্তন্ন না আঁচালে বিশ্বাস নেই'। |
জেলের পাছায় টেনা, নিকারীর কানে সোনা | জেলে মাছ ধরে কিন্তু তার দারিদ্র যায় না, অপরদিকে এই মাছ নিয়ে যারা কারবার করে তারা সকলে ধনবান। |
জৈসা দেওগে ঐসা পাওগে- হিন্দি প্রবাদ | যেমন কর্ম করবে তেমন ফল পাবে; যেমন কর্ম তেমন ফল। |
জৈসা কা তৈসা- হিন্দি প্রবাদ | যেমন তেমন; যার যেমন তার তেমন। |
জৈসা দেওগে বৈসা পাওগে- হিন্দি প্রবাদ | যেমন দেবে তেমন পাবে; আয়নায় যেমন মুখ দেখাবে তেমন মুখ দেখবে; যেমন কর্ম তেমন ফল। |
জৈসা দেশ ঐসা বেশ- হিন্দি প্রবাদ | সময়ানুসার ব্যবহার; অবস্থার সাথে সামঞ্জস্য রেখে চলতে হয়; সমতুল্য- 'যখন তুমি রোমে তখন তুমি রোমান', যস্মিন দেশে যদাচার' ইত্যাদি। |
জ্যৈষ্ঠে খরা, আষাঢ়ে ভরা; শস্যের ভার সহে না ধরা // জৈষ্ঠ্য মারে আষাঢ়ে ভরে, কাটিয়া মাড়িয়া ঘর করে- খনা | জৈষ্ঠ্যেমাসে রৌদ্র থাকলে এবং আষাঢ়্মাসে বৃষ্টি হলে ফলন খুব ভাল হয় এবং শস্যের ভাণ্ডার পরিপূর্ণ হয়। |
জোঁকের মুখে চুন/নুন | তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়লে দুর্দান্ত চরিত্রের লোকও নেতিয়ে যায়; সমতুল্য- সাপের মুখে ঈষার মূল। |
জোঁকের গায়ে জোঁক বসে না | সমধর্মীরা পরস্পরের ক্ষতি করে না; মানুষ তার ব্যতিক্রম। |
জো করে টোট্কা উন্হীকো ঘুমকে পরে ফট্কা- হিন্দি প্রবাদ | পরের অনিষ্ট করতে গেলে নিজের অনিষ্ট হয়। |
জো গরজ্তা বহ বরস্তা নহি- হিন্দি প্রবাদ | যে মেঘ গর্জায় সে বর্ষায় না; বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া। |
জো পেলে জোলায় বোনে১ | জলমগ্ন নিম্নভূমি চাষোপযোগী হলে চাষী সেই জমিতেও চাষ করে। |
জো পেলে জোলায় বোনে২ | জোলা কাপড় বোনে, চাষ করে না; কিন্তু সে যদি জমি পায় তবে সে কাপড় বয়ন না করে শস্য বপনের কাজ করতে যায়। |
জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালানো | হাতের কাছে যা পাওয়া গেছে তাই দিয়ে কোনমতে কাজ চালানো। |
জোয়ার-ভাঁটা ও সময় কারও জন্য অপেক্ষা করে না | জীবন সময়ের সাথে কাধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলে। |
জোয়ার থাকলে ভাঁটা আছে | সুখ-দুঃখ মিলিয়ে জীবন; অবিমিশ্র কিছু হয় না। |
জোয়ারের জল আর কতক্ষণ? | সুখের দিনগুলি দীর্ঘ হয় না। |
জোর যার মুল্লুক তার | শক্তি থাকলে সবকিছু জয় করা যায়; শক্তিশালীরা নানাদিকে রাজা হয়; সমতুল্য-জিস্কী লাঠি উস্কী ভৈঁস', 'জিস্দা তেগ উস্দা দেগ', 'লাঠি যার মাটি তার', শক্তি যার দখল তার' ইত্যাদি। |
জ্ঞাতিভির্বণ্ট্যতে নৈব চৌরেণাপি ন নীয়তে। দানেন বর্ধতে নিত্যং বিদ্যারত্নং মহাধনম্॥ (চাণক্য) | জ্ঞাতিরা বিদ্যা ভাগ করে নিতে পারে না; চোরেরা বিদ্যা চুরি করতে পারে না; দানে বিদ্যা সদাবর্ধিত হয়; বিদ্যারূপরত্ন মহাধনস্বরূপ। |
জ্ঞানস্যাভরণং ক্ষমা | ক্ষমা জ্ঞানের আভরণস্বরূপ। |
জ্ঞানহীন চিন্তা লাগাম ছেঁড়া ঘোড়ার মতো | আবোলতাবোল চিন্তা মনে বিকার উৎপন্ন করে; |
জ্ঞানহীনতা চরমতম দারিদ্রের লক্ষণ- আরবী প্রবাদ | অজ্ঞানের সারাটা জীবন বৃথাই যায়। |
জ্ঞানার্জন লবণাক্ত জলের মত, যতই পান করবে ততই জ্ঞানতৃষ্ণা বাড়বে- আরবী প্রবাদ | যতই জ্ঞান অর্জন হয়, জ্ঞানপিপাসা ততই বাড়তে থাকে। |
জ্ঞানী আগে চিন্তা করে পরে কথা বলে, মূর্খ আগে কথা বলে পরে চিন্তা করে- আরবী প্রবাদ | জ্ঞানীরা ভেবে কাজ করে; মূর্খেরা কাজ করার পর ভাবে। |
জ্ঞানী মূর্খকে চিনতে পারে, মূর্খ জ্ঞানীকে চিনতে পারে না- আরবী প্রবাদ | জ্ঞানীর গুণ চিনতে পারা; মূর্খের গুণ চিনতে না পারা। |
জ্ঞানীর কান বড় আর জিভ ছোট হয়- চীনা প্রবাদ // জ্ঞানীরা স্বল্পভাষী হয় | জ্ঞানীরা শোনেন বেশি, বলেন কম |
জ্ঞানীর মন সদাপরিবর্তনশীল, বোকারা রক্ষণশীল | জ্ঞানী বহমান নদীর মত; বোকা যেন বদ্ধ জলাশয়। |
জ্ঞানীর সম্পদ তার জ্ঞান, মূর্খের সম্পদ তার অর্থ | জ্ঞানী জ্ঞানের কাঙাল; মূর্খ অর্থের কাঙাল। |
জ্ঞানেনহীনাঃ পশুভিসমানাঃ | জ্ঞনহীন লোক পশুর সমান। |
জ্যান্ত পোড়ে চিন্তায় মড়া পোড়ে চিতায় | দুশ্চিন্তা মানুষকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়। |
জ্যান্ত মাছে পোকা পড়ানো | মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সুচরিত্রকে কালিমালিপ্ত করা। |
জ্যান্ত মাছে পোকা পড়ে না | সতেজ মন পাপ এড়িয়ে চলে। |
জ্বলন্ত আগুনে ঘী ঢালা | অধিকতর উত্তেজিত করা। সমতুল্য- 'অগ্নিতে ঘৃতাহূতি'। |
ঝ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঝকমারির মাসুল | নির্বুদ্ধিতার দণ্ড;সমতুল্য- আক্কেল সেলামি। |
ঝড় উঠলে আশ্রয় খোঁজো | সবসময় নিরাপদ আবস্থায় থাকার পক্ষে ওকালতি। |
ঝড় থেমে গেলে সব কিছু শান্ত হয় | যেকোন উথালপাথালের পর প্রকৃতি শান্ত হয়; সমতুল্য- 'মেঘের আড়ালে সূর্য হাসে', 'মেঘের পর রৌদ্র আসে' ইত্যাদি। |
ঝড়ে কাক/বক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে | অন্যের কৃতিত্ব নিজের বলে জাহির করা; কাকতলীয়ভাবে কেউ কোন কাজের কৃতিত্ব পেলে এই প্রবাদ বলা হয়। |
ঝড়ের পর শান্তি আসে | ঝড় শেষ কথা নয়। |
ঝাঁকের কই ঝাঁকে ফেরে/মেশে | সমধর্মীরা একসাথে থাকতে ভালবাসে। |
ঝাঁকি/ঝাঁঝরি বলে চালনি তুই বড় ছেঁদা // ঝাঁজরি বলে খৈ-চালা, তুই বড় ফোঁড়ওয়ালা | নিজের দোষ দেখে না পরের দোষ খুঁজে বেড়ায়; পরছিদ্রান্বেষী। |
ঝাঁজরি বলে খৈ-চালা, তুই বেজায় ফোঁড়ওয়ালা | নিজের দোষ নজরে পড়ে না; পরের দোষে তীক্ষ্ণদৃষ্টি; সমতুল্য- 'আনারস বলে কাঁঠাল ভাই তুমি বড় খসখসে', চালুনি বলে ছুঁচ তোর মার্গে কেন ছেঁদা', 'চালুনি বলে ধুচুনিভাই তুমি বড় ফুটো', 'হাঁড়ি বলে কড়াই তোর পিছনটা বড়া কালা' ইত্যাদি। |
ঝাঁপাবার আগে দেখে নিও, ঝাঁপালে ফিরে দেখো না | দেখেশুনে কাজ করার পক্ষে চেতাবনি। |
ঝাড়ের বাঁশ পড়ে না | সংঘবদ্ধ থাকলে বিপদের পড়তে হয় না। |
ঝামেলায় না পড়লে ঝামেলার (দুশ্চিন্তা) পিছু নিও না | অনাবশ্যক ঝামেলায় না জড়ানোর পক্ষে চেতাবনি। |
ঝালে, ঝোলে, অম্বলে | সবঠেকেই উপস্থিত; সমতুল্য- 'সর্বঘটের কাঁঠালী কলা'। |
ঝি জব্দ কিলে, বৌ জব্দ শিলে, পাড়াপড়শী জব্দ চোখে আঙুল দিলে | প্রহারে কন্যাম বাটনা বাটিতে দিলে বৌ এবং প্রত্যক্ষভাবে দেখিয়ে দিলে প্রতিবেশী ঠাণ্ডা হয়। |
ঝিকে মেরে বৌকে শেখানো | কন্যাকে শাসন করে পুত্রবধুকে শিক্ষা দান; পরোক্ষে তিরস্কার; ইঙ্গিতে কার্যসাধন। |
ঝির ঝি করবে কি? | কন্যাই বড় উপকার করল এখন তার কন্যা এসে উপকার করবে, কোন উপকার পাওয়া যাবে না অর্থে- ব্যাঙ্গোক্তি। |
ঝিনুক দিয়ে সাগর ছেঁচা | ক্ষুদ্র উপায়ে বিরাট কাজ করার চেষ্টা; নরুণ দিয়ে তালগাছ কাটা। |
ঝিনুকমাত্রেই শুক্তি থাকে না | হাত পা থাকলেই মানুষ হয় না; সব মানুষ মানুষ নয়; সমতুল্য- 'চকচক করলেই সোনা হয় না'। |
ঝুঁকি না নিলে লাভ হয় না | জীবনে ঝুঁকি আছে; ঝুঁকি না নিলে আখেরে লাভ হয় না। |
ঝুটে কা মুঁহ কালা সচ্চে কা বোলবালা- হিন্দি প্রবাদ | শেষপর্যন্ত সত্যের জয় হয়; সমতুল্য- 'সত্যমেব জয়তে। |
ঝোপ বুঝে কোপ মারা | অবসরে সুযোগগ্রহণ/কার্যসাধন; অবস্থাবুঝে ব্যবস্থাগ্রহণ; সুযোগমতো আঘাত করা; সুযোগ বুঝে কাজ করা। |
ঝোলে, ঝালে, অম্বলে- সবটেকে বেগুন চলে | নানাগুণের গুণী; সমতুল্য- 'সব সাজে মোহিনীমোহন'; 'সর্বঘটের কাঁঠালী কলা'। |
ঝোলে অম্বলে এক করা | দুইই সুখাদ্য কিন্তু দুইয়ের মিশ্রণ অখাদ্য; যাদের পৃথক থাকা উচিত তাদের মিশ্রিত করলে এই প্রবাদ উক্ত হয়। |
ট
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
টক টসো আঁটিসারা শস্যশূন্য আঁশ ভরা, সেই আম বিলাবার ধারা | বিলাবার জন্য নিকৃষ্ট দ্রব্যই নির্বাচন করা হয়। |
টকের জ্বালায় দেশ ছাড়লাম তেঁতুল তলায় বাস | নরকযন্ত্রণা থেকে মুক্তি নেই; যন্ত্রণা থেকে নিস্তার চাইলেই পাওয়া যায় না। |
টাক, প্রকৃতি, গোদ মরণে হয় শোধ | মাথাভরা টাক, স্বভাব ও পায়ের গোদ মরার আগে ছাড়ে না। |
টাকা উড়ে চলে যায়, টাকা রাখা বিষম দায় // টাকার ডানা আছে, উড়ে যেতে কতক্ষণ? | লক্ষ্মী চঞ্চলা; যত্ন না নিলে লক্ষ্মী ঘর ছাড়ে। |
টাকা গাছের ফল নয় যে, ছিঁড়ে/পেড়ে নিলে হল | অর্থ পরিশ্রমের ফল। |
টাকা টাকা বল ভাই, টাকার মত জিনিষ নাই, টাকা বিনে সংসারেতে সব যন্ত্রণা | অর্থ না থাকলে সুখ ভোগ সম্ভব নয়। |
টাকা চিটেগুড়- মক্ষি টানে | অর্থ থাকলে পাশে অনেক উমেদার জুটে যায়। |
টাকা তুমি যাচ্ছ কোথা? পিরিত যথা; আসবে কবে? বিচ্ছেদ যবে | প্রণয় থাকলে টাকা ধার দেওয়া হয়; টাকা ফেরত চাইলেই বন্ধু বিচ্ছেদ। |
টাকা তোমারও নয়, টাকা আমারও নয়, টাকা প্রয়োজনের | প্রয়োজনে কাজে না লাগলে সে অর্থ থাকা বা না থাকা, দুই সমান। |
টাকা থাকলে অভাবের অভাব হয় | অর্থশালী কিভবে অর্থ ব্যয় করবে ভেবে পায় না; অভাব না থাকায় অর্থশালী অসদুপায়ে অর্থ খরচ করে। |
টাকা থাকলেই অপব্যয় | অর্থশালী প্রয়োজনের তুলনায় আড়ম্বরে বেশি খরচ করে। |
টাকা থাকলে ভদ্রলোক, না থাকলেই ছোটলোক | সমাজে উচ্চবিত্তরা ভদ্রলোক এবং নিম্নবিত্তেরা ছোটলোক আখ্যায়িত হয়। |
টাকা থাকলে ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ হয় | অর্থ থাকলে নয়ছয় করা যায়। |
টাকা দিইয়ে নারী চিনি নারী দিয়ে নর | যে নারী অর্থলোলুপ নয় এবং যে পুরুষ নারীলোলুপ নয় তারাই প্রকৃত সতী ও সৎ। |
টাকা দিলে কাঠের পুতুলও হাঁ করে | অর্থ অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। |
টাকা ধার চাইলে বন্ধু বিচ্ছেদ | একবার ঋণ নিলে সে ঋণ আর শোধ হয় না। |
টাকা না থাকলে ভাল কাজ করা যায় না | অর্থের রূপালীরেখা হল- বহু ভালো কাজে অর্থ ব্যয়িত হয়। |
টাকা বাড়লে দেমাক বাড়ে | খুব কম অর্থশালীই বিনয়ী হয়। |
টাকা মাটি, মাটি টাকা | টাকা টাকা করে টাকার প্রতি বেশি নজর না দিতে ঠাকুরের হিতোপদেশ। |
টাকা যার মামলা/শক্তি তার | অর্থের কাছে বিচার নতজানু হয়; অর্থের জোরে বিচার কেনা যায়; যে বেশি খরচ করে সে মকদ্দমায় জেতে। |
টাকায় টাকা আনে/টানে১ | ব্যবসায়ে যত বেশি অর্থ বিনিয়োগ করা যায়, ততই বেশি লাভ হয়; সমতুল্য- 'বাণিজ্যে বসতি লক্ষ্মী'। |
টাকায় টাকা আনে/টানে২ | যার অর্থ আছে তার অর্থাগম হয়; সমতুল্য- 'জলে জল বাঁধে'; 'পয়সায় পয়সা আসে'। |
টাকায় বাঘের দুধ মেলে | অর্থে জোরে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। |
টাকায় সব দোষ ঢাকা পড়ে/যায় | অর্থে সব সমালোচনায় মুখ বন্ধ করা যায়। |
টাকার নৌকা পাহাড় দিয়ে যায় | অর্থ থাকলে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। |
টেনে বুনতে কুলোয় না | অর্থের টানাটানি; অভাবের সংসার; এদিক আনতে ওদিক কুলায় না। |
টোপ ফেললে খায় না সেই বা কেমন বঁড়শি, ইসারায় বোঝে না সেই বা কেমন পড়শি | উভয়ই কোন কাজে আসে না। |
ট্যাক খালি তো মুখ কালি | অর্থের টানাটানিতে মন চিন্তায় পোড়ে। |
ট্যাক ভারি তো মন হালকা | অর্থ থাকলে সব আকাঙ্খা মেটে, মেজাজ ফুরফুরে থাকে। |
ট্যানা নাই ফ্যানা আছে | শূন্যগর্ভ লোকের অহঙ্কার বেশি হয়। |
ঠ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঠগ বাছতে গাঁঁ উজাড় | ভালমন্দের বিচারে মন্দই বেশী; যেখানে মন্দের ভাগ বেশি, প্রায় সবাই মন্দ সেখানে বাছাবাছি করা কঠিন; সমতুল্য- কম্বলের লোম বাছলে থাকে কি?' |
ঠগের বাড়ী নেমন্তন্ন, না আচাঁলে বিশ্বাস নেই | অনিশ্চয়তাসম্পর্কে সন্ধিহান; দেখলেই তবে বিশ্বাস হয়; সমতুল্য 'জুয়াচোরের বাড়ি ফলার, না আঁচালে বিশ্বাস নেই'। |
ঠাকুর ঘরে কে, আমি কলা খাই নি | অপরাধী দুর্বলচিত্তের হয়, চালাকি করতে গিয়ে ধরা পড়া; অতি সতর্কতায় দোষ-স্বীকার; এক কথার অন্য উত্তর দিয়ে বদ মনোভাব প্রকাশ করে ফেলা। |
ঠাকুরকে দেখিয়ে কলা নৈবিদ্যি নিয়ে পালা | প্রবঞ্চনা করা। |
ঠাঁট ঠমকে বিকোয় ঘোড়া | গুণে নয় জমকে বাজারে জিনিষ বিক্রি হয়; বাহ্যিক ভড়ং দেখে লোকে ভোলে; সমতুল্য- 'আগে দর্শননধারী, পিছে গুণবিচারী','যো দেখতা হ্যায় উয়ো বিক্তা হায়' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'রূপের চেয়ে গুণের কদর বেশি', শুধু দেখনাই ভাল হলেই চলে না গুণ থাকা চাই' ইত্যাদি । |
ঠাণ্ডা মাথায় বুদ্ধি খোলে | মাথা গরম হলে বুদ্ধি গুলিয়ে যায়। |
ঠেঁটা লোকের মুখে আঁট বাহির থেকে কাটে গাঁট | দুষ্টলোকে মিষ্টিকথায় ভুলিয়ে প্রবঞ্চনা করে। |
ঠেকে শেখে আর দেখে শেখে | অজ্ঞানীরা নিজের কষ্ট থেকে শিক্ষা পায়; জ্ঞানীরা অপরের অজ্ঞতার ফল দেখে শিক্ষা নেয়। |
ঠেলাঠেলির ঘর খোদায় রক্ষা কর | দুই সতীনের ঝগড়ায় স্বামীবেচারা প্রাণ ওষ্ঠাগত, কাকে ছেড়ে কাকে রাখে। |
ঠেলায় পড়লে ঠাকুরদাদি, নইলে তার নাকে পাঁদি (বাতকর্ম) | বিপদে পড়ে কারো শরণ নেওয়া; বিপদ সরে গেলেই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা। |
ঠেলায় পড়ে ঢেলায় সেলাম | গল্পে আছে- পা পিছলে পড়ে যেতে একজন বলল- পড়ে গেলে? উত্তরে সে বলল-পড়ব কেন,শিবকে প্রণাম করলাম; আলং- এক অর্থে- প্রকৃত বিষয় গোপন করে সম্ভ্রম রক্ষা করার চেষ্টা; অন্য অর্থে বিপদে পড়ে ঈশ্বরকে স্মরণ; সমতুল্য- 'কারে পড়ে আল্লার নাম', 'বিপদে পড়লে শ্রীমধুসূদন' ইত্যাদি। |
ঠেলায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না | বিপদে পড়লে যে কোনভাবে আত্মরক্ষা করতে হয়। । |
ঠেলায় পড়লে বাঘেও ঘাস খায় | বাধ্য হলে অপছন্দকেও স্বীকার করতে হয়। |
ঠেলায় পড়লে বেড়াল মান্দার গাছেও (একপ্রকার কাঁটাযুক্ত গাছ) উঠে | বিপদে পড়লে কোন বাধাই বাধা নয়। |
ঠেলায় পড়লে শালগ্রাম নইলে পাথরের ঢেলা | ভয় থেকে ভগবানে ভক্তি। |
ঠেলায় পড়লে বামুন শালগ্রামের পৈতা/সোনা বেঁচে খায় | বিপদে পড়লে ভগবানে ভক্তি শিকেয় ওঠে। |
ঠেলার নাম বাবাজী | বিপদের সময় অবজ্ঞাতকে সমাদর করতে হয়; সমতুল্য- 'সাধে কি বাবা বলি গুতোর চোটে বাবা বলায়'। |
ঠোঁক কাটা কাক | সববিষয়ে ঠোক্কর মারা লোক; যে সববিষয়ে খুঁত ধরে। |
ঠ্যাং থাকতে লাঠি কেন? | দুর্বলের প্রতি বক্রোক্তি |
ড
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ডাইনে আনতে বাঁয়ে কুলোয় না (নেই) // ডাইনে আনতে বামে ফুরায় | অর্থের টানাটানি; আয় থেকে ব্যয় বেশি; আয় অল্প কিছুতেই সংকুলান হয় না; সমতুল্য- 'খরচের আঁকে আনতে জমার আঁকে কুলায় না', 'নুন আনতে পান্তা ফুরায়' ইত্যাদি। |
ডাইলের মধ্যে মুসুরি, সাগাইয়ের (আত্মীয়) মধ্যে শাশুড়ি। | গুণে, উপকারিতায় শ্রেষ্ঠ। |
ডাকয়ে পক্ষী না ছাড়ে বাসা; উড়িয়ে বৈসে খাবে করি আশা; ফিরে যায় বাসে না পায় দিশা খনা ডেকে বলে সেইতো ঊষা; উড়ে পড়ে খায় না তখন কেন যায় না- (খনা) | রাতের পাখীরা জখন বাসার মধ্কাযে থাকে; বাসা ছেড়ে উড়ার ইচ্ছা তবু উড়তে পারে না; বার বার দেশে হারা হয়ে বাসায় ফিরে আসে; রাত্রি শেষের সেই সময়টাই ঊষাকাল; সেই সময় যাত্রা করা সবচেয়ে ভাল। (যাত্রার শুভক্ষণ) |
ডাকলে ডাক, বসলে ক্রোশ, পথ বলে মোর কিসের দোষ | অলসতার প্রতি বক্রোক্তি; চলার পথে কারো ডাক শুনে দাঁড়িয়ে পড়লে এক ডাকের পথ (যতদূর থেকে চিৎকার শোনা যায় ততটা একডাকে পথ)চলার সময় নষ্ট; একবার বসে পড়লে এক ক্রোশ পথ যাওয়া্র সময় নষ্ট হয়; সমতুল্য- 'দাঁড়ালে পোয়া, বসলে ক্রোশ, পথ বলে মোর কিসের দোষ'। |
ডাঙায় বাঘের ভয়, জলেতে কুমীর | উভয়সঙ্কট; সমার্থক বাগধারা- এগুলে রাম পিছুলে রাবণ, শাঁখের করাত, যেতেও কাটে আসতেও কাটে; সাপের ছুঁচো গেলা ইত্যাদি |
ডান হাতখান দিলে বাম হাতখান পাওয়া যায় | হাত বাড়ালেই বন্ধু পাওয়া যায়। |
ডান হাতের ব্যাপার | আহার, খাওয়া। |
ডানপিটের মরণ গাছের আগায় | গাছ থেকে পড়ে হাত পা ভাঙে; অপঘাতে মৃত্যু হয়। |
ডানহাতের কাজ বামহাত যেন না জানে | কোন গোপন কাজ কেউ যেন না জানে। |
ডানাকাটা পরী | কুদর্শনা নারীর প্রতি বক্রোক্তি। |
ডালছাড়া বানর | বানর যতক্ষণ ডালে থাকে ততক্ষণ তার বিক্রম; ডাল ছাড়লেই বিক্রম আর থাকে না; সমতূল্য- জলছাড়া কুমির/মৎস |
ডিম ফোটার আগেই মুরগীর ছানা গোনা | আগাম সুখকল্পনা। |
ডিমের খোলে চেপে সাগরপার করা কঠিন ব্যাপার- ইংরাজী প্রবাদ | অবাস্তব কল্পনা, যা হবার নয়- সমতুল্য-।\কলার ভেলায় সাগরপার, 'শামুকের খোলে জল সেচা' ইত্যাদি। |
ডুবতে কো তিনকে (খড়, ঘাস) কা সহারা- হিন্দি প্রবাদ // ডুবন্ত মানুষ খড়কুটো ধরে বাঁচতে চায় | সঙ্কটকালে পাওয়া সামান্য সাহায্য বিরাট সাহায্য মনে হয়; মরণাপন্ন মানুষের শেষচেষ্টা। |
ডুবে ডুবে খাই পানি, আল্লা জানে আর আমি জানি // ডুবে ডুবে জল খায়, শিবের বাবাও টের না পায় | গোপনে করা কাজ ধরা দুঃসাধ্য ব্যাপার; (উৎস- রোজার দিনে জল খাওয়া নিষিদ্ধ; গাজনের সন্ন্যাসীর জল খাওয়া নিষিদ্ধ)। |
ডুবে ডুবে জল/পানি খাওয়া | গোপনে কাজ করা; লোকচক্ষুর অগোচরে কার্যসিদ্ধি করা। |
ডুবেছি না, ডুবতে আছি, দেখি পাতাল কত দূর? | বিপর্যয় লুকানোর প্রচেষ্ঠা। |
ডুমুরের ফুল, সাপের পা, কল্পনা শুধু কল্পনা | অশ্বডিম্ব, অমাবস্যার চাঁদ, কোকিলের বাসা, ডুমুরের ফুল সাপের পা ইত্যাদি হয় অদৃশ্য নয় অবাস্তব। |
ডেকে ডেকে খনা গান, দোগে ধান ছায় পান- খনা | রৌদ্রপূর্ণ জমিতে ধান এবং ছারাপূর্ণ জমিতে পান চাস করতে হওয়; তাতেই বেশি ফসল পাওয়া যায়। |
ডেকে শাল নেওয়া | শখের বিপদ; ইচ্ছা করে বিপদে পড়া। |
ডোবা দেখলেই ব্যাঙ লাফায় | প্রিয় বস্তু দেখলে সবারই আনন্দ হয়। |
ডোলভরা আশা, কুলোভরা ছাই। | আশার শেষ নেই, নিরাশারও শেষ নেই। |
ডোলী ন কহার, বিবি হৈ তৈয়ার | বধু যাবার জন্য সেজে বসে আচে, অথচ পালকী ও বাহকের দেখা নেই; কাজের যোগাড় নাই, কাজের লোক প্রস্তুত; রাম না হতেই রামায়ণ। |
ঢ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ঢাক ঢাক গুড় গুড় | প্রকৃত অবস্থা গোপন করার চেষ্টা |
ঢাকী শুদ্ধু বিসর্জন | সমূলে বিনাশ |
ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রি // ঢাকীর দামে মনসা বিকানো | আসল খরচ থেকে আড়ম্বরের খরচ বেশি; অসার বাহ্যাড়ম্বর করতে গিয়ে আসল জিনিস হারানো। |
ঢাকের বাদ্য থামলে মিষ্টি // ঢাকের বাদ্যি আর ঢেঁকির কচকচি চুপ করলেই ভাল | কর্ণজ্বালা থেকে মুক্তি; বিরক্তিকর একঘেয়েমি থেকে মুক্তি; যা অসহ্য তার ইতি হওয়াই ভালো। |
ঢাল নেই তলোয়ার নেই আদ্দিরাম/নিধিরাম সর্দার | শূন্যহাতে বাহাদুরি; অক্ষমের আস্ফালন; নিজের অযোগ্যতাকে কথার মারপ্যাঁচে ঢাকা; সমতুল্য 'ধন নেই কড়ি নেই নিধিরাম পোদ্দার'; ধান নাই চাল নাই, আন্দিরাম মহাজন। |
ঢিল মারলে পাটকেল খেতে হয় // ঢিলের বদলে পাটকেল | আঘাতের উত্তরে আরও বড় প্রত্যাঘাত আসে; পরের ক্ষতি করতে চাইলে নিজেরও ক্ষতি হয়। |
ঢিল দিয়ে ঢিল ভাঙা | আগে আলগা দিয়ে পরে নিয়ন্ত্রণে আনা; সমতুল্য- 'ছেড়ে দিয়ে তেড়ে ধরা'। |
ঢিলা দিয়ে টেনে আনা | আগে আলগা দিয়ে পরে নিয়ন্ত্রণে আনা; সমতুল্য- 'ছেড়ে দিয়ে তেড়ে ধরা'। |
ঢেঁকি অবতার | আহাম্মক, নির্বোধ |
ঢেঁকি কেন গাঁ বেড়াক না গড়ে পড়লে হল | অন্য কাজ যা খুশি করুক, আমার কিছু যায় আসে না, আ্রমার কাজটা হলেই হল। |
ঢেঁকি ভজে স্বর্গে যাওয়া | নিস্ফল প্রচেষ্টায় মোক্ষ নেই। |
ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে | অভ্যাস কখনও বদলায় না; অদৃষ্ট সঙ্গেসঙ্গে ফেরে। |
ঢেঁকির কচকচি থামলেই মিষ্টি // ঢেঁকির কচকচি আর ঢাকের বাদ্যি চুপ করলেই ভাল | বিরক্তিকর একঘেয়েমি থেকে মুক্তি। |
ঢেঁকির শব্দ বড় | যার ভিতরে যার কিছুই নেই তার বাজে বেশি; সমতুল্য- 'ফাঁকা কলসি বাজে বেশি'। |
ঢেঁকিশাল দিয়ে কটক যাওয়া | ঘুর/বাঁকাপথে কাজ করা; সহজ কাজ জটিল উপায়ে করা; সমতুল্য '-্অমরকণ্টক হয়ে অমরনাথ যাওয়া', 'কানপুর হয়ে নাগপুর যাওয়া', 'কামাখ্যা হয়ে কাশীধাম যাওয়া' ইত্যাদি |
ঢেঁকিশালে যদি মানিক পাই, তবে কেন পর্বতে যাই১ | ঘরে বসেই যদি সুখ পাই তবে সুখের অন্বেষণে অন্যত্র ঘোরাঘুরির প্রয়োজব নেই। |
ঢেঁকিশালে যদি মানিক পাই, তবে কেন পর্বতে যাই২ | কাছে অভীষ্ট সিদ্ধ হলে দূরে যাওয়া নেই; পরিশ্রমে অনিচ্ছা। |
ঢেঁকি স্বর্গে গিয়ে/গেলেও ধান ভানে১ | যার যা স্বভাব তা মরলেও ছাড়তে পারে না |
ঢেঁকি স্বর্গে গিয়ে/গেলেও ধান ভানে২ | মন্দভাগ্যের কোনো অবস্থাতেই ভালো কিছু হতে পারে না |
ঢেউ দেখে নাও ডুবিও না | ঢেউয়ের বহর দেখে ঘাবড়িয়ো না; বিপদে হতবুদ্ধি হয়ো না। |
ঢোল কা ভিতর পোল (ফাঁপা) ' | আজকাল বেশিরভাগ লোকের বাইরের আড়ম্বর বেশি; সমতুল্য- বাইরে বাবুয়ানা ভেতরে খেড়', 'ভিতরে ছুঁচোর কেত্তন','বাইরে কোঁচার পত্তন' ইত্যাদি। |
ঢোলের পাছে কাসি | অপরিহার্য সঙ্গী |
ঢ্যাকার আগে চলা | ধাক্কা দেবার আগে যাওয়া ভালো। |
ত
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
তক্রান্তং খলু ভোজনম | ভোজের শেষপাতে ঘোল খাওয়া ভাল। |
তত্র মৌনং হি শোভনম | অজ্ঞানে ভিড়ে মৌন থাকাই শোভন। |
তথাস্তু | তথা অস্তু; তাই হউক। |
তন্নষ্টং যন্ন দীয়তে | যাহা দান করা হয় না তাহাই নষ্ট হয়। |
তপ্তজলে ঘর পোড়ে না | জল গরম হলেও স্বাভাবিক গুণ হারায় না; ঠাণ্ডালোক রেগে গেলেও বেশি ক্ষতি করে না; কিংবা সামান্য ভুলে বেশি ক্ষতি হয় না। |
তপ্ত ভাতে ঘি ঢালা | অপকার করার ভান করে উপকার করা। |
তপ্ত ভাতে নুন জোটে না, পান্তা ভাতে ঘি | সামান্য বিষয় জোটে না অসামান্যের দাবী। |
তমসোমা জ্যোতির্গময়, অসদোমা সদগময়, মৃত্যোর্মা অমৃতগময়- উপনিষদ | আমাকে- অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে চল; অসৎপথ থেকে সৎপথে নিয়ে চল; মৃত্যু থেকে অমৃতের দিকে নিয়ে চল। |
তমোগুণে অধোগতি | মোহ থাকলে পতন অনিবার্য। |
তর্কই জ্ঞানের উৎস | বাদ থাকলে প্রতিবাদ হয়; প্রতিবাদ থেকে সম্বাদ হয়। |
তর্কে জেতা নয়, তর্কে না জড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ- আরবী প্রবাদ | বুদ্ধিমানেরা তর্কে জড়ায় না। |
তর্কে তর্ক বাড়ে | তর্কের কোন মীমাংসা নেই |
তলোয়ার যার, দেশ তার- পাঞ্জাবী প্রবাদ | জিস্কি লাঠ উস্কি ভৈঁস; জিস্দা তেগ উস্দা দেগ; জোর যার মুল্লুক তার; লাঠি যাঢ় মাটি তার। |
তস্করস্য কুতো ধর্মো দুর্জনস্য কুতঃ ক্ষমা। বেশ্যানাঞ্চ কুতঃ স্নেহঃ কুতঃ সত্যঞ্চ কামিনাম্॥ (চাণক্য) | চোরের আবার ধর্ম কী? দুষ্টের আবার ক্ষমা কী? গণিকার আবার স্নেহ কী? কামুকের আবার সততা কী? |
তস্মিন্ তুষ্টে জগৎ তুষ্টঃ | ঈশ্বর তুষ্ট থাকলে জগৎ তুষ্ট থাকে। |
তস্য তদেব মধুরং যস্য মনো যত্র সংলগ্নম | যার মন যাতে অনুরক্ত তার কাছে সেটাই মনোহর; সমতুল্য- যার সাথে যার মজে মন, কিবা হাঁড়ি কিবা ডোম। |
তাঁতীকুলও গেল, বৈষ্ণবকুলও গেল | দুকূল হারিযে নিরাশ্রয় হল; দু’দিক সামালাতে গিয়ে দুদিকই হারালো; এইকাজ ওইকাজ করতে গিয়ে দুইকাজই নষ্ট হ'ল। |
তাঁতী রাগে কাপড় ছেঁড়ে, আপনার ক্ষতি আপনি করে | রাগে অন্ধ হলে বুদ্ধি গলতে শুরু করে; নির্বোধলোক রাগে নিজেরই ক্ষতি করে। |
তাজমহল একদিনে তৈরী হয় নি | অনেক পরিশ্রমে মহান সৃষ্টি তিলেতিলে গড়ে ওঠে। |
তাড়াহুড়োয় সময় নষ্ট | তাড়াআড়ি করলে ভুলভ্রান্তি হয় এবং শেষপর্যন্ত কাজে দেরী হয়। |
তাত সয় তো বাত সয় না১ | কথা শুনতে নারাজ; বাতাসের গরম সহ্য হয়, কিন্তু কথার গরম সহ্য হয় না' |
তাত সয় তো বাত সয় না২ | গরম সহ্য করা যায় কিন্তু শীত সহ্য করা যায় না। |
তালগাছের আড়াই হাত | শেষ ও কঠিন অংশ; বিশেষ কাজের শেষ কঠিন অংশ; কিংবা তালগাছকে একহাত পরিমাণ ধরলে বিশাল উঁচু কিছু। |
তাল, তামাক, পাশা তিন কর্মনাশা | এই তিন বিষয় সময় ও কাজ নষ্ট করে। |
তাল, তেঁতুল, মাদার (একপ্রকার টকফল), তিনে দেখায় আঁধার | এই তিন গাছ ভিটায় থাকলে অন্ধকারে ছেয়ে থাকে। |
তালপাতার ছায়া | ক্ষণস্থায়ী বিষয় |
তালপাতার ছায়া মিছা কর তার মায়া | ক্ষণস্থায়ী বিষয়ের উপর নির্ভর করা যায় না। |
তালপাতার সেপাই | শীর্ণ, কৃশ, শক্তিহীন লোক। |
তালপুকুর নামে, কিন্তু ঘটি ডোবে/বোড়ে না | নামডাক আছে, কিন্তু কাজে কিছু না; কপর্দকশূন্য নামডাকওয়ালা লোক। |
তালপুকুরে খাবি খায়, সমুদ্র পার হতে চায় | অক্ষমের আস্ফালনের প্রতি বিদ্রুপোক্তি। |
তালপ্রমাণ বাড়ে, তিলপ্রমাণ কমে | দোষ বা রোগ দ্রুতহারে বৃদ্ধি পায় এবং অল্পহারে হ্রাস পায়। |
তাল বাড়ে ঝোপে খেজুর বাড়ে কোপে (খনা) | তালগাছ না ছাঁটলে গাছের বৃদ্ধি দ্রুত হয় এবং ফলন বেশি হয় অপরপক্ষে খেজুরগাছ ছাঁটলে গাছের বৃদ্ধি দ্রুত হয় এবং ফলন বেশি হয়। |
তালৈয়ের (ভাই/বোনের শ্বশুর) চেয়ে পুতরা ভারি; সমতুল্য- 'বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়', 'সূর্যের চেয়ে বালির তাপ বেশই' ইত্যাদি। | আসলের চেয়ে অনুচরের আস্ফালন বেশি। |
তাস, তামাক, পাশা, এ তিন সর্বনাশা/তাস, দাবা, পাশা, তিন কর্মনাশা | এই তিন জিনিস অকারণ সময় নষ্ট হয়। সুতরাং এই বিষয় অত্যন্ত ক্ষতিকর। |
তিন ইঞ্চির জিভ একজন সাতফুট মানুষকেও কাৎ করতে পারে- চীনা প্রবাদ | অপরিমিত আহার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। |
তিন/ছয় কানে (তিনজনের কানে) গেলে গুপ্তকথা প্রকাশ হয়ে যায় | কথা চালাচালিতে গুপ্তকথা ফাঁস হয়ে যায়। |
তিনকাল গিয়ে এককালে ঠেকেছে | বাল্য, যৌবন ও প্রৌঢ়কাল গিয়ে শেষে বৃদ্ধকালে এসে ঠেকেছে; অতিবৃদ্ধ, মৃত্যুকাল আসন্ন। |
তিনজন জানে তো ত্রিশজন জানে | গোপন কথা একটু ব্যক্ত হলেই সকলে জেনে যায়। |
তিনটি জিনিস বেশিদিন লুকিয়ে থাকে না- চন্দ্র, সূর্য ও সত্য- জাপানী প্রবাদ | এই তিনটি বিষয় বেশিদিন চাপা যায় ্না। |
তিনটি বই একবার পড়ার চেয়ে একটি বই তিনবার পড়া শ্রেয়- আরবী প্রবাদ | বিষয়বস্তু হৃদয়ঙ্গম করতে হলে একটা বই একাধিকবার পড়া উচিৎ। |
তিনদিনের যোগী ভাতকে বলে অন্ন | আদিখ্যেতা, বাড়াবাড়ি; জাহির করার ইচ্ছা। |
তিন নকলে আসল খাস্তা১ | নকলের আধিক্যে আসলকেই নকল বলে ভুল হয়। |
তিন নকলে আসল খাস্তা২ | একটি জিনিস নকল করতে করতে আসলের আর কিছু থাকে না। |
তিন মাথা যার (অতিবৃদ্ধ লোক) বুদ্ধি নেবে তার | জীবনের অভিজ্ঞতা যার সর্বাধিক তার কাছেই পরামর্শ নেওয়া উচিৎ; সমতুল্য- বৃদ্ধস্য বচনং গ্রাহ্যং। |
তিলক পরলেই বৈষ্ণব হয় না | বাহ্যিক আড়ম্বরে ধার্মিক হওয়া যায় না; অন্তরে ভক্তি থাকা প্রয়োজন; সমতুল্য- 'আলখাল্লা পরলেই মোল্লা হয় না'; 'চকচক করলেই সোনা হয় না'; '; 'মন্দিরে গেলেই সাধু হয় না' ইত্যাদি। |
তিষ্ঠত্যেকাং নিশাং চন্দ্রঃ শ্রীমান সম্পূর্ণমণ্ডল | ষোলকলায় পূর্ণ চন্দ্র মাত্র একরাত্রি থাকে; সুখ দীর্ঘকাল স্থায়ী হয় না। |
তীরে এসে তরী ডোবা | শেষ পর্যায়ে কাজ পন্ড হওয়া; সাফল্যের মুখে পতন। |
তীর্থের কাকের মত বসে থাকা | পরপ্রত্যাশী হওয়া। |
তুকতাক ছয়মাস, কপালে যা বারোমাস | চেষ্টাচরিত্র করে কিছুদিন সুখভোগ করা যায়; ভাগ্য না থাকলে দুঃখভোগ এড়ানো যায় না। |
তুফানে ছেড়ো না হাল, নৌকা হবে বানচাল | বিপদের সময় ভয় পেতে নেই; শক্ত হাতে হাল ধরতে হয়, নতুবা বিপদের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। |
তুমি অধম বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন- বঙ্কিমচন্দ্র | অসৎ চিরদিন নিন্দিত; বিরুদ্ধ উক্তি- শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ। |
তুমি কার, কে তোমার, কারে বলরে আপনার? | তুমি এসেছো একা, যাবেও একা; এ জগৎ মিথ্যা মায়াময়, শুধু ছায়ার আসা যাওয়া; সমতুল্য- 'আসতেও একা, যেতেও একা, কার সঙ্গে বা কার দেখা'। |
তুমি কি শান্ত থাকতে পারো তবে তুমি জ্ঞানী, তুমি কি রেগে যাও তবে তোমার মত মূর্খ নেই- আরবী প্রবাদ | জ্ঞানী লোকেরা ধীরস্থির হয়,মুর্খদের কথায় কথায় মাথা গরম হয়। |
তুমি খাও ঘাটে জল; আমি খাই ভাঁড়ে১ | এককাঠি বাড়া; টেক্কা মারা। |
তুমি খাও ঘাটে জল; আমি খাই ভাঁড়ে২ | বক্তা অপেক্ষাকৃত বেশি স্বচ্ছল। |
তুমি চল/ফেরো ডালে ডালে আমি চলি পাতায় পাতায় // তুমি চল/ফেরো পাতায় পাতায় আমি চলি শিরায় শিরায়১ | এককাঠি বাড়া; টেক্কা মারা। |
তুমি চল/ফেরো ডালে ডালে আমি চলি পাতায় পাতায় // তুমি চল/ফেরো পাতায় পাতায় আমি চলি শিরায় শিরায়১ | বক্তা অপেক্ষাকৃত বেশি চালাক। |
তুমি চল ভাগ্য তোমার সাথে চলবে | মানুষ নিজের ভাগ্য নিজেই গড়ে। |
তুমি প্রশ্ন কর উত্তর পাবে; তুমি খোঁজ সন্ধান পাবে, তুমি দরজায় কড়া নাড়ো দরজা খুলে যাবে- আরবী প্রবাদ | ক্রিয়ার ফল আছেই; কিছু কর আর কর্মফল ভোগ কর। |
তুমি যতটা মূল্যবান ঠিক ততটা সমালোচনার পাত্র- আরবী প্রবাদ | সমালোচনার ঊর্ধ্বে কেঊ নয়। |
তুমি হৃদয় দিয়ে যেপ্রকার ভাব তোমার প্রকৃতিও সেইপ্রকার হয়- ইহুদী প্রবাদ | প্রকৃতি মানুষকে চেনায়। |
তুলসী বনের বাঘ | সাধু হিসেবে পরিচিত প্রকৃত দুর্জন ব্যক্তি |
তুলো শুনতে নরম, বুনতে নয় | সরল কাজ সবসময় সহজ হয় না। |
তুষহীন তণ্ডুলের অঙ্কুরোদ্গম হয় না | সহায় ছাড়া কাজ হয় না। |
তুষের আগুন | যে ক্রোধানল সহজে নির্বাপিত হয় না; ধিকিধিকি করে জ্বলতে থাকা মর্মযন্ত্রণা। |
তৃণবন্মন্যতে জগৎ | অর্থশালীরা জগতকে তৃণের মত জ্ঞান করে। |
তৃণৈগুণত্ব মাপন্নৈর্বদ্ধন্তে মত্তদন্তিনো | যে তৃণ সহজে ছিন্ন হয় সেই তৃণের রজ্জুতেই মত্তহস্তী বাঁধা যায়; একতাই বল। |
তৃষ্ণা এগোয় না জল এগোয়? | অভিলাষের গরজ বেশি, অভলাষিতের নয়; সুতরাং তৃষ্ণাই এগুবে জল নয়; অন্বেষণ না করলে কাম্য বস্তু মুখের কাছে এগিয়ে আসবে না। |
তৃষ্ণাবধিং কো গতঃ | তৃষ্ণার শেষ প্রান্তে কে যেতে পেরেছে? আশার কোন শেষ নাই। |
তৃষ্ণার অন্ত নেই | আশার কোন শেষ নাই; একটা মেটে তো অন্য একটা এসে উপস্থিত হয়। |
তৃষ্ণৈকা তরুণায়তে | সর্বাঙ্গই জীর্ণ হয়ে আসে, কেবল বাসনাই চিরনতুন থাকে। |
তেজসাং হি ন বয়ঃ সমীক্ষতে | তেজস্বী পুরুষের বয়স বিবেচিত হয় না। |
তেন তক্তেন ভুঞ্জীথা। মা গৃধঃ কস্যস্বিদ্ ধনম্॥ (উপনিষদ) | ত্যাগের মধ্য দিয়ে ভোগ করবে; কারও ধনে লোভ করো না। |
তেল কম ভাজা মচ মচ | আয়োজন কম প্রত্যাশা বেশী। |
তেল, তামাক, ময়দা, যত ডলো/রগরাও ফয়দা | এই তিনটি দ্রব্য ডলাই মলাই করলে ফল ভাল হয়, বেশী উপাকারী হয়। |
তেল দাও, সিঁদুর দাও, ভবি ভোলবার নয় | নাছোড়বান্দা; যতই তাকে খোসামোদ, তোষামোদ করা হোক-না-কেন, যতই তাকে প্রলোভন দেখানো-হোক-না-কেন সে প্রলুব্ধ হওয়ার নয়। |
তেলাপোকা আবার পাখি, ভেরাণ্ডা আবার গাছ | তুচ্ছের প্রতি তাচ্ছিল্য; উভয়ই নগণ্য, পাতে পড়ার মত নয়। |
তেলা মাথায় তেল দেওয়া | যার আছে তাকে আরো দেওয়া; বঞ্চিতকে বাদ দিয়ে সুবিধাপ্রাপ্তকে পুনরায় আনুকুল্য দেখানো। |
তেলা মাথায় ঢালো তেল, রুখু/শুখনো মাথায় ভাঙ্গো বেল | যার আছে তাকে আরো দেওয়া এবং যার নেই তার অভাব পূরণ দূরে থাক আরো কষ্ট দেওয়া; সবলের উমেদারী করা এবং দুর্বলের ওপর অত্যাচার করা মানুষের সহজাত প্রকৃতি; সমতুল্য- 'ধনীর মাথায় ধর ছাতি, নির্ধনেরে মার লাথি'; 'যে খেয়েছে সাত বার, তার জন্য ভাত বাড়ো, যে খায় নি একবার, তার জন্য চাল ঝাড়ো'; |
তেলে জলে খাপ/মিশ খায় না | বিষম মিলন স্বাভাবিক নয়। |
তেলেজলেই মানুষের শরীর। | মানুষমাত্রই অনুভূতিপ্রবণ। |
তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠা | হঠাৎ উত্তেজিত হওয়া। |
তেহি নো দিবসা গতাঃ | আনন্দ ও সুখের দিনগুলি চলে গেছে। |
তৈয়ারী খানা ছোড় মৎ- হিন্দী প্রবাদ | উপস্থিত অন্ন ত্যাগ করতে নেই। |
তোমার পিঠে তখন একটি লোক উঠবে যখন তুমি পিঠ নীচু করবে- আরবী প্রবাদ | দুর্বলতা দেখিও না লোকে পেয়ে বসবে। |
তোমার পীর সিন্নি খেয়েছে | তোমার মনস্কামনা পূর্ণ হয়েছে। |
তোমার ভাবনা অনুসারে তোমার জীবন গড়ে ওঠে- কনফুসিয়াস | তুমি যেমন হবে তোমার জীবনও তেমনি হবে। |
তোমার রাগে অন্য পুড়বে না, তুমি নিজে পুড়বে- জাপানী প্রবাদ | রাগে শরীর নষ্ট হয়। |
তোমার সামনে খাড়া ছাগলকে ভয় করো, পিছনে খাড়া ঘোড়াকে ভয় করো, আর চারিদিকে খাড়া বোকাগুলিকে ভয় করো- ইহুদী প্রবাদ | একবার বোকার পাল্লায় পড়লে প্রাণান্তকর অবস্থা হবে। |
তোমারে দেখিয়া দুঃখে মোর বুক ফাটে তুমি খাও ভাঁড়ে জল আমি খাই ঘাটে | তোমার কষ্ট দেখে আমার কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কি করবো তোমার থেকে আমার অবস্থা আরও শোচনীয়। |
তোমারে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে | সকলের অগোচরে বৃদ্ধি। |
তোর তেল আঁচলে ধর আমার তেল বোতলে ভর | স্বার্থপরব্যক্তি নিজের স্বার্থ আগে দেখে। |
তোর পায়ে গড়, না তোর কাজের পায়ে গড় | কাজের জন্যই ব্যাক্তিকে খোসামোদ করা হচ্ছে। |
তোর লেগে মরি না, তোর গুণের লেগে মরি | ব্যক্তি নয় ব্যক্তির গুণকে প্রশংসা করা হচ্ছে। |
তোর শিল, তোর নোড়া, তোরই ভাঙি দাঁতের গোড়া | শত্রুর অস্ত্রে শত্রু নিধন; তোমার যুক্তিতে তোমাকেই কাৎ করবো; তোমার পথে চলে তোমাকেই নাশ করবো ইত্যাদি। |
তৈরী খাবার ছেড়ো না // তৈয়ারী খানা ছোড় মৎ | খাবার থালা ছেড়ে উঠা উচিৎ নয়। |
ত্যজ দুর্জন সংসর্গং ভজ সাধুসমাগমম্। কুরু পূণ্যমহোরাত্রং স্মর নিত্যমনিত্যতাম॥ (চাণক্য) | দুর্জন ব্যক্তির সঙ্গ ছাড়ো; সজ্জন ব্যক্তির সঙ্গ ধর; পূণ্যের কাজ কর; সকল নিত্য ও অনিত্য স্মরণ কর। |
ত্যজেদেকং কুলস্যার্থে গ্রামস্যার্থে কুলং ত্যজেৎ। গ্রামং জন পদস্যার্থে আত্মার্থে পৃথিবীন্ত্যজেৎ।। (চাণক্য) | কুল রক্ষার জন্য একজনকে ত্যাগ করা চলে, গ্রাম রক্ষার ন্য কুল ত্যাগ করা চলে, দেশ রক্ষার জন্য একটি গ্রাম ত্যাগ করা চলে আর নিজেকে রক্ষার জন্য (সমগ্র) পৃথিবী ত্যাগ করা চলে। |
ত্রাতা মধুসূদন | বিপদ থেকে রক্ষাকারী শ্রীকৃষ্ণ। |
ত্রাহি মধুসূদন | বিপদ থেকে বাঁচতে ঈশ্বরের শরণাপন্ন হওয়া |
ত্রিশঙ্কু অবস্থা১ | দ্বিধা-দ্বন্দ্বে মনস্থির করতে অপারগ; সমতুল্য- 'কিংকর্তব্যবিমূঢ়'। |
ত্রিশঙ্কু অবস্থা২ | দুই দলের গোলমালে কোন পক্ষে না যাওয়া; সমতুল্য-'বেড়ার ওপর বসে'। |
ত্বয়া হৃষীকেশ হৃদিস্থিতেন যথা নিযুক্তোহস্মি তথ করোমি | হৃষীকেশ তুমি হৃদয়ে থেকে যেভাবে আমাকে চালাচ্ছো আমি সেইভাবে চলছি; (মূলশ্লোক- 'জানামি ধর্মং ন চ মে প্রবৃত্তি...') |
থ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
থলি ভর্তি হওয়ার আগে মুখ বাঁধো | সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রতি ইঙ্গিত। |
থলির বিড়াল বাইরে এলো | সত্য প্রকাশিত। |
থলির মধ্যে হাতি পোড়া | অসাধ্যসাধনের প্রয়াস। |
থাক মান, যাক প্রাণ | অসম্মানিত হওয়ার আগে মৃত্যু শ্রেয়; মাথা উঁচু রাখার প্রতিজ্ঞা; ইজ্জৎ সবার আগে। |
থাকে যদি চুড়ো বাঁশি, মিলবে রাধা হেন কত দাসী | কিছু পেতে হলে কিছু থাকতে হয়; গুণ থাকলে সব কার্যসিদ্ধি হয়। |
থাকরে কুকুর আমার আশে, ভাত দেবো তোরে ভাদ্রমাসে | অনির্দিষ্ট কালের জন্য কাউকে আশা দিয়ে রাখা। |
থাকলে তালৈয়ের বাপের শ্রাদ্ধ হয়, না থাকলে নিজের বাপের শ্রাদ্ধ হয় না | টাকা থাকলে ইচ্ছামত নানাভাবে খরচ করা যায়; টাকা না থাকলে কিছুই করা যায় না। |
থাকলে সোনার মান হয় না, হারালেই সোনার মান | সহজলভ্য বস্তুর কদর নেই। |
থাকে যদি চূড়ো বাঁশি মিলবে রাধা হেন দাসী | গুণ থাকলে কার্যসিদ্ধি হবেই। |
থিয়ে তল যাবে তবু নুয়ে ডুব দেবে না | মরবে তবু হীনতা স্বীকার করবে না; সমতুল্য-'ভাঙবে তবু মচকাবে না'। |
থুতু দিয়ে ছাতু গোলা/মলা | অসম্ভব কাজ করার চেষ্টা। |
থোঁতা মুখ ভোঁতা হওয়া১ | উপযুক্ত শাস্তি পাওয়া। |
থোঁতা মুখ ভোঁতা হওয়২ | দর্পচূর্ণ হওয়া; বড় মুখ ছোট হওয়া। |
থোড়-বড়ি-খাড়া, খাড়া-বড়ি-থোড় | বৈচিত্রহীন, একঘেয়ে ভাব। |
দ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
দই খাবে মেধো, কড়ি/দাম দেবে সেধো | চরম বিশৃঙ্খলা; একজনের পরিশ্রমের ফল অন্যে ভোগ করে। |
দই, দুধ করব ভোগ, ওষুধ খেয়ে সারব রোগ | সুখ, দুখ একসাথে নিয়েই চলার পক্ষে ওকালতি। |
দক্ষযজ্ঞ ব্যাপার | মহতী অনুষ্ঠান বিরাট বাধার সন্নুখীন হয়ে লণ্ডভণ্ড। |
দক্ষিণদুয়ারি ঘরের রাজা পূর্বদুয়ারি তার প্রজা;পশ্চিম দুয়ারির খাজনা নাই উত্তরদুয়ারির মুখে ছাই (খনা) | দক্ষিণদুয়ারি ঘর সর্বোত্তম; পূর্বদুয়ারি ঘর বেশ ভাল; পশ্চিমদুয়ারি ঘর মন্দের ভাল; উত্তরদুয়ারি ঘর ছ্যাঃ ছ্যাঃ। |
দগ্ধ শিশু আগুন দেখলে ভয় পায়- ইংরাজী প্রবাদ | অভিজ্ঞতা সতর্ক হতে শেখায়; পূর্বে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকে; যে একবার ঠেকেছে সে দ্বিতীয়বার সেই কাজে এগোয় না; সমতুল্য- 'গরম জলে ছ্যাঁকা খাওয়া কুকুর জল দেখলে ভয় পায়', 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়', 'চূন খেয়ে গাল পোড়ে, দই দেখলে ভয় করে', 'নেড়া বেলতলায় একবার' ইত্যাদি |
দণ্ডেন গোগর্দভৌ | দণ্ডের আঘাতে গরু এবং গাধাকে শাসন করা যায়; (মূলশ্লোক- শক্যো বাররিতুং...') |
দধির অগ্র ঘোলের শেষ | খেতে অতি সুস্বাদু হয়। |
দয়া করে দেয় নূন, ভাত মারে দশগুণ | একটু সুখ পেলে আরও সুখ পেতে চায়; খেতে পেলে শুতে চায়। |
দয়ার পর ধর্ম নাই, হিংসার পর পাপ নাই | অর্থ স্পষ্ট; সমতুল্য- 'দয়া পরমো ধর্ম'। |
দরকার পড়লে খোঁড়াও লাফায় | প্রয়োজন হলে অকর্মাও কাজে ঝাঁপায়; সমতুল্য- 'গরজ বড় বালাই'; গরজে গঙ্গাস্নান'। |
দরজা খোলা পেলে সাধুও চোর হয় | প্রলোভন এড়ানো দুস্কর; সাধুরাও রিপুর অধীন। |
দরিদ্র খোঁজে অন্ন, ধনী খোঁজে ক্ষুধা- হিন্দি প্রবাদ | অভাববোধের কি বৈচিত্র! সম্পদ বণ্টনের বৈষম্যের প্রতি তীব্র বক্রোক্তি। |
দরিদ্রস্য গুণাঃ সর্বে ভস্মাচ্ছাদিতবহ্নিবৎ। অন্নচিন্তা চমৎকারা কাতরে কবিতা কুত।।- কালিদাস | দারিদ্রের গুণসমূহ ভস্মাচ্ছাদিত বিহ্নির ন্যায় থাকে অর্থাৎ স্ফুরিত হয় না; অনুচিন্তা চমৎকারা; সেই চিন্তায় যে কাতর তার কবিতা শক্তি কিভাবে বিকশিত হবে? |
দর্দ্দূরা যত্র বক্তারস্তত্র মৌনং হি শোভনম | ভেকেরা যেখানে মকমক করে অর্থাৎ মূর্খেরা যেখানে কথা বলে সেখান চুপ করে থাকাই শোভন। |
দর্পণে মুখ দেখা | অবিকল প্রতিবিম্ব; লোকের সাথে যেমন ব্যবহার করবে তেমন ব্যবহার ফেরৎ পাবে; ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হয়। |
দল(জলজ তৃণস্তূপ) ভাঙলে যে, কৈ খাবে সে | ন্যায্যের অধিকার; যে পরিশ্রম করেছে সে ফলভোগ করবে। |
দশচক্রে ভগবান ভুত | অনেক চেষ্টায় সত্যকে মিথ্যা বানানো; নানা চক্রান্তে সত্য মিথ্যায় পরিণত হয়; কারো বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হল্ সে যেমনি হোক, তাকে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়; সমতুল্য- 'ভগবান ভূতানাং গতঃ। |
দশজনের ঘর খোদায় রক্ষা কর | সংখ্যাধিক্যে বিশৃঙ্খলা উৎপন্ন হয়। |
দশদিন চোরের একদিন গৃহীর/সাধুর | কুকর্মের ফল একদিন ভুগতেই হয়। |
দশপুত্রসম কন্যা যদি সুপাত্রে পড়ে | সুপাত্রে পড়া কন্যা একাই দশপুত্রের সমান কাজ করে। |
দশমুখে ধর্ম | দশজন যা উচিতকর্ম বলে মানে সেটাই ধর্ম। |
দশ যেখানে ধর্ম সেখানে | দশজন মিলে কাজ করলে সেটা অন্যায় হয় না। |
দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ | সকলে মিলেমিশে কাজ করে ব্যর্থ হলেও তাতে লজ্জা নেই; দশজনে পরামর্শমত কাজ করা উচিৎ; সমতুল্য- 'একতাই বল'। |
দশে লাগে ভূত ভাগে | দশজনে মিলে কাজ করলে অতি দুঃসাধ্য কাজও সুসাধ্য মনে হয়। |
দশে যারে বলে ছি, তার প্রাণে কাজ কি? | সকলে যার নিন্দা করে তার জীবনধারণের মূল্য নেই। |
দশের মুখে জয়, দশের মুখে ক্ষয় | দশজন প্রশংসা করলে নিন্দিতও যশস্বী হয়; আবার দশজন নিন্দা করলে গুণীও নিন্দিত হয়; ভালো না হলেও দশজনের কথা মেনে চলা উচিৎ। |
দশের লড়ি/ লাঠি একের বোঝা | কোনো কাজ একার পক্ষে করা কঠিন, কিন্তু দশজনের পক্ষে খুব সহজ; দশজনে মিলে কোন শ্রমসাধ্য কাজ সহজে সম্পন্ন করা যায়; সমতুল্য- 'ভাগাভাগি করলে সমস্যা অর্ধেক হয়'। |
দস্তানা পড়া বিড়াল ইঁদুর ধরতে পারে না | ফিটফাট কাপুড়েবাবু কাজের লোক হয় না। |
দাঁড়ালে পোয়া, বসলে ক্রোশ, পথ বলে মোর কিসের দোষ? | পথ চলতে চলতে দাঁড়িয়ে গেলে কিছুটা এবং বসে পড়লে বেশ কিছুটা পথের ফেরে পড়ে সময় নষ্ট হয়; কাজ একাগ্র মনেই করা উচিৎ; সমতুল্য- ডাকলে ডাক, বসলে ক্রোশ, পথ বলে মোর কিসের দোষ |
দাঁড়িকে মাঝি করা, মরা গাঙে ডুবে মরা | অনভ্যস্ত লোককে কাজের দায়িত্ব দিলে সে কাজ পণ্ড হয়। |
দাঁত আর ভাই বিকল হলে মন্দ | দাঁত যতদন না নড়ে ততদিন উপকারী নড়লেই খতরনক; ভাই যতদিন ভালোবাসে ততদিন সব ভাল; একবার বিগড়ালেই মহাশত্রু। |
দাঁত গেল তো আঁত গেল | ফোকলা দাঁতে উদরপূর্তির সুখ নাই। |
দাঁত জিহবা সম্পর্ক | মন্দ-ভালোর সম্পর্ক; দাঁত অসুস্থ হলে জিহবা পাশে দাঁড়ায়; দাঁত কিন্তু সুযোগ পেলে জিহবায় কামড় মারে। |
দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা জানে/বোঝে না১ | সময়ে সুযোগের সদব্যবহার করে না; সময়ের কাজ সময়ে করে না। |
দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা জানে/বোঝে না২ | হিতকারীর মঙ্গল প্রয়াস সময়ে উপলব্ধি করে না। |
দাঁত দেখি তোর বয়স কত | দাঁত দেখে গরুর বয়স নির্ণয় করা হয়; কোন ব্যক্তির বয়স জানতে কৌতুকে এই বাক্য ব্যবহার করা হয়। |
দাঁত নড়লে পড়াই ভালো | কারো সাথে মতদ্বৈধতা হলে তার থেকে দূরে সরে থাকা ভালো। |
দাঁতে কুটো করা/কাটা | অতি বিনীত হওয়া; হীনভাবে বশ্যতা স্বীকার করা। |
দাঁতে দড়ি দিয়ে পড়ে থাকা | অনাহারে পড়ে থাকা; অনাহারে পড়ে থাকলে দাঁত নাড়াতে হয় না। |
দাওয়া মাড়া যতদিন, বাপ খুড়ো ততদিন | এমন অনেক লোক আছে, যারা সুবিধা পেলেই খাতির করে; সমতুল্য- 'সুদিনের বন্ধু'। |
দা-কুমড়া সম্পর্ক | ছেদ্য-ছেদক সম্পর্ক, ভীষণ শত্রুভাবাপন্ন ব্যক্তিদ্বয়। |
দাতাকর্ণ | সু-অর্থে- অতি দানশীল ব্যক্তি; কু-অর্থে- মাত্রাতিরিক্ত দানশীল ব্যক্তি- ব্যঙ্গোক্তি। |
দাতা দান করে কৃপণের মন পোড়ে // দাতা দান করে বখিলের মুখ শুকায় // প্রবাদ দাতা দান দেয় ভাণ্ডারীকা পেট পিরায়-হিন্দি প্রবাদ | বদান্যদাতা দান করে, অর্থের অপচয় দেখে সঙ্কীর্ণমনা তাতে কষ্ট পায় এবং বাধা দিতে চেষ্টা করে। |
দাতার চেয়ে বখিল ভালো ত্বরিতে জবাব দেয় | দাতা দেব বলে আশ্বাস দে্য, পরে দেয় না; কৃপণ সোজাসুজি না বলে দেয়। |
দাতার নারকেল বকিলের বাঁশ কমে না বাড়ে বারোমাস | নারকেল যট পাড়বে তত ফল ফলবে; দাতা নারকেল গাছ বসালে বহুলোক তার ভাগ পায়; বাঁশগাছ যত না-কাটবে তত বৃদ্ধি পাবে; কৃপণ বাঁশগাছ সহজে কাটে না; ফল তার আয় বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। |
দাদ ভালো করতে কুষ্ঠকুঁড়ি হ'ল | সামান্য বিষয়ের প্রতিকার করতে ভয়ানক বিপদ দেকে আনা। |
দাদা কানা, ভাই চোখে দেখে না | দু'জনেই সমান অপদার্থ। |
দাদা বলেছে চষতে, তাই চষতেই আছি | কারো নির্দেশে ভালমন্দ বিচার না করে খালি কাজ করে যাওয়া। |
দাদা হজম | গাঁজাখুরি/খোশগল্প; (উৎস- পাতিলেবুর রস খেলে বদহজম দূর হয়; এক গাঁজাখোরের কথা অনুসারে তার দাদা পাতিলেবুর রস খেয়ে রাত্রে শুতে যায়; সকাল বেলা দেখা যায় বিছানায় জামাকাপড় পড়ে আছে, দাদা নেই; সে বলে- দাদা হজম হয়ে গেছে। |
দাদারও দাদা আছে | কেউই অজেয় নয়; তিমি থাকলে তিমিঙ্গিল আছে; তিমিঙ্গিল থাকলে তিমিঙ্গিলগিল আছে। |
দান যেমন দক্ষিণা তেমন | কাজের উপযুক্ত পারিশ্রমিক হওইয়া উচিত। |
দানে বিদ্যা বর্ধিত হয়, দানে ধন ক্ষয় হয় | অর্থ স্পষ্ট; জ্ঞানের তুলনা হয় না। |
দামাল সদাই সামাল | শিশুকে সর্বদা সাবধানে রাখা উচিত (যে শিশু অল্পঅল্প হাঁটে তাকে দামাল ছেলে বলে।) |
দামু ঘোষের ছেলে শিশু পাল | অসঙ্গতির উদাহরণ, ঘোষের ব্যাটা পাল হতে পারে না; উৎসকাহিনী- চন্দ্রবংশীয় চেদীরাজ দমঘোষের পুত্র শিশুপাল) |
দাম্ভিক আর মিথ্যাবাদী পরস্পর তুতোভাই- চীনা প্রবাদ | বদগুণের আত্মীয়তা। |
দায় মোদ্দায় রাজি, কি করবেন কাজী | বাদী বিবাদী এক হয়ে গেলে বিচারকের আর কছু করার থাকে না। |
দা’য়ে কাটা কুমড়া যেন | বলিপ্রদত্ত কুমড়া; এই কুমড়ায় রন্ধন হয় না; অকর্মণ্য ব্যক্তি। |
দা’য়ে বালি, কুড়ুলে শিল, ভালমানুষকে ভালকথা, বজ্জাতকে কিল | শান দিতে দা'এর চাই বালি, কুড়ালের চাই শিল; ভালমানুষ মিষ্টি কথায় তৃপ্ত হয়, আর বজ্জাতকে উত্তমমধ্যম দিলে সে শান্ত হয়;যার যেটা প্রয়োজন তাকে সেটাই দিতে হবে। |
দায়ে পড়লে বাপ বলে | বিপদে পড়লে পায়ে পড়ে; বিপদ কেটে গেলেই আর মনে রাখে না; সমতুল্য- 'ঠেকায় পড়লে ঠাকুরদাদি নইলে তার নাকে পাঁদি'। |
দায়ে পড়ে দা‘ঠাকুর // দায়ে পড়লে ল্যাংড়াও লাফায় // দায়ে পড়লে বামুন শালগ্রামের পৈতা/সোনা বেচেও খায় | দায়ে পড়লে ন্যায়-অন্যায় বোধ থাকে না; সমতুল্য- 'গরজ বড় বালাই'। |
দায়ে বালি কড়ালে শিল | বালি দিয়ে কাটারীর শাণ হয়; শিলা দিয়ে কুড়ালের শাণ হয়। |
দারা-পুত্র-পরিবার কেউ নয় আপনার // দারা-পুত্র-পরিবার তুমি কার কে তোমার | সংসার মায়াময়; কেউ আপনার নয়; অনিত্য সংসারে কেউ কারো সঙ্গে আসেনি কারো সঙ্গে যাবে না। |
দারিদ্র্যদোষো গুণরাশিনাশী | দারিদ্রদোষে গুণীর সব গুণ নষ্ট হয়; (মূলশ্লোক- ' একো হি দোষো গুণসন্নিপাতে...') |
দারিদ্রদোষেণ করোতি পাপম | দারিদ্রের কারণে লোকে পাপ কাজ করে থাকে। |
দারুভূত জগন্নাথ/নারায়ণ/মুরারি | জগন্নাথ নানাকারণে মনোকষ্টে কাষ্ঠরূপ হয়েছেন; সংসারের নানাচিন্তায় মানুষ কাষ্ঠবৎ হয়। |
দাল মে কুছ কালা হৈ- হিন্দি প্রবাদ | ভিতরে নিশ্চই কিছু গোলমান আছে; অজ্ঞাতসারে কাজে কিছু ভুল থেকে গেছে; সন্দেহজনক ঘটনা ইত্যাদি। |
দিও কিঞ্চিৎ না কোরো বঞ্চিৎ | যাচককে কিছু দিও, একেবারে বঞ্চিৎ করো না। |
দিন আনে দিন খায় | দিনমজুরি করে সংসারযাত্রা নির্বাহ করে। |
দিন কাটে তো রাত কাটে না১- | অতিকষ্টে দিন কাটানোর অবস্থা |
দিন কাটে তো রাত কাটে না২ | অসহ্য মানসিক যন্ত্রণার অনুভূতি; রাতের একাকীত্বে অনুভূতিটা আরো প্রকট হয়; মুহূর্তগুলি যেন কাটতে চায় না। |
দিনগত পাপক্ষয় | গতানুগতিকভাবে প্রতিদিনের কাজ করে সময় অতিবাহন; মনযোগ না দিয়ে কোন কাজ দায়সারাভাবে সম্পাদন। |
দিন থাকতে বাঁধে আল তবে খায় নানা শাল | আগে থাকতে জমিতে জল বেঁধে রাখলে নানা ধরণের শালি ধান উৎপন্ন হয়; সময়ের কাজ সময়ে করতে হয়। |
দিন গেল আলে ডালে রাত হ'লে চেরাগ/প্রদীপ জ্বালে | সারাদিন অলসভাবে কাটিয়ে রাতের বেলায় আলো জ্বেলে কজ করতে বসে; সময়ে কাজ সম্পন্ন না করে অসময়ে সম্পন্ন করা। |
দিনদুপুরে ডাকাতি/দিনে ডাকাতি১ | নির্লজ্জ প্রতারণা ও মিথ্যাভাষণ। |
দিনদুপুরে ডাকাতি/দিনে ডাকাতি২ | অত্যন্ত দুঃসাহসিক কাজ। |
দিনদুপুরে ডাকাতি/দিনে ডাকাতি৩ | জ্ঞাতসারে/লোকচক্ষুর সামনে/প্রকাশ্যদিবালোকে অপরের সম্পত্তি আত্মসাৎ করা। |
দিন যাবে, রবে না | সুখেই হোক আর দুঃখেই হোক, সম্পদেই হোক আর বিপদেই হোক দিন বয়ে যায়, কারো জন্য রয় না। |
দিন যায়, কথা থাকে | মহার্ঘবচনের আবেদন চিরকালীন; কাউকে মর্মভেদী কথা বললে সেও চিরকাল সেই কথা মনে রাখে। |
দিন যায় তো ক্ষণ যায় না | অপার মানসিক যন্ত্রণার অভিব্যক্তি; ভাবী কোন বিষয়ের জন্য উৎকণ্ঠা থাকলে দিনগুলি কোনমতে কেটে যায়, কিন্তু নির্দিষ্ট উৎকণ্ঠার মুহূর্ত যত এগিয়ে আসে সেই মুহূর্তগুলি যেন কাটতে চায় না। |
দিনকে রাত করা, রাতকে দিন করা | অত্যন্ত বাড়িয়ে বলা; মাত্রাহীনভাবে মিথ্যাকথা বলা। |
দিনে কেন সিঁধ? গরজ বড় বালাই | অভাবগ্রস্ত লোকের কাজের সময় অসময় নেই। অর্থের প্রয়োজনে অসময়েও উপার্জন করে। |
দিনে খাওয়ার পর কিছুক্ষণ বস; রাতে খাওয়ার পর অনেক্ষণ হাঁটো | স্বাস্থ্য বজায় রাখতে বৈদ্যের বিধান। |
দিনে ডাকাতি | দিনদুপুরে ডাকাতির অনুরূপ |
দিনে দেখে তারা | কোন অসম্ভব ঘটনার সাথে তুলনা করতে প্রবাদটি বলা হয়, |
দিনে বাতি যার ঘরে, তার ভিটায় ঘুঘু চরে | অবিবেচকের মত কাজ করলে দুর্দশায় পড়তে হয়। |
দিনে রোদ রাতে জল দিন দিন বাড়ে ঘানের বোল- খনা | দিনে রোদ এবং রাতে বৃষ্টি হলে ধানগাছ খুব সবল হওয়। |
দিনের পরিকল্পনা সকালেই হয়- চীনা প্রবাদ | প্রতিটি সুষ্টকাজের প্রাক-পরিকল্পনা থাকে। |
দিনের বেলায় মোমবাতি জ্বালানো | অর্থের অপব্যয় করা; সমতুল্য- 'যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি আশি গৃহে তার দেখিবে না আড় নিশীথে প্রদীপ ভাতি'; 'দুইপ্রান্তে মোমবাতি জ্বালানো'। |
দিল্লিকা লাড্ডু যো খায়া সো পস্তায়া, যো ন-খায়া সো ভি পস্তায়া- হিন্দি প্রবাদ | এমন আজব মিঠাই যে, যে খেয়েছে সেই মজেছে; যে খায় নি সেও মজেছে; আসলে মুঘল আমলে দিল্লীর জানানা বাজারে বিক্রীত সুন্দরী রমণীদের দিল্লিকা লাড্ডু বলা হ'ত; তার থেকে প্রবাদটির উতপত্তি হয়েছে। |
দীয়তাং ভুজ্যতাম্ | দিতে থাকো; খেতে থাকো; বিরাট আয়োজনের বাড়ীতে ভূরিভোজনসম্পর্কিত উক্তি। |
দীওয়ারো কে ভি কান হোতেঁ হৈ-হিন্দি প্রবাদ | গোপন কথা গোপন থাকে না; সমতূল্য- দেওয়ালেরও কান আছে'। |
দীর্ঘরাত্রিও অবসান আছে | কোন দুঃখই চিরস্থায়ী নয়; মেঘ দেখে তুই করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে। |
দীর্ঘসূত্রতা সময়ের তস্কর | দীর্ঘসূত্রতার কারণে অযথা সময় নষ্ট হয়। |
দুই অসতের মধ্যে একজনকে পছন্দ করা সঠিক নির্বাচন নয় (বিরুদ্ধ উক্তি আছে) | অসৎসঙ্গ সর্বোতভাবে পরিত্যজ্য। |
দুই অসতের মধ্যে কম ক্ষতিকরকে পছন্দ কর (বিরুদ্ধ উক্তি) | নির্বাচন যদি করতেই হয় তবে কম ক্ষতিকরই গ্রহণযোগ্য। |
দুই নৌকায় পা১ | দুকুল রাখার অপচেষ্টা, যা কখনো সম্ভব হয় না, পরন্তু বিপদে পড়তে হয়; ধান্ধাবাজি; সমতুল্য- 'শ্যাম রাখি বা কুল রাখি'। |
দুই নৌকায় পা২ | দুটি পরস্পরবিরোধী কাজ একইসাথে সম্পন্ন করার প্রয়াস; সমতুল্য- 'এক পা জলে এক পা স্থলে'। |
দুই নৌকায় পা৩ | দ্বিধা-দ্বন্দ্বে মনস্থির করতে অপারগ; সমতুল্য- 'কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা'। |
দুইপ্রান্তে মোমবাতি জ্বালানো | অর্থের অপব্যয় করা; সমতুল্য- 'দিনের বেলায় মোমবাতি জ্বালানো'। |
দুই হাঁড়ি একত্র থাকলেই ঠোকাঠুকি হবে | দ্বন্দ্ব এড়ানো যায় না; ভাইভাই ঠাঁইঠাঁই। |
‘দুইয়ে দুইয়ে চার’-এর মতই সহজ | অতি সহজ ও সরল। |
দুই সতীনের ঘরকন্না ঘরের গিন্নি ভাত পান না | পরস্পরের আড়িতে রন্ধন বন্ধ। সুতরাং কারো ভাগ্যে খাবার জোটে না। |
দুই হাঁড়ি একত্র থাকলেই ঠোকাঠুকি লাগে | একঘরে দুই জন ব্যক্তি থাকলে মাঝে মাঝে একটি আধটু ঝগড়া হয়। |
দুঃখবিনা সুখ হয় কি মহীতে // দুঃখবিনা সুখ হয় না | সুখ-দুঃখ অবমিশ্র হয় না; সুখের আড়ালে দুঃখ থাকে। |
দুঃখযন্ত্রণা থেকে জীবনের প্রকৃত শিক্ষা পাওয়া যায় | জীবানযন্ত্রণা আমাদের শেখায়- কিভাবে বাঁচতে হবে। |
