উইকিঅভিধান:বাংলা ব্যাকরণ/পদ/পরিবর্তন

উইকিঅভিধান, মুক্ত অভিধান থেকে

সমধিক প্রচলিত অর্থের ভিত্তিতে একটি শব্দকে বিশেষ‍্য রূপ থেকে বিশেষণ রূপে এবং বিশেষণ থেকে বিশেষ‍্য রূপে পরিবর্তিত করাকে পদ পরিবর্তন বা পদান্তর বলে।

পদ পরিবর্তনের নিয়ম[সম্পাদনা]

পদ পরিবর্তনের বেশ কয়েকটি নিয়ম আছে। আসুন দেখে নিই কোন কোন প্রত্যয় যোগ করে বিশেষ্য থেকে বিশেষণ এবং বিশেষণ থেকে বিশেষ্যে পদ পরিবর্তন করা যায়। যেমন-

  1. বিশেষণের সঙ্গে ত্ব/তা যোগ করলে বিশেষ্য পাওয়া যায়। যেমন: সৎ > সততা, ঘন > ঘনত্ব।
  2. অন প্রত্যয়যুক্ত বিশেষ্যে অন প্রত্যয়ের বদলে ত(ক্ত) /ইত প্রত্যয় যোগ করলে বিশেষণ পদ পাওয়া যায়। যেমন: গমন > গত, গ্রহণ > গৃহীত।
  3. কিছু বিশেষ্যের সাথে উয়া প্রত্যয় যোগ করলে বিশেষণ পদ পাওয়া যায়। গাছ+উয়া = গাছুয়া>গেছো।
  4. ষ্ণ্য প্রত্যয় যোগে বিশেষণ থেকে বিশেষ্য পদ পাওয়া যায়। যেমন: অধিক+ষ্ণ্য = আধিক্য।
  5. ষ্ণিক/ইক প্রত্যয় যোগ করে বিশেষ্য থেকে বিশেষণ পাওয়া যায়। যেমন: দর্শন+ষ্ণিক(ইক) = দার্শনিক। এক্ষেত্রে প্রথম স্বরটির বৃদ্ধি হয়। যেমন: উপনিবেশ>ঔপনিবেশিক, নিমিত্ত>নৈমিত্তিক। উ>ঔ এবং ই>ঐ হয়েছে।
  6. বিশেষ্যের শেষে 'অন' প্রত্যয় থাকলে 'অন'-এর বদলে 'অনীয়' দিলে বিশেষণ হয়। যেমন: গ্রহণ>গ্রহণীয়, বর্জন>বর্জনীয়।
  7. অন প্রত্যয়ের পরিবর্তে তব্য বা য (ণ্যৎ, যৎ, ক্যপ্) প্রত্যয় দিলেও বিশেষ্য থেকে বিশেষণ হয়। তবে এই শব্দগুলির মধ্যে কয়েকটি শব্দ বিশেষ্য রূপেও ব্যবহৃত হয়। যেমন কর্তব্য, বাক্য, বাচ্য প্রভৃতি শব্দ মূলগত ভাবে বিশেষণ হলেও বর্তমানে বিশেষ্য অর্থে ব্যবহার করা হয়।
  8. তদ্ভব ও দেশি শব্দে উয়া প্রত্যয় যোগ করে বিশেষণ পাওয়া যায়। তবে উয়া প্রত্যয়টি মান্য চলিত ভাষায় অভিশ্রুতির ফলে নতুন রূপ লাভ করে। যেমন: মাঠ+উয়া=মাঠুয়া>মেঠো, ঘাট+উয়া=ঘাটুয়া>ঘেটো।
  9. √ধা ধাতু থেকে সৃষ্ট বিশেষ্য থেকে বিশেষণ পদ তৈরি করা হলে ধ ব্যঞ্জনটি হ-তে পরিণত হয়। যেমন: বিধান>বিহিত, আধান>আহিত।
  10. ষ্ণ্য প্রত্যয় যোগে বিশেষণ থেকে বিশেষ্যে রূপান্তরিত করা যায়। যেমন: সুজন+ষ্ণ্য = সৌজন্য। এই ক্ষেত্রেও স্বরের বৃদ্ধি হয়।
  11. বিশেষ্যের সাথে উক প্রত্যয় যোগে বাংলায় অনেক সময় বিশেষণ পদ পাওয়া যায়। যেমন: ভাব -- ভাবুক, মিথ্যে -- মিথ্যুক।