উইকিঅভিধান:খনার বচন
অবয়ব
খনার বচন মূলত কৃষিতত্ত্বভিত্তিক ছড়া। আনুমানিক ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যে রচিত। অনেকের মতে, খনা নাম্নী জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী বাঙালি নারীর রচনা এই ছড়াগুলো। তবে এ নিয়ে মতভেদ আছে। অজস্র খনার বচন যুগ-যুগান্তর ধরে গ্রাম বাংলার জন-জীবনের সাথে মিশে আছে। জনশ্রুতি আছে যে, খনার নিবাস ছিল অধুনা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসত সদর মহকুমার দেউলিয়া গ্রামে (বর্তমানে চন্দ্রকেতুগড় প্রত্নস্থল, যেটি খনামিহিরের ঢিবি নামে পরিচিত)। এমনকি, তিনি রাজা বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের একজন বলে কথিত। বরাহমিহির বা বররুচি-এর পুত্র মিহির তার স্বামী ছিল বলেও কিংবদন্তী আছে। এই রচনা গুলো চার ভাগে বিভক্ত।
কৃষিকাজের প্রথা ও সংস্কার
কৃষিকাজ ফলিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞান
আবহাওয়া জ্ঞান
শস্যের যত্ন সম্পর্কিত উপদেশ
অ
[সম্পাদনা]আ
[সম্পাদনা]- আউস ধান্যের চাষ। লাগে তিন মাস॥
- আউশের ভুঁই বেলে। পাটের ভুঁই আঁটালে॥
- আমে ধান। তেঁতুলে বান॥
- আলো হাওয়া বেঁধ না, রোগ ভোগে মরো না
- আশ্বিনের উনিশ কার্ত্তিকের উনিশ। বাদ দিয়ে মটর কলাই বুনিশ॥
- আঁতে তিতা দাঁতে নুন, উদর ভরো তিন কোন
- আহারান্তে চোখে জল, দৃষ্টি শক্তির বাড়ে বল
উ
[সম্পাদনা]এ
[সম্পাদনা]ক
[সম্পাদনা]- কচু বনে ছড়ালে ছাই। খনা বলে, তার সংখ্যা নাই॥
- কলা রুয়ে না কেট পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত
- কার্তিকের উনো জলে। দুনো ধান খনা বলে॥
- কোল পাতলা ডাগর গুছি। লক্ষ্মী বলেন ঐখানে আছি॥
খ
[সম্পাদনা]- খনা বলে, চাষার পাে। শরতের শেষে সরিষা রো॥
- খনা বলে শুন শুন, শরতের শেষে মূলা বুন
- খালি পেটে কুল, ভরা পেটে মূল
- খেতে বসলে কিসের দায়, পাকনা ধান কি জলে যায়
- খানা খায় করে শব্দ, অলক্ষী খুশি লক্ষী জব্দ
- খেয়ে উদাইম্যা ভাত, শইল করে উৎপাত
ঘ
[সম্পাদনা]চ
[সম্পাদনা]ছ
[সম্পাদনা]জ
[সম্পাদনা]ড
[সম্পাদনা]ত
[সম্পাদনা]থ
[সম্পাদনা]দ
[সম্পাদনা]- দাতার নারিকেল কৃপণের বাঁশ। কমে না, বাড়ে বারোমাস॥
- দিনে রোদ রাতে জল। দিনদিন বাড়ে ধানের বল॥
- দুগ্ধ শ্রম গাংগা বারি, এ তিন উপকারী
ন
[সম্পাদনা]- নদী ধারে পুঁতলে কচু। কচু হয় তিন হাল উঁচু॥
- নারিকেল গাছে লুন মাটি। শীঘ্র শীঘ্র বাঁধে গুটি॥
- নিম নিসিন্দা যথা, মানুষ কি মরে তথা
প
[সম্পাদনা]- পটল বুন্লে ফাগুনে। ফল বাড়ে দ্বিগুণে॥
- পশ্চিমের ধনু নিত্য খরা। পূবের ধনু বর্ষে ধারা॥
- পান পোঁতে শ্রাবণে। খেয়ে না ফুরােয় রাবণে॥
- পুবে হাঁস পশ্চিমে বাঁশ, উত্তরে বেড়ে দক্ষিণে ছেড়ে, ঘর করগে পুতা জুড়ে
- পুর্ণ আষাঢ় দখিনা বয়। সেই বৎসর বন্যা হয়॥
- পীড়ে উঁচু মেঝে খাল, তার দুঃখ চিরকাল
ফ
[সম্পাদনা]- ফাগুনে না রুলে ওল। শেষে হয় গণ্ডগােল॥
- ফাল্গুনে আগুন চৈতে মাটি। বাঁশ বলে শিঘ্র উঠি॥
- ফাগুনের আট, চৈত্রের আট। সেই তিল দায়ে কাট॥
ব
[সম্পাদনা]- বক বকুল চাপা, তিন পুতোনা বাপা
- বলদ যদি না বয় হাল। তার দুঃখ চিরকাল॥
- বাপে ব্যাটায় চাষ চাই। তৎ-অভাবে সোদর ভাই॥
- বেঙ ডাকে ঘন ঘন। শীঘ্র হবে জানাে॥
- বারো বছরে ফলে তাল। যদি না লাগে গরুর নাল
- বারো মাসে বারো ফল, না খেলে যায় রসাতল
- বাঁশ বনে বুনলে আলু। আলু হয় গাছ বেড়ালু॥
- বাঁধো আগি আলি। রােও তবে শালি॥ না যদি ফল ফলে। গালি পেড়ো খনা বলে॥
- বুধ রাজা, শুক্র তার মন্ত্রী যদি হয়। শস্য হবে ক্ষেত্রভরা নাহিক সংশয়॥
- বেল খেয়ে খায় জল, জির যায় রসাতল
- বৈশাখের প্রথম জলে। আশু ধান দ্বিগুণ ফলে॥ শুন ভাই খনা বলে। কার্তিকে তুলা অধিক ফলে॥
ভ
[সম্পাদনা]- ভরা হতে শূন্য ভালো যদি ভরতে যায়। আগে হতে পিছে ভালো যদি ডাকে মায়॥
- ভাদ্রমাসে রুয়ে কলা। সবংশে মোলে রাবণ শালা॥
- ভাদ্রের চারি আশ্বিনের চারি। কলাই রােবে যত পারি॥
- ভোরের হাওয়া লাখ টাকার দাওয়া
ম
[সম্পাদনা]য
[সম্পাদনা]শ
[সম্পাদনা]- শ্রাবণের পুরো ভাদ্রের বার, এর মধ্যে যত পার
- শাক অম্বল পান্তা, তিনো অসুখের হন্তা
- শীষ দেখে বিশ দিন। কাটতে মাড়তে দশ দিন॥