দুঃখী যায় সুখীর কাছে, দুঃখ যায় পাছে পাছে | দুঃখ দুঃখীর সঙ্গ ছাড়ে না; দুঃখীর অদৃষ্টে কোথাও সুখ লেখা নেই। |
দুঃখে অনুদ্বিগমনা সুখেচ বিগতস্পৃহ (গীতা) | দুঃখে অনুদ্বিগ্ন এবং সুখে স্পৃহাহীন থাকা। |
দুঃখের অংশীদার থাকলে মন হালকা হয় | দুঃখভার কমাতে পরস্পরের দুঃখের অংশভাগী হওয়া উচিৎ। |
দুঃখের উপর টনকের ঘা | কষ্টের উপর আরো বেশি কষ্ট। |
দুঃখের দিনগুলি খুব লম্বা হয় | দুঃখের দিনগুলি যেন কাটতে চায় না; দুঃখ উপভোগের নয়। |
দুঃখের পর সুখ আসে | দুঃখ-কষ্ট, বিপদাপদ, পাওয়া না-পাওয়া, সফলতা-ব্যর্থতা নিয়েই জীবন; সমতুল্য- 'চক্রবৎ পরিবর্তন্তে সুখানি চ দুখানি চ'; 'মেঘ দেখে তুই করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে' ইত্যাদি। |
দুঃখের ভাত সুখ করে খাওয়া | কষ্টেসৃষ্টে যা উপার্জন হয় তাতেই শান্তিতে থেকে খাওয়া পরা। |
দুঃখের শিয়াল কুকুর কাঁদে | এত দুঃখ যার অন্ত পাওয়া ভার। |
দুঃসংবাদ বাতাসের আগে ছোটে // দুঃসংবাদের ডানা আছে | দুঃসংবাদ দ্রুত ছড়্যয়। |
দুটিগাছ একসাথে থাকে, দুটি পাহাড় একসাথে থাকে না // দুটি বটগাছ পাশাপাশি থাকে না লাখো ঘাস পাশাপাশি থাকে | আমিত্ব/আত্মম্ভরিতা, অন্তরঙ্গতা/সমপ্রীতির পক্ষে বাধাস্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়। |
দু’টাকা ধার দেওয়া থেকে একটাকা দান করা ভাল | ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় বসে থাকতে হয় না; ফিরে না পেলে মন খারাপ; ঋণ দেওয়া ও নেওয়া, দুইই পাপ। |
দুধ কলা দাও যত, সাপের বিষ বাড়ে তত // দুধ-কলা দিয়ে কালসাপ পোষা | সযত্নে মারাত্মক শত্রুকে অজ্ঞতাবশতঃ প্রতিপালন করা; খলকে যতই আদর কর-না-কেন, যতই তার উপকার কর-না-কেন সে তোমার অনিষ্ট করবেই। |
দুধকা জ্বলা মাঠা ফুঁক্ ফুঁক্ পিতা হৈ- হিন্দি প্রবাদ | গরম দুধে যার মুখ পুড়েছে সে ফুঁ দিয়ে ঘোল খায়; অতীত অভিজ্ঞতা থেকে সতর্কতা। |
দুধকে দুধ জলকে জল // দুধকা দুধ পানিকা পানি- হিন্দি প্রবাদ১ | সব ঠিকঠিক নির্ণয় করা |
দুধকে দুধ জলকে জল // দুধকা দুধ পানিকা পানি- হিন্দি প্রবাদ২ | জল মেশানো দুধ দুধেরও কাজ করে, আবার জলেরও কাজ করে। |
দুধকে দুধ জলকে জল // দুধকা দুধ পানিকা পানি- হিন্দি প্রবাদ৩ | কপট লোক যে যেমন তার সাথে তেমন ব্যবহার করে। |
দুধ মরে/মেরে ক্ষীরটুকু | বিষয়ের নির্যাস, সারাংশ |
দুধ রাখলেই পঞ্চামৃত১ | দুধ থেকে ক্ষীর, ঘি, দই, ননী, মাখন ইত্যাদি পাওয়া যায়। |
দুধ রাখলেই পঞ্চামৃত২ | লোককে ভালবাসলে তার কাছ থেকে অনেক উপকার পাওয়া যায়। |
দুধে ভাতে থাকা | সচ্ছল অবস্থায় বা প্রাচুর্যের মধ্যে জীবনযাপন করা |
দুধে ভিজিয়ে রাখলেও নিম কখনও মিষ্টি হয় না | কালো কখনো সাদা হয় না; মন্দ কখনো ভালো হয় না |
দুধের মাছি | সুসময়ের বন্ধু; সুদিনে এসে আত্মীয়তা করে এবং দুঃখের দিনে দূরে সরে যায়। |
দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো | উৎকৃষ্টের পরিবর্তে নিকৃষ্ট দ্রব্যে সন্তুষ্ট থাকা। |
দুধের স্বাদ কি ঘোলে মেটে? | দুধ থেকে ঘোল হলেও ঘোলে দুধের গুণ থাকে না; নকল কখনো আসল হয় না। |
দুনিয়াদারি মুসাফিরি, সিরিফ আনাগোনা/যানা | জীবনমৃত্যুর আসা-যাওয়া খেলা। |
দুরারোহপরিভ্রংশবিনিপাতো হি দারুণ | যাহাতে আরোহণ করা দুস্কর তাহা হইতে ভ্রষ্ট হইয়া পতন নিদারুণ হয়। |
দুর্গা বলে ঝুলে পড় | ভগবানে বিশ্বাস রেখে সাহস করে কাজে নেমে পড়। |
দুর্জনঃ পরিহর্তব্যো বিদ্যয়ালংকৃতোহপি সন্। মণিনা ভূষিতঃ সর্পঃ কিমসৌ ন ভয়ঙ্করঃ॥ (চাণক্য) | দুর্জন ব্যক্তি বিদ্যায় বিভূষিত হলেও তাকে ত্যাগ করা উচিত। কোনো সাপ মণিতে ভূষিত হলেও তা ভয়ঙ্করই থাকে- বিদ্বান দুর্জনের স্বরূপ। |
দুর্জনঃ প্রিয়বাদী চ বৈতদ্বিশ্বাসকারণম্। মধু তিষ্ঠতি জিহ্বাগ্রে হৃদয়ে তু হলাহলম্॥ (চাণক্য) | দুর্জন ব্যক্তি মিষ্টভাষী হলেও তা বিশ্বাসের ব্যাপার নয়। কেননা, তার জিভের ডগায় থাকে মধু- আর অন্তরে থাকে তীব্র বিষ-দুর্জনের স্বরূপ। |
দুর্জনেরে পরিহরি, দূরে থেকে নমঃ করি | দুর্জন ব্যক্তিকে সবসময় ত্যাগ করা উচিৎ; সমতুল্য- দুর্জনঃ পরিহর্তব্যঃ। |
দুর্বলস্য বলং রাজা বালানাং রোদনং বলম্। বলং মূর্খস্য মৌনিত্বং চৌরাণামনৃতং বলম্॥ (চাণক্য) | দুর্বলের রাজাই বল, শিশুর রোদনই বল, মূর্খের নীরব থাকাই বল আর চোরের মিথ্যাশ্রয়ই বল। (কিসে কাহার বল) |
দুর্ভাগ্য অনেক স্থলে সৌভাগ্যের কারণ হয় // দুর্ভাগ্য অনেক স্থলে সৌভাগ্যের মূল | অহিতে বিপরীত বা শাপে বর হয়। |
দুর্লভং প্রাকৃতং বাক্যং দুর্লভঃ ক্ষেমকৃৎ সুতঃ। দুর্লভা সদৃশী ভার্যা দুর্লভঃ স্বজনঃ প্রিয়ঃ॥ (চাণক্য) | যথার্থ বাক্য দুর্লভ, সুখকর পুত্র দুর্লভ, সমানগুণসম্পন্না স্ত্রী দুর্লভ, মঙ্গলকারী আত্মীয়স্বজন দুর্লভ। |
দুর্লভং ভারতে জন্ম মানুষং তত্র দুর্লভম্ | ভারতে জন্ম দুর্লভ, তারমধ্যে আবার মনুষ্যত্ব দুর্লভ। |
দুশমনকে উঁচী পিড়িয়া- হিন্দি প্রবাদ | আত্ম রক্ষার্থে শত্রুকে সর্বদা উচ্চস্থান দেওয়া প্রয়োজন। |
দুশ্চিন্তা ঝামেলায় না ফেললে দুশ্চিন্তার পিছু নিও না | অনাবশ্যক দুশ্চিন্তা করা নেই; চিতায় পোড়ে মড়া; চিন্তায় পোড়ে জ্যান্ত। |
দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল | দুষ্ট সন্তান থাকার থেকে না থাকা ভাল। |
দুষ্টা ভার্যা, শঠং মিত্রং ভৃত্যশ্চোত্তরদায়কঃ। সসর্পে চ গৃহে বাসো মৃত্যুরেব ন সংশয়ঃ॥ (চাণক) | যাঁর স্ত্রী দুশ্চরিত্রা, বন্ধু প্রতারক, ভৃত্য মুখে মুখে উত্তর করে এবং যিনি সর্পযুক্ত গৃহে বাস করেন, তাঁর মৃত্যু অবধারিত, এ ব্যাপারে সংশয় নেই- বিভিন্ন দুষ্ট প্রকৃতির লোকের সাথে সম্পর্ক নয়া রাখার প্রতি উপদেশ। |
দুষ্টের আঠারোগাছি পথ | দুষ্ট লোকেরা নানা ছলছুতো জানে। |
দূর কা ঢোল সুহাবনে- হিন্দি প্রবাদ | দূরের জিনিষ সব সুন্দর মনে হয়। |
দূরতঃ শোভতে মূর্খো লম্বশাটপটাবৃতঃ। তাবৎ শোভতে মূর্খো যাবৎ কিঞ্চিন্ন ভাষতে॥ (চাণক্য) | দীর্ঘ পোশাকপরিচ্ছদভূষিত মূর্খ দূরে শোভা পাচ্ছে; ততক্ষণ সে শোভা পায়, যতক্ষণ না সে কথা বলে- মুর্খের স্বরূপ। |
দূরত্বের মাপকাঠিতে ঘোড়ার শক্তিমত্তা যাচাই হয়; সময়ের মাপকাঠিতে ব্যক্তির নৈতিক চরিত্র যাচাই হয়- চীনা প্রবাদ | বিষয়ভেদে বিচারের মাপকাঠি বদলায়। |
দুরধীতা বিষষং বিদ্যা অজীর্ণে ভোজনং বিষম্। বিষষং গোষ্ঠী দরিদ্রস্য বৃদ্ধস্য তরুণী বিষম্।। (চাণক্য) | যে বিদ্যার যথার্থ তাৎপর্য গৃহীত হয়নি- সে বিদ্যা বিষতুল্য, হজমের গণ্ডগোলে আহার বিষতুল্য, দরিদ্রের বহু সন্তান এবং আত্মীয়স্বজন থাকা বিষতুল্য, বৃদ্ধ লোকের তরুণী স্ত্রী বিষতুল্য। |
দুর সভা নিকট জল, নিকট সভা রসাতল- খনা | চাঁদের সভা দূরে বসলে শীঘ্রই বৃষ্টি হবে জানবে; অপরপক্ষে চাঁদের সভা কাছে বসলে বৃষ্টি হবে না জানবে। |
দূরের কেশ ঘন দেখায় // দূরের জিনিস দেখতে ভাল | দূর থেকে দেখলে পাতলা চুলকেও ঘন মনে হয়; যাকে আমি দূর থেকে চিনি বা জানি সে মন্দ হলেও ভদ্রলোক মনে হয়। |
দূর্বাবনে খটাশই বাঘ | মুর্খের দলে অল্পজ্ঞানী গুরুত্ব পায়; সমতুল্য- আদাড়বনে শিয়াল রাজা', 'বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা', 'বৃক্ষহীন দেশে এড়েণ্ডাই বৃক্ষ', 'ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল' ইত্যাদি। |
দেঁতোর হাসি | আন্তরিকতাবিহীন শুস্কহাসি। |
দেওয়ালের লিখন না যায় খণ্ডন | ভবিষ্যৎ পতনের আভাস; ভাগ্যে যে লেখা আছে তা ঘটবেই। |
দেওয়ালেরও কান আছে | গোপন রাখার শতচেষ্টা হলেও কোন কিছু গোপন থাকে না। |
দেখ্ তোর, না দেখ্ মোর | নজরে না থাকলে পরের দ্রব্য আত্মসাৎ করার ধান্ধাবাজি। |
দেখছি কত দেখব আর, ছুঁচোর গলায় চন্দ্রহার | অযোগ্যের হাতে উৎকৃষ্ট দ্রব্য দেখে খেদোক্তি। |
দেখেছি রূপসাগরে মনের মানুষ কাঁচা সোনা- বাউলগীতি | প্রকৃতপক্ষে সুন্দর" মানুষদের একটা আলাদা জগত |
দেখতে কালো খেতে ভালো | অনেক লোক আছে যারা রূপে কুৎসিত কিন্তু গুণে সুন্দর। |
দেখতে পেলে শুনতে চায় না | অনেকে আছেন যারা শুধু লোকমুখে শুনে তৃপ্ত হয় নয়া। |
দেখবো কত কালে কালে গোঁফ রেখেছে (বুড়া) তোবড়া গালে | অসঙ্গত আচরণ বা বিসদৃশ রুপচর্চার প্রতি বিদ্রুপোক্তি। |
দেখেশুনে আক্কেল গুড়ুম | অসম্ভব ঘটনা দেখে হতভম্ব। |
দেখে শেখে আর এক ঠেকে শেখে | বুদ্ধিমান ঘটনা দেখে তার থেকে শিক্ষা নেয়; নির্বুদ্ধি ঘটনার ফেরে পড়ে তার থেকে শিক্ষা নেয়। |
দেদোর(=দাদ রোগাক্রান্ত) মর্ম দেদোয় জানে | একমাত্র ভুক্তভোগীরাই ব্যথার মর্ম বোঝে; সমতুল্য- 'কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে কভু আশীবিষে দংশেনি যারে'? |
দেনার চেয়ে পাপ নেই | অর্থ স্পষ্ট। |
দেবতার বেলা লীলাখেলা, পাপ লিখেছে মানুষের বেলা | দেবতাদের কেচ্ছা লীলা বলে বর্ণিত হয়; দেবতাদের মত ক্ষমতাশালীরাও অনেক পাপ করে শেষপর্যন্ত পার পেয়ে যায়; যত দোষ শিধু গরীবলোকেদের। |
দেবা ন জানন্তি কুতঃ মনুষ্যাঃ | দেবতারাই যখন জানেন না তখন মানুষ কোথায় লাগে? |
দেবালয়ের পিছনেই শয়তানের আবাস/আস্তানা | আলো ও অন্ধকার, ভালো ও মন্দ পাশাপাশি থাকে। |
দেবালয়ের যত কাছে দেবতা থেকে তত দূরে। | আচার সর্বস্বতার প্রতি ইঙ্গিত; আচার সর্বস্বতায় নিষ্টাভক্তির ছোঁয়া থাকে না। |
দেয় থোয় রাখে মান তার কয় যজমান | যে পুরোহিতকে যথেষ্ঠ দান ধ্যান করে এবং সম্মান প্রদর্শন করে তাকে প্রকৃত যজমান বলে। |
দেরি হলেও সংশোধনের সময় থাকে। | সংশোধনের কোন সময়সীমা নেই। |
দেশগুণে বেশ /দেশ বুঝে বেশ, জমি বুঝে চাষ১ | দেশের প্রথা অনুযায়ী পোশাক পরতে হয়, জমির অবস্থা বুঝে চাষবাস করতে হয়; সমতুল্য- 'যস্মিন দেশে যদাচারঃ'; যখন তুমি রোমে তখন তুমি রোমান'। |
দেশগুণে বেশ /দেশ বুঝে বেশ, জমি বুঝে চাষ২ | দেশপ্রচলিত অনেক নিন্দিত কাজও প্রশংসিত হয়। |
দেশ দেশে কলত্রাণি দেশে দেশে চ বান্ধবাঃ। তন্তু দেশং ন পশ্যামি যত্র ভ্রাতা সহোদরঃ।। (রামায়ণ) | দেশেদেশে পত্নী ও বন্ধু মেলে, কিন্তু এমন দেশ নেই যেখানে সহোদর ভ্রাতা পাওয়া যায়। |
দেহি দেহি পুনঃপুনঃ | আছে কি নেই জানে না কেবল বলে- দাও দাও। |
দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ জন্মায় | কুবংশে সুসন্তান জন্মে; সমতুল্য- 'গোবরগাদায় পদ্মফুল'। |
দৈব ও আকস্মিক ঘটনা অজ্ঞানের উক্তি | কোন ঘটনাই আকস্মিক নয়; প্রতিটি কার্যের পিছনে কারণ থাকে। |
দৈবজ্ঞ যদি ঠিক তবে মাগে কেন ভিখ? | দৈবজ্ঞ যদি ঠিক গণনা করতেই পারে তবে সে ভিক্ষা কেন চায়? আসলে দৈবটৈব বলে কিছু নেই। |
দৈবেন দেয়মিতি কাপুরুষা বদন্তি | কাপুরুষেরা বলে- ভাগ্য থাকলে পাব। |
দৈবি বিচিত্রা গতি | দৈবের গতি অতি বিচিত্র। |
দৈবেন দেয়মিতি কাপুরুষা বদন্তি | 'ভাগ্যে থাকলে পাব'-এ কথা শুধু কাপরুষেরাই বলে। |
দোদেল বান্দা কল্মা চোর, না পায় ভেস্তেহ্ না পায় গোর | সংশয়ী এবং অধার্মিকেরা স্বর্গও পায় না, গোরও পায় না; এদের দুকুল যায়। |
দোয়া গাইয়ের চাঁট সই | যে গরু দুধ দেয় তার লাথি সহ্য করতেই হয়; গরজ বড় বালাই';'গরজে গয়লা ঢেলা বয়'। |
দোষা বাচ্যা গুরুরোপি | গুরুরও যদি কোন দোষ থাকে তবে তা ব্যক্ত করবে। |
দোষ স্বীকার করলে অর্ধেক দোষস্খলন হয় | দোষ স্বীকার করলে আত্মশুদ্ধি হয়; আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে দোষ আংশিক স্খলন হয়। |
দৌড় ছাড়া হাঁটা নাই, বাড়ী যাইয়া দেখে কাম নাই | কোন কাজ না থাকলেও অযথা কাজের জন্য দৌড়ঝাঁপ; লোক দেখানো ব্যস্ততা। |
দ্বাদশ অঙ্গুলি কাঠি, সূর্যমন্ডলে দিয়ে দিঠি; রবি কুড়ি সোমে ষোল, পঞ্চদশ মঙ্গলে ভাল; বুধে এগার, বৃহস্পতি বারো, শুক্র চৌদ্দ, শনি তেরো- খনা | ফাঁকা জায়গায় যেখানে সূর্যকিরণ পড়ে সেখানে বারো আঙ্গুল মাপের একটা কাঠি পুতে দেখতে হবে রোদে কতটা ছায়া পড়েছে। কুড়ি আঙ্গুল হলে রবিবারে, পনেরো আঙ্গুল হলে মঙ্গলবারে, এগার আঙ্গুল হলে বুধবারে, বারো আঙ্গুল হলে বৃহস্পতিবারে, চৌদ্দ আঙ্গুল হলে শুক্রবারে, তের আঙ্গুল হলে শনিবারে যাত্রা করলে ভাল হয়। (যাত্রার শুভক্ষণ) |
দ্বিধায় দ্বিধা বাড়ে | দ্বিধায় পড়লে পরপর ভুল পদক্ষেপ হয়; |
দ্রব্যং মূল্যেণ শুদ্ধতি | মূল্যপ্রদান করলে দ্রব্য শুদ্ধ হয়। |
ধ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ধন, জন, পরিবার, কেউ নয় আপনার | আত্মা ছাড়া আত্মর আপন কেউ নয়; কেউ সঙ্গে আসে নি, কেউ সঙ্গে যাবেও না; সমতুল্য- 'দারা-পুত্র-পরিবার তুমি কার কে তোমার'; 'ভেবে দেখ মন কেউ কারো নয় মিছেই ফেরো ভূমণ্ডলে-ভক্তিগীতি'। |
ধন, জন, যৌবন- জোয়ারের জল কতক্ষণ | অর্থ, আত্মীয় ও যৌবন জোয়ারের জলের মতই ক্ষণস্থায়ী। |
ধন থাকলেই সিঁধের ভয় | অর্থ থাকলেই অর্থ হারাবার ভয় থাকে; সমতুল্য- 'ল্যাংটার নেই বাটপাড়ের ভয়'। |
ধন দিয়ে মন বুঝে, যৌবন দিয়ে আক্কেল বুঝে | টাকাকড়ি দিয়ে মন বুঝে নেয় এবং যৌবন দান করে বিবেচনাবোধ বুঝে নেয়। |
ধন নেই কড়ি নেই নিধিরাম পোদ্দার | টাকাকড়ি না থাকলেও পরের ধনে পোদ্দারি করতে নিধিরাম পোদ্দারদের আটকায় না; অক্ষমের আস্ফালন; সমতুল্য- ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার';
ধান নাই চাল নাই, আন্দিরাম মহাজন। |
ধন পরিবাদও ভাল | ধনী বলে নিন্দিত হলেও মন্দ নয়, কারণ তাতেও ধনশালীর স্বীকৃতি ও ইজ্জৎ মেলে। |
ধন বড় না ধর্ম বড়? | ধন নয়, ধর্মের মাহাত্য অনেক বেশি; ধনী থেকে ধার্মিক অনেক বেশি সম্মানীয়। |
ধনং ক্ষীণং ভবেদ্দানবিদ্যা দানাদ্বিবর্ধতে। অতো মন্যে ধ্রুবং বিদ্যা ধনাদপি গরীয়সী॥ (চাণক্য) | দানে ধন ক্ষয় হয়; দানে বিদ্যা বর্ধিত হয়; অতএব মনে করি বিদ্যা ধন থেকে বড়। |
ধনধান্যপ্রয়োগেষু তথা বিদ্যাগমেষু চ। আহারে ব্যবহারে চ ত্যক্তলজ্জসদা ভবেৎ।। (চাণক্য) | সম্পত্তি এবং শস্য প্রভৃতির ক্রয়-বিক্রয় অথবা এই সব জিনিস ধার দিয়ে সুদের আদান-প্রদানের সময়, বিদ্যার্জনের সময়, খাওয়ার সময় এবং মামলা-মোকদ্দমার সময় সর্বদা লজ্জাশূন্য হওয়া উচিত; এইসব ব্যাপারে লজ্জা করা উচিত নয় |
ধনসোহাগী মরে ক্ষুদের জাউ (ফেনভাত) খাইয়া/খেয়ে | হাড় কৃপণ; ধনের প্রতি মমতাপরায়ণ ব্যক্তি খরচের ভয়ে ভালো খাবারদাবার খেতে পারে না। |
ধনানি জীবিতঞ্চৈব পরার্থে প্রাজ্ঞ উৎসৃজেৎ। সন্নিমিত্তে বরং ত্যাগো বিনাশে নিয়তে সতি॥ (চাণক্য) | জ্ঞানীব্যক্তি, ধন ও জীবন পরের জন্য উৎসর্গ করেন; বিনাশ অবশ্যম্ভাবী সুতরাং সৎকাজে সব ত্যাগ করা বিধেয়। |
ধনিনঃ শ্রোত্রিয়ো রাজা নদী বৈদ্যস্তু পঞ্চ মঃ। পঞ্চ যত্র ন বিদ্যন্তে তত্র বাসং ন কারয়েৎ।। (চাণক্য) | ধনবান ব্যক্তি, বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ, রাজা, নদী এবং পঞ্চমতঃ বৈদ্য (চিকিৎসক)- এই পাঁচজন যে দেশে বাস করেন না সেই দেশে বসবাস করা উচিত নয়। |
ধনীর চিন্তা ধন ধন, নিরানব্বুইয়ের ধাক্কা, যোগীর চিন্তা জগন্নাথ, ফকিরের চিন্তা মক্কা | ভোগীর ভোগবাদী চিন্তা, ত্যাগীর আধ্যাত্মিক চিন্তা, যে যেভাবে জীবনাটা দেখে; যার যাতে অনুরাগ সে সেটাই চিন্ত করে। |
ধনীর মাথায় ধর ছাতি, নির্ধনেরে মার লাথি | সকলেই সবলের সহায়, দুর্বলের কেউ নয়; তেলা মাথায় তেল দিতে কে না চায়; সমতুল্য- 'তেলা মাথায় ঢালো তেল, রুখু/শুখনো মাথায় ভাঙ্গো বেল'; 'যে খেয়েছে সাত বার, তার জন্য ভাত বাড়ো, যে খায় নি একবার, তার জন্য চাল ঝাড়ো' |
ধনুকভাঙা পণ | ভীষণ প্রতিজ্ঞা (উৎসকাহিনী- রাজা জনক পণ করেছিলেন যে ব্যক্তি হরধনুতে গুণ পরাতে পারবে তার সাথে তিনি সীতার বিয়ে দেবেন।) |
ধনে অহঙ্কার নয়, মনে অহঙ্কার১ | ধনের অহঙ্কার আসল অহঙ্কার নয়, মনের অহঙ্কারই হল আসল অহঙ্কার। |
ধনে অহঙ্কার নয়, মনে অহঙ্কার২ | ধনে যে অহঙ্কার জন্মে; আসলে সেটা মনেই জন্মে। |
ধনে সুখ নয়, মনে সুখ | ধনের সুখ ক্ষণস্থায়ী, মনের সুখ চিরস্থায়ী। |
ধন্য রাজার পূণ্য দেশ যদি বর্ষে মাঘের শেষ- খনা | মাঘমাসের শেষে বৃষ্টি হলে প্রচুর শস্য জন্মে; সমতুল্য- 'মাঘের মাটি সারের পাটি' |
ধর্ তক্তা মার্ পেরেক | দায়সারাভাবে দ্রূত কাজ শেষ করার চেষ্টা। |
ধর কাছি তো ধরেই আছি | অনিচ্ছা সহকারে কারো আদেশ পালন করা, কাজে কোন মন নেই। |
ধর মাছ ভাগ আছে | তুমি পরিশ্রম কর, ভাগের বেলায় আমি আছি। |
ধরলে চিঁ চিঁ করে ছাড়লে লম্ফ মারে | ধরা পড়লে কাকুতিমিনতি করে; ছাড়া পেলে দৌরাত্ম্য শুরু করে। |
ধরাকে সরা জ্ঞান করা | অহঙ্কারে মত্ত হয়ে কাউকে গ্রাহ্য না করা। |
ধরি মাছ না ছুঁই পানি | কিছুমাত্র বেগ না পেতে হয় এমন কৌশলে কার্যসিদ্ধি করা; সমতুল্য- 'যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না'। |
ধরে আনতে বললে বেঁধে আনে | বাড়াবাড়ি করে ফেলা; জাহির দেখাতে গিয়ে আদেশের অতিরিক্ত কাজ করে ফেলা। |
ধরে বেঁধে পিরীত, ঘষে মেজে রূপ | কোনটারই পরিণতি সফল হয় না। |
ধরে ভদ্র ঘটানো | জোর জবরদস্তি করে কাউকে দিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভাল কাজ করানো, যেটা হবার নয়। |
ধরেছ তো ছেড়ো না | একবার কাজে হাত দিলে শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছাড়া নেই। |
ধর্মদাসের ধর্মকর্মে ধর্মের কোন নাম নেই | আচারসর্বস্বতার প্রতি ব্যঙ্গোক্তি। |
ধর্মপুত্র যুধিষ্টির১ | সু অর্থে- কোন ব্যক্তি প্রকৃত ধার্মিক হলে যুধিষ্টিরের উদাহরণ টানা হয়। |
ধর্মপুত্র যুধিষ্টির২ | কু অর্থে- কোন ব্যক্তি অতিশয় অধার্মিক হলে ধার্মিকের ভাণ করলে ব্যঙ্গার্থে তাকে ধর্মপুত্র যুধিষ্টির বলা হয়; (অনেকের ধারণা যুধিষ্টির ধর্মের পুত্র, কিন্তু প্রকৃত অর্থে ধার্মিক নন।) |
ধর্মস্য কুটিলা গতিঃ | কর্মের সাথে ধর্মের বিরোধের প্রতি ইঙ্গিত; অসতী হয়েও কুন্তী স্বর্গে গেলেন; অথচ সতী হয়েও সীতা গেলেন পাতালে; অসতী হয়েও কুন্তী সতী আখ্যা পান; অথচ সতী হয়েও সীতা সতী আখ্যা পান না; রাজধর্ম্ম পালন না করেও যুধিষ্টির ধার্মিক আখ্যা পান, অথচ রাজধর্ম্ম পালন করেও দূর্যোধন ধার্মিক আখ্যা পান না; ধর্মের গতি বোঝা ভার। |
ধর্মস্য সূক্ষ্মা গতিঃ১ | ধর্মের গতি অতি সূক্ষ্ম; কিভাবে ধর্ম পরিচালিত হবে এবং কিভাবে তার থেকে বিচার পাওয়া যাবে তা সাধারণের বোধগম্য নয়। |
ধর্মস্য সূক্ষ্মা গতিঃ২ | সূক্ষ্মবিচারে ধর্মের হাত থেকে পাপের নিস্তার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই; যতই লুকাও-না-কেন পাপ প্রকাশিত হবেই; সমতুল্য- 'ধর্মের কল বাতাসে চলে/নড়ে'। |
ধর্মেণ হীনাঃ পশুভিঃ সমানাঃ | অধার্মিক পশুর সমান। |
ধর্মেও আছি, জিরাফেও আছি | একইসাথে অধর্ম করা ও ধর্ম রক্ষা করার ধান্ধাবাজী। |
ধর্মের ঘড়া ভেসে ওঠে, পাপের ঘড়া তল যায় | সৎব্যক্তি বিপদে পড়লেও বিপন্নুক্ত হয়; অসৎব্যক্তি বিপদে পড়লে তার বিনাশ হয়। |
ধর্মের ঢাক আপনি বাজে // ধর্মের কল বাতাসে চলে/নড়ে | ধর্ম এমনই এক কৌশল যে যতই লুকাতে চাও-না-কেন গোপনে অনুষ্ঠিত হলেও পাপ কাজ অপ্রকাশিত থাকে না; সত্য শেষপর্যন্ত উদঘাটিত হয়; সমতুল্য- 'ধর্মস্য সূক্ষ্মা গতিঃ'। |
ধর্মের ঘরে কুটের (কুষ্ঠরোগী) অভাব নাই | মন্দির মসজিদে ভণ্ড ধার্মিক নেই এমন চিন্তা ভ্রান্ত; ধার্মিক সমাজেও কপটতা আছে; সমতুল্য- 'প্রদীপের নীচেই অন্ধকার থাকে'। |
ধর্মের ঘরে পাপ সয় না | যে বংশে চিরকাল ধর্ম রক্ষিত হয়েছে সেই বংশে একটুও পাপ ঢুকলে পাপের ফল সঙ্গে সঙ্গে ফলে যায়। |
ধর্মের ঘড়া ভেসে উঠে, পাপের ঘড়া তলিয়ে যায় | ধর্মের জয়, অধর্মের ক্ষয়। |
ধর্মের জয়, অধর্মের ক্ষয় | সৎ কাজ করলে তার জয় অবশ্যম্ভাবী, অসৎ কাজ করলে তার পতনও অবশ্যম্ভাবী |
ধর্মো রক্ষতি ধার্মিকম্ | ধর্মই ধার্মিককে রক্ষা করেন; ন্যায়বোধের বিচারক ঈশ্বর ধার্মিকের রক্ষাকর্তা। |
ধর্মোহপি জনাতি নরস্য বৃত্তং | ধর্ম মানবচরিত্র বুঝতে পারে। |
ধাইয়ের কাছে কোঁক (পেট) ছাপা | যে ঘরের কথা সব জানে, তার কাছে লুকাবার কিছু নেই বা লুকাবার চেষ্টা বৃথা। |
ধান একগুণ, ঘাস শতগুণ | আগাছার বাড় বেশি; গুণ ও গুণী অল্প হয়; দোষ ও দোষী প্রচুর হয় (তুলনায় ঘাসের চেয়ে ধানের দাম বেশি।) |
ধানকাঠের তক্তা | কোন কাজের উপযুক্ত নয়; অকর্মণ্য ব্যক্তি। |
ধানকাঠের মই বেয়ে চাঁদ পেড়ে আনা | আজগুবি কল্পনা; নির্বোধের ভ্রান্তিবিলাস। |
ধান খায় কাকে, ব্যাঙের পায়ে দড়ি | চরম বিশৃঙ্খলা; একের দোষে অন্যের শাস্তি; সমতুল্য- 'উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে'। |
ধান দিয়ে লেখাপড়া শেখা | সামান্য ব্যয়ে অল্পসল্প বিদ্যালাভ। |
ধান নাই চাল নাই, আন্দিরাম মহাজন | বিফল ব্যবসায়ী, মহাজন না হয়েও মহাজনের মত আচার-আচরণ; অক্ষমের সুখকল্পনা; সমতুল্য- 'ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার'; 'ধন নেই কড়ি নেই নিধিরাম পোদ্দার'। |
ধান ভানতে শিবের গীত | কোন বিশেষ আলোচনায় অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের অবতারণা; কাজের কাজ ফেলে প্রসঙ্গান্তরে চলে যাওয়ার জন্য অযথা সময় নষ্ট এবং প্রকৃত কাজের ক্ষতি করা |
ধানের আগে উড়ি ফুলে | উড়ি নিকৃষ্টতর একপ্রকার ধান; ধানের আগেই জমিতে আপনা-আপনি ফুলে থাকে এবং আপনা-আপনি ঝরে যায়; সংসারে অসার ব্যক্তিদের বাড় বেশি; সমতুল্য- আগাছার বাড় বেশি'। |
ধান্য তার বসুন্ধরা যার | জমি যার ফসল তার; ন্যায়বোধের অধিকার; সমতুল্য- 'তরোয়াল যার জমি তার'; 'লাঠি যার ভৈঁসা তার'। |
ধান্য বৃক্ষ চেনেন না? | যে জেনেশুনে অজ্ঞতা প্রকাশ করে, তার প্রতি ব্যাঙ্গোক্তি। |
ধামাধরা মানুষ | অত্যন্ত খোসামুদে চরিত্রের লোক, যে বক্তার সব কথাতেই সায় দেয়। |
ধার করা জামা কখনও গায়ের মাপের হয় না | যা পায় তাই মেনে নিতে হয়; ভিক্ষার চাল কাঁড়া আর আকাঁড়া। |
ধার করে কানে সোনা // ধার করে গাড়ী/বাড়ী কেনা | কর্জ করে বাবুগিরি ফলায়; পরে ধার শোধ করতে গিয়ে বিপন্ন হয়।) |
ধার করে খায়, হেঁট মাথায় যায় | খাতকের কোন ইজ্জৎ নেই। |
ধারণাদ্ ধর্মম্ ইত্যাহুর্ধর্মেণ বিধৃতাঃ প্রজাঃ। যঃ স্যাদ্ ধারণসংযুক্তঃ স ধর্ম ইতি নিশ্চয়।। মহাভারত | ধারণক্রিয়া থেকে ধর্ম শব্দের উৎপত্তি। ধর্ম সৃষ্টিকে বিশেষভাবে ধারণ করে আছে। সংক্ষেপে যা ধারণ করে তাই ধর্ম। |
ধারে কাটে আর ভারে কাটে // ধারে না কাটলে ভারে কাটে | অস্ত্রে ধার থাকলে সহজে কাটে; অল্প ধার না থাকলে অস্ত্রের ভারেও কাটা যায়; অর্থবল থাকলে সহজে কার্যসিদ্ধি হয়; অর্থবল তেমন না থাকলে বুদ্ধিবলের সাহায্য কার্যসিদ্ধি হয়। |
ধিয়া পশ্যতি পণ্ডিতঃ, ভূতে পশ্যতি বর্বরা | অভিজ্ঞাতায় জ্ঞানী শেখে; পরিণাম দেখে মূর্খ শেখে। |
ধীরগতি নদীর গভীরতা বেশি | জ্ঞানীপুরুষের প্রশান্তি বেশি। |
ধীরগতিতে বৃদ্ধির জন্য কোন চিন্তা করো না, শুধু চিন্তা করো স্থির দাঁড়িয়ে পড়লে কিনা- চীনা প্রবাদ | জীবনের লক্ষণ সচলতা, অচলতা মৃত্যুর সামিল। |
ধীর জল/পানি পাথর কাটে | বিন্দুবিন্দু জল পড়েও পাথর ক্ষয় কয়; ধীরেসুস্থে কাজ করলে অতি কঠিন কাজও সম্পন্ন হয়। |
ধুকড়ির (মোটা সুতোর থলি) মধ্যে খাসা চাল | অসুন্দর ব্যক্তি, যার অন্তর সুন্দর ও মাধুর্যভরা; সমতুল্য- 'ছেঁড়া বস্তায় খাসা চাল'। |
ধুলো-মুঠো ধরলে সোনা-মুঠো হয় | সৌভাগ্যের লক্ষণ; সৌভাগ্যবান ব্যক্তি যে কাজেই হাত দেয় তাতেই লাভবান হয়। |
ধূর্তে ধূর্তে ধূর্তামি | সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি। |
ধেনো হাটে ওল নামানো | না বুঝে অকাজ করা। |
ধৈর্য ধর যা তুমি চাও তাই পাবে- আরবী প্রবাদ | আপেক্ষা করার মূল্য আছে; কথায় বলে- সবুরে মেওয়া ফলে। |
ধৈর্যশীলতা হল উদ্বেগ-নিরসনের চাবিকাঠি- আ্যসিরীয় প্রবাদ | ধৈর্যশীলতা ঘায়ের ওপর মলম হিসাবে কাজ করে। |
ধোঁয়া চাপা থাকে না | সত্য গোপন থাকে না। |
ধোঁয়া যেথায় আগুন সেথায় | অকারণে কিছু হয় না; কার্যের পিছনে কারণ থাকে। |
ধোঁয়ার হাত এড়াতে গিয়ে আগুনে পুড়ে মলাম | সামান্য বিপদ থেকে বাঁচতে গিয়ে বেশী বিপদে পড়া। |
ধোবি কা কুত্তা না ঘরকা না ঘাটকা | সর্বত্র অনাদৃত মানুষ (উৎসকাহিনী- নদীর ঘাটে যে পাটায় ধোপা কাপড় কাঁচে তাকে হিন্দীতে কুতা বলে; সকালে কাপড় কাচার সময় ধোপা কুতাটি নদীর ঘাটে বয়ে নিয়ে আসে এবং বিকালে ফেরার সময় সেটি ঘাট থেকে আবার বাড়ী বয়ে নিয়ে যায়।) |
ধ্বনির অনুরূপ প্রতিধ্বনি আছে/থাকে | অন্যের ক্ষতি করলে নিজেরও ক্ষতি হয়; সমতুল্য- 'আঘাত করলে প্রত্যাঘাত খেতে হয়', 'আয়না যেমুখ দেখে সেইমুখ দেখায়', 'ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়', 'ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া থাকে', 'চড় মারলে চড় খেতে হয়' ইত্যাদি। |
ন
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ন অহংকারাৎ পরোরিপুঃ | অহঙ্কারের চেয়ে বড় শত্রু নেই; (মূলশ্লোক- 'ন চ বিদ্যাসম বন্ধু...') |
ন কশ্চিৎ কস্যচিন্মিত্রং ন কশ্চিৎ কস্যচিদ্রিপুঃ। কারণেন হি জানাতি মিত্রানি চ রিপূংস্তথা॥ (চাণক্য) | কারণ বিনা কেউ কারো মিত্র বা শত্রু হয় না; ব্যবহারের কারণেই কেউ মিত্র বা শত্রু হয়। |
ন কূপখননং কার্যং প্রদীপ্তবহ্নিনা গৃহে | ঘরে আগুল লাগিয়ে কূঁয়া কাটা যুক্তিযুক্ত নয়। |
ন গণস্যাগ্রতো গচ্ছেৎ | সবার আগে যাওয়া নেই; ঝড়ঝাপ্টা অগ্রবর্তীকেই সইতে হয়; প্রথম সারির সৈনিকের মৃত্যু অবধারিত; সমতুল্য- 'আগে গেলে বাঘে খায়' |
ন গাঁ মাগিলেও যা সাত গাঁ মাগিলেও তা | অল্প পরিশ্রম ও বেশি পরিশ্রমের ফল যদি এক হয় তবে এই প্রবাদ বলা হয়। |
ন গৃহং গৃহমিত্যাহুগৃহিণী গৃহমুচ্যতে। তয়া হি সহিতঃ সর্বান পুরুষোহর্থান সমশ্নুতে।। (চাণক্য) | কেবল গৃহকেই গৃহ বলা যায় না; গৃহিণীকেই গৃহ বলে; যেহেতু গৃহিণীর সাথে একত্র হয়ে পুরুষ যাবতীয় পুরুষার্থ উপভোগ করে থাকে। |
ন চ বিদ্যাসমো বন্ধু ন চ ব্যাধিসমো রিপুঃ। ন চ অপত্যসমঃ স্নেহো ন চ দৈবাৎ পরং বলম্॥ (চাণক্য) | বিদ্যার সমান বন্ধু নেই, ব্যাধির সমান শত্রু নেই, পুত্রস্নেহের সমান স্নেহ নেই এবং দৈবের সমান বল নেই। |
ন চলতি খলু বাক্যং সাধুনাং কদাচিৎ | সাধুদের বাক্যের কখনো অন্যথা হয় না। |
ন জাতু কামঃ কামানামুপভোগেন শাম্যতি। হবিষা কৃষ্ণবর্ত্মেব ভুয় একাভিবর্দ্ধতে।।(চাণক্য) | ঘি পড়লে যেমন আগুন বেশি জ্বলে উঠে, তেমনই কামীর কামনা উপভোগে বাড়ে বৈ কমে না। |
ন দুঃখং পঞ্চভিসহ | পাঁচজনের সাথে মিলেমিশে থাকলে দুঃখ অনুভব হয় না; (মূলশ্লোক- 'স্থাতব্যং পঞ্চভি সার্ধং...') |
ন দেবঃ সৃষ্টিনাশক | দেবতা কখনো সৃষ্টি নাশ করেন না; (মূলশ্লোক- 'ন মাতা শপতি পুত্রং...') |
ন দেবায়, ন ধর্মায় | দেবতারও নয়, ধর্মেরও নয়; কোন কাজে লাগল না; কোন কর্মের নয়, অপদার্থ। |
ন ধর্মবৃদ্ধেষু বয়ঃ সমীক্ষ্যতে | ধার্মিকব্যক্তির বয়সের বিচার হয় না। |
ন নিম্বো মধুরায়তে | নিম কখনো মিষ্ট হয় না; (মূলশ্লোক- 'শর্করাশতভারেণ নিম্বোবৃক্ষ...') |
ন বাধতে স্কন্ধো যথা বাধতি বাধতে | উতসকাহিনী- দেবরাজ ইন্দ্রের অনুপস্থিতিতে নহুষকে স্বর্গের রাজা করা হয়েছিল। শীঘ্রই নহুষ খুব অহংকারী হয়ে পড়েন। অহংকারী হয়ে রাজা ঋষিবাহিত পালকি চড়ে পরিভ্রমণ করতেন; একদিন পথে পালকিবাহক ঋষিরা ক্লান্ত হয়ে পড়লে রাজা বলেন- 'ক্ষণং বিশ্রম্যতাং জাল্ম স্কন্ধোস্তে যদি বাধতি' অর্থাৎ বাহকগন কাঁধে যদি বেদনা বোধ কর তবে কিছুক্ষণ বিশ্রাম কর; প্রত্যুত্তরে বশিষ্টমুনি উপরের উক্তিটি করেন; তিন বলেন- রাজন কাঁধে ততটা বেদনাবোধ করছি না যতটা অশুদ্ধ 'বাধতি' শব্দটিতে কানে বেদনা পেয়েছি। |
ন বিশ্বসেদবিশ্বস্তে মিত্রে চাপি ন বিশ্বসেৎ। কদাচিৎ কুপিতং মিত্রং সর্বং দোষং প্রকাশয়েৎ॥ (চাণক্য) | অবিশ্বাসীকে কখনো বিশ্বাস করবে না; বন্ধুকেও বেশী বিশ্বাস করবে না; কারণ সে ক্ষুব্ধ হলে তোমার সকল দোষ সকলকে বলে দিতে পারে। |
ন ভূতং, ন ভবিষ্যতি | আগেও ছিল না পরেও হবে না; অগ্রপশ্চাৎ চিন্তা করা বৃথা; (মূলশ্লোক- 'অন্নদানাৎ পরম দানং...') |
ন মাংসভক্ষণং দোষো, ন মদ্যং ন চ মৈথুনম্। প্রবৃত্তিরেব ভূতানাং নিবৃত্তিস্তু মহাফলা।। (চাণক্য) | মাংসভক্ষণে, মদ্যপানে ও মৈথুনক্রিয়ায় কোন দোষ হয় না; এই সকল কর্মে জীবের প্রবৃত্তি হল দোষাবহ, কিন্তু এই সকল বিষয়ে নিবৃত্তিই হল মহাফলপ্রদ। |
ন মাতা শপতি পুত্রং ন দোষ লভতি মহী। ন হিংসা করতি সাধু ন দেবঃ সৃষ্টিনাশক।। | মাতা কখনো পুত্রকে অভিশাপ দেয় না; পৃথিবী কখনো জীবের দোষ ধরে না; সাধুব্যক্তি কখনো হিংসায় প্রবৃত্ত হয় না; দেবতা কখনো সৃষ্টি নাশ করেন না। |
ন যযৌ, ন তস্থৌ | এগিয়ে যাওয়াও যায় না, আবার স্থির থাকাও যায় না; কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা। |
ন সন্তোষাৎ পরম সুখম্ | সন্তোষের মত পরম সুখ নেই; সমতুল্য- 'সন্তোষো নন্দনং বনম' |
ন সম্মানো ন বৃত্তির্ন চ বান্ধবাঃ যস্মিন্ দেশে। ন চ বিদ্যাগমঃ কশ্চিৎ তং দেশং পরিবর্জয়েৎ।। (চাণক্য) | যে দেশে সম্মান নেই, জীবিকার ব্যবস্থা নেই, কোন বন্ধু নেই এবং বিদ্যার্জনের কোন ব্যবস্থা নেই- সেই দেশ পরিত্যাগ করা উচিত। |
ন সাহসমনারুহ্য নরো ভদ্রাণি পশ্যতি | বিনা সাহসে কোন মানুষ বড় কিছু করতে পারে না। |
ন স্বাতন্ত্র্যাৎ পরম সুখম | স্বাধীনতা অপেক্ষা বড় সুখ নেই।। |
ন হি দুস্করমন্তীহ কিঞ্চিৎ অধ্যবসায়িনাম | অধ্যবসায়ী ব্যক্তির কাছে কোন কাজই দুস্কর নয়। |
ন হি সর্ববিদ্ঃ সর্বে | স্পকলেই সবকিছু জানেন না। |
ন হি সুখং দুঃখখৈর্বিনা লভ্যতে | দুখঃবিনা সুখ হয় না; কষ্ট সহ্য না করলে কেষ্ট পাওয়া যায় না; সমতুল্য- [কণ্টকবিনা কমল হয় না'; কষ্টবিনা কেষ্ট নাই; \গোলাপ তুলতে গেলে কাঁটা সইতে হয় ইত্যাদি। |
ন হি সুপ্তস্য সিংহস্য মুখে প্রবিশন্তি মৃগাঃ | ঘুমন্তসিংহের মুখে হরিণ প্রবেশ করে না; পরিশ্রমবিনা প্রাপ্তি নেই। |
নকল গয়নার জেল্লা বেশি | নকল আপনাকে আসল অপেক্ষা বেশি সুন্দর প্রতিপন্ন করতে চেষ্টা করে। |
নক্ষত্রভূষণং চন্দ্রো নারীণাং ভূষণং পতিঃ।পৃথিবীভূষণং রাজা বিদ্যা সর্বস্য ভূষণম্।। (চাণক্য) | চাঁদ তারকাদের অলঙ্কার, স্বামী নারীর অলঙ্কার, রাজা পৃথিবীর অলঙ্কার আর বিদ্যা সকলজনের অলঙ্কার। |
নখদর্পণে আছে | সবকিছুই নজরে আছে; প্রতিটি বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা আছে। |
নখিনাঞ্চ নদীনাঞ্চ শৃঙ্গিণাং শস্ত্রপাণিনাম্। বিশ্বাসো নৈব কর্ত্তব্যঃ স্ত্রীষু রাজকুলেষু চ।। (চাণক্য) | নখযুক্ত প্রাণী, নদী, শিং আছে এমন প্রাণী, শস্ত্রধারী পুরুষ, নারী এবং রাজপুরুষকে কখনও বিশ্বাস করা উচিত নয়। |
নখের ছিদ্রে কুড়াল লাগানো | সামান্য কাজে বিরাট আয়োজন; সমতুল্য- 'কোদাল দিয়ে দাড়ি চাঁচা'; 'মশা মারতে কামান দাগা' ইত্যাদি। |
নগর পুড়িলে কি দেবালয় এড়ায়? | বিপদে সবার ক্ষতি; আগুন বাছবিচার করে না। |
নজরে থাকা কড়ার দুধ উথলায় না | নজর রাখলে কিছুই নয় ছয় হয় না। |
নটে খেটে আড়ায়ে, সজনে বারোমেসে | কিছু সুখভোগ অল্পদিন স্থায়ী হয়; কিছু সুখভোগ প্রতিদিন করা যায়। |
নড়া দাঁত পড়া ভাল | কারো সাথে মনোমালিন্য হ'লে তার সাথে সংশ্রব না রাখাই উচিৎ। |
নড়তে চড়তে বারো মাস | অত্যন্ত অলস, দীর্ঘসূত্রী। |
নড়তে পারে না কামান ঘাড়ে // নড়তে পারে না কামান দাগে | ক্ষমতার অতিরিক্ত কাজ করতে যায়; নিতান্ত বাড়াবাড়ি। |
নড়ির হাতে শালগ্রামের বিনাশ | হীনের হাতে মহতের অপমান। |
নতুন নতুন ন'কড়া, পুরানো হ'লে ছ'কড়া | নতুন অবস্থায় আদর, পুরাতন অবস্থায় অনাদর; নতুন জিনিষের আদর/কদর বেশি হয়। |
নতুন যোগী ভিখ পায় না | শুরুতে কাজে দক্ষতা আসে না; অনভ্যাসের জড়তা থাকে; স্বভাবতই অকৌশলী স্বীকৃতি পায় না। |
নদী এক কূল ভাঙে আরেক কূল গড়ে | আশা নিরাশায় ভরা সংসার; একদিকে কারো উন্নতি হচ্ছে; আরেকদিকে কারো অবনতি হচ্ছে। |
নদীকূলে চ যে বৃক্ষা, পরহহস্তগতং ধনম। কার্যং স্ত্রীগোচরং যৎ স্যাৎ সর্বং তদ্বিফলং ভবেৎ॥ (চাণক্য) | নদীপাড়ের বৃক্ষ, পরহস্তগত ধন এবং স্ত্রীলোক জানে, এমন ভবিষ্যৎ কাজ সর্বদা বিফল হয়। |
নদীকূলে বাস ভাবনা বারোমাস | আশঙ্কার মধ্যে থাকলে চিন্তা সবসময় তাড়া করে। |
নদী না শুকালে জলের মূল্য জানা যায় না | না হারালে থাকার মূল্য কি- জানা যায় না। |
নদী, নারী, শৃঙ্গধারি, এই তিনে বিশ্বাস না করি | নদী জলের স্থিরতা নেই; লঘু চিত্তের নারী কোন কথা ফাঁসায় এবাং শৃঙ্গধারী পেট ফাঁড়ে; সুতরাং এই তিনের বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। |
নদী পার হলে কুমিরকে কলা | উপকার পেয়েই উপকৃত উপকারীকে ভুলে যায়; খাল পার হতে পাটনী শালা। |
নদী শুখালেও রেখা থাকে১ | কৃতকর্মের দাগ থেকে যায়; কলঙ্ক মোছে না। |
নদী শুখালেও রেখা থাকে২ | ধনী দরিদ্র হলেও আভিজাত্যের ছাপ থাকে। |
নদীকে অনুসুরণ কর, সমুদ্রে পৌঁছে যাবে | পথ ঠিক থাকলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হ'তে হয় না। |
'নদীর এক কূল ভাঙ্গে আর এক কূল গড়ে এই তো নদীর খেলা'- নজরুল | নদীর মতই সংসারের গতি বিচিত্র; একদিকে আনন্দ তো অন্যদিকে বেদনা; সমতুল্য- 'কারো পৌষ মাস,কারো সর্বনাশ'- প্রবাদ। |
'নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস; নদীর ওপার বসি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে; কহে, যাহা কিছু সুখ সকলি ওপারে'-রবীন্দ্রনাথ | অন্যে পেল, আমি পেলাম না- এই ভাবানুভূতি; নিজের সুখের চেয়ে অন্যের সুখ বৃদ্ধি পাচ্ছে মনে করে মানুষ অতৃপ্ত হয়; অন্যের ভাল অবস্থার প্রতি ঈর্ষাকাতর দৃষ্টিপাত। |
নদীর জল ঘোলাও ভালো, জাতের মেয়ে কালোও ভালো (খনা) | উৎস ভাল হলে নির্গত উপাদানও ভালই হবে। |
নদীর মুখে বালির বাঁধ | ক্ষণস্থায়ী/ভঙ্গুর প্রতিরোধ ব্যবস্থা; নিস্ফল প্রচেষ্টা |
নদীর স্রোতের প্রায় সময় বহিয়া যায় | নদীর স্রোত ও সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। |
নদের চাঁদ/ নদের গোরাচাঁদ১ | বিদ্রুপে- সর্বইপ্রধান ব্যক্তি |
নদের চাঁদ/ নদের গোরাচাঁদ২ | বিদ্রুপে- সুবেশী অকর্মাব্যক্তি |
ননদেরও ননদ আছে // ননদো কী ভী ননদ হোতী হৈ | কেউ পার পায় না; বাপেরও বাপ আছে; তিমি থাকলে তাকে গেলার জন্য তিমিঙ্গিল আছে। |
ননীর পুতুল নয় যে রোদে গলে যাবে | সন্তানের প্রতি অত্যধিক আদরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে উক্ত প্রবাদ |
নবকার্তিক | কার্তিকের নতুন সংস্করণ; অতিরিক্ত বিলাসী নব্যযুবক। |
নবকুমারকে বাঘে খায় | অকৃতজ্ঞ উপকৃত, যে উপকারীর ঋণ স্বীকার করে না; সমতুল্য- শংকরাকে বাঘে খেল, অন্যেরা সব কোথায় গেল?','স্বার্থছাড়া কেউ এক পা নড়ে না', বিরুদ্ধ উক্তি- 'পরের কারণে স্বার্থ দিয়ে বলি এজীবন মন সকলি দাও...' 'শুধু স্বার্থ নয়, স্বার্থত্যাগও আছে এ সংসারে', 'স্বার্থমগ্ন যেজন বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে, সে কখনাে শেখেনি বাঁচিতে' ইত্যাদি। |
নবাব আর কি?/ নবাবপুত্র আর কি?/ নবাব সিরাজদ্দৌলা আর কি? | অতিরিক্ত বিলাসী স্বেচ্ছাপরায়ণ ব্যক্তি। |
নয় গাঁ মাগিলে যা, সাত গাঁ মাগিলেও তা | দাবী যাই-হোক-না-কেন বরাদ্ধ স্থির; অল্প পরিশ্রম এবং বেশি পরিশ্রমের ফললাভ এক ও অভিন্ন। |
নয় মণ তেলও পুড়বে না, রাধাও নাচবে না | যে অসম্ভব কাজ ঘটার নয় সেই সম্পর্কে স্পষ্টোক্তি; দাবীমত যে কার্যসিদ্ধি হবে না- সেই সম্পর্কে চেতাবনী। (উৎসকাহিনী- একবার এক পড়ন্ত জিমিদারের পারিষদরা রাধা নামক এক সুন্দরী নাচলেওয়ালীর নাচ দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করে; সুন্দরী বলে পাঠায়- জমিদারবাবু যদি নয়মণ তেল পুড়িয়ে আল জ্বালার ব্যবস্থা করেন তবে সে নাচতে রাজী আছে; জমিদারবাবু কাষ্ঠহাসি হেসে প্রস্তাবে রাজী হন; এটা বাস্তবসম্মত নয় বলে এক স্পষ্টবাদী পারিষদ এই উক্তি করে।) |
নয়া যোগী ভিখ পায় না // নয়া যোগীর ভিক্ষা নাই | নতুন কাজে প্রথম প্রথম ফল পাওয়া যায় না। |
নরক গুলজার | মূল অর্থ- নানা বিচিত্র চরিত্রের মানুষের সমাবেশে নরক সরগম; আলং- অসংযত স্ফূর্তিবাজদের আড্ডা। |
নরকের দ্বার খোলা | উচ্ছন্নে যাওয়ার প্রবল আকর্ষণ |
নরম কাঠে ছুতোরের কারিগরি/বল // নরম মাটিতে বেড়াল আঁচড়ায় | দুর্বলের ওপর বলপ্রয়োগ সহজ; দুর্বলপ্রকৃতির লোক অত্যাচারিত হয়; |
নরমের বাঘ গরমের শিয়াল/ নরমের যম, শক্তের ভক্ত | দুর্বল লোকের উপর হম্বিতম্বি করে এবং শক্ত লোকের পাল্লায় পড়লে লেজ গুটায়। |
নরানাং নাপিতো ধূর্তঃ | মানুষের মধ্যে নাপিত ধূর্ত বলে প্রসিদ্ধ; সমতুল্য-নাপিতের ষোলচোঙা বুদ্ধি; মূল চাণক্যশ্লোক- 'অরণ্যে শৃগালঃ ধূর্তং,পক্ষী ধূর্তং বায়সাঃ। নরানাং নাপিত ধূর্তং, দেব ধূর্তং নারদা'। |
নরানাং মাতুলক্রমঃ | মানুষ মাতুলের প্রকৃতিপ্রাপ্ত হয়; মানুষ মামার অনুসরণকারী। |
নরের মন নারায়ণ জানেন | সবই ঈশ্বর জানেন; কেবল অন্তর্যামী ঈশ্বরই মানুষের মনোগত ভাব বুঝিতে পারেন। |
নরুণ দিয়ে তালগাছ কাটা | ক্ষুদ্র উপায়ে বিরাট কাজ করার চেষ্টা; অসাধ্যসাধন করার চেষ্টা; সমতুল্য- 'কলার ভেলায় সাগর পার'; 'ঝিনুক দিয়ে জল সেঁচা'; 'মুড়া কোদালে দিঘি কাটা' ইত্যাদি। |
নলিনীদলগতজলদবৎতরলম | পদ্মপাতার জলের মত ক্ষণস্থায়ী। |
না আঁচালে বিশ্বাস নেই | কার্যসিদ্ধি সম্পর্কে সন্দিহান' মূল প্রবাদ- ঠগের বাড়ী নেমন্তন্ন না আঁচালে বিশ্বাস নেই'। |
না কথার বালাই নাই | 'না' কথাটির মধ্যে কোন বিপদ নাই; 'জানি না' বললে সব সমস্যা মিটে গেল; সমতুল্য- 'বোবার কোন শত্রু নাই'। |
না উঠতেই এক কাঁদি | কাজে হাত দিতে-না-দিতেই কিঞ্চিৎ ফললাভ; মূল প্রবাদ- 'গাছে না উঠতেই এককাঁদি' |
না খেলে যাবে দিন, ধার করলে হবে ঋণ | কখনো ঋণ করা উচিৎ নয়। |
না গজাতে ঘুণ ধরে, না উঠতেই আছাড় | কোন কাজ শুরুতেই নষ্ট হলে প্রবাদটি উক্ত হয়। |
না ঘষলে রত্ন চকচকে হয় না, কষ্টস্বীকার না করলে মানুষ সম্পূর্ণ হয় না- কনফুসিয়াস | অনায়াসে কিছু লব্ধ হয় না। |
না জানার মধ্যে কোন লজ্জা নাই না জানতে চাওয়াটাই লজ্জার- আসিরীয় প্রবাদ | অননিসন্ধিৎসু মন মৃতের সমান |
না (নৌকা) ডুবুস্নে, না ভাল মনে করিয়েছিস্ | না-সূচক বাক্যে প্রবৃত্তি জাগিয়ে দেওয়া; সমতুল্য- পাগলা সাঁকো নাড়াস্ না, না ভাল মনে করিয়েছিস্'। |
না থাকলেই সোনার মূল্য, থাকলে সোনার মূল্য নেই | সহজলভ্য বস্তুর কোন কদর নেই। |
না-দেওয়া কাঁঠালের শাওনে (শ্রাবণমাসে) পাক // না-দেওয়া চাল আজ-না-কাল // না-দেওয়া জাল সরষে ভরা | না দেবার ছল-ছূতো, বাহানা। |
না দেখে চলে যায়, পায়ে পায়ে হোঁচট খায় | অসর্তকতার দণ্ড; বিবেচনা করে কাজ না করলে প্রতি পদক্ষেপে বিপদ হতে পারে। |
না দেখে/বুঝে ছিলেম ভাল, দেখতে/বুঝতে গিয়ে বিপদ হল | আধা-পণ্ডিতের অনেক জ্বালা; যেকোন বিষয়ে আধা-জ্ঞান না থেকে পুরো-জ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয়; সমতুল্য- 'অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী'। |
না পড়েই পণ্ডিত১ | শিক্ষাদিক্ষা নেই, উপাধি পণ্ডিত বলে পণ্ডিত। |
না পড়েই পণ্ডিত২ | কোন বিষয় না জেনেই তাতে পণ্ডিতিগিরি করতে যাওয়া; সমতুল্য- 'পুঁটিমাছের ফরফরনি'। |
না বিয়ায়ে কানাইয়ের মা১ | পরের ছেলেকে নিজের ছেলে বলে দাবী করা নারীর প্রতি ব্যঙ্গোক্তি। |
না বিইয়ে কানাইয়ের মা২ | যা হবার নয় তা হলেই লোকে এই প্রবাদ ব্যবহার করে; সমতুল্য- 'অবিয়ন্তির ঠুনকোর ব্যথা'। |
না মরতেই ভূত | কারণবিনা কার্যের সম্ভাবনা দেখে অতি বিস্মিত। |
না যাইলে রাবণ বধে, যাইলে রাম // না যাইলে রাজা বধে, যাইলে ভুজঙ্গ; রাবণের হাতে যথা মারীচ কুরঙ্গ (মৃগ) | উভয়সঙ্কট, এগুলে রামে মারবে আবার পিছুলে রাবণে মারবে; মারীচ রামের হাতেই মরতে চেয়েছিল। |
না রাম না গঙ্গা | কোন কথার উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকা; কোন কিছুতেই নাই। |
না হওয়া থেকে দেরীতে হওয়া ভাল | তবুতো কিছু হবে। |
নাই কাজ তো খইখাই | অকাজে অলস সময় কাটানো। |
নাই ঘরে খাই বড়/বেশী // নাইয়ের ঘরে খাই খাই | অভাবপীড়িত; অভাবের সংসারে পরিজনদের পেটুকপনা বেশি হয়; ঘরে খাবার না থাকলে ক্ষুধার উদ্রেক বেশি হয়। |
নাই (লাই) দিলে কুকুর কাঁধে/ঘাড়ে চড়ে | প্রশ্রয় পেলে নগণ্য লোক মাথায় ওঠে। |
নাই ধন তো যাও বন | গরীবকে কেঊ পোছে না; সমাজে তার সম্মান নেই। |
নাই বললে সাপেরও বিষ থাকে না | গ্রাম্যবাংলায় 'নাই' শব্দটি অমঙ্গলসূচক বিবেচিত হয়; সাধারণতঃ লোকে সংস্কারবশতঃ 'নেই' না বলে 'বাড়ন্ত' বলে, যেমন- ঘরে চাল বাড়ন্ত। |
নাই ভাত নুন দিয়ে খাবো | অসম্ভবের প্রত্যাশা; অসম্ভব কাজ সম্পর্কে উক্ত হয়; সমতুল্য- 'এঁড়ে গরু টেনে দো'। |
নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো | একেবারে না পাওয়ার চেয়ে সামান্য কিছু পাওয়াও ভালো; কিঞ্চিত পাওয়া মন্দের ভালো। |
নাও পর গাড়ী, গাড়ী পর নাও // না'র উপর গাড়ি, গাড়ির উপর না (নৌকা)১ | নদী পার হতে গাড়ি নৌকা চড়ে; আবার স্থলপথে চলতে নৌকা গাড়ী চড়ে; যেক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরস্পরের সাহায্য লাগে সেক্ষেত্রে এই প্রবাদ প্রযোজ্য হয়। |
নাও পর গাড়ী, গাড়ী পর নাও // না'র উপর গাড়ি, গাড়ির উপর না (নৌকা)২ | আজ একজন প্রবল হয়ে অন্যের উপর অত্যাচার করছে; কাল আবার অত্যাচারিত ব্যক্তি অতাচারীর উপর অত্যাচার করতে পারে; সমতুল্য- 'চিরদিন কারো সমান নাহি যায়'। |
নাক নেই তার নথ নাড়া/নাক নেই তার গোঁফের বাহার | আদিখ্যেতা; এদিক নেই ওদিক আছে। |
নাকফোঁড়া বলদ | একান্ত বশংবদ ব্যক্তি, যে পরের হুকুমে উঠে বসে। |
নাকালে ম্রিয়তে কশ্চিৎ বিদ্ধশরশতৈরপি। কুশাগ্রেণৈব সংপৃষ্ট প্রাপ্তকালো নও জীবতি।। | সময় না হলে শতশত বাণে বিদ্ধ হলেও কেউ মরে না; সময় হলে কুশাগ্রের স্পর্শেও সে মারা যায়। |
নাকে সরষের তেল দিয়ে ঘুমানো | আরামে দিন কাটানো; উদ্বেগের কারণ থাকতেও পরম নিশ্চিন্তে দিন কাটানো। |
নাচ না আওয়ে/জানে অঙ্গন টেড়া // নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা // নাচতে না জানলে উঠানের দোষ | নিজের অপটুতা ও অজ্ঞতার জন্য অন্যের উপর দোষারোপ; সমতুল্য- 'অকেজো মিস্ত্রি যন্ত্রের দোষ দেয়'। |
নাচতে জানিনি ধরে এনেছে, যদি বা নাচি আমার ছেলে ধরবে কে? | কাজ না করার ক্ষেত্রে অজুহাতে পর অজুহাত। |
নাচতে নেমে ঘোমটা টানা | কাজ করতে এসে ইতঃস্তত করা। |
নাচেন ভাল পাক দেয় উল্টো/মন্দ | ঘুরিয়ে নিন্দা করা; সরল কথা বলতে বলতে হঠাৎ কুটিল কথা বলা; মিষ্টি কথার মাঝে একটা মর্মভেদী কথা বলা। |
নাচুন্তির লাজ নাই দেখুন্তির লাজ | যে কুৎসিত কাজ করছে, তার লজ্জা নেই, যে দেখছে তারই মাথা লজ্জায় কাটা যায়; নির্লজ্জ বেহায়ার প্রতি ব্যঙ্গোক্তি; সমতুল্য- 'হাগুন্তির লাজ নাই দেখুন্তির লাজ'। |
নাড়াবনে কীর্তন | অনাবশ্যক স্থানে কার্য। |
নাড়ীনক্ষত্র টেনে বার করা | কৌশলে সব গুহ্যতথ্য জেনে নেওয়া। |
নাতির নাতি স্বর্গের বাতি | অতি দীর্ঘজীবী না হলে কারো পক্ষে নাতির নাতিকে দেখা সম্ভব নয়; সেই অর্থে এই ব্যক্তি পূণ্যবান এবং স্বর্গসুখ ভোগের অধিকারী। |
নাতোয়ানের দুনো ব্যয় | অভাবী প্রয়োজনকালে ব্যয়ে অপারগ, পরে একই কাজে দ্বিগুণ ব্যয় করে। |
নাতোয়ানের দুনো মালগুজারি | অক্ষম প্রজা অর্থাভাববশতঃ যথাসময়ে জমিদারকে খাজনা দিতে না পারায় পরে সুদে-আসলে বেশি দেয়। |
নাথবতী অনাথবৎ | স্বামী থেকেও নেই; স্বামীসোহাগ থেকে বঞ্চিত। |
নানা মুনির নানা মত | মানুষ যন্ত্র নয়; প্রতিটি মানুষের আলাদা ব্যক্তিসত্তা হয়। |
নান্য পন্থা বিদ্যতে অয়নায় | এছাড়া অন্য কোন উপায়/পথ আর খোলা নেই। |
নাপিত দেখলে নখ বাড়ে | কাজের লোক দেখলেই কাজের কথা মনে পড়ে; দেখনবাই; সমতুল্য- 'ঘোড়া দেখলে খোঁড়া হয়'; 'পথে পেলাম কামার, দা গড়ে দে আমার'। |
নাপিতের আসি, ধোপার বাসি | নাপিত 'এখনই আসছি' বলে চলে যায়, অনেক্ষণ আর আসে না; ধোপা বাসি কাপড় নিয়ে যায় এবং আজকাল করে বহুদিন পরে ফেরত দেয়। |
নাপিতের ষোলচোঙা বুদ্ধি | মানুষের মধ্যে নাপিত ধূর্ত বলে প্রসিদ্ধ; সমতুল্য- 'নরানাং নাপিতো ধূর্তঃ'। |
নাম বড়া দর্শন থোড়া-হিন্দি প্রবাদ | যত নামডাক আছে তত কাজের নয়। |
নাম নিয়ছো তো শয়তান হাজির- ইংরাজী প্রবাদ | অনেকসময় এমন হয় যে, যার কথা ভাবছি বা আলোচনা করছি সে এসে উপস্থিত। |
নামে গোয়ালা, আমানি/কাঁজি (পান্তাভাতের জল) ভক্ষণ | নামমাত্র সার; কাজের কোন খোঁজ নেই; তাই আমানি খেয়ে দিন কাটে; আসলে কাজে অষ্টরম্ভা; সমতুল্য- 'নামে ডাকে গগন ফাটে'। |
নামে ডাকে গুরুমশাই, লেজা মুড়োর জ্ঞান নাই | নামমাত্র সার; পেটে বিদ্যাবুদ্ধি কিছু নেই। |
নামে ডাকে গগন ফাটে | নাম ডাক খুব কিন্ত কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা। |
নামে তালপুকুর, ঘটি ডোবে না | নামমাত্র সার; বড়লোকের বংশ বটে, কিন্তু বর্তমানে ফুঁটোকড়ির সংস্থান নেই। |
নামে ধর্মদাস, ধর্মের নাম/বালাই নেই | নামমাত্র সার; আচারের ধার ধারে না; নাস্তিকের প্রতি ব্যঙ্গোক্তি |
নামের চোটে গগন ফাটে হাড়ি পাতিল কুত্তায় চাটে | চরম অপদার্থ; যতটা নাম ততটা কাজের নয়; সমতুল্য মুখের চোটে গগন ফাটে। |
নালা কেটে নোনা জল আনা | ইচ্ছা করে নিজের বিপদ ডেকে না; খাল কেটে কুমির আনা। |
নারুজস্য কিমৌষধেঃ? | যার রোগ নেই তার ঔষধের কি প্রয়োজন? |
নাস্তি গ্রাম্যঃ কুত সীমাঃঃ | যে গ্রামই নেই তার আবার সীমানা কি; নেই বস্তুর খোঁজের অর্থ হয় না; আদিখ্যেতা; সমতুল্য- 'গ্রামের নাম তেঘরা তার আবার উত্তরপাড়া দক্ষিণপাড়া'। |
নাস্তি গ্রাম্যঃ কুত সীমাঃ নাস্তি বিদ্যা কুত যশঃ। নাস্তি জ্ঞানং কুত মুক্তি নাস্তি ভক্তি কুতস্তু ধীঃ।। | নেই গ্রামের সীমানা কোথায়? বিদ্যা নয়া থাকলে তার যশ কোথায়? জ্ঞান নয়া থাকলে তার মুক্তি কোথায়? ভক্তি না থাকলে তার জ্ঞানই বা কোথায়? |
নাস্তি সত্যাং পরোধর্ম, নানৃতাৎ পাতকো। স্থিতির্হি সত্যং ধর্মস্য তস্মাৎ ন লোপয়েৎ।। (চাণক্য) | সত্যের চেয়ে বড় ধর্ম আর নেই; মিধ্যার চেয়ে বড় পাপ আর নেই; ধর্মের স্থিতি সত্যে; সুতরাং সত্যের লোপ করো না। |
নাস্তিকের মুখে ধর্মকথা | যে ঈশ্বর মানে না, সে ঈশ্বরের কথা বোলএ; অবিশ্বাস্য ঘটনা, সন্দেহজনক বিষয়; কোন ধান্ধাবাজী থাকতে পারে। |
নাহংকারাৎ পরোরিপুঃ | অহংকারের মত রিপু নেই; (মূলশ্লোক- |
নানা মুনির নানা মত | বিভিন্ন লোকের বিভিন্ন মতামত থাকে; ভিন্ন রুচিহি লোকাঃ। |
নান্য পন্থা বিদ্যতে অয়নায় | (নিস্তারের) আর কোন উপায় নেই। |
নিকম্মা/নিকর্মা দরজী ছেলের মুখ সেলাই করে // নিকম্মা/নিকর্মা লোক খুড়োর গঙ্গাযাত্রা করে | কাজের লোক কাজ না পেলে ভাল বা মন্দ একটা-না-একটা কাজে জড়িয়ে পড়ে। |
নিক্ষিপ্ত তীর/শর ফেরে না | যা গেছে তা গেছে; বলা কথা ফেরানো যায় না। |
নিগোঁসাইয়ের খোদাই রক্ষক | ঈশ্বর নিরাশ্রয়ের আশ্রয়' সমতুল্য- 'নিরাখালের খোদা রাখাল' |
নিজ বাড়ী নিজ ভুবন- ইংরাজী প্রবাদ | ব্যক্তি নিজবাড়ীতে ইচ্ছামত যা খুশি করতে পারে। |
নিজে খুব ভালো, তাই পরকে বলে কালো | পরনিন্দুকের প্রতি ব্যঙ্গোক্তি। |
নিজে বাঁচলে বাপের নাম | পরের কথা পরে ভাবা যাবে, আগে নিজের কথা ভাবো; আত্মকেন্দ্রিক ব্যক্তি, যে নিজের স্বার্থ আগে দেখে। |
নিজে শুতে ঠাঁই পায় না শংকরাকে ডাকে | নিজের ঘর না সামলে পরের ঘর সামলাতে চায়; সমতুল্য- 'আপনি খেতে ভাত পায় না শঙ্করাকে ডাকে'। |
নিজের অজ্ঞতার পরিমাণ জানাটাই আসল জ্ঞান- কনফুসিয়াস | জ্ঞানী জানেন যে তিনি অনেক কিছু জানেন না। |
নিজের কথা পাঁচ/সাত কাহন | অপরকে উপেক্ষা করে আত্মপ্রচার করে যাওয়া। |
নিজের কেচ্ছা নিজেই গাওয়া | নিজের ঘরের দোষ বাইরে বলে বেড়ানো। |
নিজের কোলে ঝোল টানা | নিজের স্বার্থ আগে দেখা। |
নিজের ঘোল/দই কেউ মন্দ বলে না | নিজের দোষ কেউ দেখে না; নিজের জিনিষ মন্দ হলেও কেউ মন্দ বলে না। |
নিজের চরকায় তেল দাও | নিজের কাজে মন দাও; পরের কথায় থেকো না, পরের চর্চা করো না। |
নিজের চেয়ে পর ভাল; পরের চেয়ে জঙ্গল ভাল | তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে নেতিবাচক উপলব্ধি। |
নিজের ঢাক/ঢোল নিজে পেটায় | আত্মপ্রশংসা করা। |
নিজের ধন পরকে দিয়ে দেবকী মরে মাথাকুটে। | ভুল কাজ করে পরে আফশোষ করা। |
নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা | নিজের ক্ষতি হবে জেনেও কোন কাজ করে অপরের ক্ষতিসাধন করা; সমতুল্য- 'সতীনের বাটিতে গু গুলে খাওয়া'। |
নিজের পরমায়ু/বুদ্ধি ও পরের ধন/বয়স কেউ কম দেখে না | যে ধারণ মনে পোষণ করে তৃপ্তি পায় সেটাই এই প্রবাদ ব্যক্তি করে। |
নিজের পাঁঠা লেজে কাটি | নিজের ইচ্ছাই সব; নিজের ইচ্ছায় যা খুশি করা যায়; নিজের জিনিস যেভাবে খুশি ব্যবহার করা যায়। |
নিজের পাছায় ন মন গু, আমারে বলে তোর খান ধু | নিজের ত্রুটির দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে, একই ত্রুটি থাকার জন্য অন্যকে তিরষ্কার করে; সমতুল্য- 'চালুনি করে ছুঁচের বিচার', 'চালুনি বলে ছুঁচ তোর পিছে কেন ছ্যাঁদা' |
নিজের পায়ে কুড়াল মারা | অবিবেচকের মত নিজের ক্ষতি নিজেই করা। |
নিজের বুদ্ধিতে ছিল ভাল, পরের বুদ্ধিতে পাগল হল // নিজের বুদ্ধিতে তর, পরের বুদ্ধিতে মর // নিজের বুদ্ধিতে ফকির হই, পরের বুদ্ধিতে বাদশা নই | নিজের ওপর আস্থা রাখার পক্ষে ওকালতি। |
নিজের বেলায় আঁটিসাটি পরের বেলায় দাঁতকপাটি (খনা) // নিজের বেলায় আঁটিআঁটি, পরের বেলায় চিমটি কাটি | নিজেরবেলায় সবকিছু, পরেরবেলায় কিছু না; নিজে আঁটি বেঁধে নেয়, পরকে দেওয়ার সময় এক চিমটিতে যতটুকু (যৎসামান্য) ওঠে, দেয়। |
নিজের ভাই/বোন ভাত পায় না শালা/শালীর তরে মণ্ডা | কাছের লোক কাছের নয়; সমতুল্য- 'নিজের লোক নিজের নয়'; 'ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই'। |
নিজের ভাল দিকগুলো জেনে লাভ নেই | আত্মম্ভরিতা বেড়ে যায়; পরন্তু নিজের ত্রুটিগুলি নজর এড়ায়। |
নিজের ভালো পাগলেও বোঝে | নিজের ভালো সবাই বোঝে। |
নিজের মান নিজে রাখো, কাটা কান চুলদে ঢাকো | আত্মসম্মান বজায় রেখে চলার প্রতি ইঙ্গিত। |
নিজের লোক নিজের নয় | আত্মীয়রাই বেশি অনিষ্ট করে; সমতুল্য- 'আপন চেয়ে পর ভালো, পর চেয়ে জঙ্গল ভালো', 'বারো রাজপুতের তেরো হাঁড়ি', 'ভাইভাই ঠাঁই ঠাঁই', 'যত রক্তের কাছাকাছি তত রক্তারক্তি' ইত্যাদি'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'আপন কখনো পর হয় না', 'বসূধৈব কুটুম্বম' ইত্যাদি। |
নিতে জানে দিতে জানে না/নিতে পারি, দিতে পারি নে | সঙ্কীর্ণমনা; প্রতিদান দিতে পরাম্মুখ। |
নিদ নেই যোগীর আর নিদ নেই রোগীর | সাধনার জন্য যোগী ঘুমাবার সময় পায় না; অপরপক্ষে যন্ত্রণায় কাতর রোগী ঘুমাতে পারে না। |
নিদানকালে হরিনাম | সময়ের কাজ সময়ে না করে অসময়ে করার কোন ফললাভ হয় না; পণ্ডশ্রম। |
নিদানের বিধান নাই | পরমায়ু শেষ হলে কোন ওষুধ আর কজে আসে না। |
নিন্দা সৎলোকের কোন অনিষ্ট করতে পারে না। | সত্য কালিমালিপ্ত হয় না। |
নিবানো আগুন আর জ্বেলো না | পুরানো দুঃখের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে দুখীর দুঃখ আর বাড়িয়ো না। |
নিবৃত্তরাগস্য গৃহং তপোবনম | বাসনাহীন ব্যক্তির কাছে গৃহই তপোবন। |
নিম কখনো মিষ্টি হয় না | নির্গুণ চরিত্র বদলায় না, নির্গুণই থাকে। |
নিমতলা দিয়ে যাও নি, নিমফল কখনো খাও নি? | তির্যক/কু-অর্থে- কোন কু-কর্মের কি ফল তুমি জানো না? জানা উচিৎ ছিল। |
নিম তিতা নিসিন্দে তিতা তিতা মাকালফল; তার চেতে তিতা কন্যে বোন সতীনের ঘর | আপনার লোকেরাই বেশি অনিষ্ট করে; যত রক্তের কাছাকাছি তত রক্তারক্তি। |
নিম নিসিন্দে যেথা, মানুষ মরে না সেথা | নিম নিসিন্দে গাছের দ্রব্যগুণ আছে; বাতাসও স্বাস্থ্যকর এবং রোগনাশক; নিম নিসিন্দে গাছের উপস্থিতি অকালমৃত্যু রোধ করে। |
নিয়তিঃ কেন বাধ্যতে | নিয়তিকে বাধা দেবার কেউ নেই; যা হবার তাই হবে; অদৃষ্টের ফল কে খণ্ডাবে বল; সমতুল্য- 'ভাগ্যের লিখন না যায় খণ্ডন'। |
নিয়ম থাকলে নিয়মের ফাঁক আছে | কোন নিয়মই নিশ্ছিদ্র নয়। |
নিয়ম বড় বালাই | নিয়মের নিগড় বড় যন্ত্রণাদ্যয়কল গলায় বকলস কেউ পড়তে চায় না। |
নিয়মের জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্য নিয়ম | নিয়ম থেকে মানুষ বড়। |
নিরবতা হল প্রকৃত বন্ধু যে কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করে না- কনফুসিয়াস | নিরব থাকলে কখনো আহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। |
নিরস্তপাদপদেশে এরণ্ডোহপি দ্রুমায়তে | যেদেশে গাছ নেই সেই দেশে ভেরেণ্ডাও গাছের স্বীকৃতি পায়; যেখানে গুণী ব্যক্তি নাই সেখানে নির্গুণ ব্যক্তিও গুণবান বলে পূজিত হয়; অজ্ঞানের মাঝে অল্পজ্ঞানীরাও সমাদর পায়; সমতুল্য- 'আদাড়বনে শিয়াল বাঘ'; 'বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা', 'বাঁশবনে শিয়াল রাজা', 'ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল' ইত্যাদি; মূলশ্লোক- 'অপাত্রঃ পাত্রতাং যাতি...' |
নিরাখালের খোদা রাখাল | অসহায়কে ঈশ্বর রক্ষা করেন; যে অসহায় ঈশ্বর তার সহায়; সমতুল্য- 'নিগোঁসাইয়ের খোদাই রক্ষক'। |
নিরানব্বয়ের ধাক্কা | সঞ্চয়ের প্রবৃত্তি; অসঞ্চয়ীকে একবার সঞ্চয়ের নেশা ধরলে আর ছাড়ে না; কেনারাম আর ভোগীরাম হতে পারে না; মূল প্রবাদ- ধনীর চিন্তা ধন ধন নিরানব্বুইয়ের ধাক্কা'। |
নির্গুণ পুরুষের (আদরের) তিনগুণ ঝাল | পচা আদার মত নির্গুণ পুরুষের ঝাঁঝ বেশি হয়; গুণহীন পুরুষের ক্রোধের মাত্রা অন্যের তুলনায় বহুগুণ বেশি হয়; তার কথাবার্তা বড় কর্কশ হয়। সমতুল্য- নির্বিষ সাপের কুলোপানা চক্র। |
নির্ধনস্য কুতঃ সুখম? | নির্ধনের সুখ কোথায়? অভাগা সুখী হয় না। |
নির্ধনের ধন, অথর্বের যৌবন // নির্ধনের ধন হলে দিনে দেখে তারা | হঠাৎ বড়লোক এবং হঠাৎ সক্ষমব্যক্তি প্রচণ্ড অহঙ্কারী হয়ে সকলকে তুচ্ছজ্ঞান এবং ধরাকে সরাজ্ঞান করে। |
নির্বাণদীপে কিমু তৈলদানম। চৌরে গতে কিমু সাবধানম।। | নির্বাপিত দীপে তেল দিয়ে কি হবে? চোর পালিয়ে গেলে সাবধান হওয়ার কি বা প্রয়োজন? |
নির্বিষ সাপের কুলোপানা চক্র | গুণহীন পুরুষের শুধু মুখেই বড়াই; সমতুল্য- 'নির্গুণ পুরুষের তিনগুণ ঝাল'। |
নির্বুদ্ধি যদি উচ্চভাষে সুবুদ্ধি উড়ায় হেসে | জ্ঞানী ব্যক্তি অজ্ঞানের কথায় গুরুত্ব দেয় না। |
নিশাশেষোন্মেষোন্মুখকমলকোরকপমোত্তেজিতহৃদয়সূর্য-বঙ্কিমচন্দ্র | রাত্রিশেষে ফোটার জন্য উন্মুখ উত্তেজিত পদ্মকুঁড়ির মত পুরুষ হৃদয় |
নিষিদ্ধ ফল খেতে মিষ্টি | নিষিদ্ধ জিনিষের প্রতি মানুষের চিরন্তন আকর্ষণ থাকে। |
নিঃসারস্য পদার্থেস্য প্রায়েণাড়ম্বরো মহান | সারহীন বস্তুর আড়ম্বর প্রায়ই বেশি হয়। |
নিঃস্পৃহস্য তৃণং জগৎ | বাসনাকামনাহীন লোকের কাছ জগৎ তৃণবৎ তুচ্ছ। |
নীচব্যক্তি শত্রু হলে অনিষ্ট করে, মিত্র হলে লোকনিন্দা হয় | নীচব্যক্তির সংসর্গ সর্বদা পরিতজ্য। |
নীচো বদতি ন কুরুতে, বদতি ন সাধু করোত্যেব | নীচব্যক্তি বলে অনেক, কিন্তু করে না; সাধুব্যক্তি মুখে বলে না, কিন্তু কাজে প্রদর্শন করে। |
নীতিহীন মানুষেরা কাঁটাহীন ঘড়ির মত- আরবী প্রবাদ। | লক্ষ্যহীন মানুষের কাছ থেকে কিছু শেখা যায় না। |
নীরবতা হিরণময় | কিছু কিছু পরিস্থিতিতে চুপ থাকাই স্বর্ণতুল্য অর্থাৎ সবথেকে ভালো; সমতুল্য- 'বোবার শত্রু না'; বিরুদ্ধ উক্তি- প্রতিবাদ হীরকসমান |
নীরুজস্য কিমৌষধৈঃ? | নীরোগ ব্যক্তির ঔষধের প্রয়োজন কি? |
নুড়িপাথর হাজার বছর ঝরণায় ডুবে থাকলেও রসসিক্ত হয় না | নির্গুণ কোনদিন গুণী হয় না। |
নুতন নুতন ন'কড়া পুরাতন হলে ছ'কড়া | নতুন জিনিসের আদর বেশি; পুরাতন হলে আদর কমে; বিরুদ্ধ উক্তি- 'নুতন যোগীর ভিক্ষা নাই'; 'পুরানো চাল ভাতে বাড়ে'; 'পুরানো বন্ধু ও পুরানো মদ সর্বোৎকৃষ্ট'; 'পুরানো বন্ধুর চেয়ে ভাল আয়না হয় না' ইত্যাদি। |
নুতন যোগীর ভিক্ষা নাই | কোন কাজের শুরুর দিকে তেমন ফল পাওয়া যায় না। |
নুন আনতে পান্তা ফুরায় | কাজের জোগাড় করতে করতেই কাজের প্রয়োজন ফুরায়; দুখীর জীবনে অভাব মেটানোর চেষ্টাতেই সময় চলে যায়; একটা অভাব পূরণ হবার আগেই আরেকটি অভাব উপস্থিত হয়; অভাব আর মেটে না। |
নুন খাই যার গুণ গাই তার | উপকারীর উপকার করা/ঋণ স্বীকার করা; উপকারীর প্রতি উপকৃতের কৃতজ্ঞতা স্বীকার। |
নুন খেয়ে নিমকহারামি | উপকার নিয়ে উপকারীর ঋণ অস্বীকার করা; নিমকহারামি মহাপাপ। |
নুন খেলে গুণ মানি | উপকার পেলে উপকারীর ঋণ স্বীকার করা উচিৎ; অকৃতজ্ঞের নরকবাস। |
নূন ছাড়া ঘি/ভাত মাটি | সবারই পূর্ণতায় সহায় লাগে; প্রয়োজনে পরস্পরের সহযোগিতা লাগে। |
নেই কাজ তো খই ভাজ | অবসরে অকাজ করা; সমতুল্য- 'জমির অভাবে উঠান চষা'। |
নেই নাক তার গোঁফের বাহার | বিসদৃশ সাজ; আদিখ্যেতা, বাড়াবাড়ি। |
নেই মাথা তার মাথাব্যথা | অকারণে পরের বিষয়ে নাক গলানো; অনধিকার চর্চা। |
নেই-মামার চেয়ে কানামামা ভাল // নেই রুটির চেয়ে অর্ধেক রুটি ভাল | শূন্য হাত ভালো নয়; একেবারেই কিছু না থাকার চেয়ে অল্প পরিমাণে থাকা ভালো; বিপরীত প্রবাদ- দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল। |
নেংটি ইঁদুর পাহাড় কাটে | অতি ক্ষুদ্র শক্তিও বিরাট ক্ষতি করতে পারে। |
নেচে কুঁদে নাওরে জাদু মনের সুখে কবে যেতে হবে শিঙে ফুঁকে | যত পার সুখভোগ কর এই সংসারে দুবার আসবে না; সমতুল্য- যাবৎ জীবেৎ সুখং জীবেৎ ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ', 'হেসে খেলে দুদিন বইতো নয় কে জানে কখন কার সন্ধ্যে হয়'। |
নেপোয় (বাটপাড়) মারে দই | ধূর্তলোকের ধান্ধাবাজী; একজনের পরিশ্রমের ফল অসৎ উপায়ে অন্য ভোগ করে। |
নেবু কচলালে তেতো হয় | ভালো জিনিষেরও পুনরাবৃত্তি বিরক্তি উদ্রেক করে; বারবার মিষ্টি কথা শুনতেও ভালো লাগে না। |
নেবার কুটুম অনেক আছে দেবার তরে কেউ নেই // নেবার কুটুম দেবার নয় | নেবার বেলায় এক পা আগে, দেবার বেলায় আগে ভাগে। |
নেয়ের এক নৌকা, না-নেয়ের/নিনেয়ের শতেক নৌকা | যার গাড়ী আছে সে নিজের গাড়ী চড়ে; যার গাড়ী নেই সে যেকোন গাড়ী ভাড়া করতে পারে। |
নেশাতে বুক ফাটে, কুকুরে মুখ চাটে | নেশা না করতে পারলে নেশার জন্য বুক ফাটে; আবার নেশায় বুঁদ হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকলে ক্কুরে এসে মুখ চাটে; নেশুড়ে গল্প। |
নেহ ঘটত নিত পর ঘর যায়ে- হিন্দি প্রবাদ | পরগৃহে নিত্য যাতায়াত থাকলে আদর কমে। |
ন্যাংটার গলায় মোতির মালা১ | অযোগ্যের হাতে মহার্ঘবস্তু; সমতুল্য- 'বানরের গলায় মুক্তার মালা'। |
ন্যাংটার গলায় মোতির মালা২ | যার যা সাজে না তাতেই তার সজ্জা। |
ন্যাংটার নেই বাটপাড়ের ভয়১ | যার কিছু নেই, তার হারাবার কিছু নেই। |
ন্যাংটার নেই বাটপাড়ের ভয়২ | যে নির্লজ্জ, তার লোকনিন্দার ভয় নেই। |
ন্যাকা আদুরে/ঢঙী চালশে কানা, জল বলে খায় চিনির পানা | না-বোঝার ন্যাকামী; জেনেবুঝে লোককে বোকা বানাবার চেষ্টা; যদি কোন লোক জেনেশুনে উৎকৃষ্ট জিনিস নেয় এবং জিজ্ঞেস করলে বলে 'ভুল করে নিয়েছি', তার ক্ষেত্রে এই প্রবাদ প্রযোজ্য হয়। |
ন্যাকা, বোকা, ঢলঢলে কাছা, এই তিনে প্রত্যয় করো না বাছা | যে জেনেবুঝে অজ্ঞতা প্রকাশ করে তাকে প্রত্যয় করা নেই; যে কিছু বোঝে না তাকে প্রত্যয় করা নেই; এবং যে সববিষয়ে আলগা তাকে প্রত্যয় করা নেই। |
ন্যাকড়ায় আগুন | যে আগুন ধিকিধিকি করে ভিতরে জ্বলে যে আগুন সহজে নেবে না; মনের ভিতরে ধিকিধিক করে জ্বলা চাপা থাকা রাগ; ধীরে ধীরে চলা কাজ, যা শেষ হতে চায় না। |
ন্যাড়া আর কখনো/কি বেলতলায় যায়? // ন্যাড়া বেলতলায় একবার যায় // ন্যাড়া বেলতলা দু’বার যায় না | অভিজ্ঞতা সতর্ক হতে শেখায়; ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকে; যে একবার ঠেকেছে সে দ্বিতীয়বার সেই কাজে এগোয় না; সমতুল্য- 'গরম জলে ছ্যাঁকা খাওয়া কুকুর জল দেখলে ভয় পায়', 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়', 'চূন খেয়ে গাল পোড়ে, দই দেখলে ভয় করে' 'দগ্ধ শিশু আগুন দেখলে ভয় পায়' ইত্যাদি। |
ন্যাড়া মাথায় খোঁচার ভয় | যার ত্রুটি আছে সে তার ত্রুটিসম্পর্কে সচেতন থাকে। |
ন্যাড়া মাথার জন্য় বক্স-উড চিরুনী (দামী জাপানী চিরুনী)- তুর্কী প্রবাদ // ন্যাড়া মাথায় খুশবু তেল | সাধ্যের অতীত অর্থব্যয়। |
ন্যাড়ার নেই বাটপাড়ের ভয় | মুর্খের শত্রুভয় নেই। |
ন্যাবা চোখ সব হলুদ দেখে | পক্ষপাতদুষ্ট লোকের কাছে সবই মন্দ। |
প
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
পকেট খালি তো মুখ কালি | অর্থের টানাটানিতে মন চিন্তায় পোড়ে। |
পকেট ভারি তো মন হালকা | অর্থ থাকলে সব আকাঙ্খা মেটে, মেজাজ ফুরফুরে থাকে। |
পঙ্কো হি নভসি ক্ষিপ্তঃ ক্ষিপ্তু পততি মূর্ধানি | আকাশে পাঁক ছুঁড়লে সেটা যে ছোঁড়ে তার মাথায় এসে পড়ে। |
পচা আদা, ঝালের গাদা | পচা আদায় ঝাল বেশি; মন্দলোক মরার মুহূর্তেও আরও মন্দ হয়ে মারা যায়। |
পচা শামুকে পা কাটা | অতিসতর্ক থেকেও সামান্য ভুল করা; বিশ্বাস করে বিপদে পড়া; মন্দলোকদ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ইত্যাদি। |
পঞ্চ ক্ষিপ্রং বিনশ্যন্তি স্তব্ধো লুব্ধশ্চ যো নরঃ। অভিমানী চ কামী চ গুরুদ্বেষী তথৈব চ।। (চাণক্য) | নির্বোধ, লোভী, অভিমানী, কামুক ও গুরুজনবিদ্বেষী- এই পাঁচপ্রকার পুরুষ দ্রুত বিনাশ পায়। |
পঞ্চভির্মিলিতোই কিং যজ্জগতী হ ন সাধ্যতে | পাঁচজন মিলে করলে জগতে কোন কার্য না সিদ্ধ হয়? সমতুল্য- 'দশের লাঠি একের বোঝা'। |
পটল তোলা | মৃত্যমুখে পতিত হওয়া (উৎস-গাছ থেকে সব পটল একবারে তুলে নিলে গাছটির মৃত্যু হয়; সেইজন্য কিছুকিছু করে তুলতে হয়)। |
পট্টবস্ত্রে গুঞ্জফল মূল্য নাহি হয়, ছিন্নবস্ত্রে মোতির মূল্য নাহি হয় ক্ষয় | দামীকাপড়ে কুঁচফল থাকলেও সেটা দামী হয় না; ছেঁড়াকাপড়ে মোতি থাকলেও সেটার মূল্য কমে না। |
পড়ল কথা সভার/হাটের মাঝে, যার কথা তার গায়ে/বুকে বাজে | নাম না করে সমালোচনা করলেও যাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, সে ঠিক বুঝে যায়; দোষ নিয়ে আলোচনাকালে কেউ যদি প্রতিবাদ করে তবে ধরে নেওয়া হয় যে সেই আসলে। |
পড়লে কথা বুঝতে নারে সেই বা কেমন পড়শী, ছিপ ফেললে মাছ খায় না সেই বা কেমন বঁড়শী | পড়শী পরস্পর ঘনিষ্ট হলে একে অন্যের মনোভাব জানতেঁ পারে; বঁড়শী ভালো হলে মাছ সহজে গাঁথে। |
পড়লে কথা বুঝতে নারে সেই বা কেমন মেয়ে, হাল নাই কাছি নাই সেই বা কেমন নেয়ে | সাধারণতঃ স্ত্রীলোকেরা একটু চতুর হয়; ইঙ্গিত-ইসারা সহজে বুঝতে পারে; যদি না পারে তবে সে অতি নির্বোধ; ভাল নেয়েরও হাল, কাছি ইত্যাদি থাকা উচিৎ। |
পড়লো ফাগুন তো উঠল আগুন | ফাগুনমাস এলেই গরম পড়তে শুরু করে। |
পড়শী না বঁড়শি? | সাধারণতঃ প্রতিবেশীরা পরস্পরের ঘনিষ্ট হয় না, বরঞ্চ শত্রুভাবাপন্ন হয়। |
পড়শীর মুখ না আরশির মুখ? | বিরুদ্ধমতে- কাছের মানুষ মনের মানুষ হয়; পরস্পর সমমনোভাবাপন্ন হয়; পড়শীর সাথে যেমন ব্যবহার করবে সেও তেমন ব্যবহার করবে। |
পড়িলে ভেড়ার শৃঙ্গে হীরার ধারও ভাঙে | শক্তপাল্লায় পড়লে সেয়ানাও জব্দ হয়; ভেড়ার কাছে যেমন হীরার কোন দাম নেই তেমনি নির্গুণের কছে গুণের কোন আদর নেই। |
পড়ুক বা না পড়ুক পো, সভায় নে গে থো | ছেলে লেখাপড়া শিখুক বা না শিখুক তাকে জ্ঞানীদের মাঝে রেখে দেবে; তাতে সে অনেক জ্ঞান লাভ করবে। |
পড়ে দিয়ে পদ্মনাভ | ইচ্ছা করে ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম নয়; আকস্মিকভাবে হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়েছে; তাই প্রণাম স্বীকার; ; দায়ে পড়ে কার্যগতিতে কোন ভালো কাজ করে ফেলা; সমতুল্য- ' উচোট খেয়ে প্রণাম'; 'হুঁচোট/হোঁচট খেয়ে প্রণাম'। |
পড়ে পাওয়া চোদ্দ-আনা | অযাচিত অর্থপ্রাপ্তি; অনায়াসলব্ধ অর্থ; বিনাপরিশ্রমে প্রাপ্ত অর্থ। |
পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার ষোল আনাই লাভ // পড়ে পাওয়া টাকার ষোল আনাই লাভ | অনায়াসলব্ধ অর্থের সম্পূর্ণটাই লাভ। |
পড়ে পাশা তো যেতে চাষা | কপাল ফিরলে হতভাগ্যও সৌভাগ্যবান হতে পারে বা নির্ধনও ধনী হতে পারে। |
পড়েছি মোগলের/যবনের হাতে খানা খেতে হবে সাথে | চাপে/বিপদে পড়ে পরের মর্জিতে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করা; দুষ্টচক্রের পাল্লায় তাদের নির্দেশে দুস্কর্ম করা। |
পণেক পেলে ক্ষণেক গায়, কাহনেক পেলে দিনভর গায় | অল্প উপকার পেলে অল্পদিন মনে রাখে; বেশি উপকার পেলে দীর্ঘদিন মনে রাখে; এমন বিচিত্রলোকও আছে। |
পণ্ডিত শেখে দেখে, মূর্খ শেখে ঠেকে | পণ্ডিত অপরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেয়; নির্বোধ আক্কেলসেলামী থেকে শিক্ষা নেয়। |
পণ্ডিতে চ গুণাঃ সর্বে মূর্খে দোষা হি কেবলম্। তস্মান্মূর্খসহস্রেভ্যঃ প্রাজ্ঞ একো বিশিষ্যতে॥ (চাণক্য) | পণ্ডিত সব গুণ এবং মূর্খ সব দোষের আধার; সেইকারণে সহস্র মূর্খ থেকে একজন পণ্ডিত বেশি বিশিষ্ট হন। পণ্ডিত ও মূর্খের প্রভেদ |
পতি পূণ্যে সতীর পূণ্য | খরচ কমাবার জন্য তীর্থক্ষেত্রে পত্নী নিয়ে না নিয়ে যাওয়ার বাহানা, তির্যোক্তি। |
পথ চলবে জেনে, কড়ি নেবে গুণে | জেনেশুনে কাজ কর; লাফাবার আগে লক্ষ্য কর; চলত্যেকেন পাদেন তিষ্ঠত্যেকেন বুদ্ধিমান। |
পথ ভাবে আমি দেব, রথ ভাবে আমি; মূর্তি ভাবে আমি দেব, হাসে অন্তর্যামী | আত্মম্ভরিতায় কেউ 'আমি'র খোলস ছাড়তে পারে না। |
পথি নারী বিবর্জিতা১ | বাইরে অপরিচিতা নারীর সংস্পর্শ এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ; (মূলশ্লোক- আসনং চালয়েৎ দৃষ্টা...) |
পথি নারী বিবর্জিতা২ | সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গী থেকে চলার পথে আপন নারীকেও বাদ দিয়ে চলার পরামর্শ। |
পথে পেলাম কামার, দা গড়ে দে আমার | দেখনবাই; কাজের লোক নজরে পড়লেই কাজের কথা মনে পড়ে। |
পথে হাগে আবার চোখ রাঙায় | দোষ করে আবার বললে রাগ করে। |
পথের গু রথে যায় | পথ দিয়ে যাওয়ার সময় পথের বিষ্ঠা রথের চাকার সাথে জড়িয়ে যায়। |
পথের বাঁকে পথ শেষ হয় না, যদি না তুমি ফিরতে অক্ষম হও- ইংরাজী প্রবাদ | জীবনে পদেপদে সমস্যা আসে; একটা সমস্যাতে জীবন শেষ হয় না; চলার কোন শেষ নেই; এগিয়ে চলার প্রতি ইঙ্গিত। |
পয়ঃ সিঞ্চতে নিত্যং ন নিম্বু মধুরায়তে | নিত্য দুধ ঢাললেও বা দুধে ভিজিয়ে রাখলেও নিম কখনো মিষ্টি হয় না। |
পয়ঃনালি দিয়ে গঙ্গাজল বয় না | মন্দলোক ভাল কাজ করে না।; মন্দলোকের মুখ দিতে কোন ভাল কথা বার হয় না। |
পয়ঃপানং ভুজঙ্গানাং কেবলং বিষবর্ধনং | সাপকে দুধ খাওয়ালে শুধু বিষ বৃদ্দধি পায়। |
পয়সা জমে টাকা হয় | সঞ্চয়ের প্রবৃত্তি থাকা উচিৎ; তিল কুড়িয়ে তাল হয়; রাই কুড়িয়ে বেল হয়। |
পয়সা থাকলে বেয়াই-এর বাপের শ্রাদ্ধ হয়; না থাকলে নিজের বাপের শ্রাদ্ধ হয় না | অর্থ থাকলে বাজে খরচ করা যায়, অর্থাভাবে দরকারী খরচ হয় না। |
পয়সা দিয়ে খাই দই, কি করবে মোর গয়লা সই | ধারে খেলে ভয়, সঙ্কোচ থাকে; নগদ খায় বলে কারো ধার ধারে না। |
পয়সা দিলে বাঘের দুধ মেলে | পয়সা থাকলে যেকোন দুস্প্রাপ্য জিনিষ কেনা যায়। |
পয়সা পেলে কাঠের ঘোড়া (ধর্মরাজ) নড়েচড়ে/হাঁ করে | ভগবানও ঘুষ খায়; ঘুষের দাপট; ঘুষ ছিল, ঘুষ আছে, ঘুষ থাকবে। |
পয়সায় পয়সা আসে | যার অর্থ আছে তার অর্থাগম হয়; সমতুল্য- 'জলে জল বাঁধে'। |
পর আর পরমেশ্বর | যার আত্মীয়স্বজন নেই তার সহায় হল পর আর পরমেশ্বর। |
পর কখনও আপন হয় না | পরকে যতই যত্ন করা হোক-না-কেন সে সবসময় পরই থাকে, আপন হয় না; আত্মা ছাড়া কেউ আপন নয়। |
পর কি বোঝে পরের ব্যথা | যার যন্ত্রণা সেই বোঝে যন্ত্রণার জ্বালা কি; অন্যের পক্ষে সেটা অনুভব করা সম্ভব নয়। |
পর রেখে ঘর নষ্ট | পরকে ঘরে পুষলে ঘরের শান্তি নষ্ট হয়। |
পরতরফে খায় ঘি, তার আবার খরচ কি? | ঘরজামাইয়ের খরচ নেই। |
পরদার পাপ বলে বাঁদী রাখে নাই; দুঃখভোগ হেতু হিন্দু করেছে গোঁসাই | পরনারী ভোগে সবজাতই বজ্জাত, এক গোয়ালের গরু। |
পরদারাং পরদ্রব্যং পরীবাদং পরস্য চ। পরিহাসং গুরোঃ স্থানে চাপল্যঞ্চ বিবর্জয়েৎ॥ (চাণক্য) | পরস্ত্রী, পরদ্রব্য, পরনিন্দা, পরকে উপহাস এবং গুরুজনের সামনে চপলতা পরিত্যাজ্য (বর্জনীয় কি কি) |
পরনিন্দা অধোগতি // পরহিংসা নরকে বাস | পরনিন্দা করা মহাপাপ; পরনিন্দা, পরহিংসা করলে নরকে স্থান হয়। |
পরোপকারঃ পূণ্যায়, পাপায় পরপীড়নম্ | পরোপকার পূণ্যের, পরপীড়ন পাপ। |
পরপ্রত্যাশী দুপোর (=দুই প্রহর) উপোসী // পরপ্রত্যাশীর অন্ন জোটে না | পরমুখাপেক্ষীর ভাগ্য ভাল হয় না। |
পরপ্রত্যাশী নর গাছে উঠে মর | যে সব বিষয়েই পরের সাহায্যের অপেক্ষায় বসে থাকে তার মরাই ভালো। |
পরভাতি তবু সয় পরঘরী/ভাতারি কিছুতে নয় // পরভাতি হলেও পরভাতারি হতে নাই // | গ্রাসাচ্ছাদনের জন্য পড়ের উপর নির্ভর কয়ড়া যায়, কিন্তু পরপুরুষের উপর নির্ভর কয়ড়া অনুচিত। |
পরশ্রীকাতর ব্যক্তি সব থেকে বেশি অসুখী হয়-আরবী প্রবাদ | হিংসুটে মানুষ বড় দুর্ভাগা হয়। |
পরহস্তং গতা গতাঃ | পরের হাতে কিছু ছাড়তে নেই; তাতে সব যাবে। |
পরিতে হবে শাঁখা, তবে কেন মুখ বাঁকা | ভালো জিনিষ যখন পেতে চাও, তখন পরিশ্রমে বিমুখ কেন? |
পরিশ্রম সাফল্য চাবিকাঠি | পরিশ্রম সৌভাগ্যের মূল; পরিশ্রমের বিকল্প নেই। |
পরিশ্রমী কখনো দুঃখী হয় না | পরিশ্রমীকে ভাগ্যলক্ষ্মী সাহায্য করেন। |
পরিস্কার বিবেক বজ্রপাতেও শান্তিতে ঘুমায় | পরিস্কার বিবেকের মনের শান্তি কোনভাবে বিঘ্নিত হয় না। |
পরুষ্কারেণ বিনা দৈব ন সিদ্ধতি | শুধু দৈব ভাগ্য ফেরাতে পারে না সঙ্গে দৈবনিরপেক্ষ প্রযত্ন বা উদ্যম থাকা চাই; সমতুল্য- অজ্ঞানে আকস্মিক ও দৈব ঘটনার যুক্তি খাড়া করে; বিরুদ্ধ উক্তি- ভাগ্যং ফলতি সর্বত্র, ন চ বিদ্যা ন পৌরুষম্। |
পরে তসর খায় ঘি, তার আবার খরচ কি | অর্থ স্পষ্ট; অতীতে এই দুই বস্তু আগে বিনাব্যয়ে পাওয়া যেত; সেইকারণে এই প্রবাদের সৃষ্টি; বর্তমানে অচল। |
পরের অনিষ্ট করতে গেলে নিজের অনিষ্ট হয় | পরের অনিষ্ট চিন্তা করা পাপ। |
পরের কথা লাথি চাপড়, নিজের কথা ভাত কাপড় | পরচর্চা না করে নিজের কাজে মন দেওয়া উচিৎ; পরচর্চা, পরনিন্দায় নিরত থাকলে নিয়ত ঝগড়াঝাটি হয়; নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকলে অন্নের সংস্থান হয়। |
পরের কাজটা পরে করি | ধান্ধাবাজী। |
পরের কাপড়ে ধোপার নাট | ধোপা পরের কাপড় পরে বাবুগিরি করে; এই ভাবার্থে যে পরের জিনিষে বাবুগিরি করে। |
'পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও, তার মতাে সুখ কোথাও কি আছে আপনার কথা ভুলিয়া যাও' | শুধু ব্যক্তিগত সুখ অন্বেষণ করে কেউ সুখী হতে পারে না; আমিত্ব নিয়ে বাঁচা যায় না; বাঁচতে গেলে সহায় চাই; সমতুল্য- 'স্বার্থমগ্ন যে জন বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে সে কখনো শেখেনি বাঁচিতে' |
পরের গাছের আমটি মিষ্টি | মানুষ ঈর্ষাকাতরতায় ভোগে। |
পরের গোয়ালে গোদান | পরের ধন দান করে পূণ্য সঞ্চয় করা। |
পরের ঘরে খায় দায়, আঠারো মাসে বছর যায় | চিন্তাভাবনাহীন অপদার্থ; গোকুলের ষাঁড়। |
পরের ঘাড়ে বন্দুক রেখে শিকার | নিজের বিপদে অপরকে এগিয়ে দিয়ে কৌশলে কার্যসিদ্ধি। |
পরের ঘোল খাবার লোভে নিজের গোঁফ কামায়। | লোভীচরিত্র; ভালো জিনিষ দেখলে সকলেরই লোভ হয়; কিছু পাওয়ার আশায় উৎফুল্ল। |
পরের চাল পরের ডাল, নদে করেন বিয়ে | আড়ম্বরের সাথে পরের ধনে নিজের কার্যসিদ্ধি করা। |
পরের ছেলে/বিড়াল খায় বনে পানে চায় | পরের ছেলে বা বিড়ালকে যতই আদরযত্ন কর-না-কেন সুযোগ পেলেই সে পালাবে। |
পরের ছেলেটা খায় এতটা, বেড়ায় যেন বাঁদরটা; নিজের ছেলেটি খায় এতটি, বেড়ায় যেন লাটিম্টি | পরের ছেলের প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্য; পরের কিছুই ভালো নয়, নিজের সব কিছুই ভালো। |
পরের ছেলে মোটাই/হাঁদাই // পরের ছেলের বুদ্ধি কম | পরের ছেলের সবকিছু মন্দ। |
পরের ছেলেয়/পুতে বরের বাপ | চালবাজি; পরের ছেলের বিয়েতে বরকর্তা সেজে কর্তৃত্ব করা। |
পরের জন্য গর্ত খোঁড়ে, নিজেই তাতে মরে পড়ে // পরের জন্য ফাঁদ পাতে, আপনি পড়ে মরে তাতে | পরের ক্ষতি/মন্দ করতে গেলে নিজের ক্ষতি/মন্দ আগে হয়। |
পরের ঘি পেলে প্রদীপে দেয় ঢেলে // পরের ঘি সহজে পেলে, প্রদীপ দেয় দুয়ারে মেলে | পরের জিনিষের অপচয়; হেলেফেলায় পরের দ্রব্য ব্যবহার করা অনুচিৎ। |
পরের জিনিষ পায়, হেগো পোঁদে খায় | পরের জিনিষ পাওয়া গেলে সেটি হস্তগত করার আপ্রাণ চেষ্টা করে। |
পরের তেলে কাপড় নষ্ট | পরের দ্রব্য ব্যবহারের অধিকার পেলেও তার অপচয় করতে নেই। |
পরের দুঃখ কেউ বোঝে না | আত্মসর্বস্বতা; মানুষ নিজেকে নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে। |
পরের দুধে দিয়ে ফুঁ, পুড়িয়ে এলেন নিজের মু | পরের কাজে ব্যস্ত থেকে নিজের কাজ নষ্ট করা; পরের ইষ্ট করতে গিয়ে নিজের অনিষ্ট করা; পরোপকার নিন্দনীয় নয়। |
পরের দেখে তোলে হাই, যা আছে তাও নাই | পরের উন্নতি দেখে ঈর্ষান্বিত হলে নিজের অবনতি বই উন্নতি হবে না;পরের সৌভাগ্য দেখে বসে থাকলে নিজের ভাগ্যও বসে থাকবে। |
পরের ধন আপন ছালা, যত ইচ্ছা ভরে ফেলা | মাগনায় জিনিষ পেলে ঘরে এনে ভর্তি করা; যেন মাগনায় পেলে দাদের মলমও খাওয়া যায়- এমন মানসিকতা। |
পরের ধন নিজের বুদ্ধি কেউ কম দেখে না // পরের বয়স, নিজের পরমায়ু কেউ কম দেখে না | একদর্শিতা; বিচারে এড়া; যে ধারণয় মন তৃপ্ত হয় সেটাই যেন ঠিক; নিজের বেলায় আঁটিসুটি পরের বেলায় দাঁতকপাটি। |
পরের ধনে পোদ্দারি/পোদ্দারগিরি, লোকে বলে লক্ষ্মীশ্বরী | উঁচু মেজাজে পরের ধন খরচ করা; পরের সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে নিজেই সেই সম্পদ ভোগ করে লাটসাহেবি করা। |
পরের ধনে বরের বাপ | মেয়ের বাপের কাছ থেকে বরপণ নিয়ে সেই টাকা খরচ করে বরের বাপের বড়লোকি চাল। |
পরের পিঠে বড় মিঠে // পরের বাড়ির/হাতের পিঠা খাইতে বড়ই মিঠা (খনা) | বিনাব্যয়ে পাওয়া জিনিষ বড়ই আদরের হয়। |
পরের ভাতে কুকুর পোষা | পরের পয়সায় শখ মেটানো। |
পরের ভাতে বেগুন পোড়া | মাগনায় জিনিষ পেয়ে কিছু খরচ করে নিজের মনোমত করে নেওয়া। |
পরের মন আঁধার কোণ | পরেরটা ভালো নয়; পরের মনে ঠিক কি খেলছে বোঝা দায়। |
পরের মাথা কেটে নাপিত // পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙে নিজে খায় কোষ // পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙে নিজের গোঁফে তেল | অন্যকে কষ্ট দিয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করা। |
পরের মাথায় দিয়ে হাত কিরা/দিব্বি করে নির্ঘাত | কিরায় ক্ষতি হ'লে অন্যের সেটা হোক, নিজের ক্ষতি না হ'লেই হল। |
পরের মাথায় হাত বুলানো | পরের জিনিষ আত্মসাৎ করা। |
পরের মুখে ঝাল খাওয়া | নিজে না বুঝে অন্যের কথায় বিশ্বাস স্থাপন করা। |
পরের লেজে পড়লে পা তুলোপানা ঠেকে, নিজের লেজে পড়লে পা আগুনপানা ঠেকে | পরের স্বার্থে সহজে নাক গলায়; নিজের স্বার্থে লাগলে ক্ষিপ্ত হয়; পরের উপর দৌরাত্ম করতে ভালোবাসে, নিজের উপর দৌরাত্ম হলে ক্রুদ্ধ হয়। |
পরের সুখ কাড়তে যেও না নিজের সুখ হারিয়ে যাবে | পরের ক্ষতি করতে নিজের ক্ষতি হয়। |
পরের সোনা দিও না কানে, কেড়ে নেবে হ্যাঁচকা টানে // পরের সোনা দিও না কানে, কান যাবে তোমার হ্যাঁচকা টানে | পরের টাকা পয়সায় বাবুগিরি করা অনুচিৎ; শখ্যতা বিগড়ালে দু'কথা শুনিয়ে দিতে পারে। |
পরের হাতে ধন, পেতে অনেকক্ষণ // পরের হাতে ধন, যেতে কতক্ষণ | পরের দায়িত্বে টাকাপয়সা থাকলে সেটা গেছেই ধরে নিতে হবে; পরহস্তং গতা গতাঃ। |
পরোপকার করে যাও কিন্তু কৃতজ্ঞতা প্রত্যাশা করো না- কনফুসিয়াস | নিঃস্বার্থ সেবাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম। |
পরোক্ষে কার্যহন্তারং প্রত্যক্ষে প্রিয়বাদিনম। বর্জয়েৎ তাদৃশ্যং বন্ধুং বিষকুম্ভং পয়োমুখম্॥ (চাণক্য) | যে বন্ধু সামনে মিষ্টিকথা বলে আর পিছনে ক্ষতি করে তার মনে বিষ ও মুখমিষ্ট; এমন বন্ধু পরিত্যাজ্য। |
পর্বত মহম্মদের কাছে না গেলে মহম্মদ পর্বতের কাছে যাবে | উপকৃত নয় আসলে উপকারীই উপকৃতের কাছে যাবে এই অর্থে প্রবচনটি ব্যবহৃত হয়। |
পর্বতের আড়ালে আছি | ভাল অভিভাবকের রক্ষণে থাকা, যাতে গায়ে কোন আঁচ না লাগে। |
পর্বতের মূষিক প্রসব | বিরাট কর্মকাণ্ডের অতি তুচ্ছ পরিণাম; সমতুল্য- অজার যুদ্ধে আঁটুনি সার। |
পর্বতো বহ্নিমান্ ধুমাৎ | ধোঁয়া থাকলে আগুন আছে; সমতুল্য- 'অকারণে কিছু হয় না','কার্য থাকলে কারণ আছে' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'অকারণে হৈচৈ', 'মাথা নেই তার মাথাব্যথা' ইত্যাদি। |
পলতা গাছে পটল ফলেছে // পাঁকের মাঝে পদ্ম ফুটেছে | কুবংশে সুসন্তান জন্মেছে (পলতা তেতো,পটল মিষ্টি); নির্গুণের ঘরে গুণী সন্তান জন্মেছে; দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ। |
পশ্চিমে ধনু নিত্য খরা, পূর্বে ধনু বর্ষে ধারা- খনা | পশ্চিম আকাশে রামধনু উঠলে খরা হয়; পূব আকাশে রামধনু উঠলে অতিবৃষ্টি হয়। |
পশ্চিমে সূর্যোদয় | অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না; সমতুল্য- অশ্বডিম্ব, আঁটকুড়ের ব্যাটা, আকাশকুসুম, এঁড়ে গরুর দুধ, কাঁঠালের আমসস্ত্ব, ঘোড়ার ডিম, ভস্মকীট, সোনার পাথরবাটি, সোনার হরিণ; সাপের পাঁচ-পা ইত্যাদি; সমতুল ইংরাজী প্রনাদ-A square peg in a round hole |
পহেলে দর্শনধারী, পিছে গুণবিচারী- হিন্দি প্রবাদ | আগে রূপ আকর্ষণ করে; গুণের বিচার তারপর হয়; সমতুল্য- 'ঠাঁট-ঠমকে বিকোয় ঘোড়া', যো দেখতা হ্যায় উও বিকতা হ্যায়'; বিরুদ্ধ উক্তি- রূপের চেয়ে গুণের কদর বেশি'। |
পাঁকালমাছের গায়ে পাঁক লাগে না | সংসার নিস্পৃহ ব্যক্তি সংসারে থাকলেও সংসারের সমস্যায় নিজেকে জড়ায় না; নির্লিপ্তভাবে সংসারের কাজ করা। |
পাঁচ আঙুল সমান হয় না | সব লোক সমপ্রকৃতির হয় না; ভিন্ন রুচির্হি লোকঃ। |
পাঁচজনে মিলেমিশে থাকলে দুঃখ অনুভূত হয় না | একাকীত্ব দুঃখের প্রথম উৎস। |
পাঁচদিন চোরের একদিন গৃহস্থের/সাধুর | অন্যায় করে কেউ পার পায় না; অন্যায়ের শাস্তি একদিন পেতেই হবে। |
পাঁচ নকলে আসল খাস্তা, সাত নকলে আসল ভেস্তা | কয়েকটি নকল ঠিক আছে; বহু নকল করতে গেলে মূল হারিয়ে যায়, খুঁজে আর পাওয়া যায় না। |
পাঁচ পাগলের ঘর, খোদা রক্ষা কর // পাঁচ সতীনের ঘর খোদা রক্ষা কর | কাজ সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার পথে সংখ্যাধিক্য বাধাস্বরূপ; সংসারে সতীন থাকলে ঝঞ্জাট লেগেই থাকে। |
পাঁচ রবি যে মাসে পায় ঝরা কিংবা খরায় যায়- খনা | যে বৎসর একটি মাসে পাঁচটি রবিবার পরে সেই মাসে অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি হবে। (রবিবার দোষে অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি) |
পাঁচ হাত বুকের পাটা | অতি সাহসী ব্যক্তি। |
পাঁচো আঙ্গুলি ঘি মে-হিন্দি প্রবাদ | সবদিক থেকে ল্সাভ। |
পাঁচশ জুতা গুণে খায়, ফুলের ঘায়ে মুর্ছা যায় | কখনো অসংখ্য গালাগালি সহ্য করে, কখনো বা একটা কটুকথায় জ্বলে উঠে। |
পাঁড়ে জী পছ্তায়ে বহী চালা গুড় নহি খায়ে | সাধাসধি করা সত্বেও না খেয়ে পরে নিজে থেকে সেই খাবার খাওয়া; সাধলে জামাই খান না শেষে জামাই পান না। |
পাঁশ (ছাই) পেড়ে কাটি, ভুঁয়ে না রক্ত পড়ে | ক্রোধের অভিব্যক্তি; খুব রাগের গালি। |
পা ঢাকে তো (চাদরে) মাথা ঢাকে না, মাথা ঢাকেতো পা ঢাকে না | অপ্রতুলতা; অর্থের টানাটানি; কৃচ্ছতার জন্য খেদোক্তি; সমতুল্য -কাছা দিতে কোঁচা আঁটে না, কোঁচা দিতে কাছা আঁটে না |
পা পিছলে পড়ে যাওয়া লজ্জার নয়, সময়মত উঠতে না পারাটা লজ্জার- আরবী প্রবাদ | পড়াটা অক্ষমতা নয়; উঠে খাড়া হতে না পারাটায় অক্ষমতা, দৈন্যতা প্রকাশ পায়। |
পা রাখার জায়গা না দেখে/পেলে পা তুলো না | ভেবেচিন্তে কাজ করার উপদেশ; চলৎ একেন পাদেন তিষ্ঠতি একেন বুদ্ধিমানঃ। |
পা না ভিজল যার, বড় কৈমাছটা তার | পরের পরিশ্রমের ফলে ভাগদারীর অন্যায় দাবি; একটুও না খেটে বেশিভাগ পাওয়ার অন্যায় দাবী। |
পা বড় না পেট বড়? | পা চলে বলে অন্ন জোটে, নাকি অন্ন জোটে বলে পা চলে? চিরকালের অমিমাংসিত দ্বন্দ্ব। |
পাইলাম থালে, দিলাম গালে; পাপ নাই তার কোন কালে | মালিকানাহীন পড়ে থাকা জিনিস যে পাবে তার। |
পাকলে ডুমুর পড়ে মর | পাকা ডুমুর কোন কাজে লাগে না, এই অর্থে- বৃদ্ধলোকের কোন দাম নেই; বৃদ্ধলোক বিদায় হোক। |
পাকা আম দাঁড়কাকে খায় | অযোগ্যের উত্তমসামগ্রী ভোগ করা দেখে খেদোক্তি; সুন্দরী নারীর কুৎসিত পুরুষ-সঙ্গী হওয়া দেখে খেদোক্তি। |
পাকা আম দাঁড়কাকে ঠোকরায় | লোভীচরিত্র; ভালো জিনিষ দেখলে সকলেরই লোভ হয়; পাক বা না পাক একবার পেতে চেষ্টা করে। |
পাকা ধানে মই দেওয়া | প্রায় শেষ হয়ে আসার মুখের কাজ পণ্ড করা; সাফল্যের মুখে অন্যের অনিষ্ট করা। |
পাকা লোক ফাঁকা কথায় ভোলে না | চালাককে বোকা বানানো যায় না। |
পাখি উড়ে যায় তার পালকের গুণে | দক্ষব্যক্তি তার দক্ষতার গুণে কাজ সুসম্পন্ন করে; দক্ষতা থাকলে কাজে অসুবিধা হয় না। |
পাখি পড়া মত পড়ানো | কাউকে এক বিষয়ে বারবার উপদেশ দেওয়া। |
পাখির প্রাণ অল্পেই যান | ক্ষীণজীবী সহজে কাবু হয়। |
পাগল কি গাছে ফলে, আক্কেলেতে পাগল বলে | আক্কেল গেলেই লোকে পাগলামি করে; পাগলামি করলে লোকে পাগলই বলবে। |
পাগল না ছাগল // পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কিনা খায় | উভয়ই সমান; উভয়েরই কোন জ্ঞানগর্মী নেই, খাদ্যাখাদ্যের বাছবিচার নেই। |
পাগলা ভাত খাবি, না হাত ধোব কোথায়? | কাউকে কোন কাজের প্রস্তাব দিলে সে সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তুত। |
পাগলা সাঁকো নাড়িস নে, ভাল মনে করে দিয়েছিস | পাগলকে সাঁকো নাড়ারে বারণ করলে সে ঘনঘন নাড়ে আর জোরে জোরে সাঁকো নাড়ায়; অনেক বেয়াড়া লোক আছে যাকে কোন কাজ করতে নিষেধ করলে সেটা বেশি করে; না-সূচক বাক্যে প্রবৃত্তি জাগিয়ে দেওয়া। |
পাগলা নাও ঝুলাইস/দোলাস না; কী–আমি তো বাতায় খাড়া। | সেয়ানা পাগল; বাতা খোলা চালের ঢালু মুখ; সুততাং সে আরও বিপজ্জনক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। |
পাগলের গোবধে আনন্দ | এড়ালোক অন্যায় কাজ করেও আনন্দ পায়; নির্বোধের পাপপূণ্য বোধ নেই; সমতুল্য-অবোধের গোবধে আনন্দ |
পাগলের সাত খুন মাপ | পাগলের কোন শাস্তি হয় না। |
পাঠান মুঘল হদ্দ হল, ফারসি পড়ে তাঁতি | কঠিন কাজে অর্বাচীনের আগবাড়ানো দেখে বক্রোক্তি; চন্দ্র সূর্য অস্ত গেল, জোনাকি ধরে বাতি। |
পাণৌ পয়সা দগ্ধে তক্রং ফুৎকৃত্য পামরাঃ পিবন্তি | গরমদুধে মুখ পুড়লে নির্বোধেরা ঘোলে ফুঁ দিয়ে খায়; নির্বোধের কোনদিন বুদ্ধি হয় না। |
পাত্রপাত্রীর দেখা নাই, শুক্রবারে বিয়ে | অতি আগাম পরিকল্পনা; সমতুল্য- 'কালনেমির লঙ্কাভাগ', 'রাম না হতে রামায়ণ; |
পাথর জলে হাজার বছর ডুবে থাকলেও রসসিক্ত হয় না | নির্গুণ কখনো গুণী হয় না। |
পাথর পচে না // পাথরে ঘুণ ধরে না // পাথরে মরচে পড়ে না | গুণহীনের গুণ নষ্ট হয় না; নির্বোধের বুদ্ধি হয় না বুদ্ধিনাশও হয় না ইত্যাদি। |
পাথরে লেখা মোছে না | পরিশ্রমের ফল বৃথা যায় না। |
পাথরের সেতু পার হওয়ার আগে পাথরটা পরীক্ষা করে নিও- জাপানী প্রবাদ | পরিণতির কথা চিন্তা করে কাজ করা উচিত; সমতুল্য- 'ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও নয়া'। |
পাদপানাং ভয়ং বাতাৎ পদ্মানাং শিশিরাদ্ভয়ম্। পর্বতানাং ভয়ং বজ্রাৎ সাধূনাং দুর্জনাদ্ভয়ম্॥ (চাণক্য) | বৃক্ষের ভয় ঝড়কে, পদ্মের ভয় শীতকালকে, পর্বতের ভয় বজ্রকে আর সজ্জনের ভয় দুর্জনকে। |
পাদ্নমেকং নঃ গচ্ছামি | কোথাও যাওয়ার তীব্র অনিচ্ছা প্রকাশ। |
পান পুতলে শ্রাবণে খেয়ে না ফুরায় রাবণে- খনা | শ্রাবণ মাসে পান চাষ করলে এত পান জন্মে যে রাক্ষসের মত খেলেও শেষ হয় না। |
পান হতে চূন খসে না | কাজে সামান্যতম ভুলত্রুটি হয় না বা সহ্য করে না। |
পানাপুকুরে ডুবে মরা | অতিসতর্ক থেকেও সামান্য ভুল করা; পচা শামুকে পা কাটা। |
পানিতে/জলে কুমির ডাঙায় বাঘ | দুদিকেই বিপদ, রক্ষার কোনো পথ নেই; উভয়সঙ্কট। |
পান্তা ভাত ফুঁ দিয়ে খায় | অতীত বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা থেকে অতি সতর্কতা। |
পান্তাভাতে ঘি নষ্ট, বাপের বাড়ী ঝি নষ্ট | বিবাহিতা মেয়ের বাপের বাড়ী থাকা উচিত নয়। |
পান্তাভাতে নুন জোটে না, গরমভাতে/বেগুনপোড়ায় ঘি | অবস্থার অতিরিক্ত আশা করা; অযৌক্তিক আবদার। |
পাপ কত ছোট দেখো না, দেখো যাঁর অবাধ্যতা করছ তিনি কত বড়- আরবী প্রবাদ। | বড়র বেশি শাস্তি পাওয়া উচিৎ। |
পাপ করলেই ভুগতে হয়, কথাটা যেন মনে রয় | মনে রেখো পাপের শাস্তি অনিবার্য। |
পাপ করলেই যমের ভয় // পাপমনে বড় ভয় | পাপী মরতে ভয় পায়; পাপী সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকে; পূণ্যাত্মার এসব কিছু ভয় নাই। |
পাপ ছাড়া সব কাজই ছোট আকারে শুরু হয় | অতি ক্ষুদ্রমাত্রার পাপও অতি ঘৃণ্য। |
পাপ বাপকেও ছাড়ে না | পাপ করলে শাস্তি পেতেই হবে। |
পাপও লুকায় না, সাগরও শুকায় না | যেমন সাগর শুকানো অসম্ভব তেমনই পাপ লুকানো অসম্ভব। |
পাপকে ঘৃণা কর, পাপীকে নয় | পাপ ঘৃণ্য, পাপী নয়; পাপ সংশোধন হয় না, পাপীর সংশোধন হয়। |
পাপীদের দেখে জীবন কি জানা যায় | গাঢ় অন্ধকারে থেকে বোঝা যায় আলোর মূল্য কি। |
পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায় | অসৎ পথে উপার্জিত ধন ভোগে আসে না, কুপথে বিনষ্ট হয়। |
পাপের বোঝা বড় ভার | পাপ করলে মনের উপর অসহ্য চাপ পড়ে। |
পাপের লেশ সুখের শেষ | বিন্দুমাত্র পাপ সঞ্চিত হলেই সুখ অন্তর্হিত হয়। |
পায়ের জুতা মাথায় উঠেছে // পায়ের জুতা মাথায় চড়ে | নীচব্যক্তির আকস্মিক সম্মানপ্রাপ্তি; কোন নীচব্যক্তিকর্তৃক উচ্চব্যক্তির অসম্মান। |
পায়ের যোগ্য মানুষ নয় গায়ে হাত দিয়ে কথা কয়। | নিম্নস্তরের লোকের উচ্চস্তরের কথা বলা। |
পার (খাল) হ’লে পাটনি শালা | কৃতঘ্নচরিত্র; জেনেবুঝে উপকারীর ঋণ অস্বীকার করা; কাজের বেলায় কাজি, কাজ ফুরালেই পাজি। |
পারা (=পারদ) আর পাপে কার সাধ্য চাপে | পারা খেলে একসময় গা ফুঁড়ে বেরুবেই; তেমনি পাপ কখনো লুকানো যায় না; পাপও লুকায় না, সাগরও শুকায় না। |
পারের কর্তা হরি, দিবেন চরণতরি। | সংসাররূপ সাগরের পারাপারের কর্তা শ্রীহরি; তাঁর চরণে আশ্রয় নিলে তিনি বৈতরণী নদী পার করে দেবেন। |
পালাতে না পেরে পোষ মানা | পালাবার সুযোগ না থাকলে অনুগত হয়ে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ। |
পালাতে না পেরে মোড়লের বেহাই | কৌশলে কার্যোদ্ধার; কোন একটা দোহাই দিয়ে জাল কেটে বেরুনো চেষ্টা |
পাশের বাড়ী বিয়ালো গাই, সেই সুত্রে পাড়াতো ভাই | দূর আত্মীয়সম্পর্কে তাচ্ছিল্য প্রকাশ |
পাহাড়ের আড়ালে থাকা | ভাল অভিভাবকের রক্ষণে থাকা ভালো যাতে কোন আঁচ না লাগে। |
পাহাড়ের চূড়ায় চড়ো না তাহলে চূড়া থেকে তুমি নীচের সকলকে ছোট দেখবে আর নীচের সকলে তোমাকেও ছোট দেখবে- আরবী প্রবাদ | খুব বড় হ'তে হ'বে না আবার খুব ছোট হ'তে হ'বে না; উভয়ক্ষেত্রেই সকলের থেকে বিরাট দূরত্ব সৃষ্টি হবে। |
পাহাড়ের চূড়ায় যে প্রথম চড়ে সে যেখানে খুশি বসতে পারে | শ্রেষ্ঠর নানাবিষয়ে নির্বাচন করার অনেক সুবিধা। |
পাহাড়ের চূড়ায় মাত্র কয়েকজনই চড়ে | শ্রেষ্ট হওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার; খুব অল্পজনই তা পারে; শ্রেষ্ট একমেবাদ্বিতীয়ম। |
পাহাড়ের মতই পুরাতন | অতিপ্রাচীন। |
পিঁড়েয় বসে পেঁড়োর খবর | ঘরে বসে সারা পাড়ার খবর রাখা; ঘরে বসে কেল্লামারা। |
পিঁপড়ে যত ক্ষুদ্রই হোক তার সব জীবনদায়ক অঙ্গ আছে- চীনা প্রবাদ | ক্ষুদ্রকে অবজ্ঞা করতে নেই। |
পিঠা খায় পিঠের ফোঁড় গণে না | দায়দায়িতহীন লক, সংসারের কোন খোঁজ রাখে না; কত ধানে কত চাল জানে না। |
পিঠা খায় মিঠার জোরে/লোভে | যা মিষ্টি তাই উপাদেয়; কোন কাজে যদি ভাল প্রাপ্তিযোগ থাকে, তবে সেই কাজে আগে ছোটে। |
পিঠে বলো মিঠা বলো ভাতের বাড়া নাই; পিসী বলো মাসী বলো, মার বাড়া নাই | যেমন ভাতের সাথে অন্য কোন খাদ্যের তূলনা চলে না তেমনি স্তান কেউ নিতে পারে না। |
পিঠে বেঁধেছি কুলো, কানে দিয়েছি তুলো | নির্বিকার, কোনকিছুতে ভ্রুক্ষেপ নেই। |
পিন্ডি পায় না, কেত্তন চায়/গায় | অবস্থার অতিরিক্ত বাসনা; মুল কাজ হয় কিনা সন্দেহ, তার আবার আড়ম্বরের বায়না। |
পিতলের কাটারির কাজে নেই ধার, ঝকমকই সার // পিতলকা কটারী কামে নাহি আবল, উপরহি ঝকমক সার- হিন্দি প্রবাদ | জমকালো চেহারা, কিন্তু কাজে একেবারে অচল; মাকালফল, রাঙামূলা। |
পিতলের সরা জাঁকে ভরা | উৎকৃষ্টের গুমর; কাজ হোক-বা-না-হোক শব্দ আছে; কাজে কম, কথায় ঝাঁজ বেশি। |
পিতা রক্ষতি কৌমারে, ভর্তা রক্ষতি যৌবনে। পুত্রশ্চ স্থবিরে ভাবে, ন স্ত্রী স্বাতন্ত্র্যমর্হতি॥ (চাণক্য} | বাল্যে পিতার, যৌবনে ভর্তার এবং বার্ধক্যে পুত্রের অধীনে নারী থাকিবেন স্ত্রীগণের পক্ষে যথেচ্ছচারী হওয়া অনুচিত। |
পিতার বয়সে কলমা নেই; গালভর্তি দাড়ি | বাপ-দাদারা কলমা (=কোরাণের মন্ত্র) পড়ে নি, ছেলের মোল্লা সাজার ইচ্ছা; বাপ-দাদা থেকে বেশি গুণসম্পন্ন জাহির করার চেষ্টা। |
পিতাঃ স্বর্গ, পিতাঃ ধর্মঃ পিতা হিঃ পরমন্তপঃ। পিতরি প্রিতিমাপন্ন্যে প্রিয়ন্তে সর্বদেবতা॥ (চাণক্য) | পিতা স্বর্গসমান, পিতা ধর্মসমান, পিতাই একমাত্র পরমপূজ্য; পিতা খুশী হলে সকল দেবতারা খুশী হন। |
পিপাসার অন্ত নেই | আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই। |
পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে | ধ্বংসের আগে অনেকের বাড় বাড়ে; বাড়াবাড়ি হলে সর্বনাশ হয়। |
পিসী বল মাসী বল মার বাড়া নেই; পিঠে বল মিঠে বল ভাতের বাড়া নেই | মায়ের স্নেহের তুলনা হয় না; ভাত খাওয়ার তৃপ্তির তুলনা হয় না; |
পীত্বা রসং তু কটুকং মধুরং সমাননম্, মাধুর্য্যমেব জনয়ন্মধুমক্ষিকাসৌ।সন্তস্তথৈব সমসজ্জনদুর্জনানাং শ্রুত্বা বচো মঘুরসূক্তরসং সৃজন্তি॥ (চাণক্য) | মৌমাছি যেমন কটু বা মধুর রস পান করে মধুর রসই প্রদান করে তেমনই সদব্যাক্তিরা সজ্জন ও দুর্জন,উভয়ের কথা শ্রবণ করে মাধুর্যযুক্ত বাক্য সৃজন করে থাকেন। |
পীর বরাবর নেড়ে, সোনার খুরে এঁড়ে | নীচ-মুসলমান পীরের নামেও দিব্বি কাটলেও তাকে বিশ্বাস করা নেই; ষাঁড়ের খুর সোনায় মুড়ে দেওয়া হলেও তাকে বিশ্বাস করা নেই। |
পীরিত বিনে সুহৃদ নেই | প্রীতি না জন্মালে বন্ধু হয় না। |
পীরিত যেখানে বিচ্ছেদ সেখানে | অবিমিশ্র সুখ হয় না। প্রণয় থাকলে বিচ্ছেদের ভয় থাকে; গোলাপের কাঁটা আছে; পদ্মের কাঁটা আছে; চাঁদের কলঙ্ক আছে ইত্যাদি। |
পীরিতের নৌকা পাহাড়ে চলে | প্রণয় গাঢ় হলে দূররিক্রম্য বাধাকে অনায়াসে অতিক্রম করা যায়। |
পীরিতি কাঁঠালের আঠা ধরলে পরে ছাড়ে না | জগত প্রেমময়; একবার প্রেমে পড়লে সবাই জোয়ারে ভাসে। |
পীরিতি গাছের ফল নয়, যেখান সেখানে মেলে না | খাঁটি প্রেম সহজলভ্য নয়। |
পুঁজি নেই তার পাঁজি আছে | কিছু করে খাওয়ার ক্ষমতা নেই ভাবে পূজা আর্চা করলে । |
পুঁড়োর (=এক কৃষিজীবী জাতি) মেয়ে বেগুন চেনে না | জাতে উঠলে নিজের পূর্ব পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করে। |
পুড়ে পুড়ে রাঁধুনি | কিছু শিখতে গেলে অনেক পরিশ্রম করতে হয়, অনেক ঝঞ্ঝাট পোহাতে হয়। |
পুকুর কাত | নির্লজ্জ মোসাহেবি; (উৎস-পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে এক জমিদারের মনে হল দক্ষিণদিকের তুলনায় উত্তরদিকটা বেশি উঁচু; মোসাহেবের তাৎক্ষণিক উত্তর-দক্ষিণদিকে পুকুরটা কাত। |
পুকুর কেটে নাওয়া | ঘাটে নাইতে গিয়ে অনেক্ষণ দেরী করা, যেন পুকুর কাটার জন্য দেরী হয়েছে। |
পুকুর চুরি | বিরাট আকারের চুরি; বেমালুম আত্মস্মাৎ। |
পুত্রপৌত্রগুণোপেতঃ শাস্ত্রজ্ঞো মিষ্টপাচকঃ। শূরশ্চ কঠিনশ্চৈব সূপকারঃ স উচ্যতে।। (চাণক্য) | পুত্র-পৌত্র আছে এমন, পাকশাস্ত্রে নিষ্ণাত বা অভিজ্ঞ, যার তৈরি আহার মধুর আস্বাদযুক্ত, বলবান এবং দৃঢ়চিত্ত ব্যক্তি উপযুক্ত পাচক বলে পরিগণিত হন। |
পুত্রপ্রয়োজনা দারাঃ পুত্রঃ পিণ্ড প্রয়োজনঃ। হিতপ্রয়োজনং মিত্রং ধনং সর্বপ্রয়োজনম্॥ (চাণক্য) | পুত্রের জন্য স্ত্রী চাই; পিণ্ডদানের জন্য পুত্র চাই; হিতের জন্য বন্ধু চাই; সবকিছুর জন্যই চাই ধন। |
পুনকে (=১/১৬ভাগ) শত্রু বড় আপদ | শত্রু যত ক্ষুদ্রই হোক, তাকে তাচ্ছিল্য করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়) |
পুনর্মূষিকো ভব | ‘হিতোপদেশ’ গ্রন্থের গল্পবিশেষে উক্ত; অর্থ: পুনরায় ইঁদুর হও; আলং- আগের হীন অবস্থা প্রাপ্ত হও; বেশি বাড়াবাড়ি করলে পরিণতি আগের হীন অবস্থা হয়; |
পুরানো চাল ভাতে বাড়ে | পুরানো জিনিষ থেকে বেশি উপকার পাওয়া যায়; সেইজন্য পুরানো জিনিষের কদর বেশি। |
পুরানো পাপী | দাগী আসামী; আগে দুষ্ট ছিল; বর্তমানে সাধু হয়েছে, কিন্তু পুরানো অভ্যাস ছাড়তে পারছে না। |
পুরানো বন্ধু ও পুরানো মদ সর্বোৎকৃষ্ট | পুরানো জিনিস সোনার সমান। |
পুরানো বন্ধুর চেয়ে ভাল আয়না হয় না | পুরানো বন্ধুর কাছে সব ভালো জিনিষ শেখা যায়। |
পুরুষের দশ দশা, কখনো হাতী কখনো মশা | পুরুষের ভাগ্য প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়; কখনো সুখ, কখনো বা দুঃখ। |
পুস্তকস্থা তু যা বিদ্যা পরহস্তগতং ধনম্। কার্যকালে সমুৎপন্নে ন সা বিদ্যা ন তদ্ধনম॥ (চাণক্য) | বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একইরকম; প্রয়োজনকালে তা বিদ্যাই নয় বা ধনই নয় |
পূজায় মন নেই, নৈবিদ্যে চোখ/মন | কাজে মন নেই; খালি প্রাপ্তির দিকে নজর; বামুনের কপট আচারের প্রতি বক্রোক্তি। |
পূজার সঙ্গে খোঁজ/যোগ নেই, কপালজোড়া ফোঁটা | ভড়ংসর্বস্ব যজমানে বামুন; কাজের সঙ্গে যোগ নেই, অথচ জাহির করায় খামতি নেই। |
পূণ্যস্য ফলমিচ্ছন্তি পূণ্যং নেচ্ছন্তি মানবাঃ। ন পাপফলমিচ্ছন্তি পাপং কুর্বন্তি সর্ব্বতঃ।। (চাণক্য) | মানুষ পূণ্যকর্মের ফল চায়, কিন্তু পুণ্যকর্ম করতে চায় না; সর্বত্র পাপকর্ম করে বেড়ায়। |
পূণ্যকর্ম পুরস্কারের অপেক্ষায় থাকে না | কর্মই তার পুরস্কার। |
পূতিশাকং, মৃতং মাংসং করেণ মথিতং দধি। তর্জ্জন্যা দন্তসংস্পৃষ্টং তুল্য গোমাংসভক্ষণম্।। (চাণক্য) | পচা দুর্গন্ধযুক্ত শাক, মৃতজীবের মাংস হস্তদ্বারা মথিত দধিভক্ষণ এবং তর্জনীদ্বারা দন্তস্পর্শ করা গোমাংস ভক্ষণের সমতুল। |
পুত্রভাগ্যে যশ ভরে; কন্যা ভাগ্যে লক্ষ্মী ঘরে- (খনা) | সুপুত্রে পরিবারের সুনাম বাড়ে; কন্যারত্ন লক্ষ্মীর সমান। |
পুস্তকস্থা তু যা বিদ্যা পরহস্তগতং ধনম্। কার্যকালে সমুৎপন্নে ন সা বিদ্যা ন তদ্ধনম্।। (চাণক্য) | যে অধীত বিদ্যা পুঁথিতেই থেকে যায় (অর্থাৎ কাজে প্রয়োগের সময় মনে পড়ে না), যে ধন পরের হাতে চলে গেছে (অর্থাৎ নিজের অধিকারে নেই)- প্রয়োজনের সময় তা পাওয়া যায় না বলে সেই বিদ্যাকে বিদ্যা বলা চলে না, সেই ধনকে ধন বলা চলে না। |
পূবে হাঁস, পশ্চিমে বাঁশ; উত্তরে কলা, দক্ষিণে খোলা/মেলা (খনা) | বাড়ীর পূর্বদিকে পুকুর থাকবে, পশ্চিমদিকে বাঁশঝাড় থাকবে; উত্তরদিকে কলাবন থাকবে; এবং দক্ষিণদিক খোলা থাকবে। |
পূর্ণ আষাঢ়ে দক্ষিণা বয়, সেই বছরে বন্যা হয়- খনা | সারা আষাঢ় মাস ধরে দক্ষিনা বাতাস বইলে সেই বছর বন্যা হবেই হবে। |
পূর্ণকুম্ভো ন করোতি শব্দম্ | ভরা কলসির আওয়াজ নেই; জ্ঞানীব্যক্তি বিদ্যার বড়াই করে না। |
পূর্ণাঙ্গ মানুষ দুইপ্রকারের হয়- এক, যারা মৃত এবং দু্ই, যারা জন্মায় নি- চীনা প্রবাদ | ্মানুষ অপূর্ণাঙ্গ, তাই ট্যারা ভুল করে। |
পৃথিবী যেন একটি মই যেখানে কেউ ওপরে চড়ে আবার কেউ নীচে নামে- জিপসি প্রবাদ | সারা পৃথিবী জুড়ে উত্থান ও পতনের খেলা চলছে। |
পেঁয়াজও গেল পয়জারও হল | পরিশ্রমের কোন ফল পাওয়া গেল না; উপরন্তু অপমানিত হ'তে হল। |
পেট একখান আর মুখ একখান // পেটে এক মুখে এক | বিশ্বাসযোগ্যতা নেই, ভাবে এক আর বলে এক। |
পেট কাটলে মশাও মরে, হাতিও মরে | বিপদ ছোট-বড় সবার পক্ষেই সমান বিপদজনক; বিপদ কাউকে রেয়াত করে না। |
পেট খুঁজলে ক অক্ষর পাওয়া যায় না | মহামূর্খ; অক্ষরজ্ঞানশূন্য; পেটে বিদ্যা নেই। |
পেট জ্বলে ভাতে সোনার আংটি হাতে // পেট জ্বলে ভাতের তরে, সোনার আংটি হাতে পরে | অভাব লুকোতে বাবুগিরি; ঘরে যার উনুন জ্বলে না বাইরে তার আড়ম্বরের ঘটা। |
পেট ভরলে পাথরে গন্ধ // পেট ভরলে ভাজা মাছ গাছ গাছ // পেট ভরলে মণ্ডা তেতো | পেট ভরা থাকলে সব খাবারই বিস্বাদ মনে হয়। |
পেট ভরে তো নজর/মন ভরে না | দৃষ্টিক্ষুধা; আকাঙ্ক্ষার শেষ নাই। |
পেটে আসে তো মুখে আসে না | বুঝলেও বলতে না পারা। |
পেটে কালির আঁচড় নেই | অক্ষরজ্ঞানশূন্য; পেট খুঁজলে ক অক্ষর পাওয়া যায় না। |
পেটে খিদে মুখে লাজ | পাওয়ার ইচ্ছা আছে, কিন্তু প্রকাশে লজ্জা। |
পেটে খেলে পিঠে সয় | কিছু লাভের আশায় দুঃখকষ্ট সহ্য করা যায়। |
পেটে দড়ি বেঁধে পড়ে আছে | দীর্ঘদিন অন্নের কোন সংস্থান নেই। |
পেটে নাই বিদ্যার অংশ ক অক্ষর গোমাংস // পেটে বোমা মারলেও কিছু বের হবে না | মহামূর্খ; পেটে বিদ্যা নেই। |
পেটে ভাত নেই কোঁচা লম্বা // পেটে ভাত নেই ঠোঁটে আলতা // পেটে ভাত নেই দাঁতে মিশি // পেটে ভাত নেই ফোঁটায় দড় | ভিতর অন্তঃসারশূন্য, বাইরে আড়ম্বর। |
পেটের আগুনে বেগুন পোড়ে | প্রচণ্ড খিদে। |
পেটের বাছা বাড়ির গাছা (গাছগাছালি) | উভয়ই কল্যাণপ্রদ; উভয়ের কাছ থেকেই উপকার পাওয়া যায়। |
পেটের ভাত চাল হল | আসন্ন বিপদের আশঙ্কয় খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। |
পেটের ভাত হজম না হওয়া | নানাকারণে ছটফট করা |
পেটের ভিতর হাত পা সেঁধোয় | প্রচণ্ড ভয়ে সংকুচিত। |
পেয়াদার আবার শ্বশুরবাড়ী | যার বিশ্রামের ফুরসৎ নেই তার আবার আমোদপ্রমোদ। |
পেরেকের মাথায় আঘাত করা | সঠিকস্থানে ঘা দেওয়া। |
পেশীশক্তি থেকে বুদ্ধিশক্তি বেশি বলবান | পেশী ও বুদ্ধির লড়াইয়ে বুদ্ধির জয় নিশ্চিত। |
পৈতা থাকলেই বামুন হয় না | চেহারা সবসময় সত্যকথা বলে না; বাহ্যিক আড়ম্বরে ধার্মিক হওয়া যায়ুয়া, অন্তরে ভক্তি থাকা প্রয়োজন; সমতুল্য- 'আলখাল্লা পরলেই মোল্লা হয় না'; 'চকচক করলেই সোনা হয় না'; 'তিলক পরলেই বৈষ্ণব হয় না'; 'মন্দিরে গেলেই সাধু হয় না' ইত্যাদি। |
পৈতা পুড়িয়ে ব্রহ্মচারী/সন্ন্যাসী | ভেকসন্নাসী; বুদ্ধির দোষে সবদিক নষ্ট করা ব্যক্তি। |
পোড়া কপাল জোড়া লাগে না | অভাগার কখনো ভাগ্যায ফেরে না; সমতুল্য- 'অভাগা যায় বঙ্গে, কপাল যায় সঙ্গে'। |
পোলা হওয়ার খবর নাই হাজমের লগে দোস্তি | ছেলে এখন হয় নি আগে থেকেই সুন্নত করার তোড়জোড়; গাছে কাঁঠাল, গোঁফে তেল। |
পৌষের শীত মোষের গায় মাঘের শীত বাঘের গায় | পৌষমাসের শীতে মোষ কাতর হয়, কিন্তু মাঘমাসের প্রচণ্ড শীতে বাঘ পর্যন্ত জড়োসড় হয়; |
প্রকৃত বন্ধুরা তারার মত, তাদের সবসময় দেখা যায় না, কিন্তু তারা সবসময় আকাশে থাকে- আরবী প্রবাদ | প্রকৃত বন্ধুরা নিঃশব্দে আড়ালেই থাকে। |
প্রচ্ছদ রেখে বইয়ের বিচার করো না | বাহ্যিক আচার-ব্যবহার দেখে মানুষ চেনা যায় না। |
প্রজাপ্রতির নির্বন্ধ | বিধাতার অলঙ্ঘনীয় বিধান। |
প্রতারণা মিথ্যার চেয়েও ভয়ঙ্কর | প্রতারণায় উপরচালাকি, দুরভিসন্ধি থাকে। |
প্রতি-আক্রমণই আত্মরক্ষার প্রকৃষ্ট উপায় | আগ্রাসন মনে শক্তি যোগায়। |
প্রতিকারের উপায় না থাকলে সহ্য করতে হয় | টিকে থাকতে এ ছাড়া উপায় নেই। |
প্রতিটি অর্জনের সাথে আমাদের একটু একটু করে ক্ষয় হয় | অর্জন থাকলে বিসর্জনও আছে; বয়স বাড়লে আয়ু কমে। |
প্রতিটি পদক্ষেপে যে অতিরিক্ত ভাবে সে চায় ইচ্ছা তার এক পায়ে থাকুক- চীনা প্রবাদ | বেশি চিন্তা করলে এক পাও এগুনো যায় না। |
প্রতিডুবেই কি শালুক উঠে? | প্রতি উদ্যোমেই ফল পাওয়া যায় না। |
প্রতিবাদ হীরকসমান | অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত, নির্বিচারে মেনে নেওয়া যায় না; বিরুদ্ধ প্রবাদ- নীরবতা হিরণময়। |
প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করো না, যে বিশ্বস্ততার সাথে তোমার পাশে বাস করে- ইহুদী প্রবাদ | প্রতিবেশীকে ভালবাসাই হল সহনশীলতা শিক্ষার প্রথমধাপ; যিশু বলেছেন- তোমার প্রতিবেশীকে ভালবাসো। |
প্রতিভাবানেরা চুপ থাকতে ভালবাসে; অন্যেরা তাদের অজ্ঞতা ব্যাখ্যা করে। | জ্ঞানীর প্রচার লাগে না; জাহির করতে গিয়ে অজ্ঞানী নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ করে। |
প্রতিভাবানেরা সঙ্গত খোঁজে | একমাত্র প্রতিভাবানেরাই প্রতিভাবানদের চিনতে ও বুঝতে পারে। |
প্রতিভাবানেরা সমস্যা প্রতিরোধ করে; বুদ্ধিমানেরা সমস্যার সমাধান করে; অজ্ঞানেরা সমস্যা সৃষ্টি করে। | যে যার কাজ নিজের পছন্দমত বেছে নেয়। |
প্রতিভোরে আমরা নতুনভাবে জন্ম নিই; আজকে যা করি সেটাই সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ- জাপানী প্রবাদ | অতীত নয়, ভবিষ্যতও নয়, কেবল আজই সত্য। |
প্রতিশোধ নেওয়ার কাজে প্রবৃত্ত হওয়ার আগে দুটি কবর খুঁড়ে রেখো- কনফুসিয়াস | দ্বন্দ্বে উভয়েরই ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। |
প্রত্যেক ব্যক্তির নিজস্ব খেলনা ঘোড়া থাকে- চীনা প্রবাদ | প্রত্যেকেরই নিজস্ব পছন্দের বিষয় থাকে। |
প্রত্যেক মেঘের একটা রূপালী আস্তরণ থাকে | প্রত্যেক মন্দেরই একটি ভালো দিক আছে। |
প্রত্যেকেই অন্যের দোষ খুঁজে বেড়ায়, নিজের দোষে অন্ধ- আরবী প্রবাদ | মানুষের স্বভাব হল আত্মপ্রশংসা করা এবং পরের নিন্দা করা। |
প্রত্যেকের প্রতি এমন আচরণ কর যেন তারা তোমার অতিথি- চীনা প্রবাদ | যে তোম্যার কাছে আসে সে নারায়ণ সমান। |
প্রথমদর্শনে মানুষকে বিচার করা যায় না | মানুষ চিনতে সময় লাগে। |
প্রথমে আসার অর্থ প্রথম সফল- চীনা প্রবাদ | অগ্রবর্তীরাই সফল হয়; সমতুল্য- 'ভোরের পাখি পোকা ধরে'। |
প্রথমে নার্জিতা বিদ্যা দ্বিতীয়ে নার্জিতং ধনম্। তৃতীয়ে নার্জিতং পুণ্যং চতুর্থে কিং করিষ্যতি॥ | যিনি জীবনের প্রথমভাগে (বাল্যে) বিদ্যার্জন করেননি, দ্বিতীয়ভাগে (যৌবনে) ধন অর্জন করেননি,তৃতীয়ভাগে (প্রৌঢ়ত্বে) পুণ্যার্জন করেন নি, তিনি চতুর্থভাগে (বার্ধক্যে) আর কী করবেন? |
প্রদীপের কোলে অন্ধকার // প্রদীপের নীচেই অন্ধকার১ | ভালো ও মন্দের সহাবস্থান; পৃথিবীর আধা আলো, আধা কালো; সমতুল্য- দেবালয়ে শয়তানের বাস'। |
প্রদীপের কোলে অন্ধকার // প্রদীপের নীচেই অন্ধকার২ | অনেক জ্ঞানী আছেন, যাঁরা অপরের দোষ দেখেন এবং সংশোধন করেন, কিন্তু নিজের দোষ দেখতে পান না; সমতুল্য- চিরাগকা নীচ্ আন্ধেরা'। |
প্রদোষে নিহতঃ পন্থাঃ পতিতা নিহতাঃ স্ত্রিয়ঃ। অল্পবীজং হতং ক্ষেত্রং ভৃত্যদোষাদ্ধতঃ প্রভুঃ।। (চাণক্য) | সন্ধ্যাকালে পথ দেখা যায় না, চরিত্রহীন নারীর জীবন মৃত্যুর সমান, যে ক্ষেতে অতি সামান্য ফসল হয় তা কোন উপকারে আসে না, ভৃত্যের দোষে প্রভুর অপকারই হয়। |
প্রফুল্ল হৃদয়ের সুন্দর মুখায়ব হয় | মানসিক প্রশান্তির একটা আলগা সৌন্দর্য থাকে। |
প্রবোধই প্রবোধয়ে | সান্ত্বনাই শান্তি দেয়। |
প্রভূতমল্পকার্যং বা যো নরঃ কর্ত্তুমিচ্ছতি। সম্যগ্ যত্নেন তৎ কুর্যাৎ সিংহাদেকং প্রকীর্তিতম্ ।। (চাণক্য) | যে ব্যক্তি ক্ষুদ্র বা মহৎ যে কোন কাজ করতে চান তিনি সেই কাজ খুব ভালোভাবে যত্নের সঙ্গে করবেন- সিংহের কাছ থেকে এই একটি শিক্ষণীয়ের কথা বিদ্বানেরা বলে থাকেন। |
প্রয়োজন দৈত্যের সৌন্দর্যবোধ নেই | প্রয়োজনে বিলাসিতার দিকে নজর দেওয়া সম্ভব হয় না। |
প্রয়োজন সব আবিষ্কারের জননী | সব আবিস্কারের পিছনে প্রয়োজন তাগিদ কাজ করে। |
প্রয়োজনে খোঁড়াও লাফায় // প্রয়োজনে পঙ্গুও লঙ্ঘায় গিরি | দরকার পড়লে অকেজো কিছু কাজ করতে চেষ্টা করে; সমতুল্য- 'গরজ বড় বালাই'। |
প্রয়োজনে নিয়ম নাস্তি // প্রয়োজনীয়তা কোন নিয়ম মানে না | প্রয়োজন শৃঙ্খলা মেনে চলে না; সমতুল্য- 'অকালে/আকালে কি না খায়'। |
প্রহারেণ ধনঞ্জয় | দুর্বিনীত শায়েস্তা করতে প্রচণ্ড প্রহার। |
প্রাজ্ঞে নিযোজ্যমানে তু সন্তি রাজ্ঞস্ত্রয়ো গুণাঃ। যশঃ স্বর্গনিবাসশ্চ বিপুলশ্চ ধনাগমঃ।। (চাণক্য) | রাজা যদি প্রাজ্ঞ ব্যক্তির উপর কার্যভার ন্যস্ত করেন তবে তাঁর তিনটি জিনিস লাভ হয়- যশ, স্বর্গলাভ এবং প্রভূত অর্থলাভ। |
প্রাণমেব পরিত্যজ্য মানমেভাবি রক্ষতু | প্রাণ দিয়েও মান রক্ষা করবে। |
প্রাপ্তকালো ন জীবতিঃ | কাল পূর্ণ হলে জীব বাঁচে না। |
প্রায় শেষ করা আর একেবারেই শুরু না করা একই কথা- ইংরাজী প্রবাদ | অসম্পূর্ণ কাজের কোন মূল্য নেই। |
প্রাসাদের দূঃখ থেকে কুঁড়েঘরের আনন্দ অনেক ভালো-চীনা প্রবাদ | ঐশ্বর্যের পরতে পরতে কান্না লুকিয়ে থাকে। |
প্রেমেতে মজিলে মন, কিবা হাড়ি কিবা ডোম | প্রীতিপ্রেমের পূন্যবাঁধন মানুষে মানুষে হয়, জাতপাতে হয় না |
প্রেষিতস্য কুতো মানং কোপনস্য কুতঃ সুখম্। স্ত্রীণাং কুতঃ সতীত্বঞ্চ কুতো মৈত্রী খলস্য চ।। (চাণক্য) | ভৃত্যের আবার সম্মান কোথায়, ক্রোধপরায়ণ ব্যক্তির আবার সুখ কোথায়। স্ত্রীলোকের আবার সতীত্ব কোথায়, দুষ্টের সঙ্গে আবার বন্ধুত্ব কোথায়? |
ফ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ফকিরে ফকিরে ভাই ভাই, ফকিরের রাজত্ব সব ঠাঁই | ফকির সর্বত্র সমাদ্রিত; জাগতিক স্পৃহা না থাকায় পরস্পরের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয় না এবং সবস্থানে অবস্থান করে তৃপ্তিবোধ করে। |
ফর্সা কাপড়ে মান বাড়ে | পোষাক-পরিচ্ছদ পরিচ্ছন্ন হলে সবার মাঝে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়। |
ফল ও ছায়াযুক্ত গাছকে আশ্রয় করতে হয় | ফল পাওয়া না গেলেও ছায়া পাওয়া যাবেই। |
ফল খেয়ে জল খায়; যম ডাকে আয় আয়- খনা | স্বাস্থ্যের পক্ষে বিষবৎ। |
ফল দিয়ে ভাত খায় | খোশগল্প। |
ফলেই পরিচয় // ফলেন পরিচীয়তে | গাছের পরিচয় তার ফলে; ফল দেখেই কাজের বিচার হয়। |
ফল্গুনদী অন্তঃসলিলা | চাপা স্বভাবের লোক যে বাইরে বেশ শান্তশিষ্ট, কিন্তু মনের গভীরে কি আছে জানা নেই। |
ফাঁক পেলে সবাই চোর // ফাঁক পেলে সাধুও চুরি করে | প্রলোভন এড়ানো খুবই কষ্টকর; চুরি করতে পারে না বলে সবাই সাধু; সাধু চোর নয় বোঁচকায় ঘটায়। |
ফাঁকা আওয়াজে/বুলিতে কাজ আদায় | মিষ্টিকথায় ভুলিয়ে ভালিয়ে কাজ আদায়। |
ফাঁকা কথায়/বুলিতে পাকা লোক ভোলে না | মিষ্টিকথায় কাজ আদায় হয় না। |
ফাঁকা কলসি বাজে বেশি // ফাঁকা কলসির চোপর বেশি // ফাঁকা ঢেঁকির শব্দ বড়/বেশি | গুণহীন ব্যক্তির গর্জন বেশি; সারশূন্য ব্যক্তির বাগাড়ম্বর বেশি। |
ফাঁকা ময়দানে গোল করা/ ফাঁকা গোলে বল ঠেলা | বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়া; পাওয়া সুযোগ নেওয়া (নির্বাচনে অনেকেই ফাঁকা গোলে বল ঠেলে জয়ী হন)। |
ফাঁকি দিলে ফাঁকে পড়তে হয় // ফাঁদ পেতে ফাঁদে পড়া | কাউকে ফাঁকি দেবার চেষ্টা করলে অন্য কেউ তাকেও ফাঁকে ফেলার চেষ্টা করবে; ধান্ধাবাজী সমর্থনযোগ্য নয়। |
ফাঁন্দে পড়িয়া বগা কান্দে | বিপদে পড়ে নাজেহাল। |
ফাগুনে না রুলে ওল শেষে হবে গণ্ডগোল- খনা | ভাল ফসলের জন্য ফাল্গুন মাসে ওলের চাষ করতে হয়। |
ফাঁপা কলসির আওয়াজ বড় // ফাঁপা ঢেঁকির আওয়াজ বড় | অজ্ঞানের জাহির বেশি; অন্তঃসারশূন্য ব্যক্তির বাগড়ম বেশি; যার কিছু নেই তার বাইরের শব্দ কিছু বেশি রকম। |
ফাটা কাঁসর বেসুরে বাজে | মন্দলোকের বেয়াড়া কথাবার্তা। |
ফুটনির মামা, ভিতরে কপনি উপরে জামা | শুধু সাজসজ্জাই আছে ভিতর কিন্তু ফাঁপা। |
ফাঁপা কলসির আওয়াজ বড় // ফাঁপা ঢেঁকির আওয়াজ বড় // ফুটো কলসির আওয়াজ বেশি | অজ্ঞানের জাহির বেশি; অন্তঃসারশূন্য ব্যক্তির বাগড়ম বেশি; যার কিছু নেই তার বাইরের শব্দ কিছু বেশি রকম। |
ফুল তুলতে গেলে কাঁটা সইতে হয় | কষ্টবিনা কেষ্ট নাই। |
ফুলবাবুর ধরাচূড়াই সার | শুধু সাজেই আড়ম্বর কাজের বেলায় ঢুঁ ঢুঁ। |
ফুলে নাই গন্ধ, চক্ষু থাকতে অন্ধ | যে ফুলে গন্ধ নেই সেই ফুল বৃথা, আর যে চোখ থাকতেও দেখতে পায় না সেই চোখও বৃথা। |
ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যায় | সামান্য কষ্টও সহ্য করতে পারে না। |
ফুলের মধ্যে মালা, বাসনের মধ্যে থালা। কুটুম্বের মধ্যে শালা | ফুলের মালার বেশি আদর; বাসনের মধ্যে থালাৎ বেশি প্রয়োজন এবং কুটুমের মধ্যে শালর বেশি কদর। |
ফেন দিয়ে ভাত খায় গল্পে মারে দই | দৈন্যতা লুকোবার জন্য আসলকথা গোপন রেখে মিথ্যাকথা বলা। |
ফেলো কড়ি মাখ তেল, তুমি কি আমার পর? | অর্থের বিনিময়ে ইচ্ছাপূরণ; ব্যবসায়ে আত্মীয়তার সুযোগ নেই; ব্যবসায়ে কোন খাতির চলে না। |
ফোঁপরা ঢেঁকির চোপর বেশি | কমজানা লোক বকে বেশি। |
ফোতোবাবুর গালগল্প সার | শুধু মুখেই ফুটুফুটানি কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা। |
ব
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
বই খুব ভালো সঙ্গী, উপদেশ দেয় কিন্তু মানতে বাধ্য করে না | প্রকৃতবন্ধুর মত বই পাঠককে নিঃশব্দে সঙ্গ দেয়। |
বই হল পকেটে নিয়ে ঘোরা আস্ত একটা ফুলবাগান- চীনাপ্রবাদ | উভয়ই রূপ রস ও গন্ধে পরিপূর্ণ। |
বইয়ে থাকা বিদ্যা আর পরের হাতে থাকা ধন সমান কথা | প্রয়োজনকালে পাওয়া যায় না বলে কাজের নয়। |
বইয়ের মত বিশ্বস্ত কোন বন্ধু হয় না- তুর্কী প্রবাদ | বইই একমাত্র নিখাদ বন্ধু। |
বউ গিন্নি হলে তার বড় ফরফড়ানি, মেঘভাঙা রদ্দুর হলে বড় চড়চড়ানি | বউ সংসারের গিন্নি হলে বেশি গিন্নিপনা দেখায়; মেঘ সরে গিয়ে রদ্দুর উঠলে তার তেজ তীব্র হয়। |
বউ জব্দ কিলে, ঝি জব্দ শিলে, পাড়াপড়শী জব্দ হয় চোখে আঙুল দিকে | প্রহার করলে বউ সংযত থাকে; বাটনা বাটতে দিলে মেয়ে সংযত থাকে; এবং স্পষ্টকথা বললে পাড়াপড়শী সংযত থাকে। |
বউ না বোবা, বউ না বাবা | নতুন বউ কথা বলে না; পরে গৃহিণী হয়ে ঝঙ্কার দিতে সুরু করে। |
বউ ভাঙ্লো সরা গেল পাড়া পাড়া, গিন্নি ভাঙলো নাদা, ও কিছু নয় দাদা | বউ সরা ভাঙলে গিন্নি পাড়াময় রাষ্ট্র করে বেড়ায়; গিন্নি কলসী ভাঙলে সেটা ধর্তব্যের নয়; বাড়ীর কর্তা দোষ করলে সেটা দোষের নয় কিন্তু চাকর একটু দোষ করলে সেটা বিরাট মাপের দোষ হয়। |
বউয়ের রাগ বিড়ালের উপর, বিড়ালের রাগ বেড়ার উপর | বিড়াল মাছ খাওয়াতে বউ তিরস্কৃত হয়, তাই তার বিড়ালের উপর রাগ; বিড়াল মাছ খেয়ে পালাতে পারে না, তাই তার রাগ বেড়ায় উপর; ক্রোধ নিম্নগামী। |
বকঃ পরমদারুণঃ | লক্ষণ বলেন, বক ধর্মদ্বেষী, কারণ শকুন নির্জীবকে ভক্ষণ করে, বক সজীবকে গলাধঃকরণ করে। |
বকঃ পরমধার্মিকঃ | রাম বলেন- বক পরমধার্মিক, কারণ সে মুনিঋষির মত একাগ্রচিত্ত এবং জীবহত্যার আশঙ্কায় সে ধীরে ধীরে পদক্ষেপ করে। |
বক-বিড়ালে ব্রহ্মজ্ঞানী | উভয়ই ভণ্ড ধার্মিক; উভয়ই মৎস্যাশী, কিন্তু মনের ভাব গোপন রাখে। |
বক, হাঁসের দলে শোভা পায় না | বিজ্ঞদের মাঝে অজ্ঞ শোভা পায় না। |
বক্রা জান্সে গয়া, খানেওয়ালা স্বাদ নহি পায়া- হিন্দিপ্রবাদ | অসন্তুষ্ট ব্যক্তি কখনো তুষ্ট হয় না। |
বকো আর ঝকো কানে দিয়েছি তুলো, মারো আর ধরো পিঠে বেঁধেছি কুলো | নির্বিকার, পাত্তা না দেওয়া। |
বক্তৃতা রূপালী, নীরবতা সোনালী- ইংলিশ প্রবাদ | কথায় কথা বাড়ে, তর্কবিতর্ক হয়, কিন্তু চুপ থাকলে কোন সমস্যার উদ্ভব হয় না। |
বগলে কাস্তে/ছাতা/পুঁথি দেশময় খোঁজে | আপনখেয়ালী, ন্যালাভোলালোক, কিছুই মনে রাখতে পারে না। |
বগলে ছুরি মুখে রামনাম | মুখে মিষ্টি বুলি অথচ অন্তর বিষের থলি। |
বচন রজতসম, নীরবতা হিরণ্ময় | কথা রূপার সমান এবং নীরবতা সোনার সমান। |
বচনে জগৎ তুষ্ট, বচনে জগৎ রুষ্ট | কথাতেই মানুষ সন্তুষ্ট হয়; আবার কথাতেই মানুষ ক্রুদ্ধ হয়; মিষ্টি কথাতে মানুষ তুষ্ট হয়; কটু কথাতে মানুষ রুষ্ট হয়। |
বচন থেকে কাজ অনেক বেশি কথা বলে | কথা থেকে কাজের ওজন অনেক বেশি। |
বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো | একদিকে আঁটোসাঁটো, অন্যদিকে শিথিলতা; কড়াকড়ি চৌকী-আইন খারাপ; কাজের আয়োজনের সময় খুব কড়াকড়ি কিন্তু কার্যক্ষেত্রে শিথিলতা; ছোটখাট ব্যাপারে নিয়মের বাড়াবাড়ি কিন্তু বড় বিষয়ে উদাসীন; সমতুল্য- 'সদর বন্ধ, খিড়কি ফাঁক'। |
বজ্রাদপি কঠোরাণি মৃদুনি কুসুমাদপি | বজ্রের মত কঠোর, তৃণের মত কোমল। |
বঞ্চনঞ্চাপমানঞ্চ মতিমান ন প্রকাশয়েৎ | চতুর লোক নিজের ঠকার কথা অতি গোপন রাখে; শেয়ানে ঠকলে বাপকেও বলে না। |
বটবৃক্ষ নিরস পাথর থেকেও রস আহরণ করে | বটবৃক্ষ হল রসিকচূড়ামণি। |
বড় গাঁ তার মাঝের পাড়া // বড় ঘর তার ঢেঁকিশাল // বড় বিয়ে তার দুপায়ে আলতা | বড়র যা সাজে ছোট তা সাজে না; ছোটর প্রতি বক্রোক্তি; গাঁয়ের নাম একঘরা, তার আবার উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়া। |
বড় গাছে কাছি বাঁধা // বড় ঘাটে নৌকা বাঁধা | শক্তিশালীর আশ্রয়ে নিরাপদে থাকা যায়; বেশি লাভের সম্ভাবনা থাকে। |
বড় গাছেই ঝড় লাগে | সংসারের ঝড়ঝাপটা বড়কেই সামলাতে হয়। |
বড় গাছের তলায় বাস, ডাল ভাঙলেই সর্বনাশ | আশ্রয়দাতা সঙ্কটে পড়লে আশ্রিতের বিপদের আশঙ্কা থাকে। |
বড় ঘরের বড় কথা, গরীবের ছেঁড়া কথা | বড় ঘরে সামান্য ব্যাপার ঘটে না; সামান্য ব্যাপার ঘটলেও অসামান্য হয়ে দাঁড়ায়; গরীবের ঘরের সব ঘটনাই তুচ্ছ। |
বড় জাহাজের গভীর জল চাই | বিরাট কাজের জন্য বিরাট ক্ষেত্র চাই। |
বড় বড় বানরের বড় বড় পেট, লঙ্কা ডিঙ্গোতে সব মাথা করে হেঁট | দেখতে শুনতেই সব বিরাট ওজনদার ব্যক্তি, কাজের বেলায় কোন কাজের নয়; সবার আগে পিছিয়ে যায়। |
বড় বড় বানরের বড় বড় লেজ | নামের চোটে গগন ফাটে; যতটা নাম ততটা কাজের নয়। |
বড় বাড় ভালো নয় | বাড়লেই ঝড় লাগবে এবং পড়তে হবে; অত্যুচ্ছায়ঃ পতনায়। |
বড় মাছের কাঁটা, ঘন দুধের ফোঁটা | ভালো জিনিষের একটুও ভাল; মন্দ জিনিষের বেশীও ভালো নয়। |
বড় মাছের কাঁটাও ভালো | বড়লোকের তুচ্ছ কথারও দাম আছে। |
বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবে // বড় হবে তবে ছোট হও | বিনীত হও; বিনীত লোক বেশি সমাদর পায়। |
বড়লোকে কথা কয়, সবে বলে জয় জয় | ভালমন্দ বিচার না করেই সবাই বাহবা দেয়; ক্ষমতাশালীর স্থাবকতা; নির্লজ্জ চাটুকারিতা। |
বড়লোকের খেয়াল, ভাঙা দেয়াল ও খ্যাপা শেয়াল- এই তিনের সম্মুখীন হতে নেই | তিনটিই সমান বিপজ্জনক- ক কামড়াতে পারে; খ আচমকা ভেঙে পড়তে পারে; গ জীবন ওষ্ঠাগত করে তুলতে পারে; তুলনীয়- অসতী নারী, ফুটো হাঁড়ি ও ভগ্নপ্রায় বাড়ি পরিত্যাজ্য। |
বড়লোকের ভুরিভোজ থেকে গরীবের শাকান্ন ভাল | ঐশ্বর্যের দেমাক থেকে অন্তরের টান অনেক বেশি আদরণীয়; সমতুল্য- 'আদরের ভোজন কি করে ব্যঞ্জন', 'আদরের ডাল-ভাতও ভাল, বিনা আদরের ঘি-ভাতও ভাল না', 'রাজার ভুরিভোজ থেকে বিদুরের শাকান্ন ভাল' ইত্যাদি। |
বড়র পীরিতি বালির বাঁধ, খনে হাতে দড়ি, খনেকে চাঁদ | বড়লোকের প্রেমপ্রীতি খামখেয়ালীভরা হয়। |
বড়লোকের খাদ্য আছে, ক্ষিদে নেই; গরীবের ক্ষিদে আছে, খাদ্য নেই- হিন্দি প্রবাদ | অভাবের তুলনায় বড়লোকের অনেক বেশি সম্পদ আছে; গরীবলোক অভাবের জ্বালায় মরে; সম্পদের অসম বণ্টনের বিরুদ্ধে বক্রোক্তি। |
বৎসরের প্রথম ঈশান বয় হবেই বর্ষা খনা কয় | বছরের প্রথমেই ঈশানকোণ থেকে বাতাস বইতে শুরু করলে সে বছর প্রবল বর্ষণের আশঙ্কা থাকে। (বর্ষাগণনা) |
বত্রিশদিনে মাস ফুরায় | অতিশয় দীর্ঘসূত্রিতা; সমতুল্য- 'আঠারো মাসে বছর ফুরায়'। |
বদরোগ সারানো যায়, বদনাম তাড়ানো যায় না | কলঙ্ক একবার গায়ে লাগলে হাজার চেষ্টাতেও তা দূর হয় না; অঙ্গার শতধৌতেন মলিনত্বং ন মুঞ্চতি। |
বদসঙ্গ থেকে নিঃসঙ্গতা ভালো | বদনাম কুড়াবার ভয় থাকে না; সমতুল্য- 'দুষ্ট গরু থেকে শূন্য গোয়াল ভাল'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'নেই-মামার চেয়ে কানামামা ভাল'। |
বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা // বাঁশবনে শিয়াল রাজা | অজ্ঞানীর দলে অল্পজ্ঞানীরা যথেষ্ট সম্মান পায়; সমতুল্য- আদাড়গাঁয়ে/বনে শিয়াল রাজা 'ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল', 'নিরস্তপাদপদেশে এণ্ডোহপি দ্রূমায়তে' ইত্যাদি। |
বন পোড়ে সবাই দেখে, মন পোড়ে কেউ না দেখে | অন্তর্জ্বালা অন্তরেই চাপা থাকে; 'কি যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে, কভু আশীবিষে দংশেনি যারে'। |
বনরক্ষক বাঘ, বাঘরক্ষক বন // বনরক্ষক শিব, শিবরক্ষক বন | টিকে থাকতে গেলে অপরের সাহায্য চাই; পরস্পরের সাহায্য ব্যতিরেকে বাঁচা যায় না। |
বনের পশু ধরে আনা যায়, তার মন থেকে বন তাড়ানো যায় না | বন্যপশু পোষ মানে না। |
বনের পশু পোষ মানে | প্রেমের বন্ধনে সবাইকেই বাঁধা যায়। |
বনের রক্ষক বাঘ, বাঘের রক্ষক বন | পরস্পর পরস্পরের সহযোগিতায় আমরা বাঁচি; আমার হাতদুটি ধর, তাহ'লে তোমার হাতদুটি আমার ধরা হবে। |
বন্দর ক্যা জানে অদরক (আদা) স্বাদ- হিন্দি প্রবাদ | মূর্খ গুণীব্যক্তিকে চেনে না বা গুণের কদর বোঝে না। |
বন্ধমুখে মাছি ঢোকে না | সতর্ক থাকলে ক্ষতি হয় না। |
বন্ধু চেও না, শত্রু চাও যে তোমার ভুলগুলি ধরিয়ে দেবে | দোষ ধরে দেওয়ার জন্য সমালোচক চাই; সেক্ষেত্রে বন্ধু নয় বিরুদ্ধলোক চাই। |
বন্ধুপ্রাপ্তি থেকে বন্ধু হারানো সহজ | প্রকৃত বন্ধু পাওয়া দুর্লভ। |
বন্ধু হারানো থেকে ঠাট্টায় হেরে যাওয়া ভাল | বন্ধু হারানো খুবই দুঃখজনক ঘটনা; সুকৃতির জোর থাকলে সুহৃদ পাওয়া যায়। |
বন্ধুকেও বিশ্বাস করবে না, বন্ধু যদি কখনও ক্রুদ্ধ হয়, সমস্ত গুপ্তকথা প্রকাশ করে দিতে পারে- চাণক্য | উক্তিটি সর্বাংশে সত্য নয়; প্রকৃত বন্ধু কখনো শত্রু হয় না। |
বন্ধুত্ব একবার ছিঁড়লে পৃথিবীর সব সুতো দিয়েও সেলাই হয় না | একবার বিশ্বাস ভাঙ্লে কখনো তা জোড়া লাগে না। |
বন্ধুত্ব ছাতার মত, বৃষ্টি যত প্রবল হয় ছাতার তত বেশি প্রয়োজন হয়- আরবী প্রবাদ। | প্রয়োজনে উপস্থিতি দেখেই প্রকৃত বন্ধুত্বের বিচার হয়। |
বন্ধুত্ব ছিন্ন করে অর্থ উপার্জন করতে যেও না বন্ধুত্বস্থাপন অর্থোপার্জনের প্রকৃষ্ট মাধ্যম- আরবী প্রবাদ। | হাত ধরলেই উপকার আসে, হাত ছাড়লে নয়। |
বন্ধ্যা নারীর অন্ধ পুত্র চাঁদ দেখতে পায় // বন্ধ্যা নারীর পুত্রশোক // বন্ধ্যা নারীর প্রসববেদনা | অবান্তর কথা; পাগলের প্রলাপ; নিতান্তই অসম্ভব ঘটনা; |
বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে- সঞ্জীবচন্দ্র | জীবমাত্রই স্বাভাবিক অবস্থায় স্ব-স্ব স্থানে সুন্দর ও মানানসই; স্বস্থান থেকে সরিয়ে তাদের স্বাভাবিক সৌন্দর্যকে ব্যাহত করা উচিত নয়। |
বয়সে চুল পাকে, বুদ্ধি পাকে না | বয়সের সাথে বয়সের কার্য-কারণ সম্পর্ক নেই; যার ছয়ে হয় না তার ছিয়াত্তরেও হয় না। |
বয়সে না বড় হয়, বড় হয় জ্ঞানে // বয়সে বিজ্ঞ হয় না, বিজ্ঞ হয় জ্ঞানে | জ্ঞানদ্বারা বিজ্ঞতা যাচাই হয়, বার্ধক্যদ্বারা নয়; সমতুল্য- 'কিবা জ্যেষ্ঠ কি কনিষ্ঠ, যেই বুঝে সেই শ্রেষ্ঠ'। |
বয়সের গাছপাথর নেই | এত প্রাচীন যে সমকালীন গাছ বা পাথরও খুঁজে পাওয়া যায় না; বয়োবৃদ্ধ |
বরং ভিক্ষাশিত্বং ন চ পরধনাস্বাদনসুখম | ভিক্ষা করে খাওয়াও ভাল, তবুও পরের ধনে সুখভোগ করা নেই। |
বরং হি মানিনো মৃত্যুর্ন দৈন্যং স্বজনাগ্রত | মানী লোকের মৃত্যুও ভাল তবুও অন্যের কাছে দৈন্যতা প্রকাশ করা ভালো নয়। |
বরমেকো গুণীপুত্রো ন চ মূর্খ শতান্যপি। একশ্চন্দ্রস্তমো হন্তি ন চ তারাগণা অপি।। (চাণক্য) | শত মূর্খপুত্রের চেয়ে এক গুণীপুত্র বরং ভাল; এক চন্দ্র যে অন্ধকার দূর করে, সকল তারা মিলেও তা পারে না। গুণবান ও মূর্খ পুত্রের বৈশিষ্ট্য। |
বরের ঘরের পিসী, কনের ঘরের মাসী | উভয়দিকের স্বার্থ দেখে এমন ব্যক্তি। |
বর্ণচোরা আম | ব্যক্তির বয়স বোঝা দায়; কপটাচারী; ('বর্ণচোরা ঠাকুর এলো রসের নদীয়ায়')। |
বর্ণানাং ব্রাহ্নণো গুরু // বর্ণশ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ | সকল বর্ণের মধ্যে ব্রাহ্মণ গুরু বা শ্রেষ্ঠ। |
বর্ষণ নেই গর্জন আছে | কাজ নেই আড়ম্বর আছে। |
বল, বুদ্ধি, বৃদ্ধি- তিন তিরিশে ফরসা | বয়স ত্রিশ বৎসর অতিক্রান্ত হ'লে এই তিনটি বিষয় ক্রমশঃ কমতে থাকে। |
বলং বলং বাহু বলং // বল বল আপনার বল | নিজের বাহুবলই একমাত্র বিবেচ্য; অন্যের উপর নির্ভর করলে কাজ প্রায়ই বিফল হয়। |
বলদ থাকতে করে না চাষ, তার দুঃখ বারো মাস- খনা | ঘরে বলদ থাকতেও যে মায়া করে খাটায় না তার বলদ শুধু ঘরে বসে বসে খায়; তার জমিতে চাষ হয় না; ফলে ঘরে অন্নাভাব দেখা দেয়। |
বলতে গেলে জাত থাকে না | পাপীর পাপকাজ গুপ্ত থকে না, প্রকাশ হয়ে পড়ে; পাপকারক দাগি হয়। |
বলতে জানলে ঠকি না, বসতে জানলে উঠি না | কথা গুছিয়ে বলতে পারলে কেউ সহজে বোকা বানাতে পারবে না; সঠিক স্থান নির্বাচন করে বসলে কেউ উঠাতে পারবে না। |
বলতে/কইতে পারি, সইতে পারি না | এড়া লোক, যে কথা শোনাতে পটু কিন্তু শুনতে রাজী নয়। |
বলবানপ্যশক্তোহসৌ ধনবানপি নির্ধনঃ। শ্রুতবানপি মূর্খোহসৌ যো ধর্মবিমুখ জনঃ।। (চাণক্য) | ধর্মবিমুখ লোক- বলবান হয়েও দুর্বল; বিত্তবান হয়েও নির্ধন; বিদ্বান হয়েও মূর্খ। |
বলা ও করা, সম্পূর্ণ দুটি ভিন্ন বিষয় | বলা সহজ, করা কঠিন। |
বলা কথা ফেরে না | পরিবর্তনের আর কোন সু্যোগ নেই; সমতুল্য- 'ছোঁড়া তীর/ঢিল ফেরে না', 'ভাত সিদ্ধ হয়ে দেছে'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'মরার আগে পর্যন্ত ফিরে আসার সুযোগ থাকে'। |
বলা সহজ, করা কঠিন | বলতে কোন পরিশ্রম লাগে না; করতে গেলে পরিকল্পনা করতে হয়, পরিশ্রম লাগে। |
বললাম কথা সবার মাঝে, যার কথা তার গায়ে বাজে | ইঙ্গিতে কাউকে দোষী বলে চিহ্নিত করা। |
বলীর ঘাম, নির্বলীর ঘুম | পরিশ্রম করে কর্মঠব্যক্তি ঘামে; অলস কেবল ঘুমিয়ে কাটায়। |
বলে নয় ছলে // বলে না হয় ছলে | যে কাজ শক্তিতে সিদ্ধ হয় না সেই কাজ কৌশলে সিদ্ধ করতে হয়। |
বসতে জানলে উঠতে হয় না | সঠিকস্থান নির্বাচন করে বসা; যেখানে সেখানে বসলে যেকোন সময় উঠে যেতে হতে পারে। |
বসতে জায়গা পেলে, শোবার জায়গা মেলে | একটু উপায়/সুযোগ পেলে আরও উপায়/সুযোগ করায়ত্ব হয়। |
বসতে দিলে/পেলে শুতে চায় // বসতে দিলে খেতে চায়, খেতে দিলে শুতে চায় | আশ্বাস পেলে আবদার করে; আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই। |
বসন্তে ভ্রমনং পথ্যম্ অথবা নিম্বোভোজনম্। অথবা যূবতী ভার্যা অথবা বহ্নিসেবনম্।। (চাণক্য) | বসন্তকালে ভ্রমণ বা নিম্ব ভক্ষণ অথবা তরুণী ভার্যার সহবাস কিংবা অগ্নিসেবন (আগুন পোহানো) বিধেয়। |
বসবি তো ছেলে ধর, উঠবি তো কাঠ কাট্ | একটা না একটা ফরমাশ লেগেই আছে; কাজে ফুরসত নেই। |
বসুধৈব কুটুম্বম্- উপনিষদ | গোটা বিশ্বই আমাদের ঘর; জগতজোড়া আত্মীয়। (মূলশ্লোক- 'উদারচরিতানামান্তু বসুধৈব কুটুম্বম্') |
বসে খেলে কলসির জল ফুরায় // বসে খেলে কুবেরের ভাণ্ডারও ফুরায় | আয় না থাকলে অল্পদিনেই সঞ্চয় শেষ হয়। |
বসে খেলে কুলোয় না, করে খেলে ফুরোয় না | আয় না থাকলে যতই ধন থাকুক তাতে কুলাবে না; আয় থাকলে সেই ভাবনা নেই। |
বসে না থাকি বেগার খাটি/যাই | আয় না হলেও স্বাস্থ্য ভালো থাকে। |
বসে বসে লেজ নাড়া | কাজ না করে শুধু কাজের সমালোচন করা। |
বসুধৈব কুটুম্বকম | জগতবাসী সকলেই আত্মীয়। |
বস্ত্রহীনস্ত্বলঙ্কারো ঘৃতহীনঞ্চ ভোজনম্। স্তনহীনা চ যা নারী বিদ্যাহীনঞ্চ জীবনম্।। (চাণক্য) | (উপযুক্ত) পরিচ্ছদ ছাড়া অলঙ্কার শোভা পায় না, ঘৃত বিহীন আহার সুখকর হয় না, যে নারীর (সুন্দর) স্তন নাই- সে নারী শোভা পায় না, বিদ্যাহীন জীবনও নিরর্থক। |
বহু সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট | নানামতের চাপে আসল কাজ পণ্ড; অনেক লোকের কাজে নানা গণ্ডগোল শুরু হয়। |
বহুভির্মূর্খসংঘাতৈরন্যোন্যপশুবৃত্তিভিঃ। প্রচ্ছাদ্যন্তে গুণাঃ সর্বে মেঘৈরিব দিবাকরঃ।। (চাণক্য) | সূর্য যেমন মেঘের দ্বারা আবৃত হয় তেমনি পশুর মতো স্বভাবের বহু মূর্খের দ্বারা সকল গুণ আচ্ছাদিত হয়। |
বহ্বাশী স্বল্পসন্তুষ্টঃ সুনিদ্রঃ শীঘ্রচেতনঃ। প্রভুভক্তশ্চ শূরশ্চ জ্ঞাতব্যাঃ ষট্ শুনো গুণাঃ।। (চাণক্য) | প্রভুর মঙ্গলের জন্য সর্বদা চিন্তা, অল্পে সন্তুষ্টি, সহজে ঘুম আসা, তাড়াতাড়ি জেগে ওঠা, প্রভুভক্তি, সাহস- এই ছয়টি গুণ কুকুরের কাছ থেকে শিক্ষণীয়। |
বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া | ঘটা করে শুরু, অল্পেতে শেষ। |
বাঁকারে বাঁকায় চেনে | মন্দের সাথে মন্দের মিতালি হয়। |
বাঁচলে কত দেখবো আর, ছুঁচোর/বাঁদরের গলায় চন্দ্রহার | যে ভালো জিনিসের কদর/দাম বোঝে না তাকে ভালো/দামি জিনিস দেওয়া; অযোগ্যের হাতে মহার্ঘবস্তু দান। |
বাঁচার জন্য খাও, খাওয়ার জন্য বেঁচো না | খাওয়াটাই সব নয়; গোগ্রাসে খাওয়া নেই, তাতে স্বাস্থ্যের হানি হয়। |
বাঁশ কেন ঝাড়ে, আয় আমার ঘাড়ে | অকারণে বাইরের বিপদ ঘরে ডেকে আনা।; সমতুল্য- সুখে থাকতে ভূতে কিলায় |
বাঁশ মরে ফুলে, মানুষ মরে ভুলে | বাঁশগাছে ফুল এলে বাঁশগাছের মৃত্যু হয়; সেইবছর দেশে মড়ক লাগে; মানুষ ভুলবশতঃ ছোটাছুটি করে মরে। |
বাঁশ যদি পরে জলে, কি করতে পারে তালে | বাঁশ জলে পচালে তালগাছ থেকে শক্ত হয়। |
বাঁশতলায় বিয়ল গাই, সেই সুবাদে মামাতো ভাই | কারো বাঁশতলায় বাছুর প্রসব হয়েছিল; সেই সম্পর্কে তুতো ভাই; সম্পর্কহীন ব্যক্তিসম্পর্কে প্রযোজ্য। |
বাঁশবনে ডোম কানা | উৎকৃষ্টের মেলা থেকে একটি উৎকৃষ্ট বাছা কঠিন কাজ; অভিজ্ঞ ব্যক্তিও একপ্রকার দ্রব্যের গুণাগুণ নির্ণয়ে অসমর্থ হয়; সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে দিশেহারা। |
বাঁশবনে শিয়াল রাজা // বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা | অজ্ঞানীর দলে অল্পজ্ঞানীরা যথেষ্ট সম্মান পায়; সমতুল্য- 'আদাড়বনে শিয়াল রাজা' 'ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল', 'নিরস্তপাদপদেশে এণ্ডোহপি দ্রূমায়তে' ইত্যাদি। |
বাঁশি হারিয়ে শিঙায় ফুঁ | সব হারিয়ে শেষ; প্রধান উপায় নষ্ট করে সামান্য উপায়ে নির্ভর করা; শিঙে হারিয়ে কাঁকুড়ে ফুঁ। |
বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড় | বাঁশ থেকে কঞ্চি শক্ত হয়; আসল লোকের চেয়ে তার অনুচরের আস্ফালন বেশি; মালিকের চেয়ে অনুচরের দাপাদাপি বেশি; সমতুল্য- 'গুরু থেকে শিষ্য তীক্ষ্ণ', 'তালৈয়ের চেয়ে পুতরা ভারি', 'বাপের চেয়ে ছেলে কড়া', 'সূর্যের চেয়ে বালির তাপ বেশি' ইত্যাদি। |
বাইরে কোঁচার পত্তন ভিতরে ছুঁচার কেত্তন | সংগতিহীন হয়েও বড়মানুষি ভাব; সমতুল্য- আসরঘরে মশাল নেই, হেঁশেলঘরে চাঁদোয়া বা আসলে মুষল নেই ঢেঁকি ঘরে চাঁদোয়া; ভিতরে ছুঁচোঁর কেত্তন, বাইতে কোঁচার পত্তন। |
বাইরে দেখতে সাদা সাজ ভিতরে আছে ঢাকাই কাজ | যার বাইরে কোন আড়ম্বর নেই, কিন্তু ভিতরে অনেক সৌন্দর্য আছে; বিদুষীরমণী। |
বাইরের জামাই কৃষ্ণকান্ত ঘরের জামাই কেষ্টো // বাইরের জামাই মধুসূদন ঘরের জামাই মেধো | ঘরজামাইকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা; ঘরজামাইয়ের সম্মান নেই; |
বাইরে হাশিখুশি ভিতরে গরলরাশি | মুখে মধু/মিষ্টি, অন্তরে বিষ; বিষকুম্ভ পয়োমুখঃ। |
বাউলের ঘরের গরু | বাউলের গৃহিণী। |
বাকপটু আর নির্বোধের সাথে তর্কে যেও না- আরবী প্রবাদ। | বাকপটুর কাছে তর্কে হারবে আর নির্বোধের সাথে তর্ক করে কষ্ট দেবে। |
বাক্যে পর্বত, কার্যে তূলাকার | বেশি কথা বলে, কাজ করে কম। |
বাগানে গাছার সাথে আগাছাও থাকে | কোনকিছুই অবিমিশ্র শুদ্ধ নয়। |
বাঘ নেই বাঘিনীর উৎপাত | পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর লাফালাফি। |
বাঘ পালাল বিড়াল এল, শিকার করতে হাতি | অর্বাচীনের বাহাদুরি; পাঠান মোগল হদ্দ হলে ফারসি পড়ে তাঁতি। |
বাঘ-ভালুকের রাজ্যে থাকি, মনের কথা মনেই রাখি | প্রবলের ভয়ে জড়সড়। |
বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খায় | প্রবল শাসনের দাপটে বিবাদ ভুলে মিলেমিশে একসাথে থাকে। |
বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা | বিপজ্জনক বিষয়ের সংস্পর্শে থাকাও ক্ষতিকর; একবার জড়িয়ে গেলে নানাদিক থেকে আরও বিপদ এসে জড়িয়ে ধরে। |
বাঘে বাঘে যুদ্ধ হয়, নলখাগড়ার প্রাণ যায় | দুই শক্তিশালীর লড়াইয়ে সাধারণ পিষ্ট হয়; রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, সাধারণের প্রাণ যায়। |
বাঘের আড়ি | যে প্রবল শত্রুতা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন; যে দুই শক্তি পরস্পর শত্রুতা ত্যাগ করে না। |
বাঘের আবার গোবধ | যারা দুস্কর্ম করে বেড়ায়, তাদের কোন পাপবোধ নেই। |
বাঘের খাঁচায় না ঢুকলে বাঘের বাচ্চা পাওয়া যায় না- জাপানী প্রবাদ | কিছু পেতে গেলে কিছু করতে হয়, বিনা পরিশ্রমে কিছু হয় না; সমতুল্য- জলে না-নামিলে কেহ শিখে না সাঁতার, হাঁটিতে শিখে না কেহ না-খেয়ে আছাড়, |
বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা | ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে স্বজনের ঘরে গোপনে অবস্থান। |
বাঘেরও চক্ষু লজ্জা আছে | কপটলজ্জা দেখানোর জন্য নির্লজ্জের প্রতি ব্যঙ্গোক্তি |
বাঘের পাছায় ঘা | নিজের দোষে সামান্য বিপদকে বড় করে তোলা (পাছায় ঘা হলে বাঘ সেটা গাছে ঘষে ঘষে বড় করে তোলে) |
বাঘের পিছনে ফেউ লাগা | পিছনে লেগে কাউকে উত্যক্ত করা। |
বাঘের ভয় যেখানে সন্ধ্যে হয় সেখানে | যার ভয়ে মরি সেই এসে হাজির; ভয় বেশি পেলে ভয় এসে জড়িয়ে ধরে। |
বাঙালকে হাইকোর্ট দেখানো | বোকা বানানোর চেষ্টা (উৎস- ব্রিটিশ আমলে শুধু কলকাতাকেই হাইকোর্ট ছিল। কলিকাতা পরিভ্রমণে যাওয়া কোনো পূর্ববঙ্গবাসী কৌতূহলবশত হাইকোর্ট ভবন দেখতে চাইলে তাকে বহুতল উঁচু কোনো ভবন দেখিয়ে দিয়ে ফাঁকি দিয়ে বলা হয়- এই তো হাইকোর্ট) |
বাঙালীর ইজ্জত যাওয়ার আগে প্রেস্টিজ যায়- রবীন্দ্রনাথ | বাঙালীর ইংরাজীয়ানার প্রতি প্রবলপ্রীতির বিরুদ্ধে কবির তির্যকোক্তি |
বাছা শাকে পোকা বেশী | বেশী খুঁতখুঁতানি করলে ভালো কিছু আশা করা যায়না। |
বাজাতে বাজাতে বায়েন, গাইতে গাইয়ে গায়েন | দক্ষতা অর্জনে নিবিড় চর্চ লাগে; অভ্যাস ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। |
বাজারে আগুন লাগলে পীরের ঘর মানে না | আগুনের বাছবিচার নেই; অসতের পাল্লায় পড়লে সাধুও শাস্তি হয়। |
বাজারে যাচ্ছেন? না, বাজারে যাচ্ছি, ও আমি ভাবলাম বাজারে যাচ্ছেন | দুই বধিরের বাক্যালাপ। |
বাড়ন্তরা বেশি খায় | বাড়ার মুখে বেশি খিদে হয়। |
বাড়া ভাতে ছাই | কাজ সফল হওয়ার মুখে কাজ বিনষ্ট। |
বাড়া ভাতে শত্রু বাড়ে | বাড়া ভাত ফেলে রাখতে নেই; নানাবিঘ্ন এসে উপস্থিত হতে পারে।। |
বাড়ীর মধ্যে এক ঘর, তার আবার অন্দরমহল // বাড়ীর মধ্যে এক ঘর, তার আবার সদর-অন্দর | আদিখ্যেতা, বাড়াবাড়ি; বড়র যা সাজে ছোটর তা সাজে না; অন্য-অর্থে কষ্ট করে গুছিয়ে নেওয়া দোষণীয় নয়। |
বাড়ীর কাছে কামার, দা গড়ে দে আমার | কাজের লোক কাছে পেলে সব কাজ করিয়ে নেবার ইচ্ছা। |
বাড়ির গরু উঠানের ঘাস খায় না | নিজ দেশের মূল্যায়ন না করা বা প্রতিবেশীর খ্যাতি খাটো করা। |
বাড়ীর শত্রু কানা, পুকুরের শত্রু পানা | কানা বাড়ী কোন কাজে আসে না; পানা পুকুরের মাছ নষ্ট করে। |
বাণিজ্যে বসতি লক্ষ্মী // বাণিজ্যে লক্ষ্মী বাস | বাণিজ্য থেকে প্রচুর ধনাগম হয়। |
বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী; তদর্ধং কৃষি-কর্মণি। তদর্ধং রাজসেবায়াৎ ভিক্ষায়াৎ নৈব নৈব চ।। (চাণক্য) | ব্যবসায়-বাণিজ্য থেকে লক্ষ্মী লাভ হয়; চাষবাস থেকে তার অর্ধেক আয় হয়; চাকরী করে তারও অর্ধেক আয় হয়; ভিক্ষাবৃত্তি থেকে কোন আয় নেই। |
বাতাস আগুন জ্বালায়, প্রদীপ নেভায় | স্বভাবদোষে মানুষ সবলকে সাহায্য করে দুর্বলকে আঘাত করে; শক্তের ভক্ত নরমের যম। |
বাতাসে ফাঁদ পাতা | অসম্ভব কাজ; চতুরের আশ্চর্যজনক কার্যকলাপকে বাতাসে ফাঁদ পাতা বলে; চতুরের চতুরালি। |
বাতাসের সঙ্গে ঝগড়া করা | অজুহাত দেখিয়ে অযথা ঝগড়া করা; সমতুল্য- ছায়ার সাথে কুস্তি করা। |
বাদ থেকে প্রতিবাদ, প্রতিবাদ থেকে সম্বাদ | তর্কবিতর্ক, সূক্ষ্মবিচার বিশ্লেষণের পর সঠিক সিদ্ধান্ত উপনীত হওয়া। |
বাদ দিয়ে বর্ষা খনার বচন ফর্সা, শনি সাত মঙ্গল তিন এর সব দিন দিন- খনা | বর্ষাকাল বাদ দিয়ে অন্য কোন সময়ে বৃষ্টি হলে শনিবারে শুরু হলে সাতদিন, মঙ্গলবারে শুরু হলে তিনদিন ধরে চলে; বাকী সবদিন একদিনমাত্র স্থায়ী হয়।, |
বাদল, বামন, বান দক্ষিণা পেলে যান- খনা | দক্ষিণা বাতাস বইলে বাদল থামে; দক্ষিণা পেলে যজমানী বামুন প্রস্থান করে; আর দক্ষিণদিকে পথ পেলে বন্যা হ্রাস পায়। |
বাধা মানে না গাধা | অতিশয় নির্বোধ। |
বানরের গলায় মুক্তার মালা | অপাত্রে মহার্ঘবস্তু দান; অজ্ঞের কাছে গুণের কদর নেই; যার যা সাজে না তার সেই কাজ; সমতুল্য- অস্থানে তুলসী অপাত্রে রূপসী। |
বানরের সম্পত্তি গালে | বানর যা পায় তাই গালে দেয়; যে সঞ্চয় করে না, সব খেয়ে ফেলে; সমার্থক বাগধারা- কপোতবৃত্তি |
বানরের হাতে খন্তা | হাতে কোন অস্ত্র পেলে যে সব কিছু কাটতে থাকে। |
বানুরে বুদ্ধি | যে বুদ্ধি নিজের বিপদ ডেকে আনে। |
বাপ মা মরা দায় | কোন কাজে লোকের কাছে হীনতা স্বীকার করা। |
বাপ ভালা না ভাইয়া ভাইয়া, সবসে অচ্ছা রূপাইয়া- হিন্দি প্রবাদ | টাকা থাকলে কি না হয়; টাকা টাকা বল ভাই, টাকার মত জিনিষ নাই, টাকাবিনে সংসারেতে সব যন্ত্রণা। |
বাপকা বেটা সিপাইকা ঘোড়া, কুছ নেহি তো থোড়া থোড়া- হিন্দি প্রবাদ | বাবা ও সিপাহীর কিছু গুণ ছেলে ও ঘোড়ার মধ্যে বর্তায়। |
বাপের গুণে পো, মায়ের গুণে ঝি | ছেলে বাবার গুণ পায়; মেয়ে মায়ের গুণ পায়। |
বাপের চেয়ে ছেলে কড়া | আসল থেকে নকল ভারি; বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়। |
বাপের জন্মে নেইকো চাষ, ধানকে বলে দূর্বাঘাস | অতি ব্যবহার্য জিনিষ নতুন দেখে চিনতে না পারা। |
বাপেরও বাপ আছে // বাবারও বাবা আছে | কেউই অসীম ক্ষমতা ধরে না; তিমিকে গেলার জন্য তিমিঙ্গিল আছে, ননদেরও ননদ আছে, শমনদমন রাবণ রাজা, রাবণদমন রাম ইত্যাদি। |
বাবা পেটে, মা হাটে, আমি তখন বছর আটে | আগড়ম বাগড়ম বক্তব্য; পাগলের প্রলাপোক্তি। |
বাবাজীকি বাবাজী, তরকারীকি তরকারী | টিকি (বোঁটা) থাকায় বেগুন বাবাজী, আবার তরকারী; যাকে দিয়ে একসাথে দুটো কাজ হয় বা যায়। |
বাবার কালে নেইকো গাই, চালুনি নিয়ে দুইতে যাই | আদিখ্যেতা, বাড়াবাড়ি; কোন নতুন জিনিষ পেয়ে ব্যবহার না জানায় ব্যস্তসমস্ত হয়ে পড়া। |
বাবু পান না, তাই খান না | বাবু ঘি খান না; কেন খান না? পান না তাই খান না; অলভ্য জিনিষ মন্দ; আঙুর ফল টক। |
বাবু মরেন শীতে আর ভাতে | ফুঁটোবাবুর ঘরে অন্ন নেই; পরার জন্য শীতের জামাকাপড় নেই; অভাগার প্রতি ব্যঙ্গোক্তি। |
বাবু যত বলে, পারিষদ বলে তার শতগুণ | মোসাহেব বেশি তড়পানি; বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়। |
বামন (=হ্রস্বাকৃতি ব্যক্তি) হয়ে চাঁদে হাত বাড়ানো | দুর্লভবস্তুর প্রতি অযোগ্যের লোভ; ছোট ব্যক্তির বড় জন্য আকাড়া। |
বামুন গেল ঘর তো লাঙ্গল তুলে ধর | নজরদারির অভাবে কাজে ফাঁকি; উপযুক্ত তদারকির অভাবে নিযুক্ত কর্মীদের কাজে অবহেলা করা। |
বামুন বাদল বান দক্ষিণা পেলেই যান- খনা | ব্রাহ্মণ যেমন দক্ষিণা পেলেই বিদায় হন তেমনি বাদ ও বান দক্ষিণা বাতাস পেলেই চলে যায়। |
বামুন মন্ত্র পড়ে, পাঁঠার কলায় শুনে | যাকে উপদেশ দেওয়া হচ্চে, তার কানেই যাচ্ছে না। |
বামুনের গরু খায় অল্প, নাদে বেশি, দুধ দেয় কলসি কলসি | অল্প খরচে বেশি কাজ পাওয়ার ইচ্ছা। |
বামুনের নজর নৈবদ্যের কলায় | যার যা স্বভাব; স্বভাব যায় না মলে। |
বামুনের ভাতে আছে | বামুন চাষবাস করে না; সেকারণে তার চাকরের কাজ কম থাকে; যে চাকরের খাটনি নেই, খায় দায় সুখে আছে; কাজ কম সুখেই আছি। |
বারবার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এইবার তোমার আমি বধিব পরাণ | বেশিদিন চালাকি করলে একদিন ফাঁদে পড়তেই হয়। |
বারো মাসে বারো ফল, না খেলে যা রসাতল- খনা | সময়ের ফল সময়ে খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব উপকারী। |
বারোমাসে তেরো পার্বণ | হিন্দুদের ঘরে উৎসবের বাড়াবাড়ি; মূলতঃ বাঙালীর ঘরে ঘরে সারা বছর ধরেই নানারকমের সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান লেগেই আছে। |
বারো রাজপুতের তেরো হাঁড়ি | পাঁচজন লোকের সাতরকম মত; তীব্র রেষারেষি; নানা অন্তর্দ্বন্দ্ব। |
বারো হাত কাঁকুড়ের তেরো হাত বীচি // বারো হাত কাপড়ের তেরো হাত দশী // বারো হাত পুকুরে তেরো হাত মাছ | মূলবিষয় থেকে আনুসঙ্গিক বিষয় অনেক বেশি; কাজ থেকে আড়ম্বর বেশি; সমতুল্য- 'ছেলের থেকে ছেলের ঘুনসি বড়', 'মিঞা থেকে মিঞার ডিঙি ভারি' ইত্যাদি। |
বারো রাজপুতের তেরো হাঁড়ি | কাছাকাছি থাকলে লাঠালাঠি হয়; সমতুল্য- 'আপন থেকে পর ভাল, পর থেকে জঙ্গল ভাল', 'কাছের মানুষ কাছের হয় না', 'ভাইভাই ঠাঁই ঠাঁই', 'যত রক্তের কাছাকাছহি তত রক্তারক্তি' ইত্যাদি |
বারোটা দেখলুম তেরোটা মলো | হাতুড়ে ডাক্তার/বৈদ্য |
বালানাং রোদনাং বলং | শিশুদের ক্রন্দনই বল; শিশুদের ক্রন্দন স্বাস্থের পক্ষে অপরিহার্য। |
বালির বাঁধ | ভঙ্গুর প্রতিরোধব্যবস্থা, যা একটু বাধা পেলেই ভেঙে পড়ে; বড়র/শঠের পীরিতি বালির বাঁধ। |
বাসনায় সন্তোষ থাকা বিধেয় | বাসনায় তৃপ্তি থাকা উচিৎ; অতৃপ্তি মনে বিকার আনে। |
বাসরঘরে বিড়াল মারা // বিড়াল প্রথমরাত্রেই মারতে হয় | স্ত্রীর কাছে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার স্বামীর কৌশল। |
বাস্তবচিত্র অনেক সময় গল্পকেও হার মানায় | অনেকসময় এমন কিছু ঘটনা ঘটে যে চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন হত; চমৎকৃত হওয়ার মত ঘটনা। |
বাহাত্তরে দশা/ধরা | বার্ধক্যের কারণে কাণ্ডজ্ঞানহীন/বুদ্ধিলোপ হওয়া/ভীমরতিতে পাওয়া। |
বিকারী রোগীর জলপান | হাজার সুখভোগের পরও যার বাসনার শেষ নেই, কামনার পরিতৃপ্তি নেই। |
বিচারে এড়া, আচারে বাড়া | যুক্তিবিচারের ধার ধারে না, কিন্তু আচারে এক পা আগে। |
বিক্রীতে করিণি, কিমঙ্কুশ বিবাদঃ | হাতী বিক্রি হয়ে গেলে তার অঙ্কুশ নিয়ে বিবাদ করা বৃথা; যেখানে মূল অনুপস্থিত, সেখানে আনুসঙ্গিক বিষয়ের কোন মূল্য নেই। |
বিজ্ঞ যেথায় ভয় পায়, অজ্ঞ সেথায় আগে ধায় | অর্বাচীনের বাহাদুরি; নিজের ওজন না বুঝে অর্বাচীন আগে বাড়ে। |
বিড়াল কাঠের হোক, ইঁদুর ধরতে পারলেই হ'ল | কাজ নিয়ে কথা; কাজের কাজ হ'লেই হ'ল। |
বিড়াল তাড়িও না বরং খাবার থালা সরাও- জাপানী প্রবাদ | সিদ্ধান্ত সঠিক না হলে উচিত ফল পাওয়া যায় না। |
বিড়াল থলির বাইরে এলো | গোপন কথা প্রকাশিত হ'ল। |
বিড়াল প্রথমরাত্রেই মারতে হয় | উদ্ভবের সম্ভাবনা থাকলে সঙ্কট অঙ্কুরে বিনষ্ট করতে হয়। |
বিড়াল বনে গেলে বনবিড়াল (বাঘ) হয় | অবস্থার পরিবর্তন হলে, স্বভাবও পরিবর্তিত হয়। |
বিড়াল বলে মাছ খাব না, আঁশ ছোব না, কাশী যাবো | ভণ্ডের ভণিতা; এমন মিথ্যা যা মেনে নেওয়া যায় না। |
বিড়াল বৈরাগ্য | ক্ষণস্থায়ী কামনা-বাসনা; বিড়াল মার খেলে পালায়; কিছুক্ষণ পর আবার সেইস্থানে ফিরে আসে। |
বিড়াল ভীরু হলে ইঁদুর বাহাদুর | শাসন কঠোর না হলে দুস্কৃতিরা রাজত্ব বসে। |
বিড়ালকে মাছ খাইতে শিখিও না | ক্ষতিকারককে ইন্ধন যুগিও না। |
বিড়ালের আড়াই পা | দোষ করে বিড়াল মার খায়; কিন্তু আড়াই পা দিয়ে সব ভুলে যায়; যার মান-অপমানবোধ নেই; অল্পসময়ের মধ্যে সব মান-অপমান ভুলে যায়। |
বিড়ালের কপালে টিকা | যার যা করা সাজে না তার সেই কাজ করা; নিছক ভণ্ডামি, যা মেনে নেওয়া যায় না। |
বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাধঁবে কে? | কোনো প্রয়োজনীয় কিন্তু আপাত-অসম্ভব বা বিপজ্জনক কাজের গোড়াপত্তন করা; অসম্ভব কাজ বলা সহজ করা কঠিন। |
বিড়ালের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েছে | কপাল ফিরেছে; ভাগ্যক্রমে ঈপ্সিত সুযোগ মিলেছে। |
বিদেশে বন্ধুলাভো হি মরাবমৃতনির্ঝর | বিদেশে বন্ধুলাভ মরুভূমিতে অমৃতপ্রাপ্তির সমান। |
বিদ্যা কামদুঘা ধেনু | বিদ্যা কামধেনুতুল্য। |
বিদ্যা ও বিত্ত কখনো সমান হয় না | বিদ্যার মত বিত্তের গুণ নেই। |
বিদ্যা দদাতি বিনয়ং, বিনয়াদ্যাতি পাত্রতাম্। পাত্রত্বাত্বাদ্ধন্মাপ্নোতি, ধনাদ্ধর্মস্ততঃ সুখম্।। (চাণক্য) | বিদ্যা থেকে বিনয়, বিনয় থেকে যোগ্যতা; যোগ্যতা থেকে ধন, ধন থেকে ধর্ম এবং ধর্ম থেকে সুখ লাভ হয়। |
বিদ্যা ধনাদপি গরীয়সী | বিদ্যা বিত্ত থেকে বড় ও মহান। |
বিদ্যা, বিনয়, ভদ্রতাছাড়া কোন জিনিসই অতিরিক্ত ভালো নয়। | বিদ্যা, বিনয়, ভদ্রতা ইত্যাদি মানুষের চারিত্রিক গুণ, সকলের ভূষণ। |
বিদ্যা স্তব্ধস্য নিস্ফলা | যে ব্যক্তি কথা বলতে ভয় পায়, তার কাছে বিদ্যা নিস্ফল হয়। |
বিদ্যা মিত্রং প্রবাসে চ মাতা মিত্রং গৃহেষু চ। ব্যাধিতস্যৌষতধং মিত্রং ধর্মো মৃতস্য চ।। (চাণক্য) | বিদেশে বিদ্যাই হল বন্ধু, গৃহে মাতাই হল বন্ধু, ঔষধ হল রোগীর বন্ধু, আর ধর্ম হল মৃতজনের বন্ধু- বিভিন্ন অবস্থায় বন্ধু। |
বিদ্যাতুরাণাং ন সুখং ন নিদ্রা | বিদ্যার্জনে ব্যাকুল ব্যক্তির সুখানুভূতি বা নিদ্রা থাকে না। |
বিদ্যান সর্বত্র পূজ্যতে | বিদ্যানব্যক্তি দেশেবিদেশে সর্বত্র সমাদৃত হয়; বিদ্বানের কাছে কোন দেশই বিদেশ নয়। |
বিদ্যার চেয়ে বন্ধু নাই, ব্যাধির চেয়ে শত্রু নাই | বিদ্যাই মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু; বিদ্যা মানুষকে সৎ পথে চালিত করে; ব্যাধিই মানুষের প্রধান শত্রু; ব্যাধিতে ধরলে বিনাশ অনিবার্য। |
বিদ্যারত্নং মহাধনম | বিদ্যারত্নের সাথে কারো তুলনা হয় না; বিদ্যারত্ন শ্রেষ্ঠ ধন, যার বৃদ্ধি আছে কিন্তু ক্ষয় নাই। |
বিদ্যাহীনা ন শোভন্তে নির্গন্ধা ইব কিংশুকাঃ | বিদ্যাহীন পুরুষ উচ্চবংশজাত হলেও গন্ধহীন পলাশফুলের মত অসার। |
বিদ্বত্ত্বঞ্চ নৃপত্বঞ্চ নৈব তুল্যং কদাচন। স্বদেশে পূজ্যতে রাজা বিদ্বান্ সর্বত্র পূজ্যতে।। (চাণক্য) | বিদ্বানের সাথে রাজার কোন তুলনা হয় না; রাজা শুধু নিজের দেশে সম্মানিত হন; স্বদেশে, বিদেশে সর্বত্র বিদ্বানব্যক্তি সম্মানিত হন। |
বিদ্বান সকল গুণের আধার, অজ্ঞ সকল দোষের আকর | জ্ঞান থেকে পূণ্যের সৃষ্টি হয়; অজ্ঞতা থেকে সব পাপের জন্ম হয়। |
বিধাতৃলিখিতা যাতু ললাটেহক্ষর মালিকা। দেবোহপি ন হি সকনোতি তল্লেখ্যং লিখিতংপুনঃ।। (চাণক্য) | বিধাতা ললাটে যে অক্ষরমালা লিখেছেন সেই লেখার অন্যথা করে পুনরায় লেখার মত ক্ষমতা কোন দেবতার নেই। |
বিধি বাম | বিধাতা বিরূপ (বিধাতা বাম তাই অনারাম আমার পিছু ছাড়ে না) |
বিধি-ব্যবস্থা | নিয়মাবলী (সরকারী বিধিব্যবস্থা ভালই আছে, তবে মানে কজন?); সমার্থক বাগধারা- আইন-কানুন, নিয়ম-কানুন ইত্যাদি |
বিধি যখন চাইবেন তখন ছুটি পাইবেন | মৃত্যু ব্যক্তির ইচ্ছাধীন নয়, বিধাতার ইচ্ছাধীন; জন্ম, মৃত্য্ বিয়ে তিন বিধাতা নিয়ে। |
বিধি যখন মাপায়, তখন অল্প অল্প চাপায় // বিধি যখন মাপায়, তখন উপরি উপরি চাপায় | বিধি একবারে বিপাকে ফেলে না। |
বিধি যদি করে মন, তুষ্ট হতে কতক্ষণ | বিধি চাইলে সৌভাগ্যলক্ষ্মী ঘরে এসে উপস্থিত হন। |
বিধি যদি বিপরীত, কেবা করে তার হিত // বিধির বিধান খণ্ডাবে কে // বিধির লিখন না যায় খণ্ডন // বিধির মনেতে যা নিশ্চয়ই ঘটিবে তা | বিধি বিরূপ হলে হাজার চেষ্টাতেও সৌভাগ্য আসবে না। |
বিধিড় বিধান কপালে লেখা // বিধির বিধান চর্মে ঢাকা | বিধাতা সকলের কপালে তার ভাগ্যলিপি লিখে দিয়েছেন; ভাগ্যলিপি কপালের চামড়ায় ঢাকা থাকে। |
বিনয়ীরা সুবিধাবাদী হয়, সুবিধাবাদীরা বিনয়ী হয়। | বিনয়ীরা নানাসুবিধা ভোগ করে; কপটেরা সুবিধা ভোগ করার জন্য বিনয়ী হয়। |
বিনা কারণে কাউকে দোষারোপ করো না, সে যখন তোমার কোন ক্ষতি করে নি- ইহুদী প্রবাদ | অযথা কারো বিরুদ্ধাচরণ কর না। |
বিনা কারণে কেউ কারও বন্ধু নয়, কেউ কারও শত্রু নয় | স্বার্থছাড়া কেউ এক পা নড়ে না; সমতুল্য- অবকুমারকে বাঘে খায়', বিরুদ্ধ উক্তি- 'পরের কারণে স্বার্থ দিয়ে বলি এজীবন মন সকলি দাও...', 'শুধু স্বার্থ নয়, স্বার্থত্যাগও আছে এ সংসারে', 'স্বার্থমগ্ন যেজন বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে, সে কখনাে শেখেনি বাঁচিতে' ইত্যাদি। |
বিনা দানে মথুরা পার | বিনা ব্যয়ে কার্যসিদ্ধি। |
বিনা বাতাসে গাছের পাতা নড়ে না | সবকাজের পিছনে কারণ থাকে। |
বিনা মেঘে বজ্রপাত | হঠাৎ বিপদ উপস্থিত |
বিনা মেঘে বর্ষণ | কারণ নেই কার্য এসে উপস্থিত; না চাইতেই জল। |
বিনা স্বদেশী ভাষা মেটে কি আশা- রামনিধি গুপ্ত | মাতৃভাষার স্বাদই আলাদা; মাতৃভাষার তুলনা হয় না। |
বিনাশকালে বিপরীতবুদ্ধি | উচ্ছন্নে যাওয়ার সময় লোকের মন্দবুদ্ধি বেশি কাজ করে। |
বিনাশকালে ভগবান | বিপদে পড়লেই ভগবানের কথা মনে পড়ে; মরার সময় হরিনাম। |
বিন্দু বলে আয়রে বিন্দু গড়ে তুলি মহাসিন্ধু // বিন্দুবিন্দু বৃষ্টি, করে সিন্ধু সৃষ্টি | সব বিশাল সৃষ্টির পিছনে অসংখ্য ক্ষুদ্রের সহযোগিতা থাকে; তিলে তিলে তাল হয়; রাই কুড়িয়ে বেল হয় ইত্যাদি। |
বিন্দুবিন্দু জলের ফোঁটা পাথর ফুটো করে | দৈর্য ও অধ্যাবসায় থাকলে সব কিছু হয়। |
বিপদ অনুমান করতে পারলে অর্ধেক বিপদ এড়ানো যায় | বিপদ আসবার আগেই সাবধান হওয়া ভাল। |
বিপদ একা আসে না // বিপদ সঙ্গে দোসর আনে // বিপদ একা আসে না, দোসর খোঁজে | একটা বিপদ এলে আরেকটা বিপদ পিছনে পিছ্নে এসে উপস্থিত হয়। |
বিপদই মানুষের প্রকৃত কষ্টিপাথর | বিপদে পড়লেই বুঝা যায় মানুষ বিপদ কাটিয়ে উঠার শক্তি, বুদ্ধি ধরে কিনা। |
বিপদকালে ছাগলও চাট মারে | বিপদে পড়লে সামান্য লোকেও কটু কথা শোনায়; হাতী পাঁকে পড়লে চামচিকেও লাথি মারে। |
বিপদকালে বুদ্ধি নাশ | বিপদের সময় বুদ্ধি খোলে না। |
বিপদকে ডেকো না বিপদ তোমার পিছু নেবে | প্রতি পদেই বিপদের হাতছানি থাকে; এড়াতে না জানলে বিপদ ঘাড়ে পড়বেই। |
বিপদ জেনেও যে পদক্ষেপ নেয় না, সেই প্রকৃত মূর্খ | শুধু অলস অক্ষমেরাই বিপদ না এড়িয়ে বিপদকে কাছে টানে। |
বিপদে পড় নেই ভয়; অভিজ্ঞতায়/বুদ্ধিবলে হবে জয়- খনা | প্রতি পদেই বিপদ আছে; সাহসের সাথে লড়লে সব বিপদকে এড়ানো যায়।। |
বিপদে পড়ে রামনাম/শ্রীমধুসূদন | বিপদে পড়লে সবাই ধার্মিক; বিপদে পড়লে সবাই ঈশ্বরকে স্মরণ করে; সমতুল্য- 'কারে পড়ে আল্লার নাম', 'ঠেলায় পড়ে ঢেলায় প্রণাম' ইত্যাদি। |
বিপদে বন্ধু চেনা যায় // বিপদের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু | প্রকৃত বন্ধুরা বিপদের সময় পাশে এসে দাঁড়ায়, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। |
বিপদে যে হতবুদ্ধি হয় না সে বিপদ কাটিয়ে ওঠে | বিপদে মাথা ঠাণ্ডা রাখা প্রয়োজন; বুদ্ধিমান বিপদে মাথা ঠাণ্ডা রাখে। |
বিপদে শালগ্রাম, নইলে শিলা // বিপদে শিবের গোঁড়া, সম্পদে শিব তো নোড়া | ভয় থেকেই ভগবানে ভক্তি আসে; বিপদে পড়লে সবাই ধার্মিক সাজে। |
বিবাহ প্রেমের গোরস্থান, কিন্তু শান্তির আস্তানা | প্রেম বিরহ ভয়, মাধুর্য ইত্যাদি মিশ্রিত হয়; সংসার সাদাজলের মত সহজ সরল। |
বিবি যখন বড় হবে মিঁয়া তখন কবর যাবে | সময়ের কাজ বিলম্বে করলে ফলভোগ হয় না। |
বিবি সেজে বসে আছে, ডুলি/কাহারের দেখা নেই- হিন্দী প্রবাদ | কাজের লোক হাজির কিন্তু কাজের দেখা নাই; ডোলী ন কহার, বিবি হৈ তৈয়ার; রামের আগেই রামায়ণ। |
'বিয়ে কর কালো তাই গৃহস্থের ভালো' | গৃহস্থকে কাল মেয়ে বিয়ে করার পরামর্শ; সমতুল্য-'জাতের নারী কালাও ভালা'। |
বিয়ে ফুরালে ছাদনাতলায় লাথি | কাজ ফুরালেই উপকারীকে গ্রাহ্য না করা;; কার্যোদ্ধার হয়ে গেলে মানুষ কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুলে যায়; সমতুল্য-'কাজের সময় কাজি কাজ ফুরালেই পাজি'; 'গলার নীচে গেলে আর কিছু মনে থাকে না'; খালি পেরুলে কুমিরকে কলা'; 'খাল পেরুলে পাটনী শালা' ইত্যাদি। |
বিলম্বে কার্যসিদ্ধি | ধৈর্য ধরে থাকলে লাভ হয়; সমতুল্য- 'সবুরে মেওয়া ফলে', 'যে সয় সে রয়' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'ভোরের পাখি পোকা ধরে', 'শুভস্য শীঘ্রম' ইত্যাদি। |
বিলম্বিত বিচার অবিচারের সমান | বিলম্বিত বিচারে নির্দোষ আগেই অন্যায়ভাবে অনাবশ্যক শাস্তিভোগ করে। |
বিলম্বিত স্বীকৃতি থেকে তৎক্ষনাৎ অস্বীকৃতি ভাল | ভালো হোক মন্দ হোক, কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া কালের হাতে ছেড়ে দেওয়া নেই। |
বিলেত ঘুরে মক্কা যাওয়া | অনাবশ্যক দেরী করা, ঘুরিয়ে নাক দেখানো; বাঁকাপথে কাজ করা। |
বিশিষ্টৈচ বিশিষ্টাতাম | বিশিষ্টলোকের সাথে থাকলে বিশিষ্ট হওয়া যায়; চন্দনগাছের সংস্পর্শে এসে সাধারণগাছ সুগন্ধ পায়। |
বিশ্বকর্মা কেমন কারিগর তা জগন্নাথদেবেই প্রকাশ | কাজ দেখে কারো অক্ষমতা বুঝতে পারা। |
বিশ্বকর্মার সূঁচ গড়া | দক্ষ কারিগরকে সামান্য কাজের বরাত দেওয়া। |
বিশ্বাসঘাতক নিজের মৃত্যু ডেকে আনে | বিশ্বাসঘাতককে কেউ সহায়তা করে না। |
বিশ্বাসে পাহাড় টলে | দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে অসাধ্যসাধন করা যায় |
বিশ্বাসে পেট ভরে না, খাদ্য লাগে // | বিশ্বাস কোন ক্রিয়াশক্তি নয়; কিছু করতে গেলে কিছু করতে হয়; ফাঁকা আওয়াজে পেট ভরে না;বিরুদ্ধ উক্তি- বিশ্বাসে মিলায় বস্তু/কৃষ্ণ, তর্কে বহুদূর। |
বিশ্বাসে মিলায় বস্তু/কৃষ্ণ, তর্কে বহুদূর | তর্কে তর্ক বাড়ে; সিদ্ধান্তে আসতে সময় লাগে; কাজের কাজ হয় না; বিরুদ্ধ উক্তি- 'বিশ্বাসে পেট ভরে না, খাদ্য লাগে',বিশ্বাসে ভাত সিদ্ধ হয় না, আগুন লাগে' ইত্যাদি। |
বিশ্বাসো নৈব কর্তব্যঃ- চাণক্য | কাউকে বিশ্বাস করা উচিৎ নয়; বিরুদ্ধ উক্তি- মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো মহাপাপ। |
বিষ খেয়ে বিশ্বম্ভর | সংসারের জ্বালাযন্ত্রণায় তিতিবিরক্ত। |
বিষ থেকেও অমৃত নেওয়া যায় | ক্ষেত্রবিশেষে বিষ অমৃত হ'তে পারে। |
বিষ নেই তার কুলোপানা চক্কর | অক্ষমের বৃথা আস্ফালন; ক্ষমতাহীন ব্যক্তির মৌখিক আস্ফালন; বিরুদ্ধ উক্তি- 'বিষহীন সাপকেও ফণা ধরতে হয়'। |
বিষকুম্ভম পয়োমুখম | যে ব্যক্তির মুখে মধু অন্তরে বিষ; বাইরে মিষ্টি ভিতর তিতা; প্রবৃত্তি শরীর থেকে ভিন্ন হয় না |
বিষস্য বিষসৌধম // বিষে বিষে বিষক্ষয় | বিষই হ'ল বিষের একমাত্র ওষুধ; কানে জল দিলে কানের জল বার হয়; বিরুদ্ধ উক্তি- 'জলে জল বাড়ে', 'তর্কে তর্ক বাড়ে' ইত্যাদি। |
বিষষং চঙ্ক্রমণং রাত্রৌ বিষং রাজ্ঞোহনুকূলতা। বিষষং স্ত্রিয়োহপ্যন্যহৃদো বিষষং ব্যাধিরবীক্ষিতঃ।। (চাণক্য) | রাত্রিতে ভ্রমণ বিষতুল্য, রাজার আনুকূল্য বিষতুল্য, যে স্ত্রী পরপুরুষের প্রতি আসক্ত সেই স্ত্রীও বিষতুল্য, যে ব্যাধিকে উপেক্ষা করা হয়েছে তাও বিষতুল্য। |
বিষহীন সাপকেও ফণা ধরতে হয় | ফণার ভয়ে সবাই ভীত হয়; প্রয়োজনে রুখে দাঁড়াতে হয়। |
বিষাদপ্যমৃতং গ্রাহ্যমমেধ্যাদপি কাঞ্চ নম্। নীচাদপ্যুত্তমাং বিদ্যাং স্ত্রীরত্নং দুষ্কুলাদপি।। (চাণক্য) | অমৃত বিষ থেকেও গ্রহণ করা চলে, সোনা অশুচি স্থল থেকেও গ্রহণ করা চলে, শ্রেষ্ঠবিদ্যা নীচ ব্যক্তির কাছ থেকেও গ্রহণ করা চলে, রমণীশ্রেষ্ঠা নীচ কুল থেকেও গ্রহণ করা চলে। |
বিষে বিষে বিষক্ষয় | কাঁটা দিয়েই কাঁটা ওঠে। |
বিষ্ঠায় ঢেলা মারলে নিজের গায়ে ছিটকে পরে | নীচমনার সাথে বিবাদ করলে নিজেকে অপমানিত হতে হয়। |
বিসমিল্লায় গলদ | কাজের পরিকল্পনাতেই ভুল। |
বীরভোগ্যা বসুন্ধরা | বসুন্ধরা বীরকে বরণ করে; বীর সর্বত্র আদরণীয়, বরণীয়। |
বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না | মনের আকুলতা ব্যক্ত করতে অপারগ। |
বুকে বসে দাড়ি উপড়ায় | আশ্রয়দাতা বা প্রতিপালকের অনিষ্ট সাধন করে; সমতুল্য- যার খায় তারেই গালায়; যার খায় যার পড়ে তারই আবার ক্ষতি করে। |
বুকের পাটা পাঁচ হাত | অতি সাহসী ব্যক্তি। |
বুজরুক বামুনের ভড়ং বেশি | ভণ্ড বামুনের পূজায় আচারে-বিচারে ঘটা থাকে। |
বুড়ো বয়সে ধেড়ে রোগ | বুড়ো বয়সে ছেলেদের মত কাজ করা। |
বুড়ো বয়সে ভীমরতি // বুড়ো হলে বাহাত্তুরে পায় | বুড়ো বয়সে কাজে কর্মে নানা ভ্রান্তি হয়। |
বুড়ো শালিক পোষ মানে না | শিশুর মত আচরণকারী বুড়োকে সহজে প্রতিপালন করা যায় না। |
বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ | বুড়ো শালিকের ঘাড়ে শিশু শালিকের মত রোঁয়া ওঠে না; বৃদ্ধবয়সে শিশু বা যুবকের মতো আচরণ। |
বুড়ো হ'ল বক চেনে না | বৃদ্ধলোকের অতি সাধারণ বিষয়ে অজ্ঞতা প্রকাশ। |
বুদ্ধিগুণে হা-ভাত, বুদ্ধিগুণে খা-ভাত | দুর্বুদ্ধি হলে মানুষ বিপদে পড়ে; সুবুদ্ধি হলে সুখস্বচ্ছন্দে থাকে। |
বুদ্ধি ব্যবহার না করলে বুদ্ধির ক্ষয় হয়। | চর্চা না করলে বুদ্ধির ধার কমে যায়, বুদ্ধিতে জঙ ধরে। |
বুদ্ধি যার বল তার। | বুদ্ধির জোরে দুর্বলও যুদ্ধে জয়ী হয়। |
বুদ্ধি যার যশ তার | গায়ের জোর থেকে মেধার জোর বেশি। |
বুদ্ধিমান কাজ শুরু করলে কাজ শেষ করে | বুদ্ধিমান কাজের শেষ না দেখে ছাড়ে না। |
বুদ্ধিমান লোকের কাছে সুখ একটি বিরল বিষয়- তুর্কী প্রবাদ | সাধারণতঃ বুদ্ধিমান লোক চিন্তা বেশি; ফলে তারা সুখের সন্ধান পায় না। |
বুদ্ধিমান সমস্যার সমাধান করে; প্রতিভাবান সমস্যা প্রতিরোধ করে | বুদ্ধিমানেরা প্রত্যুৎপন্নপমতি; তারা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেয়; প্রতিভাবানেরা অনাগতবিধাতা, তারা আগাম চিন্তা করে। |
বুদ্ধিমানের কাছে ছোট্ট একটা ইঙ্গিতই যথেষ্ট | বুদ্ধিমানকে বোঝাতে সময় লাগে না। |
বুদ্ধির সীমা আছে, বোকামীর কোন সীমা নেই-আরবী প্রবাদ | অজ্ঞানেরা কাণ্ডজ্ঞানবর্জিত হয়ে থাকে। |
বুদ্ধিহীনতাই সর্ববাধিক দারিদ্র- আরবী প্রবাদ | অজ্ঞানের জীবনটা বৃথা যায়। |
বুদ্ধির্যস্য বলং তস্য | বুদ্ধি যার বল তার; যার বুদ্ধি আছে, তার শক্তিও আছে; বুদ্ধিই শক্তির উৎস। |
বুনলাম ধান, হল তিল, ফলল রুদ্রাক্ষ, খেলাম কিল | অর্থহীন আবোলতাবোল উক্তি; অসংলগ্ন কথাবার্তা। |
বুনোহাঁসের পিছনে ছোটো না | অনিশ্চিতের পিছনে দৌড়ানো উচিৎ নয়। |
বৃক্ষহীনদেশে ভেরেণ্ডাও বৃক্ষ | অজ্ঞানীর দলে অল্পজ্ঞানীরা যথেষ্ট সম্মান পায়; সমতুল্য- 'বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা', 'বাঁশবনে শিয়াল রাজা', 'ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল' ইত্যাদি। |
বৃক্ষের পরিচয় তার ফলে // বৃক্ষ তোমার নাম কী? ফলেন পরিচীয়তে | মানুষের পরিচয় তার প্রকৃতিতে, আচার-ব্যবহারে। |
বৃদ্ধস্য বচনং গ্রাহ্যং // বৃদ্ধস্য বচনং গ্রাহ্যমাপৎকালে হ্যপস্থিতে | বৃদ্ধলোকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ; সমিতুল্য- 'তিনমাথা যার বুদ্ধি নেবে তার'। |
বেঁচে থাকলে বাপের নাম | নিজেকে বাঁচানোই আগে দরকার, তারপর অন্য কথা; স্বার্থপর চরিত্র। |
বেঁধে মারে সয় ভাল | অল্প তিরস্কার সহনীয়। |
বেআক্কেলকে আক্কেল দিলে নিজের আক্কেল ক্ষয়, আক্কেলকে আক্কেল দিলে আরো আক্কেল হয় | বুদ্ধিহীনকে সুপরামর্শ দিলে কোন কাজে লাগেনা, বুদ্ধিমানকে সুপরামর্শ দিলে নিজেরও কিছু বুদ্ধি বৃদ্ধি হয়। |
বেকারের চেয়ে বেগার ভাল | কিছুনা করা থেকে বিনাবেতনের কাজ করা ভাল, অন্তুতঃ স্বাস্থ্য ভালো থাকে; পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। |
বেগম চেনে না বেগুন | বড়লোকের বেটির সাধারণ জিনিষ না চেনার ভান করা। |
বেগারের দৌলতে গঙ্গাস্নান | বিনাবেতনে গঙ্গাযাত্রীর কাজ করে গঙ্গাস্নান; সামান্যের পরিবর্তে অসামান্য লাভ। |
বেগুনগাছে আঁকশি | নগণ্যকাজের জন্য আড়ম্বর করা; কোন ব্যক্তির ক্ষুদ্রত্ব প্রচার। |
বেড়া নেড়ে গৃহস্থের মন বুঝা | চোর বেড়া নেড়ে বুঝে নেয় গৃহস্থ জেগে আছে কিনা; কথার আভাসে অন্যের মনোভাব বোঝা; সমতুল্য- 'জল নেড়ে জোঁকের বোল বোঝা'। |
বেড়ার ওপর বসে১ | দ্বিধা-দ্বন্দ্বে কোন সিদ্ধান্ত নিতে অপারগ; সমতুল্য-'কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা'। |
বেড়ার ওপর বসে২ | দুই দলের গোলমালে কোন পক্ষে যোগ না দেওয়া; সমতুল্য-'ত্রিশঙ্কু অবস্থা'। |
বেদনাবোধ না থাকার অর্থ তুমি মানব নও- ইহুদী প্রবাদ | সুখুদুঃখ নিয়ে মানবজীবন। |
বেদবেদাঙ্গতত্ত্বজ্ঞো জপহোমপরায়ণঃ। আশীর্বাদপরো নিত্যমেষ রাজপুরোহিতঃ।। (চাণক্য) | যিনি বেদ-বেদাঙ্গে পারদর্শী, যিনি সর্বদা জপ ও হোমে নিরত, যিনি সর্বদা (রাজার) মঙ্গল কামনা করেন- তিনিই রাজপুরোহিত। |
বেদে চেনে সাপের হাঁচি | অভিজ্ঞ চোখ সবকিছু জানে; অভিজ্ঞ চোখকে ফাঁকি দেওয়া অসম্ভব। |
বেদের মরণ সাপের হাতে | বিপজ্জনক কাজে খুঁকি থাকে; সমত্যল্য- 'গোঁয়ারের মরণ খোঁয়ারে'; 'গোঁয়ারের মরণ গাছের আগায়' |
বেনাবনে মুক্তা ছড়ানো | বেনাবনে (উলুঘাসে) মুক্তা ছড়ালে কেউ তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে না তেমনি অযোগ্যকে মুল্যবান দ্রব্য দেওয়া বৃথা উপদেশ দেওয়া বৃথা; সমতুল্য- 'বানরের গলায় মুক্তাহার', 'লেঙ্গুরকা অঙ্গুটি' ইত্যাদি। |
বেনের কাছে মেকি চালানো | অভিজ্ঞ চোখকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা। |
বেনোজল ঢুকিয়ে খরজল বার করা | ঘরে বাজে জিনিষ ঢুকিয়ে কাজের জিনিস বার/নষ্ট করা। |
বেল পাকলে কাকের কি? | উপভোগে অক্ষমব্যক্তির পক্ষে উৎকৃষ্ট বস্তুর প্রতি লোভ করা নিষ্ফল। |
বেশি কৌতুক করলে ব্যক্তিত্ব নষ্ট হয়, বেশি হাসলে প্রভাব ক্ষুণ্ণ হয়- আরবী প্রবাদ। | কৌতুকপ্রিয় লোক হালকা চরিত্রের হয়; গাম্ভীর্য শ্রদ্ধা আকর্ষণ করে। |
বেশি কচলালে লেবু তেতো | অল্পজ্বালে রান্না ভালো হয় না |
বেশি জ্বালে ব্যঞ্জন মিষ্ট | অল্পজ্বালে রান্না ভালো হয় না; বিরুদ্ধ উক্তি- 'বেশি কচলালে লেবু তেতো'। |
বেশি যদি খেতে চাও, কম খাও তবে | পরিমিত আহারে দীর্ঘায়ু হওয়া যায়। |
বেহায়ার বালাই নেই | বেহায়ার লাজলজ্জা, মান-অপমানবোধ নেই। |
বৈরিতা অন্যকে আঘাত করে, কিন্তু নিজে আহত হয় | শত্রুতায় কোন পক্ষেরই মঙ্গল হয় না; ঢিল মারলে পাটকেল খেতে হয়। |
বোকা বন্ধুর চেয়ে বুদ্ধিমান শত্রু থাকা ভাল। | বোকা বন্ধুর কাছে থেকে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকে; উপকার করতে এসে বেশি ক্ষতি করে ফেলে। |
বোকা সাজতে গেলে বুদ্ধিমান হতে হয় | বোকা হওয়ার জন্য কোন কসরৎ লাগে না; বোকা সাজার জন্য কৌশল অবলম্বন করতে হয়। |
বোকার বুলি বুদ্ধির আগে ছোটে | আবোলতাবোল বকার জন্য বুদ্ধির প্রয়োজন হয় না। |
বোকা হাসে অন্যের হাসি দেখে | বোকা না বুঝে দলে পড়ে হাসে; দেখন হাসি। |
বোকার কাছে টাকা থাকে না | টাকা খরচে বোকা চিন্তাভাবনা করে না। |
বোকার সাথে মোকাবিলা করা বোকামি- জাপানী প্রবাদ | সেক্ষেত্রে অনর্থ ঘটতে পারে |
বোঝার ওপর শাকের আঁটি | অনেক বোঝার উপর আরও কিছু চাপানো। |
বোধা যেদিকে যেতে সাহস করে না অবোধা সেদিকে ধায় | চালাক এক পা এগুতে দুবার ভাবে; বোকা ভাববার আগেই পা বাড়ায়। |
বোধারে বোঝানো যায় আকারে প্রকারে; অবোধারে বোঝাতে হয় চড়-চাপড়ে | আকার ইঙ্গিতেই বুদ্ধিমান বুঝতে পারে; বোকাকে বারবার পাখি পড়ানোর মত শিখাতে হয়। |
বোবা কালার একগুণ বাড়া | কালা শোনে না, কিন্তু বলতে পারে; বোবা কিছুই পারে না। |
বোবা যখন পুডিং খায় সে জানে কটা খেয়েছে- চীনা প্রবাদ | কোন ঘটনার নীরব দর্শক সবকিছু জানে। |
বোবার শত্রু নেই | যে প্রতিবাদ না করে চুপ থাকে তার সমালোচক নাই; নিরবতা হিরণ্ময়। |
ব্যক্তিত্বহীন মানুষের শিরদাঁড়া নেই | ব্যক্তিত্বহীন মানুষ প্রতিবাদী হয় না; সবার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। |
ব্যতিক্রম নিয়মকে প্রতিষ্ঠিত করে | ব্যতিক্রম ব্যতিরেকে নিয়ম হয় না। |
ব্যর্থ মানুষ দুইপ্রকার- একদল চিন্তা করে নি কাজ করেনি; আরেক দল চিন্তা করেছে কাজ করেনি- আরবী প্রবাদ। | কার্যসিদ্ধি না হলে সাফল্যের প্রশ্ন নেই। |
ব্যর্থতা সাফল্যের ভিত্তি/সোপান | ব্যর্থতার মধ্যে দিয়ে সাফল্য আসে; একবার না পারিলে দেখ শতবার। |
ব্যবহারে মানুষকে চেনা যায় | মানুষের পরিচয় তার ব্যবহারে। |
ব্যাঙ ডাকে ঘন ঘন; বৃষ্টি হবে শীঘ্র জান- খনা | ঘন ঘন ব্যঙ ডাকলে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। |
ব্যাঙ বলে সাপকে কারও কড়ি ধারি না | অক্ষমের নিষ্ফল আস্ফালন, বাগাড়ম্বর। |
ব্যাঙ মারতে তীরধনুক | সামান্য কাজে বিরাট আয়োজন; সমতুল্য- 'মশা মারতে কামান দাগা', 'শানকির উপর বজ্রাঘাত'। |
ব্যাঙের আধুলি | সামান্য ধনের গর্বে গর্বিত। |
ব্যাঙের মাথায় ছাতি ধরে | সাহায্যের প্রয়োজন নেই তবু করা চাই; তেলামাথায় তেল দেয়। |
ব্যাঙের শোকে সাপের চোখে জল | মেকি শোকপ্রকাশ। |
ব্যাঙেরা যেখানে মকমক করে সেখানে চূপ করে থাকাই শ্রেয় | অজ্ঞানের সুরে সুর মেলাতে নেই। |
ব্যাধির চেয়ে আধি হল বড়ো'- রবীন্দ্র | মনের অসুখ থেকে শরীরে অসুখ বাঁধে; মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে অসুখ উৎপন্ন হয়। |
ব্রণ চুলকে ঘা করা | সামান্য বিষয়কে গুরুতর করে তোলা। |
ব্রহ্মহাহপি নরঃ পূজ্যো যস্যাস্তি বিপুলং ধনম্। শশিনস্তুল্যবংশোহপি নির্ধনঃ পরিভূয়তে।। (চাণক্য) | ধনশালীব্যক্তিও যদি ব্রহ্মঘাতীও হয়, লোকে তাকে মেনে চলে, আর নির্ধন চন্দ্রের মতো নির্মল বংশে জন্মগ্রহণ করলেও লোকে মান্য করে না। |
ভ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ভক্তিতে ভগবান তুষ্ট | ভক্তিদ্বারা ভগবানকে তুষ্ট করতে হয়। |
ভক্তিহীন ভজন আর লবনহীন ব্যঞ্জন/রন্ধন | লবণ না থাকলে ব্যঞ্জন যেমন বিস্বাদ, ভক্তিহীন ভজন তেমনই নিস্ফল। |
ভক্তের ভগবান | ভক্তের কাছে ভগবান বাঁধা; ভক্তের ডাকে ভগবান সাড়া দেন। |
ভগবৎ কৃপাহি কেবলম্ | ঈশ্বরের করুণাই একমাত্র কাম্য |
ভগবান অন্ততঃ ব্যয়বহুল পাপ করা থেকে গরীবকে রক্ষা করেন- ইহুদী প্রবাদ | আমাদের অভিজ্ঞতায় বলে গরীবলোকেরা বেশি সৎ হয়। |
ভগবান তৎক্ষনাৎ সব জায়গায় উপস্থিত হতে পারেন না, তাই তিনি মা সৃষ্টি করছেন- ইহুদী প্রবাদ | মামাত্রই জগৎজননী; 'মা' জগতের সব থেকে ছোট শব্দ, 'মা' জগতের সব থেকে বড় ব্যাঞ্জনাময় শব্দ। |
ভগবান মানুষকে দুটো কান এবং একটা মুখ দিয়েছেন- সুতরাং শোন বেশি, বল কম- ইহুদী প্রবাদ | জ্ঞানীব্যক্তিরা বলেন কম শোনেন বেশি। |
ভগবান ভূতানাং গতঃ | দশজন একজনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলে, সে যেমন লোক হোক-না-কেন তাকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। |
ভগবান যা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন | ঈশ্বরের ইচ্ছা অনিচ্ছা আমরা জানি না, তবে ভগবানে বিশ্বাস রাখলে মন বিক্ষিপ্ত হয় না। |
ভগবানে ভক্তি, ভয় ও স্বার্থের ভালবাসার কারণে জন্ম নেয় | মৃত্যুভয় না থাকলে ভগবানের জন্ম হত না; সর্দি, কাশিতে মানুষ মরে না, তাই সর্দি বা কাশিদেবী নাই। |
ভগবানের আসন বটপত্র। | প্রলয়শেষে অনন্যোপায় হয়ে বিষ্ণু প্রলয়সলিলে বটপাতায় শুয়েছিলেন; সাধারণ ঘরে গণ্যমান্যব্যক্তি এলে গৃহস্থ অতিথিকে একটি সাধারণ আসন এগিয়ে দিয়ে এই কথা বলে। |
ভগবানের দেখা নাই বলে ভগবানের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা | দেখা পেলেই ভগবান আমাদের মত সাধারণ মানুষ হয়ে যেতেন; সোনা সহজে পাওয়া যায় না বলে সোনার দাম। |
ভগবানের মার দুনিয়ার বার | বিধির বিধান এড়ানো যায় না; অমোঘ পরিণাম; মারে কৃষ্ণ রাখে কে? |
ভজন নেই ভোজন আছে // ভজনের খোঁজ নেই, ভোজন ছত্রিশ জেতের | ধর্মকর্মের ভানকারীদের শুস্ক আচারসর্বস্বতার প্রতি তির্যকোক্তি। |
ভটচায্যির পাঁতি(=পাঁজি/পুঁথি) বর্ষার ছাতি | পাঁজি বৃষ্টিতে ছাতার কাজ করে; ছাতা কুকুর তাড়াতে কাজে লাগে; যোগ্যবস্তুর অসদব্যবহার। |
ভণ্ড ব্রাহ্মণের ভড়ং বেশি | বেশি ধার্মিকতা দেখাতে ভণ্ড ব্রাহ্মণ বেশি সাজগোজ করে, বেশি আচার করে; অব্রাহ্মণের দীর্ঘ ফোঁটা। |
ভদ্রলোক গাছে ফলে না। | মার্জিত, পরিশীলিত খুব কম হয়, গাছের ফলের মর সহজলভ্য নয়। |
ভদ্রলোক গায়ে লেখা থাকে না | আচরণে বোঝা যায়- কে ভদ্রলোক এবং কে ভদ্রলোক নয়। |
ভদ্রলোকের সাথে শখ্যতা জলের মত নীরস/স্বাদহীন- চীনা প্রবাদ | ভদ্রলোকেরা পরস্পরের সাথে পরিশীলিত দূরত্ব বজায় রেখে চলে; পরস্পরে অন্তরঙ্গ হয় না। |
ভবতি বিজ্ঞতম ক্রমশো জনঃ | অভিজ্ঞতার মাধমে মানুষ বিজ্ঞ হয়; সমতুল্য- গাইতে গাইতে গায়েন। |
ভবি ভুলিবার নয় // ভবিকে ভোলানো যায় না | নাছোড়বান্দা; কারো জেদ ভাঙা না গেলে বা কাউকে প্রতিজ্ঞা থেকে টলানো না গেলে প্রবাদটি উক্ত হয়। |
ভবিতব্যং ভবত্যেব | যা হবার তাই হবে। |
ভবিতব্যানাং দ্বারাণি ভবন্তি সর্বত্র- কালিদাস | ভবিষতের দ্বার সর্বত্র উন্মুক্ত; যা অবশ্যম্ভাবী তা যেকোন স্থানে, যেকোন কালে যেকোন অবস্থায় ঘটতে পারে; ললাটের লিখন কে খণ্ডাতে পারে? |
ভবিষৎকে জানার জন্যই অতীত জানা উচিত- কনফুসিয়াস | অতীতের পাতায় ভবিষ্যতের ঠিকানা লেখা থাকে; অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষ ভবিষ্যতের পথে পা রাখে। |
ভবের ভবানী পান্ত ভাতে আমানি | দরিদ্র মানুষগুলির আহারের সম্বল একমাত্র জলে ভিজানো বাসি ভাত; ভবের সাথে ভবানীর যেমন সম্পর্ক দরিদ্র মানুষগুলির সাথে আমানিরও তেমন সম্পর্ক। |
ভয় পেলে ভয় পিছু নেয় | ভয় মনের কোণে গোপনে বাসা বাঁধে; না তাড়ালে নিজের ইচ্ছায় ভয় নড়ে না। |
ভরা কলসী নড়ে না // ভরা কলসি বাজে কম | জ্ঞানীব্যক্তিদের জ্ঞানের জাহির নেই; পূর্ণকুম্ভো ন করোতি শব্দম্। |
ভরা থলি খাড়া থাকে | জ্ঞানীব্যক্তি মাথা নোয়ায় না। |
ভরা নদী ছোটে না // ভরা নদী ধীরে বহে | জ্ঞানীব্যক্তি ভেবেচিন্তে ধীরেসুস্থে কাজ করে। |
ভরা পেটে মণ্ডা তেতো | আকাঙ্ক্ষা মিটে গেলে ভোগের জিনিষ মন্দ লাগে। |
ভরা পেটে মুড়ি শান্ত | ক্ষিদে পেলে মাথা ঠিক থাকে না। |
ভরা হাত কাক/চিলকে ডাকে | কিছু থাকলে হারাবার ভয় থাকে। |
ভস্মে ঘি ঢালা | অযোগ্যেকে দিয়ে বা অপ্রয়োজনে মহার্ঘ নষ্ট করা। |
ভাঁড়ে নেই ঘি, ঠকঠকালে হবে কি | ঘরেতে অন্নাভাব; অর্থের টানাটানি। |
ভাঁড়ে মা ভবানী | ঘরে কিছুমাত্রা অন্ন বা অর্থের সংস্থান নেই। |
ভাই বড় ধন রক্তের বাধঁন, যদিও পৃথক হয় নারীর কারণ | রক্তের টান বড় টান কেউ তা অস্বীকার করে না; বিরুদ্ধ উক্তি- ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই। |
ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই // ভাইয়ের শত্রু ভাই মাছের শত্রু ছাই // ভাইয়ে ভাইয়ে লাঠালাঠি | নিজের লোক নিজের হয় না; প্রায়শঃই ভাইয়ে ভাইয়ে মিল থাকে না সবাই পৃথক পৃথক স্থানে বাস করে; নিকট আত্মীয়দের মধ্যে নিত্য কোন্দল লেগে থাকে; সমতুল্য- 'আন (অন্য) সতীনে নাড়ে চাড়ে, বোন সতীনে পুড়িয়ে মারে', 'আপন কখনো আপন হয় না', 'কাছের লোক কাছের নয়', 'বারো রাজপুতের তেরো হাঁড়ি', 'যত রক্তের কাছাকাছি তত রক্তারক্তি' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- ভাই বড় ধন রক্তের বাধঁন। |
ভাইয়ের ভাত ভাজের হাত | যে বোন ভায়ের অন্নে প্রতিপালিত সে ভাই-বৌয়ের কর্তৃত্ব মেনে নেয। |
ভাগাভাগি করলে সমস্যা অর্ধেক হয়ে যায় | কারো সাথে ভাগাভাগি করলে সমস্যার চাপ কমে যায়; সমতুল্য- দশের লাঠি একের বোঝা |
ভাগাড়ে গোরু পড়া | ভাগাড়ে যেমন মরা গরুর মাংসের লোভে শকুন চারদিকে উড়তে থাকে তেমনি লোভজনক বস্তু লাভের আশায় বহু লোকের ভিড় |
ভাগাড়ে মড়া পড়ে, শকুনির মাথা নড়ে | একের দুঃখে অন্যের সুখ; কারো পৌষমাস কারো সর্বনাশ |
ভাগের মা গঙ্গা পায় না | অনেকের দেখার থাকলে কেউ দেখে না; যে কাজ ভাগাভাগি করে করা হয় সে কাজ সূচারুরূপে সম্পন্ন হয় না। |
ভাগেল বা | পালিয়েছে (চোর ভাগেল বা) |
ভাগ্য মানুষকে একত্রিত করে | বিপদে পড়লে মানুষ পরপস্পরকে জড়িয়ে ধরে, এককাট্টা হয়। |
ভাগ্য সবার দ্বারে একবার আসে, উপযাজক হয়ে নয়, আহ্বানে। | মানুষ ডাকে বলে সৌভাগ্যদেবী সবাইকে সু্যোগ দিতে একবারই আসেন; সেই সুযোগ নিতে হয়। |
ভাগ্যং ফলতি সর্বত্র, ন চ বিদ্যা ন পৌরুষম্ | বিদ্যা নয়, পৌরুষ নয়, ভাগ্য সর্বত্র ফলবতী হয়; বিরুদ্ধ উক্তি- পরুষ্কারেণ বিনা দৈব ন সিদ্ধতি; অজ্ঞানে আকস্মিক ও দৈব ঘটনার যুক্তি খাড়া করে। |
ভাগ্যবানের বউ মরে, আর অভাগার গরু মরে | বউ গেলে বউ পাওয়া যায় সঙ্গে গাঁটে পয়সাও আসে= সেই অর্থে সে ভাগ্যবান; গরু গেলে নতুন গরু পেতে গাটের পয়সা যায়-সেই অর্থে সে অভাগা। |
ভাগ্যবানের বোঝা ভগবানে বয় // ভাগ্যবানের নৌকা ভগবানে বায়। | সৌভাগ্যশালীরা কখনো বিপদে পড়ে না; তাদের তুঙ্গে বৃহস্পতি অবস্থান করে; আল্লা যারে দেয় ছাঁদ ফুঁইড়া দেয়। |
ভাগ্যের লিখন না যায় খণ্ডন | অদৃষ্টে যা আছে তা ঘটবেই; সমতুল্য- 'অদৃষ্টের ফল কে খণ্ডাবে বল'; 'নিয়তি কেন বাধ্যতে,; বিরুদ্ধ উক্তি- ভাগ্যের ফের কাপুরুষের উক্তি'। |
ভাঙ্গবে তবু মচকাবে না | অবসন্ন হবে তবু হীনতা স্বীকার করবে না। |
ভাঙ্গাঘর ছেয়ে দেওয়া | বিপদে সাহায্য করা; সমতুল্য- 'ছাতা দিতে মাথা বাঁচানো'। |
ভাঙ্গাঘরে চাঁদের/জোছনার আলো, যেদিন যায় সেদিন ভালো | কষ্টেসৃষ্টে দিন গুজরান; একটা দিন সুখে কাটলে সেটা মন্দের ভালো। |
ভাঙ্গাঘরে বাস ভাবনা বারো মাস | অর্থের টানাটানিতে সবসময়ে মনোকষ্ট থাকে। |
ভাঙ্গা ঘরে ভূতের বাসা | বৃদ্ধবয়সে শরীর ভাঙ্গলে নানা রোগ বাসা বাঁধে। |
ভাঙ্গা পা খানায়/গর্তে পড়ে | অক্ষমের ভুল বেশি হয়; বিপদ ঘরে ঢোকার জন্য ছিদ্র খোঁজে। |
ভাঙ্গা শাঁখা/সম্পর্ক জোড়া লাগে না | মন একবার বিগড়ালে আর ভালো হয় না; সুনাম একবার নষ্ট হলে আর পুনরুদ্ধার করা যায় না। |
ভাঙ্গে তবু মচকায় না // ভাঙবে তবু মচকাবে না | দৃঢ়চরিত্রের লোক কখনো মাথা নোয়ায় না; মনের জোর থাকলে সংকল্প টলে না; নিন্দার্থে- গোঁয়ারব্যক্তি কোন উপদেশ নেয় না; বিরুদ্ধ উক্তি-মচকায় কিন্তু ভাঙ্গে না। |
ভাঙ্গে না মচকায় | গোঁয়ার না হয়ে গুরুজনের উপদেশ শোনে। |
ভাজা মাছ উলটে খেতে জানে না | সরলতার ভান করা, যেন কিছু জানে না, বোঝে না। |
ভাজে ঝিঙা বলে পটল | একগুণ কাজ করলে তিনগুণ বলে; একরকম কাজ করার ইচ্ছা হয়, কিন্তু বিভ্রান্ত করতে আরেক রকম বলে। |
ভাত কখনও পেট খোঁজে না | যার প্রয়োজন সেই আগ বাড়াবে; তৃষ্ণাই জল খুঁজবে, জল তৃষ্ণা খুঁজবে না। |
ভাত কাপড়ের কেউ নয়, কিল মারার গোঁসাই // ভাত দেবার মুরোদ নাই, কিল দেবার গোসাঁই- খনা | সুখ দিতে পারে না, অথচ দুঃখ দিতে পিছু পা হয় না। |
ভাত খাই কাঁসি বাজাই, রগড়ের কিছু জানি নাই | সাদাসিদে লোক কূটকচালি/ঝুটঝামেলায় নেই। |
ভাত ছড়ালে কাকের অভাব হয় না | অন্ন দিলে বহু অনুচর জুটে যায়; সাধারম লোকেরা বিত্তবানকে ঘিরে থাকে |
ভাত দেবার ভাতার নন কিল মারার গোঁসাই // ভাত কাপড়ের ভাতার নন নাক কাটার গোঁসাই | ভরণপোষণের কর্তা নন, দণ্ডমুণ্ডের কর্তা; পালনে কর্তা নন কেবল শাসনে কর্তা। |
ভাত সেদ্ধ হয়ে গেছে- চীনা প্রবাদ | পরিবর্তনের সু্যোগ নেই; পিছনে ফেরার সুযোগ নেই; সমতুল্য- 'বলা কথা ফেরে না', 'ছোঁড়া তীর ফেরে না'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'মরার আগে পর্যন্ত ফিরে আসার সুযোগ থাকে'। |
ভাদুরে মেঘ বিপরীতে বয়, আসিন ঝড় বৃষ্টি হয়- খনা | ভাদ্রমাসের মেঘ উত্তরে হাওয়ায় দক্ষিণে বয়; আশ্বিনমাসে ঝড়বৃষ্টি লেগেই থাকে। |
ভাদুরে মেঘ বিপরীত বয়, সেদিনই বৃষ্টি হয়- খনা | ভাদ্রমাসের আকাশে যদি মেঘ ঠাকে এবং হাওয়া উত্তর থেকে দক্ষিণে বয়, সেদিন বৃষ্টি অবধারিত। |
ভাবি এক হয় আরেক | ভাবনায় বিভ্রান্তি হয় |
ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না | ভেবেচিন্তে কাজ না করলে ভুলভ্রান্তি হ'তে পারে; যেকোন কাজ করার আগে ভাবনাতে কাজটা সারতে হয়; সম্মান হারালে সম্মান ফিরে পাওয়া কষ্টকর; সমতুল্য- 'জল খেয়ে জলের বিচার'। |
ভাবের ঘরে চুরি | মন্দকাজের জন্য অজুহাত; মিথ্যাকে সত্য বলে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা; মনে একরকম ব্যবহারে আরেক রকম। |
ভাল ওষুধ তেতো হয়- চীনা প্রবাদ | কিছু ভাল পেতে গেলে কষ্ট স্বীকার করতে হয়। |
ভালকথায় মানুষ বশ | মিষ্টিকথায় জগৎ তুষ্ট। |
ভালকথার ঝুটাও ভাল | মিথ্যা হলেও মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় না। |
ভাল করতে পারি না, মন্দ করতে পারি | ঈর্ষা, দ্বেষ, পরশ্রীকতরতার ইত্যাদি কারণে সাদারণ মানুষ অপরের অনিষ্টই বেশি করে। |
ভাল করলে মন্দ হয় | ভালো করতে চাইলেও ভাগ্যদোষে বিপরীত হয়ে যায়। |
ভাল কাজ পুরস্কার প্রত্যাশা করে না // ভাল কাজের ইনাম নেই | ভালো কাজটাই কাজের পুরস্কার। |
ভাল জিনিসের অল্প ভালো | ভাল জিনিষ বেশি হয় না; ভালো জিনিষ বেশি ব্যবহার করা নেই; |
ভাল নয় অতিশয় | বেশি বাড়াবাড়ি ভাল নয়; সমতুল্য- 'কষতে কষতে বাঁধন ছেঁড়ে', সর্বম অত্যন্তম গর্হিতম'। |
ভাল(=ভদ্র) হতে পয়সা খরচ হয় না | শিষ্টাচার ভিতর থেকে আপনা থেকে আসে, আমদানী করতে হয় না। |
ভালবাসায় জল যথেষ্ট, বিনা ভালবাসায় খাদ্যও সন্তুষ্ট করে না- চীনা প্রবাদ | আদরযত্ন থাকলে অন্যকিছুর বিচার হয় না; সমতুল্য- 'বড়লোকের ভুরিভোজ থেকে গরীবের শাকান্ন ভাল'। |
ভালবাসার নেইকো ভার // ভালবাসার নৌকা পাহাড় বইয়ে যায় | ভালাবাসার পাত্র/পাত্রীর জন্য সব কাজ করা যায়। |
ভালমনের মানুষ ভাল দেখতে হয় | মন ভালো হলে চেহারায় তার আলাদা ছাপ থাকে; বিরুদ্ধ উক্তি- ভালমানুষের মন মুখোশের আড়ালে থাকে। |
ভালমানুষের মন মুখোশের আড়ালে থাকে | ভালোমানুষ চেনা দায়। |
ভালোর কোন সীমা নেই | গুণ পরিমাপযোগ্য বিষয় নয়। |
ভাষার আধিক্যে/চাতুর্যে ভাব লুকায় | বাগাড়ম্বরে আসল কথা হারিয়ে যায়; কথার গুণে বার্তা নষ্ট, |
ভিক্ষা করতে এসে গাঁয়ের খবর নেয় | অনধিকার চর্চা; নগণ্যের বাড়াবাড়ি; সমতুল্য- 'আদার ব্যাপারী জাহাজের খোঁজ নেয়', 'মশা এসে হাতীর ওজন জানতে চায়' ইত্যাদি |
ভিক্ষার চাল কাঁড়া আর আকাঁড়া | পরপ্রত্যাশীর পছন্দ নেই; বিনামূল্যে যা পাওয়া যায় তাই লাভ; মাগনায় পাওয়া জিনিসের গুণাগুণ বিচার চলে না। |
ভিক্ষুক কখনো দেউলিয়া হয় না | যার কিছু নাই তার কিছু হারাবারও ভয় নেই; সমতুল্য- 'মাথা নেই তার মাথাব্যাথা'। |
ভিক্ষুকের এক দুয়ার বন্ধ, হাজার দুয়ার খোলা | নিজের দরজা বন্ধ, পরের দরজা খোলা; যে খেটে খায় তার প্রতি একজন বিরূপ হলে অন্য অনেকের কাছে কাজ পায়। |
ভিজে মাটিতে বেড়াল আঁচড়ায় | দুর্বলের ওপর অত্যাচার সহজ। |
ভিটায় ঘুঘু চরানো | কাউকে সমূলে সর্বনাশ করা। |
ভিতরে ছুঁচোর কেত্তন বাইরে কোঁচার পত্তন | ঘরে অনটন, বাইরে ফিটফাট; বাইরে বাবুগিরি ঘরে ভাত জোটে না; সংগতিহীন হয়েও বড়মানুষি ভাব; সমতুল্য- আসরঘরে মশাল নেই, হেঁশেলঘরে চাঁদোয়া বা আসলে মুষল নেই ঢেঁকি ঘরে চাঁদোয়া; ভিতরে ছুঁচোঁর কেত্তন, বাইতে কোঁচার পত্তন। |
ভিতু কুকুর বাতাসের শব্দে চমকায় | ভিতুরা সবসময় ভড়কায়; ঘরপোড়া গরু সিঁদূরে মেঘ দেখলে ডরায় |
ভিন্নরুচির্হি লোকাঃ | বিভিন্ন লোক বিভিন্ন মতের হয়। |
ভীমরুলের চাকে খোঁচা দেওয়া | প্রতিশোধপরায়ণ জনমণ্ডলীকে উত্তেজিত করা। |
ভীরুরা মরার আগে বারে বারে মরে; সাহসীরা মৃত্যুর স্বাদ একবারই গ্রহণ করে- সেক্সপিয়ার | ভীতুরা প্রতি পদে ভয় পায় আর মরার মত শুকিয়ে যায়; জীবনের পদে পদে থাকা সমস্যা সাহসীরা সহজে জয় করে। |
ভীষ্ম, দ্রোণ, কর্ণ গেল শল্য হল রথী; চন্দ্র সূর্য অস্ত গেল জোনাকির পাছে বাতি | বড়রা যেখানে হেরে যায় সেখানে ক্ষুদ্ররা বড়াই করে এগিয়ে যায়; কত হাতী গেল তল মশা বলে কত জল। |
ভুঁড়ি আর মুড়ি সকল রোগের গুঁড়ি | ভুঁড়ি আর মুড়ি সকল রোগের আকর। |
ভুজঙ্গস্য বিষং দন্তে, সর্বাঙ্গং দুর্জনে বিষং | সাপের দাঁতে বিষ থাকে, দুর্জনের সর্বাঙ্গ বিষময়। |
ভুল করলে সংশোধন করতে ইতস্ততঃ করো না- জাপানী প্রবাদ | ভুল মানুষমাত্রেরই হয় এবং ভুল থেকেই শিক্ষা নেয়। |
ভুল করাটা দোষণীয় নয়, ভুল আঁকড়ে থাকাটা দোষনীয়- আরবী প্রবাদ | ভুল মানুষমাত্রেরই হয় এবং ভুল থেকেই শিক্ষা নেয়। |
ভুল মানুষমাত্রেরই হয় | কাজ করলে স্বাভাবিকভাবেই ভুল হতে পারে; সমাতুল্য- 'মুনিনাঞ্চ মতিভ্রম'। |
ভুল সংশোধনের কোন সময়সীমা নেই | কখন করব নয়, ভুল সংশোধন করাটাই বড় কথা। |
ভূঁই নয়া পেলে উঠান চষা | কাজ না পেলে অকাজ করে; সমতুল্য- 'নেই কাজ তো খই ভাজ'। |
ভূতে পশ্যতি বর্বরা | মূর্খ পরিণাম দেখে শেখে, তার আগে শেখে না। |
ভূতের আবার গঙ্গাস্নান | অনাচারীর কাছে আচার-অনুষ্ঠান সব মূল্যহীন; বদের আবার সৎসঙ্গ। |
ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ | কোন কাজে অনেক কর্তার উপস্থিতিতে চরম বিশৃঙ্খলা; কোন কাজে অর্থের যথেষ্ট অপচয়। |
ভূতের বেগার খাটা | ফলশূন্য কাজে পণ্ডশ্রম করা। |
ভূতের বোঝা বহা | সম্পর্ক নেই এমন দায়িত্বপূর্ণ কাজের ভার নেওয়া। |
ভূতের মুখে রামনাম | স্বভাববিরুদ্ধ কথা বা বাক্য, অসম্ভব ব্যাপার। |
ভূমের্গরীয়সী মাতা, স্বর্গাদোচ্চতর পিতা। জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদোপি গরীয়সী।। (চাণক্য) | মাতা মর্তে মহান, পিতা স্বর্গ থেকে উচ্চতর, জননী ও জন্মভূমি স্বর্গ থেকেও উচ্চতর |
ভেক না ধরলে সাধু হওয়া যায় না // ভেক না নিলে ভিখ মেলে না | যে যে কাজ করে, সে সেই কাজের পোষাক পড়ে; ভেকের প্রতি মানুষের একটা স্বাভাবিক দুর্বলতা আছে। |
ভেড়া লড়ে খুঁটির জোরে | দুর্বল বাইরের শক্তির সাহায্যে লড়াই করে। |
ভেড়ার গোয়ালে আগুন লাগা | বিপদে প্রতিকারের চেষ্টা নেই অথচ কোলাহল করা হচ্ছে। |
ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল | মুর্খের দলে অল্পজ্ঞানী গুরুত্ব পায়; যেখানে বিজ্ঞ/বুদ্ধিমান লোক নেই সেখানে অল্পজ্ঞানীরা মাতাব্বরি করার সুযোগ পায়; সমতুল্য- দূর্বাবনে খটাশই বাঘ', 'বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা', 'বাঁশবনে শিয়াল রাজা', বৃক্ষহীনদেশে এড়েণ্ডাও বৃক্ষ ইত্যাদি। |
ভেড়ার বেশে নেকড়ে বাঘ- ইংরাজী প্রবাদ | প্রচ্ছন্ন শয়তান; ছদ্মবেশী শত্রু; বাইরে দেখতে ভালো, ভিতরে খারাপ। |
ভেবেচিন্তে কাজ কর, লক্ষ্মী ঘরে চিরতর | সতর্ক থাকলে কোন ক্ষতি হয় না। |
ভেবে দেখ মন কেউ কারো নয় মিছেই ফেরো ভূমণ্ডলে | আত্মা ছাড়া আত্মর আপন কেউ নয়; কেউ সঙ্গে আসে নি, কেউ সঙ্গে যাবেও না; সমতুল্য- 'দারা-পুত্র-পরিবার তুমি কার কে তোমার'। |
ভেরেণ্ডা গাছও বৃক্ষ হয় | নগণ্যের উচ্চভাবের প্রতি বক্রোক্তি। |
ভেলায় চড়ে সিন্ধু পার | অসাধ্যসাধন; পরিশ্রমের বিকল্প কিছু নেই। |
ভৈঁসকে আগে বীণ বাজাওয়ে ভৈঁস ঠাঢ় পগুরায়- হিন্দি প্রাবাদ | মোষের কাছে বীণা বাজে, মোষ জাবর কাটতেই থাকে; অবোধের কাছে গুণের কথা কদর নাই বা জ্ঞানের কথা বলা বৃথা; সমতুল্য- 'অরসিকেষু রসস্য নিবেদনম'; 'উলুবনে/বেনাবনে মুক্তা ছড়ানো'। |
ভোগবাসনায় বুদ্ধি আচ্ছন্ন হয় | রিপুর তাড়নায় মানুষের বিবেক, বুদ্ধি লোপ পায়। |
ভোগের আগে প্রসাদ | ভালো খাবার খাওয়ার আগে একবার চেখে দেখা। |
ভোজনং যত্রতত্র শয়নং হট্টমন্দিরে। মরণং গোমতীতীরে অপারম্বা কিং ভবিষ্যতি।। | এখানে সেখানে খাওয়া, হাটেবাজারে শোয়া এবং মৃত্যু ভাগাড়ে এমন চালচুলোহীন ভবঘুরে চরিত্রের ব্যক্তির ভাগ্যলিপি অতি করুণ। |
ভোজ্যং ভোজনশক্তিশ্চ রতিশক্তির্বরস্ত্রিয়ঃ। বিভবো দানমক্তিশ্চ নাল্পস্য তপসঃ ফলম্।। (চাণক্য) | আহার্য দ্রব্য এবং তা গ্রহণের ক্ষমতা (হজম শক্তি) থাকা, কামোপভোগের ক্ষমতা এবং সুন্দরী স্ত্রী থাকা, ধন-সম্পত্তি এবং দানের ইচ্ছা থাকা- এসব অল্প তপস্যার ফল নয়। |
ভোজনে পেট বাড়ে | যত বেশি আহার করা যায় ততই আহারের স্পৃহা বৃদ্ধি পায়। |
ভোজনে সন্তোষ বিধেয় | পরিমিত ভোজন স্বাস্থের পক্ষে মঙ্গল। |
ভোরের পাখি পোকা ধরে | ভালো কাজে অপেক্ষা করতে নেই; সমতুল্য- কাল কখনো আসে না', 'শুভস্য শীঘ্রম অশুভস্য কালহরণম' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'আগে গেলে বাঘে খায়, পিছে গেলে সোনা পায়', 'সবুরে মেওয়া ফলে' ইত্যাদি। |
ম
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
মক্কার মানুষ হজ্জ পায় না | কাছে আছে, যেকোন দিন গেলেই হবে, এই গয়ং-গচ্ছ মনোভাবে জন্য দেখা হয় না; সমতুল্য- 'আগ্রার মানুষ তাজমহল দেখে না','কালিঘাটের মানুষের কালীদর্শন হয় না, 'গির্জার পাশের মানুষ গির্জায় যায় না' ইত্যাদি। |
মগের মুল্লুক | দুর্বলের উপর সবলের অন্যায় অত্যাচার; দেশে আইনের শাসন নেই। |
মঙ্গলে ঊষা, বুধে পা, যথা ইচ্ছা তথা যা- খনা | মঙ্গলবারে রাত যখন ভোর হয় অর্থাৎ বুধের শুরুতেই যদি যাত্রা করা যায়, তাহলে সব কাজে সফল হওয়া যায়।। (যাত্রার শুভক্ষণ) |
মচকায় কিন্তু ভাঙ্গে না | বিনয়ী ভদ্রলোক অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল; অপরের উপদেশ নেয়; বিরুদ্ধ উক্তি- ভাঙ্গে তবু মচকায় না। |
মজাদার লোকেরা বিষন্ন হয়- কফুসিয়াস | হাসিখুশি লোকেরও মনের গভীরে দুঃখ লুকিয়ে থাকে। |
মটরের চাপে মসূরি চ্যাপ্টা | প্রবলের সাথে লড়তে গিয়ে দুর্বল বিদ্ধস্ত। |
মড়া পোড়ে চিতায়; জ্যান্ত পোড়ে চিন্তায় | হিন্দুদের মড়া জ্বালিয়ে সৎকার করা হয়; জ্যান্ত মানুষ চিন্তায় চিন্তায় নিয়ত দগ্ধ হয়। |
মড়া মেরে খুনের দায় | দুর্বলের উপর অত্যাচার তীব্র নিন্দিত হয়। |
মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা | কষ্টের উপর কষ্ট। |
মণিকাঞ্চন যোগ | উপযুক্ত মিলন; যোগ্যর সঙ্গে যোগ্যের সার্থক মিলন; সকল দিক থেকে শুভ, এমন যোগ। |
মণিহারা ফণী | প্রিয়জন হারানো অস্থিরচিত্ত লোক; প্রাণোপম বস্তুর অভাবে মৃতকল্প। |
মতান্তর হতে পারে মনান্তর কখনো নয় | কখনো মনোমালিন্য কাম্য নয়। |
মতের মিলে সঙ্গী হয়, মনের মিলে বন্ধু হয় | সঙ্গী সাথে অনুগমন করে; বন্ধু অন্তরের সাথে সংযুক্ত হয়। |
মধ্যপন্থা শ্রেষ্ঠপন্থা | অতি বাড় ভাল নয় আবার অতি বিনীতভাবও ভাল নয়, মাঝামাঝি থাকাই ভাল। |
মথ্যমানাদ্ভূমিস্তোয়ং খন্যমানা দদাতি। সোৎসাহানাং নাস্ত্যসাধ্যং নরাণাং মার্গারবদ্ধাঃ সর্বযত্নাঃ ফলন্তি॥ (চাণক্য) | কাঠ ঘষতে ঘষতে যেমন আগুন বেড়োয় মাটি কাটতে কাটতে যেমন জল ওঠে তেমনই উৎসাহী ব্যক্তির অসাধ্য কিছুই নেই, কারণ যথাযথ উপায় অবলম্বন করলে সব চেষ্টাই ফলপ্রসূ হয়। সর্বদা চেষ্টা করার প্রতি নির্দেশ। |
মধু খেতে গেলে মাছির হুল সইতে হয় | কিছু পেতে গেলে কষ্ট করতে হয়; দুঃখবিনা সুখ হয় না; গোলাপ তুলতে গেলে কাঁটা সইতে হয়। |
মধু তিষ্ঠতি জিহ্বাগ্রে হৃদয়ে তু হলাহলম | জিভের ডগায় মধু মনের মধ্যে বিষ। |
মধুপান করতে পারি, মাছির কামড় সইতে নারি | ফলভোগ করতে রাজি, কষ্টস্বীকার করতে নারাজ; সুবিধাবাদী চরিত্রের লোক। |
মধ্বভাবে গুড় দদ্যাৎ | মধুর অভাবে গুড় দাও; উৎকৃষ্টের পরিবর্তে ইতরবস্তু প্রদান। |
মধুরেণ সমাপয়েৎ | মিষ্টরসে ভোজন সমাপ্ত করা উচিৎ; সমতুল্য- 'যার শেষ ভালো, তার সব ভালো', শেষ রক্ষাই রক্ষা'ইত্যাদ। |
মধুসূদন দাদার দৈ-এর ভাণ্ড | অফুড়ন্ত সাহায্যের আশ্বাস। |
মধ্যপন্থা শ্রেষ্ট পন্থা | খুব কাছে হলে ক্ষতি হয় এবং খুব দূরে হলে ফল শূন্য, সুতরাং মধ্যপন্থা স্বর্ণপন্থা। |
মন চলে তো চলে যা | মন ভালমন্দ বুঝতে পারে; সুতরাং মন চাইলে স্বচ্ছন্দে করে ফেলায় যায়। |
মন চাঙ্গা তো কটরার জলও গঙ্গা // মন চঙ্গা তো কটৌতী মে গঙ্গা- হিন্দি প্রবাদ | মন পবিত্র হলে সবকিছুই শুদ্ধ; চিত্ত প্রসন্ন হলে ঘরে বসেই আনন্দ পাওয়া যায়; দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে ঘরে বসেই তীর্থদর্শন হয়। |
মন চায় ধন, দেবে কোন জন | ধন বা সুখ চাইলেই পাওয়া যায় না; সৌভাগ্যলক্ষ্মীর আনুকূল্য থাকা চাই। |
মন যেন জিলিপির পাক | অত্যন্ত কুটিল চরিত্রের লোক। |
মন সন্তুষ্ট থাকলে কেইবা ধনী কেইবা দরিদ্র | অর্থের মাপকাঠিতে ধনী দরিদ্রের বিচার হয় না। |
মনকে চোখ ঠারা | বিবেককে ধোঁকা দেওয়া; জেনেবুঝে দোষ করে বাজে অছিলায় মনকে প্রবোধ দেওয়া। |
মনে মধু মুখে বিষ | বাইরে মিষ্টি ভিতর তিতা; প্রবৃত্তি শরীর থেকে ভিন্ন নয়; সমতুল্য -বিষ কুম্ভং পয়োমুখম |
মনসা চিন্তিতং কর্ম বচসা ন প্রকাশয়েৎ। অন্যলক্ষিতকার্যস্য যতঃ সিদ্ধিঃ ন জায়তে।। চাণক্য) | কাজের পরিকল্পনা মনে থাকবে- তা মুখে যেন প্রকাশ না পায়। কেননা সেই কাজে সাফল্য আসে না যে কাজের কথা অন্য লোক আগেই জেনে ফেলে। (সঙ্কল্প প্রকাশে বিঘ্ন) |
মনিব গেলে ঘোল পায় না বেঁশোকে পাঠায় দুধের তরে | যেখানে নিজের অনুরোধ রক্ষা হয় না সেখানে অপরকে দিয়ে কোন কাজ করার চেষ্টা; আগে থেকেই অনুমান করা যায় যে কণ এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। আগে থেকেই অনুমান করা যায় যে ব্যর্থ হবে, তখন তার প্রচেষ্টাকে ব্যাঙ্গ করে এই প্রবাদ বলা হয়; সমতুল্য- 'আপনি গেলে ঘোল পায় না চাকরকে পাঠায় দুধের তরে' |
মনুষ্যের চিন্তাই জ্বর | একমাত্র চিন্তাই মানুষের ভয়ানক জ্বর; চিন্তা জ্বরো মনুষ্যাণাং। |
মনে বড় সাধ চড়বো বাঘের কাঁধ | দুরাশা করা; অসম্ভব চিন্তা। |
মনের অগোচরে পাপ নেই | মনের কাছ থেকে পাপ লুকোছাপা করা যায় না। |
মনের শান্তি সব মন্দভাব দূর করে- চীনা প্রবাদ | চিন্তামুক্ত থাকতে পারলে চিত্ত প্রশান্ত থাকে। |
মনের সব কথা প্রকাশ করা নেই | লোকে তাহ'লে পাগল ভাববে। |
মন্ত্রের সাধন অথবা শরীরপাতন | করব অথবা মরব; করেঙ্গে ইয়ে মরেঙ্গে; দৃঢ়সঙ্কল্প; শরীরপাত কিংবা কর্তব্যসাধন। |
মন্দ কখনো ভালো হয় না | মন্দ চিরকালই মন্দ থাকে; তেতো নিম কখনো মিঠে হয় না। |
মন্দ খবর মিথ্যা হয় না | অশুভ খবর প্রায়শঃই সত্য হয়। |
মন্দ চিন্তিলে মন্দ হয় | অশুভ চিন্তা করলে অশুভই হয়। |
মন্দের চোখে সবই মন্দ | অসৎ কাউকে সৎ ভাবে না। |
মন্দের ভালো | সব মন্দ নয়, কিছুটা ভালো; মোটামুটি গ্রহণযোগ্য। |
মন্দিরে গেলেই সাধু হয় না // মন্দিরে যারা যায়, তারা সবাই সাধু নয় | চেহারা সবসময় সত্যকথা বলে না; বাহ্যিক চেহারা বিভ্রান্ত করে; সমতুল্য- 'চকচক করলেই সোনা হয় না' 'পৈতা থাকলেই বামুন হয় না' ইত্যাদি। |
ময়না টিয়ে উড়িয়ে দিয়ে খাঁচায় পোষে কাক | গুণী ছেড়ে দিয়ে নির্গুণকে আদর করা। |
ময়রা সন্দেশ খায় না // ময়রার ছেলে মিষ্টি খায় না | সহজলভ্য জিনিসের প্রতি আকর্ষণ থাকে না; শুঁড়িরা মদ খায় না। |
ময়লা কাপড়ে ধোপার ভয় | মনে পাপ ঢুকলে নানা আশঙ্কা জন্মে। |
ময়ূরের নৃত্য দেখে ছাতার পাখি নাচে | গুণীর গুণপনা দেখে নির্গুণও অনুকরণ করতে চায়; অক্ষম বাসনা। |
মরণকালে ঔষুধ নাই | মৃত্যু বৈদ্যকে অস্বীকার করে। |
মরণকালে বুদ্ধিনাশ | পতনের সময় দিশেহারা। |
মরণকালে হরিনাম | বিপদে পড়ে উদ্ধারকর্তার খোঁজ; সারা জীবন পাপ করে শেষমুহূর্তে মৃত্যুভয়ে কম্পমান। |
মরদ কি বাত্ হাতী কি দাঁত | হাতীর দাঁত মুখের ভিতর প্রবেশ করে না, তেমনি পৌরুষ কথা দিয়ে কথা গেলে না; পুরুষের কথা হাতীর দাঁতের মতই মূল্যবান। |
মরবে সীতা ঘুচবে দুঃখ | সীতার মত বাঁচা হ'লে সারাজীবন দুঃখভোগ করে যেতে হবে; মৃত্যুর পর দুঃখভোগ শেষ। |
মরমীর মর্মব্যাথা একমাত্র মর্মজ্ঞই বুঝতে পারে। | দুঃখ কষ্টের জ্বালা কি একমাত্র দুখীরাই বুঝতে পারে। |
মরা কাকের আবার মড়কের ভয় | প্রতিদিন যে অন্নের চিন্তায় তিলে তিলে মরছে তার মরার ভয় আর থাকে না। |
মরা হাতি লাখ টাকা | গুণী বা বিত্তশালী হীন অবস্থায় পড়লেও তার কাছ থেকে নানা উপকার পাওয়া যায়। |
মরার আগে কাপুরুষ বারবার মরে | ভীরুরা ভয়েই সব সময় আধমরা হয়ে থাকে। |
মরার সময় মকরধ্বজ | অন্তিম মূহুর্তের জন্য ক্ষীণ আশা সঞ্চার করতে শেষ চেষ্টা |
মরে তবু মর্যাদা হারে না | দৃঢ় চরিত্রের লোক, যে মাথা নীচু করে না; ভাঙ্গে তবু মচকায় না। |
মশা মারতে কামান দাগা/পাতা | সামান্য কাজে বিরাট আয়োজন; সামান্যকে সংহার করতে বিরাট আঘাত; সমতুল্য- 'ব্যাঙ মারতে তীরধনুক', 'শানকির উপর বজ্রাঘাত'। |
মশা/মাছি মেরে হাত কালো | দুর্বলের উপর অত্যাচার করে বদনাম কুড়ানো; বাজে কাজ করে দুর্নাম কেনা। |
মশা হাতীর ওজন জানতে চায় | অনধিকার চর্চা; নগণ্যের বাড়াবাড়ি; সমতুল্য- 'আদার ব্যাপারী জাহাজের খোঁজ নেয়', 'ভিক্ষা করতে এসে গাঁয়ের খবর নেয়' ইত্যাদি। |
মশাল নিজে পুড়ে অপরকে আলো দেখায়- চীনা প্রবাদ | গুণী আপনার আলোকে অজ্ঞানকে পথ দেখায়। |
মশালটি আপনি কানা | সব দেখে, শুধু নিজেকে দেখে না। |
মশালের কাছে প্রদীপের আলো | বিরাট ও নগণ্যের মাঝে তুলনা হয় না। |
মহৎ লোকেদের ভাবনা অভিন্ন | মহৎ ভাবনা ভিন্ন হয় না, বিচ্ছিন্ন হয় না। |
মহতা পরিভব শ্রেষ্ঠো ন নীচান্মানমুত্তনম। কংসারিপাদঘাতেন কালীয়স্য বিভূষণম।। (চাণক্য) | মহতের কাছে পরাজয়ও শ্রেষ্ঠ কিন্তু নীচব্যক্তির কাছে পরাজয় সম্মানজনক নয়; শ্রীকৃষ্ণ কালীয় নাগের মস্তকে পদাঘাত করেছিলেন; সেই পদচিহ্ন কালীয় নাগের মাথায় ভূষণস্বরূপ বিদ্যমান। |
মহতাং প্রকৃতি সৈব বর্ধিতানাং পরৈরপি। ন জহাতি নিজং ভাবং সংখ্যাসু লাকৃতির্যথা।। (চাণক্য) | মহৎ ব্যক্তির প্রকৃতিও এমন যে অন্যের দ্বারা বর্ধিত হলেও নিজভাব ত্যাগ করেন না। |
মহাজনো যেন গতঃ স পন্থাঃ | মহাজনেরা যে পথে হেঁটেছেন সেটাই হল একমাত্র পথ। |
মহাভারত একদিনে রচিত হয়নি | মহৎ সৃষ্টি তিলে তিলে গড়ে উঠে; তাজমহল একদিনে গড়ে ওঠে নি। |
মা কুরু ধনজনযৌবনগর্বং। হরতি নিমেষাৎ কালঃ সর্বা।। | ধন, জন, যৌবনের গর্ব করো না, কারণ কাল এক নিমেষেই তা হরণ করতে পারে। |
মা গঙ্গা | মা= না; গঙ্গা= গমন করা; পেটে কিছু নেই; বিদ্রুপে- অজ্ঞ ব্যক্তি। |
মা গুণে ঝি, বাপ গুণে বেটা | মেয়েরা মায়ের প্রকৃতি পায়, ছেলেরা বাবার প্রকৃতি পায়। |
মা নয় যে তাড়িয়ে দেবো, পরের মেয়ে রাখি কোথা | বউ-ভেড়ুয়া, বউয়ের কথায় উঠে বসে। |
মা পুরুষতন্ত্রের শ্রেষ্ট শহীদ | সংসার যন্ত্রে মা সব থেকে বেশি পিষ্ঠ হয়। |
মা বলেছে আমার নাকি মাথা ধরেছে | কৌশলে কিছু করতে অনিচ্ছা প্রকাশ; বাজে অজুহাতে মিথ্যা কথা বলা। |
মা ব্রুয়াৎ সত্যম অপ্রিয়ম | কখনো অপ্রিয় সত্য কথা বলিও না। |
মা লক্ষ্মী ভিক্ষা মাগে | আর্থিক দৈন্যদশা; সম্পদশালীরাও সরকারের দুয়ারে সাহায্যের জন্য হাত পাতে। |
মা সব থেকে ছোট শব্দ, মা সব থেকে বড় অনুভূতি | সাগরের তল খুঁজে পাওয়া যায়, মাত্য়ৃহৃদয়ের তল খুঁজে পাওয়া যায় না। |
মাকড় মারলে ধোকড় হয় | পক্ষপাতদুষ্ট বিচার; পরের বেলায় কড়া শাস্তি, নিজের বেলায় অল্পসল্প; উৎসকাহিনী- এক যজমান পুরোহিতকে জিজ্ঞাসা করে- 'ঠাকুর মাকড় মারলে কি হয়'? শিহরিয়া পুরোহিত বলেন, 'সর্বনাশ মাকড় মারলে মহাপাপ হয়; ব্যয়সাধ্য প্রায়শ্চিত্ত করতে হয়; শুনে যজমান বলে, 'ঠাকুর আমি মারিনি আপনার ছেলে মেরেছে'; তখন পুরোহিত বলেন, 'মাকড় মাড়লে ধোকড় হয়', অর্থাৎ কিছুই হয় না; আসলে স্বার্থ থাকলে বিধিব্যবস্থা উল্টায়। |
মাগৈ ভিখ, পুঁছৈ গাঁওকা জমা- হিন্দি প্রবাদ | ভিক্ষে করতে এসে গ্রামের জমিজমার খোঁজ নেওয়া; আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবর নেওয়া। |
মাঘের মাটি সারের পাটি | মাঘমাসে বৃষ্টি জমি অত্যন্ত উর্বর হয় বলে প্রচুর শস্য জন্মে; সমতুল্য- 'ধন্য রাজার পূণ্য দেশ যদি বর্ষে মাঘের শেষ'। |
মাঘের শীত বাঘের গায় | মাঘমাসের তীব্র শীতে বাঘ পর্যন্ত কাবু হয়। |
মাছ না পেয়ে ছিপে কামড় | উদ্দেশ্যসাধন না হওয়ায় উদ্দেশ্যসাধনের উপায়কেই নষ্ট করা। |
মাছ জালে পড়লে বেশি লাফায় | মানুষ বিপদে পড়লে অস্থির হয়ে পড়ে। |
মাছ ধরার আগে মাছ বিক্রি করো না // মাছ ধরার আগে মাছ ভাজা খেয়ো না | আগাম সুখকল্পনা করা অনুচিত; কালনেমির লঙ্কাভাগ। |
মাছ মরেছে বিড়ালের শোক // মাছের শোকে বিড়াল কাঁদে | যার ক্ষতি করেই আনন্দ তার ক্ষতিতে দুঃখপ্রকাশ; কপট শোক। |
মাছিমারা কেরাণী | নকলনবিশ, যে না-বুঝে হুবহু নকল করে; নির্বোধের মতো কাজ করা ব্যক্তি। |
মাছের কাঁটা গলায় বিঁধলে বেড়ালের পায়ে গড় | বিপদে পড়লে মানুষ নগণ্যকেও খোষামোদ করে; ঠেলায় পড়ে ঢেলায় প্রণাম; ঠেলার নাম বাবাজী। |
মাছের তেলে মাছ ভাজা১ | আনুসঙ্গিক খরচ বাঁচিয়ে কার্যোদ্ধার; |
মাছের তেলে মাছ ভাজা২ |
পরের খরচে স্বার্থরক্ষা অথবা পরের অর্থে পরোপকার করা; সমতুল্য- 'গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা' |
মাছের মায়ের কান্না/পুত্রশোক | মাছ তার বাচ্চা খেয়ে ফেলে, সেক্ষেত্রে তার পুত্রশোক অস্বাভাবিক; নিয়তঃ পরের ক্ষতি করে বেড়ায় এবং তারজন্য শোকও প্রকাশ করে, সেই প্রকৃতির লোক। |
মাজ, ঘষ, কর ক্ষয়, কালো কি কখনো ধলো হয় // মেজে ঘষে হল ক্ষয়, কালো কখনো ধলো হয় | কয়লা হাজার ঘষলেও সাদা হবে না; মন্দ কখনো ভালো হয় না। |
মাঠে গিয়ে আগে কর দিক নিরুপণ, পূর্বদিক হতে করহ হাল চালন; খনা বলে মোর কথা শুন মহাশয়, ফসল ফলিবে অধিক নাহি সংশয় | মাঠে গিয়ে সবার আগে দিক নির্ণয় করে পূর্বদিক থেকে হাল চালনা করতে হয়; যে তা করে সে অধিক ফসল পায়। (হাল চালনার প্রণালী) |
মাঠে মারা গেল | কোন কাজে এলো না, অযথা নষ্ট হ'ল। |
মাণিকের খানিক ভাল | ভাল জিনিষের অল্প ভাল। |
মাতা শত্রুঃ পিতা বৈরী যেন বালো ন পাঠিতঃ।ন শোভতে সভামধ্যে হংসমধ্যে বকো যথা।। (চাণক্য) | যে পিতামাতা তাঁদের পুত্রকে সুশিক্ষা দেন নি তাঁরা পুত্রের কাছে শত্রু বলে বিবেচিত হন;বক যেমন হাঁসের দলে শোভা পায় না, তেমনি সেই পুত্রও বিদ্বানদের মধ্যে শোভা পায় না। |
মাতা যস্য গৃহে নাস্তি ভার্যা চ অপ্রিয়বাদিনী।অরণ্যং তেন গন্তব্যং যথারণ্যং তথা গৃহম্।। (চাণক্য) | যার ঘরে মা নেই অথবা যার স্ত্রী রুক্ষভাষিণী, তার বনে যাওয়া উচিত; তার পক্ষে বনও যা ঘরও তাই। |
মাতালে দাঁতালে বিশ্বাস নেই | মাতালকে আর দাঁতওয়ালা জন্তুকে বিশ্বাস করা নেই। |
মাতৃবৎ পরদারেষু পরদ্রব্যেষু লোষ্টবৎ। আত্মবৎ সর্বভূতেষু যঃ পশ্যতি স পণ্ডিতঃ।। (চাণক্য) | যিনি পরস্ত্রীকে মায়ের মত, পরদ্রব্যকে ঢেলার মত এবং সকল জীবকে নিজের মত দেখেন তিনিই প্রকৃত পণ্ডিত। পণ্ডিতের লক্ষণ। |
মাথা ঢাকলে (চাদরে) পা ঢাকে না, পা ঢাকলে মাথা ঢাকে না | প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়; টানাটানির সংসার। |
মাথা নেই তার মাথাব্যাথা | যার কোন অস্তিত্ব নেই সেইসম্পর্কে দুর্ভাবনা; সমতুল্য- 'অকারণে হৈচৈ', 'কাশীধামে কাক মরেছে কালীঘাটে হৈচৈ'। |
মাথায় পা দেওয়া | সম্মানীয় ব্যক্তিকে অসম্মান করা; কারো সর্বশান্ত করা; |
মাথার ঘাম পায়ে পড়া | বিরামহীন কঠোর পরিশ্রম করা |
মাথার ঘায়ে কুকুর পাগল | অত্যন্ত অসুবিধাজনক অবস্থায় পড়ে নাজেহাল অবস্থা; প্রতিকারহীন বিপদে পড়ে ছূটাছুটি করা; অপ্রতিবিধেয় বিপদে পড়লে মানুষ পাগল হয়। |
মাথার হেঁট করা | সমাজে সম্মান নষ্ট। |
মানুষ বনে গেলে বনমানুষ হয় | বদসঙ্গে পড়লে শিক্ষার বিকৃতি ঘটে এবং সৎচরিত্রের মানুষ দুশ্চরিত্র হয়। |
মান আর হুঁস থাকলে মানুষ হয় | যার মান ইজ্জৎ এবং ভালমন্দ বোধ আছে সেই একমাত্র মনুষ্যপদবাচ্য। |
মান বড় না প্রাণ বড় | ধাঁধার প্রশ্ন; চিরকালীন দ্বন্দ্ব, যার সহজ উত্তর নেই; পা বড় না পেট বড়? |
মানলে শিব, না মানলে শিলা | যার যা বিশ্বাস, যার যাতে শান্তি; বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। |
মানুষ অভ্যাসের দাস/বশ | অভ্যাস মানুষের দ্বিতীয় প্রকৃতি। |
মানুষ আর মহামানুষের মধ্যে পার্থক্য শুধু মনুষ্যত্বের | মহামানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব বিকশিত হয়; সাধারণ মানুষ জন্তুর অধম; যতই মানুষকে দেখছি ততই কুকুরকে ভালো লাগছে। |
মানুষ ইচ্ছা করে বিধাতা পূরণ করে // মানুষ গড়ে বিধাতা ভাঙ্গে // মানুষ সংকল্প করে, বিধাতা মিমাংসা করে | মানুষ পরিকল্পনা করে, কিন্তু তার সাফল্য-অসাফল্য ঈশ্বরের ইচ্ছাধীন। |
মানুষ একবারই মাত্র মরে | সাহসী মানুষ মরার আগে মরে না। |
মানুষ কর্মে বাঁচে বর্ষে নয় | মানুষের তার কর্মের মধ্য দিয়ে পরিচিত হয়; পরিণত হয়। |
মানুষ ক্ষমতার বাইরে কিছু করতে পারে না | প্রত্যেক মানুষেরই সীমাবদ্ধতা আছে। |
মানুষ খড়কুটো পেলেও আঁকড়ে ধরে | বিপদে পড়লে মানুষ অতি নগণ্যেরও সাহায্য নেয়। |
মানুষ নিজের ভাগ্য নিজেই গড়ে | সৌভাগ্যলক্ষ্মী অনাহ্বানে আসে না; শুয়ে থাকলে সৌভাগ্য এসে হাজির হবে না; তুমি চল ভাগ্য তোমার সাথে চলবে। |
মানুষ প্রবৃত্তির দাস/বশ | সাধারণ মানুষ রিপুর তাড়নায় চলে। |
মানুষ ভগ্নাংশের মত; লব সে নিজে এবং হর সে নিজেকে যা ভাবে; নিজেকে সে যত বড় ভাবে ততই সে ছোট হ'তে থাকে'- টলস্টয় | হীনলোকেরাই নিজেকে বড় ভাবে; সমতুল্য- 'আপনাকে বড় বলে বড় সেই নয়, লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়'। |
মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক | মানুষের ইচ্ছায় জগৎ চলে না; সবই বিধির বিধান। |
মানুষ মনের ভাব লুকাতে পারে না // মানুষ তার স্বভাব লুকাতে পারে না | মুখছবি মানুষের মনের আয়না; বিরুদ্ধ উক্তি- 'মানুষের মুখে মুখোশ আঁটা থাকে'। |
মানুষ মরে মড়া হয়, কৃষ্টি মরে আচার হয় | অন্ধবিশ্বাস মানুষ কুসংস্কারে আচ্ছন্ন করে। |
মানুষ মানুষের কাছে অচেনা ভাবে আসে, চরিত্রের গুণে মানুষ সবার চোখে বাসে | স্বাভাবিকভাবেই দুই অচেনা মানুষ চরিত্রগুণে পরস্পরের সাথে আত্মার সম্পর্ক গড়ে তোলে। |
মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য // মানুষ মানুষের সঙ্গ চায় | মানুষ সামাজিক জীব; একা মানুষ বাঁচতে পারে না; |
মানুষ মারে আর শুধু মরে | প্রেম, প্রীতি নিষ্ঠাহীন ধর্মান্ধ মানুষেরা শুধু কাটাকাটি হানাহানি করে মরে। |
মানুষকে সম্মান করলে তার হৃদয়ের মণিকোঠার দরজার চাবি পাওয়া যায়- আরবীয় প্রবাদ | সম্মানিত মানুষ সম্মানকারীকে চিরদিন মনে রাখে। |
মানুষমাত্রই ভুল করে // মানুষমাত্রেরই ভুল হয় | ভুল করা একটি স্বাভাবিক ধর্ম; মুনিনাঞ্চ মতিভ্রম। |
মানুষে মানুষ চেনে, শূয়োরে চেনে কচু | গুণী মানুষ গুণী মানুষকে সহজে চিনতে পারে; অজ্ঞানব্যক্তি অজ্ঞানকে সহজে চিনতে পারে। |
মানুষের অন্ততঃ কৌতূহলের জন্য বেঁচে থাকা উচিত- ইহুদী প্রবাদ | কৌতূহল নয়া থাকলে জ্ঞান অর্জিত হয় না; কৌতূহল জ্ঞান অর্জনের প্রথম সোপান। |
মানুষের কুটুম এলে গেলে | পরস্পরের ঘরে যাতায়াত থাকলে আত্মীয়তা জন্মে; চোখের আড়াল তো মনের আড়াল। |
মানে মানে থাকলে ভাল | যার যেমন অবস্থা সেইরকম থাকা উচিৎ; অবস্থার অতিরিক্ত গিয়ে চালিয়াতি করতে গেলে বিপত্তি। |
মানে মানে ভাল আছি | কোনমতে মানসম্ভ্রম নিয়ে বেঁচে আছি। |
মানের গোড়ায় ছাই | বাজে কাজ করে মানসম্ভ্রম নষ্ট। |
মান্ধাতার আমলের কথা | অতি পুরাণো বস্তাপচা কথা। |
মাপো তিনবার, কাটো একবার | ভেবেচিন্তে কাজ করার প্রতি ইঙ্গিত; ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও বা। |
মামা কানা, আমি চোখে দেখিনে | দুজনেই সমান অপদার্থ। |
মায়ের কাছে মামাবাড়ি/মাসির গল্প | জানা বিষয় জানাতে আসা। |
মায়ের চেয়ে মাসি মিঠে | আদর আছে শাসন নেই। |
মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশি // মায়ের পোড়ে না মাসীর পোড়ে, পাড়া পড়শীর কেতন ওড়ে | মাসীর অতিরিক্ত দরদের প্রতি বক্রোক্তি; সমতুল্য- 'মা’র চেয়ে যার দরদ বেশি তারে বলে ডাইন'। |
মায়ের মায়াই আসল মায়া, অশত্থের ছায়াই আসল ছায়া | মার স্নেহ আর বটের ছায়ার তুলন নেই। |
মায়ের শাসনই আসল শাসন, আর সব দুঃশাসন (=কুশাসন) | মায়ের কড়া স্নেহমিশ্রিত শাসনে প্রকৃত সন্তান গড়ে উঠে। |
মার সোহাগে বাপের আদর | মা না থাকলে সংসার শূন্য। |
মারা তীর ফেরে না | মুখের কথা একবার বেড়িয়ে গেলে আর ফেরানো যায় না; ভেবেচিন্তে কাজ করা উচিৎ। |
মারি তো গণ্ডার, লুটি তো ভাণ্ডার পারে | বিরাট দাঁও মারা; কাজ করলে বিরাট কাজই করা ঠিক; লক্ষ্য উঁচু হওয়া উচিৎ। |
মারীচের দশা/মরণ | উভয়সঙ্কট; এগুলে রাম পিছুলে রাবণ; মায়ামৃগ সেজে মারীচ রাবণকে সীতাহরণে সাহায্য করেছিল; রামের হাতে তার মৃত্যু হয়; সাহায্য না করলে রাবণের হাতে তার মৃত্যু হত। |
মারে হরি রাখে কে? | রক্ষক যদি ভক্ষক হয়, তবে কেউ তাকে বাঁচাতে পারে না। |
মারে হরি রাখে কে? রাখে হরি মারে কে? | ঈশ্বর যাকে মারবে ভাবে কেউ তাকে বাঁচাতে পারবে না; ঈশ্বর যাকে বাঁচাবে ভাবে কেউ তাকে মারতে পারবে না; ঈশ্বরই রক্ষক, ঈশ্বরই ভক্ষক। |
মারের উপর ওষুধ নাই // মারের চোটে ভূত পালায় // মারের নাম বাবাজী | লাঠ্যোষুধির মত ওষুধ হয় না; প্রহার করলে শাসন বজায় থাকে। |
মারো আর ধরো পিঠে দিয়েছি কুলো, বকো আর ঝকো কানে দিয়েছি তুলো | সববিষয়ে নির্বিকার নিস্পৃহ, কোন হেলদোল নেই। |
মাসীর যদি গোঁফ থাকত, তবে সে মেসো হত | যদি, তবে ইত্যাদি অজুহাতের জট। |
মিছে কর আম্বা আম্বা, যা করেন জগদম্বা | আমি আমি করে বৃথা আস্ফালন/বড়াই করা নিরর্থক; বেশি আকাঙ্খা করো না, ঈশ্বর যা দিয়েছেন তার বেশি পাবে না। |
মিঞা থেকে মিঞার ডিঙি ভারী | তুলনায় বেশি বাহারী; আসল বিষয় ছেড়ে তুচ্ছবিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি; সমতুল্য- 'ছেলের চেয়ে ছেলের গু ভারী', 'ছেলের থেকে ছেলের ঘুনসি বড়', 'বারোহাত কাঁকুড়ের তেরোহাত বীচি', 'বারোহাত কাপড়ের তেরোহাত দশী', 'বারোহাত পুকুরে তেরোহাত মাছ', 'মিঞা থেকে মিঞার ডিঙি ভারি' ইত্যাদি। |
মিঞা-বিবি রাজী তো কিয়া করেগা কাজী | বিবাদ নেই; বিচারেরও কোন প্রয়োজন নেই। |
মিঠা মানুষ পাকলে তিতা | বয়স বাড়লে মানুষ ধৈর্যশীলতা হারায়; মেজাজ খিটখিটে হয়। |
মিত ভোজনে স্বাস্থ্যলাভ | অল্প আহার স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। |
মিথ্যা, ডাহামিথ্যা, স্ট্যাটিসটিক্স | মিথ্যার মাত্রাভেদ- অল্পমিথ্যা, মাঝারিমিথা, চূড়ান্তমিথ্যা- দিনকে রাত করা। |
মিথ্যাবাদীর স্মৃতিশক্তি ভাল হয় | বানানো কথা কখন কি বলেছে মনে রাখতে না পারলে মিথ্যা ধরা পড়ে যায়। |
মিথ্যাবাদীদের সঙ্গ ত্যাগ কর; যদি না পারো তবে তাদের বিশ্বাস করো না। | জালিয়াৎ ও মিথ্যাবাদী সমগোত্রীয় হয়। |
মিলে তো ভালা; না মিললে একলা একলা ভালা- খনা | সঙ্গে থাকলে ভাল না থাকলেও ক্ষতি নেই; 'যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলরে'। |
মিষ্টভাষীর কাছে কেউই পর নয় | মিষ্টভাষী তার স্বভাবগুণে সকলকে আপন করে। |
মিষ্টি আম পেলে কি আঁটি শুদ্ধ খায়? | প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেওয়া নেই। |
মিষ্টি আমে পোকা ধরে | ভালো লোককে মানুষ ফাঁকি দেয়। |
মিষ্টি কথায় চিঁড়ে ভেজে না | কথা মিষ্টিই হোক আর তেতোই হোক শুধু কথায় কোন কাজ হয় না। |
মিষ্টি কথার খরচ নেই | পয়সা খরচ করে মিষ্টি কথা শিখতে হয় না, অন্তর থেকে উৎসারিত হয়। |
মিষ্টি হইও না তা'হলে সবাই খেয়ে নেবে, তিক্ত হইও না তাহ'লে সবাই থুতু ছিটাবে- ইহুদী প্রবাদ | বেশি নরম হওয়া ভাল নয় আবার বেশি কড়াও হওয়াও ভাল নয়। |
মুক্তা-দাঁতী, হরিণ-চোখী,লম্বা মাথার চুল, সেই নারী করিলে বিয়া ঘরে ফুটে ফুল | যে নারীর দাঁত মুক্তার মত ঝকঝকে, চোখ হরিণের মত, কেশরাশি সুদীর্ঘ, সেই নারীর সাথে বিয়ে হলে পুরুষের লক্ষ্মীশ্রী ফুলের মত ফুটিয়া উঠে। |
মুখ বড় মিঠে, নিম-নিসিন্দে পেটে | মুখে মধু অন্তরে বিষ। |
মুখচোরা বামুন, কেশোরোগী চোর | দুজনেই কাজে অনুপযুক্ত, সমান অপদার্থ। |
মুখ না থাকলে শিয়ালে খেতো | মুখসর্বস্ব কাজে অষ্টরম্ভা বাচালের প্রতি তিরস্কার। |
মুখ পুড়িয়ে লঙ্কায় আগুন | নিজের ক্ষতি করে পরের ক্ষতি করার চেষ্টা। |
মুখ বন্ধ আর কান খোলা রাখ | কম কথা বল এবং বেশি কথা শুন। |
মুখ মনের আয়না/মুকুর | মুখ দেখলে মন পড়া যায়। |
মুখে এক মনে আরেক | মুখে এক কথা বলে, মনে আরেক কথা ভাবে। |
মুখে খুব মিঠে, নিম-নিশিন্দে পেটে // মুখে মধু মনে বিষ // মুখে মধু হৃদে ক্ষুর // মুখে রামনাম বগলে/হাতে ছুরি | খল, ক্রুর চরিত্রের লোক; এইপ্রকারের লোকগুলি থেকে অনিষ্টের আশঙ্কা বেশি থাকে। |
মুখে চুণকালি | মন্দ কাজ করে সম্ভ্রম নষ্ট ও লোকের হাস্যাস্পদ হওয়া। |
মুখে রাজা উজির মারা // মুখেন মারিতং জগৎ // মুখের চোটে গগন ফাটে | বাক/মুখসর্বস্ব; মুখে খালি লম্বাচওড়া বুলি, কাজের বেলায় অষ্টরম্ভা; সমতুল্য- নামের চোটে গগন ফাটে |
মুখের বলা কথা ফেরানো যায় না // মুখের কথা ফেরে না | একবার বলে ফেললে সেই কথা আর গেলা যায় না; সমতুল্য- 'ছোঁড়া তীর ফেরে না'। |
মুচির নাক নেই | চামড়ার গন্ধ পায় না; বোধশক্তিহীন ব্যক্তি। |
মুড়া কোদালে দীঘি কাটা | অনুপযুক্ত উপায়ে বিরাট কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা। |
মুড়ি মিছরির একদর | গুণের কদর নেই; ভাল মন্দের এক বিচার। |
মুড়ি আর ভুঁড়ি সকল রোগের গুঁড়ি | মাথা আর পেট বিগড়ালেই রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। |
মুড়ি রেখে কোপ | ছাগ বলিদানে মাথার দিকে একটু বেশি রেখে কামার কোপ মারে, কারণ মাথাটা তার প্রাপ্য; নিজের স্বার্থের দিকে নজড় রাখা। |
মুণ্ডমালার দাঁতকপাটি সার | অক্ষমের নিস্ফল ভয় দেখানোর প্রচেষ্টা। |
মুনিনাঞ্চ মতিভ্রমঃ | মানুষমাত্রেরই ভুলভ্রান্তি হয়। |
মুনির মন টলে | এমন সুন্দর এবং লোভনীয় নারী যে জিতেন্দ্রীয় মুনি মনও টলে যায়। |
মুরাস্তৃতীয়ঃ পন্থাঃ | স্বতন্ত্রপ্রকৃতির লোকেদের সবকিছুই অন্যের অননুরূপ হয়; সমতুল্য-কানা গরুর ভিন্ন গোঠ। |
মুল্লা কা দৌড় মসজিদ তক- হিন্দি প্রবাদ | ব্যক্তির ক্ষমতা খুব সীমিত হয়; সমতুল্য- 'মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত'। |
মুসলমানের মুর্গী পোষা | স্বার্থের জন্য কৃত্রিম দরদ দেখানো; স্বার্থসাধনের জন্য আদরযত্ন করা। |
মূর্খ আগে কথা বলে পরে চিন্তা করে, জ্ঞানী আগে চিন্তা করে পরে কথা বলে আরবী প্রবাদ। | মুর্খ ভাবার আগে বলে; জ্ঞানী বলার আগে ভাবে। |
মূর্খে নিযোজ্যমানে তু ত্রয়ো দোষা মহীপতেঃ। অযশশ্চার্থনাশশ্চ নরকে গমনং তথা।। (চাণক্য) | রাজা যদি মূর্খ লোকের হাতে কাজের ভার অর্পণ করেন তবে তিনি তিনটি দোষের ভাগী হন- নিন্দা, অর্থনাশ এবং নরকগমন। |
মূর্খস্য লাঠ্যৌষধি | লাঠির আঘাতকে কে না ভয় করে; লাঠির আগে ভূত ভাগে। |
মূর্খের অভিমান আমি বড় বুদ্ধিমান। | মুর্খও নিজেকে অতিশয় বুদ্ধিমান মনে করে অহঙ্কারী হয়ে থাকে। |
মূর্খের কথার উত্তর না দেওয়াটাই তার উত্তর- আরবী প্রবাদ। | মূর্খের কথায় চুপ থাকা শ্রেয়। |
মুর্খের কাছে মুর্খতাই শেখা যায় | মূর্খের কিছু শেখাবার নেই। |
মুর্খের দোষ পদে পদে | মূর্খ পদে পদে দোষ করে থাকে; মুর্খে দোষা হি কেবলং। |
মূর্খের সম্পদ কড়ি, জ্ঞানীর সম্পদ জ্ঞান। | অজ্ঞলোকেরা অর্থ ও কাম খোঁজে; জ্ঞানীলোকেরা ধর্ম ও মোক্ষ খোঁজে। |
মূর্খের সাথে তর্ক করো না, মানুষ তোমাকে মূর্খ ভেবে ভুল করতে পারে- আরবী প্রবাদ | মুর্খ ছাড়া কেউ মুর্খের সাথে বিবাদ করে না। |
মূর্খের স্বর্গবাস | মিথ্যা আশা ও আশ্বাসের উপর ভিত্তি করে অলীক সুখকল্পনা করা। |
মূলে নেই লক্ষ্মীপূজা, একেবারে দশভুজা | ছোট কাজ করতে পারে না বড় কাজ করার উদ্যোগ করে; আদিখ্যেতা, নিতান্ত বাড়াবাড়ি। |
মূলে মাদুর নেই তার উত্তর শিয়র। | উত্তরে মাথা রেখে শোয়া নিষিদ্ধ; যার শোয়ারই জায়গাই নেই তার আবার উত্তরের নিষেধ; যার ভয়ের কোন কারণ নেই, সেই বিষয়ে অকারণ চিন্তা। |
মূলো খেলে মূলোর ঢেঁকুর উঠে | ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া আছে; কু কখনো সু হয় না; সমতুল্য- 'আদা শুকালেও ঝাল যায়না', 'কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না', 'রসুন খেলে মুখে রসুনের গন্ধ ছাড়ে', 'স্বভাব যায় না মলে' ইত্যাদি। |
মৃত্যু কাউকে রেয়াত করে না | যমের হাত থেকে মুক্তি নেই; নিয়তিকে বাধা দেবার কেউ নেই। |
মৃত্যু বলে কয়ে আসে না // মৃত্যুর সময় অসময় নেই // মৃত্যু পাঁজি রাখে না | পরমায়ু কবে শেষ হবে তা একমাত্র বিধাতাই জানেন। |
মৃত্যু পালাবার পথ নয় | সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে দূরে সরে না গিয়ে সঙ্কটের সাথে লড়তে হয়। |
মৃত্যু সকলে সমান করে | অমোঘ মৃত্যু উচ্চ-নীচ গরীব বড়লোক সবাইকে এক আসনে বসায়; সবারই এক পরিণতি; সবারই এক নিয়তি। |
মেকি টাকার ঘন নিশান | নকল নিজেকে আসল অপেক্ষা বেশি সুন্দর প্রতিপন্ন করতে চেষ্টা করে। |
মেকি ব্রাহ্মণের ভড়ং বেশি | দৈন্যতা লুকাতে বেশি আচার আচরণ করে; অব্রাহ্মণের দীর্ঘ ফোঁটা। |
মেঘ আছে বলেই সুর্যের কদর | অন্ধকার আছে বলেই আলোর কদর। |
মেঘ চমকালেই বৃষ্টি হয় না // মেঘ যত গর্জায় তত বর্ষায় না | যারা বেশি লাফাল ঝাপায়, তাদের কর্মক্ষমতা কম হয়। |
মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়,আড়ালে তার সূর্য হাসে- রবীন্দ্রনাথ | প্রকৃতিতে উথালপাথাল লেগেই আছে; মানুষের জীবনে সুখ-দুঃখ ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং পালাক্রমে আসে; সুতরাং দুঃখে ভেঙ্গে পড়লে চলবে না; দুঃখের আড়ালেই সুখ আছে; সমতুল্য- 'আজ আমীর কাল ফকির', 'চক্রবৎ পরিবর্তন্তে দুঃখানি চ সুখানি চ','চিরদিন কারো সমান নাহি যায়', 'ঝড় থেমে গেলে সব কিছু শান্ত হয়' ইত্যাদি। |
মেঘ না চাইতেই জল | কোন জিনিষ পাওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার আগেই প্রাপ্তি। |
মেঘে মেঘে বেলা গেল | চেহারা দেখে বোঝা না গেলেও বয়স হয়েছে। |
মেঘে শীত না মাঘে শীত? যত্র বায়ু তত্র শীত | মেঘে বা মাঘে শীত হয় না; শীতের বায়ু বইলেই শীত পড়ে। |
মেঘের আড়ালে সূর্য হাসে | দুঃখের আড়ালে সুখ থাকে; দুখের পরে সুখ আসে। |
মেঘের ছায়া | অল্পক্ষণস্থায়ী সুখানুভূতি। |
মেঘের মতো জল নেই, অন্নের মত খাদ্য নেই | দুইই সমান অতুলনীয়। |
মেড়া(=ভেড়া) লড়ে খুঁটির জোরে | দুর্বল পরের শক্তিতে শক্তিশালী হয়। |
মেজে ঘষে কর ক্ষয়, কালো কভু ধলো নয় | কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। |
মেজে ঘষে রূপ আর ধরে বেঁধে পীরিত | মাজা ঘষা করলে রূপ বাড়ে না; জোর করে কারো ভালবাসা আদায় করা যায় না। |
মেধাবী বাক্পটুঃ প্রাজ্ঞ পরিচিত্তোপলক্ষকঃ। ধীরো যথোক্তবাদী চ এষ দূতো বিধীয়তে।। (চাণক্য) | তীক্ষè স্মৃতিশক্তিসম্পন্ন, সুবক্তা, বিচক্ষণ, অন্যের মনোগত ভাব অনুধাবন করতে সক্ষম, শান্ত, যথাযথভাবে বক্তব্য নিবেদন করতে সক্ষম- এরকম ব্যক্তিই যোগ্য দূত বলে বিবেচিত হন। |
মেয়ের মায়ের পাঁচটা প্রাণ | ্মেয়েদের শ্বশুরবাড়ী থেকে মেয়ের মাকে নানা কটুকথা গঞ্জনা শুনতে হয়; একটা প্রাণ হলে কবেই সে মরে যেত- এই ভাবনা থেকে প্রবাদের সৃষ্টি। |
মেয়েদের রূপ আর ছেলেদের প্রতিভা একই জিনিস | উভয়ই জন্মগত ও ধংসাত্মক। |
মেরে তুলোধুনা করা | কাউকে নির্দয়ভাবে প্রহার করা। |
মেরেছে মেরেছে কলসির কানা তাই বলে কি প্রেম দেব না? | প্রীতিপ্রেমের পূণ্যবন্ধনে মানুষে মানুষে সম্পর্ক গড়ে উঠে। |
মোগল পাঠান হদ্দ হল ফারসী পড়েন তাঁতী, বাঘ পালালো বিড়াল এলো শিকার করতে হাতী | যেখানে জ্ঞানীরা যেতে ভয় পায়, সেখানে অর্বাচীনেরা ছুটে যায়; |
মোটা ভাত মোটা কাপড় | অতি সাদাসিধা খাওয়াপড়া, কোন বাবুয়ানা নেই। |
মোটে মা রাঁধে না, তার তপ্ত ও পান্তা | অস্তিত্বহীন বস্তুর গুণাগুণ বিচার চলে না; যেখানে কিছুই পাওয়ার সম্ভাবনা নেই সেখানে বিশেষ দাবীর প্রশ্ন নেই। |
মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত | মোল্লার জ্ঞান ও ক্ষমতা নিজ নিজ ছোটো গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ; সীমিতজ্ঞানের অধিকারীরা নিজনিজ পরিধির মধ্যে বিচরণ করে। |
মৌনং সম্মতি লক্ষনম্ | চুপ থাকলে সম্মতি আছে বোঝা যায়। |
ম্যাও ধরবে কে | সাহসিক কাজের ভার কে নেবে; সমতুল্য- 'বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে'? |
য
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
যঃ পলায়তি স জীবতি | যে পালায় সেই বাঁচে। |
যখের চোখে ঘুম নাই | টাকা আগলিয়ে রাখার দুশ্চিন্তায় সারারাত ঘুমাতে পারে না। |
যখন আদর জুটে, ফুটকলাই দিয়ে ফুটে; যখন আদর টুটে, ঢেঁকি দিয়ে কুটে | আদরেরও মাত্রা নেই, তিরস্কারেরও মাত্রা নেই; সবতাতেই বাড়াবাড়ি। |
যখন কপাল মন্দ হয়, বন্ধুলোকে মন্দ কয় | কপাল খারাপ হলে ভাল কথা বললেও লোকের কানে খারাপ শোনায়। |
যখন গাধা খায় জল ঘোলা করেই খায় | বোকা সুষ্ঠভাবে কাজ করতে অপারগ। |
যখন তখন করে পাপ, সময় বুঝে ফলে শাপ | শাস্তি এড়ানো যায় না; সময় হ'লেই শাস্তির খাঁড়া নেমে আসে। |
যখন তুমি নিশ্চিত যে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয় লক্ষ্য নিয়ন্ত্রণ করো না, পদক্ষেপ নিয়ন্ত্রণ কর- কনফুসিয়াস | লক্ষ্যের সাথে আপোষ করা অনুচিত। |
যখন তুমি রোমে তখন তুমি রোমান | যে দেশে তুমি আছ সেই দেশের আচার অনুসারে আচরণ করা উচিৎ; সমতুল্য- 'যস্মিন দেশে যদাচারঃ'। |
যখন তোমার হারাবার কিছু নেই, তখন জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন নয় | পিছুটান নয়া থাকায় যে কন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। |
যখন প্রতিকূলতা আসে তখন অনুকূলতার সাথে গ্রহণ করো- চীনা প্রবাদ | বিপদ এলে সাহসের সাথে মোকাবিলা করতে হয়। |
যখন বিধি মাপায়, উপরি উপরি মাপায় | বিধি একবার পুরস্কার বা শাস্তি দিতে শুরু করলে পরপর দিতে থাকে। |
যখন যার কপাল ধরে, শুকনো ডাঙায় ডিঙি সরে // যখন যার পড়তা হয়, ধুলিমুঠো সোনামুঠো হয় | সৌভাগ্য থাকলে সবই হয়; আল্লা যারে দেয় ছাদ ফুঁইড়াই দেয়। |
যখন যার কপাল বাঁকে দূর্বাবনে বাঘ ঝাঁকে // যখন যার কপাল পোড়ে, শুকনো ডাঙায় পিছলে পড়ে | ভাগ্য মন্দ হ'লে সবদিক থেকে বিপদে পড়ার আশঙ্কা থাকে। |
যখন যেমন তখন তেমন | পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলা, যখন যে অবস্থায় পড়া তখন সেই উপযোগী কাজ করা; সমতুল্য- 'যস্মিন দেশে যদাচার', 'যে বনে যাই সেই ফল খাই'। |
যখনকার যা তখনকার তার | যখন যার থাকে তখন তার মত কথা বলে। |
যখনকার যার তখনকার তা | যখন যেটা উপযোগী মনে হবে তখন সেটা করা উচিৎ। |
যজমানী বামুনের হাজা শুকায় না | যজমানী বামুনের অন্নাভাব হয় না। |
যজ্ঞোৎসবঞ্চ বিপ্রাণাং মূর্খাণাং কলহোৎসবম্। পুরুষোৎসবঞ্চ নারীনাং গবানাং তৃণমুৎসবম্।। (চাণক্য) | যজ্ঞ ব্রাহ্মণের উৎসব; মূর্খের উৎসব কলহ; নারীর উৎসব পুরুষ; এবং গরুর উৎসব তৃণ। |
যত কয় তত নয় | একটা কথা মুখে মুখে ঘুরলে ফুলেফেঁপে বড় হয়ে পড়ে, কার্যতঃ বিষয়টা অত বড় নয়। |
যতক্ষণ না তুমি থামছো এতে কিছু যায় আসে না কত আস্তে তুমি হাঁটছো- কনফুসিয়াস | জীবনে এগিয়ে যেতে হবে; এটাই মূল কথা; জীবন চলিষুষ্ণ। |
যতক্ষণ যোগ ততক্ষণ ভোগ | কখনো শুভাশুভের সাথে যোগ থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত কর্মের ফলভোগ করে যেতে হবে। |
যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ // যাবৎ শ্বাস তাবৎ আশ | যতক্ষণ শ্বাস থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত জীবনের আশা ছাড়তে নেই; কখনো নিরাশ হতে নেই; যতক্ষণ কোন কাজের একটু আশা থাকবে ততক্ষণ চেষ্টা করে যেতে হবে |
যত কর তাড়াতাড়ি, তত পায়ে বেড়াবেড়ি | যত তাড়াতাড়ি করা যায় ততই ভুলভ্রান্তি বেশি হয়। |
যত গর্জে তত বর্ষে না | আড়ম্বর অনুসারে কার্য হয় না; যে বেশি বকে, সে কাজে বেশিদূর এগোয় না; সমতুল্য- 'অতি মেঘে অনা/ফোঁটা বৃষ্টি', 'অধিক গর্জনে অল্প বর্ষণ', 'অনেক গর্জনে ফোঁটা বৃষ্টি', 'ঘেউ ঘেউ করা কুত্তা কদাচিৎ কামড়ায়', 'যে কুকুর ঘেউ ঘেউ করে সে কামড়ায় না', 'বর্ষণ নেই গর্জন সার; বহ্বারম্ভে লঘু ক্রিয়া ইত্যাদি। |
যত গুড় তত মধুর | যত মিষ্টি ব্যবহার তত মধুরসম্পর্ক; যত টাকা ঢালা যাবে তত ভাল কাজ পাওয়া যাবে। |
যত ঘর তত দ্বার | প্রতিটি কাজ সিদ্ধ করার জন্য নানা উপায় আছে; উপায় নেই এমন কাজ নেই। |
যত চতুর তত ফতুর | বেশি চালাকি করলে একদিন নিঃস্ব হ'তে হ'বে। |
যত ছিল নাড়াবুনে হ'ল সব কেত্তুনে | যতসব অপদার্থের দল কর্তৃত্ব লাভ করেছে। |
যত জ্ঞান বাড়বে তত জানবে তুমি কিছু জানো না। | জানার কোন শেষ নাই। |
যত জ্বালে ব্যঞ্জন মিষ্ট, তত জ্বালে ভাত নষ্ট- খনা | সব জায়গায় একধরণের ব্যবহারে কাজ সফল হয় না। |
যত তক্ক তত নরক্ক | যত বেশি তর্ক হবে তত বেশি নরকভোগ হবে; তর্কে সত্যের মিমাংসা হয় না; বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। |
যত তুমি শিখাবে তত তুমি শিখবে- ইহুদী প্রবাদ | জ্ঞানদানে জ্ঞান বাড়ে। |
যত দোষ নন্দ ঘোষ | অযথা দোষারোপ; একজন নিরপরাধ ব্যক্তিকে সব দোষের ভাগী করা। |
যত দোস্তি তত কুস্তি- | অতিরিক্ত মাখামাখির ফল শত্রুতা |
যতদূর মাদুর ততদূর পা ছড়াও // যতদূর চাদর দিয়ে পা ঢাকতে পারো ততদূর পা ছড়াও কাপড় বুঝে জামা কাটো- ইংরাজী প্রবাদ | ক্ষমতা বুঝে কাজ কর; সমতুল্য- 'অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা'; 'আয় বুঝে ব্যয় করা'; কাপড় বুঝে জামা কাটা ইত্যাদি। |
যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা | কথা বলায় লঘুগুরু জ্ঞান নেই; অনুচিত কথা বলা; বয়স/অবস্থার অতিরিক্ত কথাবার্তা; ছোট মুখে বড় কথা; স্পর্ধিত কথাবার্তা। |
যত মত তত পথ | সব ধর্ম সত্য এবং ধর্মের লক্ষ্য অভিন্ন; একাধিক পথে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। |
যত মন্দির কাছে তত ঈশ্বর থেকে দূরে | সহজলভ্য জিনিসের আকর্ষণ বা মূল্য নেই;সমতুল্য-'আগ্রার মানুষ তাজমহল দেখে না', 'কালিঘাটের মানুষের কালীদর্শন হয় না','গির্জার পাশের মানুষ গির্জায় যায় না','মক্কার মানুষ হজ্জ পায় না' ইত্যাদি। |
যতই মানুষকে দেখছি ততই কুকুরকে ভালো লাগছে | কুকুরের বিশ্বাসযোগ্যতা মানুষ থেকে অনেক বেশি; সমতুল্য- কৃতজ্ঞ কুকুর অকৃতজ্ঞ মানুষ অপেক্ষা শ্রেয়। |
যত রক্তের কাছে তত বেশি রক্তারক্তি- সেক্সপিয়ার | আত্মীয়রাই বেশি অনিষ্ট করে; সমতুল্য- 'আন (অন্য) সতীনে নাড়ে চাড়ে, বোন সতীনে পুড়িয়ে মারে', 'কাছের লোক কাছের নয়', ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই' ইত্যাদি। |
যত শেষ তত বেশ | শুরুতে কোন কাজ তেমন ভাল লাগে না; কাজ ক্রমশঃ এগুতে থাকলে কাজটা পছন্দসই হয়ে যায়। |
যত সয় তত বয় | যে যতটা ভার বইতে পারে, সে ততটা ভার বইবে। |
যত হাসি তত কান্না // যত হাসি তত কান্না বলে গেছেন রাম সন্না (রাম শর্মা) | সারাজীবনে হাসি কান্নার পরিমাণ সমান; বেশি সুখ-আহ্লাদ করা নেই; তাহ'লে দু;খও সেই পরিমাণে বাড়বে। |
যতদিন তুমি অসৎ ততদিন তোমার কোন শত্রু নেই। | সমাজে অসৎ লোকের ভিড় বেশি। |
যতদিন বাঁচো ততদিন শেখো | শেখার কোন নির্দিষ্ট বয়স নেই। |
যতদূর মাদুর ততদূর পা ছড়াও // যতদূর চাদরে পা ঢাকে ততদূর পা ছড়াও- হিন্দী প্রবাদ | আয় বুঝে ব্যয় কর; ক্ষমতা অনুযায়ী কাজ কর; যা পেয়েছো তাতেই সন্তুষ্ট থাকো; ক্ষমতার বেশি প্রত্যাশা করো না; সমতুল্য- 'কাপড় বুঝে জামা কাটো'। |
যতন নহিলে মিলে না রতন // যতনে রতন মেলে | কিছু পেতে গেলে কষ্ট করতে হয়; কষ্টবিনা কেষ্ট মেলে না; সাধিলেই সিদ্ধি। |
যত্নে কৃতে যদি না সিধ্যতি কোহত্র দোষঃ | সবিশেষ যন্তন করিলেও যদি কার্য সিদ্ধ না হয় তাতে দোষের কি আছে? |
যত্র আয় তত্র ব্যয় | যা আয় হয়, তার সব খরচ হয়ে যায়; কোন সঞ্চয় হয় না। |
যত্র ধূম তত্র বহ্নি | যেখানে ধোঁয়া আছে, সেখানে আগুন আছে; কার্য থাকলে নিশ্চয়ই কারণ আছে। |
যত্র বাতাস তত্র শীত | বাতাস বইলে শীতের প্রকোপ বাড়ে। |
যথা দৃষ্টং তথা লিখিতং // যদ দৃষ্টং তদ লিখিতং | যেমন দেখা তেমনি লেখা; মাছি মারা কেরানী। |
যথা ধর্ম তথা জয় | যে পক্ষে ধর্ম থাকে, সেই পক্ষের জয় হয়। |
যথা পূর্বং তথা পরং | আগেও যেমন পরেও তেমন, অবস্থার কোন পরিবর্তন নেই; ভাগ্যের কোন পরিবর্তন নেই। |
যথা হ্যেকেন চক্রেণ ন রথস্য গতির্ভবেৎ। এবং পরুষকারেণ বিনা দৈবং ন সিদ্ধ্যতি।। (চাণক্য) | যেমন শুধু চক্রে রথ চলে না তেমনই পুরুষাকার বিনা ভাগ্যলাভ হয় না। |
যদি আকাশ নামে তবে চাঁদে চড়ব | অসম্ভবের আশা; আকাশকুসুম কল্পনা। |
যদি আছে কাজ তবে সকাল সকাল সাজ | যদি কাজ থাকে তবে সকাল সকাল সেরে ফেলাই ভাল। |
যদি আমড়াতলায় আম পাই তবে আমতলায় কেন যাই। | সহজ কোন কাজ উদ্ধার হ'লে অনর্থক কষ্টকর পথ অবলম্বন করা নেই। |
যদি ইচ্ছা থাকে, তবেই ইচ্ছাপূরণ হয় | যদি কাজ করা ইচ্ছা থাকে তবে কার্যসিদ্ধি হবেই। |
যদি একাগ্রচিত্তে কাজ কর তবে তুমি পাহাড় টলাতে পারো- চীনা প্রবাদ | মনে অদম্যশক্তি থাকলে অসাধ্যসাধন করা যায়। |
যদি কঠোর পরিশ্রম কর তবে তুমি লোহাররডকে ঘষে সূচ বানাতে পারো- চীনা প্রবাদ | চেষ্টায় কিনা হয়; ঘষতে ঘষতে পাথর ক্ষয় হয়। |
যদি কাজ সুষ্টভাবে সম্পন্ন হোক চাও তবে কাজ নিজে কর | নিজের কাজ পরকে না দিয়ে নিজেই করা উচিৎ। |
যদি কাটে কালসাপে কি করবে রোজার বাপে | প্রতিকারহীন বিপদ থেকে কাউকে উদ্ধার করা যায় না। |
যদি কামড়াতে না পারো তবে দাঁত দেখিয়েও না | বৃথা ভয় দেখিয়ে নিজেকে হাস্যাস্পদ করো না। |
যদি গব্য আগে পাছে, কি করে তার শাকে মাছে // যার আছে আগে পিছে কি করে তার শাকে মাছে | যদি আহারে প্রথমে ঘি এবং শেষে দুধ থাকে তবে শাকসব্জি ও মাছের প্রয়োজন হয় না। |
যদি তুমি কোন ঘরে সবথেকে বেশি বুদ্ধিমান ব্যক্তি হও তবে তুমি ভুল ঘরে আছো- কনফুসিয়াস | সমানে সমানে সাযুজ্য হয়। |
যদি তুমি জগৎকে নতুন কিছু দিতে না পারো, তবে তুমি জগতের একটি বোঝা- আরবী প্রবাদ | অথর্বরা সংসারের বোঝাস্বরূপ। |
যদি তুমি বোকার মত কোন কাজ না কর তবে কেউ তোমাকে কামড়াতে আসবে না- চীনা প্রবাদ | কাউকে উত্যক্ত না করলে সে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায় না। |
যদি তুমি ভবিষৎকে জানতে চাও, তবে অতীত থেকে পাঠ নাও- কনফুসিয়াস | ভবিষ্যতের ঠিকানা অতীতের পাতায় লেখা থাকে; অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষ ভবিষ্যতের পথে পা রাখে। |
যদি তুমি সামনের রাস্তা সম্পর্কে জানতে চাও তবে যারা ফিরছে তাদের কাছে কোঁজ নাও- চীনা প্রবাদ | অভিজ্ঞলোকের কাছে পরামর্শ নেওয়ার চেতাবনি। |
যদি তুমি ভুল কর এবং সংশোধন না কর তবে সেটাই হ'বে প্রকৃত ভুল- কনফুসিয়াস | মানুষমাত্রই ভুল করে; সচেতন মানুষ সেই ভুল সংশোধন করে। |
যদি থাকে আগে পাছে কী করবে তার শাকে মাছে? | আগে ঘি পরে দুধ থাকলে- শাক মাছের প্রয়োজন হয় না; সমতুল্য- 'গব্য থাকলে আগেপাছে কী করবে তার শাকে মাছে?' |
যদি থাকে নসিবে, আপনি আপনি আসিবে | ভাগ্যে লেখা থাকলে ফল লাভ হবেই। |
যদি দুটি পাখির পিছনে ছোটো, তবে একটিও পাবে না | লক্ষ্য স্থির না হ'লে কার্যসিদ্ধি হয় না। |
যদি দেখ মাকুন্দ চোপা একপাও এগিয়ো নয়া বাপা- খনা | সকালে দাড়ি-গোঁফ লোকের মুখ দেখলে দিনটা ভালো যায় না- এমনই লোকের ভ্রান্ত বিশ্বাস। |
যদি নাচো, তবে বাজনাদারদের পয়সা দিও | সহযোগীর কথা মনে রেখো। |
যদি না হয় আগনে বৃষ্টি, তবে না হয় কাঁঠালের সৃষ্টি- খনা | অঘ্রাণমাসে বৃষ্টি না হলে গাছে কাঁঠাল ধরে না। |
যদি পোত ফাগুনে কলা, কলা হবে মাস ফসলা- খনা | ফাগুন মাসে কলাগাছ পুতলে প্রতি মাসেই কলা ফলে। |
যদি বর্ষে আগনে, রাজা যায় মাগনে- খনা | অঘ্রাণমাসে বৃষ্টিপাত হলে কীট ফসল নষ্ট করে; ফলে রাজস্ব আদায় কম হও; দেশে চারিদিকে অভাব পরিলক্ষিত হয় এবং আকাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। |
যদি বর্ষে চৈত্রে বৃষ্টি তবে হবে ধানের সৃষ্টি- খনা | চৈত্রমাসে বৃষ্টি হ'লে ধানের ফসল ভাল হয়। |
যদি বর্ষে পৌষে, কড়ি হয় তুষে- খনা | পৌষমাসে বৃষ্টি হ'লে তুষ বেচেও অঢেল অর্থ আয় হয়। |
যদি বর্ষে ফাগুনে, ফসল হবে দ্বিগুণে- খনা | ফাল্গুনমাসে বৃষ্টিপাত হলে চাষবাস ভাল হয়। |
যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্য রাজার পূণ্য দেশ- খনা | মাঘের শেষের বৃষ্টিপাতে প্রচুর রবিশস্য উৎপন্ন হয়। চাষীর হাতে পয়সা আসে[ অভাব অনটন থাকে না; সকলের কল্যাণ হয়। |
যদি বাঁচতে চাও, তবে হাসতে শেখো | হাসতে পারলে মনে রোগ জন্মে না; দিলখোলা মানুষের আধি-ব্যাধি কম হয়। |
যদি বিবেককে বড় কর তবে শত্রু সৃষ্ট হবে, যদি হৃদয়কে বড় কর তবে বন্ধু বৃদ্ধি পাবে- আরবী প্রবাদ। | দোষেগুণে মানুষ; বিবেকসম্পন্ন কড়াধাঁচের লোকের কাছে সাধারণ মানুষ ঘেঁষে না। |
যদি মন তুষ্ট থাকে, তবে কেবা ধনী কেবা দরিদ্র | মনের প্রশান্তি বড় কথা; মন তৃপ্ত থাকলেই স্বর্গসুখ অনুভব করা যায়। |
যদি মাথা নত করতেই হয় একটু নত করো- চীনা প্রবাদ | সব সময় মাথা উঁচু করে চলা উচিত। |
যদি সৎসঙ্গতিরতো ভবিষ্যসি ভবিষ্যসি। অথ দুর্জনসংসর্গে পতিষ্যসি পতিষ্যসি। (চাণক্য)) | যদি সৎসঙ্গ কর, তবে উন্নতি হবেই হবে; আর যদি অসৎসঙ্গ কর তবে পতন হবেই হবে। |
যদি শুয়োর কথা বলতে পারত, তবে ভগবান শুয়োরের মত দেখতে হত- গ্রীক প্রবাদ | ভগবানের ধারণা মানুষের সৃষ্টি। |
যদি সেরা জিনিষ না পাও তবে যা পেয়েছো তাকেই সেরা বানাও // যদি সেরা জিনিষ না পাও তবে যা পেয়েছো তাতেই সন্তুষ্ট থাকো | তৃপ্তি সন্তুষ্টি- সবই নিজের ইচ্ছাধীন। |
যদি হয় সুজন, একপিঁড়িতে ন’জন // যদি হয় সুজন, তেঁতুল পাতায় দুজন; | মিলেমিশে থাকলে কোন অসুবিধাই অসুবিধা নয়। |
যদি হয় কুজন, নয় পিঁড়িতে ন’জন // যদি হয় কুজন, নয় ঘরেতে একজন | দুটো মন্দলোক পাশাপাশি থাকতে পারে না। |
যদ্যপি আমার গুরু শুড়িবাড়ি যায়, তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায় | সকলেই গুরু হতে চায়, শিষ্য হতে কেউ চায় না; সার্থক গুরুর সার্থক শিষ্য। |
যম জামাই ভাগনা, এ তিন নয় আপনা // জমাতা ভাগিনা যম আপনার নয়- মুকুন্দরাম | যম জামাই আর ভাগনে- এই তিন জনকে যতই আদরযত্ন করা হোক-না-কেন এরা কোনদিন নিজের লোকের মত ব্যবহার করে না। |
যমের অরুচি | কোন দুষ্ট লোক বেশি দিন বেঁচে থাকলে ঘেন্নায় এই উক্তি করে তাকে গালি দেওয়া হয়। |
যমের দক্ষিণ দুয়ার দেখা/দেখানো | মৃত্যুমুখে পরির হওয়া; কারো মৃত্যু কামনা করে এই উক্তি করে গালি দেওয়া হয়। |
যশবানের বিনাশ নাই | যশবান চিরদিন মানুষের মনে জাগরুক থাকে; কীর্তি যস্য স জিবতি। |
যস্মিন্ দেশে ন সম্মানো ন বৃত্তির্ন চ বান্ধবাঃ। ন চ বিদ্যাগমঃ কশ্চিৎ তং দেশং পরিবর্জয়েৎ।। (চাণক্য) | যে দেশে (গুণীর) সম্মান নেই, জীবিকার ব্যবস্থা নেই, কোন বন্ধু নেই এবং বিদ্যার্জনের কোন ব্যবস্থা নেই- সেই দেশ পরিত্যাগ করা উচিত ( কিরূপ দেশ পরিত্যাজ্য) |
যস্মিন দেশে যদাচার | যে দেশের যে নিয়ম/ভাও; পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলা' সমতুল্য- 'যখন তুমি রোমে তখন তুমি রোমান', 'যখন যেমন তখন তেমন', 'যে দেশের যে ভাও, উল্টো করে ডিঙি বাও', 'যে বনে যাই সে ফল খাই' ইত্যাদি। |
যস্য ক্ষেত্রং নদীতীরে ভার্যা বাপি পরপ্রিয়া। পুত্রস্য বিনয়ো নাস্তি মৃত্যুরেব ন সংশয়।। (চাণক্য) | যে লোকের শস্যক্ষেত্র নদীর পাড়ে, যে লোকের স্ত্রী পরপুরুষে আসক্ত, যে লোকের পুত্র অবিনীত- সেই লোকের জীবনধারণ মৃত্যুর সমান- এই ব্যাপারে সংশয় নাই। |
যস্য নাস্তি স্বয়ং প্রজ্ঞা শাস্ত্রং তস্য করোতি কিম্। লোচনাভ্যাং বিহীনস্য দর্পণঃ কিং করিষ্যতি। (চাণক্য) | যে ব্যক্তির নিজস্ব কোন বুদ্ধি নই শাস্ত্রোপদেশ তার কী কাজে লাগবে ? যে লোকের দুই চোখই নষ্ট- আয়নায় তার কী কাজ হবে ? |
যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাক, যা নেই তার জন্য অপেক্ষা করো না- আরবী প্রবাদ | আশার পিছনে ছোটার কোন অর্থ হয় না। |
যা কেউ সন্দেহ করে না, তা কখনো প্রমাণ করতে যেও না- চীনা প্রবাদ | লোকে ভুল ভুঝতে পারে। |
যা চকচক করে, তাই সোনা নয় | সোনা ছাড়া সোনার মত রাংতাও চকচক করে। |
যা ছোঁয় তাই সোনা | চরমসৌভাগ্য, তুঙ্গে বৃহস্পতি। |
যা তুমি চোখে দেখ না, তা তুমি মুখের মাধ্যমে আবিস্কার করো না- ইহুদী প্রবাদ | বাস্তবজগতে কল্পনার কোন স্থান নেই। |
যা পাল্টানো যায় না তা মেনে নেওয়াই ভাল | তাতে কোন বিপত্তি ঘটবে না। |
যা জানে জাঁতা জানে, যে পিষে সেই জানে | যারা পরিশ্রম করে তারাই একমাত্র বুঝতে পারে কঠোর পরিশ্রমের কষ্টটা কি। |
যা রটে তার কিছুটা বটে // যেটা রটে সেটা বটে | চারিদিকে যা রটে তার সম্পূর্ণটা অমূলক নয়; রটনার কিছু সত্যতা থাকে। |
যা শত্রু পরে পরে | অপরের সাহায্য শত্রুনিধন হোক এটাই ইচ্ছা; পরের ওপর দিয়েই ঝামেলাটা যাক। |
যা হবার তা হবে // যা হবার হবে, ভাবনা কেন তবে | অদৃষ্টে যা লেখা আছে তা ঘটবেই; তার জন্য চিন্তা করে কোন লাভ নেই; নিয়তিঃ কেন বাধ্যতে; ভবিতব্যং ভবত্যেব। |
যাইতে ছাগল আইতে পাগল | আসার জন্য উদ্গ্রীব আবার যাবার জন্যও ছাগলের মত ছটফট করে; অস্থিরমতিচিত্ত। |
যাইলে রামে বধে না যাইলে রাবণ | উভয়সঙ্কট |
যাক প্রাণ থাক মান | প্রাণ দিয়েও সম্মান রক্ষা করতে হয়। |
যাকে দেখতে না পারি তার চলন বাঁকা // যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা | যাকে অপছন্দ, তার প্রত্যেক কাজই ত্রুটিপূর্ণ মনে হয়। |
যাকে রাখ সেই রাখে | অতি সামান্য জিনিষ যত্ন করে তুলে রেখে দিলে একসময়ে কাজে দেয়; উপকার করলে তার প্রতিদান মেলে। |
যাচ্লে জামাই কাঁঠাল খান না, না যাচলে ভোঁতাও পান না // যাচলে জামাই খান না, শেষে আমানিও পান না | অনেকে আছে, যাদের সাধাসাধি করলে উপেক্ষা করে; তাদের ভাগ্যে কিন্তু শেষপর্যন্ত কিছু জোটে না। |
যাচ্লে মাণিক বিকায় না // যাচ্লে সোনা রাঙ্ হয় | যাচা জিনিষের আদর নাই, কদর নাই। |
যাচা ভাত কাচা কাপড় | যাচা অন্ন ছেড়ে যেতে নেই; কাচা কাপড় পেলে ময়লা কাপড় পড়তে নেই। |
যাদৃশী ভাবনা যস্য, সিদ্ধির্ভবতি তাদৃশী | যে যেমন কামনা করে সে তেমনি পায়; সমতুল্য- 'যেমন কর্ম তেমন ফল'। |
যাবৎ জীবন তাবৎ চেষ্টা // যাবৎ শ্বাস তাবৎ আশ | যতক্ষণ শ্বাস থাকবে ততক্ষণ জীবনের আশা ছাড়তে নেই; যতক্ষণ কোন কাজের একটু আশা থাকবে ততক্ষণ চেষ্টা করে যেতে হবে। |
যাবৎ জীবেৎ সুখং জীবেৎ ঋণং কৃত্বয়া ঘৃতং পিবেৎ- (চার্বাক) | যতক্ষণ বাঁচো সুখে বাঁচো; ঋণ করেও ঘি খাও (বস্তুবাদী দর্শন); সমতুল্য- 'নেচে কুঁদে নাওরে জাদু মনের সুখে কবে যেতে হবে শিঙে ফুঁকে', 'হেসে খেলে দুদিন বইতো নয় কে জানে কখন কার সন্ধ্যে হয়'। |
যাবৎ ভুঁই তাবৎ গড়গড়া | জমি থাকলে গড়গড়া থাকবেই, অর্থাৎ দেহ থাকলে দুঃখ থাকবেই। |
যাবৎ শ্বাস তাবৎ আশ | যতক্ষণ জীবন থাকে ততক্ষণ বিপদমুক্তির আশা থাকে। |
যাবৎ সীতা তাবৎ দুঃখ | সীতার মত বাঁচা হ'লে সারাজীবন দুঃখভোগ করে যেতে হবে। |
যার আকাঙ্ক্ষা বিশাল, সেই আসল দরিদ্র | মনের দিক থেকে কাঙালই থেকে যায়। |
যার আছে আগে পিছে, কি করে তার শাকে মাছে | যে প্রথমে ঘি এবং শেষ দুধ মেখে ভাত খায় তার তরকারী ও মাছের প্রয়োজন হয় না। |
যার আছে কিছু তার হও কিছু, যার, নেই কিছু তার যাও কিছু | যার না পেলেও চলে সে আরও পায়, অপরপক্ষে যার চলার মত কিছু নেই সেটাও সে হারায়; ভগবানের একচক্ষু বিচার। |
যার উত্থান নেই, তার পতনও নেই | যে চলে না সে পড়ে না। |
যার গোলায় ধান তার কথায় টান | বিত্তবানেরা দেমাকভরে কথা বলে। |
যার কর্ম তারে সাজে, অন্যলোকের লাঠি বাজে // যার কাজ তারে সাজে, অন্যেরে লাঠি বাজে | প্রত্যেকের নিজের কাজ করা উচিত; যার যে-কাজ সেই কাজ তাকেই মানায়, অন্যেরক্ষেত্রে নানা বিড়ম্বনা সৃষ্টি হয়; দক্ষলোকে কাজ করবে; অদক্ষলোকের হাতে পড়লে সেই কাজ নষ্ট হ'বে। |
যার খাই তার গাই // যার নুন খাই তার গুণ গাই | উপকৃত উপকারীর উপকার করা; উপকারীর প্রতি উপকৃত কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা। |
যার খায় তারেই গালায় // যার খায় যার পড়ে তারই আবার ক্ষতি করে | আশ্রয়দাতা বা প্রতিপালকের অনিষ্ট সাধন করে; কৃতঘ্নচরিত্রের লোক, যে উপকারীর উপকার স্বীকার করে না; সমতুল্য- বুকে বসে দাড়ি উপড়ায় |
যার গোপনীয়তা প্রকাশ পায়, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়- আরবী প্রবাদ | কাজের কথা মনেই থাকা উচিৎ; অপরে জানলে কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে; মনসা চিন্তিতং কর্ম বচসা ন প্রকাশয়েৎ। |
যার ছয়ে হয় না তার ছিয়াত্তরেও হয় না | বয়স বাড়ার সাথেসাথে বুদ্ধি বাড়ে না; বয়সে চুল পাকে, বুদ্ধি পাকে না। |
যার জন্য চুরি করি সেই বলে চোর | উপকৃতের উপকারীর নিন্দা করা; কৃতঘ্নচরিত্রের লোক। |
যার জ্বালা সেই জানে | একের অন্তরের জ্বালা অপরের পক্ষে অনুভব করা সম্ভব নয়। |
যার ট্যাঁকে টাকা, তার কথা বাঁকা | বিত্তশালীরা উদ্ধতভাবে কথা বলে। |
যার তলোয়ার তার দেশ- পাঞ্জাবী প্রবাদ | যার লাঠি তার মাটি/মোষ। |
যার দৌলতে রামের মা তারেই তুমি চেন না | যার দ্বারা কার্যোদ্ধার তাকেই শেষে অস্বীকার; সমতুল্য- 'অকৃতজ্ঞের নরকবাস'। |
যার ধন তার ধন নয়, নেপোয় মারে দই | একজনের সম্পদ অন্যে ভোগ করে; ধান্ধাবাজ চালাকি করে অন্যের সম্পত্তি ভোগ করে; যে পরিশ্রম করে সে পরিশ্রমের ফল ভোগ করে না, চালাক লোকে ফাঁকি দিয়ে সে ফল ভোগ করে। |
যার নাম চালভাজা তার নাম মুড়ি | নামবিভ্রাট; নাম আলাদা হ'লেও, বিষয় এক। |
যার নিয়তি/মরণ যেখানে | অদৃষ্টে যা লেখা আছে তাই হবে; নিয়তিকে বাধা দেবার কেউ নেই; নিয়তিঃ কেন বাধ্যতে। |
যার পাঁঠা, সে লেজের দিকে কাটবে | নিজের জিনিষ যেমন খুশি ব্যবহার করা যায়। |
যার প্রতিবিধান নেই, তা সহ্য করা উচিৎ | টিকে থাকতে হ'লে এড়াতে না পারলে মানিয়ে নেওয়া উচিৎ। |
যার বিয়ে তার খোঁজ নেই পাড়াপড়শির ঘুম নেই | অকারণে অতি-উৎসাহ প্রদর্শন; মাথা নেই তার মাথাব্যাথা। |
যার বোঝা তার ঘাড়ে | যার দায়িত্ব সেই কাজ সম্পন্ন করবে। |
যার ভাত নাই তার জাত নাই | যে অন্যের দ্বারে ভিক্ষা মাগে তার কোন সম্মান নেই। |
যার মন্দ সহ্য করার ক্ষমতা নেই সে ভালো দেখার জন্য বেঁচে থাকে না- ইহুদী প্রবাদ | সুখ ভোগ করতে চাইলে দুঃখকেও ভোগ করতে হয়। |
যার মনে যা লয় | যার যেমন অভিরুচি; কেউ মদ বিক্রি করে দুধ খায়, কেউ দুধ বিক্রি করে মদ খায়। |
যার মাদুর নেই তার উত্তর শিয়র | যার শোবার জায়গাই নেই সে কোনদিকে মাথা রেখে শুবে তার প্রশ্ন নেই (উত্তর দিকে মাথা রেখে শোয়া নিষেধ)। |
যার মান নেই সে মানীর অপমান দেখলে খুশি হয় | ঈর্ষাকাতরতা। |
যার যা রীত না ছাড়ে কদাচিৎ | কেউ স্বভাব ছাড়তে পারে না; স্বভাব যায় না মলে। |
যার যে কথা নহে, সে কেন কথা কহে | অনধিকারীর কথা বলা অনুচিত। |
যার যেখানে ব্যাথা তার সেখানে হাত | পাঁচজনের মধ্যে দোষারোপসম্পর্কিত কোন আলোচনা হ'লে যার সাথে মিলে যায় সে মনে করে তাকে উদ্দেশে বলা হচ্ছে। |
যার যেমন মতি তার তেমন গতি // যার যেমন মন তার তেমন ধন | যার যেমন চরিত্র সে তেমন ফলভোগ করে। |
যার মাটি তার সাথে না আঁটি // যার লাঠি তার মাটি // যার লাঠি তার মোষ- হিন্দি প্রবাদ | যার শক্তি আছে সেই দখল পায়; জোর যার মুল্লুক তার। |
যার শিল তার নোড়া, তারই ভাঙ্গি দাঁতের গোড়া | অধিকারীর কাছ থেকে জিনিষ নিয়ে তার সাহায্যে অধিকারীর অনিষ্ট করা। |
যার শুরু ভাল তার শেষ ভাল | কোন কাজ ভালভাবে শুরু হলে শেষটাও ভাল হয়। |
যার শেষ ভালো, তার সব ভালো | ভাল জিনিষ ভালভাবে শেষ কয়ড়া উচিৎ; সমতুল্য- 'মধুরেণ সমাপয়েৎ', শেষ রক্ষাই রক্ষা' ইত্যাদি। |
যার সাথে যার মজে মন কিবা হাড়ি কিবা ডোম | প্রেম প্রণয় জাতবিচার করে হয় না; যার মন যাতে অনুরক্ত তার কাছে সেটাই মনোহর; সমতুল্য- 'তস্য তদেব মধুরং যস্য মনো যত্র সংলগ্নম' |
যার হাত জলে আছে এবং যার হাত আগুনে আছে উভয়ে সমান নয়- আসিরীয় প্রবাদ | শান্ত মনের সাথে অশান্ত মনের তুলনয়া হয় না। |
যার হাতে খাই নাই, সে বড় রাঁধুনী | দূর থেকে দেখলে সব ভাল মনে হয়; ব্যবহার করলে প্রকৃত সত্য জানা যায়; যাকে চিনি না সে ভদ্রলোক। |
যারা জন্মেছে তাদের প্রতি ঈর্ষা করো না যারা জন্মায়নি তাদের প্রতি ঈর্ষা কর | পরের প্রতি ঈর্ষাকাতরতা পরের ক্ষতি করে না নিজের ক্ষতি করে। |
যারা জন্মেছে তারা সব দুর্ভাগা, যারা জন্মায় নি তারাই সৌভাগ্যবান | যারা জন্মায় নি, তাদের সংসারের জ্বালাযন্ত্রণা ভোগ করতে হবে না; ভূতের বেগার ঠেলতে হবে না। |
যারা দেখে না, তাদের মত অন্ধ নেই | দেখার জন্য পাওয়া দুটো চোখে যারা সৌন্দর্য উপভোগ করে না তারা জন্মান্ধ থেকেও অধম। |
যারা মন্দিরে যায়, তারা সবাই সাধু নয়। | মন্দিরে যারা যায় তাদের অধিকাংশের গায়ে স্বার্থের নামাবলী জড়ানো থাকে। |
যারা মিষ্টি কথা বলে, তারা সব বন্ধু নয়। | যারা শুধু মিষ্টি কথা বলে, তারা প্রয়োজনে স্পষ্ট কথা বলতে পারে না; তারা প্রকৃত বন্ধু নয়। |
যারা শোনে না, তাদের মত কালা নেই। | শোনার জন্য পাওয়া দুটো কানে যারা সঙ্গীত শোনে না, তারা বদ্ধকালা থেকেও অধম। |
যারে কাটে/খায় কালসাপে কি করে তার ওঝার বাপে | প্রতিকারহীন বিপদ থেকে কাউকে উদ্ধার পাওয়া যায় না। |
যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা | যাকে অপছন্দ, তার সব কাজই ত্রুটিপূর্ণ; অপছন্দ লোকের সবকিছুই অপছন্দ। |
যারে না বামুন বলি তার গায়ে নামাবলি | যে বামুনের ব্রাহ্মণত্ব বলে কিছু নাই; অব্রাহ্মণের দীর্ঘ ফোঁটা। |
যারে নারি হাতে, তারে মারি ভাতে | পরোক্ষে কাউকে শাস্তি দেওয়া; তিলে তিলে দগ্ধ করা। |
যাহা নেই ভারতে তাহা নেই ভারতে | যে বিষয়ের বর্ণনা মহাভারতে নেই তা পৃথিবীর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। |
যাহা বাপান্ন তাহা তিপ্পান্ন | বিশেষ কোনো তফাত নেই; এতটাই যদি করা হয় তবে আর অল্প একটু করতে দোষ কী-এই ভাব; কোন পাপ কাজে অগ্রসর হওয়ার আগে মানসিক দ্বন্দ্বে সাময়িক ইতঃস্তত করা; পাপের কোন মাত্রা নেই; একটা পাপ এবং একশটা পাপ সমান কথা। |
যিনি সকল জীবকে নিজের মত দর্শন করেন, তিনিই প্রকৃত পন্ডিত | আত্মবৎ সর্বভূতেষু যঃ প্শ্যতি স পন্ডিতঃ- চাণক্য |
যুক্তিহীন লোক বাজি ধরে | যুক্তিহীন লোকেরা ভাগ্য বিশ্বাস করে। |
যুদ্ধঞ্চ প্রাতরুত্থানং ভোজনং সহবন্ধুভিঃ। স্ত্রিয়মাপদ্গতাং রক্ষেৎ চতুঃশিক্ষেত কুক্কুটাৎ।। | আপ্রাণ যুদ্ধ, প্রত্যুষে নিদ্রাত্যাগ, পরিবারের সকলের সঙ্গে (অথবা বন্ধুর সঙ্গে) আহার গ্রহণ এবং বিপদাপন্ন স্ত্রীলোককে রক্ষা করা- মোরগের কাছে এই চারটি গুণ শিক্ষণীয় আছে। |
যুদ্ধের পর সিপাই হাজির | কার্য সমাধার পর সাহায্যকারী হাজির। |
যুদ্ধের শুরু ভালো তো অর্ধেক বিজয় | সুন্দরভাবে শুরু হলে কাজের অর্ধেক সাফল্য হয়ে যায় |
যে অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করা হয়, তা বিফলে যায় না- আরবী প্রবাদ | মানুষ বাঁচার জন্লয লড়ে এবং লড়াই করে বাঁচে। |
যে অনুপস্থিত সিংহকে হত্যা করে সে উপস্থিত ইঁদুরকে ভয় পায়- ইংরাজী প্রবাদ | আস্ফালনকারীরা আসলে ভীতু হয়। |
যে অলস, তার অলব্ধ-লাভ হয় না | যে কিছু করে না, সে কিছু পায় না। |
যে অল্পেতে সন্তষ্ট, তার কাছে সবকিছুই সহজ | মনের প্রশান্তি সব থেকে বড় কথা। |
যে আশা ত্যাগ করে, সে মরতে শুরু করে | আশাই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। |
যে আসে লঙ্কায় সেই হয় রাবণ // যে যায় লঙ্কায় সে-ই হয় রাবণ | ক্ষমতাশালীরা সবাই অভিন্ন প্রকৃতির হয়; শাসক বদলায় তার চরিত্র বদলায় না; যে মেসিন রক্ত খায়, সেটা রাবণ চালালেও খাবে, রামে চালালেও খাবে। |
যে একজনও শত্রু তৈরি করতে পারেনি, সে কারও বন্ধু নয় | সবাই বন্ধু হয় না বা শত্রু হয় না; বন্ধু থাকলে শত্রুও আছে। |
যে কথা রটে সে কথা বটে | যে কথা চারিদিকে রাষ্ট্র হয় তার মধ্যে কিছু সত্যতা থাকে। |
যে কথা অন্তর থেকে বেরোয় তা অন্তর স্পর্শ করে, যে কথা শুধু মুখ থেকে বেরোয় তা কান অতিক্রম করে না | অন্তরের কথা ফাঁকা বুলি হয় না। |
যে কথা সেই কাজ | মুখে যেমন বলা কাজেও তেমন করা। |
যে করে চক্ষুদান, তারেই কর অপমান | উপকারীর উপকার স্বীকার করার পরিবর্তে তাকে অপদস্থ করা। |
যে কহে বিস্তর সে কহে বিস্তর | যে বেশি কথা বলে সে বাজে কথা বলে। |
যে কাঁটায় মাপ সেই কাঁটায় শোধ // যে কাঠ খাবে, সেই আঙরা হাগবে | যেমন ব্যবহার করবে, তেমন ব্যবহার পাবে; যেমন কর্ম তেমন ফল। |
যে কাউকে বিশ্বাস করে না, কেউ তাকে বিশ্বাস করে না- আরবী প্রবাদ। | অবিশ্বাসীকে কেউ বিশ্বাস করে না। |
যে কাজ আজ করতে পারো সেটা আগামীকালের জন্য ফেলে রেখো না- আরবী প্রবাদ | আগামীকাল সেই কাজ করার সুযোগ নাও থাকতে পারে। |
যে কাজ কাল করার কথা, সেটা আজ নয় কেন?, যে কাজ আজ করার কথা, সেটা এখন নয় কেন? | কোন শুভ কাজ আগামীকালের জন্য ফেলে রাখা অনুচিৎ; শুভস্য শীঘ্রম, অশুভস্য কালহরণম। |
যে কাল যায় সেই কাল ভাল | অতীত মানুষের মনকে বেশি টানে। |
যে কুকুর গভীর গর্ত খোঁড়ে সে হাড় খুঁজে নেই- জিপসি প্রবাদ | পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই |
যে কুকুর ঘেউ ঘেউ করে সে কামড়ায় না | যে মারব বলে লাফায় সে কদাচিৎ মারে। |
যে কুকুর ডাকে না সে বড় খতরনক | দুস্কৃতিরা নিঃসাড়ে কাজ সারে। |
'যে খেয়েছে সাত বার, তার জন্য ভাত বাড়ো, যে খায় নি একবার, তার জন্য চাল ঝাড়ো | সকলেই সবলের সহায়, দুর্বলের কেউ নয়; তেলা মাথায় তেল দিতে কে না চায়; সমতুল্য- 'তেলা মাথায় ঢালো তেল, রুখু/শুখনো মাথায় ভাঙ্গো বেল'; 'ধনীর মাথায় ধর ছাতি, নির্ধনেরে মার লাথি'। |
যে জুতা পরেছে সেই জানে কাঁটা কোথায় বিঁধছে | কাজ যে করেছে সেই বুঝতে পারে কোথায় কাজের ত্রূটি আছে। |
যেখানে আঁটাআঁটি সেখানেই খিটিমিটি/ফাটাফাটি | যেখানে কষাকষি মনোভাব থাকে সেখানে গণ্ডগোল লাগে। |
যেখানে গভীরতা সব থেকে কম সেখান দিয়ে খাল পেরুবে | যেখানে বিপদের আশঙ্কা সব থেকে কম তার মধ্য দিয়ে কার্য সিদ্ধি করবে। |
যেখানে গুড় সেখানে পিঁপড়া | যেখানে লাভের আশা থাকে সেখানে লোকেরা ভিড় জমায়। |
যেখানে জীব, সেখানে শিব | ঈশ্বর সব জীবের মধ্যে অবস্থান করেন; জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর। |
যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া/উলটাইয়া দেখ তাই, পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন | কিছুই অবহেলা করার নয়; হয়তঃ কোন অবহেলার বস্তু থেকেই বিরাট লাভ হতে পারে। |
যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয় | ভয় পেলেই ভয় এসে জড়িয়ে ধরে; যার ভয়ে ভীত সেই এসে উপস্থিত; যে সমস্যায় ভীত সেই সমস্যার মধ্যে জড়িয়ে পড়া। |
যেখানে ভাই ভাই সেখানে ঠাঁই ঠাঁই | অধিকাংশক্ষেত্রে ভাইয়ে ভাইয়ে মিল থাকে না। |
যেখানে যেমন সেখানে তেমন | যেখানে যা আচরণ পাবে সেখানে সেই আচরণ দেখাবে; সমতুল্য- 'আয়না যে মুখ দেখে সেই মুখ দেখায়'। |
যেখানে সাধু যেতে ভয় পায়, সেখানে বোকায় ধায়। | জ্ঞানীরা যে পথ মাড়ায় না, অজ্ঞানীরা সেই পথে আগে হাঁটে। |
যে খায় চিনি তারে যোগান চিন্তামণি | যার যা প্রয়োজন ভগবান তাকে সেটা দিয়ে থাকেন; সৎকাজের জন্য অর্থ ও উপায় সম্পর্কে কিছু ভাবতে হয় না, ঈশ্বরের কৃপায় তা আপনিই জুটে যায়। |
যে খেয়েছে সাত বার, তার জন্য ভাত বাড়, যে খায় নি একবার, তার জন্য চাল ঝাড় | সুবিধাপ্রাপ্তকে আরও সুবিধা দাও বঞ্চিতকে আরও বঞ্চনা কর'; সমতুল্য- 'তেলা মাথায় তেল দেওয়া', 'তেলা মাথায় ঢালো তেল, রুখু/শুখনো মাথায় ভাঙো বেল'। |
যে গরু দুধ দেয় তার চাঁট সই | যে উপকার করে, তার দুটো কটু কথা শুনতে হয়। |
যে গর্ত খোঁড়ে সেই গর্তে পড়ে | যে পরের অনিষ্ট করতে চায় তার নিজেরও অনিষ্ট হয়। |
যে গাধা প্রতিবাদ করে না, তারই উপর ওজন চাপে | মানুষ দুর্বলতার সুযোগ নেয়। |
যে গিঁট খুলতে পারবে না, সে গিঁট বাঁধতে তাড়াতাড়ি করোনা- ইংরাজী প্রবাদ | অযথা সমস্যায় জড়ীয়ো না। |
যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোনের বাতি; আশু গৃহে তার দেখিবে না আর নিশিথে প্রদীপ ভাতি | সম্পদের অপব্যবহার করা নেই; অপচয় অনটন ডেকে আনে; অমিতব্যয়ী লোকেরা দুঃখকষ্টের শিকার হওয়। সুখের দিনে দুর্দিনের জন্য সঞ্চয় করা আশু কর্তব্য। (মিতব্যয়িতার প্রতি উপদেশ) |
যে জেগে ঘুমায়, তাকে জাগানো দায় | অজ্ঞানকে কিছু শেখানো যায় না। |
যে ডালে বসে সেই ডাল কাটে | যার কাছে সাহায্য পাওয়া যায় তারই অনিষ্ট করে; চুড়ান্ত আহাম্মকি। |
যে তোমার হাত ধরে আর মন ছুঁয়ে থাকে, সেই প্রকৃত বন্ধু | প্রকৃত বন্ধু মরমী হয়, হৃদয়স্পর্শ করে থাকে। |
যে দল (=দাম) টানে সে খায় কই | যে পরিশ্রম করে সে ফলভোগ করে। |
যে দামে কেনা সে দামে বিক্রি | অবৈধভাবে বা বিনাব্যায়ে অর্জিত ধন নষ্ট হলে লাভ ক্ষতির হিসাব চলেনা। |
যে দিন যায় সে দিন আসে না | গত কাল আর ফিরে আসে না। |
যে দেবতা যে ফুলে তুষ্ট | যে যেমন আপ্যায়নে তুষ্ট; গুরুত্ব বুঝে আপ্যায়ন করা। |
যে দেশে কাক নেই সেই দেশেও রাত পোহায় | যার কাছ থেকে কিছু সাহায্য আসছিল সেটা বন্ধ হলেও কিছু ক্ষয়ক্ষতি হবে না, যেমন চলছিল তেমনই চলবে। |
যে দেশে বৃক্ষ নেই সেই দেশে ভেরেণ্ডাও বৃক্ষ হয় | গুণীজন না থাকলে অল্পজ্ঞানীরা প্রশংসিত হয়; বনগাঁয়ে শিয়াল রাজা। |
যে দেশের যে ভাও, উল্টো করে ডিঙি বাও | যে দেশের যে রীতি; পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলা' সমতুল্য- 'যখন তুমি রোমে তখন তুমি রোমান', 'যখন যেমন তখন তেমন', 'যষ্মিন দেশে যদাচার' ইত্যাদি। |
যে দুটো খরগোশের পিছনে ছোটে সে একটাও ধরতে পারে না- জাপানী প্রবাদ | লক্ষ্য স্থির না থাকলে কার্য সিদ্ধ হয় নয়া। |
যেন উটের কাঁটাভোজ // যেন উষ্ট্রের কণ্টকভোজন | অল্পসুখের জন্য বেশি কষ্টস্বীকার। |
যেনতেন প্রকারেণ কার্যসিদ্ধি গরিয়সী | যে কোন উপায়ে কার্যসিদ্ধিই হল মুখ্যবিষয়। |
যে নদীর গভীরতা বেশি তার চলার শব্দ কম | জ্ঞানীরা কম কথা বলে; ভরা কলসীর শব্দ কম। |
যে নিজেকে জানে না সে একটি মূর্খ | জ্ঞানীরা আগে নিজেকে জানে। |
যে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত, সেই অভাগা | অভাগারা শুধু আমি আমি, আমার আমার করেই মরে। |
যে নিজের সম্মান বোঝে না সে অপরকে সম্মান দেয় না | আত্মমর্যাদাবোধহীন ব্যক্তিরা সম্মান দিতেও জানে না নিতেও জানে না। |
যে নিজের নিন্দা প্রথমে করে, তার নিন্দা কেউ করে না | আত্মসমালোচনা সবসময় প্রশংসিত হয়। |
যে পয়সা নিয়ে ঈশ্বরের পূজা করে সে বেশি পয়সা পেলে শয়তানের পূজা করবে | অসতের ন্যায় অন্যায় বোধ নেই। |
যে পরের দ্রব্যকে মূল্যহীন মনে করে, সে-ই যথার্থ জ্ঞানী | জ্ঞানীব্যক্তিরা পরের দ্রব্যে লোভ করে না। |
যে পরের ছিদ্র খোঁজে তার ছিদ্র বেশি থাকে | মন্দ লোকেরা পরের দোষ দেখে বেড়ায়। |
যে পাখিটা তুমি ছেড়ে দিয়েছো সে আবার ফিরে আসতে পারে, যে কথাটা মুখ থেকে বেড়িয়ে গেছে সেটা আর ফিরিবে না- ইহুদী প্রবাদ | ছোঁড়া তীর আর বলা কথা কখনো ফিরে আসে না। |
যে পাতে খায় সে পাত ছিঁড়ে | যার কাছে উপকার পায়, তার অনিষ্ট করে; যে ডালে বসে সেই ডাল কাটে। |
যে পাহাড় নড়ায়, সে প্রথমে কয়েকটি পাথর সরায়- কনফুসিয়াস | সব কাজই অল্প দিয়ে শুরু হয়। |
যে প্রকৃতিকে ঠকায় প্রকৃতি তাকে ঠকায়- চীনা প্রবাদ | প্রকৃতিবান্ধব প্রকৃতির আশ্রয় পায়। |
যে প্রশ্ন কর্ সে কিছুক্ষণের জন্য মূর্খ থাকে, যে প্রশ্ন করে না, সে সারাজীবনের জন্য মূর্খ থাকে - চীনা প্রবাদ | অজ্ঞান কখনো কিছু জানতে চায় না। |
যে ফাঁদ পাতে, সেই ফাঁদে পড়ে | যে পরের অনিষ্ট চায় তার নিজের অনিষ্ট হয়; যে গর্ত খোঁড়ে সে গর্তে পড়ে। |
যে বনে যাই সেই ফল খাই | অবস্থানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ; পরিবেশের সাথে সহজে খাপ খাইয়ে চলা উচিত; সমতুল্য- যস্মিন দেশে যদাচার। |
যে বাতাসে দাবানল বাড়ে, সেই বাতাসেই প্রদীপ নেভে | একই লোকের বিভিন্ন রুপ হয়। |
যে বিপদ খোঁজে, সে কখনো ব্যর্থ হয় না | চারিদিকে বিপদ ওঁত পেতে থাকে কাছে গেলেই পেঁচিয়ে ধরে। |
যে বিয়ের যে মন্ত্র | যেমন কাজ তেমন আয়োজন। |
যে বেশি বকে, সে বাজে বকে | বেশি কথায় বাজে কথাই বেশি থাকে। |
যে বন্ধু বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে তার বন্ধুত্ব পুনরায় কামনা করা মৃত্যুর সামিল | বিশ্বাসহন্তাকে কখনো বিশ্বাস করা নেই। |
যে ভুল করে সে মানুষ, যে ভুলের ওপর স্থির থাকে সে শয়তান- আরবী প্রবাদ | মানুষ ভুল করে এবং ভুল থেকে শিক্ষা নেয়; শয়তানেরা ক্ষুদ্রস্বার্থে ইচ্ছা করে বার বার ভুল করে। |
যেমন আরশি তেমন পড়শী | আয়নায় যেমন মুখ দেখাবে আয়না তেমন মুখ দেখাবে |
যেমন কর্ম তেমন ফল // যেমন গাওনা তেমনি পাওনা // যেমন চাষ তেমন ফসল // যেমন বপন তেমন কাটা- আরবী/ইংরজী/চীনা প্রবাদ | যে যেমন কাজ করে, সে তেমন ফল ভোগ করে; ভাল কাজ করলে ভাল ফল পাবে, খারাপ কাজ করলে খারাপ ফল পাবে; সমতুল্য-'যাদৃশী ভাবনা যস্য, সিদ্ধির্ভবতি তাদৃশী', 'যেমন দেবে তেমন পাবে', 'যেমন কাজ তেমন পারিশ্রমিক' ইত্যাদি। |
যেমন কুকুর তেমনি মুগুর | অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী অপরাধীর শাস্তি; দুষ্টের উপযুক্ত শাসন বা শাস্তি; সমতুল্য- 'যেমন বুনো ওল তেমন বাঘা তেঁতুল', 'শঠে শাঠ্যং সম আচরেৎ'। |
যেমন ক্ষেপা তেমনি ক্ষেপি | দুজনেই বদমেজাজী। |
যেমন গুরু তেমন চেলা, গুরু বোবা, শিষ্য কালা | দু'জনই সমান অপদার্থ অর্থে বক্রোক্তি; সমতুল্য- 'চ'তে গুরু 'ম'তে শিষ্য'। |
যেমন দান তেমন দক্ষিণা | অল্প দানধ্যানের প্রতি তির্যকোক্তি |
যেমন দেবতা, তেমন পূজা | প্রত্যাশিত সম্মান। |
যেমন দেবা তেমনি দেবী | তির্যক অর্থে- পাত্র যেমন কুতসিৎ পাত্রীও তেমন কুরূপা। |
যেমন দেবা তেমনি বাহন | তির্যক অর্থে- যেমন দরের লোক তেমন দরের অনুচর। |
যেমন দেবে তেমন পাবে | কাজ অনিযায়ী পারিশ্রমিক। |
যেমন দেশ, তেমন বেশ। | বিভিন্ন দেশের পোষাকপরিচ্ছদ বিভিন্ন ধরণের হয়। |
যেমন বাপ তেমনি ব্যাটা | ছেলে বাপের প্রকৃতি পায়; সু-অর্থে যোগ্য পিতার যোগ্যপুত্র; কু-অর্থে- বদ বাপের বদছেলে। |
যেমন বুনো ওল, তেমনি বাঘা তেঁতুল | যেমন কঠিন রোগ, তেমনি তীব্র ঔষধ; যেমন শঠ তেমন শাস্তি; সমতুল্য- 'যেমন কুকুর তেমন মুগুর', 'শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ'। |
যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভিজাবো না | বিনাকষ্টে কার্যোদ্ধার, ধান্ধাবাজী; সমতুল্য- 'ধরি মাছ না ছুঁই পানি'। |
যেমন বৃক্ষ তেমন ফল | সন্তান পিতামাতার প্রকৃতি পায়। |
যেমন মতি তেমন গতি | যার যেমন প্রকৃতির হয়, সে তেমন গতিপ্রাপ্ত হয়। |
যেমন মনিব তেমন চাকর | তির্যক অর্থে- দুজনই সমান অপদার্থ। |
যেমন মা তেমন ছা // যেমন মুরগী তেমন ছানা | সন্তান মায়ের প্রকৃতি পায়; ব্যঙ্গার্থে- দুজনেই মন্দ। |
যেমন সাপ তেমন লাঠি | যেমন ক্রুর প্রকৃতিড় লোক তেমন তার শাস্তি। |
যেমন হাঁড়ি তেমন সরা | তির্যক অর্থে- পাত্র ও পাত্রী দুজনেই কুতসিৎ দর্শন। |
যে মরতে ভয় পায় সে বাঁচতে শেখেনি | প্রতিনিয়তঃ মরণপণ সংগ্রাম করে বাঁচতে হয়। |
যে মাথা নোয়ায়, সে মাথা খোয়ায় না | বিনীত চরিত্রের লোকের সম্মানহানি হয় না। |
যে মানুষ প্রশ্ন করে সে এক মুহূর্তের জন্য মুর্খ, আর যে মানুষ প্রশ্ন করে না সে সারা জীবনের জন্য মুর্খ- কনফুসিয়াস | যার মনে কোন প্রশ্ন জাগে না সে আকাট মুর্খ। |
যে মানুষ বলে সে পারে এবং যে মানুষ বলে সে পারে না, তারা উভয়ই সত্য কথা বলে- কনফুসিয়াস | সবাই সবকিছুর কিছু পারে এবং কিছু পারে না। |
যে মানুষ সামান্যতম দুর্ভাগ্য সহ্য করতে পারে না, সে কোন বড় কাজ সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করতে পারে না- চীনা প্রবাদ | জীবনের সংগ্রামের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষ বড় হয়। |
যে মুলোটা বাড়ে তা পত্তনেই বুঝা যায় | পরিণতি কি হবে তা কাজের শুরু দেখেই বোঝা যায়। |
যে মেঘ গর্জায়, সে মেঘ বর্ষায় না | যার হাঁকডাক বেশি সে কাজে অষ্টরম্ভা। |
যে মেয়ে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে | কাজ না করার অজুহাত হয় না। |
যে মেশিন রক্ত খায় সে রামা চালালেও রক্ত খাবে শ্যামা চালালেও | শাসকের চরিত্র বদলায় না। |
যে যত অসৎ সে তত সাধুতার ভান করে | মেকি জিনিষের চাকচিক্য বেশি; ভণ্ড বামুনের ভড়ং বেশি। |
যে যত পায়, সে তত চায় | আকাঙ্ক্ষার কোন শেষ নাই। |
যে যেমন ঢেমনি জগত দ্যাখে তেমনি | সাধুর চোখে সবাই সাধু, চোরের চোখে সবাই চোর। |
যে রক্ষক সেই ভক্ষক | রক্ষাকর্তাই অনিষ্টকারী; রূপবদল; আগে যে কথা বলত এখন তার বিপরীত কথা বলে |
যে শোলটা পালিয়ে যায় সেটা বড় ছিল | হস্তচ্যুত জিনিষটার জন্য মনে আক্ষেপ হয়। |
যে সকলের বন্ধু সে কারোরই বন্ধু নয় | বন্ধুত্বের ভাগ-বাটোয়ারা হয় না; বন্ধুত্ব অংশে বিভাজিত হয় না। |
যে সঞ্চয় করে সে কষ্ট পায় না | সঞ্চয়কারীর কখনো অর্থকষ্ট হয় না। |
যে সৎ হয় নিন্দা তার কোন অনিষ্ট করতে পারে না | কালো আলো তাড়ায় না; আলো কালো তাড়ায়। |
যে সব বাসনা ত্যাগ করে, সে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়-ইগ্রাজী প্রবাদ | কামনা বাসনার ত্যাগ মৃত্যুর সামিল। |
যে সব প্রশ্নের উত্তর জানে তাকেও সব প্রশ্ন করা হয় নি- কনফুসিয়াস | প্রশ্নের কোন শেষ নেই। |
যে সম্মান দিতে জানে সে সম্মান পায়। | সম্মানকারীর সম্মানহানি হয় না। |
যে সয় সে রয় // যে সহে সে রহে | যে কষ্ট সহ্য করে সে টিকে থাকে; যে কষ্ট করে সে সুখভোগ করে; ধৈর্য ধরে থাকলে উত্তম ফল পাওয়া যায়; সমতুল্য- 'আগে গেলে বাঘে খায়, পিছে গেলে সোনা পায়', 'সবুরে মেওয়া ফলে' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'কাল কখনো আসে না', 'শুভস্য শীঘ্রম অশুভস্য কালহরণম', 'সকাল/ভোরের পাখি পোকা ধরে' ইত্যাদি। |
যে সর্ষেতে ভূত ছাড়ে সেই সর্ষের মধ্যে ভূত | যে উপায়ে প্রতিকার হয় সেই উপায়ই ত্রুটিপূর্ণ; শাসনযন্ত্রে ঘূণ ধরেছে। |
যে সামনে নিন্দা এবং পিছনে প্রশংসা করে সেই প্রকৃত বন্ধু | প্রকৃত বন্ধু কঠোর সমালোচক হয়। |
যে হাসতে জানে, সে বাঁচতে জানে | হাসতে জানলে মানসিক পীড়া হয় না; আধি না থাকলে ব্যাধি হয় না। |
যে হিংসা করে সে সবার আগে নিজের ক্ষতি করে। | হিংসায় পরের কিছু হয় না, নিজের অন্তর পোড়ে। |
যেহেতু আমি চাকর হব না, সেহেতু আমি মনিব হব না- এব্রাহাম লিঙ্কন | সমানাধিকারের প্রতি সমর্থন; মানবতাবাদের পরাকাষ্ঠা। |
যো দেখতা হায়, উও বিক্তা হায়- হিন্দি প্রবাদ | সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র; গুণে নয় জমকে বাজারে জিনিষ বিক্রি হয়; বাহ্যিক ভড়ং দেখে লোকে বেশি ভোলে; সমতুল্য- 'আগে দর্শননধারী, পিছে গুণবিচারী','ঠাঁট ঠমকে বিকোয় ঘোড়া' ইত্যাদি। |
যো ধ্রবাণি পরিত্যজ্য অধ্রুবাণি নিষেবতে। ধ্রুবাণি তস্য নশ্যন্তি অধ্রুবং নষ্টমেব চ।। (চাণক্য) | যে ব্যক্তি নিশ্চিত বিষয় ত্যাগ করে অনিশ্চিতের পিছনে ছোটে, তার নিশ্চিত ও অনিশ্চিত, উভয়বিষয় নষ্ট হয়। |
যোগীর চিন্তা জগন্নাথ, ফকিরের চিন্তা মক্কা | মোক্ষলাভে যে ধর্ম যে পথ খোঁজে। |
যোগ্যং যোগ্যেন যুজ্যতে | যোগ্যব্যক্তির যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী জোটে। |
যোজ্যমানে তুপ্রাজ্ঞে নি সন্তি রাজ্ঞস্ত্রয়ো গুণাঃ। যশঃ স্বর্গনিবাসশ্চ বিপুলশ্চ ধনাগমঃ।। (চাণক্য) | রাজা যদি প্রাজ্ঞ ব্যক্তির উপর কার্যভার ন্যস্ত করেন তবে তাঁর তিনটি জিনিস লাভ হয়- যশ, স্বর্গলাভ এবং প্রভূত অর্থলাভ। |
যৌবন জোয়ারের জল | যৌবন ক্ষণস্থায়ী। |
যৌবনে অন্যায় ব্যয়ে বয়সে কাঙালি- মধুসূদন | যে মানুষ আয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যয় করে না তার অশেষ দুর্গতি; সময় থাকতে সাবধান হওয়ার পরামর্শ। কেননা ভুল পথে বেশী দূর চলে গেলে আফসোস করে কেঁদেও কোন লাভ হয়না; সমতুল্য- 'আগে না বুঝিলে বাছা যৌবনের ভরে,পশ্চাতে কাঁদিতে হবে নয়নের ঝোরে', 'যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি, আশু গৃহে তার দেখিবে না আর নিশীথে প্রদীপ ভাতি'। |
র
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
রক্ত গরম হলে বুদ্ধি গলতে শুরু করে | মাথা গরম হলে বুদ্ধি গুলিয়ে যায়। |
রক্তপাত ছাড়া পাপ ধোয় না | রক্তক্ষয়ে মানুষের চেতনা ফেরে; যুদ্ধের পরে শান্তি আসে। |
রক্তের টান বড় টান | রক্তের টানে সম্পর্ক গড়ে উঠে; পারিবারিকসম্পর্ক এবং আনুগত্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ;; সমতুল্য- 'জল থেকে রক্ত গাঢ়'; বিরুদ্ধ উক্তি- রক্তের টানে রক্তারক্তি; রক্তের টানের থেকে মনের টান বড়। |
রক্তের টানে রক্তারক্তি | ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি লাগে; সমতুল্য- 'আপন থেকে পর ভাল', 'ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- জল থেকে রক্তি গাঢ়', 'রক্তের টান বড় টান' ইত্যাদি। |
রক্ষক যারে ভক্ষণ করে, কে তারে রাখতে পারে? | আশ্রয়দাতা অনিষ্ট করলে বাঁচার কোন পথ নেই; মারে কৃষ্ণ/হরি রাখে কে? |
রঙ থাকলে রাঙা কড়ি, রঙ ফুরোলে গড়াগড়ি | রুপ থাকলে আদর আছে; রূপ হারালে আদর গেল। |
রতন গর্ভের পেতন সন্তান | সুন্দরী রমণীর কুতসিৎ সন্তান অথবা উভয়ই দেখতে কুতসিৎ। |
রতনে রতন চেনে | সবকিছুরই জুড়ি আছে; সবাই তার দোসর খুঁজে পায়। |
রতনে রতন চেনে শুয়োরে চেনে কচু | অসৎ লোক আর একজন অসৎ লোককে দেখলেই চিনতে পারে এবং তার সঙ্গে সহজে মৈত্রীও হয়। |
রতনে রতন চেনে, রসিকে চেনে রসিকজনা | গুণীব্যক্তি গুণীকে চিনতে পারে; জ্ঞানীব্যক্তি জ্ঞানীর সমাদর করে। |
রত্ন খণ্ডিত হয় না | রত্ন একটি অখণ্ড ধারণা। |
রথ দেখা কলা বেচা | এক কাজের উপলক্ষে আরো একটি কাজ সম্পন্ন করা; সমতুল্য- 'একঢিলে দুইপাখি মারা'; ঘটি কেনা গঙ্গাস্নান'। |
রবি গুরু মঙ্গলের ঊষা, আর সব ফাসাফুসা- খনা | রবি, বৃহস্পতি আর মঙ্গলবারের ঊষাকালে যাত্রা করা শুভ; অন্যান্য দিন যাত্রা করলে শুভ ফল না পাওয়াই সম্ভব (যাত্রার শুভ ও অশুভ ক্ষণ) |
রম্যাণি বীক্ষ্য মধুরাংশ্চ নিশম্য শব্দান, পৰ্য্যুৎসুকীভবতি যৎ সুখিতোহপি জন্তুঃ- কালিদাস | সুন্দর বস্তু দর্শনে এবং মধুর শব্দ শ্রবণে মানুষের মন আনন্দে পরিপূর্ণ হয়। |
রসুন খেলে রসুনের গন্ধ ছাড়ে | ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া আছে; কু কখনো সু হয় না; সমতুল্য- 'আদা শুকালেও ঝাল যায়না', 'কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না', 'মূলো খেলে মূলোর ঢেঁকুর ওঠে', 'স্বভাব যায় না মলে' ইত্যাদি। |
রসের ঘরে গৌর নাচে | পয়সা থাকলেই আমোদপ্রমোদ ফূর্তি করা যায়। |
রাই কুড়িয়েই বেল হয় | অল্প অল্প করে সঞ্চয় করে গেলে একদিন যথেষ্ট অর্থ জমা হয়। |
রাখে আল্লাহ/হরি তো মারে কে | ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে কেউ ধ্বংস করতে পারে না। |
রাগকে শাসন কর, নইলে রাগ তোমায় শাসন করবে | রাগ সংযত না হলে সুষ্ঠভাবে কোন কাহ করা যায় না। |
রাগান্বিত হলে একশ গোন | রাগ প্রশমিত হবে। |
রাঙতাই গরীবের গহনা/সোনা | গরীব অল্পেই তুষ্ট। |
রাজা কর্ণেন পশ্যতি, ধিয়া পশ্যতি পণ্ডিতঃ। পশু পশ্যতি গন্ধেন, ভূতে পশ্যতি বর্বরা।। (চাণক্য) | চরের মাধ্যমে রাজা দেখে; বুদ্ধিবলে পণ্ডিত দেখে; গন্ধ শুঁকে পশু দেখে; আর পরিণাম দেখে মূর্খ শেখে, |
রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায় | প্রভাবশালীর লড়াইয়ে সাধারণের ক্ষতি হয়। |
রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট | রাজার দোষে দেশের সর্বনাশ হয়; সমতুল্য- 'গৃহিণীর দোষে সংসার নষ্ট'। |
রাজার বেটা/মা ভিক্ষা মাগে | কপালদোষে হাভাত; ধনীর নির্ধন সাজার চেষ্টা' |
রাজার ভূরিভোজ থেকে বিদুরের শাকান্নও ভাল | আড়ম্বর থেকে সরল জীবন ভাল; সমতুল্য- 'আদরের ভোজন কি করে ব্যঞ্জন', 'আদরের ডাল-ভাতও ভাল, বিনা আদরের ঘি-ভাতও ভাল না', 'বড়লোকের ভুরিভোজ থেকে গরীবের শাকান্ন ভাল', 'রাজার ভুরিভোজ থেকে বিদুরের শাকান্ন ভাল' ইত্যাদি। |
রাজার আচে রাজপাট যোগী/মুনির আছে কাঁথা // রাজার আছে রাণী কানার আছে কানী | যে যার মনোমত জিনিষ পেয়ে তুষ্ট; উভয়েরই সুখানুভূতি সমান। |
রাজারও রায়ত নয়, সাধুরও খাতক নয় | স্বাধীনচেতা মানুষ। |
রাত নামলে লোকে দিনের প্রশংসা করে | থাকলে পরে খেয়াল হয় না; না থাকলে খোঁজ পড়ে। |
রাতের তারা থাকে দিনের আলোর আড়ালে | ঐশ্বর্যের আড়ালে দীনদুঃখীরা হারিয়ে যায়। |
রাতেরও একসময় অবসান হয় | দুঃখও একসময় শেষ হয়। |
রাম না হতে রামায়ণ | যে ঘটনা ঘটে নি তার বর্ণনা। |
রাম ভজি কি রহিম ভজি | দুকূল রক্ষা করার ধান্ধাবাজী। |
রাম ভালো হ’লে রহিম ভাল হয় | ভালোর ছোঁয়ায় সবাই ভাল হয়। |
রাম মারলেও মারবে, রাবণ মারলেও মারবে | উভয় সঙ্ছোঁকটে পড়া; জলে কুমির ডাঙায় বাঘ। |
রামের বাণ সহ্য হয় বানরের দাঁতখিচুনি নয় | গুণীলোকের সমালোচনা সহ্য করা যায়; হীনলোকের কথা অসহ্য। |
রামো যেন বিড়ম্বিতোহপি বিধিনা চ অন্যে পরে কা কথা | বিধাতার বিড়ম্বনায় রামের বনবাস হয়েছিল, সীতা আগুনে পুড়েছিলেন, কৃষ্ণ অপঘাতে মরেছিলেন, অন্যেরও তাই হবে- এর আর বেশি কথা কি; (মূলশ্লোক- |
রুক্ষ মাথায় তেল দেয় না, তেলা মাথায় ঢালে বতেল | চাটুকারিতা, তৈলমর্দন; প্রয়োজনে সাড়া দেয় না, অপ্রয়োজনে এগিয়ে আসে। |
রূপ নিয়ে ধুয়ে খা | শুধু রূপ থাকলেই হয় না, গুণও চাই। |
রূপযৌবনসম্পন্না বিশালকূলসম্ভবাঃ। বিদ্যাহীনা না শোভন্তে নির্গন্ধা এব কিংশুকাঃ।। | কুলীনবংশজাত রূপযৌবনসম্পন্ন সুন্দর অথচ বিদ্যাহীন ব্যক্তি নির্গন্ধ কিংশুকফুলের মতি শোভা পায় না। |
রূপে লক্ষ্মী গুণে সরস্বতী | অতি সুন্দরী ও গুণসম্পন্না রমণী। |
রূপে মারি লাথি, গুণে ধরি ছাতি | নারী নির্বাচনে গুণবতী কালো হলেও ভালো; গুণহীনা রূপবতী হলেও মূল্যহীন; সমতুল্য- 'কালা কাজলের মাটি, তা'র লাগি ছ'মাস হাঁটি; সুন্দর ধুতুরার ফুল, তা'র নাই কড়ার মূল','জাতের নারী কালাও ভালা, নদীর পানি ঘোলাও ভালা'। |
রূপোর বদলে রাং/রাংতা | সারবস্তুর অভাবে অসারবস্তু গ্রহণ; দুধের বদলে ঘোল/পিটুলিগোলা। |
রোগ ভুঁড়িতে আর মুড়িতে | যেসব রোগ আছে তার প্রায় সবই পেট আর মাথা থেকে উৎপত্তি হয়। |
রোগ, আগুন, শত্রু ও ঋণ, এই চারের শেষ রাখতে নেই | এই চার বিষয় না কমলে বাড়তে থাকে। |
রোগী তুষ্ট অম্বলে, যোগী তুষ্ট কম্বলে | যার যাতে সন্তুষ্টি। |
রোগী মরলে বৈদ্য আসে | দরকারের সময় সাহায্য নেই, পরে এসে উপস্থিত হয়; সমতুল্য- চোর পালালো, চৌকিদার/কোতোয়াল হাজির[, 'চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে' ইত্যাদি। |
রোদ উঠলে ধান শুকাও | সুযোগ বুঝে ব্যবস্থা নাও; সময়ের কাজ সময়ে কর। |
রোদে ধান ছায়ায় পান- খনা | রোদে ধান ভাল উৎপন্ন হয়; ছায়ায় পানের চাষ হয়। |
রোমনগরী একদিনে গড়ে হয় নি | বিরাট কাজ বাতাবাতি হয় না; মহাভারত একদিনে লেখা হয় নি। |
রোমে বাস করে পোপের সাথে বিবাদ | প্রভাবপ্রতিপত্তিসশালীর এলাকায় বাস করে তারই সাথে বিবাদ; যার অধীনে বাস তার সাথে বিবাদ করা চলে না; সমতুল্য- 'জলে বাস করে কুমীরের সাথে বিবাদ'। |
রোজার ঘাড়ে বোঝা/ভূত | যার বিপদ থেকে উদ্ধার করার কথা সে নিজেই বিপন্ন। |
রৌদ্রের তাপ সয় বালির তাপ সয় না | আসল লোকের কথা শোনা যায় তার অনুচরের কথা শোনা অসহ্য। |
ল
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
লক্ষ ঘাস মিলেমিশে থাকে, দুটি বটগাছ একসাথে থাকে না | এক আকাশে দুই সূর্য থাকে না। |
লক্ষ্মী নিঃসাড়ে আসেন যান | লক্ষ্মীর আসা যাওয়া জানা যায় না। |
লক্ষ্মী চঞ্চলা | ভাগ্য সদা পরিবর্তিত হয়; চিরদিন কারো সমান নাহি যায়। |
লক্ষ্মীছাড়ার ঝক্কি বড়র | ছন্নছাড়ারা বেশি উৎপাত করে। |
লক্ষ্মীছাড়ার দাঁতে বিষ | ছন্নছাড়ারা অত্যন্ত রূঢ়ভাষী হয়। |
লক্ষ্মী ঘরে কালপেঁচা | ঘরে অমঙ্গল উপস্থিত; কুৎসিত বা কুলাঙ্গার সন্তান। |
লক্ষ্মীর পো/মা ভিখ মাগে | ভাগ্যদোষে অভাগা; ধনীর দরিদ্রের ভান করা। |
লঙ্কায় মরল রাবণ, বেহুলা কেঁদে সারা | বিনাকারণে দুর্ভাবনা; মাথা নেই তার মাথা ব্যাথা। |
লঙ্কায় সোনা সস্তা | যে দেশে যে জিনিস প্রচুর পাওয়া যায় সেই দেশে সেটা সস্তা হয়; সেটা আনা সম্ভব নয় বলেই প্রবাদটা উক্ত হয়। |
লঘু পাপে গুরু দন্ড | অল্পদোষে কড়া শাস্তি |
লজ্জা, ঘেন্না, ভয়, তিন থাকতে নয় | এই তিন গুণ থাকলে কোন কার্যসিদ্ধি হয় না। |
লড়ে ফৌজ, নাম সর্দারের- হিন্দী প্রবাদ | খাটে সাধারণ মানুষ, নাম হয় উপরওয়ালার। |
লবণহীন ব্যঞ্জন আর ভক্তিহীন ভজন, দুই-ই সমান | উভয়ক্ষেত্রেই উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। |
লম্বা কোঁচায় নমস্কার | যে বড়লোকের পায়ে পড়ে এবং গরীবলোককে তুচ্ছজ্ঞান করে। |
ললাটের লিখন না হয় খণ্ডন | ভাগ্যে লেখা থাকলে দুর্ভোগ পোহাতেই হয়; ললাটের লিখন খণ্ডন করার শক্তি কারো নেই; সমতুল্য- ভবিতব্যানাং দ্বারাণি ভবন্তি সর্বত্র। |
লাই দিলে কুকুর মাথা ওঠে // লাই কুত্তার পাতে ভাত | প্রশ্রয় পেলে নীচ প্রশ্রয়দাতার অনিষ্ট করে। |
লাখ টাকায় বামুন ভিখারি | স্বভাব ভিখারি; স্বভাব যায় না মলে। |
লাখ কথা নইলে বিয়ে হয় না | অনেক কথা কাটাকাটি ও চালাচালি না হলে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয় না। |
লাখ কথার এককথা | অত্যন্ত মূল্যবান কথা; অনেক যুক্তিতর্কের পর উপনীত সিদ্ধান্ত। |
লাগে টাকা দেবে গৌরি সেন | অহেতুক অর্থের অপচয় |
লাঙলে ভালো খুঁড়লে মাটি, ফসল হয় ফাটাফাটি- খনা | ভালো ফসল তুলতে হলে জমিতে ভালভাবে লাঙ্ল চালাতে হয়। |
লাজের মাথায় পড়ুক বাজ, সারো গিয়ে নিজের কাজ | লজ্জা ছাড়ো এবং কাজ কর; লজ্জায় কার্যোদ্ধার হয় না; লজ্জা, ঘেন্না, ভয়, তিন থাকতে নয়। |
লাঠি যার মাটি তার // লাঠি যার ভৈসা তার- হিন্দি প্রবাদ | যে শক্তি ধরে, সে ভোগ করে; সমতুল্য- 'জোর যার মুল্লুক তার', শক্তি যার দখল তার'। |
লাঠির আগে ভূত ভাগে | লাঠির আঘাতকে সবাই ভয় করে; মূর্খস্য লাঠ্যৌষধি। |
লাগে টাকা দেবে গৌরীসেন | অর্থের যথেচ্ছ অপব্যবহার; চাহিবামাত্র যার কাছে টাকা পাওয়া যায় এমন ব্যক্তি |
লাগে তুক না লাগে তাক | অদৃষ্টগুণে প্রচেষ্টা সফল হ'লে ভাল, না হ'লে মন্দ নয়। |
লাথ সয় তো বাত সয় না | বাগাড়ম্বরে বিরক্তি; বড়ই বড় কথা সহ্য হয় না। |
লাথি মেরে পায়ে ধরে // লাথি মেরে বিষ্ণবে নমঃ | ইচ্ছা করে অপমান করে পরে ক্ষমা চাওয়া। (অল্প বা সমবয়সী ব্রাহ্মণের গায়ে পা লাগলে 'বিষ্ণবে নমঃ' বলা হয়) |
লাথির ঢেঁকি চড়ে ওঠে না | পদাঘাতের যোগ্য ব্যক্তি চড় খেয়েও কাজ করে না বা লঘু শাসন মানে না; যেখানে কঠোর শাসন প্রয়োজন সেখানে মৃদু শাসনে কাজ হয় না। |
লাথির ঢেঁকি মাথায় চড়ে | প্রশ্রয় পেয়ে নগণ্য মাথা উঠতে চায়। |
লাফাবার আগে তাকিয়ে দেখো, লাফিয়ে তাকিও না | করার আগে ভাবো, ভাবার আগে করো না; চলত্যেকেন পাদেন, তিষ্ঠতি বুদ্ধিমান। |
লাফিয়ে চাঁদ ধরতে চায় | অসম্ভব কাজ করার প্রয়াস। |
লাভে লোভ বাড়ে | লাভ হ'লে কাজে উৎসাহ বাড়ে। |
লাভে লোহা হয় | লাভের সম্ভাবনা থাকলে যে কোন কঠোর পরিশ্রম করা যায়। |
লাভের অঙ্ক শূন্য | ফল একেবারেই লাভজনক নয় |
লাভের গুড় পিঁপড়েয় খায় | একদিকে যে পরিমাণ লাভ হয়, অন্যদিকে সেই পরিমাণ লোকসান হয়; সামান্য পরিমাণের লাভ অন্যপথে নষ্ট হয়; কেউ লাভ করে তা ভোগ করতে না পারলে এই প্রবাদ বলা হয়। |
লালচ বুরি বলা হৈ- হিন্দি প্রবাদ | লোভ মানুষের পরমশত্রু। |
লালনে বহবো দোষাস্তাড়নে বহবো গুণাঃ। তস্মাৎ পুত্রঞ্চ শিষ্যঞ্চ তাড়য়েন্ন তু লালয়েৎ।। (চাণক্য) | পাঁচবছর হওয়ার পর অকারণ স্নেহে বহুদোষ সৃষ্ট হয়; উপযুক্ত শাস্তি দিলে বহুগুণ সৃষ্ট হয়; পুত্র ও শিষ্যকে তাড়ন ও লালনের মাধ্যমে শাসন করা উচিত- আদর ও শাসনের ফলাফল। |
লালয়েৎ পঞ্চবর্ষাণি, দশবর্ষাণি তাড়য়েৎ। প্রাপ্তে তু ষোড়শে বর্ষে পুত্রং মিত্রবদাচরেৎ।। (চাণক্য) | পুত্রকে প্রথম পাঁচবছর লালন কর, পরের দশবছর শাসন কর; ষোল পূর্ণ হলে তার সাথে বন্ধুর মত আচরণ কর- পুত্রের প্রতি পিতার কর্তব্য। |
লিখতে পারে না পো তো সভায় নিয়ে থো | ছেলে লেখাপড়া শিখুক বা না শিখুক তাকে জ্ঞানীদের মাঝে রেখে দেবে; তাতে সে অনেক জ্ঞান লাভ করবে। |
লিখিব পড়িব মরিব দুখে, মৎস মারিব খাইব সুখে | অকর্মার মনস্কামনা; লেখাপড়ায় অমনযোগী ছেলেদের প্রতি শ্লেষবাক্য। |
লুব্ধমর্থেন গৃহ্নীয়াৎ ক্রুদ্ধমঞ্জলিকর্মণা। মূর্খং ছন্দোহনুবৃত্তেন তথা তথ্যেন পণ্ডিতম্ ।। (চাণক্য) | লোভীকে পয়সা দিয়ে, ক্রুদ্ধকে হাত জোড় করে, মূর্খকে তার মন জুগিয়ে এবং পণ্ডিতকে যথার্থ কথা বলে বশীভূত করবে। পুত্রের প্রতি পিতার কর্তব্য। |
লুব্ধস্য নশ্যতি যশঃ, পিশুনস্য মৈত্রী, নষ্টক্রিয়স্য কুলমর্থপরস্য ধর্মঃ। বিদ্যাফলং ব্যসনিনঃ কৃপণস্য সৌখ্যং, রাজ্যং প্রমত্তসচিবস্য নরাধিপস্য।। (চাণক্য) | লোভীর যশ নাশ হয়; নিন্দুকের মৈত্রী নাশ হয়; নষ্ট ব্যক্তির বংশনাশ হয়; অর্থে আসক্ত ব্যক্তির ধর্মনাশ হয়; পাপাচরণকারীর বিদ্যানাশ হয়; কৃপণের সুখনাশ হয়; এবং উদ্ধত মন্ত্রীর জন্য রাজার রাজ্য নাশ হয়। |
লেখনী পুস্তিকা, জায়া পরহস্তং গতা গতা। যদি বা পুনরায়াতি ভ্রষ্টা নষ্টা চ মর্দি।। (চাণক্য) | কলম, বই ও স্ত্রী অপরের হাতে যাওয়া অর্থ চিরকালের জন্য যাওয়া; যদিও বা সেগুলি ফিরে আসে সেগুলি ভ্রষ্ট, নষ্ট ও মর্দিত হয়ে ফিরে আসে |
লেখা নয় যেন আরশোলার পায়ের ছাপ | কুৎসিত হস্তাক্ষর। |
লেখাপড়া করে যেই গাড়ীঘোড়া চড়ে সেই | কষ্ট করলে ফল আছেই; ছেলেদের লেখাপড়ায় মনযোগী করতে উৎসাহবাক্য। |
লেগে থাকলে মেগে খায় না | পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। |
লেজকাটা শেয়াল দোসর খোঁজে | মন্দলোক অন্যদের মন্দ চায়; শনিবারের মড়া দোসর খোঁজে |
লেফাফাদুরস্ত বাবু | বাবুর ভিতরে যাই থাকুক না কেন, বাইরের ব্যবহার কিন্তু ভদ্ররীতিমত। |
লেবু বেশি কচলালে তেতো হয় / লেবু চটকাতে চটকাতে তিতা হয়ে যায় | এক কথা বারবার বললে তেতো লাগে; কোনো কাজের জন্য বারংবার অনুরোধ করলে বিরক্তির উদ্রেক হয়; |
লোকে (গাঁয়ে) মানে না আপনি মোড়ল | অযাচিতভাবে নগণ্যব্যক্তির মাতব্বরি করা। |
লোকে কান বন্ধ করার আগে নিজের মুখ বন্ধ কর | অসার কথাবার্তায় মানুষ বিরক্ত হয়। |
লোকে কান খোলার আগে নিজের কান খোল- আরবী প্রবাদ | লোক কি বলতে চায় আগে শোন পরে তোমার কথা বলবে। |
লোকে বলে আছে ভাল, শালুক খেয়ে দাঁত কালো | আসলে ভাল নেই কষ্টে আছে- বুঝাতে উক্তি। |
লোকে যখন কারো প্রশংসা করে তখন খুব কম লোকই তা বিশ্বাস করে | লোকে অপরের প্রশংসা শুনতে চায় না। |
লোকে যখন কারো নিন্দা করে তখন প্রায় সকলেই তা বিশ্বাস করে | লোকে অপরের নিন্দা শুনতে মুখিয়ে থাকে। |
লোকে যেমন চায় তেমনিভাবে তার সাথে আচরণ কর, নিজের পছন্দমত করো না- আরবী প্রবাদ | অধিকাংশ লোকের যা চায় সেটাই রীতি বা ধর্ম; ধর্ম আচরণ কর। |
লোকের কথায় কান দিতে নেই | অজ্ঞান লোকে অবান্তর কথা বলে, যার কোন মূল্য নেই। |
লোকের কথায় চলতে নেই | অজ্ঞান লোকে সঠিক কথা বলে না; লোকের কথায় চললে নিজের বিচারবুদ্ধি যুক্তিবোধ থাকে না। |
লোটা কম্বল না থাকলে সাধু হওয়া যায় না | ভেক না ধরলে ভিখ পাওয়া যায় না। |
লোভ মানুষের পরমশত্রু // লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু | বেশি লোভ করলে পাপ হয় এবং পাপ করলে ধ্বংস অনিবার্য। |
লোম বাছতে কম্বল উজাড় | ভালো কিছু নির্বাচন করা কঠিন। |
লোহা পাথরে যুদ্ধ করে শোলাদিদি পুড়ে মরে | দুই বলবানের লড়াইয়ের মাঝে পড়ে দুর্বলের প্রাণ যায়; রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। (লোহা আর পাথরের ঠোকাঠুকিতে আগুনের ফুলকি উঠে) |
লোহা লোহাকে কাটে // লোহা লোহে কো কাটতা হয়- হিন্দি প্রবাদ | শক্তলোককে জব্দ করতে শক্তলোকের প্রয়োজন হয়। |
ল্যাংটার নেই বাটপাড়ের ভয় | যার কিছু নাই তার কিছু হারাবারও ভয় নেই; |
শ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
শকুন যতই উপরে উঠুক নজর তার নীচের দিকে | কুব্যক্তির নজর কখনো সু হয় না; নীচ ব্যক্তির নজর নীচুই হয়। |
শকুনের অভিশাপে গরু মরে না | দুষ্টের কামনা পূর্ণ হয় না; দুষ্টের কামনায় সুষ্ট বিনষ্ট হয় না। |
শকুনের দৃষ্টি ভাগাড়ে | নীচু মন উঁচু ভাবনা ভাবতে পারে না; যার যা স্বভাব; স্বভাব যায় না মলে। |
শক্ত মাটিতে বিড়াল আঁচড়ায় না | শক্তলোককে কেউ ঘাটায় না। |
শক্তের তিনকুল মুক্ত | সাহসী কাউকে ভয় করে না। |
শক্তের ভক্ত নরমের যম | যে শক্তিমান লোকের কাছে বিনীত ও বাধ্য থাকে এবং দুর্বলের ওপর হম্বিতম্বি করে; সমতুল্য- 'নরম মাটি পেলে বিড়াল আঁচড়ায়'। |
শক্যো বারয়িতুং জলেন হুতভুক্ ছত্রেণ বর্ষাতপৌ। নাগেন্দ্রো নিশিতাঙ্কুশেন শমদো দণ্ডেন গোগর্দভৌ | জলের দ্বারা অগ্নিকে শান্ত করা যায়; ছাতার দ্বারা বৃষ্টি ও রৌদ্র নিবারণ করা যায়; শাণিত অঙ্কুশ দ্বারা হাতীকে দমন করা যায় এবং দণ্ডাঘাতে গরু এবং গাধাকে শাসন করা যায়। |
শঙ্করাকে বাঘে খেল, অন্যেরা সব কোথায় গেল? | অকৃতজ্ঞ উপকৃত, যে উপকারীর ঋণ স্বীকার করে না; সমতুল্য-'নবকুমারকে বাঘে খায়','স্বার্থছাড়া কেউ এক পা নড়ে না' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'পরের কারণে স্বার্থ দিয়ে বলি এজীবন মন সকলি দাও...' 'শুধু স্বার্থ নয়, স্বার্থত্যাগও আছে এ সংসারে', 'স্বার্থমগ্ন যেজন বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে, সে কখনাে শেখেনি বাঁচিতে' ইত্যাদি। |
শঙ্খবণিকের করাত // শাঁখের করাত দু'দিকে কাটে | উভয়সঙ্কট; সমতুল্য- এগুলে রাম, পেছুলে রাবণ; 'এগুলে সর্বনাশ পিছুলে নির্বংশ', জলে কুমির ডাঙায় বাঘ', 'শ্যাম রাখি না কুল রাখি', 'সাপের ছুঁচো গেলা' ইত্যাদি। |
শজনে শাকের খোঁজ পরে টানাটানির বেলা | যখন কোন শাক জোটে না তখন মানুষ হেলাফেলার শজনে শাক খায়; সমতুল্য- ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো। |
শজনে শাকে নুন জোটে না মুসুর ডালে ঘি | অবস্থার অতিরিক্ত পাওয়ার আবদার; পান্তাভাতে নুন জোটে না গরমভাতে ঘি। |
শঠ বন্ধুর সঙ্গে এবং সর্পগৃহে বাস মৃত্যুরই সামিল | শঠ কখনো বন্ধু হয় না; শঠ বন্ধু বিষবৎ পরিত্যজ্য। |
শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ | অসতের সাথে অসততাই হ'ল সঠিক আচরণ; সমতুল্য- 'চতুরের সাথে চতুরালি'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'তুমি অধম বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন'। |
শত মূর্খ একত্র হলেও একজন বুদ্ধিমানের কাজ সম্পাদন করতে পারে না | একশ শূন্যের যোগফল এক হয় না। |
শত মূর্খ পুত্র থেকে এক গুণীপুত্র ভাল | গুণ পরিমাণের মানদণ্ডে পরিমাপ করা হয় না। |
শতং জীব | তোমার শত বৎসর পরমায়ু হোক; দীর্ঘজীবী হও- আশীর্বাদোক্তি। |
শতং বদ মা লিখ | যত পারো বল, লিখতে যেও না; গোপন কথা গোপন রাখাই যুক্তিযুক্ত। |
শতমারী ভবেৎ বৈদ্যঃ, সহস্রমারী চিকিৎসকঃ | শতরোগী মারতে পারলে বৈদ্য হওয়া যায় ইত্যাদি। |
শত্রু দিয়ে শত্রুনাশ | কাটা দিয়ে কাঁটা তোলাই প্রকৃষ্ট পথ। |
শত্রু বন্ধু সেজে এলেও তার পরামর্শ হিতকর হয় না | শত্রুর প্রশংসা বিপজ্জনক। |
শত্রু বলবান হলে লুকিয়ে আত্মরক্ষা করতে হয় | শক্তি না কুলালে বুদ্ধিবলের আশ্রয় নিতে হয়। |
শত্রু মরে গেলেও আনন্দ করার কারণ নেই | শত্রুসৃষ্টির কারণগুলি তখনও মরেনি। |
শত্রুর পতনে আনন্দ করো না, সঙ্গেসঙ্গে আবার তাকে দাঁড় করাতে ছুটো না- ইহুদী প্রবাদ | শত্রু পতন হলেও শত্রু মরে নি। |
শত্রুর মুখে ছাই | কুদৃষ্টি এড়ানো; শত্রুর অমঙ্গল কামনায় তুক; গালিবিশেষ। |
শত্রুর শত্রু তোমার মিত্র | শত্রুর বিরুদ্ধে লড়তে গেলে শত্রুর শত্রু সাহায্য কাজে লাগে। |
শত্রুর শেষ রাখতে নাই | শত্রুর বিনাশ না হলে পুনরায় বৃদ্ধি পায়; বিরুদ্ধ উক্তি- একজন বন্ধু থাকার চেয়ে একজন শত্রু থাকা ভাল। |
শত্রুর স্মিত হাসি থেকে বন্ধুর তিরস্কার অনেক ভাল | দোষত্রুটি ধরা পড়ে এবং সংশোধন কর যায়। |
শত্রোরপি গুণা বাচ্যা দোষা বাচ্যা গুরোরপি | শত্রূর গুণগুলি ব্যক্ত করবে এবং গুরুর দোষগুলিও ব্যন্ত করবে। |
শনিবারের মড়া দোসর খোঁজে/চায় | বিপন্ন লোক অন্যকে বিপদে ফেলতে চায়; অসৎ ব্যক্তি ভাল লোককে দলে টানতে চায়; (শাস্ত্রমতে শনিবারে মরলে যে দোষ হয় তা অন্যের মৃত্যুর কারণ হয়)। |
শনির দশা হলে পোড়া শোলও পালায় | ভাগ্য অপ্রসন্ন হলে অনেক অসম্ভব ঘটনা দুরদৃষ্টকে আরও বিড়ম্বিত করতে পারে। |
শনির সাত, মঙ্গলের তিন আর সব দিন দিন- খনা | বাদল- শনিবারে শুরু হলে সাতদিন, মঙ্গলবারে শুরু হলে তিনদিন এবং অন্যান্য দিনের ক্ষেত্রে একদিন স্থায়ী হয়। |
শনৈঃ পর্বতলঙ্ঘনম্ | ধীরগতিতে হেঁটে পর্বত অতিক্রম করা যায়। |
শনৈঃ শনৈঃ চরৈবেতি | ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে চল। |
শমন-দমন রাবণ রাজা, রাবণ-দমন রাম | যমকে রাবণ পরাজিত করেছিলেন; রাম রাবণকে পরাজিত করেছিলেন; সুতরাং কেউ অপরাজেয় নয়; বাপেরও বাপ আছে, ননদেরও ননদ আছে ইত্যাদি। |
শয়তান এসে কড়া নাড়লে দরজা খুলো না | মন্দলোকের সংস্পর্শে এসো/থেকো না। |
শয়তান কখনো সাধু হয় না | মন্দ কখনো ভালো হয় না; একদিন শয়তান তো চিরদিন শয়তান। |
শয়তান ততটা কালো নয় যতটা ভাবা হয় | যতটা ভাবা হয় একটা মন্দলোক ততটা মন্দ নয়। |
শয়তান সবসময় তোমার পিছনেই ঘোরাফেরা করে | চারিদিকে মন্দলোক ছড়িয়ে আছে। |
শয়তানকেও তার পাওনা দিও | তোমার অপছন্দের লোকেরও যদি কিছু গুণ থাকে তবে তার প্রশংসা করো। |
শয়তানের পছন্দ ক্ষিপ্রতা, করুণাময় ঈশ্বর সবসময় ধৈর্য- আসিরীয় প্রবাদ | শয়তান ক্ষতি করতে মুখিয়ে থাকে, সহনশীল ঈশ্বরের আশীর্বাদ বৃষ্টিধারার মত ধীরে ধীরে বর্ষিত হয়। |
শয়তানের শালা/সমন্ধী | খুব বাজে লোক- গালি |
শরতের রোদ প্রাণঘাতী | শরতের রোদ শরীরে লাগানো ক্ষতিকর |
শরীরং খলু ব্যাধিমন্দিরং | দেহ সকল ব্যাধির আধার। |
শরীরপাত কিংবা কর্তব্যসাধন | প্রাণপাত করে করণীয় কাজ সম্পন্ন করা; মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীরপাতন। |
শরীরমাদ্যং খলু ধর্মসাধনম | শরীর রক্ষা করাই প্রথম ধর্মসাধনা; শরীর ও মন সুস্থ না থাকলে কোন কাজই সুষ্ঠুভাবে করা যায় না। (যোগ- হিন্দুদর্শন) |
শরীরকে আরামে রেখে জ্ঞানার্জন হয় না- আরবী প্রবাদ। | শরীরপাত করে জ্ঞানার্জন করতে হয়। |
শরীরের নাম মহাশয় যা সহাও তাই সয়১ | মানুষের শারীরিক ক্ষমতা তার চেষ্টার উপর নির্ভরশীল। |
শরীরের নাম মহাশয় যা সহাও তাই সয়২ | সদাশয় ব্যক্তিরা যেমন সব সহ্য করেন তেমনই শরীরও সব সহ্য করে; কষ্টসহিষ্ণু কষ্ট করলে কষ্ট সহ্য করে; বিলাসী তা করলে বিলাসী হয়। |
শর্করাশতভারেণ নিম্বোবৃক্ষ উপার্জিতা। পয়সা লেচিতো নিত্যং ন নিম্বো মধুরায়তে।। (চাণক্য) | যদি শতভার চিনি দিয়ে নিমগাছ উতপন্ন করা যায় এবং প্রতিদিন তার মূলে দুধ ঢালা যায় তা হলেও নিমগাছ মিষ্টি হয় না। |
শর্বরীভূষণং চন্দ্রো নারীনাং ভূষণং পতি। পৃথিবীভূষণং রাজা বিদ্যা সর্বস্য ভূষনম্।। | রাত্রির অলংকার চন্দ্র, নারীর অলংকার পতি, পৃথিবীর অলংকার রাজা, কিন্তু বিদ্যা সকলের অলংকার। |
শ ষ স হয়েছে হ ক্ষ দেখবো | বারবার অত্যাচার দেখেছি; এবার তার পরিণাম দেখবো। |
শাঁখের করাত দু'দিকে কাটে | উভয়সঙ্কট; সমতুল্য- এগুলে রাম, পেছুলে রাবণ; 'এগুলে সর্বনাশ পিছুলে নির্বংশ', জলে কুমির ডাঙায় বাঘ', 'শ্যাম রাখি না কুল রাখি', 'সাপের ছুঁচো গেলা' ইত্যাদি। |
শাওনের পান রাবণেও না খায়- খনা | শাওনের পান অখাদ্য। |
শাক অম্বল পান্তা, তিন ওষুধের হন্তা | ওষুধ খেলে এই তিনটি জিনিষ খাওয়া নেই। |
শাকচোরকে শুলে | লঘুপাপে গুরুদণ্ড। |
শাক দিয়ে মাছ ঢাকা | জঘন্য অপরাধ গোপনের হাস্যকর চেষ্টা করা; টিকবে না এমন কৌশলে অপরাধ গোপনের অপপ্রয়াস। |
শাককে শাক পোঁদে মূলো | মূলো কিনলে শাকও পাওয়া যায়, মূলও পাওয়া যায়; এক কাজে দু'দিকে অপকার বা উপকার হওয়া। |
শানাইয়ের পোঁ | একজন কিছু বললে ঠিক বা বেঠিক হোক সায় দিয়ে যাওয়া; হ্যাঁ শেখানে হাঁটুজল। |
শানকির (=ছোট থালা) পর বজ্রাঘাত | সামান্যকে সংহার করতে বিরাট আঘাত; সমতুল্য- 'ব্যাঙ মারতে তীরধনুক', 'মশা মারতে কামান দাগা'। |
শান্ত ও স্থির দাঁড়িয়ে থাকা গরুর দুধ দোহানো সহজ- জিপসি প্রবাদ | বেয়াড়া কিছুই ভাল নয়। |
শান্তশিষ্ট লেজবিশিষ্ট | অতিভদ্র ছেলে, তবে বাপ-মায়ের আদরে বাঁদর হয়েছে |
শান্তি ভিতরে উৎপন্ন হয়, বাইরে খুঁজতে যেও না- জাপানী প্রবাদ | মন শান্ত না হলে কোথাও শান্তি নেই। |
শাপে বর | অনিষ্টের মধ্যে ইষ্টলাভ; (রাজা দশরথকে পুত্রশোকাতুর মুনি পুত্রশোকের মৃত্যুর অভিশাপ দিয়েছিলেন; এই অভিশাপের ফলে অপুত্রক রাজা দশরথ পুত্রলাভ করেছিলেন; তাঁর পক্ষে শাপে বর হয়েছিল; অহিতে বিপরীত। |
শামুক দিয়ে পুকুর কাটা // শামুক দিয়ে সাগর সেঁচা | ক্ষুদ্র উপায়ে বিরাট কাজ করার চেষ্টা; কলার ভেলায় সাগর পার, খড়ম পায়ে গঙ্গাপার, নরুণ দিয়ে তালগাছ কাটা ইত্যাদি। |
শালগ্রাম পোড়ায়ে খেয়ে নুড়িপাথর দেখে ভয় | অতীতে বহু দুস্কর্ম করার পর বৃদ্ধবয়সে এসে সামান্য দোষে পাপের ভয়। |
শালগ্রাম শিলার শোয়া বসা সমান // শালগ্রামের আবার শোয়া আর বসা | অবস্থার কোন পরিবর্তন হয় নি; আগে যে দুরবস্থা ছিল, এখনও সেই একু দুরবস্থা। |
শালুক চিনেছে গোপালঠাকুর | বুদ্ধি/বিবেচনাশক্তিহীন ব্যক্তি। |
শাসন করার অনেক গুণ | শাসনে শৃঙ্খলা আসে। |
শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে | শাসনে সোহাগের মিশ্রণ না থাকলে সুশাসন হয় না |
শাস্তি না দিলে শাসন হয় না। | শাসনবিনা অনুশাসন হয় না; আদরে বাঁদর বনে। |
শিং ভেঙ্গে বাছুরের দলে/পালে | বয়স্কলোকের ছেলেদের সাথে মেলামেশা করা। |
শিকল কাটা টিয়া/পাখী পোষ মানে না | অবাধ্য বেয়াড়া ছেলেকে লাগে আনা যায় না; উচ্ছৃঙ্খলকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা যায় না। |
শিকারী বিড়ালের গোঁফ দেখে চেনা যায় | কাজের লোকের দক্ষতা তার আকার-প্রকার চলন-বলনে বোঝা যায়। |
শিখণ্ডী খাড়া করা | ৪কাউকে আড়াল করে অন্যায় কাজ করা |
শিখলি কোথা? না দেখলুম যেথা // শিখলি কোথায়? না ঠেকলুম যেথায় | বুদ্ধিমান মানুষ দেখেদেখে শিখে নিতে পারে; আনপড় মানুষ ঠেকলে পরে শেখে। |
শিখানো কথা নিয়ে দরবারে যার, তা ফুরালে কী কয়? // শিখানো কথায় কয়দিন চলে? | কেবল শিখানো বুলি দিয়ে কোন কাজ উদ্ধার হয় না; তোতা বুলিতে বেশদিন চলে না। |
শিঙে ফোঁকা | মারা যাওয়া (মৃত্যুর প্রাক্কালে নাক দিয়ে বাঁশির মত আওয়াজ বার হয়); অন্য-অর্থে অকাজ করা, যেমন- বাঁশি হারিয়ে শিঙেয় ফুঁ। |
শিঙে হারিয়ে কাঁকুড়ে ফুঁ | আসল কাজ নষ্ট করে বাজে কাজে ফললাভের চেষ্টা। |
শিব গড়তে বানর গড়া | ভাল কাজ করতে গিয়ে মন্দকাজ করে ফেলা। |
শিবরক্ষক বন, বনরক্ষক শিব | পরস্পরের সাহায্য ব্যতিরেকে বাঁচা যায় না। |
শিবের কন্যা শিবকে দান | গাঁজাখোর শ্বশুর ও গাঁজাখোর জামাইয়ের রাজযোটক; গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা; |
শিবের সঙ্গে খোঁজ নাই গাজনের ঘটা ভারী | আসল কাজে নজর নেই আড়ম্বরে দৃষ্টি; আসলে মুষল নাই ঢেঁকিঘরে চাঁদোয়া। |
শিয়রে শমন | মৃত্যু আসন্ন। |
শিয়াল তার চামড়া পালটায় অভ্যাস পালটায় না-ইংরজী প্রবাদ | শয়তান অভ্যাস বদলায় না। |
শিয়ালের ডাক | একজন কোন কথা বললে সবাই মিলে সেই কথা বলে। |
শিয়ালের বেটা সিংহ হয় না | মন্দ কখনো ভাল হয় না; স্বভাব যায় না মলে। |
শিয়ালের যুক্তি | কোন কাজ করতে খালি সিদ্ধান্ত করে এবং সেই সিদ্ধান্ত মত কাজ না করা। |
শিরনি দেখে এগোয় কোঁৎকা দেখে পেছোয়? | লাভের আশায় এগিয়ে যায়, পরিশ্রমের ভয়ে পিছিয়ে যায়। |
শিরে হইলে সর্পাঘাত, তাগা বাঁধিবে কোথা? | বিপদ চরম অবস্থায় পৌঁছালে প্রতিকারের আর কোন উপায় থাকে না। |
শিয়রে রাজা, কোটালের দোহাই | মনিবকে ছেড়ে অনুচরকে দোষারোপ। |
শিরঃ নাস্তি শিরোপীড়া // শিরো নাস্তি শিরোব্যাথা | মাথা নেই তার মাথাব্যাথা। |
শিরে সংক্রান্তি | বিপদ আসন্ন; আসন্ন বিপদে মহাব্যতিব্যস্ত। |
শিলা হলেই শালগ্রাম হয় না | হাত পা থাকলেই মানুষ হয় না। |
শিশুরা এমন হাজারটা প্রশ্ন করতে পারে যার উত্তর সবচেয়ে জ্ঞানীলোকও জানে না | শিশুদের মনের গতিপ্রকৃতি মনোবিজ্ঞানীরাও ধরতে পারে না। |
শিশুর বল কান্না | কান্না দিয়েই শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে |
শীতকাল তোমায় জিজ্ঞাসা করবে সারা গ্রীস্ম কি করেছিলে- জিপসি প্রবাদ | সময়ের কাজ সময়ে না করলে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। |
শীলং সর্বত্র ভূষণং | সর্বত্র চরিত্র ভূষণহিসাবে বিবেচিত হয়; সদব্যক্তিরা সর্বত্রই অলঙ্কারস্বরূপ বিবেচিত হয়। |
শুঁটকির নাওয়ের (নৌকার) বিলাই (বিড়াল) চৌকিদার | চোরকে চৌকিদারের দায়িত্ব দেওয়া; চোরকে চুরি করতে না বলা; সমতুল্য- 'শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা' |
শুঁড়ির কান নেই | মাতালের কটু কথা শুনতে শুনতে আর তত কটু বোধ হয় না। |
শুঁড়ির সাক্ষী মাতাল | দুষ্টের সহায়ক দুষ্ট লোক; স্বার্থদুষ্ট সাক্ষী; পক্ষে টেনে কথা বলা; চোরের সাক্ষী গাঁটকাটা। |
শুয়োর কথা বলতে পারলে ভগবান শুয়োরের মত দেখতে হত- গ্রীক প্রবাদ | বস্তুবাদীরা বলেন ভগবান মানুষ সৃষ্টি করেন নি মানুষ ভগবান সৃষ্টি করেছে। |
শুয়োর বড় হলেও হাতি হয় না | আপন প্রকৃতিকে কেউ অতিক্রম করতে পারে না। |
শুকনো আদার ঝাঁঝ যায় না | স্বভাব যায় না মলে; |
শুকনা কাঠ ভাঙে তবু মচকায় না | মূর্খ নিজের সর্বনাশ করে তবু গোঁ ছাড়ে না; ভাঙে তবু মচকায় না। |
শুকনো কথায় চিঁড়ে ভিজে না | শুধু মুখের কথায় কাজ হয় না, পরিশ্রম করতে হয় অথবা অর্থ ব্যয় করতে হয়; শুধু কথায় চিঁড়ে ভিজে না। |
শুকনো কলসী বাজে বেশি | মূর্খেরা বেশি কথা বলে |
শুকনো কাঠে/গাছে জল সেঁচা | নিস্ফল কাজ। |
শুকনো কাঠে ব্রহ্মশাপ // শুস্ককাষ্ঠে ব্রহ্মশাপ | কষ্টের উপর কষ্ট; মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা; অন্য-অর্থে- মৃতব্যক্তিকে কোন অভিশাপ লাগে না; যার কিছু নেই তার হারাবার কিছু নেই। |
শুকনো ঘায়ে/পাছায় আকন্দের আঠা | বুদ্ধিদোষে পুরানো বিপদ ডেকে আনা। |
শুকনো ডাঙায় আছাড় খাওয়া // শুকনো ডাঙায় ভরাডুবি | যেখানে বিপদের আশঙ্কা ছিল না সেখানে বিপদ এসে হাজির; কারণবিনা কার্য; বিনামেঘে বজ্রপাত। |
শুকনো জমে জল শুষে নেয় | অভাবের সংসারে কিছু সঞ্চয় হয় না। |
শুচি ভূমিগতং তোয়ং যত্র লেপে ন বিদ্যতে। লেপস্থানং পরিত্যজ্য অন্যস্থানে শুচি শুচিঃ।। (চাণক্য) | কর্দমশূন্যস্থানে জল যেমন ভূতলস্থ পবিত্র থাকে তেমনি নির্লিপ্তস্থানে শুচিব্যক্তির শুচিতা অবিচল থাকে। |
শুচি ভূমিগতং তোয়ং শুচির্নারী পতিব্রতা। শুচি ক্ষেমঙ্করো রাজা সন্তুষ্ট ব্রাহ্মণঃ শুচিঃ।। (চাণক্য) | ভূগর্ভস্থ জল পবিত্র, পতিব্রতা নারী পবিত্র, যে রাজা জনগনের কল্যাণসাধন করেন তিনি পবিত্র এবং যে ব্রাহ্মণ অল্পে সন্তুষ্ট সেও সুচি। |
শুধু কথায় চিঁড়ে ভেজে না // শুধু মেঘে মাটি ভেজে না | শুধু কথায় কাজ হয় না, কিছু অর্থ ব্যয় করতে হয়। |
শুধু কানাই নয়, দাদা বলাই // শুধু গৌর নয়, সঙ্গে হরি | যেখানে একজনেই করতে সমর্থ সেখানে দুজন হাজির। |
শুধু গৌর নয় গৌরহরি সমাদ্দার | হেলাফেলার নয়; খুব ওজনদার ব্যক্তি। |
শুধু টাকায় যে বড়লোক হতে চায় সে নিতান্তই গরীব | মহত্বের বিচার অর্থের মানদণ্ডে হয় না। |
শুধু বিজ্ঞতম এবং মহামূর্খরাই পরিবর্তিত হয় না- কনফুসিয়াস | উভয়ই উদ্ধত, একবগগা ও গোঁড়া হয়। |
শুধু যাওয়া আসা, শুধু স্রোতে ভাসা | জীবনমৃত্যুর খেলা; দুনিয়াদারি দখলদারি সিরিফ আনাগোনা। |
শুনরে বাপু চাষার বেটা মাটির মধ্যে বেলে যেটা; তাতে যদি বুনিস পটল তাতে তোর আশার সফল- খনা | বেলে দোঁআশ মাটিতে পটল ভাল হয়। (কৃষিগণনা ও চাষের উপযুক্ত সময়) |
শুনলে সাড়া তো নিলে পাড়া | একটু আভাস পেতেই পাড়াময় রাষ্ট্র করা |
শুভ সূচনা হলে অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হয় | পরিকল্পনাতে অর্ধেক সময় ব্যয় হয়। |
শুভংকরের ফাঁকি | আসল কথা গোপন রেখে ছলনা করা। |
শুভস্য শীঘ্রম্ অশুভস্য কালহরণম্ | শুভকাজে বিলম্ব করতে নেই; অশুভ কাজে কালহরণ করতে হয়; সমতুল্য- 'কাল কখনো আসে না', 'যেটা কাল হবে সেটা আজ নয় কেন?', 'সকালের পাখি পোকা ধরে'; বিরুদ্ধ উক্তি-'আগে গেলে বাঘে খায় পাছে গেলে সোনা পায়', 'বিলম্বে কার্যসিদ্ধি', 'যে সয় সে রয়', 'সবুরে মেওয়া ফলে' ইত্যাদি। |
শুয়ে শুয়ে লেজ নাড়া | আলস্যে সময় নষ্ট করা |
শুয়োর চেনে কচু | মন্দলোকে মন্দলোক পছন্দ করে; সমতুল্য- 'চোরে চোরে মাসতুতো ভাই'। |
শুয়োর বড় হলেও হাতি হয়না | আপন প্রকৃতিকে অতিক্রম করার সাধ্য কারো নেই। |
শুয়োর যদি কথা বলতে পারত, তবে ঈশ্বর শুয়োরের মত দেখতে হত- গ্রীক প্রবাদ | ঈশ্বর মানুষ সৃষ্টি করেন নি, মানুষই ঈশ্বর সৃষ্টি করেছে; ঈশ্বর মানুষের কল্পনা। |
শুয়োরের কপালে গঙ্গামাটির ফোঁটা | মন্দের ভালো সাজার অপচেষ্টা। |
শুয়োরের কপালে সিঁদুর লাগে না | মন্দলোক কখনো ভালো হয় না। |
শুরুতে সবকিছু কঠিন মনে হয়- চীনা প্রবাদ | অচেনাকে চিনতে কিছুটা সময় লাগে। |
শুষ্কং মাংসং স্ত্রিয়ো বৃদ্ধা বালার্কস্তরুণং দধি। প্রভাতে মৈথুনং নিদ্রা সদ্যঃ প্রাণহরাণি ষট্ ।। (চাণক্য) | শুকনো মাংস খাওয়া, বৃদ্ধা স্ত্রীর সঙ্গে মিলন, শরতের রোদ গায়ে লাগানো, সদ্য পাতা দই (যে দই জমেনি) খাওয়া, ভোরে স্ত্রীসঙ্গম, ভোরে ঘুমানো- এই ছয়টি সদ্যপ্রাণঘাতক। |
শূন্য কলসী, শুকনা না, শুকনা ডালে ডাকে কাক, যদি দেখ মাকুন্দ চোপা, এক পা না যেও বাপ- খনা | যদি যাত্রাকালে শূন্য কলসী, শুকনা নৌকা, শুকনা ডালে কাক ডাকতে দেখো কিংবা দাড়ি গোফহীন মাকুন্দ লোককে দেখতে পাও, তাহলে যাত্রা করা উচিত নয়। (যাত্রাকালীন অশুভ লক্ষ্মণ) |
শূন্য কলসি শুকনা না | ফাঁপা লোক বেশি বাজে কথা বলে। |
শূন্য কলসি বাজে বেশি | ফাঁপা লোকের আওয়াজ বেশি; সমতুল্য- ফাঁকা ঢেঁকির শব্দ বড় |
শেওড়াগাছের পেত্নী | অতি কুৎসিত রমণী |
শেওড়াতলায় আম পাওয়া গেলে আমতলায় কেন যাই | সহজ কোন কাজ উদ্ধার হ'লে কষ্ট করা নেই। |
শেখার কোন বয়স নেই // শেখার জন্য মানুষ কখনো অতিবৃদ্ধ হয় না- চীনা প্রবাদ | মানুষ যতদিন বাঁচে ততদিন শেখে। |
শেয়াকুল কাঁটা | একবার কাপড়ে জড়িয়ে গেলে সহজে ছাড়ানো যায় না; নাছোড়বান্দা লোক। |
শেয়ানা পাগল | পাগলামির ভান করে কিন্তু নিজের স্বার্থের ব্যাপারে খুব সচেতন। |
শেয়ানে ঠকলে বাপকেও বলে না | চতুর লোক নিজের ঠকার কথা অতি গোপন রাখে; বঞ্চনঞ্চাপমানঞ্চ মতিমান ন প্রকাশয়েৎ। |
শেয়ানে শেয়ানে কোলাকুলি | চতুরের সাথে চতুরালি; দুই চতুর পরস্পরকে ঠকাতে না পেরে শেষ পর্যন্ত কোলাকুলি করে। |
শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা | চোরকে চৌকিদারী করতে বলা; চোরের কাছে কোন কিছু জমা রাখতে নেই; সমতুল্য- 'শুঁটকির বাজারে বিড়াল চৌকিদার'। |
শেষ খড়কাঠি উটের পিঠ ভাঙে | সব কিছুরই একটা সীমা আছে; |
শেষ বেশ | শেষপর্যন্ত সব ভালো। |
শেষ রক্ষাই রক্ষা | সব ভাল যার শেষ ভাল। |
শেষ ভালো যার,সব ভালো তার | সব খারাপ হয়েও যার শেষ ভালো সেই সফল হলো; সমতুল্য- 'মধুরেণ সমাপয়েৎ'। |
শৈলে শৈলে ন মাণিক্যং মৌক্তিকং ন গজে গজে। সাধবো ন হি সর্বত্র চন্দনো ন বনে বনে।। (চাণক্য) | সব পর্বতে মাণিক্ মেলে না, সব হাতীতে মুক্তা হয় না, সজ্জন পুরুষ সর্বত্র দেখা পাওয়া যায় না, সব বনে চন্দন থাকে না। |
শোকো নাশয়তে ধৈর্য্যং, শোকো নাশয়তে শ্রুতম্। শোকো নাশয়তে সর্বং নাস্তি শোকসম রিপুঃ।। (চাণক্য) | শোক ধৈর্য নাশ করে; শোক বিদ্যা নাশ করে; শোক সবকিছুই নাশ করে; শোকের মত শত্রু নেই। |
শোভতে সলিলে পদ্মং শোভতে জ্ঞানতো দ্বিজ। শোভতে তপসা যুক্তো ব্রণং শূরস্য শোভতে।। | পদ্ম জলেতে শোভা পায়; জ্ঞানবান ব্রাহ্মণ শোভান্বিত হন; তপস্যা সাধন করেন যিনি তিনিও শোভাযুক্ত হন; এর যিনি বীর, অস্ত্রের দাগ তার পক্ষেই শোভনীয়। |
শোল বোয়ালের পোনা; যার যারটা তার কাছে সোনা | সব মায়ের কাছে তার সন্তান শ্রেষ্ঠ। |
শ্যাম রাখি না কুল রাখি | দুই চাপের মুখে পড়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব; কোনটা রাখবে কোনটা ছাড়বে ঠিক করতে না পারা; সমতুল্য- 'দুই নৌকায় পা'। |
শ্বেত চামর আর কোষ্টা পাট | বহির্সাদৃশ্য দেখে উৎকৃষ্ট ও নিকৃষ্টের মধ্যে তুলনা করা। |
শ্বেতহস্তী পোষা | অনাবশ্যক অতিরিক্ত খরচ বহন করে কিছু টিকিয়ে রাখা। |
শ্রদ্ধাবান লভতে জ্ঞানম। | কোন বিষয়ে শ্রদ্ধা না থাকলে সেই বিষয়ে জ্ঞানলাভ হয় না। |
শ্রদ্ধার ছাই হাত পেতে খাই // শ্রদ্ধার যা পাই হাত পেতে খাই // শ্রদ্ধার শাকান্নও ভাল, অশ্রদ্ধার পরমান্নও ভালো নয় | শ্রদ্ধার সাথে দেওয়া জিনিষ পেতে খুব ভাল লাগে। |
শ্রাবণের পুরো ভাদ্রের বার, এর মধ্যে যত পার- খনা | সম্পূর্ণ শ্রাবণ মাস ও ভাদ্র মাসের বারো তারিখ পর্যন্ত ধান রোপণের জন্য প্রশস্ত সময়। (ধান রোপণের সময়গণনা) |
শ্রেয়াংসি বহুবিঘ্নানি | ভাল কাজে বহু বাধাবিঘ্ন ঘটে। |
শ্রোতব্যঃ শ্রুতিবাক্যেভ্যো মন্তব্যশ্চোপপত্তিভিঃ | শ্রুতি উক্ত সকল কথা শুনবে কিন্তু প্রমাণসহ সব গ্রহণ করবে। |
শ্রৌত্রং শ্রুতেনৈব ন কুণ্ডলেন দানেন পাণির্ন তু কঙ্কণেন। বিভাতি কায়ঃ করুণাপরাণাং পরোপকারৈর্ন তু চন্দনেন।। (চাণক্য) | জ্ঞানদ্বারা কান শোভিত হয়, কুণ্ডলে নয়; দানদ্বারা হাত শোভিত হয়, কঙ্কণে নয়; পরোপকারেই দয়ালু ব্যক্তির দেহ শোভিত হয়, চন্দনে নয়। |
ষ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
ষটকর্ণে মন্ত্রভেদ // ষট কর্ণো ভিদ্যতে মন্ত্রঃ | মন্ত্রণার কথা তৃতীয়ব্যক্তি জানলেই সেটা আর গোপন থাকে না; মন্ত্রণা শুধু রাজা আর মন্ত্রীর মাঝে হওয়া উচিৎ। |
ষড়রিপু জয়ী বিশ্বজয়ী | শরীরের ছয় রিপুকে জয় করতে পারলে জগৎ জয় করা যায়। |
ষন্ডা সবসময় কাপুরুষ | ষণ্ডা সবসময় দুর্বলকে ভয় দেখায় কারণ সে সবলের সাথে লড়তে ভয় পায়। |
ষণ্ডামার্কা গুরু | গোঁয়ার গোবিন্দের মত গুরু। |
ষত্ব-ণত্ব জ্ঞান নেই | কোন বিষয়ে কাণ্ডজ্ঞানের অভাব। |
ষরষের মধ্যে ভূত | ওষুধ/শুদ্ধির মধ্যে ভেজাল; দলের মধ্যে অনিষ্টকারী ব্যক্তি। |
ষাঁড়ের গোবর | ষাঁড়ের গোবরে মানুষ ব্যবহার করে না এই অর্থে অকর্মণ্য, অপদার্থ লোক। |
ষাঁড়ের শত্রু বাঘে খায় | এক শত্রু অন্য শত্রুদ্বারা বিনষ্ট; যা শত্রু পরে পরে। |
ষেটের বাছা ষষ্টীদাস | সু-অর্থে মাষষ্টীর অনুগৃহীত পুরুষ; কু-অর্থে- অপদার্থ ব্যক্তি। |
ষোল আনা বাজিয়ে নেওয়া | সবদিক দিয়ে যাচাই করা। |
ষোল আনা উসুল/লাভ | পুরোটাই আদায়/লাভ। |
ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে | বিদ্রুপে- সব বদগুণের অধিকারী হয়েছে।
ষোল চাষে মূলা, তার আধা তুলা; তার আধা ধান, বিনা চাষে পান- খনা মূলার জন্য ষোলটি চাষ, তুলার জন্য আটটি চাষ এবং ধানের জন্য চারট চাষের প্রয়োজন হওয়। পানের জন্য কোন চাষের প্রয়োজন হয় না। (শস্যাদি চাষপ্রণালী) |
স
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
স’য়ে থাকলে র’য়ে যায় | ধৈর্য ধরে থাকলে শেষে সুফল পাওয়া পায়, অধৈর্য হ'লে সব নষ্ট; যে কষ্ট করে, সে সুখভোগ করে; সবুরে মেওয়া ফলে। |
সংকল্পের কথা প্রকাশ করা উচিৎ নয় | অভিপ্রায় অন্য জানলে কাজ বিনষ্ট হয়। |
সংসর্গজা দোষগুণা ভবন্তি | সঙ্গের কারণেই দোষগুণ হয়; সৎসঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। |
সংসার অনিত্য; তুমি কার, কে তোমার? | ক্ষণস্থায়ী সংসারে কেউ কারও সঙ্গে আসেনি, কারও সঙ্গে যাবে না; দারা, পুত্র, পরিবার কেউ নয় আপনার। |
সংসার আনন্দময়; যার মনে যা লয় | সুখদুঃখে জড়িয়ে জীবন; এর মধ্যেই আনন্দ খুঁজে নিতে হয়; যার মনে আনন্দ আছে, সে আনন্দ খুঁজে পায়; যার মনে দুঃখ আছে, সে দুঃখে ডুবে থাকে। |
সংসার উদ্যানে পুষ্প অপেক্ষা কীট বেশি | সমাজে মন্দলোকের ভীড় বেশি। |
সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে | ঘরণী সুন্দর হ'লে সংসারে সুখের সন্ধান পাওয়া যায়। |
সকল চুলে চামর হয় না // সকল বাঁশেতে বাঁশি হয় না | চমরীগাইয়ের চুলে চামর হয়; তরলাবাঁশ থেকে বাঁশি হয়; সবার দ্বারা সব কাজ হয় না। |
সকল জীবকে নিজের মত যিনি দর্শন করেন, তিনিই প্রকৃত পন্ডিত | আত্মবৎ সর্বভূতেষু যঃ প্শ্যতি স পন্ডিতঃ- চাণক্য |
সকলকে খুশি করতে চাইলে কাউকেই খুশি করা যায় না | বিভিন্ন প্রকৃতির কারণে সবাইকে একসাথে খুশি করা যায় না। |
সকলকে পারা যায়, পায়ে-পড়াকে পারা যায় না। | অতি বিনীতভাব বা তোষামোদীভাব নিন্দনীয়; অন্য অর্থে- সবাইকে শাসন করা যায়, কিন্তু অতি বিনীতকে শাসন করা যায় না। |
সকলে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে না | সবাই একসঙ্গে শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার হয় না। |
সকলের বন্ধু কারো বন্ধু নয়- চীনা প্রবাদ | সবাইকে একসাথে খুশি করা যায় না। |
সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে | পরস্পরে মিলেমিশে থাকাটাই আসল থাকা; সকলে মিলে থাকাতেই আসল সুখ। |
সকাল দেখলে দিন কেমন যাবে জানা যায় | সকালের আকাশ দিনের খোঁজ দেয়; সমতুল্য- 'উঠন্তি মূলা পত্তনেই চেনা যায়'; বিরুদ্ধ উক্তি- 'মন্দ সকাল সুন্দর সকালে পরিণত হতে পারে' |
সকালবেলার আমির রে ভাই ফকীর সন্ধ্যাবেলা'- নজরুল | চিরদিন কারো সমান যায় না, আজ আমির তো কাল ফকির; সমতুল্য- 'নদীর কুল ভাঙ্গে কুল গড়ে এইতো নদীর খেলা'; 'চিরদিন কারো সমান নাহি যায়'। |
সকালে শোয়, সকালে ওঠে তার কড়ি বৈদ্য না লোটে- খনা | বেশি রাত না করে শোয়া এবং ভোরে ওঠা স্বাস্থ্যের পক্ষে মঙ্গল। |
সকালে পিঁয়াজ খেলে বিকেলে ঢেঁকুর ওঠে | বাজে কাজ করলে বাজে প্রতিক্রিয়া হবেই। |
সকালের পাখি পোকা ধরে | যে প্রথমে থাকে সে বেশি সুযোগ পায়; সমতুল্য-'কাল কখনো আসে না', 'যেটা কাল হবে সেটা আজ নয় কেন?', 'শুভস্য শীঘ্রম, অশুভস্য কালহরণম' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'আগে গেলে বাঘে খায়, পিছে গেলে টাকা/সোনা পায়', 'যে সয় সে রয়', 'সবুরে মেওয়া ফলে' ইত্যাদি। |
সকৃদুক্তগৃহীতার্থো লঘুহস্তো জিতাক্ষরঃ। সর্বশাস্ত্রসমালোকী প্রকৃষ্টো নাম লেখকঃ।। (চাণক্য) | যিনি কোন কথা একবার শুনলেই তার অর্থ অনুধাবন করতে সক্ষম, যিনি দ্রুত লিখতে পারেন, শব্দরাশি যার বশীভূত, সকল শাস্ত্র যার অধিগত- তিনিই শ্রেষ্ঠ লেখক বলে পরিগণিত হন। |
সকৃদ্ দুষ্টঞ্চ মিত্রং যঃ পুনঃ সন্ধাতুমিচ্ছতি। স মৃত্যুমুপগৃহ্নাতি গর্ভমশ্বতরী যথা।। (চাণক্য) | যে ব্যক্তি একবার বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে এমন বন্ধুর সঙ্গে পুনরায় বন্ধুত্ব কামনা করে সে প্রকৃতপক্ষে কাঁকুড়লতার গর্ভধারণের মতো নিজের মৃত্যু ডেকে আনে। |
সক্ষম ব্যক্তির কাছে কোন কাজই কঠিন নয় | অদম্য ইচ্ছা থাক'লে সফলতা আসবেই। |
সঙ্কীর্ণ মনের লোকেরা আত্মতুষ্টিতে ভোগে | সঙ্কীর্ণমনারা শুধু নিজের কথাই ্রবাদ |
সঙ্গ মানুষ চেনায় // সঙ্গী লোকের স্বভাব জানায় | ভাললোকে ভালসঙ্গ খোঁজে, মন্দলোকে মন্দসঙ্গ খোঁজে; সুজনের সঙ্গী সুজন হয় এবং কুজনের সঙ্গী কুজন হয় |
সঙ্গদোষে কিনা হয়, ছুঁচো ছুলে ছুঁচো হয় | অসতের সঙ্গী অসৎ বলে পরিচিত হয়। |
সঙ্গদোষে লোহা ভাসে | চরিত্রগঠনে সঙ্গ প্রভাব ফেলে; লোহা জলে ডুবে যায়, কিন্তু কাঠের সঙ্গে থাকলে লোহা জলে ভাসে; সৎসঙ্গে স্বর্গবাস অসৎসঙ্গে সর্বনাশ। |
সঙ্গী থেকে শ্রেয় হওয়ার মধ্যে কোন মহত্ব নেই, নিজের অতীত থেকে নিজের বর্তমান শ্রেয় হওয়াই মহত্ব- তুর্কী প্রবাদ | নিজেকে উন্নত করার লক্ষ্যই হল মহৎ কাজ। |
সজনে শাক সকল শাকের হেলা, খোঁজ তার কেবল টানাটানির বেলা | শুধু প্রয়োজনের সময় নগণ্যের খোঁজ পড়ে; ছাই ফেলতে ভাঙ্গা কুলো। |
সজনে শাকে নুন জোটে না, মটরডালে ঘি | ক্ষমতার অতিরিক্ত প্রত্যাশা করা অনুচিত; আদিখ্যেতা বা বাড়াবাড়ি নিন্দনীয়। |
সঞ্চয়ী নাবসীদতি | সঞ্চয়কারী কষ্ট পায় না। |
সৎকর্ম বৃথা যায় না- ঈশপ | সৎকর্ম যত ছোটই হোক, তা কখনও বৃথা যায় না; একদিন-না-একদিন তার ফল পাওয়া যায়। |
সৎকাজে বহু বাধাবিঘ্ন আছে | মন্দের দিক থেকে সৎকাজে নানা বাধা আসে। |
সৎপুত্র কুলদীপকঃ | সুসন্তান কুল আলো করে। |
সৎলোককে অবিশ্বাস করে ঠকার চেয়ে অসৎলোককে বিশ্বাস করে ঠকা অনেক ভাল | সৎলোককে অবিশ্বাস করে ঠকার সীমা-পরিসীমা হয় না। |
সৎলোকের শত শত্রু থাকে | মন্দের আধিক্য সবসময় সতের শত্রুতা করে যায়। |
সৎসঙ্গে স্বর্গবাস অসৎসঙ্গে সর্বনাশ | সঙ্গ মানুষ ভাল করে সঙ্গ মানুষকে মন্দও করে। |
সততা বেশি থাকলে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয় | স্বার্থের কারণে জগতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। |
সতর্ক কুকুর অকারণ চিল্লায় না | কাজের লোক অকারণে কোন কাজ করে না। |
সতীনের বাটিতে গু গুলে খাওয়া | নিজের অধিক ক্ষতি হবে জেনেও কোন কাজে অপরের ক্ষতি করা; সমতুল্য- 'নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা'। |
সত্য কখনো গোপন/চাপা থাকে না | ধর্ম এমনই এক কৌশল যে, কোনভাবে কেউ সত্য ঢাকতে পারে না; ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। |
সত্য পক্ষে থাকলে তুমি যেকোন স্থানে যেতে পারো; সত্য পক্ষে না থাকলে তুমি এক পাও এগুতে পারবে না- চীনা প্রবাদ | সত্যের জয় সর্বত্র। |
সত্যকথার ডালপালা নেই | বাড়িয়ে বা কমিয়ে সত্যকথা বলা যায় না; সত্যকথা সাজানো যায় না। |
সত্যবাদীর বুদ্ধি কম | শিশু ও অজ্ঞরা সত্যকথা বলে; অল্পবুদ্ধির কারণে তারা মিথ্যাকথার জাল বুনতে পারে না। |
সত্যং ব্রুয়াৎ প্রিয়ং ব্রুয়াৎ, ন ব্রুয়াৎ সত্যমপ্রিয়ম। প্রিয়ঞ্চ নানৃতং ব্রুয়াদেষ ধর্মঃ সনাতনঃ।। (চাণক্য) | সত্য কথা বলা উচিৎ; প্রিয়কথা বলা উচিৎ; অপ্রিয় সত্যকথা বা প্রিয় অসত্য কথা বলা উচিৎ নয়; এটাই সনাতন ধর্ম। |
সত্যম্ পরম্ ধীমহি // সত্যম্ পরমোধর্ম | সত্যই চুড়ান্ত, সত্যকে পরম বলে ধারণ করা, ধ্যান করা উচিত। |
সত্যম্ শিবম্ সুন্দরম্ | সত্য মঙ্গলময় ও সুন্দর; বিরুদ্ধ উক্তি- সত্যম্ শিবম্ হতে পারে কিন্তু সুন্দরম্ কখনোই নয়্, প্রয়োজনমত রঙ নয়া লাগালে সত্যম্ 'শুস্কং কাষ্ঠং' থেকে যায়, 'নিরস তরুবর' হয় না। |
সত্যমেব জয়তে // সত্যের জয় সর্বত্র | সত্যকথা বললে কোন বিপদে পড়তে হয় না। |
সত্যের দ্বারে আগড় নাই | সত্যের কোন আড়াল নেই; শত চেষ্টাতেও সত্য চাপা রাখা যায় না; ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। |
সদর বন্ধ, খিড়কি ফাঁক // সদর দিয়ে মশা/মাছি গলে না, খিড়কি দিয়ে হাতি গলে // সদর দিয়ে সুঁচ ঢোকে না, খিড়কি দিয়ে শাবল ঢোকে | নিয়ম-কানুনের বাহ্যিক কড়াকড়ি আছে এবং নিয়ম-কানুনের মধ্যে বিরাট ফাঁকও আছে; বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো। |
সদ্ভিস্তু লীলয়া প্রোক্তং শিলালিখিতলমক্ষরম্। অসদ্ভিঃ শপথেনাপি জলে লিখিতমক্ষরম্।। (চাণক্য) | সৎ ব্যক্তিদ্বারা কথিত বাক্য যেন শিলালিপির মত চিরস্থায়ী; অপরপক্ষে অসৎ ব্যক্তি যদি শপথ করেও কথা বলে সেটা জলের মধ্যে লেখা অক্ষরের মতই ক্ষণিকের মধ্যেই মুছে যায়। |
সদ্যোমাংসং নবান্নঞ্চ বালা স্ত্রী ক্ষীরভোজনম্। ঘৃতমুষ্ণোদকঞ্চৈ ব সদ্যঃ প্রাণকরাণি ষট্।। (চাণক্য) | সদ্য কাটা মাংস আহার, সদ্য প্রস্তুত অন্ন গ্রহণ, যুবতী স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস, দুগ্ধপান, ঘৃতসেবন এবং ঈষৎ উষ্ণ জল পান- এই ছয়টি সদ্য সদ্যই প্রাণবর্ধক। |
সন্তোষো নন্দনং বনম | সন্তোষ নন্দনবনের মত সুখকর। |
সন্দেশের খোসা ফেলে খাওয়া | ঐশ্বর্যের গর্ব; মনের খঁতখুঁতানি। |
সন্ধ্যা হলে সকলে দিনের গান গায় | অতীত স্মৃতির রোমন্থন করা; স্মৃতি সততঃ সুখের। |
সন্তোষের মত পরম সুখ নেই | অর্থ স্পষ্ট; ন সন্তোষাৎ পরম সুখম্। |
সন্ন্যাসীর অল্পছিদ্র- গায় সর্বজন, শুভ্রবস্ত্রে মসীবিন্দু দেখায় যেমন | সন্ন্যাসীর অল্পদোষ সকলের নজর কাড়ে। |
সন্ন্যাসী চুরি করলে বোঁচকার দোষ | সমাজের উচ্চশ্রেণি অন্যায় করলে সে অন্যায় অন্যের ঘাড়ে চাপে। |
সফরী ফরফরায়তে | পুঁটিমাছ অল্পজলে নেচে বেড়ায়; অল্পবিদ্যার জাহির বেশি। |
সব কাজ ছোট আকারে শুরু হয়, শুধু পাপ ছাড়া | কোন পাপ লঘু নয়। |
সব কাজের কেষ্টা কোন কাজেই কাজের নয় // সবজান্তা সব বিষয়ের ওস্তাদ নয় | সব কাজই একটু একটু জানে, তবে কোন কাজেই দক্ষ নয়। |
সব কায়দায় ফয়দা নাই | চালাকিদ্বারা সব কাজ সিদ্ধ হয় না। |
সবকিছু জানার চেষ্টা করলে কিছুই জানা যায় না | ভাসা ভাসা জ্ঞান (পল্লবগ্রাহী পাণ্ডিত্য) কোন জ্ঞান নয়। |
সবকিছু জানা আবশ্যক নয়, কিন্তু যেটা জানছো তার সব জানা আবশ্যক- আরবী প্রবাদ | ভাসা ভাসা জ্ঞানের কোন গুরত্ব নেই। |
সবকিছু জানার প্রয়োজন নেই, শুধু জানো জানার বিষয় কোথায় জানা যাবে- আইনস্টাইন | ক্ষুদ্রমস্তিস্ক বাজে তথ্যে ভর্তি করার কোন অর্থ হয় না। |
সবকিছু পরিবর্তিত হয়, আমরা সাথে সাথে পরিবর্তিত হই- চীনা প্রবাদ | সময়ের সাথে সব কিছু পরিবর্তিত হয়। |
সবকিছু সবসময় হিসাবমত হয় না- আরবী প্রবাদ | সব পরিকল্পনা সফল হয় না। |
সবকিছুরই সৌন্দর্য আছে, কিন্তু সবাই সেটা দেখতে পায় না- কনফুসিয়াস | মন সুন্দর হলে সবকিছু সুন্দর। |
সব গাধা কান নাড়ে // সব রসুনের একই কোয়া | সব সমদোষে দুষ্ট; সবাই এক গোয়ালের গরু। |
সব জন্তু মোট বয়, ধরা পড়ে গাধা // সব পাখি মাছ ধরে নাম কাড়ে মাছরাঙা // সব মাছ গু খায়, দোষের ভাগী শোল | সকলেই দোষ করে কিন্তু একজনই দোষী সাব্যস্ত হয়; সব ব্যাটাকে ছেড়ে দিয়ে বেড়ে ব্যাটাকে ধর। |
সব থেকে কঠিন কাজ হ'ল অন্ধকার ঘরে কালোবিড়াল খোঁজা, বিশেষভবে যখন সেখানে কোন বিড়াল নেই- কফুসিয়াস | অসম্ভবের পিছনে ছোটা বৃথা।ব |
সব থেকে বেশি মজাদার লোক সব থেকে বেশি বিষণ্ণ হয়- কফুসিয়াস | হাসির আড়ালে দুঃখ লুকিয়ে রাখে। |
সব নুড়ি শালগ্রাম নয় | সব মানুষ দিয়ে সব কাজ হয় না। |
সব নোড়াই শালগ্রাম হলে হলুদবাটি কিসে? | সবাই সাধুসন্যাসী হয়ে গেলে সংসার গড়ার লোক থাকবে না। |
সব বিড়ালকে অন্ধকারে ধূসর দেখায় | বিষয় অস্পষ্ট হ'লে অনুমান করতে ভুল হয়। |
সব বিষয়ই সহজ হওয়ার আগে কঠিন থাকে- চীনা প্রবাদ | জানার আগে না-জানা বিষয় সবসময় কঠিন মনে হয়। |
সব ব্যাটাকে ছেড়ে দিয়ে বেড়ে ব্যাটাকে ধর | সবাইকে ছেড়ে দিয়ে একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা; যেন সেই-ই যত নষ্টের গোড়া। |
সব ভাল ওষুধের স্বাদ তেতো হয়- চীনা প্রবাদ | পাঁচন মিষ্টি হয় না। |
সব ভাল যার শেষ ভাল- ইংরাজী প্রবাদ | শেষ রক্ষাই আসল রক্ষা। |
সব মানুষ অভিন্ন কেবল তাদের চালচলন ভিন্ন ভিন্ন- কনফুসিয়াস | '(স্বভাবে)সব মানুষ ভিন্ন ভিন্ন অন্তিমে তারা একাঙ্গী'। |
সব শিয়ালের এক রা | কুকাজে সবার ঐক্যমত। |
সব শুক্তিতে মুক্তা মিলে না // সব হাতীর মোতি নেই | মহার্ঘ বস্তু অল্পই হয়। |
সবাই নিজের কোলে ঝোল টানে | সবাই নিজ নিজ স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করে। |
সবার প্রতি এমন ব্যবহার করো যেন তুমি একজন অতিথি বরণ করছো- চীনা প্রবাদ | সকলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। |
সবার ব্যবসা, কারো ব্যবসা নয় | সবার দায়িত্ব থাকলে কেউ দায়িত্ব পালন করে না; একে অপরের ঘাড়ে ঠেলে; ভাগের মা গঙ্গা পায় না। |
সবার সাথে মানিয়ে চলার যোগ্যতা হল সভ্যতা/সহনশীলতা | সভ্যমানুষ অপরের প্রতি সহনশীল হয়; বিরুদ্ধ উক্তি- সবার সাথে যে তাল মিলিয়ে চলে সে ব্যক্তিত্বহীন। |
সবারে বাসরে ভালো নইলে মনের কালি ঘুচবে নারে- অতুলপ্রসাদের গান | ভালোবাসায় সবাইকে আপন কয়ড়া যায়। |
সবুরে মেওয়া ফলে | ধৈর্য ধরে থাকলে উত্তম ফল পাওয়া যায়; সমতুল্য- 'আগে গেলে বাঘে খায়', 'পিছে গেলে সোনা পায়', 'যে সয় সে রয়' ইত্যাদি; বিরুদ্ধ উক্তি- 'কাল কখনো আসে না', 'শুভস্য শীঘ্রম অশুভস্য কালহরণম', 'সকালের পাখি পোকা ধরে' ইত্যাদি। |
সবৈ সহায়ক সবলকে কৌ ন নিবল্ সহায়। পবন জগাওতে আগকো দীপহিঁ দেত বুজায়।। (হিন্দি প্রবাদ) | সবাই সবলের সহায়, সুর্বলের কেউ নয়; বাতাস সবল আগুনকে সাহায্য করে এবং দুর্বল দীপকে নিবিয়ে দেয়; নরম মাটিতে বিড়াল আঁচড়ায়', শক্তের সকলেই ভক্ত। |
সময় কারো সঙ্গী নয় | সময় কারো হাত ধরে চলে না। |
সময় ও স্রোত কারো জন্যে অপেক্ষা করে না // সময় বহিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায় | কারও নির্দেশে নয়, সময় মহাকালের নিয়মে চলে। |
সময় ক্ষত শুকায় | সময়ের অতিক্রমণে মানুষ সব ভুলে যায়। |
সময় গুণে আপন পর, খোঁড়া গাধার ঘোড়ার দর | সময়ের পরিবর্তনে অনেক কিছুর ওলটপালট হয়- পর আপন হয়, আপন পর হয়, অকেজো গাধাও ঘোড়ার দামে বিক্রি হয়। |
সময় সোনার সমান, কিন্তু তুমি সোনা দিয়ে সময় কিনতে পারো না- চীনা প্রবাদ | সময় পণ্য নয়। |
সময়ে না দেয় চাষ তার দুঃখ বারোমাস- খনা | সময়ে চাষ না করলে ভাল ফসল ফলে না; সুতরাং সেই চাষীর দুঃখ অবশ্যম্ভাবী। |
সময়ে সব বন্ধু হয় অসময়ে কেউ নয় // সুসময়ে অনেকেই বন্ধু বটে হয় অসময়ে হায় হায় কেহ কারো নয় | দুঃখের দিনগুলিতে বন্ধুত্বের যাচাই হয়; সুদিনের বন্ধুরা স্বার্থপর হয়; দুর্দিনে তারা সরে পড়ে। |
সময়ের এককথা অসময়ের শত // সময়ের একফোঁড় অসময়ের দশফোঁড় | সময়ের কাজ সময়ে না করলে কাজের ঝক্কি বা পরিমাণ বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। |
সমস্তশস্ত্রশাস্ত্রজ্ঞো বাহনেষু জিতশ্রমঃ। শৌর্যবীর্যগুণোপেতঃ সেনাধ্যক্ষো বিধীয়তে।। (চাণক্য) | যিনি সবলপ্রকার অস্ত্রশস্ত্র এবং শাস্ত্রে নিষ্ণাত বা অভিজ্ঞ, বহুকাল রথ, অশ্ব প্রভৃতি আরোহণ করেও যিনি ক্লান্ত হন না, যিনি সাহস, পরাক্রম প্রভৃতি গুণযুক্ত- তিনিই সেনাপতি হওয়ার যোগ্য। |
সমস্যা ভাগাভাগি করলে সমস্যার অর্ধেক সমাধান হয় | দশের লাঠি একের বোঝা; দশে মিলে কাজ করলে সবাই সমস্যার অংশভাগী হয়। |
সমানে সমানে দোস্তি, সমানে সমানে কুস্তি | মিত্রতাই হোক আর শত্রুতাই হোক দ্বন্দ্ব সমানে সমানে হয়। |
সমুদ্রাবরণা ভূমিঃ প্রাকারাবরণং গৃহম্। নরেন্দ্রাবরণা দেশাশ্চরিত্রাবরণাঃ স্ত্রিয়ঃ।। (চাণক্য) | পৃথিবীর আবরণ সমুদ্র, গৃহের আবরণ প্রাচীর, দেশের আবরণ রাজা আর স্ত্রীলোকের আবরণ চরিত্র। |
সমুদ্রে বাস শিশিরে ভয় // সমুদ্রে যার বাস শিশিরে কি তার ভয় | যে নানা বিষম বিপদে জড়িয়ে আছে সে কোন সামান্য ভয়ে ভীত হয় না। |
সমুদ্রের জল বাড়েও না কমেও না | বিশাল আকারের অত্যল্প পরিবর্তনে কিছু যায় আসে না। |
সম্পদ অর্জন করা সহজ, রক্ষা করা কঠিন | যে পরিশ্রমে সম্পদ অর্জিত হয় সেই পরিশ্রমে সম্পদ রক্ষিত হয় না। |
সম্পদ আসে কচ্চপের মত আর যায় হরিণের মত- আরবী প্রবাদ | সম্পদ অর্জিত হয় তিলে তিলে; সম্পদ ক্ষয় হয় দ্রুতলয়ে। |
সম্মুখ দিয়ে সূঁ গলে না পিছন দিয়ে হাতী গলে | সদর দিয়ে মাছি গলে না, খিড়কি দিয়ে হাতি গলে- দ্রষ্টব্য |
সম্পূর্ণকুম্ভো ন করোতি শব্দম্ | ভরা কলসি বাজে না। |
সম্মান ও স্বার্থ এক থলিতে থাকে না | দুই বিষয় সমগোত্রীয় বা সমধর্মী নয়। |
সর্পঃ ক্রূরঃ খলঃ ক্রূরঃ সর্পাৎ ক্রূরতরঃ খলঃ। মন্ত্রৌষধিবশঃ সর্পঃ খলঃ কেন নিবার্যতে।। (চাণক্য) | সাপ ক্রূর, খলও তাই; সাপ থেকে খল বেশি ক্রূর; ওষধিতে সাপ বশ করা যায়; খল দমনের ঊর্ধ্বে (সর্প ও খল ব্যক্তিদের মধ্যে পার্থক্য) |
সর্ব অঙ্গে ব্যথা ঔষধ দেবো কোথা? | সর্বত্র গলদ থাকলে দূর করা যায় না; যার হাজার দোষ, তাকে সংশোধন করা যায় না। |
সর্ব্বঃ কান্তম আত্মীয়ং পশ্যতি | সবাইকে আত্মীয় দেখি; সমতুল্য- 'আত্মবৎ সর্বভূতেষু য পশ্যতি সে পণ্ডিত', 'বসুধৈব কুটুম্বকম' ইত্যাদি। |
সর্বঘটে কাঁঠালী কলা | সবকাজে উপযুক্ত ব্যক্তি হিসাবে বিবেচিত; সমতুল্য- 'ঝালে, ঝোলে, অম্বলে'। |
সর্বদেবময়োহতিথি | অতিথি দেবতার বা গুরুর মতই পূজনীয়। |
সর্ব্বম অত্যন্তম গর্হিতম্ | বেশি ভালো, ভালো নয়; বেশি তাড়াতাড়ি করলে বেশি এগুনো যায় না; সমতুল্য- 'কষতে কষতে বাঁধন ছেঁড়ে'; 'ভাল নয় অতিশয়'। |
সর্ব্বং পরবশং দুঃখং সর্ব্বং আত্মবশং সুখং | যা কিছু পরবশে আছে তা দুঃখজনক;যা কিছু পরবশে আছে তা সুখজনক। |
সর্ব্বঃ স্বার্থং সমীহতে | সকলেই নিজের স্বার্থ খোঁজে বা দেখে। |
সর্ব্বোনাশো সমুৎপন্নে অর্ধং ত্যজতি পণ্ডিতঃ | ঘোর বিপদাপন্ন হলে পণ্ডিত ব্যক্তি অর্ধেক ত্যাগ করেন। |
সর্ব্বেন্দ্রিয়াণি সংযম্য বকবৎ পণ্ডিতো জনঃ। কালদেশোপপন্নানি সর্বকার্যাণি সাধয়েৎ।। (চাণক্য) | পণ্ডিত ব্যক্তি বকের মতো সমস্ত ইন্দ্রিয় সংযত করে (অর্থাৎ বশীভূত রেখে) স্থান-কাল-পাত্র বিচারপূর্বক যথাযথ কাজ করবেন- বকের কাছ থেকে ইন্দ্রিয় সংযত রাখার এই একটি শিক্ষণীয়ের কথা পণ্ডিতেরা বলে থাকেন। |
সলতে কাটা হ'লে লম্ফের আলো উজ্জ্বলতর হয়; সত্যের কাটাছেঁড়া হলে সত্য স্পষ্টতর হয়- চীনা প্রবাদ। | বিশ্লেষিত হ'লে সত্য আরও উদ্ভাসিত হয়। |
সসর্পে চ গৃহবাসঃ মৃত্যুরেব না সংশয়ঃ | সাপ নিয়ে ঘরে বাস করলে মৃত্যু সুনিশ্চিত। |
সস্তায় বস্তা ভরে | বাজে মালের প্রাচুর্য বেশি; সুলভ মূল্যে প্রচুর জিনিষপত্র কেনা যায়। |
সস্তার তিন অবস্থা // সস্তার জিনিষ মাঙ্গা পড়ে | অল্পমূল্যের জিনিস খারাপ হয়; বার বার কেনার জন্য অর্থনাশ হয়; বিরুদ্ধ উক্তি- সস্তার মাটি কেনাও ভাল। |
সহজ হওয়ার আগে সব বিষয়ই কঠিন থাকে | জানার আগে না-জানা বিষয় দুর্বোধ্য মনে হয়। |
সহনশীলতা সভ্যতার মাপকাটি | সভ্য মানুষ বিনম্র হয়; যে মানুষ যত বেশি বিনীত সে তত বেশি ভদ্র। |
সহানুভূতি খাদ্য যোগায় না, কিন্তু ক্ষুধাকে বেশি সহনীয় করে- ইহুদী প্রবাদ | সহানুভূতি মানুষকে সহ্য করতে শক্তি যোগায়। |
সহায়ঃ বলবত্তর | যত ক্ষুদ্রই হোক, যেকোন সাহায্যে শক্তিবৃদ্ধি হয়; উদাহরণস্বরূপ তুষহীন তণ্ডুলের অঙ্কুরোদ্গম হয় না। |
সাঁচ কো আঁচ নহী- হিন্দি প্রবাদ | সৎলোকের ভয় পাওয়ার কিছু নেই; সৎলোকের কোন ক্ষতি হয় না। |
সাঁতার দিয়ে সিন্ধু পার | অল্প প্রচেষ্টায় বিরাট কাজ করা। |
সাজতে গুজতে দোল ফুরালো | আয়োজন করতে করতে কাজ নষ্ট। |
সাজতে গুজতে ফিঙে রাজা | গল্পে আছে- বিধাতা বলেছিলেন- কাল প্রভাতে যে পাখি সেজেগুছে আমার কাছে প্রথম উপস্থিত হ'বে তাকে রাজা করে দেব পাখির দল ভোর থেকে নানারঙে সাজতে বসে যায়। ফিঙে সারা গায়ে কালি ঢেলে সাত তাড়াতাড়ি বিধাতার কাছে পৌঁছে যায়; বিধাতা তাকেই রাজা ঘোষণা করেন; আড়ম্বরহীন কাজ আদরণীয়। |
সাগরও শুকায় না পাপও লুকায় না | সাগর যেমন কোনদিন শুকাবে না, পাপও তেমনি কোনদিন লুকনো যাবে না। |
সাজার কাজ কেউ করে না | ভাগের কাজ কেউ করে না, নিজের দায় একে অন্যের ঘাড়ে ঠেলে; ভাগের মা গঙ্গা পায় না। |
সাত কাণ্ড রামায়ণ পড়ে সীতা কার বাপ/ভার্যা/মাসী | সব জেনেশুনে ইচ্ছা করে কিছু না জানার ভান করা। |
সাত কুঁড়ের/পাগলের ঘর, খোদা/গোঁসাই রক্ষা কর | সংসারের সবাই অকর্মণ্য; ঈশ্বর ছাড়া এদের বাঁচাবার কেউ নেই। |
সাত খুন মাপ | প্রিয়লোকের কোন দোষ খুঁজে না পাওয়া। |
সাত গেঁয়ের কাছে মামদাবাজী | চতুর হিন্দু ভূতের কাছে সোজা-সরল মুসলমান ভূত পেরে ওঠে না; উপর-চালাকের সাথে চালাকি করে পারা যায় না। |
সাত ঘাটের কড়ি | অনেক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি। |
সাত ঘাটের জল এক ঘাটে করা | নানাধরণের লোককে একত্রিত করা; নানাকৌশল প্রয়োগ করে কার্যসিদ্ধি করা। |
সাত ঘাটের জল খাওয়া | নানা অভিজ্ঞতা অর্জন করা; নানাস্থানে চাকরি করা; নাজেহাল হওয়া ইত্যাদি। |
সাত ঘাটের জল খাওয়ানো | নানাস্থানে ছুটিয়ে বা নানাকাজে ব্যস্ত রেখে কাউকে নাস্তানাবুদ করা। |
সাত চড়ে মশা মারা | বিরাট হইচই করে ছোট্ট কাজ করা; সামান্য কাজে অত্যন্ত বেগ পাওয়া। |
সাত চড়ে রা কাড়ে/বেড়োয় না | অত্যন্ত সাদাসিধা নিরীহপ্রকৃতির লোক। |
সাত চোঙার বুদ্ধি এক চোঙায় ঢোকাবে | সবার বুদ্ধি নিয়ে কোন কাজ করা। |
সাত নকলে আসল খাস্তা/ ভেস্তা | ক্রমাগত নকল হ'তে হ'তে আসল আর নকলের সাদৃশ্য হারিয়ে যায় বা আসল নষ্ট হয়ে যায়। |
সাত পাঁচ ভেবে কাজ করা | অনেক ভেবেচিন্তে ধীরে সুস্থে কাজ করা। |
সাত মণ তেলও পুড়বে না রাধাও নাঁচবে না | যে অসম্ভব ঘটনার প্রত্যাশায় বসে থাকা তা কোনদিন পূর্ণ হবে না। |
সাত রাজার ধন এক মাণিকর | পরম আদরের প্রিয়পাত্র। |
সাত সমুদ্র তেরো নদীর পার | বহু দূরদেশে অবস্থিত। |
সাত সতীনের ঘর খোদা রক্ষা কর | সাত সতীনের ঝগড়ায় সংসারে চরম বিশৃঙ্খললে' |
সাতেও হুঁ পাঁচেও হুঁ | ন্যায় অন্যায় বিচার না করে সব কথাতেই সমর্থন করা। |
সাদা মনে কালি দেওয়া | নানা কুমন্ত্রণা দিয়ে সরল মনকে কুটিল করে তোলা। |
সাদা মুল্লুক জাদা | রঙেদের মধ্যে সাদা শ্রেষ্ঠ। |
সাদাকে কালো এবং কালোকে সাদা করা | নাগাড়ে মিথ্যা কথা বলা। |
সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলা | স্পষ্ট কথা স্পষ্ট করে বলা। |
সাদার উপর কালির দাগ | ভাললোকের মন্দকাজ। |
সাধ করে শাল নেওয়া | নিজের বিপদ ডেকে আনা; সমতুল্য- 'খালকেটে কুমির আনা', 'খালকেটে বেনোজল ঢোকানো ইত্যাদি। |
সাধ ছিল রে চিতে বেগুন গাছে আঁকশি দিতে | পাগলপানা ভাবনা; ভাবনার মাথামুণ্ড নেই। |
সাধ ছিল রে চিতে মলের উপর চুটকি দিতে | অক্ষমের অসঙ্গত ভাবনা। |
সাধ ছিল বাদশা/সেকেন্দার হ'তে খোদা দেয় না মেগে খেতে | অনেক উচ্চ আশা নিয়ে বসে আছে কিন্তু বিধাতা ভিক্ষা করেও খাবার যোগাড় করতে দেয় না। |
সাধনা বিনা সিদ্ধি নাই | অনায়াসে কিছু পাওয়া যায় না; কিছু পেতে গেলে পরিশ্রম করতে হয়; সমতুল্য- খালি দুয়ায় (দোয়া) পুয়া (পুত্র) হয় না। |
সাধলে জামাই খান না, না-সাধলে জামাই পান না // সাধলে জামাই কাঁঠাল খান না, শেষে জামাই ভোঁতা পান না | সাধাসাধি করলে কাজ করতে ইচ্ছুক নয়; পরে নিজের ইচ্ছায় কাজ করতে এসে কাজ নষ্ট করে। |
সাধিলে রাধার মান বাড়ে | অভিমানক্ষুব্ধ মনকে সাধাসাধি করা হ'লে অভিমান বেড়ে যায়। |
সাধিলেই সিদ্ধি অর্জিলেই নিধি | সাধনায় সিদ্ধিলাভ হয়; অর্জনের চেষ্টা করলে রত্ন অর্জিত হয়। |
সাধে কি আর বাপ বলি; গুঁতোর চোটে বাপ বলায় | চাপে পড়ে কাজ করা; চাপের কাছে নতিস্বীকার; সমতুল্য- 'ঠেলার নাম বাবাজী'। |
সাধের কমল তুলতে গিয়ে সোনার হাতে ফুটল কাঁটা // সাধের কাজল পরতে গিয়ে কাজলনয়না হল কানা | ইচ্ছা করে কষ্ট ডেকে আনা। |
সাধুনাং দর্শনং পূণ্যং তীর্থভূতা হি সাধবঃ। তীর্থৎ ফলেন কালেন সদ্যঃ সাধুসমাগমঃ।। | সাধুদর্শন পূণ্যর কাজ; সাধুগণ হলেন তীর্থস্বরূপ, অর্থাৎ সাধুসঙ্গে থাকলে তীর্থদর্শনে সমান ফললাভ হয়; তীর্থদর্শনের ফল বিলম্বে (পরকালে) ফলে, কিন্তু সাধুসঙ্গের ফল সদ্য সদ্য ফলে যায়। ( সাধু সঙ্গের ফল) |
সাধুর পরিচয় লোটা কম্বলে | ভেক না ধরলে জাত চেনা যায় না। |
সানকির উপর বজ্রাঘাত | দুর্বলের উপর প্রবল আঘাত। |
সানুকূল্যে ভবেত্তস্মিন দোষোহপি গুণসংহতি। গুণোহপি দোষতানাং যাতি বক্রীভূত বিধাতরি।। (চাণক্য) | বিধাতা অনুকূল হলে সবদোষ গুণে পর্যবসিত হয়; কিন্তু বিধারা প্রতিকূল হল্র সব গুণও দোষে পতিণত হয়। |
সাপ ডরায় ব্যাঙাকে ব্যাঙা ডরাই সাপকে | খাদ্যখাদক সম্পর্কের জেরে পরস্পর পরস্পরকে ভয় করে; কেউ অজেয় নয়। |
সাপ নিজের ছায়া দেখে চমকে দাঁড়ায় সেদিক বেঁকে // সাপ নিজের ছায়ায় ছোবল মারে | সাপ নিজের ছায়াকেও বিশ্বাস করে না; খলব্যক্তি কাউকে বিশ্বাস করে না। |
সাপ মরলে সোজা | খলের মন সাপের মত এঁকেবেঁকে চলে; মরলে পরেই খল খলতা ত্যাগ করে। |
সাপ হয়ে কাটে/কামড়ায় রোজা হয়ে ঝাড়ে | একই সাথে শত্রুতা করে এবং মিত্রতা করে। |
সাপও মরে লাঠিও না ভাঙ্গে // সাঁপ মরে পর লাঠি নয়া টুটে- হিন্দি প্রবাদ | কাজ যেন উদ্ধার হয় এবং যার দ্বারা কার্যসিদ্ধি হ'ল তারও যেন ক্ষতি না হয়। |
সাপকে পোষ মানিয়ে থলিতে পোড়া | শত্রুকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। |
সাপকে দুধ খাওয়ালে শুধু বিষ বাড়ে | যার যা ধর্ম; স্বভাব যায় না মলে। |
সাপকে মারলে শিবের লাগে | সাপকে মেরো না; সাপ মানুষের উপকারে আসে। |
সাপে নেউলে সম্পর্ক | চিরস্থায়ী শত্রুতার সম্পর্ক। |
সাপের ছুঁচো গেলা | সাপ দুর্গন্ধে ছুঁচোকে উদরস্থ করতে পারে না আবার বাঁকা দাঁতের মধ্য দিয়ে তাকে উগরে ফেলতে পারে না; ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো ব্যাপারের সঙ্গে যুক্ত থাকা; উভয়সংকটে পড়া। |
সাপের পাঁচ পা দেখা | অহঙ্কারে স্ফীত হয়ে ওঠা। |
সাপের মুখে ঈষার মূল | উৎস- সম্মুখে ধরলে ঈষার মূলের তীব্রগন্ধে সাপ অবসন্ন হয়ে পড়ে; তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়লে দুর্দান্ত চরিত্রের লোকও নেতিয়ে যায়; সমতুল্য- জোঁকের মুখে চুন/নুন। |
সাপের লেজে পা দেওয়া // সাপের গায়ে বারি মারা | দুর্দান্ত চরিত্রের লোককে খোঁচা মেরে উত্তেজিত করা। |
সাপের হাঁচি বেদেয় চেনে | প্রকৃত চরিত্র অভিজ্ঞ ব্যক্তিই বুঝতে পারে; অভিজ্ঞের চোখকে ফাঁকি দেওয়া যায় না; সমতুল্য- 'গাড়োয়ানের চুমকুড়ি গরু চেনে' |
সাপের হাতে বেদের মরণ | বিপদকে নিয়ে নাড়াচড়া করলে বিপদের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। |
সাফল্য সাফল্য আনে | একবার সাফল্য এলে সাফল্য পরপর আসতে থাকে। |
সাফল্যের কোন বিকল্প নেই | সাফল্যই সাফল্যের পুরস্কার। |
সাবধানের মার নেই | সদা সতর্ক লোক কখনও বিপদে পড়ে না; সমতুল্য- 'গোনাগরু বাঘে ধরে না'; 'জাগন্ত ঘরে চুরি নাই'। |
সামনে দরজা খোলা পেলে সাধুও চোর হয় | মানুষমাত্রই রিপুর বশ; আলগা দিলে সন্ন্যাসীও মাতে। |
সামনে দিক থেকে আসা ছাগলকে ভয় করো, পিছন দিক থেকে আসা ঘোড়াকে ভয় করো, চারিদিক থেকে আসা মানুষকে ভয় করো- আসিরীয় প্রবাদ | ্মানুষ সব থেকে হিংস্র প্রাণী। । |
সামনে দিয়ে মশা/মাছি গলে না পিছন দিয়ে হাতী গলে | নিয়ম যতই কড়া হোক-না-কেন নিয়মের কিছু ফাঁক থেকে যায়। |
সারল্যং সরলে কুর্যাৎ। শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ।। | সরলের সাথে সরলতা এবং শঠের সাথে শঠতা করা উচিৎ। |
সারাদিনের রূপরেখা ভোরবেলাতেই টানা হয় // সারাদিনের পরিকল্পনা ভোরবেলাতেই করা হয়- চীনা প্রাবাদ | ভাল কাজের সুষ্ঠ পরিকল্পনা থাকে; পরিকল্পনা সুষ্ঠ হলে অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়। |
সিংহ শিকার ধরে, ফেউ এসে ভাগ বসায় // সিংহের ভাগ শিয়ালে খায় | বিনাপরিশ্রমে কার্যসিদ্ধি; উদবিড়ালে শিকার করে, খটাশ করে তিনভাগ। |
সিংহাদেকং বকাদেকং ষট্ শুনস্ত্রীণি গর্দভাৎ। বায়সাৎ পঞ্চ শিক্ষেত চত্বারি কুক্কুটাদপি।। (চাণক্য) | সিংহের কাছ থেকে একটি, বকের কাছ থেকে একটি, কুকুরের কাছ থেকে ছয়টি, গাধার কাছ থেকে তিনটি, কাকের কাছ থেকে পাঁচটি এবং মোরগের কাছ থেকে চারটি গুণ শেখার আছে। |
সিংহের লেজ হওয়া থেকে কুকুরের মাথা হওয়া ভাল // সিংহের লেজ হওয়া থেকে ইঁদুরের মাথা হওয়া ভাল- জিপসি প্রবাদ | হীনভাবে বাঁচা যায় না; সমতুল্য- 'দাসত্ব মেনে সুখভোগ করা থেকে স্বাধীনভাবে দুঃখভোগ করা ভালো', 'স্বর্গে দাসত্ব অপেক্ষা নরকে প্রভুত্ব ভাল'। |
সিধা আঙুলে ঘি উঠে না | শাসন কড়া না হলে এড়ালোক বাগে থাকে; বিনয়ী হয়ে কাজের লোক থেকে কাজ আদায় করা যায় না |
সিন্ধুকের কাছে ধার করা | অতি কৃপণচরিত্রের লোক; প্রয়োজনে নিজের টাকা সিন্দুক থেকে নেয় এবং সুদসহ মূলটাকা সিন্ধুককে ফিরত দেয়। |
সিধি উঁগলি সে ঘি নহী নিকলতা হৈ- হিন্দি প্রবাদ | সোজা উপায়ে কোন কাজ সম্পন্ন হয় না। |
সিদ্ধি খেলে বুদ্ধি বাড়ে | সিদ্ধিখোরের অদ্ভূত যুক্তি। |
সিন্নি দেখে এগোয় কোঁৎকা দেখে পেছোয় | লোভের সামগ্রী দেখে এগোয় শাস্তির ভয়ে পেছোয়; আগুপিছু না ভেবে লোভে পরে কাজ করা। |
সুঁচ গড়তে পারে না বন্দুকের বায়না নেয় | ছোট কাজ করার ক্ষমতা নেই বর কাজের বরাত নেয়। |
সুঁচ সোহাগা সুজন ভাঙ্গা গড়ে তিনজন | সুঁচ ছেঁড়া কাপড় সেলাই করে নতুন করে; সোহাগা সোনার গয়না ভেঙ্গে নতুন করে গড়ে; সাধুব্যক্তি ব্যবহারে শত্রুকে মিত্র করে। |
সুঁচ হয়ে ঢোকে ফাল হয়ে বেরোয় | মিত্র সেজে অন্তরঙ্গ হয় এবং পরে বন্ধুর দুর্বলতা জেনে নিয়ে তার অনিষ্ট করার চেষ্টা করে। |
সুকৃতান্যপি কর্মাণি রাজভিঃ সফতাদিভিঃ। অথ তান্যেব কর্মাণি তে চাপি প্রলয়ং গতাঃ।। | সগরাদি কত রাজা সংসারে জন্মগ্রহণ করলেন; কত পূণ্যকর্ম করলেন; সেই সকল রাজা ও তাদের কর্মাদি সব তিরোহিত হয়েছে; সুতরাং সংসার অনিত্য। |
সুখস্যানন্তরং দুঃখম্ দুঃখস্যান্তরং সুখম। চক্রবৎ পরিবর্তনন্তে দুঃখানি চ সুখানি চ।। (চাণক্য) | সুখের পর দুঃখ আসে, দুঃখের পর সুখ; সুখ ও দুঃখ চক্রের ন্যায় ঘূর্ণিত হচ্ছে। |
সুখ যদি কপালে, কাঁথা কেন বগলে | কপাল বলে কিছু নেই; কর্মবিমুখ লোকেরা ভাগ্যের কথা বলে; বিনাপরিশ্রমে সুখ মিলে না। |
সুখে থাকতে ভূতে কিলায় | সুখের মর্যাদা না বুঝে স্বেচ্ছায় দুঃখ বরণ করা; অকারণে দুঃখ ডেকে আনে; সমতুল্য- বাঁশ কেন ঝাড়ে, আমার ঘাড়ে। |
সুখের কোন পথ নেই, সুখটাই হল পথ- জাপানী প্রবাদ | সুখ খুঁজতে নেই, সুখী থাকতে হয়। |
সুখের ঘরে রূপের বাসা | সুখ থাকলে শ্রীও থাকে। |
সুখের থেকে স্বস্তি ভাল | ঐশ্বর্যের অস্বস্তিতে থেকে দীনের স্বস্তি অনেক ভাল। |
সুখের পায়রা | সুদিনের বন্ধু; দুর্দিনের কেউ নয়; শরতের শিশির। |
সুজনপীরিত সোনা ভেঙ্গে গড়া যায়, কুজনপীরিত কাঁচ ভাঙ্গিলে ফুরায় | সুজনের সাথে প্রণয় ও সোনার গহণা ভেঙ্গে নতুন করে গড়া যায়; কুজনের সাথে প্রণয় ও কাঁচ একবার ভাঙ্গলে আর জোড়া যায় না। |
সুদিনের বারো ভাই, দুর্দিনের কেউ নাই | অনেকেই সুখের সাথী হ'তে আসে; তারা কোনদিন দুঃখের সাথী হয় না। |
সুদৃঢ়স্যাপি বন্ধস্য পুর্ব্বাবন্ধ্যঃ শ্লথায়তে | কোন সুদৃঢ় বন্ধনের উপর অতিরিক্ত বন্ধন দিলে পুর্ব-বন্ধন শিথিল হয়ে যায়; সমতুল্য- 'সর্ব্বম অত্যন্তম গর্হিতম্'। |
সুনাম তিলেতিলে অর্জিত হয় আর একলহমায় নষ্ট হয় | যেকোন সৃষ্টি ধীরে ধীরে গড়ে উঠে এবং ধ্বংস তড়িতে সম্পন্ন হয়। |
সুন্দর ঘোড়ারা অসুন্দর রঙের হয় না- জিপসি প্রবাদ | সুন্দরের সবকিছু সুন্দর হয়। |
সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র | সুন্দরকে কে না-পছন্দ করে। |
সুন্দরের পূজারী সুন্দর হয় | গুণী গুণের কদর করে। |
সুন্দরবনে বানর রাজা // সোঁদরবনে বাঁদর রাজা | যেখানে যোগ্য লোক নেই, সেখানে অযোগ্য শাসন করে; বনগাঁয়ে/বাঁশবনে শিয়ালরাজা। |
সুবিধাবাদীরা বিনয়ী হয়, বিনয়ীরা সুবিধাবাদী নয় | অসতেরা ভান করে; সতেরা কখনো ভান করে না। |
সুভিক্ষং কৃষকে নিত্যং নিত্যং সুখমরোগিণি। ভার্যা ভর্তুঃ প্রিয়া যস্য তস্য নিত্যোৎসবং গৃহম্ ।। (চাণক্য) | যে কৃষকের ঘরে (প্রচুর) অন্ন থাকে- তার ঘরে সর্বদা সুখ বিরাজ করে, যার শরীরে রোগ নাই- সে সর্বদা সুখী, যে স্বামীর স্ত্রী (স্বামীতে একান্ত অনুরক্তির কারণে) প্রিয়তমা- সেই লোকের ঘরে সর্বদা উৎসবের আনন্দ। |
সুযোগ একবার মাত্র দ্বারে কড়া নাড়ে, ঘুরে ফিরে আসে না- চীনা প্রবাদ | বারবার সুযোগ পাওয়া যায় না; সুতরাং পাওয়া সুযোগ নষ্ট করতে নেই। |
সুযোগ পেলে সবাই চোর // সুযোগ পেলে সাধুও চোর হয় | আসক্তি, মোহ বা অনুরাগ নেই এমন লোক নেই; সামনে দরজা খোলা পেলে সাধুও চোর হয়। |
সুসময়ে অনেকেই বন্ধু বটে হয়, অসময়ে হায় হায় কেহ কারো নয় | সুখের সময় অনেকে এসে জড়ো হয়, বিপদের সময় তারাই প্রথম সরে দাঁড়ায়; জাহাজ ডুবলে ইঁদুরেরা প্রথম পালায়। |
সূর্যের আলোয় চাঁদ লুকায় | বিরাটের সাথে নগণ্যের তুলনা হয় না; বিরাট সামনে থাকলে সামান্য আড়ালে চলে যায়। |
সূর্যের চেয়ে বালি গরম // সূর্যের তাপে বালি তপ্ত | নেতার চেয়ে নেতার তার পার্শ্বচরদের দাপাদাপি বেশি। |
সৃষ্টির সবকিছু সুন্দর কিন্তু সকলে সেটা দেখতে পায় না- কনফুসিয়াস | সুন্দরকে অনুভব করতে গেলে সুন্দর মন থাকা চাই। |
সে কহে বিস্তর মিছা, যে কহে বিস্তর- ভারতচন্দ্র | যে বেশি বকে সে বেশি আজেবাজে কথা বলে। |
সে কাল গেছে বয়ে এঁটে কচু খেয়ে | সুখের দিনগুলিতে চলেও যাওয়া দুঃখের দিনগুলির কথা ভুক্তভোগী স্মরণে আনতে চায় না। |
সে গুড়ে বালি | কোন আশা নেই। |
সে বড় কঠিন ঠাঁই গুরু শিষ্যে দেখা নেই | শিক্ষার পরিবেশ না থাকলে দেশে দুর্দিন আসন্ন। |
সে রামও নাই, সে অযোধ্যাও নাই | রামের মত সুশাসক নেই তাই সুশাসন নেই; সেই সুখ আর নাই, সুখের দিনগুলি এখন অতীত। |
সেই একদিন আর এই একদিন // সেদিন আর নাই | আগের সেদিন কি ভালো ছিল, আজের এদিন কি যে খারাপ এলো; তে হি নো দিবসা গতাঃ। |
সেই গাধা জল খায় তবু গাধা ঘুলিয়ে খায় | গাধা জল না ঘুলিয়ে খেতে পারে না; মন্দ কুপ্রবৃত্তি ছাড়তে পারে না; স্বভাব যায় না মলে। |
সেই ধান সেই চাল, গিন্নিগুণে আউল-ছাউল // সেই ধানে সেই চাল, গিন্নীবিনে আলথাল | সংসারে সবকিছু আগের মতই আছে, কিন্তু গিন্নীর গুণে/অভাবে সব নষ্ট হতে বসেছে। |
সেই তো নথ/মল খসালি তবে কেন লোক হাসালি | আগে কোন কাজ করতে অস্বীকৃত হয়ে পরে উপযাজক হয়ে সেই কাজ করতে স্বীকৃত হওয়া; অনর্থক ভণিতা করা। |
সেই সবচেয়ে শক্তিশালি ব্যক্তি যে রাগের সময় নিজেকে সংযত রাখতে পারে | রাগ রিপুকে সংযত রাখা সব থেকে কঠিন কাজ। |
সেতু পার হতে হলে আগে সেতুর কাছে পৌঁছাও- চীনা প্রবাদ | আগাম অনুমান করা অনুচিত। |
সেদিন আর নাইরে নাথু খাবলা খাবলা খাবে ছাতু | প্রাচুর্যের দিন চলে গেছে এখন কষ্টের দিন এসেছে; সমঝে চলতে হবে; মাঙ্গার দিনে চাইলেই পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়া আর সম্ভব নয়। |
সেধে পেড়ে ভাব মেজে ঘষে রূপ | সাধাসাধির প্রণয় আর ঘষামাজার রূপ বেশিদিন টেকে না। |
সেধো ভাত খাবি? না হাত ধুবো কোথায়? | পাগলের প্রলাপ। |
সেধো ভাত খাবি? না হাত ধুয়ে বসে আছি | লোভীর প্রতীক্ষা। |
সেবিতব্যো মহাবৃক্ষঃ ফলচ্ছায়াসমন্বিতঃ। যদি দৈবাৎ ফলং নাস্তি ছায়া কেন নির্বার্যতে।। (চাণক্য) | ফল এবং ছায়াযুক্ত বৃক্ষের আশ্রয় গ্রহণ করা উচিত; দৈবাৎ তাতে ফল না থাকলেও ছায়া সবসময়ই পাওয়া যায়। |
সেয়ানা ঘুঘুর ছা, ফাঁদে দেয় না পা | খুব চতুরব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলা যায় না। |
সেয়ানা ঠকলে বাপকেও বলে না | চতুরব্যক্তি তার লজ্জার কথা খুব গোপন রাখে, এমনকি নিজের অতি কাছের লোককেও বলে না। |
সেয়ানা ্রবাদ | যে পাগল নয়, কিন্তু পাগলামির ভান করে এবং নিজের স্বার্থসম্পর্কে খুব সচেতন, এমন ব্যক্তি। |
সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি/মিতালি | দুই শঠের মধ্যে সদ্ভাবের আড়ালে শত্রুতা; সামনে হাসি, পিছনে ছুরি |
সোজা আঙুলে ঘি ওঠে/বেরোয় না // সিধি উঁগলি সে ঘি নহী নিকলতা হৈ- হিন্দি প্রবাদ | সোজা উপায়ে কোন কাজ হয় নয়া; নরম ভাবে কাউকে বশীভূতে করা যায় না; কড়া শাসনে থাকলে লোক নিয়ম মানতে বাধ্য হয়। |
সোজা পা কখনো বাঁকা জুতাকে ডরায় না- চীনা প্রবাদ | সজ্জন কখনো দুর্জনকে ডরায় না; আলো কখনো অন্ধকারকে ডরায় না। |
সোনা বলে জ্ঞান ছিল কলিতে পিতল হ'ল | কোন ব্যক্তিসম্পর্কে- আগে সুজন বলে ধারণা ছিল, ব্যবহারে বোঝা গেল সে অতি কুজন। |
সোনা বাইরে ফেলে আঁচলে গেরো | সন্তান দুরদেশে থাকলে তার মঙ্গল কামনায় মায়েরা কোল-আঁচলে গিঁট দেয়; সন্তানের অমঙ্গলের আশঙ্কায় তুকতাক; যত্নের সামগ্রী ফেলে দিয়ে অযত্নের সামগ্রী ব্যবহার। |
সোনায় সোহাগা | উপযুক্ত মেলবন্ধন; শুভ সংযোগ; যে দুটি বিষয়ের মিলন সার্থক হয়। |
সোনার অঙ্গ কালি হ'ল | প্রচণ্ড খাটুনিতে উজ্জ্বল শরীর মলিন। |
সোনার আংটি বাঁকা আর সোজা | গুণীর বিচার রূপে হয় না গুণে হয়। |
সোনার উপর মিনের কাজ | সৌন্দর্যের সৌন্দর্যবৃদ্ধি; মণিকাঞ্চনযোগ। |
সোনার ওজন কুঁচের সহিত | উৎকৃষ্টের সাথে নিকৃষ্টের তুলনা করা; কিসে আর কিসে সোনা আর সিসে। |
সোনার জলে গিলটি করা | সোনার মতো চকচকে করে তোলা, সোনালি রং বা আলোয় রাঙিয়ে সজ্জিত করা। |
সোনার থালে ক্ষুদের জাউ // সোনার হাতায় যবের ছাতু // সোনার দাঁড়ে দাঁড়কাক | উত্তমের সাথে অধমের অনুচিত, অসঙ্গত মিলন। |
সৌ সুনার কী এক লোহার কী- হিন্দি প্রবাদ | বলবানের এক ঘা দুর্বলের একশ ঘায়ের সমান; সমতুল্য- 'স্যাকরার টুকটাক, কামারের এক ঘা। |
সৌজন্যের কাছে সব দরজা খোলা | আপন ভেবে সুজন সবাইকে বরণ করে; সুজনের কাছে সবাই পৌঁছাতে পারে। |
সৌজন্যের খরচ নেই, লাভ আছে অনেক | শালীনতা শেখানোর কোন শিক্ষায়তন নেই; আপনগুণে ব্যক্তি শালীন হয়। |
সৌন্দর্য চামচ দিয়ে খাওয়ার জিনিষ নয়- জিপসি প্রবাদ | সৌন্দর্য সুখ দৃষ্টিতে উপভোগ করতে হয়। |
সৌভাগ্য পাওয়া সহজ, ধরে রাখা কঠিন | সৌভাগ্য আচমকাই আসে; তাকে ধরে রাখতে গেলে কঠিন পরিশ্রম করতে হয়। |
সৌভাগ্যদেবী সাহসীকে বরণ করে | যে ঝুঁকি নিতে সাহসী হয় সেই সফল হয়। |
সৌরভে ভ্রমর মজে | পদ্মমধু খেতে গিয়ে ভ্রমর পদ্মের মাঝে আটকা পড়ে; রূপের জালে আটকা পড়া; সুখ মিটাতে গিয়ে বিপন্ন হওয়া। |
স্তনহীনা চ য নারী ঘৃতাঞ্চহীন ভোজনম। বস্ত্রহীনমলংকারং বিদ্যাহীনদ্বিজোত্তম।। (চাণক্য) | স্তনহীনা নারী, ঘৃতহীন ভোজন বস্ত্রহীন অলঙ্কার এবং বিদ্যাহীন ব্রাহ্মণ- এ সবই নিতান্ত শোচনীয়। |
স্ত্রীভাগ্যে ধন পুরুষভাগ্যে জন | স্ত্রীর অদৃষ্ট ভাল হলে ঘনলাভ হয়; পুরুষের অদৃষ্ট ভাল হলে পুত্রলাভ হয়। |
স্ত্রিয়াশ্চরিত্রং পুরুষস্য ভাগ্যং দেবা ন জানন্তি, কুতো মনুষ্যাঃ। | স্ত্রীলোকের প্রকৃতি ও পুরুষের ভাগ্য দেবতারাই জানে না, মানুষ তো কোন ছার। |
স্ত্রিয়াং তু রোচনামায়াং সর্বং তদ্রোচতে কূলম্। তস্যাং ত্বরোচনানায়াং সর্ব্বমেব ন রোচতে।। (চাণক্য) | স্ত্রীজাতিকে তুষ্ট করা গেলে সমগ্র বংশই পরিতুষ্ট হয়; সে যদি অসন্তুষ্ট হয় তবে সে সবার অসন্তোষের কারণ হয়। |
স্ত্রীবুদ্ধিঃ প্রলয়ংকারী | স্ত্রীলোকের (বুদ্ধিহীনা) বুদ্ধিতে চললে পদেপদে বিপদে পড়তে হয়। |
স্ত্রীর রুচিবোধকে খাট্টো করো না যে তোমাকেই প্রথম পছন্দ করেছে- আরবী প্রবাদ | স্ত্রী হেলাফেলার জন নয় বরং পরম আদরণীয় আত্মীয়। |
স্ত্রীরত্নং দুস্কুলাদপি | কন্যা গুণবতী হলে নীচুঘরের সাথেও সম্পর্ক স্থাপন করা যায়। |
স্ত্রীলোকের আবরণ চরিত্র | দুশ্চরিত্র স্ত্রীলোক সমাজে সম্মান পায় না। |
স্ত্রীলোকের লজ্জাই ভূষণ | লজ্জা স্ত্রীলোকের অলঙ্কারস্বরূপ। |
স্থাতব্যং পঞ্চভিঃ সার্ধং গন্তব্যং পঞ্চভিঃ সহ। ভোক্তব্যং পঞ্চভিঃ সার্ধং ন দুঃখং পঞ্চভিঃ সহ।। (চাণক্য) | পাঁচজনে একত্র বাস করবে; পাঁচজনে একত্র গমন করবে এবং পাঁচজনে একত্র ভোজন করবে, কারণ পাঁচজন একসাথে থাকলে দুঃখ অনুভব হয় না; সমতুল্য- 'দশে মিলি করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ'। |
স্থানস্থিত কাপুরুষোহপি সিংহঃ | উপযুক্ত স্থানে থাকলে কাপুরুষও সিংহের বিক্রম দেখায়। |
স্থিরমস্তিস্কের লোক থেকে সতর্ক থেকো যদি সে কুপিত হয়- আরবী প্রবাদ | কাণ্ডজ্ঞানবিশিষ্ট লোকেরা ক্ষেপে গেলে বিপত্তি হতে পারে। |
স্নেহ নিম্নগামী | জেষ্ঠ পুত্র বা কন্যা থেকে কনিষ্ঠ পুত্র বা কন্যা মা-বাবার বেশি আদর পায়। |
স্পষ্ট কথায় কষ্ট নাই // স্পষ্ট কথার মার নেই | খোলা জবাবে কষ্ট হয় না; সত্যকথা বলতে কোন দ্বিধা বা বিড়ম্বনা নেই; খোলা জবাবে ক্ষতি হয় না। |
স্পষ্ট কথা স্পষ্টাস্পষ্টি বলাই ভাল | সত্য কথা সোজাসুজি বলা উচিৎ। |
স্পষ্ট কথায় বুদ্ধিমান তুষ্ট, আহাম্মক রুষ্ট | গুণী সত্যকথা শুনতে পছন্দ করে এবং নির্গুণ শুনে করুদ্ধ হয়। |
স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল সৃষ্টি হয় | ক্ষেত্র অগ্নিগর্ভ হ'লে সব জ্বালিয়ে পুড়িতে দিতে একটা দেশলাই কাঠি যথেষ্ট। |
স্মৃতি সততঃ সুখের | সবসময় অতীতের ঘটনার রোমন্থন করতে সবার ভাল লাগে। |
স্যাকরার টুকটাক কামারের এক ঘা১ | শক্তিতে সুক্ষ্ম কাজ হয় না; সুক্ষ্মকাজে সময় ও দক্ষতা লাগে। |
স্যাকরার টুকটাক কামারের এক ঘা২ | বলবানের এক ঘা দুর্বলের দশ ঘায়ের সমান; সমতুল্য- হিন্দি প্রবাদ- 'সৌ সুনার কী এক লোহার কী'। |
স্বখাত সলিল ডুবে মরা | কর্মফল ভোগ করা। |
স্বখাত সলিলে ডুবে মরি শ্যামা দোষ কারো নয়গো মা | নিজের দোষে কষ্ট পেলে অন্যের কিছু করার থাকে না; সমতুল্য- 'জিভ পুড়লো আপ্ত দোষে, কি করবে হরিহর দাসে'। |
স্বদেশে পূজ্যতে রাজা বিদ্বান সর্ব্বত্র পূজ্যতে। | রাজা শুধু নিজের দেশে সম্মান পায়; গুণী পৃথিবীর সবদেশে সম্মান পায়। |
স্বদেশের ঠাকুর ফেলে, বিদেশের কুকুর ভজে | পরাধীন জাতের দাসসুলভ মানসিকতায় বিদেশের সবকিছু ভাল এই মনোভাব। |
স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্মো ভয়াবহঃ | আত্মধর্মে মৃত্যুও শ্রেয় তবুও ভহাবহ পরধর্ম গ্রহণ করা নেই; নিজধর্মে বিশ্বাস থাকা উচিৎ; পরধর্মে আস্থা নিন্দনীয়। |
স্বনামোপুরুষো ধন্য | যে পুরুষ সুকীর্তির জন্য বিখ্যাত তিনি ধন্য; স্বমানখ্যাত পুরুষেরা সাধুবাদযোগ্য। |
‘স্বপ্ন সেটা নয় যেটা তুমি ঘুমিয়ে দেখো। স্বপ্ন সেটা যেটা তোমায় ঘুমোতে দেয় না।’ | বড় হওয়ার আকাঙ্খাই সব থেকে বড় স্বপ্ন। |
স্বভাব যায় না মলে | অপবিত্র জিনিষ কখনো পবিত্র হয় না; এড়া লোককে সোজা করা যায় না; কুকুরের লেজে ঘি মাখলেও সোজা হয় না; কুলোক কখনো কুপ্রবৃত্তি ছাড়ে না; বেয়াড়া লোককে সংশোধন করা যায় না; সমতুল্য- 'অঙ্গারঃ শতধৌতেন মলিনত্বং ন মুঞ্চতি','আদা শুকালেও ঝাল যায়না', 'ইল্লৎ যায় না ধুলে', 'কয়লা ধুলে ময়লা যায় না', মূলো খেলে মূলোর গন্ধ ছাড়ে', 'রসুন ধুলেও গান্ধ যায় না' ইত্যাদি। |
স্বভাবো যাদৃশো যঃ ন জহাতি | যার যা স্বভাব সে তা কখনো ত্যাগ করে না; সমতুল্য- 'স্বভাব যায় না মলে'। |
স্বয়ং অসিদ্ধঃ কথং পরাণ্ সাধয়েৎ | যে নিজেই সিদ্ধ নয় সে অন্যকে সিদ্ধিদান করবে কিভাবে? |
স্বর্গের দাসত্ব অপেক্ষা নরকের প্রভুত্ব ভাল | অধীনভাবে সুখভোগ করা থেকে স্বাধীনভাবে দুঃখভোগ করা অনেক ভাল; স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় রে কে বাঁচিতে চায়। |
স্বল্পাবিদ্যা ভয়ঙ্করী | সামান্য বিদ্যার জোরে কোন কাজে হাত দিলে অর্থ থেকে অনর্থ হয় বেশি; |
'স্বাধীনতা-হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়'- রঙ্গলাল | দাসত্বের শৃঙ্খল কেউ পরতে চায় না। |
স্বামী ভাল হলে স্ত্রী ভালো হয়-ইংরাজী প্রবাদ | অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হলে শ্রদ্ধা পাওয়া যায় না। |
স্বার্থমগ্ন যে জন বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে সে কভু শেখেনি বাঁচিতে | আমিত্ব নিয়ে বাঁচা যায় না; বাঁচতে গেলে সহায় চাই; অতিমাত্রায় স্বার্থপরতা ও আত্মকেন্দ্রিকতা মনকে সঙ্কীর্ণ করে; আত্মসুখে আচ্ছন্ন মানুষের কাছে জীবনের মহানন্দ অধরা থেকে যায়; সমতুল্য- 'পরের কারণে স্বার্থ দিয়ে বলি এ জীবন মন সকলি দাও...', 'শুধু স্বার্থ নয়, স্বার্থত্যাগও আছে এ সংসারে', বিরুদ্ধ উক্তি- 'আগে আমি পরে বাপ', 'আপনি বাঁচলে বাপের নাম', 'শঙ্করাকে বাঘে খেল, অন্যেরা সব কোথায় গেল?', 'নবকুমারকে বাঘে খায়', 'স্বার্থছাড়া মানুষ পা নড়ে না' ইত্যাদি। |
স্বার্থের টানে জগৎ চলে | বিনাস্বার্থে কেউ কারো বন্ধু নয়, শত্রু নয়। |
স্বাস্থ্যই সম্পদ | স্বাস্থ্যই সকল সুখের উৎস; স্বাস্থ্য ভালো তো মন ভালো; মন ভালো তো ব্যাধি দূর। |
হ
[সম্পাদনা]প্রবাদ-প্রবচন | অর্থ |
---|---|
হংসমধ্যে বকো যথা | সুন্দরের মধ্যে অসুন্দরের উপস্থিতি; গুণীজনের মাঝে মূর্খের বিসদৃশ উপস্থিতি |
হক কথায় আহাম্মক রুষ্ট | উচিত/সত্য কথা বললে নির্বোধ ব্যক্তিরা রাগ করে। |
হক কথায় বন্ধু বিগড়ায় | উচিত/সত্য কথা বললে বন্ধুত্ব নষ্ট হয়। |
হক কথার মার নেই | সত্য কথা বলায় বিঘ্ন নেই। |
হতমশ্রোত্রিয়ং শ্রাদ্ধং হতো যজ্ঞস্ত্বদক্ষিণঃ। হতা রূপবতী বন্ধ্যা হতং সৈন্যমনায়কম্ ।। (চাণক্য) | যে শ্রাদ্ধে বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ উপস্থিত থাকেন না সেই শ্রাদ্ধ নিষ্ফল, যে যজ্ঞে দক্ষিণা দেওয়া হয়নি সেই যজ্ঞ বিফল, রূপ থাকলেও যে নারী বন্ধ্যা তার জীবন নিরর্থক, সেনাপতিবিহীন সৈন্যেরা নিষ্ফল, অর্থাৎ যুদ্ধে পরাভূত হয়ে থাকে। |
হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী | যেমন হাঁদারাম রাজা তেমনি গাধারাম মন্ত্রণাদাতা; অকর্মণ্য ব্যক্তির ততোধিক অযোগ্য দোসর। |
হবু ছেলের অন্নপ্রাশন | আগাম সুখকল্পনা; রাম না হতেই রামায়ণ। |
হম কমলিকো ছোড় দিয়া, মগর কমলি মুঝে ছোড়তা নেহি // হাম ছোড়া লেকেন কমলি ছোড়তা নেহি- হিন্দি প্রবাদ | নাছোড়বান্দা লোক; জড়িয়ে থাকা বিরক্তিকর বিষয় থেকে মুক্তি চাইছে কিন্তু মুক্তি পাওয়া যাচ্ছে না। |
হয় না-হয় বিয়ে, ঢাক বাজাও গিয়ে | বিয়ে হবে কিনা ঠিক নেই তারজন্য আগাম ব্যস্ততা; আদিখ্যেতা, বাড়াবাড়ি। |
হয় যদি তিলটা, কয় তবে তালটা | ঘটনার বর্ণনায় বাড়াবাড়ি। |
হর চমকনেওয়ালী চিজ সোনা নহি হোতী- হিন্দি প্রবাদ | যা কিছু চমকায় তার সবই সোনা নয়। |
হরি বড় দয়াময়, কথায় বটে কাজে নয় | অবিশ্বাসীর দেব-দ্বিজে অভক্তি; বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রতিফলন; কোন ব্যক্তিকে লোকে দয়ালু বলে জানে অথচ অভিজ্ঞতা অন্য কথা বলে। |
হরি বাঁচান প্রাণ, বৈদ্যের বাড়ে মান | ঈশ্বরে বিশ্বাসীর উক্তি; সে ভাবে সবই ঈশ্বরের ইচ্ছায় হয়। |
হরি ঘোষের গোয়াল | নিস্কর্মা লোকেদের আড্ডা। |
হরিনামে খোঁজ নেই স্ফটিকের রাঙা থোপ (গুচ্ছ) | মুখে হরির নাম নেই; অথচ গলায় স্ফটিকের মালা পরে আছে; অকাজের লোকের আড়ম্বর বেশি। |
হরির খুড়ো মাধাই দাস | কোন সম্পর্ক নেই এমন অনধিকারচর্চাকারী ব্যক্তিকে অবজ্ঞা করে বলা হয় 'কে হে তুমি হরির খুড়ো মাধাই দাস'। |
হরিস্মৃতি সর্ববিপদনাশিনী | ভগবানের নাম নিলে সব বিপদ কেটে যায়। |
হরিণ শিঙ-এ মাছি বসে না | সদা চঞ্চল হরিণের শিঙ-এ মাছি বসতে পারে না; গতিশীল মনে ময়লা ধরে না; গড়ানো পাথরে শ্যাওলা জমে না। |
হরিণের শত্রু তার মাংস | মাংসের লোভে বাঘ হরিণ মারে; হরিণ নিজেই নিজের শত্রু; আপনা মানসে হরিণী বৈরী। |
হলদে চোখে (=ন্যাবা) সব মন্দ দেখে | মন্দলোক সবাইকে মন্দ ভাবে। |
হলুদ জব্দ শিলে, বউ/ঝি জব্দ কিলে, পাড়াপড়শি জব্দ হয় চোখে আঙুল দিলে | শিলে হলুদ পিষ্ট হয়; স্ত্রী/কন্যা শাসনে সংযত থাকে এবং স্পষ্টকথায় পাড়াপড়শী সংযত থাকে। |
হলুদ খেলে কি রাঙা ছেলে হয়? | বাহ্যিক আড়ম্বরে অন্তরের কালিমা কাটে না। |
হলেও বাঁশ, মলেও বাঁশ | অতীতে বাঁশের ছুরি দিয়ে ধাই নাড়ি কাটত এবং বাঁশের খাটিয়ায় মড়া শ্মশানে যেত; দৈনন্দিন জীবনের অবশ্য প্রয়োজনীয় বস্তু; অন্য-অর্থে জন্মালেই যন্ত্রণা সুরু, মরেও শান্তি নেই। |
হস্তী হস্তসহস্রেণ শতহস্তেন বাজিনঃ। শৃঙ্গিনো দশহস্তেন স্থানত্যাগেন দুর্জনঃ।। (চাণক্য) | হাতী থেকে হাজার হাত দূরে থাকবে, ঘোড়া থেকে একশ’ হাত দূরে থাকবে, শিংওয়ালা প্রাণী থেকে দশ হাত দূরে থাকবে আর দুর্জন লোক কাছে এলে সেই জায়গা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবে। |
হয়ত পুত নয়ত ভূত | সন্তান হয়ত সুপুত্র হয়ে মা-বাবাকে দেখবে নয়ত কুপুত্র হয়ে জ্বালাতন করবে; ভাগ্যে কি আছে কেউ জানে না। |
হাঁ করলেই বোঝা যায় // হাঁ করলেই গাঁয়ের উদ্দেশ জানা যায় | কথা শুরু করলেই বক্তব্য বোঝা যায় বা সব খবর জানা যায়; চতুর লোক কয়েকটা কথা শুনেই ব্যাপারটা বুঝে নিতে পারে। |
হাঁ মুখে মাছি ঢোকে | অসতর্ক থাকলে বিপদে পড়তে হয়। |
হাঁচি জেটি পড়ে যবে, অষ্ট গুণ তার লভ্য না হবে // হাঁচি টিকটিকি বাধা, যে না মানে সে গাধা- খনা | যাত্রাকালে হাঁচি অথবা টিকটিকি পড়লে যাত্রা না করাই ভালো (যাত্রাকালীন শুভাশুভ লক্ষণ) |
হাঁটু জলে ডুবে মরা | সামান্য বিপদে নাজেহাল হওয়া। |
হাঁড়ি বলে কড়া তুই বেজায় কালা | নিজের দোষ দেখতে পায় না পরের দোষ খুঁজে বেড়ায়; সমতুল্য- 'আনারস বলে কাঁঠাল ভাই তুমি বড় খসখসে', চালুনি বলে ছুঁচ তোর মার্গে কেন ছেঁদা', 'চালুনি বলে ধুচুনিভাই তুমি বড় ফুটো', 'ঝাঁজরি বলে খৈ-চালা, তুই বেজায় ফোঁড়ওয়ালা ইত্যাদি। |
হাঁড়ির ভাত একটা টিপলেই সবার খবর মেলে | দলের একজনকে চিনলেই সবাইকে চেনা যায়। |
হাঁসের দলে বক শোভা পায় না | বিজ্ঞদের মাঝে মূর্খ বেমানান। |
হা হতোহস্মি | হায় আমি মরলাম। |
হাকিম নড়ে তো হুকুম নড়ে না | বিচারকের পরিবর্তন হয়, কিন্তু বিচারক একবার যে আদেশ দেয় তার কোন পরিবর্তন হয় না। |
হাগা নাড়ি মুখে টুনকো // হেগো রুগী মুখে টুনকো | উদরাময়ের রোগী মুখে কথা বলতে পারে; বাকসর্বস্ব অকর্মার ধাড়ি। |
হাগার নাই বাঘার ভয় | প্রকৃতির ডাক এলে বাছবিচার করার সময় থাকে না; সমূহ বিপদে কাণ্ডজ্ঞান থাকে না। |
হাগুন্তির লাজ নেই দেখুন্তির লাজ | যে মন্দকাজ করছে তার লজ্জা হচ্ছে না, যে দেখছে সে লজ্জা পাচ্ছে; নির্লজ্জ বেহায়া; |
হাজার বছর ঝরণার জলে নেয়েও নুড়িপাথর রসজ্ঞ হয় না | নিরস ব্যক্তিকে কখনো রসসিক্ত কয়ড়া যায় না। |
হাজার বই পড়া থেকে হাজার মাইল হাঁটা ভাল | প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় জ্ঞান অনেক বেশি অর্জিত হয়। |
হাজার মূর্খের চেয়ে একজন বিদ্বান অনেক বেশি কাম্য | পরিমাণ গুণের বিচার হয় না। |
হাজারে বেজার নেই | কিছুতেই বিরক্তি নেই |
হাটে কলা নৈবিদ্যায় নমোঃ | যজমান বলল নৈবেদ্যে কলা দেওয়া হয় নি, হাটে আনতে গেছে; পুরোহিতের তাড়াতাড়ি ছিল; 'তাতে কি আছে' বলে সে প্রবাদটি বলে পূজা সারল; প্রয়োজনীয় সামগ্রী না থাকলেও কোনভাবে কাজ শেষ করা। |
হাটে হাঁড়ি ভাঙা | সর্বজনসমক্ষে গোপন কথা ফাঁস করে দেওয়া। |
হাটের দর সবার জানা | হাটের জিনিষপত্রের দর সবার মুখে মুখে ফেরে, গোপন থাকে না। |
হাড় এক ঠাঁই মাস এক ঠাঁই | প্রচণ্ড প্রহারে ক্ষতবিক্ষত। |
হাড় খাব মাস খাব, চাম দিয়ে ডুগডুগি বাজাব | তীব্র প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা। |
হাড়ির ঘরের লক্ষ্মী শুঁড়ির ঘরে যায় | হাড়ি সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রচণ্ড মদ খায়; অর্থের অপচয়। |
হাড়ে দূর্বা গজানো | এক অর্থে- প্রচণ্ড অলস; আলসেমি এমনমাত্রার যে দূর্বাও সেখানে গজানোর সুযোগ পায়; অন্য অর্থে এমন করুণ মৃত্যু যে সৎকারের অভাবে হাড় মাটিতে মিশে যায় এবং সেই হাড়ে দূর্বা জন্মে। |
হাত আলস্যে গোঁফ নষ্ট | তা না-দেওয়াতে গোঁফের বাহার নষ্ট; আলস্যের কারণে বা সামান্য পরিশ্রমের অভাবে কাজ বিনষ্ট। |
হাত ছোট আম বড় | ধরতে অসুবিধা; কার্যের তুলনায় কর্মক্ষমতা কম। |
হাত ঝাড়া দিলে পর্বত | ধনাঢ্য ব্যক্তির ধনাধিক্যের নিদর্শন। |
হাত দিয়ে সরে না | অত্যন্ত কৃপণ ব্যক্তি। |
হাত দিয়ে হাতি ঠেলা | অসম্ভব ব্যাপারকে সম্ভব করার চেষ্টা করা। |
হাতি আড় হলে চামচিকেও লাথি মারে // হাতি গর্তে/পাঁকে পড়লে ব্যাঙেও লাথি মারে // হাতি পড়েছে দকে ঠোকর মারে বকে | প্রবল বিপাকে পড়লে দুর্বলও এসে অপমান করে। |
হাতি ঘোড়া গেল তল, ভেড়া/মশা বলে কত জল | বিজ্ঞরা যেখানে ব্যর্থ সেখানে নির্বোধ এসে নাক গলায়; সবল যে কাজ করতে ব্যর্থ, দুর্বল সেই কাজ করতে এগিয়ে যায়। |
হাতি পাঁকে পড়লে হাতি উদ্ধার করে | প্রবল বিপাকে পড়লে প্রবলই এসে তাকে বাঁচায়। |
হাতি বুড়ো হলেও দাঁত দিয়ে মাটি খোঁড়া ছাড়ে না | সদ্বংশজাত অবস্থা বিপর্যয়েও চরিত্রগুণ হারায় না। |
হাতি মরলেও লাখ টাকা | মহার্ঘ বস্তু সবসময় মহার্ঘ থাকে। |
হাতি যেমন খায় তেমনি নাদে | বড়লকের যেমন আয় তেমনি ব্যয়। |
হাতিকা দাঁত খানে কে আঔর, দিখানে কা আঔর- হিন্দি প্রবাদ | কাজের বস্তু দেখানোর হয় না, আবার দেখানোর বস্তু কাজের হয় না। |
হাতির কাঁধে আসে যায়, হাম্বা রবে মুর্ছা যায় | বিরাট কাজ সাফল্যের সাথে করে এসে ক্ষুদ্র কাজ নিতে ভয় পায়। |
হাতির দর্প চূর্ণ পাহাড়ের কাছে | প্রবল পরাজিত হয় প্রবলতরের কাছে; বাপেরও বাপ আছে। |
হাতির পাঁচ পা দেখা | অহঙ্কারী ব্যক্তির দাম্ভিক আচরণ। |
হাতির মিনমিন ঘোড়ার দৌড় | ঘোড়া দৌড়ে যতদূর যায়। হাতি ধীরে ধীরে চলেও ততদূর যায়; কেউ দ্রুত যে কাজ শেষ করে; কেউ ধীরলয়ে সেই কাজই করে; যার যেমন পদ্ধতি। |
হাতে কালি মুখে কালি বাছা আমার লিখে এলি | ছেলে লিখুক বা না লিখুক হাতে মুখা কালি থাকলে মায়েরা ভাবে ছেলে তার লিখে পড়ে এসেছে। |
হাতে জল গলে না | অত্যন্ত কৃপণ ব্যক্তি। |
হাতে দই পাতে দই তবু বলে কই কই | নিমন্ত্রণবাড়ীতে ভূরিভোজ করেও আশ মেটে না। যেন কোনদিন কিছু খায় নি; প্রাচুর্য সত্বেও অভাববোধ যায় না। |
হাতে নয় ভাতে মারা // হাতে না মেরে ভাতে মারা | প্রহার না করে কেবল উপবাসী রেখে দুর্বল করা; সরাসরি অনিষ্ট না করে অন্নসংস্থানের উপায় বন্ধ করা। |
হাতে পাঁজি মঙ্গলবার | বৃথা তর্ক না করে হাতের কাছে যে সন্দেহ-নিরসনের উপায় আছে তা অবলম্বন করা হোক; সঙ্গে প্রমাণ থাকতে অপরকে আজ কি বার জিজ্ঞাসা করার কোন অর্থ হয় না; হাতে উপায় থাকতে অন্যের কাছে উপায় খোঁজা নিরর্থক; |
হাতে যদি ফল পাই তবে কেন আঁকুশি চাই | সহজ উপায়ে কাজ উদ্ধার হ'লে জটিল পথ ধরার প্রয়োজন নেই; নিজেই কাজ করতে পারলে অপরের সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন নেই। |
হাতের একটি পাখি বনের দুটি পাখির সমান // হাতের জিনিস ফেলে দূরের জিনিস নিতে নেই // হাতের পাখি ছাড়রে নেই'; | অনিশ্চিতের তুলনায় নিশ্চিতের দাম বেশি; হাতের জিনিস ফেলে দূরের জিনিস নিতে নেই; সমতুল্য- 'উপস্থিত অন্ন ত্যাগ করতে নেই'; 'একটি আজকাল দুটি আগামীকালের সমান', 'গাছের দশটা থেকে পাতের একটাই ভাল' ইত্যাদি। |
হাতের ঢিল, ছুঁড়লে ফেরে না | সযোগ একবার হাত ছাড়া হ'লে সেই সুযোগ ফিরে আসে না। |
হাতের পাঁচটা আঙুল সমান নয় | ঘরের সকলে একরকম নয়; দোষে-গুণে কেউ বেশি কেউ কম। |
হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা | সৌভাগ্যে পাওয়া সুযোগ বুদ্ধিদোষে নষ্ট করা। |
হাতের শাঁখা দর্পণে দেখা | ঘোরাপথে বা বাঁকাপথে কাজ করা। |
হাতেরও যাবে পাতেরও যাবে | একূল ওকূল উভয় কূল হারানো। |
হায়রে আমড়া কেবল আঁটি আর চামড়া | বাইরে চাকচিক্য ভেতরে শূন্যতা। |
হারামের পয়সায় আরাম নেই | অসদুপায়ে অর্জিত অর্থের কোন মূল্য নেই। |
হারায়ে মারায়ে কাশ্য়প গোত্র | জীবমাত্রই কশ্যপমুনির বংশধর; কোন মানুষ নিজের গোত্র বলতে না পারলে পুরোহিত কাশ্যপ গোত্রের উল্লেখ করেন। |
হাল ছেড়ে দেওয়া // হাল ছেড়ে বসে থাকা | ঝড় দেখলে নৌকার হাল ছেড়ে বসে থাকা; বিপদের মুকাবিলা না করে নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকা। |
হালে পানি পাওয়া | হাল পানি না পেলে নৌকা চলে না; সেক্ষেত্রে পানি পাওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে হয়; সূযোগ পাওয়া। |
হালে পানি পায় না | ক্ষমতায় কুলায় না। |
হালে বয় না, তেড়ে গুঁতোয় | বলদে হাল টানে না। কিন্তু গুঁতোতে ছাড়ে না; কাজে এড়া অকাজে দেড়া। |
হিতং মনোহারি চ দুর্লভং বচঃ | একই সাথে হিতকারী এবং মনোহারী বাক্য দুর্লভ। |
হিতে বিপরীত | ভাল করতে গিয়ে মন্দ হওয়া। |
হিসাবের গরু বাঘে খায় না | হিসাব করে চললে ভাল বই মন্দ হয় না। |
হীনসেবা ন কর্ত্তব্যা কর্ত্তব্যো মহোদাশ্রয় | নির্সেগুণের সেবা করা উচিৎ নয়; মহতের আশ্রয় নেওয়া উচিৎ। |
হুঁ হুঁ দেয়ং, হাঁ হাঁ দেয়ং দেয়ঞ্চ শিরশ্চালনে; হস্ত চালনে দেয়ং, না দেয়ং ব্যাঘ্রঝম্পটে- বিদ্যাসাদর | অতিথি আপ্যায়ন পদ্ধতি কি হইয়া উচিৎ তার ব্যাখ্যা। |
হুঁচোট/হুচোট/হোঁচট খেয়ে প্রণাম | ইচ্ছা করে ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম নয়; আকস্মিকভাবে হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়েছে; তাই প্রণাম স্বীকার; দায়ে পড়ে কার্যগতিতে কোন ভালো কাজ করে ফেলা; সমতুল্য- 'উচোট খেয়ে প্রণাম'; 'পড়ে দিয়ে পদ্মনাভ'। |
হুজ্জতে বঙ্গাল, হিকমতে চীন- উর্দু প্রবাদ | কুটতর্কে বাঙ্গালী আর ফন্দিবাজীতে চীন প্রসিদ্ধ। |
হৃদয় দিয়ে মানুষ যেমন ভাবে তার প্রকৃতিও তেমন হয়- ইহুদী প্রবাদ | চরিত্র দিয়ে মানুষ চেনা যায়। |
হেলায় কার্যনাশ // হেলায় হারানো | আলস্য করে বা অমনযোগী হয়ে পাওয়া সুযোগ নষ্ট করা। |
হেলাস্যাৎ কার্যনাশায় বুদ্ধিনাশায় নির্ধনম্। যাচনা মাননাশায় কুলনাশায় ভোজনম্ ।। (চাণক্য) | অবহেলা কার্যনাশ হয়, দারিদ্র্যে বুদ্ধিনাশ হয়, ভিক্ষায় অসম্মান হয় এবং যত্রতত্র আহার বংশগৌরব নাশ হয় |
হেলে ধরতে পারে না কেউটে ধরতে যায় | সহজ কাজ পারে না, জটিল কাজে হাত দেয়; ক্ষমতার বাইরে যাওয়া অনুচিত। |
হেসে খেলে নাও দুদিন বইতো নয়, কে জানে কখন কার সন্ধ্যা হয়- ওমর খৈয়াম | ক্ষণকালের জীবনে যত পারো সুখভোগ করে নাও; সমতুল্য-খাই দাই তবলা বাজাই, দুদিন বইতো নয়','নেচেকুঁদে/হেসে খেলে নাওরে জাদু মনের সুখে কবে যেতে হবে শিঙে ফুঁকে'। |
হেসে চাকি পাটে বসে সে বছর শস্য নয়া মোটে- খনা | যে বছর আষাঢ়মাসে অস্তগামী সূর্য হেসে পাটে বসে সে বছর শস্য মোটেই জন্মায় না। |
হেসে হেসে কথা কয় এ হাসি তো ভাল নয় | কুটিলব্যক্তি হেসে হেসে কথা বললে মনে সন্দেহ জাগে। |
হোঁচট খাওয়ার অর্থ হল সুষ্ঠভাবে পথ চলার রহস্যটি শিখে ওঠা- ঋষি অরবিন্দ | জীবনে চলার পথে প্রতিপদে বাধা আসে এবং এই বাধা কাটিয়ে উঠতে না শিখলে এগুনো সম্ভব হয় না। |
হোঁচট খেয়ে পদ্মনাভ // হোঁচোট খেয়ে প্রণাম | উল্টে পড়ে গিয়ে প্রণাম স্বীকার; প্রণাম না করেও প্রণাম; কার্যগতিতে কোন ভালো কাজ করা; সমতূল্য-'উচোট খেয়ে প্রণাম'। |
হোঁতা (থোতা) মুখ ভোঁতা হ'লো | দর্পচূর্ণ হ'লো। |
হোক-না-কেন কাঠের বিড়াল ইঁদুর ধরতে৪ পারলেই হ'লো | উপায় যাই হোক-না-কেন কার্যসিদ্ধি হ'লেই হ'লো। |
হোদল বনে শিয়াল রাজা | অজ্ঞানীদের মাঝে অল্পজ্ঞানী যথেষ্ঠ সম্মান পায়; ভেড়ার দলে বাছুর মোড়ল। |
হ্যাঁ ও না কথাদুটো সব থেকে পুরানো ও ছোট, কিন্তু কথা দুটো বলতে সবচেয়ে বেশি ভাবতে হয়= চীনা প্রবাদ | অতি সহজে কোন বিষয়ে সমর্থন বা অসমর্থন করা যায় না। |
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]
উৎস
[সম্পাদনা]- শ্রীসুশীলকুমার দে, বাংলা প্রবাদ ছড়া ও চলতি কথা, এ.মুখার্জী এন্ড কোং লি, কলকাতা, প্রথম সংস্করণ - আশ্বিন ১৩৫২
- Rev. W .Morton, দৃষ্টান্তবাক্য সংগ্রহ, A collection of Proverbs, Bengali & Sanskrit with their Translation and Application in English, The Baptist Mission Press, Calcutta, 1832